ওং কার ওয়াই (পার্ট ৪): ফলেন এঞ্জেলস, ১৯৯৫
চাংকিং ম্যানশনে পুলিশ আসছে, এক মহিলাকে জিগাইতেছে তাকেশিকে দেখছে কিনা! না, বলে চইলা রুমে আইসা বলে, এখনই বের হওয়ার দরকার নাই,পুলিশ যায় নাই। তাকেশিকে দেখা যায় লম্বা লম্বা চুল এবং ফানি ফেইস করে লুকিয়ে সিগারেট খাইতেছে। পাঁচ বছর বয়সে এক ক্যান আউটডেইটেড পাইনাপল খাওয়ার পর থেকে সে কথা কয় না। মুভি’র এ পর্যায়ে চাংকিং এক্সপ্রেস’র হংকং এর সাথে ফলেন এঞ্জেলস এর হংকং এর একটা শিফটিং খেয়াল করা যায়। দুই হংকং পুরাটাই আলাদা। এই হংকং অনেক মর্ডানাইজড এবং এখানকার প্রতিটি ঘটনা কে মেইনটেন করতেছে, তা আমরা জানতে পারি না। শুধু গ্যামব্লিং এবং কিলিং দেখতে পাই।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]
তাকেশিকে হেল্প করা মহিলাকে একজন হিট ম্যানের বিজনেস পার্টনার হিসাবে দেখা যায় শুরুতে।ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট ব্যাকগ্রাউন্ডে দেখা যায় মেয়ের হাতে সিগারেট, হাত কাঁপতাছে,কেউ কোন কথা কইতাছে না এবং ন্যারেট করে তাদের কনভার্সেশনের মাধ্যমে বোঝানো হইতেছে, তারা ইমোশনালি ইনভলভড।
মিং(হিট ম্যান) এর জন্য ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করে রাইখা যায় রুমে। মিং পিস্তলে গুলি ভরতে ভরতে কয়, সে খুব অলস টাইপের, তার প্রোফেশন খুব মজার, কখন, কোথায়, কিভাবে কি করতে হবে তা তার অন্য কেউ ডিসাইড করে দেয়। এদিকে মেয়ে সবসময় মেলানকোলিক মুড নিয়া থাকে আর স্মোক করে। কাজ-টাজ করার পরে মাস্টারবেশন করে। মিং প্রথম শ্যুট-আউট করার পর বাসে উঠে বসলে, তার মার্সিডিস নষ্ট হওয়া এক বন্ধুকে দেখা যায়। সে বকবক করতে থাকে, স্কুলে ফার্স্ট হওয়া থেকে শুরু করে তার জব ইত্যাদি। এবং সে মিং’র ফ্যামিলি সম্পর্কে জানতে চায় এবং মিং দুইটা ছবি বাইর কইরা দেয়। লাস্টলি বলে যায়, স্কুলে যে বিগ বুবস ছিল, তারে সে বিয়া করতেছে এবং ইনভাইটেশন কার্ড দিয়া যায়।
[youtube id=”vzhX23j9W7Y”]
মেয়ে এবং মিং দুইটার ডায়ালগই কম। মিং বিয়া না করলেও দেখা যাইতাছে, বন্ধু’র সাথে সোশ্যাল আচরণ করে ফেইক বউ এবং বাচ্চার ছবি দেখাইয়া। $৩০ এর বিনিময়ে মহিলার সাথে এবং আইসক্রিম খাওয়ানোর বিনিময়ে পিচ্চির সাথে ছবি তুলছিলো। বিয়া’র কার্ড ফেলে দেওয়ার সময় কালার ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট হয়ে যায়। লাইফ’র ইমোশোনাল স্ট্রাগলিং মোমেন্টগুলাতে ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট ব্যাকগ্রাউন্ড দেখানো হইছে। ক্রাইম সিনে স্লো মো এবং ফ্রিজ ফ্রেইমের কম্বিনেশন দেখা যায়। মেয়ের সিনগুলাতে ওয়াইড জুম শটে তার ফেইস অর্থাৎ মানসিক অবস্থা দেখানো হয়।
