আমার ফিরার অধিকার: এডওয়ার্ড ডব্লিউ. সাইদ
যতদিন না ইসরাইল ফিলিস্তিনি জনগনের সাথে যা করসে সেইটার মোরাল রেসপনসিবিলিটি নিজেদের কাধে নিতেসে, ততক্ষন পর্যন্ত এই কনফ্লিক্টের কোনো শেষ হইতে পারে না
…
ইসরাইলের সবচে ইনফ্লুয়েনশাল দৈনিকে আগেও আমার ইন্টারভিউ ছাপা হইসে। কিন্তু এইটা ছিল সবচে লম্বা ও সবচে বেশি প্রিপারেশন নিয়া করা ইন্টারভিউ। ২০০০ সালের আগস্ট মাসের শুরুর দিকে নিউইয়র্কে রাইটার এবং জার্নালিস্ট আরি শাভিত (Ari Shavit) তিন দিন সময় নিয়া আমার সাথে কথা বলসিলেন। আমারে এই ব্যাপারটা সবচে নাড়া দিসিল যে, এরকম একটা ইন্টারভিউ ইসরাইলে জাতিয় দৈনিকে পাবলিশ হইতে পারে, কিন্তু মার্কিন আমেরিকার সেটাপে এরকম কিছু করা সম্ভব না।
– এডওয়ার্ড ডব্লিউ সাইদ
…
নিউ ইয়র্ক রওনা হওয়ার কিছুক্ষন আগে বাড়িটা আমি দেখতে গেসিলাম। বেশি দুর যাইতে হয় নাই আমার। আমি যেখানে থাকি তার থেকা বাড়িটা মোটামুটি ৩০০ মিটারের ভেতরে এবং যাওয়ার পথে একটা পাবলিক গার্ডেনের দেখা পাওয়া যায়, যেইখানে আমার মেয়ে খেলতে পছন্দ করে। বাড়িটার স্ট্রাকচার নিয়া বলার মতো তেমন কিছু নাই। দুইতলা, কোনাকুনি, তেমন কোনো সাজসজ্জা ছাড়া প্রটেস্ট্যান্ট ঘরানার একটা আর্কিটেকচার হিসেবে বাড়িটারে কনসিডার করা যায়। তখনকার তালবিয়ার i খ্রিষ্টান আরবরা বসবাসের জন্য নিজেদের সবটুকু দিয়া যেরকম ঝকমকা পরিপাটি বাড়িগুলা বানাইতেন, এই বাড়িটা তেমন না। বরং খুব বেশি ফরমাল, আয়তাকার, সামনের উঠানে একটা তালগাছ, ছোটো একটা সিড়ি আর সুন্দর একটা প্রবেশপথ। এই প্রবেশপথের কথা-ই সাইদ নিয়মিত বিভিন্ন জায়গায় বইলা থাকেন। এই তালগাছটার কথা এখনো তার মনে আছে। আর বাড়িটার আশেপাশে অন্য কোনো বিল্ডিং না থাকার বিষয়টাও। এগুলার সবই শৈশবে একটা কনভারসেশন শুইনা প্যানিকড হওয়ার আগের ঘটনাঃ কেউ একজন ইহুদিদের তরফ থেকা আসন্ন বিপদের কথা বলতেসিল। আরেকজন বলসিল, ভয়ের কিছুই নাই। সময় হইলে হকিস্টিক লাঠিসোটা নিয়া পোলাপানরাই ইহুদিদের ভাগায়া দিবে।
নিজের ফ্যামিলির বাসা ছাড়ার এগজাক্ট মোমেন্ট সাইদের মনে নাই। বাসায় শেষ দিন, বা শেষ সময়ের কোনো মেমোরিও নাই। যা ঘটসিল সেটা হইতেসে, প্রতি বছরের মতো ঐবারও শীতের শুরুতে উনারা কায়রোর বাসায় ফিরা গেসিলেন। কিছুদিন পরে সাইদ শুনসিলেন, ফিলিস্তিনে ভয়ংকর কিছু একটা ঘটসে। আর আস্তে আস্তে, আরো পরে তিনি বুঝতে পারসিলেন, তারা আর ফিরা যাইতে পারবেন না। জেরুজালেমে তাদের আর কোনো জায়গা নাই। তাদের কিছু আত্মিয় এবং ফ্যামিলি ফ্রেন্ড নিজেদের সবকিছু হারায়া এখন রিফিউজি হয়া গেসে।
আগস্টের শুরুতে সামার ভ্যাকেশনের মাঝামাঝি সময়টাতে নিউ ইয়র্কের আধা-খালি কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি একলা একটা জায়গা। আর ফিলসফি ডিপার্টমেন্টের করিডোরে যেন অন্ধকার তার ডালপালা ছড়ায়া নিয়া বসছে। কিন্তু পাচ তলার উপরে এডওয়ার্ড ডব্লিউ সাইদের অফিসটা ভালোই চওড়া, আর আলো-বাতাসের সুন্দর যাতায়াত সেইখানে আছে। বিভিন্ন ভাষার ডকুমেন্ট, বই আর জার্নালের গাদাগাদিতে ভর্তি এই রুমে কমফোর্টেবল একটা বিশৃঙ্খল ব্যাপার আছে। সবকিছুর মাঝে একটা কর্নারে ইয়েশ গভুল মুভমেন্টের ii একটা পুরানা পোস্টার ঝুলতেসে যেইটাতে লেখা: Don’t say ‘I didn’t know.’ আর তারও উপরে একটা শেলফে দেখা যাইতেসে সোনালি রঙের ফিলিস্তিনের একটা ম্যাপ।
গত এক বছরে তার চুল সাদা হয়া গেসে। পাকস্থলি ক্যান্সারের বাইড়া যাওয়ার বিষয়টাও বেশ ভোগাইতেসে উনারে। এতো কিছুর পরেও এডওয়ার্ড সাইদ এখনো হ্যান্ডসাম একটা মানুষ, নিজের এপিয়ারেন্স ও ড্রেসের ব্যাপারে বেশ সচেতন। জ্যাকেটের পকেটে সিল্কের একটা রুমাল দেখা যাইতেসে আর ডেস্কে রাখা পেলেগ্রিনোর বোতলের দিকে যখনই হাত বাড়াইতেসিলেন, গোল্ডের ঘড়িটা চকচক কইরা উঠতেসিল।
পারসোনালিটির দিক থেকা সাইদের তুলনা হয় না কারো সাথে। পশ্চিমের সবচে ফেমাস ফিলিস্তিনি ইনটেলেকচুয়াল খুবই মাইডিয়ার টাইপের মানুষ। একইসাথে জ্ঞানি এবং চালাক। খুবই পলিটিকাল, ইমোশনাল, সেইসাথে সেন্স অফ হিউমারওয়ালা একটা লোক। খুব সহজে তিনি দান্তের iii পোয়েটিক কথাবার্তা থেকা স্টার্নহেলের iv জায়নিস্ট-প্যাদানো আলাপে গিয়া আবার একই জায়গাতে ফিরা আসেন। বিভিন্ন ভাষা ও কালচারাল লেভেলের মাঝামাঝি যে জায়গায় উনার বসবাস, নিজের আলাদা আলাদা আইডেন্টিটি, সেগুলার মধ্যে দিয়া চলাফেরা করতে তিনি বেশ আনন্দ পান। যেন বা একইসাথে ব্রিটিশ, আমেরিকান ও আরব হওয়ার বিষয়টারে উনি সেলিব্রেট করতেসেন। একইসাথে রিফিউজি ও অভিজাত, সাবভার্সিভ ও কনজারভেটিভ, লিটারারি একজন ব্যক্তি ও প্রোপাগান্ডিস্ট, ইউরোপিয়ান ও মেডিটেরেনিয়ান।
টেপ রেকর্ডার চালু করার আগে সাইদ আমার ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়া বিস্তারিত জানতে চাইলেন। আমি কতোদিন ধইরা ইসরাইলে আছি, আমার ফ্যামিলি কোথা থেকা আসছে এইসব। আর আস্তে আস্তে আমরা আমাদের কমন এলাকা নিয়া কথা বলতে শুরু করলাম। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় আগে কিছু সময়ের জন্য সেইখানে তিনি থাকতেন। এখন ঐখানে আমি থাকি। আর আমরা কথা বললাম আমাদের দুইজনের পরিচিত বিভিন্ন বিল্ডিংগুলা নিয়া। আমাদের দুইজনের পরিচিত অনেকগুলা পদবিওয়ালা ফ্যামিলির ব্যাপারেও কথা হইল। আমি চেষ্টা করতেসিলাম, আলাপের ভেতর খুব সতর্কতার সাথে সবচে সেন্সিটিভ জায়গাটা নিয়াও নাড়াচাড়া করতে, যেহেতু তিনি আমার ‘অপর’ (Other)। আমি তার ‘অপর’। এবং আমাদের আজিব ও ট্রাজিক ইন্টিমেসি। তার, আমার ও তালবিয়ার মধ্যে।
/আরি শাভিত; আগস্ট, ২০০০
…
প্রফেসর সাইদ, আপনার মতো রেকগনাইজড একজন স্কলার গ্রীষ্মের শুরুর দিকে লেবানিজ বর্ডারে ইসরায়েলি আর্মি পোস্টে পাথর মারসে শুইনা বহু ইসরায়েলি এবং নন-ইসরায়েলি অবাক হইসে। দক্ষিণ লেবানন থেকা ইসরাইল চইলা যাওয়ার পরেও কোন জিনিসটা আপনারে দিয়া এরকম আজিব একটা কাজ করাইসিল?
