Main menu

পোস্ট পলিটিকাল ক্রাইসিস Featured

মনে করেন, আপনি হাঁটতে যান সকালে। এই হাঁটার মধ্যে ভাল লাগা/ফ্রেশ লাগার ব্যাপার আছে। তাই যান। কিন্তু, সাথে এই আলাপও জোড়া দেন যে, হাঁটলে শরীরের উপকার হয়।

এইটা কথা মিছা না। কিন্তু এইটার উপরে যখন জোর দিবেন বেশি, তখন ফ্রেশ লাগার যে এনজয়মেন্ট, তার বদলে এইটা একটা একম্পলিশমেন্ট হয়ে দাঁড়ায়। আর ফ্রেশ লাগার এনজয়মেন্ট যখন হারায়া ফেলেন, তখন মেইন নিউরোলজিকাল ইফেক্টটাই হারায়া যায়।

কোথাও বেড়াইতে যান। ছবি তোলা স্বাভাবিক। কিন্তু ছবি তুলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রামে দেয়াটা যদি ঘুরতে যাওয়ার মনোশারীরিক প্রক্রিয়ার চেয়ে বেশি ইম্পর্ট্যান্ট হয়, তাহলে স্ট্রাগলটাই হারায়া ফেললেন। আর যেইখানে স্ট্রাগল নাই, সেইখানে কনট্রাডিকশন নাই। আপনি লেস বিয়িং, মোর কমোডিটি।

কোন দেশের যোগ্য নেতা দরকার। এইটা ইম্পোর্ট কইরা আনতে পারবেন? না। তার জনসংযোগের মধ্যে দিয়ে পলিটিকাল হরাইজন আবিষ্কার হবে। সোসাইটি চেঞ্জ হবে। কনফ্লিক্ট হবে। যোগ্য নেতার চাইতেও এইটা দরকার। পলিটিক্সের মেইন কাজই এইটা।

শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর খালি দেশ চালাইছেন। রাজনীতি করেন নাই। প্রথমে বাকিদের এভয়েড করছেন। পরে কনফ্লিক্ট এভয়েড করতে এক পার্টি করছেন। ফলে, রাজনীতি হয় নাই।

যুদ্ধের আগে উনি কি করছেন? মুসলিম লীগের সাথে ফাইট করছেন। অপোজিশনের সাথে ফাইট করছেন। ফলে পলিটিকাল হরাইজন তৈরি হইছে। তিনি নেতা হয়ে উঠছেন। বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হইছে। পরে নিজেই নিজেরে পোস্ট পলিটিকাল কাল্টে স্থাপনের চেষ্টা করছেন। ফলে, ব্যার্থ হইছেন। আব্দুর রাজ্জাক স্যার কি বলছিলেন? Continue reading

হিন্দুস্তান ডিভাইডেড Featured

This entry is part 17 of 17 in the series রকম শাহ'র বয়ান

জিন্না কি ইতিহাশের ভিলেন, নাকি নায়ক? বাংগালি নেশনালিজম জেই ইতিহাশ বানাইছে তাতে জিন্না হইলেন ভিলেন। এইটা শেয়ার করে মতি-মাহফুজ গং, আওমি লিগ, ছিপিবি, কলিকাতা, ইনডিয়ার কংগেরেছ, বিজেপি, ১৯৪৭ শালের আগের জামাত; বিম্পির ভিতরও বাংগালি নেশনালিজমের আছর আছে, কিন্তু জিন্নার ব্যাপারে খুব কিলিয়ার পজিশন দেখতে পাই না আমি বিম্পির ভিতর।

এদের কাছে জিন্না একজন ভিলেন কারন, এরা শবাই ‘অখন্ড ভারত’ নামে একটা খোয়াব শেয়ার করে, জেইখানে জিন্না কইতেছেন, ‘দুই জাতি’র কথা! আর বিটিশ ইনডিয়ার কংগেরেছের দাবি, এক জাতি, জার নাম ‘ভারতি’, একটাই দেশ, জার নাম ‘ভারত’। এই জায়গাটা ঠিকঠাক বিচার করা গেলেই মাত্র আমরা ৪৭, ৭১, ২৪ বুঝতে পারবো ঠিকঠাক।

বিটিশ ইনডিয়ায় জদি একটা ‘জাতি’র কোন শম্ভাবনা আদৌ থাকে, তার নাম ‘ভারতি’ বা ‘ইনডিয়ান’ না, ইতিহাশের কখনোই তা আছিলো না; মোগল আমলে ‘জাতি’র আইডিয়ার কাছাকাছি একটা জিনিশ আছিলো খুব শম্ভব, জেইটার নাম ‘হিন্দুস্তানি’ এবং এইটাই বিটিশরাও ইউজ করতো শুরুতে; পরে ওরিয়েন্টাল এস্টাডিজ ডেভলাপ করার পরে বিটিশরা ঐটারে ‘ইনডিয়ান’, হিন্দুস্তানরে ইনডিয়া ডাকা শুরু করে; কংগেরেছ ঐ ওরিয়েন্টাল এস্টাডিজের মুরিদ হিশাবে ‘ইনডিয়া/ভারত’ পছন্দ করা শুরু করে, জেই ভাবনার ডেভলাপড গোড়া বঙ্কিমে এবং পরে বিবেকানন্দের ভিতর দিয়া আরো মজবুত হইছিলো। এই কারনে আমি কইছি, ইনডিয়া বা ভারত ডিভাইডেড হয় নাই, বরং হিন্দুস্তান ডিভাইডেড হইয়া পাকিস্তান আর ইনডিয়া হইছে।

জিন্না হিন্দুস্তান মানতে রাজি আছিলো এবং জিন্নার কাছে হিন্দুস্তান মানে বহুজাতির একটা কনফেডারেশন, জেইটা হিন্দুস্তানি নামে একটা মহাজাতির শম্ভাবনা পয়দা করে। কিন্তু কংগেরেছ এইটা মানতে নারাজ, তারা মুখে ‘না না’ কইতে থাইকা ধর্মের বেছিছে ‘ইনডিয়া/মিথিকেল ভারত’ খোয়াব দেখতে থাকে এবং হিন্দুস্তানের মানুশের ভিতর বহু ভাগ-ধর্ম-কালচার আছে বইলা মানতে একদমই নারাজ। ওরিয়েন্টালিস্ট কংগেরেছের এই ভাবনার জবাবে জিন্না হিন্দুস্তানে মোছলমানদের মাইনোরিটি হিশাবে দেখতে পায় এবং ঐ মাইনোরিটির নেতা হইয়া ওঠে। জিন্না ইহিতাশের নায়ক কিনা, শেই ব্যাপারে আগে জদি কোন শন্দেহ থাকেও, আজকের ইনডিয়ায় মোছলমানদের হালতে নজর দিলেই আমাদের বুঝতে পারার কথা জে, জিন্না ওয়াজ রাইট–ইনডিয়ান মানে একটা ধর্মের পরিচয়, ভারত মানে ইজরায়েলের মতো একটা মিথিকেল ভুবন এবং কংগেরেছের মোছলমান মানে বিদেশি এবং ফরেন কালচারাল/রিলিজিয়াছ হামলা এবং এইগুলা তখনই ভাবনা হিশাবে খুবই কিলিয়ার-কাট আছিলো। কংগেরেছ শেইটা অশিকার করছে, জিন্না শেইটা দেখাইয়া দিছেন। Continue reading

‘মুখ ও মুখোশ’ বানানের কথা – আবদুল জব্বার খান

[আবদুল জব্বার খানের জবানিতে লেখছিলেন সিদ্দিক জামাল। ছাপা হইছিল সাযযাদ কাদির সম্পাদিত পাক্ষিক তারকালোক পত্রিকার ১৫-৩১ ডিসেম্বর, ১৯৮৬ এবং ১-১৪ জানুয়ারি ১৯৮৭ সংখ্যায়। হেডলাইন ছিল “আমার কথা”। সেইখান থিকা ‘মুখ ও মুখোশ’ সিনেমার অংশটা নেয়া হইছে এইখানে।]

১৯৫৩ সালের জানুয়ারি। পরিসংখ্যান বিভাগের ডাইরেক্টর ড. আবদুস সাদেক একটা মিটিং ডাকলেন। দাওয়াটা ছিল চা-চক্রের। এতে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও সংম্পাদক সিনেমা হলের মালিক, পরিবেশক প্রমুখ। আমি ও নুরুজ্জামান সাহেবও গেলাম। তখনকার সেক্রেটারিয়েট, ছনের ঘর। এর ভেতর ৪০/৫০ জন লোক। সাদেক সাহেব খুব আবেগপ্রবণ ভাষায় বললেন, ‘আমাদের দেশে ৯০টি সিনেমা হল আছে। এগুলোতে লাহোর, কোলকাতা, বোম্বের ছবি চলে। চলচ্চিত্র শিল্পকে গড়ে তুলতে, হলগুলোকে বাঁচাতে হলে আমাদের পূর্ব পাকিস্তানে ছবি তৈরি করতে হবে। গুলিস্থানের মালিক এস এম দোসানী উঠে দাঁড়ালেন। বললেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানের আবহাওয়া অর্দ্রে, এখানে ছবি তৈরি সম্ভব নয়।’ সাদেক সাহেবের মুখটা কালো হয়ে গেল। আমি উঠে দাঁড়ালাম। বললাম, ‘কথাটা আমার কাছে যুক্তিসংগত মনে হচ্ছে না। আর্দ্র আবহাওয়ায় ছবি হবে না কেন? কোলকাতার ছবিরও কিছু কিছু অংশ পর্ব পাকিস্তানে শ্যুটিং হয়। ছবি দেখার সময় সেগুলো তো আলাদা কিছু মনে হয় না। ভদ্রলোক এবার চটে গিয়ে বললেন, ‘আমার চৌদ্দ পুরুষ ফিল্মের সঙ্গে জড়িত, আমাদের পরিবেশনা আছে, স্টুডিও আছে, সিনেমা হল আছে। অর্থাৎ ফিল্মের সাথে সংশ্লিষ্ট সব শাখাই আমাদের আছে। অতএব আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, পূর্ব পাকিস্তানে যে বাজেট সেই অর্থ দিয়ে কাঁচা মালের একটা কারখানা করা সম্ভব নয়। এভাবে বেশ বড় সড় একটা বক্তৃতা দিলেন তিনি। আমি আবারও উঠে দাঁড়ালাম। বললাম, ‘এটা কোনো যুক্তির কথা নয়। কোলকাতায় যদি ছবি তৈরি হয় তবে ঢাকায় মাটিতে হবে না কেন? ওরা নেগেটিভ বাইরে থেকে এনে ছবি করে। আমরাও পারব। ছবি অবশ্যই হবে। আর এক বছরের মধ্যে যদি কোনো ছবি তৈরি না হয়, কেউ না করে তবে এই জব্বার খানই ছবি বানাবে!’ রীতিমতো চ্যালেঞ্জ দিয়ে ফেললাম। ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলনের পর এক বিশেষ চেতনা ছড়িয়ে পড়েছে-আমরা সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চাই, আমরা স্বনির্ভর হব, আমরা দেশাত্মবোধের পরিচয় দিব যার যার ক্ষেত্রে কাজ করে। আমি রাজনীতি করি না — আমি নাটক লিখছি, নাটক করছি। এ মুহূর্তে সিনেমার ওপর চ্যালেঞ্জ দিয়ে ফেললাম-অনেকটা বোকার মতোই। চলে আসার সময় জামান বলল, ‘এটা ভুল করলে হে সিনেমা তুমি করতে পারবে না।’

আমার ‘ডাকাত’ নাটকের রিহার্সেল তখন প্রায় শেষ। ভিক্টোরিয়া ক্লাবে বসে বিকেলে চা খাচ্ছি। এই ক্লাবেই আমি খেলেছি। সরওয়ার সাহেব এলেন। ‘জব্বার সাহেব আপনারা নাকি ছবি বানাচ্ছেন?’ বলে খবরের কাগজে বের করলেন। ‘খান জামান ফিল্ম প্রোডাকশন’-খবর বের হয়েছে। কে দিয়েছে জানি না। আমি অবাক! কই আমরা তো ছবি শুরু করি নি। জামান বলল, তুমি ওই কথা বলেছ তাই এই অবস্থা। এখন বানাও ছবি। আমি পড়লাম মহাবিপাকে। ছবি করব, ক্যামেরা পাবো কোথা? সরওয়ার সাহেব বললেন, ক্যামেরা আমার আছে, কাজ শুরু করেন। বললাম, আপনার ক্যামেরায় কাজ হবে তার প্রমাণ? আমরা মাঠের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করছিলাম। আমাদেরই সে সব তুলে পরে দেখালেন। দেখলাম কাজ চলবে। উনি দুই রোল কোডাক ফিল্ম আনতে বললেন, আনলাম। আমরা ঘরে চৌকির তলায় সে ফিল্ম পড়ে রইল অনেকদিন।

ভাবলাম ছবি করবই। কোলকাতার একজন ‘ইকবাল ফিল্মস’ করেছিল কিন্তু ছবি করে নি। সেই ভদ্রলোকের প্রস্তাবে তাকে শেয়ার করে নিলাম। আমি পরিচালক (বলাকা সিনেমার) এম এ হাসান চেয়ারম্যান, নুরুজ্জামান ম্যানেজিং ডিরেক্টর। আমি, মালেক সাহেব, কচি সাহেব সবাই পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে কোম্পানি গঠন করলাম। এরপর জয়েন্ট স্টক কোম্পানি করার অনুমোদন নিলাম। ছবি করার পুরো দায়িত্ব এখন আমার ওপর। Continue reading

নট ইওর টিপিকাল মুক্তিজুদ্ধের গোসাঁই

কেন মুক্তিযুদ্ধ থেকে বের হইতে হবে আমাদের?

মুক্তিযুদ্ধের সম্যক ফলাফল বাংলাদেশ পাওয়ার পর বাংলাদেশপন্থিদের একটাই কামনা হওয়া উচিত, ‘মুক্তিজুদ্ধ’কে শেশ করে রাখা।

এরপরেও আমরা যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়া বকবকাই, চেতি ও মুর্ছা যাই, এইটা মূলত ইন্ডিআর মুক্তি জুদ্ধখানি চালু রাখি। একাত্তরে ইন্ডিয়ার ইন্টারভেনশনের পর একটা বাংলাদেশ হইয়া ইন্ডিআর কি লাভ? শেইটা ঘটাইতে ইন্ডিআ ইন্টারভিন করবেই বা কেন? এখন তৎকালিন পাকিস্তানপন্থি ও অধুনা ‘বড় বাংলাপন্থি’ মজহারদের কাছে বাংলাদেশ দুধভাত জিনিশ হইতে পারে কিন্তু ইন্ডিআর কাছে বাংলাদেশ হওয়াই মানে পাকিস্তান ভাগ করাই একটা ফুল থ্রটল ইন্টারভেনশনের জন্য যথেষ্ট না, যদি না শেই বাংলাদেশ ইন্ডিআর অনুগ্রাহী উপগ্রহ হইয়া থাকে। ফলে ইন্ডিয়া একটা ‘মুক্তিজুদ্ধ’ বাংলাদেশে চায়, জেই মুক্তিজুদ্ধের লক্ষ্য একটা ইন্ডিআন আওতাধীন বাংলাদেশ।

এই ‘মুক্তিজুদ্ধ’এর লোকাল মার্ছেনারি হইলো আওয়ামি লিগ। ও প্রোগোবামস। প্রোগোবামদের একটা পক্ষকে মনে হবে খুব এন্টি আওয়ামি। জুলাইয়ের পর তারাও আওয়ামী লিগেরে ভোটে নামতে দিতে চায়না। কিন্তু তারা চায় জামাত ও আওমিলিগ দুইটারেই ভোট থেকে দূরে রাখতে। জামাতের জুলাইয়ে জেই অবদান, তারপরে জামাতরে ব্যান করতে চাওয়া কেমন চাওয়া? এই চাওয়ার শরুপ কি? এই চাওয়ার চেহারা ধরেন মুক্তিযুদ্ধের পর আওয়ামি লিগ ব্যান করতে চাইলো কেউ তেমন (অনেকে ছ্যাৎ কইরা উঠবেন এত বড় কেরডিট দিতাছি বইলা,কারন তারা মানেন মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লিগের বিরাট কেরডিট! আমি তা মানিনা)। তাইলে জারা জুলাইয়ের পর আওয়ামির লগে জামাতেরও একই ট্রিটমেন্ট চায়, তারা আসলে গানিতিক আরোহ পদ্ধতিতে আওয়ামি লিগের রিহ্যাবিলিটেশন চায় কিন্তু, যেহেতু বামেদের অভ্যাশ শব শময়ই ‘ইতিহাশের শঠিক দিকে থাকা’ এবং ভার্চু সিগনালিং করা ফলে জুলাইয়ের পর আওয়ামি রিহ্যাবের কথা জামাত পশ্ন শামনে রাইখা বলে।

মুক্তিজুদ্ধ জারি রাখার আরেক শমশ্যা হইলো, শুধু নিহতের সংখ্যা ধরলেই, এক মুক্তিযুদ্ধের পেটে হাজারটা জুলাই হাপিশ হইয়া যাবে তুলনায়। মানে বাংলাদেশের বর্তমান বইলা কিছু থাকে না আর। ফলে অন্তত জুলাইয়ের পর মুক্তিজুদ্ধরে তামাদি করে ফেলতে হবে।

এবং বাংলাদেশের রাজনিতি শুরু করতে হবে। জুলাইয়ের না। মানে জুলাইকেও পলিটিকালি সমাপনী অনুষ্ঠানের ভেতর দিয়া জাইতে হবে। যদি না জুলাইও তামাদি হওয়ার পয়েন্টে পৌছাইতে চায় মুক্তিজুদ্ধের মত। Continue reading

(বই থেকে) মুহাম্মদ ইউনুস – আনিসুজ্জামান

[আনিসুজ্জামানের (১৯৩৭ – ২০২০) লেখা বিপুলা পৃথিবী (২০১৫) বইয়ের ২৬৩ – ২৬৫ নাম্বার পেইজ থিকা নেয়া]

ইউনূস যখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি, তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পল্লী-উন্নয়ন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুইন-উদ-দীন আহমদ খান। ইউনূস এসে এই প্রকল্পের ভার নেন। এর উদ্দেশ্য ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষজনদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়-সম্প্রদায়ের একটা যোগাযোগ ঘটানো। আসল অভিপ্রায়-দুদিকের মধ্যকার দূরত্ব ঘোচানো, উন্নয়নের ছোঁয়া গ্রামে পৌঁছে দেওয়া। ১৯৭৫-এ বিদেশ থেকে ফিরে আমি তার সম্পর্কে অবহিত হলাম। কৃষির উন্নয়নের জন্যে এই প্রকল্পে কাজ হচ্ছিল, সেই সঙ্গে সাক্ষরতা-অভিযানও চলছিল। আমাদের বিভাগের মনিরুজ্জামান সাক্ষরতার বিষয়ে প্রকল্পের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল। এক-আধদিন আমাকেও সে নিয়ে যায় এ-বিষয়ে কর্মীদের কাছে কিছু বলতে। ইউনূস প্রথম থেকেই কিছু উৎসর্গীকৃত সহযোগী পেয়েছিলেন। তাঁর বিভাগেরই শিক্ষক লতিফি তাঁদের মধ্যে প্রধান। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থেকেও তিনি কর্মী বেছে নিয়েছিলেন। ইউনূসের প্রতি তাঁদের আনুগত্য ছিল প্রশ্নহীন, তাদেরকে ইউনূস প্রেরণা দিয়েছিলেন অন্তহীন।

পরের ধাপে ইউনুস প্রতিষ্ঠা করলেন ‘নবযুগ’ খামারের-তেভাগার নীতি অনুসরণ করে। এ-সম্পর্কে আমি খুব বেশি জানার সুযোগ পাইনি। তবে এ-প্রকল্প যে সফল হয়েছিল, তা বোঝা গিয়েছিল ১৯৭৮ সালে নবযুগ রাষ্ট্রপতি-পুরস্কার পাওয়ায়।

কিন্তু ইউনূস এতে তৃপ্ত হননি। আশপাশের অতি দরিদ্র মানুষদের দুরবস্থা তিনি স্বচক্ষে দেখেছিলেন। নবযুগ দিয়ে তাদের কষ্ট লাঘব করা যাচ্ছিল না। সরেজমিনে দেখেশুনে তিনি উপলব্ধি করেন, কিছু অর্থ ঋণস্বরূপ পেলে এরা মহাজনদের কবল থেকে মুক্ত হতে পারে, নিজের মতো উপার্জন করতে পারে। নিজের থেকে কিছু মহিলাকে ঋণ দিয়ে যে-পরীক্ষা তিনি করেছিলেন, তা সফল হয়েছিল। ফলে ইউনূস গেলেন রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখায়-এদের জন্যে ঋণ পাওয়া যায় কি না, তা দেখতে। তারা বললো, ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই, আছে আঞ্চলিক দপ্তরের। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়-সন্নিহিত জোবরা গ্রামের জন্য কিছু ঋণ পাওয়া গেল। সেই ঋণ বিতরণ করেই সূচনা হয় গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণদান কর্মসূচির। Continue reading

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →