ইয়েলো সাবমেরিন: দ্য মিল্কশেক কালেক্টিভ
শো দেখতে গেছিলাম বৃহস্পতিবার (জুন ০২, ২০১৬) অফিস শেষে, ৭টার দিকে। নর্থএন্ড কফি রোস্টারের দোকান পার হইয়া স্পটে যাওয়ার পরে বেশ খুশি খুশিই লাগছে। ব্যাপক মানুষজন। ভাইব্রেন্ট একটা ক্রাউড। বেশিরভাগ মানুষই বেশিরভাগ মানুষের পরিচিত মনেহয়। আমরাও কয়েকজন পরিচিত মানুষ পাইলাম। মনু (এস এম রেজাউল করিম) মুন্নীর সাথে আলাপ শুরু করলেন। ইমরান (ইমরান ফিরদাউস) তার এক ফ্রেন্ডের লগে। আনিকাও (আনিকা শাহ) আফ্রিদারে (আফ্রিদা তানজিম) পাইয়া গেলেন। অর্পণরে (অপর্ণ দেব) দেখি নাই। উনি মনেহয় আর্ট দেখতেছিলেন। আমি আর রাজীব (রাজীব দত্ত) একটা ঘুরানি দিয়া মাঝখানে আইসা দাঁড়াইলাম। তখন ধাক্কাধাক্কি লাগতেছিল মানুষজনের সাথে। স্পেইসটা বেশ ছোট-ই। পরে একটু সাইডে গিয়া দাঁড়াইছিলাম। [pullquote][AWD_comments][/pullquote] একটু একটু জায়গা (ছয়-ফিট বাই ছয়-ফিট মেবি) নিয়া আর্টিস্টরা বসছিলেন, দাঁড়ায়া ছিলেন। আর্টের স্যাম্পল কপি রাখা ছিল উনাদের পিছনে। ভিডিও ইন্সটলেশনও আছিলো দুইজনের। হেডফোন’টা চোখে পড়ে নাই, এইজন্য মিউজিকসহ দেখতে পারি নাই। টি-শার্টও ছিল। এমনিতে খুববেশি আর্ট ইলাসট্রেশন দেখা হয় নাই।
এনভায়রমেন্টটা বেশ পার্টির মতো লাগতেছিল। ওয়াইনের বদলে একটা কোণায় দঈতের (দঈত আননাহাল) ফ্রেন্ড সায়রা’র বানানো কাপকেক আছিলো। ওইটা খাইতে গেলে নাকি গণি’রে (এ জে গণি, ফটোগ্রাফার) উনার নাম জিগাইছিলো। ভাগ্য ভালো আমরা খাইতে যাই নাই, যদিও আমাদের নাম-টাম এতোটা বাজে আছিলো না। মুন্নী কাপ-কেকের প্রশংসা কইরা পরে বলছিলেন যে, খাইতে পারতেন! টেস্টি ছিলো! খুববেশি পরিচিত মানুষ ছিল না বইলা বা অন্য কোন কারণেই মেবি আমরা আর্ট এগজিবশনে আইসা খাওয়ার কথা ভাবতে পারি নাই; কইলাম যে, না, না, আমরা তো গ্লোরিয়াতে কফি খাইয়া আসছি।
সবগুলি আর্ট ইন্সটেলেশন দেইখা মনে হইতেছিল একটা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় চইলা আসছি। একটাকিছু রিয়েল আছে কোথাও আর সেইটারে বেইস কইরা আমরা ঘুরতেছি এইখানে। বেশিরভাগ ছবিই ঘুরতেছে। মানে, রাখা আছে এক জায়গাতেই, ছবিগুলার সাবজেক্টে মুভিং ব্যাপারটা আছে। মুভিংটা মনেহয় পছন্দ আর্টিস্টদের; উনারা অ-স্থির, নতুন কিছু কইরা রেভিউলেশনই করতে চান, কিন্তু ডিলানের লাইক অ্যা রোলিং স্টোন গানটা বেশ পুরানই, ‘মান্ধাতার’ টাইপের ঘটনা এইখানে। উনাদের এই ঘুরাটা একটা জেট-লেগের মতোন, যাওয়া বা আসার ঘটনা না, যাওয়া বা আসার পরে, যেইটা কাটতেছে না পুরাপুরি। ঘুরতে যে ছিলেন সেই ঘোরটাতে ঘুরতেছেন উনারা। কেউ কেউ ইন্ডিভিজ্যুয়ালি, কেউ কেউ মেবি কালেক্টিভলি। এমনিতে সবাই ইয়াং। কেউ চারুকলায় পড়েন নাই বা পড়েন না। আর্ট মানে যে চারুকলা না, এইটা দেইখা ভালো লাগছে। ব্যাপারটা রিফ্রেশিং।
পার্টিকুলারলি কারো আর্ট দেখতে পারি নাই। ভাবছিলাম প্রিটি-শিটি আর্টরে দেখবো। আফ্রিদার পেইণ্টিংসও। সবার সাথে এক কইরাই দেখা লাগলো। আর্ট এগজিবিশন দেখার ডরও মনেহয় কাজ করতেছিলো। বাইরে আইসা, সিটি-স্পেইস বিল্ডিংটার সামনের জায়গায় বইসা আর্ট নিয়া কথা কইতেছিলাম পরে আমি আর রাজীব। আনিকা আফ্রিদার সাথে হাঁইটা কই জানি গেলেন, সামনের দিকে; যাওয়ার সময় দেখলেন আমাদেরকে। ইমরান, অর্পণ, মনু আর মুন্নী আসলেন একটু পরে। মনু কইলেন, চারুকলারে দিয়া আর্ট হবে না, বাংলায় পইড়া যেমন কইরা কেউ সাহিত্য করতে পারে না; করলে এরাই কিছু করবে। আমার মনে হইলো, ইন বিটুইন হইলে ভালো, যারা চারুকলায় পইড়া চারুকলা হইতে পারতেছেন বা ও-লেভেলে আর্ট পইড়া ওয়ের্স্টান হইতে পারতেছেন না। না-হইতে-পারাটা কিছু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। সবসময় না, কিন্তু এইরকম পজিশনটা কিছু সুবিধা দিতে পারে। আফ্রিদাও পরে কইলেন, ইয়াং তো এখনো সবাই, উনাদের আর্টের ইন্ডিভিজ্যুয়াল সিগনেচারগুলি এখনো স্পষ্ট হয় নাই।
রাজীব আর ইমরান কইতেছিলেন পরে আরেকবার আসবেন, শুক্র বা শনিবারে। যান নাই আর উনারা। আমি ভাবলাম, গেছিলাম যে, এইটা বইলা রাখা যায়। কোন কিছু না-বলার চাইতে এইটুক বলাটা তো বেটার।
Latest posts by ইমরুল হাসান (see all)
- পলিটিকাল ডাইরি – ২০২৪ (দুই) - সেপ্টেম্বর 17, 2024
- পলিটিকাল ডাইরি – ২০২৪ (এক) - সেপ্টেম্বর 4, 2024
- ধর্ম প্রশ্নে পুরান কমিউনিস্টদেরকে ইনডেমনিটি দিতে চাওয়াটা অনেকটা ইন্টেলেকচুয়াল অসততার ঘটনা: ফরহাদ মজহারের ‘মোকাবিলা’ (২০০৬) বই নিয়া আলাপ - আগস্ট 9, 2024