Main menu

চাষার ঋণ ও কোঅপারেটিব ক্রেডিট্ – আবুল হুসেন (১৯২৫) Featured

[বাংলা ১৩৩২ সালে ঢাকার ফুলবাড়িয়ায় ইসলামিয়া প্রেসে ছাপানো “বাংলার বলশী” বই থিকা লেখাটা নেয়া হইছে…]

ঋণের দায়ে চাষা ভেঙ্গে পড়ছে। অতিরিক্ত হারে সুদ দিয়ে দিয়ে চাষা ঋণ কিছুতেই পরিশোধ ক’রে উঠতে পারে না। ১ টাকা ধার করে একজন চাষা সারা জীবন মহাজনের ঘরে উসুল ক’রে শোধ করতে পারেনি – তার ছেলে সেই জের টানতে শুরু করেছে। বাংলার পল্লী সমাজে এই চাষার ঋণ একটা দানবের খেলা বলে বোধ হয়। মহাজনের আসন পল্লী সমাজের মাথায় তোলা আছে। মহাজন টাকা না দিলে চাষার মরতে চব্বিশ ঘণ্টাও লাগে না। সে মহাজনের গোলা হ’তে ধান আনছে খাচ্ছে আর চষে খুঁড়ে যা পাচ্ছে তা পিঠে ক’রে নিয়ে মহাজনের গোলা ভরছে। এইরূপে চাষার দুনিয়াটা সত্য সত্য ঘুরছে। বৎসরে এক একবার ঘুরে এসে অমনি মহাজনের প্রাঙ্গণে তার এক আবর্তন পূর্ণ করে। চাষা মহাজনের বাড়ী হ’তে যাত্রা আরম্ভ করে আর মাঠ ঘুরে এসে মহাজনের গোলার মুখে ‘তুচ্ছ দিনের ক্লান্তি মানি’ নিমেষে দূর করে। চাষার সঙ্গে এই মহাজনের এমনি সম্বন্ধ হ’য়েছে যে, কেহই কাহাকেও ছাড়তে পারছে না। চাষা ক্রমেই মহাজনের বাড়ীতে ব’সে যাচ্ছে। মহাজনও সুযোগ বুঝে তার স্কন্ধে চেপে বসছে খুব ভাল ক’রে। চাষা ফিরে বাড়ী যেতে পারছে না। এখন চায়াকে বাড়ী নিতে হ’লে, তার মাঠের ধান নিজের গোলায় উঠাতে হ’বে, মহাজনের গোলার খুঁটি হ’তে তার পায়ের শৃঙ্খল মুক্ত করতে হবে। সে যে নানা উপায়ে সেখানে বাধা পড়েছে। তার জমি ক্ষেতগুলিও মহাজনের বাক্সের মধ্যে আটকান। সে গুলিও বের করে দিতে হবে। মহাজনের সঙ্গে চাষার কোন সম্পর্কই যাতে ক’রে না থাকতে পারে তার একটা ব্যবস্থা করতে হবে।

ভারত গভর্ণমেন্ট এ যে ‘করতে হবে, অনেক দিন পূর্ব্বে বুঝে কো-অপারেটিভ ক্রেডিটের জারি করলেন। অমনি হাজার হাজার কর্মচারী নিযুক্ত হ’য়ে গেল। দেশে দেশে সোসাইটী গঠিত হ’ল। বাংলাদেশে শ্রমন শত শত সোসাইটী হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে চাষার ঋণ কমিয়ে দিয়ে তাকে ঋণযুক্ত কর – তাকে মহাজনের গ্রীবা (কবল) হ’তে নিষ্কৃতি ক’রে দেওয়া। আজ প্রায় একুশ বৎসর হ’তে এই অনুষ্ঠান বাংলা দেশের জেলা মহকুমায় বৎসর বৎসর সম্পন্ন হচ্ছে। ব্যাঙ্ক খোলা হয়েছে চাষাকে টাকা দেওয়ার জন্য। ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর সেক্রেটারী বড় বড় শিক্ষিত উকিল মোক্তার ইত্যাদি। তাঁরা চাষাকে ঋণ মুক্ত করবার জন্য ব্যবস্থা করতে লেগেছেন। কো-অপারেটিভ ক্রেডিট কাকে বলে সে সম্বন্ধে আমি বলব না। তবে এই চাষার ‘ঋণগ্রস্ত হওয়া’ রোগটাকে সারবার জন্য অল্প সুদে ঋণের যে ব্যবস্থা খোলা হয়েছে তাতে চাষা র রোগ সারছে কি বাড়ছে সে সম্বন্ধে সংক্ষেপে একটু বলে এই প্রবন্ধের উপসংহার করতে চাই। Continue reading

