মন্টগোমেরি বাস বয়কট: মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের ভাষণ
১৯৫৫ সালের ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখে ৫ হাজার লোকের একটা জমায়েতে, মন্টগোমেরি’র হল্ট স্ট্রিট বাপিস্ট চার্চের সামনে মার্টিন লুথার কিং এই ভাষণ দিছিলেন। মনটগোমরি’র সিটি বাস সার্ভিসে নিজের সিট ছাইড়া দিতে রাজি না হওয়ায় মিসেস রোজা পার্কস’রে পুলিশ এরেস্ট করার ৪ দিন পরে। এই এরেস্টের ফলে আম্রিকার দক্ষিণ অঞ্চলে পয়লাবারের মতো সিভিল রাইটস ক্যাম্পেইন শুরু হয়। এই ভাষণে কিং অডিয়েন্সরে বাস বয়কট করার লাইগা বলেন, এবং একটা টার্গেট সেট কইরা দেন যে, মন্টগোমেরি বা অন্য কোন জায়গা’তে কালা মানুশদের বাসে বসা নিয়া জাস্টিস না পাওয়া পর্যন্ত এই বয়কট চলতে থাকবে। ১ বছরের বেশি সময় ধইরা তাদের এই প্রটেস্ট চলছিল, ব্ল্যাক পিপল’রা বাসে উঠেন নাই এই সময়, মন্টগোমরি’তে আর আম্রিকার অন্য অনেক জায়গায়।… তো, যে কোন মুভমেন্টেই এই ‘ওয়ান পয়েন্ট’ ঠিক করা; তার পক্ষে যুক্তি দেয়া, ব্যাকগ্রাউন্ডটারে ক্লিয়ার কইরা পিপল’রে এনগেইজ করা এবং দাবি আদায়ে একসাথে ফাইট করতে থাকা – এই তিনটা জিনিসই জরুরি। আর মার্টিন লুথার কিং এই কাজটাই করছেন।
আর যেইভাবে করছেন সেইটাও খেয়াল করার মতো ঘটনা। দেখবেন, মার্টিন লুথার কিং’য়ের কথা খুবই লিরিক্যাল। পারফর্মেটিভ কবিতার মতন। মানে, খালি শুনলেই না, বরং পড়তে গিয়াও টের পাওয়ার কথা অনেকের। ইমোশন যখন ইনটেন্স হয় তখন একটা সুর চইলা আসে; খুব কাছের কেউ মারা গেলে কেউ যখন বিলাপ কইরা কান্দে দেখবেন সুর কইরা বিলাপ করতেছে; এইটা কেউ তারে বইলা দেয় না যে, সুর কইরা কান্তে হবে; আবেগ’টা, ইমোশন’টা তারে অই জায়গাতে নিয়া যায়। যারা ভালো বক্তা, ভালো ওয়াজ করেন, ভাষণ দিতে পারেন খেয়াল কইরা দেখবেন শব্দের রিদমগুলারে উনারা ধরতে পারেন, ইউজ করতে পারেন। পাবলিক স্পিকিংয়ে এই জিনিসটা জরুরি।…
আরেকটা খেয়াল করার মতো ব্যাপার হইতেছে, মার্টিন লুথার কিং’রে মনে হইতে পারে ক্রিশ্চান পাদ্রী, খ্রিস্টধর্ম নিয়া ভাষণ দিতেছেন! বাংলাদেশে হইলে তো তারে ‘ইসলামী মৌলবাদী’-ই বলতেন সেক্যুলার ও বামাতি’রা। কিন্তু দেখেন এইখানে ক্রিশ্চিয়ানিটি খালি ধর্ম না, ব্ল্যাক-পিপলদের, আম্রিকার মজলুমদের একমাত্র আশ্রয়েরও জায়গা। ধর্মের এই শিকড়টারে মার্টিন লুথার কিং উপড়ায়া ফেলার জন্য বলেন নাই বা এড়ায়া যাইতে বলেন নাই, বরং এই যে শক্ত, ডিপ-রুটেড একটা বিশ্বাসের জায়গা আছে তারে আরো পোক্ত করার জন্য বলছেন।… ‘রাষ্ট্র খুনী’ 🙂 – এই টাইপের ফাইজলামিও করেন নাই; বরং বলছেন, আম্রিকাতে ডেমোক্রেসি আছে বইলা আমরা আজকে মিছিল-মিটিং করতে পারতেছি, কমিউনিস্টদের মতো টোটালিটেরিয়ান রিজিমে থাকলে তো পারতাম না!
তো দেখেন, মানুশের দাঁড়ানোর জায়গাগুলা কই, বিপদে পড়লে কার কাছে সে বিচার দিবে? – সমাজের কাছে, ধর্মের কাছে, রাষ্ট্রের কাছে; মার্টিন লুথার কিং-ও এইটাই করতেছেন। সমাজের পক্ষে দাঁড়াইছেন, ধর্মবিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়াইছেন, রাষ্ট্রের পক্ষে দাঁড়াইছেন; এইখানে যা যা ভুল আছে, গাফিলতি আছে, তারে কারেক্ট করার আর্জি জানাইছেন।
হিস্ট্রিক্যাল জিনিসগুলার বাইরেও উনার এই ভাষণে এই তিনটা জিনিস খেয়াল করার স্কোপ আছে বইলা আমি মনে করি।
ই.হা.
…………………………………
বন্ধুরা আমার, আপনাদের প্রত্যেকরে আজকে এই বিকালে এইখানে দেইখা খুশি হইছি আমরা। খুবই জরুরি একটা কারণে আজকে এইখানে একসাথে হইছি আমরা। একটা জেনারেল সেন্স নিয়া আমরা এইখানে আসছি, পয়লা আর প্রধান কারণ হইলো, আমরা আম্রিকান সিটিজেন আর ঠিক করছি যে, আমাদের সিটিজেনশীপের পুরা মানে আমরা এপ্লাই করতে চাই। ডেমোক্রেসির লাইগা ভালোবাসার জন্যও আমরা এইখানে আসছি, কারণ মনের-গভীরে আমরা বিশ্বাস করি যে, পাতলা কাগজ থিকা মোটা অ্যাকশনে ট্রান্সফর্ম হইতে পারা ডেমোক্রেসি হইতেছে দুনিয়াতে সবচে মহান গর্ভমেন্টের ফর্ম।
কিন্তু আমরা এইখানে আসছি একটা স্পেসিফিক কারণে, আসছি মন্টগোমেরি’র বাসের ঘটনাটার কারণে। আমরা এইখানে আসছি কারণ এই ঘটনা’টারে কারেক্ট করবো বইলা আমরা ঠিক করছি। এই ঘটনা নতুন কিছু না। শত শত বছর ধইরা এই প্রব্লেম জারি আছে। এখন থিকা অনেক বছর আগে মন্টগোমেরি’র আর অন্য অনেক জায়গার নিগ্রোরা খোঁড়া ডরগুলার প্যারালাইসিস দিয়া আক্রান্ত হইছে আমাদের কমিউনিটি’তে, বাসগুলাতে। কত শত বার নিগ্রোদেরকে ডর দেখানো হইছে আর অপমান করা হইছে আর আতংকিত-নির্যাতিত করা হইছে খালি এই কারণে যে, তারা হইতেছে নিগ্রো। আজকে বিকালে আমার সময় নাই সেই অগুনিত ঘটনার হিস্ট্রি বলার। আজকে তাদের অনেকেই হারায়া গেছে বিস্মৃতির ঘন কুয়াশার ভিতর কিন্তু এটলিস্ট একজন আমাদের সামনে দাঁড়াইছে তাঁর পুরা রাগ’টা নিয়া।
জাস্ট কয়দিন আগে, জাস্ট গত বিষুদবারে ঠিক কইরা বললে, মন্টগোমেরি’র একজন ভালো সিটিজেন, নিগ্রোদের মধ্যে একজন ভালো সিটিজেন না, মন্টগোমরির মধ্যে একজন ভালো সিটিজেনরে বাস থিকা নামায়া দেয়া হইছিল আর তারে জেলে ঢুকানো হইছিল, কারণ শে তাঁর সিট একজন শাদা লোকরে ছাইড়া দিতে রিফিউজ করছিল। এখন প্রেস আমাদেরকে বিশ্বাস করাইতে চায় যে, শে নিগ্রোদের জন্য রিজার্ভ করা একটা সিট ছাড়তে রিফিউজ করছিল, কিন্তু আমি আপনাদেরকে এই বিকালবেলায় বলতে চাই যে, এইখানে কোন রিজার্ভ সেকশন নাই। আইন এতদূর পর্যন্ত কখনোই ক্লিয়ার কইরা বলে নাই। এখন আমি মনে করি আমি লিগ্যাল অথরিটি নিয়া কথা বলতে পারি – এই কারণে না যে আমার লিগ্যাল অথরিটি আছে, বরং আমি মনে করি আমার পিছনে যেই লিগ্যাল অথরিটি আছে সেইটা নিয়া আমি কথা বলতে পারি – যে, এই আইন, এই অর্ডিন্যান্স, সিটি অর্ডিন্যান্স কখনোই পুরাপুরি ক্লিয়ার আছিলো না।
মিসেস রোজা পার্কস একজন ভালো মানুশ। আর, যেহেতু এই ঘটনাটা ঘটছে, আমি খুশি হইছি যে, এইটা ঘটছে মিসেস রোজা পার্কসের মতো একজন মানুশের লগে, যার সীমাহীন বিস্তৃত ইন্ট্রিগ্রিটিরে কেউ সন্দেহ করতে পারবে না। তাঁর চরিত্রের ধার নিয়া কেউ সন্দেহ করতে পারবে না, তাঁর ক্রিশ্চিয়ান কমিটমেন্ট নিয়া কেউ সন্দেহ করতে পারবে না আর জিসাসের শিক্ষার প্রতি তাঁর যে ভক্তি সেইটারে কেউ সন্দেহ করতে পারবে না। আর আমি খুশি যে এইটা ঘটছিল, এইটা ঘটছিল এমন একজন মানুশের সাথে যারে কেউ কমিউনিটিতে একটা ডিস্টাবিং ফ্যাক্টর বলতে পারবে না। মিসেস পার্কস একজন ভালো ক্রিশ্চিয়ান লোক, কোন অনুমান ছাড়াই, আর এইখানে ইন্ট্রিগ্রিটি আছে আর এইখানে ভালো চরিত্র আছে। আর শে যেহেতু খালি উঠতে রিফিউজ করছে, তারে এরেস্ট করা হইছে।
আর আপনারা জানেন, বন্ধুরা আমার, এমন একটা সময় আসে যখন মানুশ আর জুলুমের লোহার জুতার নিচে পদদলিত হইতে রাজি হইতে পারে না। এমন একটা সময় আসে, বন্ধুরা আমার, যখন মানুশ জুলুমের অতল গহ্বরে পইড়া থাকতে থাকতে টায়ার্ড হয়া যায়, যেইখানে তারা গভীর হতাশার নির্জ্জলতারে এক্সপেরিয়েন্স করতে পারে। এমন একটা সময় আসে যখন মানুশ জীবনের জুলাই মাসের ঝলমলা সূর্যের আলোর বাইরে থাকতে থাকতে টায়ার্ড হয়া যায় আর একটা নভেম্বরের আলপাইনের কনকনা ঠান্ডার বাইরে একটা ছিদ্র দিয়া আইসা দাঁড়ায়। এমন একটা সময় আসে।
আমরা এইখানে আছি, আজকে বিকালে আমরা এইখানে আছি কারণ আমরা এখন টায়ার্ড। আর আমি বলতে চাই যে, আমরা এইখানে ভায়োলেন্সের পক্ষ নেয়ার জন্য আসি নাই। আমরা কোন সময়ই এইটা করি নাই। আমি মন্টগোমেরি’র থিকা জানাইতে চাই আর এই জাতি’রে জানাইতে চাই যে আমরা ক্রিশ্চান মানুশ। আমরা খ্রীস্টধর্মে বিশ্বাস করি। আমরা জিসাসের শিক্ষায় বিশ্বাস করি। আজকে বিকালে আমাদের হাতে যেই একমাত্র অস্ত্র আছে সেইটা হইতেছে, প্রতিবাদ করা। এইটাই সব।
আর অবশ্যই, অবশ্যই, এইটা হইতেছে আম্রিকার গর্ব, তার সব দোষ থাকার পরেও। এইটা হইতেছে ডেমোক্রেসির মহিমা। যদি আমরা একটা কমিউনিস্ট জাতির লোহার পর্দার কারাগারে থাকতাম আমরা এইটা করতে পারতাম না। যদি আমরা একটা টোটালিটেরিয়ান রিজিমের অন্ধকূপে নিমজ্জিত থাকতাম আমরা এইটা করতে পারতাম না। কিন্তু আম্রিকার মহান মহিমার ডেমোক্রেসিতে প্রটেস্ট করার অধিকার আমাদের আছে। বন্ধুরা আমার, আমাদের কেউ যাতে এমন কিছু ফিল করাইতে না পারে যে আমাদের কাজকাম ক্লু ক্ল্যাস্ক ক্ল্যান (Ku Klux Klan) বা হোয়াইট সিটিজেন কাউন্সিলের (White Citizens Council) লগে মিলানো যায়। মন্টগোমরি’র কোন বাসস্টপে কোন ক্রস পুড়ানো হবে না। কোন শাদা-মানুশরে তাদের ঘর থিকা টাইনা বাইর করা যাবে না আর কোন দূরের কোন রাস্তায় নিয়া আসা যাবে না আর হেনস্তা করা যাবে না কো-অপারেশন না করার লাইগা। আমাদের মাঝখানে কেউ থাকবে না, যে আমাদের মাঝখান থিকা মাথাচাড়া দিবে আর এই জাতির কন্সিটিটিউশনকে অস্বীকার করবে। আমরা এইখানে একসাথে হইছি শুধু এই জিনিস দেখার আকাংখা থিকা যে, অধিকার আছে আমাদের। বন্ধুরা আমার, আপনাদেরকে আমি জানাইতে চাই যে, আমরা শক্ত ও কঠোর মানসিকতা নিয়া কাজ করবো এই শহরের বাসগুলাতে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য।
আর আমরা ভুল করতেছি না, আমরা যা করতেছি সেইটা ভুল করতেছি না। যদি আমরা ভুল হই, তাইলে এই জাতির সুপ্রিম কোর্ট ভুল। যদি আমরা ভুল হই, তাইলে ইউনাইটেড স্টেটসের কন্সটিটিউশন ভুল। যদি আমরা ভুল হই, তাইলে মহান ঈশ্বর ভুল। যদি আমরা ভুল হই, তাইলে নাজারাথের যিশু জাস্ট একজন ইউটোপিয়ান ড্রিমার যিনি কখনোই এই দুনিয়াতে নাইমা আসেন নাই। যদি আমরা ভুল হই, তাইলে ন্যায়বিচার একটা মিথ্যা। ভালোবাসার কোন মানে নাই। আর এইখানে, এই মন্টিগোমরি’তে আমরা ঠিক করছি একসাথে কাজ করবো আর ফাইট করবো যতক্ষণ না পর্যন্ত জাস্টিস পানির মতো নাইমা না আসতেছে, আর ন্যায়পরাণয়তা একটা বিশাল স্রোতের মতো হয়া উঠতেছে।
আমি আপনাদেরকে বলতে চাই আমাদের সব একশনগুলারে একসাথে করতে হবে। এক হইতে পারাটা এই সময়ে সবচে বেশি দরকার, আর যদি আমরা একলগে হইতে পারি তাইলে আমরা সেই জিনিসগুলা পাইতে পারবো যা আমরা চাইতেছি তা-ই খালি না, বরং যেইগুলা আমরা পাওয়ার অধিকার আমরা রাখি। আর কেউ আমাদেরকে ডর দেখাইতে পারবে না। আর আমরা ডরাই না কারণ আমরা যা করতেছি তা আইনের অধিকারের ভিতরেই করতেছি। আমাদের আম্রিকান ডেমোক্রেসি কখনোই এইরকম কোন সময় আসে নাই যখন আমাদের ভাবতে হবে যে আমরা ভুল করতেছি যখন আমরা প্রটেস্ট করতেছি। এই অধিকার আমাদের আছে। যখন এই দেশের সব জায়গার লেবার’রা এইটা দেখতে আসে তাইলে পুঁজিবাদি ক্ষমতা তাদেরকে পিইষা ফেলবে, কিন্তু লেবারদের একসাথে হওয়াটাতে দোষের কিছু নাই, প্রটেস্ট করাটা তাদের অধিকার।
আমরা, এই মাটির বিচ্ছিন্ন মানুশেরা, যারা এতো দীর্ঘ সময় ধইরা নির্যাতিত হইছি, আমরা টায়ার্ড বন্দীশালার এই লম্বা রাতে পথ চলতে। আর এখন আমরা একটা ফ্রিডমের আর ন্যায়বিচারের আর সমতার সকালের দিকে যাইতেছি। আমার বন্ধুদেরকে আমি বলতে চাই, যেহেতু আমি আসছি আপনাদের কাছে, আর কিছু আইডিয়া দিতে চাইতেছি কেন আমরা এইখানে একসাথে হইছি; আমাদেরকে এইটা ধইরা রাখতে হবে আর আমি এইটাতে জোর দিতে চাই, আমাদের সব কাজে, আমাদের সব আলোচনায় এইখানে, এই বিকালে আর সারা সপ্তাহ ধইরা আর যখনই যেইটা আমরা করি, ইশ্বররে আমাদের সবচে সামনে রাখতে হবে। আসেন, আমাদের সব কাজে আমরা ক্রিশ্চান হয়া উঠি। কিন্তু আজকে বিকালে আমি আপনাদেরকে বলতে চাই আমাদের ভালোবাসার কথা বলাটা এনাফ না, ভালোবাসা অন্যতম একটা ভিত ক্রিশ্চিয়ান চেহারার, বিশ্বাসের। এর আরেকটা দিকও আছে, যারে বলে, জাস্টিস। আর জাস্টিস হইতেছে প্রেমের হিসাব। জাস্টিস হইতেছে সেই প্রেম’রে ঠিক করা যা প্রেমের এগেনেস্টে রিভোল্ট করে।
মহান ইশ্বর নিজেও একমাত্র না, একমাত্র না, ইশ্বর খালি দাঁড়ায়া থাকেন নাই আর হোসেয়া’র (Hosea) ভিতর দিয়া বলেন, “আমি তোমাদেরকে ভালোবাসি, ইসরাইল।” উনি সেই ইশ্বরও যিনি দেশগুলার সামনে দাঁড়াইছিলেন আর বলছিলেন: “চুপ করো আর শোন, আমি হইতেছি ইশ্বর, যদি তোমরা আমার কথা না শোন আমি তোমাদের মেরুদন্ড ভাইঙ্গা দিবো আর ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনরে ধইরা থাপড়াবো।” ভালোবাসার পাশে দাঁড়ানো’টা হইতেছে সবসময়ের জাস্টিস, আর আমরা এইটারে ইউজ করতেছি শুধুমাত্র জাস্টিসের অস্ত্র হিসাবে। খালি বুঝানোর অস্ত্র আমরা ইউজ করতেছি না, বরং আমরা বুঝতে পারতেছি যে, জোর করার অস্ত্রগুলা আমাদের ইউজ করতে হবে। এইটা খালি এডুকেশনের একটা প্রসেস না, এইটা লিগ্যালাইজেশনেরও একটা প্রসেস।
আজকে বিকালে যখন আমরা এইখানে দাঁড়াইছি আর বসছি আর আমরা প্রস্তুতি নিতেছি ঠিক করার আমাদের সামনে কি আছে, আসেন আমরা কঠিন ও কঠোর নিয়ত করি একসাথে থাকার। আমরা একসাথে কাজ করবো। এইখানে, এই মন্টিগোমরি’তে, যখন ফিউচারে ইতিহাসের বইগুলা লেখবে কেউ তারা কেউ বলবে, “এইখানে কালা লোকদের একটা রেইস ছিল, ‘পশমঅলা আর কালা রংয়ের’, একটা জনগোষ্ঠী যাদের নৈতিক সাহস ছিল নিজেদের অধিকারের পক্ষে দাঁড়ানোর। আর এর ভিতর দিয়া অরা ইতিহাসের আর সভ্যতার রগে রগে নতুন মিনিং ঢুকায়া দিছিল।” আর আমরা এইটা কইরাই ছাড়বো। ইশ্বর আমাদের এই জিনিস কবুল করেন দেরি হয়া যাওয়ার আগে। যখন আমরা আমাদের কর্মসূচি আগায়া নিয়া যাবো যেন এইসব কথা মনে রাখি আমরা।
আমার কথা শেষ করার আগে আরেকটা কথা বলতে চাই। আমি আপনাদের কাছে আর্জি জানাইতে চাই। আপনারা ভোট দিছেন [এই বয়কটের পক্ষে], আর নিজেদের মন থিকা আপনারা এইটা করছেন, আর এর লাইগা আমি আপনাদের শুকরিয়া আদায় করতেছি, এইখানে যারা আছেন, সবার পক্ষ থিকা। এখন একসাথে থাইকা আমরা বাইর হই আর এর সাথে থাকি এই জিনিস শেষ না হওয়া পর্যন্ত। এখন এর মানে স্যাক্রিফাইস করা, হ্যাঁ, এর মানে অনেক সময় স্যাক্রিফাইস করতে হবে আমাদের। কারণ এইখানে এমন জিনিস আছে, যার জন্য স্যাক্রিফাইস করা শিখতে হবে আমাদের। আর আমরা এমন একটা জায়গায় আইসা পৌঁছাইছি যেইখানে আগে যেইসব জিনিস আমরা মাইনা নিছি সেইগুলা এখন মাইনা নিবো না আর।
তো, আমি আর্জি জানাইতেছি এখন। আপনাদের চাকরিতে নিয়া যাওয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি, আর সেইটা রাখছি, আপনাদের জন্য ক্যাবের ব্যবস্থা করছি। আপনাদের জন্য গাড়ি থাকবে, আর তেল খরচ নিয়া চিন্তা কইরেন না। যদি আপনার কাছে এইটা থাকে, যদি আপনি কিছু টাকার মালিক হওয়ার মতো ভাগ্যবান হন, এইটারে ভালো কাজের জন্য ইউজ করেন। এখন থিকা আমার গাড়ি এই কাজে থাকবে, এই কাজে ছিল, আর আমি কোন চিন্তা করতেছি না কতো তেল লাগবে আমার গাড়িতে। আমি দেখতে চাই এইটা কাজ করতেছে। আমরা থামবো না যতক্ষণ পর্যন্ত না মন্টিগোমরি থিকা জুলুম শেষ না হইতেছে, আর আম্রিকা থিকা সত্যি সত্যি বাইর না হয়া যাইতেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত এইটা না হইতেছে আমরা থামবো না। প্রতিটা মানুশের পারসোনালিটির যেই মূল্য আর মর্যাদা আছে, আমরা শুধু অইটুকই দাবি করতেছি। আর আমি এইখানে দাঁড়ায়া কোন সেলফিশ মানুশের লাইগা এইটা দাবি করতেছি না আমি মন্টগোমরি’তে কোনদিন বাসে উঠি নাই। কিন্তু আমি একজন ভালো ক্রিশ্চান হইতে পারবো না যদি আমি সইরা দাঁড়াই আর বলি, যেহেতু আমি উঠি না, আমার বাসে উঠার দরকার পড়ে না, এইটা নিয়া আমার কোন কনসার্ন নাই। আমি তখন ঠিক কথা বলবো না। আমি একটা আওয়াজ শুনতে পাই বলতেছে, “যদি তুমি এইগুলা না করো, আমার ভাই, তুমি আমার লগে নাই।“
আর আমি থামবো না; যত ডর দেখানো হোক আর যতকিছু করা হোক আমি ফেইস করবো, ডেমোক্রেসির আর সিটিজেনশীপের অন্য সাহসী যোদ্ধাদের মত। এইটাতে আমাদের কিছু যায় আসে না যতক্ষণ পর্যন্ত এর ভিতর দিয়া জাস্টিস বাইর হয়া আসতে পারে। আর এখন আমি দেখতেছি যখন আমরা আমাদের অধিকারের লাইগা লড়াই করি, আমাদের মধ্যে কারো না কারো মারা যাইতে হয়। কিন্তু কেউ বলছিল, যদি একজন মানুশের কোনকিছু না থাকে যার লাইগা সে মরতে পারে তাইলে তার বাঁইচা থাকারও কোন মানে নাই।
Latest posts by ইমরুল হাসান (see all)
- পলিটিকাল ডাইরি – ২০২৪ (দুই) - সেপ্টেম্বর 17, 2024
- পলিটিকাল ডাইরি – ২০২৪ (এক) - সেপ্টেম্বর 4, 2024
- ধর্ম প্রশ্নে পুরান কমিউনিস্টদেরকে ইনডেমনিটি দিতে চাওয়াটা অনেকটা ইন্টেলেকচুয়াল অসততার ঘটনা: ফরহাদ মজহারের ‘মোকাবিলা’ (২০০৬) বই নিয়া আলাপ - আগস্ট 9, 2024