চমস্কির না-পারা এবং জিজেকের ব্যাখ্যা
নোম চমস্কি ডিসেম্বর, ২০১২ তে একটা ইন্টারভিউ দিছিলেন, যেইটা ২০১৩ এর জুন মাসে ইউটিউবে ছাড়া হয়; সেইখানে উনারে জিজেক সর্ম্পকে জিজ্ঞাসা করা হইলে বলেন যে, এরা (লগে লাঁকাঁ ও দেরিদা এবং অন্যান্য পোস্ট-মর্ডানিস্টরা) খালি ভাব লয়; এদের কথা-বার্তা কোন কামে লাগে না। এই কথার প্রেক্ষিতে জিজেকের কী বক্তব্য? একজন প্রশ্নকারী লন্ডনে, একটা আলাপের শেষে, জুলাই ১৬, ২০১৩ তে জানতে চান; তখন জিজেক কন, চমস্কি যে এইরকম বাস্তববাদী লোক, উনারে ত জিন্দেগীতে একটা ইম্পেরিক্যাল ট্রুথের ধার-কাছ দিয়াও যাইতে দেখলাম না!
চমস্কি’র সহজিয়া তত্ত্বের আকাংখা এবং জিজেকের জটিল বাস্তবতা’র কথা বাংলাভাষায় অনূদিত হইলো।
____________________
নোম চমস্কি: আপনি যেইটা কইতেছেন যে, “থিওরি” কারে বলে। আর যখন আমি কই যে, আমি থিওরিতে আগ্রহী না, আমি বুঝাই যে আমি ভাব নিতে আগ্রহী না – বিশাল বিশাল শব্দ দিয়া ফেন্সি টার্মগুলা ব্যবহার কইরা; আর ভান করা যেন আপনার একটা থিওরি আছে, যখন আপনার কোন থিওরি বাএইজাতীয় কিছু নাই। সুতরাং এইগুলাতে কোন থিওরী নাই, থিওরি এই অর্থে যে, বিজ্ঞান বা এইরকমের সিরিয়াস জায়গায় যা পরিচিত। যেইসব কাজগুলার কথা আপনি বললেন, সেইখান থিকা কিছু মূলকথা বাইর করার চেষ্টা করেন, যেইখান থিকা আপনি উপসংহার টানতে পারবেন; বাস্তবে পরীক্ষা করার মতো প্রস্তাব রাখতে পারবেন আর যার পুরাটাই একজন বারো-বছর-বয়সীরে পাঁচ মিনিটের মধ্যে ব্যাখ্যা করার মতো না। যখন এই ফেন্সি শব্দগুলারে ডিকোড করেন, দেখেন আপনি পারেন কিনা। আমি পারি না। [pullquote][AWD_comments][/pullquote] সুতরাং এই রকমের ভাবে’র মধ্যে আমি নাই। জিজেক হইলো এর একটা চূড়ান্ত উদাহারণ। সে যা বলতেছে, তার মধ্যে আমি কিছুই দেখি না। আমি আসলে জাঁক লাঁকাঁরে চিনতাম। অনেকটা পছন্দও করতাম। কয়েকবার দেখাও হইছে আমরার। কিন্তু খোলাখুলিভাবে কইতে গেলে, আমি মনে করি সে ছিল একটা পুরা হাতুড়ে ডাক্তার। সে খালি টেলিভিশন ক্যামেরার লাইগা পোজ দিতো, প্যারিসের অনেক বুদ্ধিজীবীরা যা করে। আমার বিন্দুমাত্র ধারণা নাই, এইটা কেন প্রভাবশালী। আমি এইখানে এমন কিছু দেখি না যা প্রভাবশালী হইতে পারে। …
[youtube id=”GWRqPbwwYS0″ mode=”normal” align=”center”]
আমি এইরকমের বিশাল সব শব্দের ভাব এ আগ্রহী না যেইখানে কোন কনটেন্ট নাই। ভালো কথা, আপনি বলতেছেন যে তার কাজ প্রভাবশালী হয়া উঠতেছে, আমি এইটারে প্রশ্ন করবো; আমি মনে করি তার ভাবটা প্রভাবশালী হয়া উঠতেছে। আপনি কি আমারে বলতে পারবেন তার কাজটা কী? সে একজন ভালো অভিনেতা। সরি! আপনি কোন কনটেন্ট পাইবেন না। আমি পাই নাই। তার সাথে আলাপের কোন ইচ্ছা আমার নাই, আমি মনে করি। আলাপ করা, ভালো কথা আমি বলছি, এইটা ঠিক আছে; সে একজন ইন্টারেস্টিং লোক। ধন্যবাদ। কিন্তু ধন্যবাদ দেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ যেইখানে আমার খুব একটা আগ্রহ নাই।“
নোম চমস্কির পুরা ইন্টারভিউটা শুনতে পারেন এই লিংকে (যদিও জিজেক প্রসঙ্গ শুধুমাত্র সাড়ে চার মিনিটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, ৫ – ৯ মিনিট): http://bit.ly/10yUntO
স্লাভো জিজেক: এই নিয়া কী, আবার, অ্যাকাডেমি এবং চমস্কি এবং এইরকম? ঠিক আছে, সমস্ত গভীর শ্রদ্ধার সাথে যা আমার চমস্কির প্রতি আছে, আমার প্রথম পয়েণ্ট হইলো যে, এই চমস্কি যিনি সবসময় জোর দেন কেমনে একজনের বাস্তববাদী, নির্ভূল হইতে হইবো, খালি খ্যাপা লাঁকাঁনিয়ান ফটকাবাজি না এবং এইরকম… ভালো কথা, আমার মনে হয় না যে আমি এমন লোকরে জানি যিনি তার বনর্ণার বা তার এইসবকিছুর মধ্যে বাস্তবভাবে এত বেশি ভুল! আসেন দেখি… আমার মনে আছে যখন তিনি খেমা রুজের ধ্বংসযজ্ঞরে ডিফেন্ড করতেছিলেন। আর তিনি কয়েকটা টেক্সট লিখছিলেন, দাবি কইরা যে: “না, এইটা পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা। খেমা রুজ এইরকমের ভয়ংকর না।” আর পরে যখন তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হইলেন যে, খেমা রুজ বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ডে সবচে ভালো লোক না এবং এইরকম, উনার ডিফেন্স দেইখা আমি টাশকি খাইছি। এইটা ছিল যে, “না, ওই সময়ে আমাদের কাছে যা তথ্য ছিল, তার ভিত্তিতে আমি সঠিক ছিলাম। ওই সময়ে আমরা যথেষ্ট জানতাম না, এইজন্য… আপনি জানেন।” কিন্তু এই ধরনের যুক্তিপ্রক্রিয়ারে আমি পুরাপুরি বাতিল করি।
যেমন ধরেন, স্ট্যালিনিজম সর্ম্পকে। পয়েন্ট এইটা না যে আপনারে জানতে হইবো, গুলাকের ফটোর প্রমাণ লাগবো বা এইরকমকিছু। আল্লারে, আপনারে স্ট্যালিনিজম সর্ম্পকে, খেমা রুজ সর্ম্পকে পাবলিক ডিসকোর্সরে খালি শুনতে হইবো, বোঝার জন্য যে ওইখানে ভয়ংকররকমের প্যাথলজিক্যাল কিছু ঘটতেছে। যেমন ধরেন, খেমা রুজ: যদি আপনের তাদের জেলখানাগুলা সর্ম্পকে বা এইরকমকিছু কোন তথ্য নাও থাকে, এইটা কি একটা বিপরীত দিক দিয়া প্রায় আকর্ষণীয় একটা শাসনামল না যেইখানে প্রথম দুই বছর (’৭৫ থিকা ’৭৭) নিজের সাথে এইটা বেআইনি হিসাবে আচরণ করে, ব্যবহার করে? আপনি জানেন যে, শাসনামলটা আছিলো বেনামি। এইটারে বলা হইতো “আনকা,” একটা সংগঠন – কম্বোডিয়ার কম্যুনিস্ট পার্টি না – একটা সংগঠন। নেতারা আছিলো বেনামি। যদি আপনে জিগান “আমার নেতা কেডা?” আমার মুন্ডু আলাদা হয়া যাইতো তৎক্ষণাৎ এবং এইরকম কিছু।
[youtube id=”KZ1ylGxGBF4″ mode=”normal” align=”center”]