পলিটিক্স অব ফিল্ম: শাওকির গুলমোহর Featured

সৈয়দ আহমেদ শাওকির কাজবাজ তো ভালোই। মানে মেকিং, শুটিং লোকেশন, গল্প বুনন ও ডায়ালগ আর টান টান উত্তেজনায় দর্শক ধরে রাখার ক্যাপাসিটি সবই তো ঠিকঠাক। তবে পলিটিক্স অব ফিল্মটা সে ভালভাবেই রপ্ত করতে পেরেছে, ‘কারগার’ ও ‘তাকদীর’ দুইটা ওয়েব সিরিজে সেটার ব্যবহারও করেছে সুচতুরতার সাথে। এই কলাকৌশলটা সবচেয়ে বেশি সাটল ওয়েতে ব্যবহার করেছে সে তার সর্বশেষ ওয়েব সিরিজ গুলমোহরে। আওয়ামী ও বাংগালী জাতীয়তাবাদী বয়ানে পোট্রে করা ৪৭-ই আমাদের দেখাতে চেয়েছে এই সিরিজে।

সিরিজের মাঝখানে প্রেক্ষাপট দেখানো হয় যে, এক ইংরেজ একজন সংগীতজ্ঞের সংগীতে মুগ্ধ হয়ে তাকে জমি দান করলে এই বিশাল প্রাসাদটি তৈরি করেন। খুবই ইনোসেন্ট ঘটনা! -যেন এই বিশাল প্রাসাদ জমিদারির সিম্বল না, আর জমিদারিত্বটা প্রজাদের শোষণ না করেই গড়ে ওঠা! সংগীত, সন্তুর আর সুরে আড়াল হয়ে যায় জমিদারীর পরিচয়, যেমন বিশাল সাহিত্যিকের পরিচয়ে নাই হয়ে যায় জমিদার রবি ঠাকুর।

হিন্দু জমিদারের (সংগীতজ্ঞ!) প্রাসাদ দখল করে নেওয়া তালুকদার পরিবার হয়ে ওঠে অত্যাচারী শোষক। তাদের অত্যাচারের আচড় সবাই ভোগ করেছে। অত্যাচারের মাত্রা এতই তীব্র ছিল যে এলাকার সবাই তালুকদার সাহেবের জানাযা না পড়েই ফিরে গেছে।এমন নৃশংস অত্যাচার যে ঘটেনি তা না। কিন্তু মোটাদাঘে এসব শোষণ, প্রজাদের অত্যাচার ঘটেছে ৪৭’ এর আগে এবং বেশিরভাগই হিন্দু জমিদারদের হাতে।

এখানকার হিন্দু জমিদারদের হাতে ভয়াবহ শোষণ ও অত্যাচারের দীর্ঘ এক ইতিহাস আছে মুসলমান ও নিম্নশ্রেণীর হিন্দুদের। আর সেই ইতিহাসকে নাই করে দিয়ে ৪৭’ পরবর্তী সময়কে খুবই খারাপ দেখিয়ে উপস্থাপন করে ‘আগেই ভালো ছিলাম’ ন্যারেটিভ নির্মাণে চলচ্চিত্রের রাজনীতিটা ভালোই করেছেন শাওকি। Continue reading

না কান্দে বুবু (১৯৫৪)- সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ

This entry is part 9 of 19 in the series বাংলাদেশি ফিকশন

সোনাকান্দি হতে মাঝের হাট দূর নয়। কিন্তু বর্ষায় নৌকা ছাড়া গতি নেই। তখন এ-পথটা অতিক্রম করতে গোটা একদিন লেগে যায়। এ-নদী সে-নদী; এ-খাল সে-নালা। স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ পানির আর মাছের, কচুরিপানার আর ধানের; নৌকায় ভরাট গন্ধ ভেজা কাঠের, ডহরের পানির আর খাম্বুরি তামাকের। আকাশের বর্ষাশেষের শ্রান্ত মেঘ নিস্তেজভাবে ঘোরে। হাওয়া নেই। পালশূন্য শ্লথগতি পানসি-ঘাসী-গয়না ও ডিঙির আর তেজের গরম নেই। এত পানি আর দিগন্তপ্রসারী খোলামেলা প্রসারতার মধ্যেও দমবন্ধ-করা ভাব। হঠাৎ কখনো-সখনো একটু হাওয়া যদি আসে চুড়ির মতো মিহিন ঢেউ তুলে পানিতে, বড় ভালো লাগে। দেহ শীতল হয়।

নৌকা আর নদী আর প্রসারতা আর মেঘ কেউ দেখে না। পথটা বাড়ির: এ-বাড়ির পথ বদলায় না। এ-বাড়ির পথ জীবন। কেবল কখনো শ্লথগতি, হাওয়া নেই বলে পাল ওড়ে না; আবার কখনো ঢেউ-ভাঙানো তেজময় গতি, পাল ফুলে থাকে হাওয়া আছে বলে। কখনো ঘুম পায়। কখনো খড়ের বিছানায় শুয়ে ছইয়ের ভেতরে দুলতে-থাকা থলে হুঁকার পানে তাকিয়েই থাকতে হয়। মাঝি ভাবে না, মাঝির ছেলেটা ভাবে না। যে-মেঘ নিস্তেজ সে-মেঘ দেখে না; যে-পানিতে সে-নিস্তেজ মেঘের ছায়া সে-পানি দেখে না। কখনো-সখনো নড়ে বসে কেবল খাম্বুরি তামাক খায় আর তার কড়া গন্ধ ভেসে আসে ছইয়ের ভেতর।

এ-পথ বাড়ির।

আফতাব ভাবে, চার বছর। চার বছর পরে বাড়ি যাচ্ছে। কলাপাতা-ঘেরা আম-জাম-গাছের ধারে, খাল-বিল নালা-ডোবার পাশে শতসহস্র ঘনবসতির মধ্যে বসবাস-করা লোকদের জন্য চার বছর পরে বাড়ি যাওয়াটা বড় কথা। সে-কথা পুঁথির কাহিনীর মতো দেশময় ছড়িয়ে পড়বার মতো অসাধারণ, নাড়ি ছেঁড়ার মতো গায়র-মামুলি।

– আফতাব মিঞা দ্যাশে থাকে না, দ্যাশে আসে না। আফতাব মিঞা চাইর বচ্ছর দ্যাশে থাকে না, দ্যাশে আসে না। শহরে থাকে। হেই বড় শহরে। আফতাব মিঞা গাড়ি-ঘোড়ায় চলে। আফতাব মিঞা সিদ্ধভাত খায়, বরফের মাছ খায়। আফতাব মিঞা রঙে আছে।

খেদু মিঞা দাঁতের মাজন বিক্রি করে ঢং করে বক্তৃতা দিয়ে, হাত সাফাইয়ের ম্যাজিক দেখিয়ে। খেদু মিঞা সে-শহরের খবর রাখে। আফতাব মিঞা হেই শহরে থাকে। চার বচ্ছর আফতাব মিঞা দ্যাশে থাকে না, দ্যাশে আসে না।

– শহরে থাইকা আফতাব মিঞা বাড়িৎ কেবল টেকা পাঠায়। বাড়িৎ আছে নুনা মিঞা, তার বুড়া বাপ। বুড়া জমিজমা দ্যাখে আর বাতের ব্যথায় কঁকায়। চোখে ছানি পড়ছে; কিন্তুক বুড়া মানে না সে-কথা, স্বীকার করে না সে-কথা। মায়ের কবর পুকুরের পাড়ে গাবগাছটার তলে।

– আফতাব মিঞা শহরে থাকে; কিন্তু নুনা মিঞা দ্যাশে থাকে। পোস্টকার্ডে চিঠি ল্যাখে ছেলের কাছে আর ছেলের গল্প করে। আর নুনা মিঞা আফসোস করে। ছেলেডা আসে-আসে বলে, কিন্তু আসে না।

– আফতাব মিঞা কিন্তু কাবেল ছেলে। চাকরি করে আর বই বাঁধানোর দোকান চালায়। তাই আফতাব মিঞা দ্যাশে আসে না। আফতাব মিঞার সময় নাই, ছুটি নাই। আফতাব মিঞা চাকরিও করে ব্যবসাও করে।

দেশের বাড়িতে আর আছে বুবু। মানুষের জীবনে কী হয় বোঝা যায় না। বুবুর বিয়ে হল, বুবু নাইওর এল, বুবু শ্বশুরবাড়ি গেল। বুবুর ঘোমটা খুলল, বুবু সংসার গড়ল আরেক মানুষের ঘরে, বুবুর ছেলে-মেয়ে হল। বুবু মাছ ছাড়াল পুকুরে, আমগাছে আম গুনল। সন্ধ্যার পরেও বুবু কুপি হাতে খড়ম পরে গোয়ালে গরু দেখল, মুরগির খোঁয়াড়ে ঝাপ আছে কি না দেখল। তারপর বুবুর দাড়িওয়ালা স্বামীটা মারা গেল।

– জোতজমি আছিল। সেয়ানা লোকডা। ধড়াস্ কইরা মারা গ্যাল। মস্ত বড় মদ্দ মানুষ, হেই জোয়ান। কাতলার মতো মুখ হা কইরা ধড়াস করি মারা গ্যাল চক্ষের সামনে।

বুবু আর মাছ ছাড়ায় না, আমগাছে আম গোনে না।

-নুনা মিঞার মাইয়া সাদা শাড়ি পরে হিন্দুগো মতো। চোখে ছানিপড়া বুড়া বাপের সংসারডা দ্যাখে। নুনা মিঞার মাইয়ার নাকফুলের গর্তে বাঁশের ছিলার ঢিপি। নুনা মিঞার মাইয়ার চলনে-বলনে আর জান নাই। ছয়ডা পোলা-মাইয়া রাইখা তার স্বামীডা ধড়াস কইরা মারা গ্যাল চক্ষের সামনে।

ছইয়ের তলে কলকি দোলে হুঁকা দোলে আর টোপা দোলে।

আফতাব ভাবে, অনেকদিন সে বুবুকে দেখে নি। বরাবর বুবু তাকে দেখে কাঁদে। ভাবে, চার বছর পরে তাকে দেখে বুবু এবারো কাঁদবে কি? Continue reading

কবিতা – ২০২৫

ভালোবাসার কথা

[ট্রিবিউট টু জীবনানন্দ দাশ ও ফররুখ আহমদ]

ভালোবাসার কথাগুলাই মনে রাখি,
অপমানের কথা, ঘৃনার কথাগুলা মনে থাকে না
শীতের বাতাসে গাছের পাতাদের মতো তারা
মাটিতে পইড়া থাকে, সময়ের গরুর গাড়িটা
তাদেরকে মাড়ায়া চলে যাইতেছে

সন্ধ্যার কুয়াশায় ভালোবাসার কথাগুলা
ভাসতে ভাসতে কাশতে কাশতে কাছে আসে,
বলে, “রোগা হয়ে গেছো এতো, চাপা পড়ে গেছো যে হারিয়ে,
পৃথিবীর ভিড়ে তুমি…”

অন্যসব নিরবতার ভিতর ভালোবাসার নিরবতাই
ফিরা আসে, সন্ধ্যার তিমি-মাছ যেমন, দূরে
ডুব দিল, রাত্রির সাগরে
ভেসে যাইতেছে তো সে-ও…

গরুর গাড়িটার ক্যাঁচ ক্যাঁচ আওয়াজের ভিতরে

২৪/০১/২০২৫


বারামখানা

অনেকক্ষন ধইরা ডিসট্রাক্ট হইতে পারতেছি না,
খারাপই লাগতেছে!
কিসের উপর ফোকাস করবো?
কি নিয়া ভাববো? বুঝতেছি না…

একটা ডিসট্রাকশন আসুক,
হঠাৎ বাতাসের মতো
যেন আমি কিছু ভাবতেছিলাম,
অনেক ইম্পর্টেন্ট একটা কিছু, আর
সেইখান থিকা সরায়া নিয়া যাইতেছে আমারে
আমি একটা পলিথিনের ব্যাগের মতো উড়ে যাইতেছি

কোন কিছু ভাবার আগে,
এইরকম একটা ডিসট্রাকশনের জন্য বইসা আছি
তারপরে বলবো, দুনিয়া কতো যে মায়ায় ভরা গো!

সরে সরে যাইতে চাইতেছি আমি চারপাশ থিকা
কোন একটা ডিসটরশন আইসা বলুক,
এই নাও, এইটাই তোমার বারামখানা!

আমি পিছলায়া পিছলায়া যাইতে থাকবো ভাবি,
কিনতু একটা রিয়ালিটির ধারনা, আমার পিছন ছাড়ে না

সিদরাতুল মুনতাহা’র দিকে যেন আমি তাকায়া আছি

আর কোন ডিসটরশন তো সেইখানে যাইতে পারে না
আলো বাঁইকা যায় না, দৃশ্যের জন্ম হয় না, কল্পনাও থাকে না

এমন একটা জায়গায় আমি বইসা আছি
কোন ডিসটরশন-ই আর সেটিসফাই করে না
সাপে ছোবল দেয়, বিষ ছড়ায় না…

তারপরেও বইসা আছি এই বারামখানায়
ডিসটরশনগুলার গান শুনি,
সকালের আলো আসে, জীবিতের হায়-হুতাশ নিয়া
এমনই এক মায়া চারপাশে
চলে যাইতেছে যে যার মতো, যে যার পথে গো
যে যার-ই পথে

১০/০৪/২৫
Continue reading

এসেনশিয়ালিস্ট রাষ্ট্রকল্পে খেলাফত ও ইসলামপন্থা বনাম ঐতিহাসিক কন্টিঞ্জেন্সি

নবীজীর ওফাতের পরপর মুসলমানদের শাসক কে হবে, কিভাবে সেই শাসক নির্ধারণ করা হবে তা নিয়ে বিরাট হাঙ্গামা বেঁধে যায়।

এসময় আনসাররা নেতৃত্বের দাবী জানালেও আবু বকর (রা) বলে দেন যে কুরাইশরা ছাড়া কেউ নেতা হতে পারবে না।

নেতৃত্বের নাম খেলাফত নবীজী দিয়ে যান নাই। কোরানেও নাই। পরবর্তীতে মুসলমানরা নিজেরাই নেতার নাম খলিফা দেয়। আর এই ব্যবস্থার নাম যে খেলাফত সেটা আসে আরও পরে।

খলিফা কিভাবে নির্বাচিত হবে সেটা নিয়েও কোন নির্দিষ্ট রুপরেখা ইসলামে কোন কালেই ছিল না। প্রথম চার খলিফা চারভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। কেউ নির্বাচিত হয়েছেন শূরার মাধ্যমে, সেই শূরা আবার নির্বাচিত হয়েছে প্রভাব বিবেচনায়। অর্থাত, গণতান্ত্রিকভাবেও খলিফা নির্বাচিত হয়েছে। আবার কেউ নির্বাচিত হয়েছেন পূর্বতন খলিফার ইচ্ছানুসারে।

আবু বকরের (রা) খেলাফতও প্রশ্নাতীত ছিল না। নবীজীর সম্পত্তির ভাগবটোয়ারা কিভাবে হবে সেটা নিয়েও ছিল তীব্র দ্বিমত। ফাতেমা (রা) আমৃত্যু আবু বকরের সাথে (রা) মুখ দেখাদেখি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আলী (রা) আবু বকরের (রা) হাতে বায়াত দিতেও দেরি করেন এই কারণে (যদিও কোন কোন রেওয়াতে আছে যে আগেই একবার বায়াত উনি দিয়েছিলেন পরে সম্পর্ক খারাপ হয়)।

শুধু তাই না, ফাতেমার (রা) ইন্তেকালের পর আবু বকর (রা) আলীর (রা) কাছে যেতে চান মীমাংসা করে বায়াত আনার জন্য। সেসময় ওমর (রা) আবু বকরের (রা) জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শংকা করছিলেন- এতটাই তিক্ততা ছিল।

খেলাফত নিয়ে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে উসমানের (রা) আমলে। উনি ছিলেন উমাইয়া গোত্রের। সেসময় উমাইয়ারা বড় বড় পদ পেতে থাকে এবং দুর্নীতির অভিযোগ আসতে থাকে চারদিক থেকে।

এরকম অচলাবস্থায় উসমানকে (রা) শহীদ করা হয়। ক্ষমতায় আসেন আলী (রা)। ক্ষমতায় আসার পর আলীর (রা) বিরুদ্ধে আয়েশা (রা) এবং মুয়াবিয়া (রা) ফুঁসে ওঠেন। একাধিক যুদ্ধ হয়, উভয়পক্ষে প্রচুর সাহাবী শহীদ হন।

আলীর (রা) এর পর খেলাফত উমাইয়াদের হাতে চলে যায় পাকাপাকিভাবে। শুরু হয় ইসলামের ইতিহাসের প্রথম বংশীয় খেলাফত। Continue reading

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জীবিকার জন্য একটা চাকরি করি। তবে পড়তে ও লেখতে ভালবাসি। স্পেশালি পাঠক আমি। যা লেখার ফেসবুকেই লেখি। গদ্যই প্রিয়। কিন্তু কোন এক ফাঁকে গত বছর একটা কবিতার বই বের হইছে।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →