সাদিক সত্যাপনের কবিতা
অপার কুৎসিতের দিকে তাকাইয়া— বলো, সুন্দর!
সুন্দর হবে সেও।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]
আ আ ক্লান্তি মম
একটা টাইনি লিটল দূর
ক্রমে আসিতেছে কাছে
নীলিমার বুকে তার ঘ্রাণ ছড়াইয়া পড়তেছে— ঠায়!
এইক্ষণে আঘাত প্রচুর হা-হুতাশ করে
সাপের ফণা থিকা ঝরে যায় অনুদাত্ত সুর— ছোবলে।
বাতাসে খেলিতেছে হায়াত-মউত
এক লগে—
যে বাতাস একটু আগে ছুঁইয়া আসছে ফুল—
কাননে!
একটা টাইনি লিটল দূর
প্রকট হইতেছে ক্রমে
মগজে ছুটিতেছে ঘোড়া— পরাণে বাজতেছে খুর—
রণ ক্লান্তি ভরা দূর আসিতেছে কাছে।
সুফিতটে
আমার অঞ্চলে আমি, যেহেতু শীত।
এই ঋতুপথ দিয়া যতদূর যাই— কুয়াশা তিমির,
হু হু নিশুতি ভুবন।
বাদুড়ের ডানার শব্দে কেঁপে কেঁপে ওঠে বন। ত্রাসে।
কিছু রোইদ উড়ে যায় টেলকা বাতাসে।
তুহিন একটা শোকে কাঁপতেছে আঙন— এমনধারায়
কোনোরূপ বসন্তপট চুমে না ভ্রমর।
শীত মানে পিছনে ফালাইয়া আসা এক হেমন্তশহর!
‘দাশত-এ-তানহায়’
কিছু নিভৃত ফুলের চরিত্র আমি করতেছি প্লে—!
কি কোরে যে রেণুর অসুখ দ্যাখাই তোমারে মিতা।
অকূল তিয়াসার থও না পাইয়া যেনো
ডাঙাতে মাছের মতন ফাল পাড়তেছি,
জায়মান হৃদয়ে শুধু
আজব এক এ্যাবসার্ডিটি—সবকিছু মাত কোরে যায়।
হায়রে, ভাষাও জালেম!
তারে বোবা বানাইয়া, মনে লয়, নিরর্থ কোরে
অতিক্রান্ত হই— এইসব শীত ঋতুকাল।
ইমাজিন করি,
কোনো বরষা— ভুঁই কদম্বের দেশে,
মেঘ গাইতেছে অঝর কাজরী— শুনিতেছে মুগ্ধ বিকাল!
ভাষাবিদ: যদিও অরোরা তুমি
একা একা গুমরায় বুক, মাছের মতন—
যেনো শরীরভরতি কথা খলবল করে।
জলের মৌনতা ভেঙ্গে সাঁতরাইতেছে হাঁস
বাতাসের আদরে গাছ উঠিতেছে হেসে— ঝিরঝির।
আমার বাগানে—
মরা চাঁদের মরসুম
ইনহেল করতেছে গভীর অন্ধকার কোনো।
উঠানপানে শুধু পড়ে আছে ফাঁকা—
যেনো বিস্তৃত প্যানোরমাজুড়ে অফুরান ধূধূ!
দিগন্তে কতোসব ইমেজারি ভাসে, সুমেরুপ্রভায়—
কারও শিরীন ঠোঁট কাঁপতেছে যেনো, মনে হয়,
বাকশক্তিহীন দুই চোখ, না বলা কথায়, ছলোছলো।
তীরবর্তী জল খঞ্জনার বুক যে ঢেউয়ে উছলালো—
সেও কি পাখি?
মৃত্তিকার মতন কারা পাইতেছে হৃদয়— এইখানে—
বোবা ভাষার রক্তজবা চেনে, কার সে কুঞ্জবীথি?
অধুনার সমস্ত প্রমিতি ভেঙ্গে, হঠাৎ,
আধিদৈবিক স্মৃতিরা পাঁজরে এ্যালবাম খোলে, দ্যাখায়—
নিধুবন।
তবু এই যে রোইদ—এই ছায়া—
এইরূপ ঈশারা ডিকোড হয় না পরাণে!
সুজান! সুজান! শোক!
১.
এই যে তুমি বুঝো না
আমিও বুঝি না তোমারে।—
কখনও কি সহীহ মনে হয় এইরূপ সত্যতা
মনে কি হয় মানুষের লুব্ধ নেচারে কোনো আদিমতা আছে—?
যেনো কোনো ব্যাধ খুঁজে ফিরতেছে শিকার, অরণ্য গভীরে, এখন আর
এমন কি হয় না মনে?
কালে কালে কতোকিছু লয় হইয়া গ্যাছে। সুধীরে।
অস্থিচর্মসার!—
সেইসব অরণ্যবেলা বুঝবার পারতেছো না বলে
আজন্ম পিছুটান আসে—
এই যে তোমারে বুঝি না
তুমিও বুঝো না আমারে।
মনে হয়,
কতোদূর অদেখা হরিৎ তুমি— ঘন জঙ্গল
আমি চির অসীম পাথর!
কদাচিৎ, হীরামন পাখিরা দিতেছে তোমার খবর
সারাক্ষণ বুকে ইকো করতেছে সেই ধ্বনি,
এমনি কি মনে হয় না সজনী, কেউ কাউরে ছুঁইতে পারি না,
প্যারালাল নদী হইয়া বইয়া যাইতেছি
পাশাপাশি দুই জলাভূমি—
কোনোদিন আমি বুঝি না
আমারেও বুঝো নাকো তুমি!
২.
তোমার ওই মুনিয়া হৃদয়ে
স্তিমিত হইতেছে শোক— আলতো বিরহে
একটু আরমান তারে জপতেছে এখনও,
যেনো খিয়ো নক্ষত্রের পাশে ম্রিয় অরুন্ধতী।
এইভাবে তোমারে এ্যাজিউম কোরে নিতেছি।
আমার এই মুনিয়া হৃদয়ে তুমি হইতেছো ম্লান—।
যেনো স্মৃতিগত দূরে মুয়াজ্জিন দিতেছে আজান,
সমস্ত বিচ্ছেদের পরে সেই রুহের বাগান— অপরূপ!
আহা! পিউল শাখার পাখি
এমন আদরে ডাকিতেছে— পিই…উ..ও
আমাদের মুনিয়া হৃদয়ে মাইনর হইতেছে শোক,
প্রেমও—?
৩.
নাগর, এবার অন্যকিছু কও
অন্য কোনোকিছুর কামনা জাগে।
চারিদিকে নষ্ট প্রণয়
চোক্ষের মাতাল আবেগে আর বধে না পরাণ।
ভালোবাসা নাকি সোনালু ফুলের লাহান, অন্তরে—
বাসন্তী বাও ছুঁইলেই ফোটে,
ঝুমকা দুলের লাহান ঝুমুর ঝুমুর বাজে!
ভালোবাসা নাকি কুরুয়ার মন
দিনভর কুহু-কুহু?—কামনার হরিণাভা ব্রজে
যে আমারে খোঁজে—আমি যারে—
পরাণের গহীন গাঙের মাঝে ওই ডোবে আর ডোবে
ইতিউতি;
বেহুদা আমার পীরিতের আন্ধার ঘরে সুখের বেসাতি!
নাগর, এবার অন্যকিছু কও
অন্য কোনোকিছুর কামনা জাগে।
ও পাখোরিয়া, আমারে একবার পক্ষিণী নামে ডাকো,
গতর ভাসান দিয়া দেখি ক্যামন ঠ্যাকে—!
………………………………
এমন চড়া রোইদ – লু হাওয়ায়!
একটা গাছ ইমাজিন করতেছে
যেনো সে বসিয়া আছে আরেকটা গাছের ছায়ায়।
……………………………..
হায়ারার্কিখচিত শোভায়
একটা মামুলি শব্দ কবিতা হইয়া উঠিবার চায়।
অচল আধুলির ন্যায়
ব্রাত্য সে; তবু
ভুখা বিড়ালের মতন অনায়াসে আবদার করে—
মাছ তো চাই নাই প্রভু, কাঁটা দাও এই তুচ্ছ আমারে।
কী তার উম্মীদ! ভাবি—
দশ পয়সার মতনই সে যদি জেগে ওঠে প্রজ্ঞায়
তারে নিয়া রচিবো কি কবিতা আমার,
হায়ারার্কিখচিত শোভায়?
ভাতের বলক থিকা মাড় ছেটে ফেলি।
মামুলি শব্দ হে, তুমি কি আর বোঝো এইসব—
সুচারুতা? সুগন্ধের মানে?
সে বলে, একইভাবে অনিন্দ্য বানাও আমারে!
সারাবেলা নাছোড় স্বভাবে আকুতি জানায়
প্লিজ—?
সুতরাং,
বাক্য ভেঙ্গে তারে দ্যাখাই দহলিজ, দ্যাখো—
সারি সারি মেকি শব্দেরা পশ, জোর কোরে হা হা,
ডানাকাটা মানুষ ভিতরে।
তারচে হায়রে নিষাদ; বর্বর—চলো,
একটা নিরর্থ বিকাল কাটাই এক লগে, খামোখায়
হায়ারার্কিখচিত শোভার— এ মরসুমে।
অহেতু ফিলানথ্রোপি
মাছরাঙ্গা পাখিটা সারাদিন বসে কথা কয় খুঁটার লগে।
কি অর্থ হয় তার
মাছের অপেক্ষাটুকু বাদে?
ক্লান্তি এলোমেলো কোরে গুছাই আবার
গুছাইয়া ক্লান্ত হই ফের।
মনোটোন— মানুষ শুনিতেছে একা; একাকী!
জলের মাতৃভাষা ঢেউ— কলতান।
মাছ ছাড়া ঘ্রাণ নাই কোনো, নদীজীবটার।
কচুরিপানার মতন বিলোল কেউ— আছে কি?
জানি না।
তবু অর্থ হয়, একটু অপেক্ষা পুষে রাখি,
এসে দেখে যাও কেউ—
সকরুণ ভিক্ষার মতন অহেতু ফিলানথ্রোপি। মননে।
সাদিক সত্যাপন
Latest posts by সাদিক সত্যাপন (see all)
- সাদিক সত্যাপনের কবিতা - মার্চ 14, 2019