তাকেশি এদিকে রাতে শহরজোড়া মানুষরে ত্যাক্ত-বিরক্ত কইরা বেড়ায়। কাউরে জোর কইরা চুল-দাঁড়ি কাটাইতে চায়, বিনিময়ে টাকা নেয় বা কাউরে জোর কইরা আইসক্রিম খাওয়ায়। এদিকে মিং সেকেন্ড শ্যুট-আউট শেষ কইরা মদ খাইতে যায়। সেখানে একটা কয়েন দিয়া কইয়া যায় একটা মেয়ে তারে খুঁজতে আসতে পারে এবং তাকে কয়েনটা দিয়া বলতে, ১৮১৮ হচ্ছে তার লাকি নাম্বার।১৮১৮ ছিল একটা গানের কোড এবং “ফরগেট হিম” গানটা বাজতে থাকে। মেয়েটা এবার বারে, এগেইন ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট। মিং’র সাথে খাতির হয় এক ব্লন্ডি’র। এদিকে পার্টনার মেয়ে মিং’র কথা মনে করে কাঁদতে থাকে এবং সেকেন্ড টাইম মাস্টারবেট করতে থাকে,এবং তার মেলানকলি, স্যাডিস্টিক প্লেজারে রূপ নেয়। তাকেশি ফোনে কথা কওয়া এক মেয়ের প্রেমে পড়ে, যে তার বয়ফ্রেন্ডকে ফোন দিয়া সারাদিন গালাগালি করে। তাকেশি শুধু এই টকেটিভ মেয়েকেই সহ্য করে।তাকেশি আবার তার বাপের সাথে চাংকিং ম্যানশনে থাকতো। সেখানে বাপের কাজকাম ফিল্মিং করতো, সেগুলা বাপ দেখতো এবং সে টকেটিভ মেয়েটাকে সঙ্গ দিয়া যায় শেষ পর্যন্ত। এদিকে মিং’র থার্ড শ্যুট-আউটে গুলি খেয়ে পড়ে যাওয়ার পর, তার আগের ডায়ালগগুলা রিকল করে,সে খুব অলস, তার কখন, কোথায়, কি করতে হবে. . .।
তাকেশিকে এক পর্যায়ে খেয়াল করা যায়,এক স্ন্যাকস শপের সামনে। দোকানের সামনে এক স্টুয়াডেসের আউটফিটে এক মেয়েকে দেখা যায়। এবার মেয়ে তার বয়ফ্রেন্ডকে নিয়া চইলা যায়।লাস্টলি মিং’র পার্টনারকে দেখা যায় বইসা আছে খাইতাছে। পিছনে দুই টেবিলের চারজনের মধ্যে মারামারি হয়, মিং’র পার্টনার খাইতেই থাকে।তিনজন চইলা গেলে দেখা যায়, তাকেশি’র চোখ দিয়া রক্ত পড়তে। সে আস্তে আস্তে উইঠা বসে, সিগারেট খায় এবং পরের সিনে তার টনেলের ভিতর দিয়া বাইক চালাইতে, আগে টকেটিভ মহিলাকে নিয়া চালাইতো এবার তার পিছনে মিং’র পার্টনার ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতাছে, “দ্যা ফ্লাইং পিকেটস” এর “অনলি য়্যু” গানটা। মুভি’র একটা অল্টারনেটিভ এন্ডিংও আছে ইউটিউবে।
[youtube id=”2oDqKaoEFYc”]
মুভিটাতে চারটা সেন্ট্রাল ক্যারেক্টারের দুইটা পার্ট খেয়াল করা যায়। নিয়ন আলোর হংকং শহর,চাংকিং’র শহর থেকে আলাদা। অপ্টিমিস্টিক এন্ডিং ব্যাপারটা ফলেন এঞ্জেলস এও খেয়াল করা যায়। নিয়ন আলোর নিচে বাইক নিয়ে যাওয়া,তাকেশি’র কথা না বলা, মিং এর পার্টনারের নিঃষঙ্গতা সবকিছু একটা মেট্রোপলিটানকে ঘিরা। টাইম ফোকাস না করে ঘড়ি ফোকাসিংটাও একটা বিশেষ পার্থক্য, সাথে মাস্টারবেশন তো আছেই।
চাংকিং এক্সপ্রেসের সাথে মুভিটা ডিরেক্টর কানেক্ট করছেন পাইনাপল দিয়া, সাথে শহর, চাংকিং ম্যানশন এবং অন্যান্য সিনেমাটিক সাইন দিয়া। ওং এখানে থিক ঠিক রাইখা, সময়ের সাথে বয়ে চলা হংকংকে দেখাইতেছেন সাথে মানুষের টেস্ট,অ্যাক্টিভিটিস’র চেইঞ্জগুলাও।
[youtube id=”qgDKtLPp46s”]
আবু ইলিয়াস হৃদয়
Latest posts by আবু ইলিয়াস হৃদয় (see all)
- নেপালি গান - মার্চ 7, 2020
- ওং কার ওয়াই (লাস্ট পার্ট): ২০৪৬ (২০০৪) - মার্চ 6, 2019
- ওং কার ওয়াই (পার্ট ৫, ৬): হ্যাপি টুগেদার (১৯৯৭), ইন দ্য মুড ফর লাভ (২০০০) - ডিসেম্বর 14, 2018