Main menu

এডিটোরিয়াল: হজরত জলিলের উছিলায়…

হজরত মিশা সওদাগরের একটা ইন্টারভিউ দেখলাম। উনি পরান, হাওয়া, দিন-দ্য ডে, গলুই –এই ছিনামাগুলা লইয়া একটা আলাপ তুইলা কইতেছেন জে, হজরত জলিলের ছিনামায় ইন্ডাস্ট্রির লাভ নাই, উনি শৌখিন আর্টিশ। বরং পরান ইত্তাদিতে লাভ। হজরত জলিলকে উনি একটা ইস্টুডিও বানাবার বুদ্ধি-পরামিশ দিলেন।

হজরত মিশাকে লাইক করি আমি, জেমন করি হজরত ডিপজল এবং হজরত জলিলকে। এবং হজরত মিশা ওনার বুঝ মতো কথা কইছেন, কথাগুলা ভুল, কিন্তু বাংলাদেশের ছিনামার পোরতি ওনার দরদের ব্যাপারে কোন শন্দেহ নাই আমার। আমি বরং আমার মতো জারা বাইরের, আতেল-বয়াতি, জারা চিন্তা ভাবনা করার কাম করি, একটা দায়িত্ত লইছি, তাদের না পারাটা দেখতে পাই হজরত মিশার কথায়! না পারা মানে এই আমাদেরই দায়িত্ত হইলো, ঘটনাগুলার আছর ইতিহাশে কেমনে পড়ে শেইটা আর্টিশ এবং জনতার দরবারে হাজির কইরা তাদের দিশা দেওয়া! অনেকে এই কথাটারে দেমাগি ভাবতে পারেন খুব, কিন্তু ঘটনা তেমন না, ব্যাপারটা এমন ভাবতে পারেন: একজন জদি জামা বানাবার কাম করেন, আরেকজন জদি পিয়াজ কাটার কাম করেন, তাইলে ঐ দর্জির ১ কেজি পিয়াজ কাটতে কতো টাইম লাগবে, আর পিয়াজ কাটা লোকটার জামা বানাইতে? কাম পাল্টাইয়া একই মুন্শিয়ানা আশা করা উচিত হয় না!

তো, ঐগুলা আরো কই কই জেন কইছি, এইখানে বরং কইতেছি, হজরত মিশার কথার ঝামেলাটা কই!

শুরুতেই কইবো, কোরবানি গেলো ১ মাশ, কিন্তু এখনো জে আমরা ঢাকাই ছিনামা লইয়া আলাপ করতেছি, আমাদের টেবিলে একটা টপিক হিশাবে ঢাকাই ছিনামা আছে, এমন ঘটনা লাস্ট কবে দেখছেন, কত বছর আগে? আমার হুশ হবার পরে খুব মনে পড়ে না আমার! অন্তত ২০০০ শালের পরে আছে কিনা শন্দেহ আছে! এই জে ১ মাশ এইটারে টপিক বানাইয়া রাখায় ঢালিউডের লাভ হইছে কিনা? হইছে। আন্দাজ করি, এইটা হজরত মিশাও মানবেন! আমার বিচারে এই ঘটনার অনেকটা কেরেডিট দিতে হবে হজরত জলিলকে! তাইলে হজরত জলিলের দিন-দ্য ডে ইন্ডাস্ট্রির লাভ ঘটাইলো কিনা?

আরো খেয়াল করেন, এই জে কয়দিন আগে হাওয়ার পোরমোশন চললো, ভার্ছিটিগুলায় গেলো, আমি তো দেখতেছি, পোরমোশনের এই আইডিয়া হজরত জলিলের শুরু করা রেয়াজের কন্টিনুশন! খুব নতুন কিছু উনি করছেন, ব্যাপারটা তা না, কিন্তু এখন, বাংলা/ঢাকাই ছিনামা লইয়া এমন কিছু জে করা জায়, দরকার, শেইটা উনি রাস্তায় হাইটা দেখাইছেন!

আরেকটা বড়ো কাম উনি করছেন ওনার ছিনামা দিয়া। ঢাকাই ছিনামারে উনি শমাজের একদম নিচ থিকা উপরের ঘটনা বানাইয়া তুলছেন! এইটা ১৯৭০/৮০’দশের পরে আস্তে আস্তে কমতে কমতে পুরা নাই হইয়া গেছিলো! কোনটাই না দেখলেও ামি বুঝতে পারি জে, দিন-দ্য ডে’র তুলনায় পরান ছিনামা হিশাবে ভালো হইছে, কিন্তু ব্যাপারটা হইছে এমন জে, হজরত জলিল খিদা লাগাইয়া খাইতে দিছেন, কিন্তু পেট ভরাইতে পারেন নাই, শেইটা ভরাইছে পরান! কিন্তু বাংলাদেশের ছিনামাও জে খাবার মতো একটা জিনিশ, মেনুতে রাখা, এইটা হজরত জলিলের নেয়ামত!