একটা সামার ভিজিটে আমি লেবানন ছিলাম। ঐখানে আমি দুইটা লেকচার দিসি এবং বন্ধুবান্ধব আর ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে কিছুদিন ছিলাম। তারপর হিজবুল্লাহ’র [/ref]লেবানিজ শিয়া ইসলামিস্ট পলিটিকাল পার্টি ও মিলিট্যান্ট গ্রুপv সাথে আমার একটা মিটিং হয়। খুবই ইম্প্রেসিভ মনে হইসে মানুশটারে। খুব সিম্পল, বেশ ইয়াং, এবসলুটলি নো বুলশিট। আমেরিকার এগেনস্টে ভিয়েতনাম যে স্ট্রাটেজি ফলো করসিল, ইসরাইলের বিরূদ্ধেও এই লোক সেইম জিনিস এডপ্ট করসিলেনঃ অদের সাথে আমরা ফাইট করতে পারবো না কারন অদের হাতে আর্মি, নৌবাহিনি আর নিউক্লিয়ার বোমা আছে, কাজেই অদের সাথে ফাইট করার একমাত্র উপায় একের পর এক কফিন পাঠায়া তাদের বুঝায়া দেয়া। আর এগজাক্টলি এই কাজটাই তিনি করসেন। মিডল ইস্টে যতো পলিটিকাল লিডারের সাথে আমি দেখা করসি, তাদের ভেতর একমাত্র এই লোকটাই ঠিক সময়ে মিটিংয়ে আসছিলেন। বিষয়টা নিয়া খুবই ইমপ্রেসড হইসিলাম আমি। তার আশেপাশে কালাশনিকভ হাতে কোনো লোকজন ছিল না। আমরা এই ব্যাপারে একমত হইসিলাম যে, ফিলিস্তিনি অধিকার রিক্লেইম করার রাস্তায় অসলো চুক্তি vi পুরাপুরি ইনেফেক্টিভ একটা জিনিস ছিল। তিনি আমারে বলসিলেন যে, দক্ষিণ অঞ্চলটা আমার অবশ্যই একবার গিয়া দেইখা আসা উচিত। তাই কিছুদিন পর আমি গেসিলাম ঐখানে।
আমরা ছিলাম নয়জন। আমার ছেলে আর অর ফিয়ান্সে, আমার মেয়ে আর অর ফ্রেন্ড, আমি ও আরো কয়েকজন। সাথে লেবানিজ একজন গাইড। প্রথমে আমরা গেলাম খিয়াম কারাগারে vii জায়গাটা আমাদের সবার ওপর কঠিন ছাপ ফেলসিল। জীবনে অনেক বাজে জায়গা আমি দেখসি কিন্তু, এইটা ছিল সম্ভবত সবচে বাজে। অনেকগুলা সলিটারি কনফাইনমেন্ট সেল আর টর্চার চেম্বার। অদের ইউস করা ইলেকট্রিক প্রোবগুলাসহ টর্চার করার বিভিন্ন ইনসট্রুমেন্ট তখনো রয়া গেসিল ঐখানে। মানুষের পেশাব-পায়খানা আর অত্যাচারের গন্ধে ভরা ছিল জায়গাটা। এই হরর ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। আমার মেয়ে গোঙ্গানি কইরা কানতে শুরু করসিল।
সেখানে থেকা আমরা ডিরেক্ট বর্ডারে গেলাম। জায়গাটার নাম ছিল বোয়াবিত ফাতেমা, ফাতেমা গেট (Bowabit Fatma, Fatma’s Gate)। শত শত টুরিস্ট ঐখানে প্রচুর পরিমাণ কাটাতারের মুখামুখি দাড়ায়া ছিল। আরো প্রায় ২০০ মিটার দূরে ছিল একটা ওয়াচ-টাওয়ার। এইটাও কংক্রিট আর কাটাতার দিয়া ঘেরাও করা। সম্ভবত টাওয়ারে ইসরাইলি সৈন্যরা ছিল, কিন্তু আমি দেখি নাই তাদের। টাওয়ারটা মোটামুটি ভালোই দূরে ছিল।
আমার রিগ্রেটের জায়গাটা হইতেসে, (পাথর মারার) বিষয়টা মানুষের কাছে ক্লিয়ারলি প্রকাশ পায় নাই। লোকে ভাবসে আমি হয়ত কারো দিকে পাথর মারতেসিলাম। কিন্তু আসলে ঐখানে কেউ ছিল না। ঘটনা হইতেসে, আমার ছেলেসহ আরো কিছু ইয়াং পোলাপান দেখতেসিল কে কতোদুরে পাথর ছুইড়া মারতে পারে। আমার ছেলে যেহেতু বেসবল খেলা বিশাল বডির আমেরিকান, অর পাথরটাই সবচে দূর পর্যন্ত গেসে। আমার মেয়ে তখন বলল, ‘আব্বু, তুমি ওয়াদি (Wadie) পর্যন্ত একটা পাথর ছুইড়া মারতে পারবা?’ আর জিনিসটা তখন ইদিপাল (Oedipal) একটা কমপিটিশন হয়া দাঁড়াইল তখন। তাই আমিও একটা পাথর ছুইড়া মারসিলাম।
ইসরাইল মাত্র দক্ষিণ লেবাননের দখল ছাড়সে এমন সময়ে ফাতেমা গেটে পাথর মারাটা খালি আজাদির সেলিব্রেশন না, বরং কোনোকিছুর প্রতি একেবারে বেসিক লেভেলের একটা রিজেকশন বইলা মনে হয়। এই রিজেকশনটা কিসের প্রতি?
ইসরাইলিদের প্রতি রিজেকশন। ২২ বছর আমাদের জমিন দখল কইরা রাখার পরে অদের চইলা যাওয়ার ফিলিংস। সেইসাথে অদের তাড়ায়া দেয়ার একটা অনুভুতিও এইখানে আছে। তোমরা শুধু চলেই যাইতেস না, তোমরা চইলা যাওয়াতে এই অস্বস্তিকর অবস্থা থেকেও আমরা মুক্তি পাইসি। আমরা চাই না তোমরা এইখানে আবার ফিরা আসো। তাই পুরা এনভায়রনমেন্টটা এখন উতসবমুখর। হেলদি একটা এনার্কির বোধ এবং বিজয়ের অনুভুতি। আমার এবং ফাতেমা গেটে জড়ো হওয়া মানুষগুলার জীবনে প্রথমবারের মতো এই ফিলিংস হইতেসে, আমরা জিতসি। একটা লড়াই আমরা জিতসি।
প্রফেসর সাইদ, এই সামারে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিরা আপনাদের ও আমাদের ভেতরকার শত-বছরের কনফ্লিক্ট মিটানোর চেষ্টা করতেসে। এইটা ব্যাপারটা কি সম্ভব? এই সংঘাতের সমাধান কি হইতে পারে?
আমি মনে করি, এইটা সম্ভব। কিন্তু আমার মনে হয় না ইয়াসির আরাফাত কনফ্লিক্টের অবসান ঘটাইতে নিজের সিগনেচারটা দিতে পারবেন। ক্যাম্প ডেভিডে viii বিল ক্লিনটনের ix এরেঞ্জ কইরা দেয়া অনুষ্ঠানে বইসা কাজটা করার অধিকারও তার নাই। যতদিন ইসরাইল ফিলিস্তিনি জনগনের সাথে যা করসে সেইটার মোরাল রেসপনসিবিলিটি নিজেদের কাধে না নিতেসে, ততক্ষন পর্যন্ত এই কনফ্লিক্টের কোনো শেষ হইতে পারে না।
১৯৬৭ সালে শুরু হওয়া দখলদারি এবং মানুষরে নিজের জায়গা থেকে উচ্ছেদের জন্য ইসরাইলের বিরূদ্ধে আমাদের সব দাবি-দাওয়ার একটা বিল প্রয়োজন। আরো যা প্রয়োজন, কমসে-কম ফিলিস্তিনি সমাজরে ধ্বংস করা, মানুষরে নিজের জায়গা থেকে উচ্ছেদ এবং তাদের জমি বাজেয়াপ্ত করার মতো অপরাধগুলা সংগঠিত হওয়ার স্বীকৃতি আদায় করা। একইসাথে সাবরা ও শাতিলা x রিফিউজি ক্যাম্পে মানুষ খুন করার মতো জঘন্য অপরাধগুলা সহ গত ৫২ বছরের জুলুম এবং দুর্ভোগেরও।
আমি বিশ্বাস করি, কনফ্লিক্ট কেবল তখনই শেষ হইতে পারে যখন ইসরাইল সবকিছুর দায় নিজেদের কাধে তুইলা নিবে। আমি আরো মনে করি যে, একটা নেরেটিভ তৈরির চেষ্টা করা উচিত যেটা মানুষরে বলবে যে, ‘এখানে এই এই জিনিসগুলা হইসে’।
এই নেরেটিভটা কি? পুরা কনফ্লিক্টটা কি নিয়ে হইতেসে?
এইটা প্রায় ব্যাপক আকারের একটা কনফ্লিক্ট। গতরাতেই আমি বারেনবোইমকে xi এই চেইন অফ ইভেন্টের ব্যাপারে বলতেসিলাম। এন্টি-সেমেটিজম, ইহুদি একটা আবাসভুমি খোঁজার জরুরত, হার্তজেলের xii অরিজিনাল আইডিয়াটা যে সবদিক থেকাই কলোনিয়ালিস্ট ছিল, আর তারপর মোশাভ এবং কিবুতজের xiii সোশালিস্ট আইডিয়াগুলার ট্রান্সফরমেশন, হিটলারের আমলের আর্জেন্সি, এবং আইজাক শামিরের xiv মতন লোকেরা যারা আসলেই হিটলারের সাথে কো-অপারেট করতে ইনটারেস্টেড ছিল, তারপর ইউরোপে ইহুদিদের ওপর চালানো জেনোসাইড এবং ফিলিস্তিনের মাটিতে ফিলিস্তিনিদের এগেনস্টে ১৯৪৮ সালে চালানো কাজগুলা…একটার পর একটা ঘটনাগুলার চেইন অফ ইভেন্টের কথা বলতেসিলাম আমি। ঘটনারগুলার সিরিয়ালের বিষয়টা নিয়া।
এই চেইন অফ ইভেন্ট নিয়া যখন আপনে চিন্তা করবেন, যখন আপনে ইহুদি এবং ফিলিস্তিন নিয়া আলাদাভাবে চিন্তা না করে দুইটারে একটা কমন সিমফোনির অংশ হিসেবে ধরবেন, দেখবেন পুরা বিষয়টাতে ব্যাপকমাত্রায় চাপায়া দেয়ার মতো একটা ব্যাপার আছে। একটা সমৃদ্ধ, কিন্তু একইসাথে ট্রাজিক, অনেকদিক থেকাই এক্সট্রিম সব ঘটনা এবং কর্মকান্ডের ডেসপারেট একটা ইতিহাস। হেগেলিয়ান সেন্সে এইটারে অপজিটস (opposites) বলা যাইতে পারে। এই ইতিহাস তার পাওনাটা এখন পর্যন্ত বুইঝা পায় নাই। কাজেই যে জিনিসগুলার মুখামুখি আপনে হইতেসেন সেগুলা হলো, ব্যাপক মাত্রার ট্রাজেডি, পরাজয়, স্যাক্রিফাইস এবং দুর্ভোগের ঘটনাগুলার যোগফল; যেইটা পুরাপুরি বুঝতে হইলে বাখের xv মতো একটা মানুষের ব্রেইনের দরকার পড়বে। যার গভিরতা মাপতে চাইলে এডমুন্ড বার্কের xvi লেভেলের কারো ইমাজিনেশনের দরকার হবে। কিন্তু এইরকম বিশাল একটা ব্যাপার নিয়া ডিল করতেসে বিল ক্লিনটন, ইয়াসির আরাফার আর এহুদ বারাকের xvii মতো পেরেকমারানি লোকেরা। যেকোন্য সমস্যা হইলেই যাদের কাজ সেইখানে একটা পেরেক মারা। এরা সেইম চিন্তা-ভাবনার ঝাড়ুদার লোকজনের একটা গ্রুপ যারা সমস্যার আসল জায়গায় হাত না দিয়া আশেপাশের ধুলা সাফ করে। পুরা ব্যাপারটা একটা ফার্নিচার কল্পনা করলে এরা খালি এইটারে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সরাইতে পারবে। পুরা শান্তি প্রক্রিয়াটারে আমি এভাবেই দেখি।
এটা কি একই জমির ওপর সমান মালিকানার হক আছে, এমন দুইজন মানুষের সমানে সমান কনফ্লিক্ট?
এই কনফ্লিক্টে সমান-সমান কোনো ব্যাপার নাই। এটা সবাইরে স্বীকার করতেই হবে। আমি গভিরভাবে এইটা বিশ্বাস করি। এই কনফ্লিক্টের একটা সাইড গিলটি, আরেকটা সাইড ভিকটিম। ফিলিস্তিনিরা ভিকটিম। আমি বলতে চাই না যে, ফিলিস্তিনিদের সাথে যা হইসে সবই নেশন হিসেবে ইসরাইলের জন্মের ডায়রেক্ট রেজাল্ট। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের জীবনে আসল তছনছের শুরুটা হইসে জায়নিস্ট হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়া, আমাদের নেরেটিভ অনুযায়ী এই শুরুটা হইসে বেলফোর ডিক্লারেশন xviii এবং তার পরবর্তি ঘটনাগুলার মধ্য দিয়া। এর কারণে একটা জাতির মানুষদের রিপ্লেস করা হইসে আরেকটা জাতির মানুষ দিয়া। এবং কাজটা আজও চলতেসে। এই কারনে ইসরাইল আর দশটা দেশের মতন কোনো রাষ্ট্র না। এইটা ফ্রান্সের মতো না, কারণ এইখানে অবিচার এখনো চলমান। ইসরাইল রাষ্ট্রের আইন এই অবিচার ও জুলুমকে জিলায়া রাখে।
এইটা থিসিস এবং এন্টি-থিসিসের একটা ডায়ালেক্টিকাল কনফ্লিক্ট (dialectical conflict)। সিনথেসিসের কোনো জায়গা নাই এইখানে। ইন দিস কেইস, আমি মনে করি না যে, ডায়ালেকটিক বৈপরিত্যগুলার কোনো সমাধান সম্ভব। ফিলিস্তিনিদের নিজেদের মাটিতে থাকার তাড়নার সাথে জায়নিস্টদের মেসিয়ানিক ও হলোকাস্ট ভিত্তিক আবেগের মিলন ঘটানো যাইতে পারে, এরকম কোনো উপায় আমার জানা নাই। এইগুলা ফান্ডামেন্টাল দিক থেকেই আলাদা কিসিমের আবেগ। এজন্য আমি মনে করি কনফ্লিক্টের এসেন্সটা হইতেসে, এই দুই আবেগের একে অপররে শত্রু ভাবার বিষয়টা।
আপনি কি বলতেসেন যে, আমাদের এইখানে আসাটা উচিত হয় নাই?
আপনার প্রশ্নটা অনেক বেশি “কি হইলে কি হইতো” টাইপ হয়া গেসে। আপনাদের আসাটা উচিত হয় নাই বললে কথাটার মানে দাড়াবে, আপনাদের চইলা যাওয়া উচিত। আর আমি এর বিপক্ষে। অনেকবার বলসি আমি কথাটা। আমি আপনাদের চইলা যাওয়ার পুরাপুরি বিপক্ষে। আমি শুধু এইটুকু বলবো, জায়নিস্ট আদর্শের যুক্তির লেজ ধইরা আপনারা যখন এইখানে আসছিলেন, আপনাদের বোঝা উচিত ছিল, অলরেডি মানুষের বসতি আছে এমন একটা জায়গাতে আপনারা আসতেছেন।
আমি আরো বলব, এমন কিছু মানুষ আপনাদের মাঝে ছিল যারা মনে করতো এইখানে আপনাদের চইলা আসাটা ঠিক হইতেসে না। আহাদ হা’ম xix এমন লোকেদের একজন। ১৯২০ সালে যদি আমি ঐখানে থাকতাম, আমিও কাজটার বিরুদ্ধে সবাইরে সতর্ক করতাম। কারন, আগে থেকাই আরবরা জায়গাটাতে বসবাস কইরা আসতেছিল। এবং আরেকটা কারণ, গণ-ইমিগ্রেশন (mass immigration) ও বিজয়ের মুভমেন্টগুলা নিয়া ঐভাবে ভালো লাগা কাজ করে না আমার ভেতরে। কাজেই আপনাদের এখানে চইলা আসার আইডিয়ার পক্ষে আমি কথা বলতাম না।
আপনি কি এইটা স্বীকার করবেন যে, এইখানে আসাটা আমাদের জন্য দরকারি ছিল? আপনি কি স্বীকার করবেন, ১৯২০ এবং ৩০-এর দশকে যারা আসছিল, এইখানে না আসলে তাদের বেশিরভাগ ইউরোপে মারা পড়তো?
আমি সেই হাতেগোনা আরবদের একজন যার হলোকাস্ট নিয়া লেখা জিনিসপাতি আছে। আমি বুচেনওয়াল্ড xx, দাচাউ xxi এবং অন্যান্য ডেথ ক্যাম্পগুলাতে গেসি। চেইন অফ ইভেন্টগুলার কানেকশন আমি দেখতে পাই। আমি এটা মাইনা নিবো যে, বেশিরভাগ এভিডেন্সই সাজেস্ট করে এইখানে চইলা আসার একটা প্রয়োজন মানুষ অনুভব করসে। কিন্তু যারা আসছে তাদের প্রতি কি আমার খুব একটা সিমপ্যাথি আছে? সামান্য আছে। জায়নিজমরে জাস্ট নামমাত্র একটা ইডিওলজি হিসেবে মাইনা নেয়াটা আমার জন্য কঠিন। আমি মনে করি ইউরোপিয়ান ইহুদিদের মার্কিন আমেরিকা, কানাডা, ইংল্যান্ডের মতো অন্য দেশগুলিতে একোমোডেট করা যাইতো। আমি এখনো ব্রিটিশদের ব্লেইম করি কারন, ইহুদিদের অন্য কোথাও জায়গা না কইরা দিয়া বরং তাদের ফিলিস্তিনে আসতে দিসে।
পরেরটা নিয়া কি বলবেন? ১৯৪৭ সালের পার্টিশন প্ল্যান কি আপনি মাইনা নিতেন?
আমার ইন্সটিংক্ট অনুযায়ি উত্তরটা হবে, ‘না’। মাইনরটিরা মেজরিটিদের সমান অধিকার পাবে, এই বেসিসে তৈরি করা প্ল্যানটা আনফেয়ার ছিল। হয়ত বিষয়টা ঐখানেই আমাদের ছাইড়া দেয়া উচিত হয় নাই। হয়ত আমাদের নিজেদের তৈরি একটা প্ল্যান নিয়া আগায়া আসা উচিত ছিল। কিন্তু আমি বুঝতে পারি, পার্টিশন প্ল্যান তখনকার ফিলিস্তিনিদের কাছে একসেপ্টেবল ছিল না।
১৯৪৮ সালের ফিলিস্তিনি ট্রাজেডির মোরাল রেসপনসিবিলিটিও কি খালি ইহুদিদের ঘারে পড়ে? আরবরাও কি এই ট্রাজেডির সমান ভাগিদার না?
১৯৪৮ সালের যুদ্ধটা ছিল দখলদারির যুদ্ধ। ঐ বছর যা হইসে, সেইটা ছিল ফিলিস্তিনি সোসাইটির ধ্বংস, ঐ সোসাইটিরে আরেকটা সোসাইটি দিয়া রিপ্লেস করা, এবং আন-ওয়ান্টেড লোকেদের নিজ জায়গা থেকা উঠায়া দেয়া। এই রাস্তায় যারা বাধা হয়া দাড়াইসিল, তাদেরকেও উচ্ছেদ করা হইসে। সব দায় খালি এক পক্ষের উপরেই পড়বে, এমনটা বলা কঠিন। কিন্তু শহরগুলা খালি করা এবং ধংস করার সিংহভাগ দায় জায়নিস্ট ইহুদিদের ঘারেই পড়বে। আইজাক রবিন xxii রামলে (Ramle) এবং লিড্ডার (Lydda) ৫০,০০০ বাসিন্দাকে উচ্ছেদ করসে, কাজেই এই কাজের জন্য অন্য কেউ রেসপনসিবল হবে এমন কথা আমি বলতে পারবো না। ফিলিস্তিনিদের একমাত্র অপরাধ ছিল সেইখানে বসবাস করা।
ইভেন্টগুলার সিকুয়েন্সের দিকে আপনি যখন নজর দেন, যেটারে আপনার নজর থেকা নেরেটিভ বললেন, আপনার ইমোশনাল রিয়্যাকশনটা তখন কি রকম হয়?
রাগ। প্রচন্ড রাগ হয়। নানাভাবে আকারে-ইঙ্গিতে আমাদের বলে দেয়া হইসে, ‘তোমাদের জন্য আমরা রেসপনসিবল না, জাস্ট ভাগো, আমাদের একলা থাকতে দাও, আমরা যা খুশী তাই করবো।’ আমি মনে করি এইটা ছিল প্রচন্ড রকমের পিশাচগিরি, অত্যন্ত একতরফা একটা কাজ।
আমি মনে করি এইটা জায়নিজমের মূর্খতা। ডিনায়ালের বিশাল দেয়ালগুলা আজও ইসরাiলি লাইফের বেসিক কাঠামোর অংশ। আমার মনে হয় না একজন ইসরাiলি হিসেবে ইরেজ ক্রসিং xxiii কিংবা কোনো চেকপয়েন্টে আপনারে অপেক্ষা করা লাগসে। ইটস প্রেটি ব্যাড। প্রচন্ড রকমের হিউমিলিয়েটিং। এমনকি আমার মতো প্রিভিলেজ একটা মানুষের বেলাতেও এইটা সত্য। এর কোনো এক্সকিউজ থাকতে পারে না। অপরের প্রতি অমানবিক আচরণ ক্ষমার অযোগ্য। কাজেই আমার রিয়েকশন হইতেসে রাগ। প্রচন্ড রাগ।
আপনি কি আমাদের ঘেন্না করেন?
না। মজার বিষয় হইতেসে, ইমোশন হিসেবে ঘেন্না জিনিসটা আমি ফিল করি না। বরং রাগ জিনিসটা অনেক বেশি প্রোডাকটিভ।
কিন্তু আপনার ভার্সনের ফিলিস্তিনি নেরেটিভে ঘেন্নার ব্যাপারটা প্রায় ইনেভিটেবল।
আপনি জার্মানদের ব্যাপারে কি ফিল করেন?
দুইটা কি সেইম জিনিস?
আমি বলতেসি না যে দুইটাই সেইম জিনিস। আমি জাস্ট ভাবতেসি। আপনি যদি বড় রকমের অন্যায়ের শিকার হন, আপনি কি ফিল করেন?
আমার মনে হয় আমি জার্মান নাজিদের ঘেন্না করি, কিন্তু শুধুমাত্র ঘেন্না দিয়া পুরা জিনিসটা এক্সপ্রেস করা যাবে না।
এইটা শক্তিশালি একটা ইমোশন, বিশেষ কইরা কারণ, এখনো আমাদের সাথে অন্যায় করা হইতেসে। বন্ধ হয় নাই। এমন না যে, অসলো চুক্তির পর এই অন্যায়ের অবসান হইসে। না। এই অন্যায় এখনো চলতেসে। খিয়ামে (Khiam) গিয়া দেখেন । ইরেজে (Erez) গিয়া দেখেন । ভয়ংকর।
তারমানে আপনি ফিল করেন যে, আপনি ইভিল বা খারাপের মুখামুখি হইতেসেন? এমনকি ইসরাইল যদি ১৯৬৭ সালের আগের বর্ডারে পিছু হটে, তারপরেও কি তারা এই চলমান খারাপরে রিপ্রেজেন্ট করবে?
এইটা অনেকগুলা খারাপির একটা প্যাকেজ, মারাত্মক রকমের অবিচার, যার ওভারঅল ইফেক্ট আমি গভীরভাবে ফিল করসি। এই অবিচার এখনো চলতেসে। প্রতিটা দিন। যতোভাবে চিন্তা করা যায়, সবদিক থেকা।
এই অবিচার ইচ্ছাকৃত ভাবে বজায় রাখা হইসে। এই বিষয়টাই আমারে আঘাত করে। সব ইসরাইলির কথা আমি বলতেসি না এখন। সবরকমের ইসরাইলিই আছে। কিন্তু এই প্র্যাকটিসগুলার যোগফল, ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলিদের আচরণ, মারাত্মক পর্যায়ের অন্যায়। প্রচন্ডমাত্রায় স্টুপিড। এই অবস্থায় ফিলিস্তিনিদের অন্তরে আর মগজে কী ধরনের চিন্তা জায়গা নিতে পারে বইলা মনে হয় আপনার? এই অন্যায় অবিচার বন্ধের প্রার্থনার অনুভুতির সাথেসাথে অন্যায়ের প্রতিশোধ নেয়ার আকাঙ্ক্ষাও কাজ করে।
আপনি কি ব্যাপারটা টের পাইতেসেন? আপনার কি মনে হয় যে, ক্ষমতার ব্যালেন্সটা ফিলিস্তিনিদের দিকে শিফট করতেসে?
ক্ষমতার ব্যালেন্স টাইপের শব্দ আমি কখনো ইউস করি না। কিন্তু যে লোকটা একের পর এক লাত্থি মাইরা যাইতেসে আরেকজনরে, তারও নিজেরে জিগানোর দরকার পড়ে, আর কতোক্ষন সে লাত্থি মারতে থাকবে। এক না একসময়ে তার পা টায়ার্ড হবে। একদিন সকালে ঘুম থেকা উইঠা নিজেরেই সে প্রশ্ন করবে, ‘এইটা আমি কি করতেসি বাল?’
আমার মনে হয়, ভেতর থেকা এই বুঝটা আসার মতন এনাফ ইসরাইলির ঘুম এখনো ভাঙ্গে নাই। আমার গত একশো বছরের বোঝাপড়া বলে, জায়নিস্ট ইসরাইলি পক্ষ শুরু থেকাই মনে কইরা আসছে যে, আমরা যদি কঠিন লেভেলের এটাক করি আর তাদের যথেষ্ট সময় ধইরা অন্যায় অবিচার জুলুমের ভেতর রাখি, সেইসাথে যথেষ্ট দেয়াল তুলি আর পুরা ব্যাপারটা যতোভাবে পসিবল, সবদিক দিয়া তাদের কঠিন কইরা তুলি, তারা হাল ছাইড়া দিবে।
কিন্তু এমনটা ঘটে নাই। তাদের এই স্ট্রাটেজি কাজ করে নাই। আজকে ফিলিস্তিনিদের মাঝে হাল না ছাড়ার আরো বেশি ইচ্ছা কাজ করে। নিজের সাবজেক্টিভ এক্সপেরিয়েন্স থেকা আমি বলতে পারি, ফিলিস্তিনিদের প্রতিটা জেনারেশন অবিচারের একটা সেন্স অনুভব করে। তারা মনে করে, তাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচারের হক ছিনায়া নেয়ার বিষয়টা সংগ্রাম চালায়া যাইতে তাদের বাধ্য করতেসে। এজন্য তারা মনে করে, জুলাই মাসে ক্যাম্প ডেভিডের মতন আলাপের এরেঞ্জমেন্টগুলার ফলাফল সন্তোষজনক হবে না। এরকম এরেঞ্জমেন্ট দুই পক্ষরে সত্যিকারের মিল করাবে না।
আপনি কি বলতেসেন যে, ন্যায়বিচার ছাড়া শান্তির কোনো রাস্তা নাই?
