ওং কার ওয়াই (পার্ট ১): ডেইজ অফ বিইং ওয়াইল্ড, ১৯৯০
ফিল্মের হিউম্যান থিম অর্থাৎ স্পেসিফিকলি বলতে গেলে লাভ, হেইট, লোনলিনেস, ডিপ্রেশন এবং এক্সপেক্টেশন যখন একজন ব্যক্তিকে পয়েন্ট করে রান করে, সেখানে অবজেক্ট নিয়া ডিল করাটা অতো হিউমেনলি লাগে না হয়তো অন্যান্য পয়েন্ট অব ভিউ থেকে খেয়াল করলে। এমন একটা স্টোরি নিয়াই ডিল করতেছেন ওং কার ওয়ে। ফিল্ম প্রসঙ্গে আসার আগে একটু হংকং প্রসঙ্গে ও তার সাথে রিলেট করে কাস্টিং প্রসঙ্গে কিছু বলি।
আফিম যুদ্ধের ফলস্বরূপ ইংল্যান্ড, হংকংকে ৯৯ বছরের জন্য চায়নার কাছ থেকে লিজ পায় ১৮৯৮ সালে। ডিরেক্টর ওং এর জন্ম সাংহাইতে হইলেও তার অরিজিন হংকং। চায়নাতে যখন কালচারাল রেভ্যু শুরু হয় তার ফ্যামিলি শিফট করে। ভাষাজনিত যে ব্যাপারটা, মান্দারিন ও ক্যান্তোনিজ এই দুয়ের মধ্যেও স্ট্রাগল শুরু হয়ে যায় শিফটিং এর পরে। এবং যখন সিনো-বৃটিশ জয়েন্ট ডিক্লেয়ারেশন আসে ১৯৮৪ এর শেষের দিকে,তখন থেকেই ব্রিটিশ হংকংকে ঢেলে সাজানোর প্রোসেস শুরু হয়ে যায়। নেইম চেইঞ্জ,আটোনমি এবং ব্যাসিক ল’ এর গ্যাড়াকলে পড়ে যায় হংকংবাসী। চাইনিজ “এক দেশ, দুই নীতি” সহ স্পেশাল অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ রিজিয়ন ঘোষণা এবং ক্যাপিটালিজম বলবৎ রাখার ডিসিশানগুলা হংকংবাসীদের আরো কনফিউজড করে তোলে। এসব পিরিয়ডের মধ্য দিয়া যাইতে হয় ডিরেক্টরেও।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]
ডেইজ অব বিয়িং ওয়াইল্ড এর কাস্টিং এর দিকে তাকাইলে দেখা যায় ম্যাগি চ্যাং, অ্যান্ডি লাউ, ক্যারিনা লাউ, টনি লিয়েং, জ্যাকি চ্যাং এদের সবারই অরিজিন হংকং। ম্যাগি ও টনি বাদে সবাই এক্টিং এর পাশাপাশি পপুলার ক্যান্তো-পপ সিঙ্গার। টনি ও ক্যারিনা লাউ বাস্তব লাইফে জামাই-বউ।এই মুভির সেন্ট্রাল ক্যারেক্টার বাস্তব লাইফেও একজন লোনলি ও ডিপ্রেসড পার্সোনালিটি ছিলেন। ইন ফ্যাক্ট ওর অধিকাংশ মুভির ক্যারেক্টারেই যেন ওর লাইফটাই বইয়া বেড়াইতো। পপুলার এই ক্যান্তো-পপ সিঙ্গার ও অ্যাক্টর ২০০৩ সালের ১ এপ্রিল হংকং’র মান্দারিন ওরিয়েন্টাল হোটেলের ২৪ তলা থেকে লাফ দিয়া আত্নহত্যা করেন। হংকং বাদে এই মুভি’র একটা ক্যারেক্টার সাংহাইয়ান, সে লেসলি’র মা ক্যারেক্টার রেবেকা প্যান।
মুভিতে লেসলি, ম্যাগি’র সাথে প্রথম প্রেম করে। আসলে লেসলিই কনভিন্স করে। কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা যায়, ম্যাগি’র প্রতি ওর কোন ফিলিংস কাজ করতেছে না। মুভির মুড অনুযারি লেসলি’র মাইন্ড খুব ডিস্ট্রাক্টেড।পরে ক্যারিনা লাউ’র সাথে প্রেম করতে শুরু করে। ক্যারিনা যে স্টেরিওটাইপ প্রেম এক্সপেক্ট করে তা লেসলি’র কাছ থেকে পায় না। এদিকে ম্যাগি, লেসলিকে খুঁজে খুঁজে দিশাহারা অবস্থা প্রায়। পুলিশ অ্যান্ডি লাউ’র সাথে পথিমধ্যে দেখা হয় এবং সিম্পেথেটিক অ্যান্ডি লাউ, ম্যাগিকে মেন্টাল সাপোর্ট দিতে থাকে। লেসলি সেক্স করার সময়টুকুই প্রেমিকাদের জন্য টিপিক্যাল প্রেমিক, আগেও না পরেও না এন্ড দেন সিগারেট আফটার সেক্স। কারণ লেসলি’র মেন্টাল কন্ডিশন কেউ বুঝতেও চায় না, লেসলিও বুঝাতে চায় না। তার যে মা, সে একজন প্রস্টিটিউট ছিলো এবং লেসলিকে অ্যাডোপ্ট করে কিন্তু লেসলি’র বায়োলজিক্যাল মা’র ব্যাপারটা তার মা এবং লেসলি’র মধ্যে দুরত্ব বাড়াতে থাকে। লেসলি চলে যায় ফিলিপাইন, যেখানে তার মা একজন অ্যারিস্টোক্র্যাট এক লোককে বিয়া করছিলো, এবং সেখানে সে রিজেক্টেড হয়। আল্টিমেইটলি, মা/বায়োলজিক্যাল মা এবং আগের প্রেমিকা এবং ফ্রেন্ড জ্যাকি ও গ্যাম্লার টনি এগুলাকে যেমন কানেক্ট করে তেমন ডেস্ট্রাক্ট করে এমন একটা অ্যাটমোস্পিয়ার ক্রিয়েট করে যা লেসলিকে শূন্য বা জীবনের আকাঙখা মেটাতে পারে না। মুভি শেষ হয়েও যেন জীবনের খোঁজ করতে থাকে।
[youtube id=”1NnK77cc8v0″]
মুডনির্ভর এই মুভি আসলে ন্যারেটিভরে যেন বুড়ো আঙ্গুল দেখায়। প্রতিটা মুডই যেন সিনামার অবজেক্টকে আরো গভীর কইরা তোলে। ট্রেন থেকে নেয়া শটগুলা যেমন পাম ট্রি দেখাইতে থাকে তেমনি লেসলিকে যেন আরো লোনলি আর ন্যাচারাল কইরা তোলে। পুরা মুভিতে প্রতিটা কালার শেডের সাথে ব্ল্যাকিস/ডার্ক একটা ব্যাপার ইমপ্লিমেন্ট করা আছে। আসলে ন্যাচারের কাছেই ফিরা যাইতে কয় বারবার। এই মুভির সিনেম্যাটোগ্রাফার ক্রিস্টোফার ডোয়েল। ডোয়েলের ক্যামেরা সব সময়ই যেন অবজেক্টের পেছনে ছুটে অবজেক্টের ফিলিংস,ইমোশন ও তার টেম্পারমেন্টকে ভিজ্যুয়ালাইজ করে। যেমন, ফিলিপাইনের মায়ের বাসা থেকে ফিরা আসার সময় তার পেছনে ক্যামেরা ছুটে চলে যেন ক্যামেরা ও লেসলি দুইটাই জার্ক করতেছে, টেম্পারমেন্ট ধরে রাখার জন্য আর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লোনলি রিপিটেড মিউজিক। ওং এর সাতটা মুভিতে কাজ করছেন ডোয়েল। ওং এর কিছু সিগনেচার মার্ক আছে, যেমন ফ্রিজ ফ্রেইম, ব্লারনেস ও ক্যারেক্টার সিনক্রোনাইজেশন ক্যামেরার মাধ্যমে। সেগুলা আমরা পরবর্তিতে আরো বিস্তারিতভাবে পাবো।হংকং অ্যাকশন মুভি কালচার যুগে, ওং এর এই টাইপের মুভি বানানোটা যথেষ্ট রিস্কি ও সাহসিকতার কাজ ছিলো। এর আগে যদিও ওং “এজ টিয়ারস গো বাই” বানাইয়া ফেলছিলো। এটা ওং এর সেকেন্ড ফিচার ফিল্ম।
আবু ইলিয়াস হৃদয়
Latest posts by আবু ইলিয়াস হৃদয় (see all)
- নেপালি গান - মার্চ 7, 2020
- ওং কার ওয়াই (লাস্ট পার্ট): ২০৪৬ (২০০৪) - মার্চ 6, 2019
- ওং কার ওয়াই (পার্ট ৫, ৬): হ্যাপি টুগেদার (১৯৯৭), ইন দ্য মুড ফর লাভ (২০০০) - ডিসেম্বর 14, 2018