ঠিক আছে, চমস্কিরে নিয়া পরের পয়েণ্ট, আপনি জানেন, উনার বাস্তববাদী এবং এইরকমের ভঙ্গির পরিণতি – এবং যেইটা উনার সাথে আমার মূল পার্থক্য – সংক্ষেপে কোরি রবিনসন আর আরো কয়েকজন মানুষ উনার সাথে কিছুদিন আগে কথা কইয়া আমারে নিশ্চিত করছে। উনার আইডিয়া হইলো, আজকের দিনে যারা ক্ষমতায় আছে তাদের হতাশা এতোটাই ওপেন যে আমরার আইডিওলজির কোন সমালোচনা করার দরকার নাই, আপনে লাইনগুলির মধ্যে আলামত দেইখাই বুঝতে পারবেন যে, সবকিছু হতাশাজনকভাবে খোলাখুলি স্বীকার করতেছে। আমরার খালি ফ্যাক্টগুলা লোকজনের কাছে নিয়া যাইতে হইবো। যেমন “এই কোম্পানি ইরাকে লাভ করতেছে” এবং এইরকম এবং এইরকম। এইখানে আমি সহিংসভাবে অমত করি।
প্রথম, আজকে যে কোন সময়ের চাইতে, আমাদের প্রতিদিনকার জীবন হইলো, আইডওলজি। কেমনে আপনে আইডওলজিরে সন্দেহ করবেন যখন সম্প্রতি আমি ভাবি পল ক্রুগম্যান একটা মোটামুটি ভালো টেক্সট ছাপাইছেন যেইখানে তিনি দেখাইছেন কিভাবে এই নীতিপরায়ণতার আইডিয়া: এইটা এমন কি একটা ভালো বুর্জোয়া-অর্থনীতির থিওরিও না! এইটা এক ধরনের আদিম, সাধারণ-জ্ঞানের যাদুকরি ভাবনা যখন আপনে একটা সংকটের সামনাসামনি হইতেছেন, “ওহ, আমরা অবশ্যই ভুল কিছু করছি, আমরা অনেক খরচ কইরা ফেলছি, সুতরাং চলেন কৃচ্ছ্রতাসাধন করি এবং এইরকম এবং এইরকম।”
আমার দ্বিতীয় পয়েন্ট, হতাশাবাদী হইলো তারাই যারা বিভ্রমের ভিত্রে পড়ার জন্য সবচে বেশি উন্মুখ। সেইসব মানুষ হতাশাবাদী না, যারা জিনিসগুলা সত্যিকার অর্থে যা তা দেখতে পায় এবং এইরকম। ২০০৮ এবং বর্তমানের ফিনান্সিয়াল সংকট সম্পর্কে ভাবেন। এইটা কোন খ্যাপা কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে বানানো হয় নাই; সোশ্যাল ডেমোক্রেটরা (না) যারা অনেক বেশি খরচ করছে। এই সংকটটা বিস্ফোরিত হইছে অন্য হতাশাবাদীদের কাজকামের কারণে, যারা সংক্ষেপে ভাবছে “হিউম্যান রাইটসের গুষ্টি কিলাই, মর্যাদার গুষ্টি কিলাই, যা কিছু মনে হয়,” এবং এইরকম এবং এইরকম।
সুতরাং এই যে “সমস্যা”, আমরা ফ্যাক্টগুলা ঠিকমতো পড়তেছি কিনা, আজকে যে কোন সময়ের চাইতে আমি জোরালোভাবে দাবি করি, “না”; আর জনপ্রিয়তা নিয়া, আমি কিছুটা বিরক্ত হয়া পড়ি এই ধারণা নিয়া যে, আমরা আমাদের গভীর কূটতর্কে সত্যিকারভাবে মানবিকতার মধ্যে হেজিমনিক। লোকজন কি খ্যাপা? আমি বুঝাইতে চাইতেছি আমরা সবসময় কোনঠাসা। না, আমার জন্য সত্যিকারের অ্যাকাডেমিক হেজিমনি কী: এইটা নিষ্ঠুর। কে অ্যাকাডেমিক পোস্ট পাইতে পারে? কে গ্রাণ্ট পাইতে পারে, ফাউন্ডেশসন এবং এইরকম? আমরা পুরাপুরি মার্জিনালাইজড এইখানে। আমি বলতে চাইতেছি আমার পজিশনের দিকে তাকান: “ওহ, ইয়া, তুমি ত মিয়া যুক্তরাষ্ট্রে মেগা-ষ্টার।” ভালো কথা, আমি এইটা হইতে চাই কারণ আমি ক্ষমতা চাই নির্মমভাবে এইটা ব্যবহার করার লাইগা! কিন্তু আমি এইটা থিকা অনেক দূরে। আমি এইরকমভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাই কারণ কয়েকদিন আগে আমি যুক্তরাষ্ট্রে আমার একজন বন্ধুর কাছ থিকা থিকা চিঠি পাইলাম যারে আমি একটা রিকমেন্ডশন লেটার দিছিলাম, এবং সে আমারে কইলো যে “আমি চাকরিটা পাই নাই, তোমার লেটারের পরেও না বরং তোমার লেটারের কারণে!” কমিটিতে তার একজন স্পাই ছিলো এবং এই স্পাই তারে কইছিলো যে, “তুমি এইটা পাইয়াই গেছিলা, কিন্তু তখন একজন কইলো যে, “আচ্ছা, যদি জিজেক তারে রিকমেন্ড করে তার মানে তার কোথাও গন্ডগোল থাকতে পারে।”
তাইলে আমি বলি এই যে এইসবকিছু “আমরা কতোটা জনপ্রিয়” সত্যিকার অর্থে একটা মুখোশ… মনে রাখবেন, অ্যাকাডেমিয়ার একটা বড় অংশ হইলো যারা ধূসর অথবা কগনিভিষ্টরা অথবা ঐতিহাসিকরা এইরকম ব্লা ব্লা… আপনে তাদেরকে দেখবেন না, কিন্তু তারাই ক্ষমতায়। তারাই হইলো ক্ষমতা। অন্যদিকে, যারা ক্ষমতায় আছে তারা কেন দুশ্চিন্তা করে? কারণ আপনি জানেন… এই বামপন্থী বদ্ধমূল ধারণারে বাড়াইয়েন না যে, “আমরা সমস্ত কিছু পুনরুদ্ধার করিবো” এবং এইরকম এবং এইরকম। না! আমি এখনো অনেকটা অকপটভাবেই তাত্ত্বিক চিন্তার দক্ষতায় বিশ্বাস করি। এইটা সমস্ত কিছুরে পুনরুদ্ধার করার মতো সহজ না। কিন্তু আপনি জানেন এইখানে বিভিন্ন স্ট্রাটেজি আছে– কিভাবে আমাদেরকে ধারণ করা হবে। আমি অবশ্যই বলবো যে, আমি হয়তো এতোটা নিষ্পাপ না এর মধ্যে, কারণ মানুষজন আমার সর্ম্পকে বলে, “ওহ, যাও আর এর কথা শুনো, সে একটা মজার ভাঁড় ব্লা ব্লা ব্লা।” এইটা আরেকভাবে বলা যে, “তারে সিরিয়াসলি নিয়ো না।“
কিন্তু এইটা একটা স্ট্রাটেজি, এইখানে আরো অনেক স্ট্রাটেজী আছে মোকাবিলা করার এবং আমরা যে নিষ্পাপের মতো ধ্বজভঙ্গ না এইটার প্রমাণ হইলো, যেইখানে আপনে দেখবেন এখন আপনার এবং আমার বিরুদ্ধে পুরানারা, খ্যাপা, আধা-ভাঁড়, মার্জিনালরা অনেক অনেক বেশি অপজিট লাইনের সাথে যুক্ত। আমরা বিপদজনক, আমরা সহিংসতার উকালতি করি, আমরা একটা নতুন হলোকোস্ট তৈরি করতেছি অথবা এইরকমকিছু। এইটা খুবই হতাশাজনক, এই মিশেলটা যে আমরা ক্ষমতাহীন ইনোসেন্ট থিকা এই লোকগুলা সত্যি সত্যি একটা নতুন টেরর তৈরি করতেছে এবং এইরকম। অবশ্যই আমার হৃদয় দ্বিতীয় অবস্থানের পক্ষে; কিন্তু সেইটা আরেকটা গল্প। ধন্যবাদ।
———————
জিজেকের আলাপটা শুনতে পারেন এইখানে (যদিও চমস্কির প্রসঙ্গ শুধুমাত্র সাড়ে সাত মিনিটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ; প্রশ্নটা ৬৯ – ৭১ মিনিট এবং উত্তরটা ৯০ – ৯৭ মিনিটে): http://bit.ly/13wm17F
_________________________________
পরের ঘটনা
চমস্কি যদিও জিজেকের কথা কইতে চান না, কিন্তু তার অনুসারীদের পীড়াপীড়িতে জিজেকের কথার লিখিত জবাব দিছিলেন কয়দিন পরেই (জুলাই ২১, ২০১৩) ; ইম্পেরিক্যাল ট্রুথের আখড়া জিকমিউনিকেশনেসডটওআরজি’তে। লেখার নাম দিছেন ফ্যাণ্টাসিস; আদর কইরাই হয়তো; কারণ তিনি যা বলছেন তারে এক কথায় (বারো বছরের বাচ্চারে বুঝবার মতো কইরা কইলে) বলা যায়, জিজেক মিথ্যা কথা বলেন। আর এইটা প্রথম না, এর আগেও সে এই কাজ করছে। সে এইরকমই, ইল্যুশনারি! http://bit.ly/1ebozAg
এর জবাবে জিজেক তার কথার ব্যাখ্যা লিখেন ভারসোবুকসের ব্লগে (জুলাই ২৫, ২০১৩ তে); খেমা রুজ সম্পর্কে চমস্কি’র লেখা এবং অন্যান্য টেক্সটের কোটেশনও দেন। বলেন যে, যদিও পলিটিক্যাল পজিশন দেখতে গেলে দুইজনের পার্থক্য কমই, কিন্তু চমস্কি বারো বছরের বাচ্চা’র কথা কইতে গিয়া নিজেই বারো বছরের বাচ্চা হয়া ঝামেলাটা বাঁধান! http://bit.ly/14MPL6F
উনাদের এই বিতর্ক নিয়া বেশ কয়েকটা ফোরামে কথা-বার্তা হইছে, লিংক শেয়ারিং, কমেন্টস, ইত্যাদি; গার্ডিয়ানও একটা অ্যানালাইসিস ছাপায়। যা হয় আর কি যে; না, না, দুইজনেরই কিছু কিছু ঠিক, এইরকম কথা-বার্তা অথবা দুইটা ধারারে (চমস্কি’র নিবিড় ফ্যাক্ট অনুসন্ধান এবং জিজেকের ব্যাখ্যার ভিত্তি) মিলাইলে কী ঘটনাটাই ঘটতো!
কিন্তু যে কোন তর্কের সমাধান (যদি থাকেও) দুইটা পক্ষের মিল-মিশে হয় না; দুইটা পক্ষই পরস্পরের যুক্তি-প্রক্রিয়া এবং রেফারেন্স থিকা কিছুই নেয় না, বরং নিজেদেরকে আরো বেশি ক্ল্যারিফাই করতে থাকে, নিজেদের গ্রাউন্ডে; ক্রমাগত মনে করাইতে থাকে যে, না, এর বাইরেও ত একটা পয়েন্ট আছে! বা লিগ্যালি এইটা সে বলতে পারে না; অন্তত এইভাবে সে বলতে পারে না – এইরকম ছোট ছোট গর্তের ভিতর মুখ লুকাইয়া থাকে। চমস্কি বলতে থাকেন যে, বুঝি না (যতই চেষ্টা করেন আমি বুঝবোই না!) এবং জিজেক বলতে থাকেন যে একটু চেষ্টা কইরা দেখেন না (আই উইল এক্সপান্ড মোর উইথ মাই এক্সপ্লেনেশন!), এইরকম।
চমস্কি যেহেতু অ্যাক্টিভিস্ট এবং সনাতন মার্ক্সিস্ট থিওরি মানেন; মনে করেন, দার্শনিকরা বহুত চিন্তা করছে, এখন আমাদের কিছু না কিছু করা দরকার! আর জিজেক মার্ক্সের মকারি কইরা কন যে, বহুত কিছু করা হইছে, এবার একটু চিন্তা করেন!
অবশ্য এইখানে জিজেক চিন্তা করারেই যে কাজ করা বলছেন, এই আয়রনিটা মিস কইরা গেলে পুরা তর্কটাই খামাখা মনে হইবো।
Latest posts by ইমরুল হাসান (see all)
- পলিটিকাল ডাইরি – ২০২৪ (দুই) - সেপ্টেম্বর 17, 2024
- পলিটিকাল ডাইরি – ২০২৪ (এক) - সেপ্টেম্বর 4, 2024
- ধর্ম প্রশ্নে পুরান কমিউনিস্টদেরকে ইনডেমনিটি দিতে চাওয়াটা অনেকটা ইন্টেলেকচুয়াল অসততার ঘটনা: ফরহাদ মজহারের ‘মোকাবিলা’ (২০০৬) বই নিয়া আলাপ - আগস্ট 9, 2024