হা। এবসলিউট ন্যায়বিচার কেউই পায় না, কিন্তু এপারথিডের (Apartheid) শেষে যেমনটা করা হইসিল, এরকম কিছু স্টেপ আছে যেগুলা অবশ্যই নিতে হবে। ইসরাইল এবং সাউথ আফ্রিকা আলাদা দেশ, কিন্তু দুইয়ের মাঝে মিলের জায়গা আছে। এরকম একটা মিলের জায়গা হইতেসে, পপুলেশনের বড়ো একটা অংশ নিজেদের রিসোর্স, অধিকার, জমির মালিকানা এবং অবাধ চলাচল থেকা তাদের বঞ্চিত করা হইতেসে এমনটা মনে করে। সাউথ আফ্রিকার থেকে যে শিক্ষা আমি পাইসি তা হলো, এথনিসিটির ভিত্তিতে গইড়া ওঠা শত্রুতার জটিল ইতিহাস নিয়া ডিল করতে হইলে, আগে এর দিকে ভালোমত তাকাইতে হবে, বুঝতে হবে এবং তারপর মুভ অন করতে হবে। আমার মাথায় সাউথ আফ্রিকার ট্রুথ এন্ড রিকনসিলিয়েশন কমিটির xxiv মতো কিছু একটা জিনিস ঘুরতেসে। আর আমি মনে করি, কাজটা আমাদের ফিলিস্তিনিদেরই করতে হবে। ঠিক যেমনটা ডেসমন্ড টুটু xxv আর ব্ল্যাকরা করসিলো। অবশ্যই প্রথমে তারা জিতসে। তারা এপারথিডরে উপড়ায়া ফেলসে।
দখল-পরবর্তী ইসরাইলের সাথে এখনো সাউথ আফ্রিকার কতোটুকু মিল আছে?
অবশ্যই মানুষজনরে আলাদা কইরা রাখার একটা ইডিওলজি আছে। ইসরাইলিরা এমন এক সিস্টেম তৈরি করসে যেখানে একজন মানুষের অন্যান্যদের চে বেশি আছে। এই জাতিবিদ্বেষ কি সাউথ আফ্রিকার সাথে পুরাপুরি মিলে? হয়ত না। কিন্তু মিলের জায়গা আছে বেশকিছু। আফ্রিকানারদের xxvi প্রোটো-জায়নিস্ট একটা ইডিওলজি ছিল। তাদের মনে হইসিল যে, গড নিজে তাদের চুস করসে।
কিন্তু রেসপনসিবিলিটির প্রশ্নটা আমার কাছে সবচে ইমপরট্যান্ট। আমি মনে করি প্রতিটা ইসরাইলির কনশাসনেস ও বিবেকের মধ্যে এই বোধটা থাকা উচিত যে, তার রাষ্ট্র ১৯৪৮ সালের আগেকার আরব জীবনগুলা ধুলায় মিশায়া দিসে। জাফফা (Jaffa) আগে একটা আরব শহর ছিল যেখান থেকা খোদ আরবদেরই খেদানো হইসিল। আর আমি মনে করি ইসরায়েলিদের এই ব্যাপারটা সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত যে, এরকম অনেক জায়গা আছে যেখানে তাদের প্রেজেন্স একটা ফিলিস্তিনি পরিবারের ক্ষতি, একটা বাড়ির ধ্বংস, একটা গ্রাম ধুলায় মিশা যাওয়ার কারন। এই অপরাধ থেকে বাইর হয়া আসার উপায় খোজা আপনাদের দায়িত্ব। এবং কান্টিয়ান (Kantian) সেন্সের জায়গা থেকা বলতে গেলে, কনসেকুয়েনসের কথা মাথায় রাইখা এক্ট করা।
অনেক ইসরাইলি এই এগ্রেসিভ স্ট্রাটেজি থেকা সইরা আসার ব্যাপারটা রুখতে চায় কারন, তারা মনে করে এর পরিনতি হবে জায়গা ছাইড়া তাদের চইলা যাওয়া। মোটেও না। যেমনটা আপনারে আমি বলসি, আমি এই কাজটার বিপক্ষে। আমি এমন কিছু চাই না যেটা এক অন্যায়ের এগেনস্টে আরেকটা অন্যায়রে দাড় করায়া পুরা বিষয়টা আরো দীর্ঘস্থায়ী কইরা তুলবে। এই আতঙ্কটা আমার ভেতর আছে। আমি অনেকবার এরকম হইতে দেখসি। আরো মানুষ নিজের জায়গা ছাইড়া চইলা যাক, এমনটা আমি চাই না।
আপনি যা বলতেসেন তার মানে দাড়ায়, হোয়াইট সাউথ আফ্রিকানদের মতো ইসরায়েলিদেরও জানা উচিত, তাদের ইডিওলজি ত্যাগ করলেই কেবল তারা এইখানে থাকার অধিকার পাবে।
হুম। এমন একটা ইডিওলজি যেটা অন্য মানুষদের তাদের হক থেকে বঞ্চিত করে।
তার মানে যা দরকার সেটা হইতেসে, বি-জায়নাইজেশনের একটা প্রসেস?
এইধরনের শব্দ ইউস করাটা আমি পছন্দ করি না। কারন, অবভিয়াসলি এটার মানে দাড়ায় একজন জায়নিস্টরে আমি হারাকিরি’র পথ বাইছা নিতে বলতেসি। তারা জায়নিস্ট হইতে পারে, এবং নিজেদের ইহুদি পরিচয় ও এই জমিনের সাথে তাদের কানেকশন জাহির রাখতে পারবে যতোক্ষন পর্যন্ত ব্যাপারটা অন্যদের সরাসরি দূরে সরায়া না রাখতেসে।
এই লজিক ফলো করলে তখন প্রেজেন্ট ইসরাইলকে আরেকটা নতুন ইসরাইল দিয়া রিপ্লেস করতে হবে, ঠিক যেভাবে নতুন সাউথ আফ্রিকা পুরানা আমলরে রিপ্লেস করসে। অন্যায্য রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাগুলা ভাইঙ্গা ফেলতে হবে।
কারেক্ট। ব্যাপারটারে আমরা সংস্কার বলতে পারি। আমি ভাইঙ্গা গুড়া কইরা ফেলার ব্যাপারে কথা বলতে কমফোর্ট ফিল করি না। এইটা এপোক্যালিপটিক ল্যাংগুয়েজ। এপোক্যালিপস ও অলৌকিক পুনর্জন্ম টাইপের কনটেক্সট থেকা যতোটুকু কম সম্ভব শব্দ আমি ইউস করতে চাই। এজন্যই আমি বি-জায়নাইজ বলি না। এইটা পাগলা গরুর সামনে লাল কাপড় নাড়ানোর মতন কাজ। এরকম জিনিস কি পারপাস সার্ভ করে তা আমার নজরে আসে না। কাজেই আমি সংস্কার বা ট্রান্সফরমেশনের বিষয়ে কথা বলাটা প্রেফার করি। ইসরাইলের একটা স্টেপ বাই স্টেপ ট্রান্সফরমেশন। সেইসাথে মিডল ইস্ট দেশগুলারও ক্রমশ উদারমনা হয়া ওঠা।
দুই বছর আগে নিউইয়র্ক টাইমসে আপনি ওয়ান-স্টেট বা এক-রাষ্ট্রের সলুশন এনডোর্স কইরা একটা আর্টিকেল লিখসিলেন। সত্তরের দশকে আপনি একটা সেকুলার-ডেমোক্রেটিক-স্টেট সলুশনের ধারনার পক্ষে কথা বলসিলেন, আশির দশকে আইসা বললেন আলাদা-রাষ্ট্র সলুশনের কথা, এখন আবার সেকুলার-ডেমোক্রেটিক আইডিয়াতে ফেরত আসলেন। যেন বা একটা সার্কেল পুরা করলেন।
এইটারে সেকুলার-ডেমোক্রেটিকই বলতে হবে, এমনটা না। আমি এটারে দ্বি-জাতিক (binational state) রাষ্ট্র বলবো। আমি এমন একটা মেকানিজম বা স্ট্রাকচার দাড়া করাইতে চাই যেখানে ফিলিস্তিনিদের এবং ইসরাইলি ইহুদিদের জাতিয় পরিচয় এক্সপ্রেস করার সুযোগ থাকবে। আমি বুঝতে পারি, ফিলিস্তিন-ইসরাইলের ক্ষেত্রে দ্বি-জাতিক সলুশনের দুইটা জাতির ডিফারেন্সের জায়গাগুলারে এড্রেস করতে হবে।
কিন্তু পারটিশন বা সেপারেশন কাজ করবে বইলা আমার মনে হয় না। আলাদা-রাষ্ট্রের সলুশন এখন আর ইমপ্লেমেন্ট করা সম্ভব না। জিওগ্রাফি, ডেমোগ্রাফি, ইতিহাস, পলিটিকসের রিয়ালিটিগুলার কথা মাথায় রাখলে দ্বি-জাতিক একটা রাষ্ট্র থেকা বহুত ফায়দা হবে।
আপনার কি ইহুদি রাষ্ট্রের ধারনাটারে সমস্যাজনক মনে হয়?
ইহুদি রাষ্ট্রের ধারনাটা খুব একটা ইন্টারেস্টিং লাগে না আমার কাছে। যে ইহুদিদের আমি চিনি, বিশেষ কইরা যারা বেশি ইন্টারেস্টিং ছিলেন, তাদের কাউরেই নিজেদের জুইশনেস (Jewishness) দিয়া ডিফাইন করা সম্ভব না। আমি মনে করি ইহুদিদেরকে তাদের জুইশনেসের ভেতর আটকায় রাখাটা প্রবলেমেটিক। ইহুদি পরিচয়টা ডিফাইন করতে গেলে যে প্রবলেমটা হয় সেদিকে তাকান। স্টেটহুড আর আলিয়াহ’র xxvii শুরুর দিকের উৎসাহ কইমা আসলে লোকেরা দেখতে পাবে যে, ইহুদি হওয়াটা সারাজীবনের কোনো প্রজেক্ট না। ইট ইস নট এনাফ।
কিন্তু এইটা ইহুদিদের ইন্টার্নাল একটা প্রশ্ন। আপনার জন্য প্রশ্ন হইতেসে, ইহুদিরা কি এমন কোনো জনগোষ্ঠী, যাদের নিজেদের একটা রাষ্ট্রের অধিকার আছে?
যদি এনাফ সংখ্যক লোক নিজেদের একটা আলাদা জনগোষ্ঠী মনে করে এবং এর ভিত্তিতে জাতি গঠন করতে চায়, আমি সেইটা রেসপেক্ট করি। কিন্তু এর কারণে আরেকটা জনগোষ্ঠী ধংস হইলে সেই রেসপেক্ট আমি দিতে রাজি না। ‘আমাদের উত্থানের জন্য তোমাদের মরা লাগবে’ এরকম এটিটিউড মাইনা নেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।
আপনি কি ইসরাযইলিদের বলতেসেন যে, নিজেদের ইহুদি সার্বভৌমত্বের ধারনা তাদের বাদ দেয়া উচিত?
আমি লোকজনরে কোনোকিছুই বাদ দেয়ার কথা বলতেসি না। কিন্তু একটা কনসেপ্ট হিসেবে “ইহুদি সার্বভৌমত্ব” যে পরিমাণ যন্ত্রনা, অপচয় এবং জুলুমের জন্ম দিসে, জিনিসটা আমার কাছে ওর্থ ইট বইলা মনে হয় না। অন্যদিকে, যদি কেউ ইহুদি সার্বভৌমত্বের আইডিয়াটারে কো-এগজিস্ট করার দিকে আরো উদার একটা স্টেপ হিসেবে বিবেচনা করে, দুনিয়ার জমিনে সবাই মিলামিশা বাস করবে, তাইলে গিভ আপ করাটা ওর্থ ইট। বাধ্য হয়া গিভ আপ করতে হবে, ঐ অর্থে বলতেসি না আমি। তোমাদের ওপর আমাদের জিত হবে, এই দিক থেকাও না, যেমনটা অনেক আরব মনে করে যখন তারা আরাফাতরে সালাহুদ্দিন বইলা ডাকে, যার মানে সে আপনাদের বাইর কইরা দিবে। না। ঐ অর্থে আমি বলতেসি না। ঐরকম প্রগতি আমি চাই না। আপনারাও চান না। আরো ভালো অপশন হবে এইটা বলা যে, সার্বভৌমত্বের ধিরে ধিরে এমন কিছুর জন্য রাস্তা কইরা দেয়া উচিত যা হবে আরো উদার, এবং আরো বসবাসযোগ্য।
দ্বি-জাতিক রাষ্ট্রে ইহুদিরা দ্রুত লেবানিজ খৃষ্টানদের মতো মাইনরিটি হয়া যাবে।
হুম, কিন্তু আপনারা সবদিক থেকাই মাইনরিটি হইতে যাইতেসেন। প্রায় দশ বছরের মধ্যে ইহুদি এবং ফিলিস্তিনিরা ডেমোগ্রাফিক দিক থেকা সমান হয়া যাবে। আর এই প্রসেসটা চলতেই থাকবে। কিন্তু ইহুদিরা সর্বত্রই মাইনরিটি। তারা আমেরিকাতে মাইনরিটি। ইসরাইলেও তারা সংখ্যালঘু হইতেই পারে।
এই অঞ্চল আর কনফ্লিক্টের ইতিহাসের কথা মাথায় রাইখা, আপনার কি মনে হয় এরকম ইহুদি একটা মাইনরিটির সাথে ফেয়ার আচরণ করা হবে?
এইটা নিয়া টেনশন হয় আমার। আরব মাইনরিটিদের হিস্টোরি ইউরোপের মতো খারাপ না। কিন্তু আমি আসলেই ভাবতেসি কি হইতে পারে। ইহুদিদের নিয়তি কি হইতে যাইতেসে, এই প্রশ্নটা আমার জন্য খুবই ডিফিকাল্ট। আমি সত্যিই জানি না। বিষয়টা আমারে বেশ ভাবায়।
ব্যক্তিগতভাবে ফিরা আসার অধিকার কি আপনার আছে? জেরুজালেমের তালবিয়াতে (Talbieh) ফেরার অধিকার?
তালবিয়া আমার কাছে একটা ঘর। ব্রেনার স্ট্রিটে আমার ফ্যামিলি হাউস, যার কাছেই এখন ছোট্ট একটা পার্ক বানানো হইসে। ১৯৯২ সালে প্রথমবারের মতো ঐখানে আমি গেসিলাম। আমার সাথে তখন আমার ফ্যামিলির বাসার একটা দলিল ছিল। দলিলটা আমার কাজিন দিসে আমাকে। সে চাইসিল ব্যাপারটা নিয়া কি করা যায়, বিষয়টা যেন আমি একটু দেখি। চার বছর পরে সে নিজেই আসছিল এবং বাসাটা ফেরত পাইতে কিছু অর্গানাইজেশনে রেজিস্টার করসিল। বাসাটা সে ফেরত পাইতে চাইসিল।
এইটা খুবই স্পেসিফিক একটা জিনিস। কিন্তু মোটাদাগে জিজ্ঞেস করলে আমি বলবো, ইসরায়েলি ল অফ রিটার্ন xxviii অনুযায়ি আমার ইহুদি কলিগদের যতোটুকু অধিকার আছে ইসরাইল প্রত্যাবর্তনের, আমারো ফিরা যাওয়ার ততোটাই অধিকার আছে। কিন্তু স্পেসিফিকালি জিজ্ঞেস করলে আমার কাজিনের সাথে আমি এক কাতারে থাকবো। দলিলে অর বাবার নাম লেখা আছে, এবং বাসাটা যে তার থেকে ছিনায়া নেয়া হইসিল সেইটার রিকগনিশন আদায় করবো। ঐ বাসাটা যে আমার কাজিনের, সেইটার স্বীকৃতি আদায় করবো।
আপনি কি সত্যিই সেই বাসায় ফিরা আসার আশা করতেসেন? আপনি কি আসলেই তালবিয়া ফিরা আসতে চান?
আমি ব্যাপারটা নিয়া চিন্তা করি। আমার বয়স হইতেসে। খুব বেশিদিন যে আমার হাতে নাই, প্রেশারটা ফিল করি আমি। নিউইয়র্কের সবকিছু থেকা নিজেরে ডিসকানেক্ট করাটা কঠিন হবে আমার জন্য। কিন্তু টুরিস্ট না হয়া নিজের শৈশবের জায়গাগুলাতে কি আমি ফিরা যাইতে চাই? এই প্রশ্ন আমারে করা হইলে উত্তরে বলবো, হা। আর আমার ছেলের কথা যদি বলি, সেও ঐখানে ফিরা যাইতে চায়। ঐ বাসাটাতে। ব্যাপারটা ওর পছন্দ হবে। কাজেই, হোয়াই নট?
তার মানে ফিরা যাওয়ার এই দাবিটা মোটাদাগে না। শুধু মেটাফর হিসেবে এইটা ইউস করেন নাই। আসলেই কি জিনিসটা আপনি মিন করেন?
হুম। এইটা একটা রিয়াল প্রবলেম, আর এই এটাচমেন্টের জায়গাটাও রিয়াল মানুষদের জন্য। সবসময় এমনটাই হয়া আসছে। অনেক ইসরায়েলি বলে, এইটা স্টেট অফ ইসরাইলের ডেসট্রাকশন। কিন্তু আমি বিষয়টা এভাবে দেখি না।
এই রিফিউজি প্রবলেম সলভ করা সবচে কঠিন, কারন এইখানে খেদায়া দেয়ার নৈতিক প্রশ্নটা জড়িত থাকে। কিন্তু আমি মনে করি ইসরাইলের অবশ্যই রিফিউজিদের খারাপ অবস্থার বিষয়টা স্বীকার করতে হবে। আমি আরো মনে করি, রিফিউজিদের অবশ্যই ফিরা যাওয়ার অধিকার আছে।। আমি শিওর না কতোজন ফিরা আসতে চাইবে, কিন্তু ফিরা আসার অধিকারটা তাদের থাকা উচিত।
এই সমস্যার মোকাবেলা কতোটা প্র্যাক্টিকাল, আর নৈতিকতার দিক থেকা এর ঠিক-বেঠিকতা নিয়া অনেকগুলা রিসার্চ হইসে। কীভাবে মানুষরে নিজের বানানো বসতভিটা থেকা উচ্ছেদ না কইরা, ক্ষয়ক্ষতির হার সবচে কমায়া আইনা কাজটা এক্সিকিউট করা যায়, এগুলা নিয়াও সেইখানে আলাপ আছে। রিসার্চগুলার ফাইন্ডিংস অনুযায়ী, আজকের ইসরাইলে কোনোরকম ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই দশ লাখ লোকরে আরামসে সেটেল করা সম্ভব। আমি মনে করি, এইটা একটা শুরু হইতে পারে। আলাপ-আলোচনায় বসার জন্য এইটা বেশ ভালো একটা টপিক। অবশ্যই ফিরা আসার এই ব্যাপারটা রেগুলেটেড একটা প্রসেস হইতে হবে। যে কেউ নৌকায় চইরা এখানে ফেরত চইলা আসতে পারবে না।
আমরা তালবিয়ার প্রশ্নে ফিরা যাই। বায়ান্ন বছর আগে আপনি যেখানে থাকতেন, আর আজকে আমি যেখানে থাকি সেই এলাকায় কাজটা কীভাবে হবে?
দলিলে নাম লেখা আমার আত্মিয়রা বিশ্বাস করে বাড়িটা তাদের, তাই মালিকানার অধিকার তাদের থাকা উচিত। ঐ বাড়ির কথা বলতে গেলে এইটা সমস্যার কোনো বিষয় না কারন, বাড়িটা কোনো ইসরাইলি ফ্যামিলির মালিকানায় নাই। মৌলবাদি একটা খৃষ্টান অর্গানাইজেশন বাসাটার মালিক। বাই দা ওয়ে, অর্গানাইজেশনটা সাউথ আফ্রিকান। কাজেই বাসাটা আমার ফ্যামিলির ফেরত পাওয়া উচিত। তাদের কেউ কি ঐখানে বসবাস করতে ফিরা যাবে? আমার মনে হয়, যাবে। কিন্তু এই পার্টিকুলার ব্যাপারে তাদের হাতে অবশ্যই অপশন দেয়া উচিত। অন্য যে বাসাগুলাতে বছরের পর বছর ধইরা মানুষজন থাইকা আসতেছে, আমার মন বলে ঐখান থেকা তাদের তাড়ায়া দেয়াটা ঠিক হবে না। আমি মনে করি একটা মানবিক এবং মধ্যমপন্থি সলুশন বাইর করা উচিত, যেইখানে বর্তমান ও অতিত দুইপক্ষের মালিকানাই এড্রেস করার জায়গা থাকবে। সহজ কোনো সলুশন আমার কাছে নাই, কিন্তু আপনারে আমি বলতেসি, আমি মানুষরে নিজের বাসা থেকা জোর কইরা বের করার বিরূদ্ধে। এমনকি কোনো ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইবুনাল এর পক্ষে রায় দিলেও, কিংবা খেদায়া দেয়াটা কোনো জনগোষ্ঠী নিজের অধিকার বইলা দাবি করলেও আমি জিনিসটার বিরূদ্ধে থাকবো। থাইকা যাওয়াটা তাদের অধিকার। কিন্তু এই পার্টিকুলার জিনিসটা প্র্যাকটিসের পর্যায়ে নিয়া আসা আমার পক্ষে সম্ভব না।
ফিলিস্তিনিদের ভেতর অনেকে আছে যারা ব্যাপারটা অন্যভাবে চিন্তা করে। এই বিষয়টা কি আপনারে ভাবায় না? ফিরার অধিকার দেয়া হইলে এখানে আইসা উচ্ছেদ করার একটা তাড়না থাকবে তাদের ভেতর, এটা নিয়া কি আপনার দুশ্চিন্তা হয় না?
আমি এইরকম কাজের বিরোধিতা করবো। আমি সবরকম উচ্ছেদের বিপক্ষে। আমার পুরা ফিলসফি এই কাজের বিপক্ষে। আমি জানি না কাজটা যখন হবে, আমি তখন আদৌ বাইচা থাকবো কি না। কিন্তু যদি আমি জিন্দা থাকি, তাইলে আমি ব্যাপারটারে স্ট্রংলি ফাইট করবো।
ব্যাপারটারে আমি জিম্বাবুয়ের সিচুয়েশনের সাথে মিলায়া দেখি। এই বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নাই, সেইখানে হোয়াইট পপুলেশন যারা জমি চাষ করে, ঐখানকার জমি, প্রপার্টি এবং নিজেদের খামারির কাজের সাথে তাদের গভীর এটাচমেন্ট আছে। আমি বিশ্বাস করি, তাদের সেইখানেই থাইকা যাওয়া উচিত। যতোক্ষন পর্যন্ত তারা স্বীকার করতেসে, এইখান থেকে অন্যদের আগে তাড়ায়া দেয়া হইসিল এবং তাদের হক মাইরা দেয়া হইসে। সেইম জিনিস এইখানেও প্রযোজ্য। কিন্তু খুবই ডিস্টার্বিং একটা এথিকাল প্রশ্ন এইটা। এই প্রশ্নের বাউন্ডারি একজন ব্যক্তির উত্তর দেয়ার ক্যাপাসিটি ছাড়ায়া যাবে।
তার মানে আপনি পুরা নতুন একটা সিচুয়েশনের কল্পনা করেন, যেইখানে ইহুদি মাইনরিটি একটা আরব কনটেক্সটের ভেতর শান্তিপুর্ন ভাবে থাকতে পারবে?
আমি মনে করি জিনিসটা সম্ভব। আরব বিশ্বে অন্যান্য মাইনরিটি যেভাবে সার্ভাইব করসে, ইহুদি মাইনরিটিও সেভাবেই করবে। ব্যাপারটা বলতে পছন্দ হইতেসে না, কিন্তু মজার বিষয় হইতেসে, অটোমান সাম্রাজ্যের আন্ডারে মিলেট সিসটেমে xxix ব্যাপারটা বেশ ভালোভাবেই চলসে। ঐসময়ে তাদের যে সিস্টেম ছিল, সেইটা এখকার চে অনেক মানবিক মনে হয় আমার কাছে।
তার মানে আপনি মনে করতেসেন, প্যান-আরব একটা স্ট্রাকচারের ভেতর ইভেনচুয়ালি ইহুদিরা একটা কালচারাল অটোনমি পাবে?
প্যান-আরব বা মেডিটেরেনিয়ান। এইটা সাইপ্রাসরে কেন ইনক্লুড করবে না? আমি চাই ইহুদিরা যেন বৃহত্তর সমাজের একটা অংশ হয়া উঠতে পারে, ন্যাশন-স্টেটের বাউন্ডারি দিয়া আলাদা হইলেও, এক হয়া টিকা থাকার অসাধারন ক্ষমতা জিনিসটার আছে। আমার মনে হয়, এই কাজটা করা পসিবল। আলাদা থাকার চে লার্জার কালেকটিভের অংশ হওয়ার পিছে সবরকমের কারন আছে। এর এগজিকিউশনে যে সোশাল অর্গানাইজেশনের দরকার পড়বে, তা নিয়া এখনো আমি ভাবি নাই। কিন্তু জনাব বারাক এবং তার এডভাইজাররা যে সেপারেশনের সপ্ন দেখে, তার চাইতে এইটা অর্গানাইজ করা অনেক সহজ হবে। ডাইভার্সিটি এবং ইনক্লুসিভিটি ছিল আরব কালচারের জিনিয়াস। আমার প্যান-আরবিজমের ডেফিনিশন ইহুদিদের সহ অন্য সকল কমিউনিটিরে আরব-ইসলামিক ফ্রেমওয়ার্কের ভেতর ধারন করে।
তার মানে, এক বা দুই জেনারেশনের ভেতর আরব বিশ্বে আমাদের আরব-ইহুদি একটা কমিউনিটি থাকবে?
হা। আপনার জায়গায় আমি থাকলে, আমিও তা-ই ভাবতাম।
অনেক ইহুদি ব্যাপারটারে ভয়ংকর মনে করবে।
ইহুদি হিসেবে ভয় পাওয়ার অনেক কারনই আপনাদের আছে। কিন্তু লং-রানে একজন মানুষের উচিত নিজের এংজাইটি কমায়া নিয়া আসা। হয়ত আমি ভুল বলতেসি, কিন্তু আমি ব্যাপারটারে যেমনে দেখি, ইসরাইলের বর্তমান এগজিসটেন্স দাড়ায়া আছে নিজের চারপাশে দেয়াল তুইলা সেগুলারে ঠেকায়া রাখার ওপর। বাইচা থাকার খুবি আন-এট্রাকটিভ একটা তরিকা মনে করি আমি ব্যাপারটারে। ন্যাশন বানানোর অপশনটা এংজাইটিতে ভরা একটা সমাজ তৈরি করসে। এই সমাজ প্যারানয়া, মিলিটারাইজেশন আর বদ্ধ চিন্তার মানুষ প্রডিউস করসে। এতোকিছু কিসের জন্য? অন্যদিকে যে অপশনের কথা আমি বলতেসি, সেইটা আপনাদের, ইহুদিদের আরো অনেক গতিময় আর ওপেন একটা জীবন দিবে। এইটা ইহুদিদের ফিলিস্তিনে, ইসরাইলে আসার প্রজেক্টরে অনেক বেশি সুস্থ একটা ভিত্তি দিবে।
আপনি কি একজন রিফিউজি?
না। আমার কাছে রিফিউজি শব্দটার স্পেসিফিক একটা মিনিং আছে। রিফিউজি কথাটা বলতে গেলে খারাপ স্বাস্থ্য, সামাজিক দুর্দশা, ক্ষয়ক্ষতি এবং ভিটা থেকা খেদায়া দেয়ার ব্যাপারগুলা চইলা আসে। এই জিনিসগুলা আমার বেলাতে এপ্লিকেবল না। তাই ঐ অর্থে, আমি রিফিউজি না। কিন্তু আমি ফিল করি, আমার কোনো প্লেইস নাই। নিজের শেকড় থেকা আমারে কাইটা দেয়া হইসে। আমি নির্বাসনে আছি। আমারে নির্বাসনে পাঠানো হইসে।
আপনার রিসেন্টলি পাবলিশ হওয়া মেমোয়ারের নাম রাখসেন ‘Out of Place’. এইটার মানে কি?
ফিরা যাইতে না পারা। আমার কাছে এইটা খুবই স্ট্রং একটা অনুভুতি। নিজের লাইফরে আমি ডেসক্রাইব করবো অনেকগুলা ছাইড়া যাওয়া আর ফিরা আসার একটা যোগফল হিসেবে। কিন্তু ছাইড়া যাওয়াগুলা সবসময় শংকায় ভরা। নিরাপত্তাহিন। এজন্য শর্ট কোনো ট্রিপে গেলেও আমি বেশি জিনিসপাতি প্যাক করি, যদি আর ফেরত আসা না হয়।
আপনার ভেতর সবসময়ই কোথাও বিলং না করার ফিলিংটা ঘুরপাক খাইতে থাকবে। আপনি আসলেই কোথাও বিলং করেন না। কারন সত্যিকার অর্থে, আপনি এইখানকার কেউ না। আর যেখান থেকা আপনি আসছেন, কেউ একজন বলতেসে এইটা জায়গাটা আপনার না, তার জায়গা। এমনকি আপনি কোথা থেকে আসছিলেন, এই আইডিয়াটাও সবসময় চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকে।
নিজের আইডেন্টিটি কি আপনার আবার নতুন কইরা গইড়া নিতে (invent) হইসে?
ল্যাটিনে “ইনভেনশিও” শব্দের অর্থ পুনরায় খোজা। ক্লাসিকাল অলংকার শাস্ত্রে (rhetoric) শব্দটা একটা প্রসেসের জন্য ইউস করা হইসিল, যে প্রসেসের ভেতর নিজের অতিত এক্সপেরিয়েন্সগুলা আপনি খুইজা বের করবেন, আর নতুন একটা চেহারা দিতে তাদের আবার নতুন কইরা সাজাবেন। অভিজ্ঞতাগুলা নতুন কইরা সাজানোর ব্যাপারটা শুন্য থেকা তৈরি হইতেসে না। ঐ অর্থে, নিজের আইডেন্টিটি আমি নিজে গইড়া নিসিলাম।
প্রথমে, ভিকো’র xxx চোখ দিয়া আমি দেখসি, মানুষ নিজের ইতিহাস নিজেই তৈরি করে। ইতিহাস জিনিসটা ন্যাচারের মতো না। এইটা হিউম্যান মেইড একটা প্রডাক্ট। আর আমি দেখসিলাম, নিজেদের শুরুগুলা আমরা নিজেরাই তৈরি করতে পারি। জিনিসগুলা কেউ কাউরে দিতে পারে না, এইগুলা সম্মিলিত ইচ্ছার ফসল।
রিসেন্ট বছরগুলাতে প্রচুর অনিশ্চয়তা সাথে নিয়া যখন সাইরা ওঠার অযোগ্য একটা অসুখের সামনে পড়লাম, আমি টের পাইলাম যে, মৃত্যু নিয়া আমার কোনো ভয় নাই। এমনকি এই রোগের শেষের দিককার যন্ত্রনাগুলাও আমি ভয় পাই না। কিন্তু আমি ভয় পাইসিলাম, আমার লাইফের যে এসপেক্টগুলার কিছু ভ্যালু আছে আমার কাছে, সেইগুলা আর রিক্যাপচার করতে পারবো না আমি। আবার নতুন কইরা তাদের বলতে ও ইন্টারপ্রেট করতে না পারার ভয় আমি পাইসিলাম।
পেছনে ফিরা তাকানোর সময় আমি রিয়ালাইজ করসিলাম, যেই পৃথিবীতে আমি বাইড়া উঠসি, আমার বাবা-মায়ের সময়কার পৃথিবী, কায়রো, বৈরুত আর ১৯৪৮ সালের আগের তালবিয়া, সবই ছিল একটা মেড-আপ জগত। এইটা রিয়াল কোনো পৃথিবী ছিল না। যেই ধরনের অবজেক্টিভ স্ট্যাবিলিটি আমি চাইতাম, ঐ পৃথিবীতে জিনিসটা ছিল না। অনেক বছর ঐ পৃথিবীর হারায়া যাওয়া নিয়া আমি মাতম করসি। আসলেই মাতম করসি। কিন্তু ঐ জগতটারে এখন আবার নতুন কইরা ইন্টারপ্রেট করার পসিবিলিটির জায়গাটা আমি আবিষ্কার করসি। আর আমি রিয়ালাইজ করসি, এই ব্যাপারটা খালি আমার জন্য না, আমাদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্যঃ আমরা অতিতরে পেছনে ফেইলা সামনে আগায়া যাই। ভুইলা যাওয়া, হারায়া যাওয়ারা আমাদের পিছে পইড়া থাকে। আমি বুঝতে পারসিলাম, আমার কাজ ছিল একটা হারায়া যাওয়ার গল্প বলা এবং সেটারে নতুন কইরা আবারো বলা। এই হারানোর গল্পে ফিরা আসা, ঘরে ফিরা আসার ধারনাটা আমার জন্য ইম্পসিবল।
তার মানে পারসোনালি আপনার বেলায় কোন ফিরা যাওয়া নাই?
আমার মেমোয়ারটা যখন লিখতেসিলাম, আমার কাছের বন্ধু আবু লুঘোদ, জাফার (Jaffa) একজন রিফিউজি, ফিলিস্তিনে ফিরা গেসিল এবং রামাল্লায় (Ramallah) গিয়া সেটেল হইসে। আমার জন্যও এইটা একটা অপশন ছিল। বির যাইতে (Bir Zeit) আমি একটা চাকরি নিতে পারতাম। কিন্তু আমি রিয়ালাইজ করসি, এইটা এমন একটা কাজ যা আমি করতে পারবো না। নিউ ইয়র্কে থাইকা যাওয়াটাই আমার নিয়তি। এইটা কন্টিনিউয়াসলি বদলাইতে থাকা একটা জায়গা, যেইখানে রিলেশনশিপগুলা কেউ ইনহেরিট করে না, বরং নিজেদেরটা নিজেরা তৈরি কইরা নেয়। নিজের ঘরের মতো স্ট্যাবিলিটি যেইখানে নাই।
আপনি কি হোমলেসনেসের প্রতি এডিক্টেড হয়া পড়সেন?
এডিক্টেড কি না জানি না। কিন্তু আমার নিজের নামে কোনো রিয়েল এস্টেটের মালিকানা নাই। যে ফ্ল্যাটে আমি থাকি সেইটা ভাড়া করা। নিজেরে একজন ওয়ান্ডারার হিসেবে দেখি আমি। আমার পজিশন একজন ট্রাভেলারের, যার কোনো টেরিটরি ধইরা রাখার আগ্রহ নাই, যার প্রটেক্ট করার মতন কোনো রাজ্য নাই।
(থিওডর) এডোর্নো বলসেন যে বিশ শতকে আবাসভুমির (Home) ধারনা বাতিল হয়া গেসে। আমার মনে হয়, জায়নিজম নিয়া আমার ক্রিটিকগুলার একটা অংশ এই আবাসভুমির ধারনাটার ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়ার সাথে কানেক্টেড। আমাদের একটা আবাসভুমির দরকার, এই ধারনাটার কথা বলতেসি আমি। আর এই আবাসভুমির জন্য যেকোনো কিছু আমরা করতে পারি, এমনকি অন্যরে ঘরছাড়া করতেও আমাদের বাধবে না।
দ্বি-জাতিক রাষ্ট্র নিয়া কেন আমার এতো আগ্রহ জানেন? কারন, আমি শক্ত একটা সমাজ কাঠামো চাই যেইটারে কেউই পুরাপুরি নিজের হৃদয়ে গাথতে পারবে না। কেউই পুরাপুরি অউন করতে পারবে না। এইটা আমার জায়গা, এজন্য তোমার বাইর হয়া যাইতে হবে, এরকম আইডিয়ার ব্যাপারটা আমি কখনো বুইঝা উঠতে পারি নাই। লিটারালি, হুবহু অর্থে, নিজের পিউর অরিজিনের জায়গাতে ফেরত যাওয়াটারে আমি এপ্রিশিয়েট করি না। আমি মনে করি, বড়ো পলিটিকাল আর ইনটেলেকচুয়াল ডিজ্যাসটারগুলা হইসে শ্যালো বানায়া ফেলা আন্দোলনগুলার জন্য, যেইখানে কোনো একটা টপিকের জটিল এসপেক্টগুলা বাদ দিয়া তারে সিমপ্লিফাই ও পিউরিফাই করতে চাওয়া হইসে। যে আন্দোলনগুলা তাঁবু খাটানো, কিব্বুতজ বা আর্মি গইড়া তোলার মতো একেবারে শুরুর দিকে নিয়া যাইতে চায় আমাদের।
এগুলাতে আমি বিশ্বাস করি না। নিজের জন্য হইলেও এগুলা চাইতাম না আমি। এমনকি একজন ইহুদি হইলেও না। এর এগেনস্টে ফাইট করতাম। আর জিনিসটা টিকবেও না। আমার এই কথাটা নিয়েন। আমার এই কথাটা লিখে রাখেন। আপনার চে বয়সে আমি বড়। এইটা এমনকি মনেও রাখা হবে না।
আপনার কথা খুবই ইহুদি-টাইপ শোনাইতেসে।
অবশ্যই। আমিই লাস্ট ইহুদি ইনটেলেকচুয়াল। অন্য কাউরে আপনি চিনেন না। আপনাদের বাকি ইহুদি ইনটেলেকচুয়ালরা এখন চায়ের দোকানের বুদ্ধিজিবি হয়া গেসে। এমোস অজ [/ref]Amos Oz (১৯৩৯ – ২০১৮); ইসরায়েলি রাইটার, নভেলিস্ট, জার্নালিস্ট এবং ইন্টেলেকচুয়াল।[/ref] থেকা শুরু কইরা বাকি সবাই আমেরিকায়। কাজেই আমিই দা লাস্ট ওয়ান। এডোর্নো’র একমাত্র সত্যিকারের ফলোয়ার। আমারে কথাটা এভাবে বলতে হবে: আমি একজন ফিলিস্তিনি ইহুদি।
কাউসার হামিদ জাওয়াদ
Latest posts by কাউসার হামিদ জাওয়াদ (see all)
- আমার ফিরার অধিকার: এডওয়ার্ড ডব্লিউ. সাইদ - মে 30, 2024
- এমন এক অডিয়েন্স থাকে যারা আসলে কোথাও এগজিস্ট করে না – হা জিন - জানুয়ারি 9, 2024