মি. কফি আর মি. ফিক্সিট – রেমন্ড কার্ভার
২০১৬ সালে অনুবাদ করছিলাম এই গল্পটা। রেমন্ড কার্ভারের “হোয়াট উই টক অ্যাবাউট হোয়েন উই টক অ্যাবাউট লাভ“ বইয়ে এই গল্পটা আছে।
উনার গল্পগুলি একটানে লেইখা গেছেন উনি। এডিট-টেডিট করতেন না মনেহয় তেমন একটা, তো, এইভাবে লিখলে যা হয়, ট্রাশও থাইকা যায় অনেক। উনার এডিটর গর্ডন লিস তো কইছেনও যে, উনি এডিট না করলে কার্ভারের গল্প কেউ খেয়ালও করতো না। এডিটিং হয়তো উনার ফিকশনরে মোর রিডেবল করছে, কিন্তু এক রকমের “আম্রিকান ড্রিম” বা “অ্যাংগুইশ” যে আছে, সেইটা উনার নিজের আবিষ্কার বইলাই মনে হইছে।
আমাদের “গুরু-গম্ভীর” ফিকশন রিডিংয়ের এক্সপেরিয়েন্সের কাছে এই প্যাটার্নটারে অনেকটা “পাতলা” জিনিস বইলা মনে হইতেই পারে, কিন্তু আমার আশা আছে, কেউ কেউ ভারী বা পাতলা ভাবার বাইরে এই প্যাটার্নটারে এনজয়ও করতে পারবেন, অনেকবেশি। যেইটা হয়তো শেষমেশ “আম্রিকান” ব্যাপারই আবার। 🙂
ই. হা.
………………………………………………………………………………….
আমি কিছু দেইখা ফেলছিলাম। আমি আমার মা’র বাড়িতে গেছিলাম কয়েকদিন থাকার লাইগা। কিন্তু যখন আমি সিঁড়ির উপ্রে উঠলাম, আমি তাকাইলাম আর শে সোফাতে বইসা একটা লোকরে কিস করতেছিল। এইটা ছিল গরমের সময়। দরজাটা খোলা ছিল। টিভি চলতেছিল। এইটা এইরকম একটা জিনিস যা আমি দেইখা ফেলছিলাম।
আমার মা’র বয়স পয়ষট্টি। শে সিঙ্গেলস ক্লাবের লোক। তারপরও, এইটা ছিল বেশ কঠিন। রেলিংয়ে একহাত দিয়া আমি দাঁড়ায়া ছিলাম আর দেখতেছিলাম লোকটা তারে কিস করতেছে। শেও তারে পাল্টা কিস করতেছিল, আর টিভিটা চলতেছিল তখন।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]
জিনিসগুলি এখন বেটার। কিন্তু আগের দিনে, যখন মা আমার খোঁজ-খবর নিতো না, আমার চাকরি ছিল না। আমার বাচ্চাগুলি ছিল বদমাইশ, আর আমার বউটা বদমাইশ আছিলো। শেও আমার কোন খোঁজ-খবর নিতো না। শে যেই বেটার খোঁজ-খবর রাখতো সে আছিলো একটা বেকার অ্যারো-স্পেইস ইঞ্জিনিয়ার। ওই বেটার সাথে বউয়ের দেখা হইছিল AA’র মিটিংয়ে। সে ছিলো আরেকটা বদমাইশ।
আমি জানি না ওই দিনগুলিতে আমরা কি কি ভাবতাম।
এই বেটা’র সেকেন্ড বউটা যাওয়া আসা করতো, কিন্তু ওর ফার্স্ট বউটাই ওরে গুলি করছিলো ওর পেমেন্টগুলি না দেয়ার লাইগা। এখন আমি ওর ভালো চাই। রস। কি একটা বালের নাম! কিন্তু তখন ব্যাপারটা অন্যরকম আছিলো। ওইসব দিনে আমি অস্ত্র কিনার কথা কইতাম। আমার বউরে আমি বলতাম, “আমার মনেহয় আমি একটা স্মিথ অ্যান্ড উইলসন কিনবো।” কিন্তু আমি কখনোই কিনি নাই।
রস ছিল ছোটখাট একটা মানুষ। কিন্তু এতবেশি ছোট না। তার মোছ আছিলো আর সবসময় সে বোতাম-লাগানো সুয়েটার পড়তো।
ওর বউ ওরে একবার জেলে পাঠাইছিল। সেকেন্ডটা এই কাম করছিলো। আমার মেয়ের থিকা আমি জানছিলাম যে আমার বউ তার জামিন করাইছিল। আমার চাইতে আমার মেয়ে মেলোডি’র এইটা বেশি খারাপ লাগছিল। জামিনের ব্যাপারটাতে। ব্যাপারটা এমন না যে মেলোডি আমার লাইগা ফিল করতো। সে তার মা’রে বা আমারে আমাদের দুইজনের কাউরেই পাত্তা দিতো না। এইটা পুরাটাই টাকা-পয়সার জিনিস। রসের কাছে যদি বেশি টাকা চইলা যায় তাইলে মেলোডির লাইগা টাকা কম থাকবো। এই কারণে মেলোডি’র লিস্টে রস আছিলো। এইটা ছাড়াও, শে রসের বাচ্চাদের দেখতে পারতো না, আর তাদের এত বাচ্চা-কাচ্চা থাকাটা। কিন্তু ইন জেনারেল মেলোডি কইতো যে, রস ঠিকই আছে।
সে একবার তার হাতও দেইখা দিছিল।
এই বেটা রস মেরামতের কাজকাম করতো, এখন যেহেতু তার কোন রেগুলার জব নাই। কিন্তু আমি বাইরে থিকা ওর বাড়ি দেখছি। পুরা একটা জঞ্জাল। চারদিকে আজাইরা জিনিস। উঠানের মধ্যে দুইটা ভাঙা পলিমাউথ পইড়া ছিল।
যখন ফার্স্ট স্টেইজে দিকে ওদের মধ্যে যাওয়া-আসা চলতেছিল, আমার বউ দাবি করতো যে এই বেটা অ্যাণ্টিক গাড়ি কালেক্ট করে। এইগুলি আছিল ওর ওয়ার্ড “অ্যাণ্টিক কারস”। কিন্তু ওইগুলি আছিলো জাস্ট ক্লাংকার।
আমার কাছে ওর নাম্বার আছিলো। মি. ফিক্সিটের।
কিন্তু খালি একই মহিলা নিয়া কাড়াকাড়ি করার বাইরেও আমাদের মধ্যে মিল আছিলো, রস আর আমার। যেমন, যখন টিভিটা বদমাইশি করতো সে এইটা ঠিক করতে পারতো না আর আমরা ছবি দেখতে পারতাম না। আমিও এইটা ঠিক করতে পারতাম না। আমরা আওয়াজ শুনতে পাইতাম, কিন্তু ছবি দেখতে পাইতাম না। যদি খবর শুনতে চাইতাম তাইলে স্ক্রীনের কাছে গিয়া বইসা শুনতে হইতো।
রস আর মেরিনার দেখা হয় যখন মেরিনা সোভার থাকার ট্রাই করতেছিল। শে তখন মিটিংগুলাতে যাইতো, আমি বলবো, সপ্তাহে তিন বা চারবার। আমি নিজেও মাঝে মধ্যে যাইতাম। কিন্তু যখন মেরিনার সাথে রসের দেখা হইলো, আমি বাইর হয়া আসলাম আর দিনে পাঁচবার মদ খাইতাম। মেরিনা মিটিংগুলাতে যাইতো, আর তারপর মি. ফিক্সিটের বাসায় যাইতে শুরু করলো, তারে রাইন্দা দেয়া আর ঘর-দোর ক্লিন করার লাইগা। তার বাচ্চা-কাচ্চাগুলি কোন কামেরই আছিলো না। মি. ফিক্সিটের বাড়িতে কেউ তারে হেল্প করতো না যদি না আমার বউ তার বাড়িতে যাইতো।
* * *
এইগুলি খুববেশি দিন আগের কথা না, বছর তিনেক হবে। ওই দিনগুলিতে এইসব একটাকিছু মিন করতো।
আমি আমার মা’রে সোফাতে ওই লোকের সাথে দেইখা চইলা আসলাম আর কিছু সময় এইদিক ওইদিক গাড়ি চালাইলাম। যখন আমি বাসায় আসলাম, মেরিনা আমারে কফি বানায়া দিলো।
শে যখন কিচেনে যাইতেছিল কফি বানানোর লাইগা আমি ওয়েট করতেছিলাম পানি গরম করার আওয়াজটা শোনার লাইগা। তারপর আমি কুশনের নিচ থিকা বোতলটা বাইর করলাম।
আমার মনেহয় মেরিনা আসলেই লোকটারে ভালবাসে। কিন্তু তার দিক থিকাও ছোটখাট অন্যকিছু চলতেছে – একটা বাইশ-বছরের-মাইয়া বেভারলি নাম। মি. ফিক্সিট ভালোই চালাইতেছিল একটা ছোটখাট মানুষ হিসাবে যে একটা বোতাম-লাগানো সুয়েটার পড়ে।
সে তার মিড-থার্টিসে ছিল যখন তার পইড়া যাওয়াটা শুরু হইলো। সে তার চাকরি হারাইছিলো আর বোতল তুইলা নিছিল হাতে। আমি যখনই চান্স পাইতাম তারে নিয়া ফান করতাম। কিন্তু এখন আমি আর তারে নিয়া ফান করি না।
দোয়া করি আল্লা তোমারে ভালো রাখুক, মি. ফিক্সিট।
সে মেলোডিরে কইছিল যে, সে চাঁদে যাওয়ার জিনিসটাতে কাজ করছিল। সে আমার মেয়েরে কইছিল যে অ্যাসট্রোনোটরা ওর খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড। সে তারে কইছিল অ্যাসট্রোনেটরা শহরে আসলেই তাঁদের সাথে সে তারে পরিচয় করায়া দিবো।
মি. ফিক্সিট যেই অ্যারো-স্পেইসে কাজ করতো সেইটার অপারেশন খুবই মর্ডান। আমি দেখছি সেইটা। ক্যাফেটেরিয়ার লাইন, এক্সিকিউটিভ ডাইনিং রুমস, আর এইরকম। মি. কফি’রা প্রতিটা অফিসেই যেমন থাকে।
মি. কফি আর মি. ফিক্সিট।
মেরিনা বলে যে শে অ্যাসট্রোলজি, অউরা, আই চিঙ এইরকম জিনিসগুলিতে বেশ ইন্টারেস্টেড। আমার কোন সন্দেহ নাই রস এনাফ ব্রাইট আর ইন্টারেস্টিং, আমাদের বেশিরভাগ এক্স-ফ্রেন্ডদের মতোন। আমি মেরিনারে কইছিলাম আমি নিশ্চিত আছিলাম সে যদি এইরকম না হইতো তাইলে শে তারে পাত্তাই দিতো না আসলে।
আমার বাপ মারা গেছিল আট বছর আগে, ঘুমের মধ্যে, মাতাল অবস্থায়। এইটা ছিল শুক্রবার দুপুরের একটা ঘটনা আর তার বয়স আছিলো চুয়ান্ন বছর। সে স-মিলের কাজ থিকা ঘরে ফিরা আইসা ফ্রিজার থিকা কিছু সসেজ বাইর করছিল, আর ফোর রোজেস-এর একটা কোয়ার্ট।
সেই কিচেন টেবিলে আমার মা-ও বইসা ছিল। শে লিটল রকে থাকা তার বোনের কাছে চিঠি লিখতেছিল। শেষে, আমার বাপ উইঠা পড়লো আর ঘুমানোর লাইগা বিছানায় গেল। আমার মা কইতো, সে জীবনে কোনদিন গুড নাইট বলে নাই। কিন্তু তখন অবশ্য সকাল আছিলো।
“জান,” আমি মেরিনারে কইলাম যেই রাতে শে বাসায় আসলো। “আসো তোমারে জড়ায়া ধরি একটু। তারপরে তুমি রিয়েলি নাইস একটা সাপার বানাও।”
মেরিনা কইলো, “তোমার হাত ধুইয়া আসো।”
Latest posts by ইমরুল হাসান (see all)
- পলিটিকাল ডাইরি – ২০২৪ (তিন) - নভেম্বর 15, 2024
- পলিটিকাল ডাইরি – ২০২৪ (দুই) - সেপ্টেম্বর 17, 2024
- পলিটিকাল ডাইরি – ২০২৪ (এক) - সেপ্টেম্বর 4, 2024