আমি, আমার মতো আতেল বয়াতিরা তো বাইরের, আমরা কেন রাফি-জলিলের ফ্যাছাদে খুব বেদিশা হবো! আমি বরং দিন-দ্য ডে আর পরানকে এক কাতারে রাখি, হজরত জলিল কেমনে পরানের রাস্তা ঢালাই কইরা দিলেন, শেইটা দেখতে পাই! আমি বরং হাওয়ারে এই কাতারে তেমন রাখতেছি না এখনো! মানে আমার শন্দেহ হইলো, ঢালিউডের অডিয়েন্সকে ভুল বুঝাইয়া দুই চার জনরে হলে নিছে হাওয়া, কিন্তু তারা লাইক করে নাই ছিনামাটা! এমনকি আমার এই শন্দেহও আছে জে, হাওয়া গং আশলে মেইনিস্ট্রিম ঢালিউড অডিয়েন্সকে তার পছিবল অডিয়েন্সের ভিতরেই জমিন দেন নাই, তাদের কাছেও জে টিকিট বেচবেন, শেই ধান্দাই আছিলো না আদৌ! তারা ছেরেফ কালচার্ড মিডেল কেলাশকে ধরতে চাইছেন! কিন্তু শেইখানেও হজরত জলিলকে কেরেডিট দিতে হবে, কারন, ঢাকাই ছিনামারে টপিক বানাইয়া রাখছেন উনি! ঐ কারনে আপনার নজরে পরান আর হাওয়া দুইটাই ভালো লাগলেও কালচার পোডাক্ট হিশাবে দুইটার ধান্দা পুরা উল্টা! পরান দিন-দ্য ডে’র কাছের ছিনামা–নিচতলায় তাগো বাশা, হজরত জলিল ১২০ কোটি টাকা শাচ্চাই খরচ করলেও, আর ২ টাকায় হাওয়া বানাইলেও ঐ খুব উচা তলার কোন লোকেশনের!

আরেকটা ব্যাপার হজরত জলিলের উছিলায় ঘটা শম্ভব হবে, উনি নিজেই শেইটার আলামত! এবং এই কারনেই ওনার এক্টিং একটা দরকারি ঘটনা, ছেরেফ ইস্টুডিও বানাইয়া শেইটা হাছিল হইতো না! মানে ওনার ঢঙ, মন, ভংগিমা ইত্তাদি দেখেন। উনি বাংলাদেশি, এখনো হইয়া উঠতে থাকা বাংলাদেশি! উনি বিদেশি, এস্পেশালি কলিকাতা বা বলিউডের আর্টি ছেন্স দিয়া চলেন নাই, তেমনে কথা কন না, হাটেনও না, ভাবেনও না! উনি বাংলাদেশি’র বেস্ট ভার্শন না বটেই, কিন্তু বাংলাদেশিদের উনি হিম্মত জোগাইছেন, নিজেরে লইয়া হাজির হবার ভিতর শরম জে নাই, এই মেছেজ তো আর পাই নাই আমরা! বরং জয়া, শাকিব, মিথিলা, অর্নবেরা বেদখল হইয়া বিদেশি হইয়া উঠছেন, বাংলাদেশি হবার জেই জেই নিশানা আছিলো হয়তো কোন এক কালে, শেইগুলা ছাইটা ফালাইছেন, ফালাইয়া দিয়া শানন্দার কাভার হইছেন! অনন্ত জলিল হইছেন ঢালিউডের ছফা, জিনি জেইগুলা ভালো পারেন না, ঐগুলাই করার ডিছিশন লইছেন, কেননা, কারো না কারো শুরু করতে হবে তো! আর একবার শুরু হইলে দরকারি ভালোটা করার লোক হাজির হবে আলগোছে। হজরত মিশা কি ভাববেন জে, কোনটাতে তার ইন্ডাস্ট্রির লাভ?

হজরত মিশা ঢাকাই ছিনামার বিজনেছ চান, কিন্তু আর্টি ছেন্সে আর কারো পুচকে বাছুর হইলে শেইটা কতটা শম্ভব হবে? নাকি নিজেদের পোক্ত ছিগনেচারই একটা কনজুমাবল বেরান্ড হইয়া উঠতে খুবই দরকারি জিনিশ? হজরত জলিল রাজের মতো এক্টর না, কিন্তু রাজের রাজ হইয়া ওঠার উপায়, আরো বেশি আমরা জে রাজকে খাবো, শেই টেস্ট বাড পয়দা হবার হিস্ট্রিকেল শর্ত!

The following two tabs change content below.
Avatar photo

রক মনু

কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →