Main menu

ওং কার ওয়াই (লাস্ট পার্ট): ২০৪৬ (২০০৪)

।।  ২, ৩ ।।  ৪  ।। ৫, ৬ ।।

……………………………………………………

ওং কার ওয়ে তার শুরুর দিককার মুভিগুলাতে ভিজ্যুয়াল স্টাইল, ফ্রেইম এবং স্টোরিটেলিং দেখাইতেছেন, ঐ হাতের কাজ হইয়া উঠতেছে ২০৪৬ মুভিটা। ক্যারিনা লাউ থেকে স্টোরি টেনেছেন যা রিক্যাপচারড মেমোরি হিসাবে পাওয়া যাইতেছে সেন্ট্রাল প্রোটাগনিস্টের (টনি লিয়েং) মাধ্যমে এবং সচেতনভাবে “ডেইজ অব বিয়িং ওয়াইল্ড” মুভিটার সাথে সম্পৃক্ত করতেছে। শুধু তাই ই না, মানুষ মেমোরি শেয়ার করে না বরং পাহাড়ে গিয়ে গাছের ফুটাতে কথা রেখে মাটি দিয়া চাপা দেয়, “ইন দ্য মুড ফর লাভ” এর এই ডায়ালগ এবং সে একটা মেয়েরে ভালোবাসতো এমন কথাবার্তার মাধ্যমে আমাদের কাছে ঠাহর হইতে থাকে, মেমোরি রিক্যাপচারের আদলে এখানে হোপলেসনেস, লস্ট মেমোরিস এবং রিগ্রেটস এইসবকে কেন্দ্র করে মেডিটেশন করা হয়। মুভির টোন লোনলিনেস দিয়া ভরা এবং ক্যামেরা কথা বলতে থাকে বিষাদের সুরে। ওং কার’’র এই বাঁক নেয়া শুরু হইছে “হ্যাপি টুগেদার” থেকেই।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]

সায়েন্স ফিকশন্স ধাঁচে বলা ২০৪৬ এর স্টোরি। ’ইন দ্য মুড ফর লাভ’ এ ‘মিঃ চাও’ তার সিক্রেট ফেলে আসছিলেন বুদ্ধিস্ট টেম্পলে। কিন্তু ২০৪৬ নামের ট্রেনের এক নতুন জগতে চলে যায় এবং তার পাস্ট লাইফ (৬০জ হংকং লাইফ) রিকল করতে থাকে। মুভি’র নামটাও ‘’ইন দ্য মুড’র হোটেল রুম (২০৪৬) এর লিগ্যাসি মেইনটেন করতে থাকে। ’’ডেইজ অব বিয়িং ওয়াইল্ড’’ এর লুলু’’র (ক্যারিনা লাউ) সাথে প্রথম দেখা এবং লুলু তার ওল্ড মেমোরিসেই মগ্ন। আগের ক্ল্যারিটি এখন আর নাই, পুরোটাই গ্লুমিনেসে ভরা।

৬০জ এর যে স্টোরি’র সাথে আমরা পরিচিত ছিলাম,তার সাথে ২০৪৬ এ একটি আনটোল্ড স্টোরি অ্যাড করা হয়। রিসেন্ট ব্রেকাপ হওয়া ‘বাই লিং’ এর সাথে হংকং এর একটা হোটেলে পরিচয় পরিচয় হয় মিঃ চাও’র। মিঃ চাও যেহেতু উইমেনাইজার টাইপের, তাই বাই লিং এর সাথে ফ্লার্ট করতে করতে তারা একটা গেইম খেলতে শুরু করে। রেন্ট ফর সেক্স টাইপ ।মিঃ চাও, বাই লিং কে সিঙ্গাপুরের গল্প শোনায় যেখানে লিং এর যাওয়ার কথা ছিলো। লিং যেভাবে চাও কে চায়, সেভাবে রেসপন্স না পাওয়ায় তাদের মধ্যে ডিস্ট্যান্স বাড়তে থাকে।

এদিকে হোটেলের মালিকের মেয়ে, ফেইয়ি ওং। সে ভালোবাসে জাপানি এক ছেলেকে। বাবা জাপানিজদের পছন্দ না করাতে মিঃ চাও এর রুমের অ্যাড্রেস তাদের চিঠি আদান-প্রদানের ট্রানজিট হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এভাবে মিঃ চাও এবং ফেইয়ি কাছে আসতে শুরু করে। তাদের কাছে আসাটা মিঃ চাও এর জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়ায়। সেখান থেকে চলে যায় আবার ২০৪৬ এর ট্রেনে যেখানে ফেইয়ি একটা অ্যান্ড্র‍য়েড। যাকে তার লাইফের সিক্রেট শেয়ার করতে চায়। কিন্তু ফেইয়ি’র কাছ থেকে কোন উত্তর পায় না। মেমোরিসে ফিরে এসে দেখে, তার বাবা জাপানিজের সাথে তার বিয়ে মেনে নিছে। সময় পার হয়ে যেতে থাকে নিউজটা শুনে। কিন্তু মিঃ চাও আবার বেরিয়ে পড়ে লাইফে।

২০৪৭ নামে সে একটা স্টোরি লিখতে থাকে শুরু থেকেই। ফেইয়ি গোস্ট রাইটার হিসাবে তাকে হেল্পও করে কিন্তু পুরো স্টোরি কমপ্লিট হলে তার বাবার মাধ্যমে জানায়, স্টোরির এন্ডিংটা অনেক বেশি স্যাড।

 

সিনেমার একটা সিন

সিনেমার একটা সিন

এক হাতে কালো গ্লাভ পরা মহিলাকে সে চিনতো যখন সে গ্যামব্লিং করতো। তার সাথে দেখা হয় আবার এবং তারা একটা কন্ট্রাক্টে আসে গ্যামব্লিং নিয়া। যেহেতু মহিলাটি মিয়িস্ট্রিয়াস এবং তার কাছে হারতেই থাকে মিঃ চাও।পরে তারা একে অপরকে জানার চেষ্টা করে এবং হাই-লো গেইমে চাও দুইবারই হাইরা গিয়া মহিলার পাস্ট জানতে পারে না। এদিকে ২০৪৭ স্টোরি শেষ হওয়াতে সে রিয়ালাইজ করতে পারে, এই মহিলারও পাস্ট তার মতোই। এবং তার নাম জানতে পারে ‘’সু লি-জেন’ যে নামে “ইন দ্য মুড ফর লাভ’’ স্টোরিতে আরেক মহিলার সাথে তার সম্পর্ক ছিলো। এবং সে ঐ স্টোরিতে সিঙ্গাপুর গিয়াও মহিলার ট্রেস করতে পারে নাই। আগের ‘’সু লি-জেন’ এর কারণে এই মহিলার সাথে ডিস্টোপিয়ান ওয়ার্ল্ডে আর যায় না।

শেষতক, বাই লিং এর সাথে আবার সাক্ষাত হয়। তাদের মধ্যে ফিনান্সিয়াল যোগাযোগ ঘটে। লিং কে হেল্প করে। তারা টাইম স্পেন্ড করে হোটেলে ফিরার পর বাই লিং তাকে আগের মতো এক রাত দশ ডলারের বিনিময়ে থাকতে বলে কিন্তু চাও রিফিউস করে চলে যায়। ভয়েস ওভার বলতে থাকে এটাই তার সাথে শেষ দেখা। ট্যাক্সি ডাক দেয় এবং ক্যামেরা শুরুতে যেমন একটা শুন্যতার ভেতর দিয়ে শুরু হইছিলো সেভাবেই শুন্যতায় গিয়া স্থির হয়। স্টোরিলাইন স্থির হলেও, মুভির প্রোটাগনিস্ট একজন এস্কেপিস্ট।

মুভির প্লট পয়েন্ট চারটি ধাপে শেষ হয়। শুরুতে ডিস্টোপিয়ান ওয়ার্ল্ড,পরে বাই লিং এর সাথে পরিচয় ও প্রেম, তারপর অ্যান্ড্রয়েড এবং সু লি-জেন এবং শেষে আবার বাই লিং।

মেমোরিসগুলা যেমন কান্নায় জড়ানো, ঠিক তেমনি ডিস্টোপিয়ান ওয়ার্ল্ডের ক্যারেক্টাররাও কান্নার মধ্য দিয়েই যায়। টিপিক্যাল ওং কার ওয়ে ফিল্ম বলা যাইতে পারে ২০৪৬ কে। মুভি’র টেকনিক্যাল দিকগুলার সাথে স্টোরিলাইনও আগের দুইটা মুভি “ডেইজ অব বিয়িং ওয়াইল্ড” এবং “ইন দ্য মুড ফর লাভ” এর স্টোরি নিয়ে এক্সটেন্ডেড হইছে। টেকনিক্যালি এইটারে থার্ড পার্ট হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ২০৪৭ সালে চায়না এবং হংকং এক হয়ে যাবে, এবং হংকংয়ের পলিটিক্যাল হিস্ট্রি আগের মুভিগুলাতে বেশ ইমপ্লিমেন্ট করা আছে। তবে এ মুভিতে হংকং/পলিটিক্যাল লিগ্যাসি মূল পয়েন্ট হিসাবে আসে নাই। এখানে তাদের টাইম অনেক পার হয়ে যাওয়াতে ডিরেক্টর সব ক্যারেক্টারকে একটা গ্রে মেজাজের মধ্য দিয়া দেখাইতে চাইছেন।

 

[youtube id=”SgGNiX9y4nI”]

 

The following two tabs change content below.
Avatar photo

আবু ইলিয়াস হৃদয়

জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →