Main menu

খান আতাউর রহমানের লিরিকস: পাখি রে তুই দূরে থাকলে

খান আতাউর রহমান (১৯২৮ – ১৯৯৭) ফিল্ম-ডিরেক্টর, মিউজিশিয়ান, এক্টর আর সিঙ্গারই ছিলেন না, অনেক সুন্দর এবং পপুলার গানের লিরিকসও লেখছেন। কিছু জায়গায় বলা আছে যে, উনি ৫০০’র মতো গান লেখছেন। কিন্তু এতো গানের হদিস আমরা পাই নাই। এক-দেড়শ গান থিকা কিছু গান আমরা বাছাই কইরা এইখানে ছাপাইতেছি। বেশিরভাগই সিনেমার গান, অল্প কিছু সিনেমার বাইরের গানও আছে। আমরা আশা করি, খান আতাউর রহমানের সবগুলা গানের লিরিকস নিয়া উনার আরো গানের বই ছাপা হবে।

গানের লিরিকসের ক্ষেত্রে কোন অথেনটিক সোর্স আমরা নিতে পারি নাই। ইউটিউবে আপলোড করা নানান সিনেমার, মিউজিকের ভিডিও দেইখা গানের লিরিকস লেখা হইছে। আবার কিছু জায়গায় যেহেতু লিরিসিস্ট হিসাবে অনেকের নামের সাথে খান আতাউর রহমানের নাম দেয়া আছে বা খান আতাউর রহমানের লিরিকস বইলা চালু আছে, সেইখানে কিছু কনফিউশন থাকতে পারে। কিন্তু আমরা ট্রাই করছি যতদূর পর্যন্ত পসিবল অথেনটিসিটির ব্যাপারে শিওর হওয়ার। লিরিকস বাছাই ও কপি করছেন রাবিয়া সাহিন হক, হুসাইন হানিফ ও ইমরুল হাসান। বইয়ের ৪৫-৪৭টা লিরিকসের মধ্যে থিকা এইখানে ১৩টা লিরিকস রাখা হইলো।

এই গানগুলার অনেকগুলা তো শুনছেনই অনেকেই, বা শুনবেনই; লিরিকসও পড়তে পারেন, এর সাথে। হ্যাপি রিডিং!

দুনিয়া বড় এলোমেলো

সিঙ্গার: খান আতাউর রহমান
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: কখনো আসেনি (১৯৬১)
ডিরেক্টর: জহির রায়হান

 

দুনিয়া বড় এলোমেলো
লম্বা বেঁটে সাদা কালো
সবাই বলে আমি ভালো
তুমি ভালো আমি ভালো
মন্দ তবে কাকে বলো?

আসল কথা হলো
নিজের বেলায় অনেক আলো
রাত্রি হলে সবই কালো
তাই বলি, তাই বলি
সব কিছু ভাই ভুলে গিয়ে
একটু হাসো, একটু হাসো, একটু হাসো

দুনিয়ার এই এক আজব রীতি
নানান দেশে নানান নীতি
সবাই গাহে প্রণয়নীতি
আজকে যাকে ভালোবাসো
কালকে তাকে সর্বনাশো

আসল কথা হলো
নতুন নতুন সবই ভালো
পুরোন হলেই দেখতে কালো

তাই বলি, তাই বলি,
সবকিছু ভাই ভুলে গিয়ে
একটু হাসো, একটু হাসো, একটু হাসো

দুনিয়া ঘোরে কাটার চাকায়
সাহেব যায় গাড়ি হাঁকায়
সবাই তাকে সালাম জানায়
টাকাই যদি সবার বড়
ধর্ম কর্ম কেন করো?
আসল কথা হলো
কাজের বেলায় তুমি ভালো
কাজ ফুরোলেই তুমি কালো

তাই বলি, তাই বলি
সব কিছু ভাই ভুলে গিয়ে
একটু হাসো, একটু হাসো, একটু হাসো

 

এখন রাত্রি, কুয়াশার কোলে পৃথিবী ঘুমায়

সিঙ্গার: মাহবুবা রহমান
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: কখনো আসেনি (১৯৬১)
ডিরেক্টর: জহির রায়হান

এখন রাত্রি, কুয়াশার কোলে পৃথিবী ঘুমায়
এই তো সময়, ভালোবাসবার
ভালোবাসি – সেই কথাটি বলার
এই তো সময়

দুজনে নিরবে রয়েছি একা
প্রণয়ে প্রথম হয়েছে দেখা
দুজনে প্রথম হলো পরিচয়
এই তো সময়

জোছনা ঝরানো আকাশের গায়
তারার দেয়ালে জ্বলে নিরালায়
দখিনা বাতাস ধীরে বয়ে যায়
এই তো সময়

জীবনে বেঁধেছে মিলনের সুর
পেখম মেলেছে মনের ময়ূর
এখন রাতের হয়েছে দুপুর
এই তো সময়

এই তো সময় ভালোবাসবার
ভালোবাসি – সেই কথাটি বলার
এই তো সময়

পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া রে

সিঙ্গার: কলিম শরাফী
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: সূর্যস্নান (১৯৬২)
ডিরেক্টর: সালাউদ্দিন

পথে পথে দিলাম ছড়াইয়ারে
সেই দুঃখে চোখেরও পানি
ও আমার চক্ষু নাই

পাড় নাই, ও তার কিনার নাই রে
ঘর নাই ও মোর জন নাই
তবু দিলাম ভাঙ্গা নায়ে
অকূল সায়র পাড়ি

পথে পথে দিলাম ছড়াইয়ারে
সেই দুঃখে চোখেরও পানি

ও আমার বৈঠা নাই
ছেঁড়া পালে আমার হাওয়া নাই রে
ও আমার বৈঠা নাই

ও আমার সুখ নাই
নিদ নাই চোখে নিদ নাই

বিধিরে তোমার খেয়ালের শেষ নাই

দয়া নাই তোমার মায়া নাই
তবু জনম দুখি আমি
তোমায় আপন জানি

পথে পথে দিলাম ছড়াইয়ারে
সেই দুঃখে চোখেরও পানি
ও আমার চক্ষু নাই

শ্যামল বরণ মেয়েটি

সিঙ্গার: খান আতাউর রহমান
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: কাঁচের দেয়াল (১৯৬৩)
ডিরেক্টর: জহির রায়হান

শ্যামল বরণ মেয়েটি, ডাগর কালো আঁখিটি
না না তার নাম বলব না
তোমরা তাকে দেখেছ, গল্প করে জেনেছ
শুধু তাহার নাম জান না, নাম জান না

মিষ্টি তাহার সোনা মুখে হাসি ধরে না
এত বকাঝকি তবু প্রাণ ভাঙে না

এত করে বলেছি এত বারণ করেছি
বললে কারোর কথা শোনে না, কথা শোনে না

এখানে এ দালান কোঠার ভীড়ে, কিংবা কোন গাঁয়ের কুঁড়েঘরে
তোমরা তাকে কত দেখেছ, শুধু নাম জান না

না, না, তার নাম বলব না

হায় রে সেই অভাগিনীর স্বপ্ন ছিল যত
তিলে তিলে নিভে হল পোড়াকূপের মত
আকাশ ভরা মিটিমিটি তারা জ্বলে যত
অভাগিনীর দুচোখ জুড়ে আশা ছিল তত

পথের পানে চেয়ে এবার কেটে যাবে দিন
চোখের জলে গাঁথা মালা ধূলায় হবে লীন

সকাল সাঁঝে কুড়িয়ে পাওয়া ঝরা ফুলের মত
গানের মালায় গাঁথা হবে তাহার কথা যত

এখানে এ দালান কোঠার ভীড়ে
দেখেছি সেই অভাগিনী কেঁদে কেঁদে ফিরে

সাগর সেঁচে খোঁজেনি সে হিরামতির মালা
কুঁড়ে ঘরে রাখবে কোথায় এত সুখের জ্বালা

বসে ছিল খেয়ার আশে নদী হবে পার
ধূলোমাটির কড়ি কিছু আঁচল বাঁধা কার

হায়রে কখন অথৈ জলে আঁচল গেল ছিঁড়ে
অভাগী তাই এপাড় ওপাড় কেঁদে কেঁদে ফিরে

এখানে এ দালান কোঠার ভীড়ে
দেখেছি সে অভাগিনী কেঁদে কেঁদে ফিরে

 

মন যদি ভেঙ্গে যায় যাক

সিঙ্গার: সাবিনা ইয়াসমিন
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: জোয়ার ভাটা (১৯৬৯)
ডিরেক্টর:খান আতাউর রহমান

মন যদি ভেঙ্গে যায়, যাক, যাক, কিছু বলবো না
তোমার যাবার বেলায় আমার প্রেমের কথা তুলবো না

নাইবা মানলো বাধা চোখের জলের এই নদী
পথ চেয়ে একা একা কাঁদবো না হয় নিরবধি

তোমার পথের জ্বালা তোমার পায়ের ধুলা
মুছিয়ে দিয়েছি আঁখি জলে
সেই তো অনেক বড় সান্ত্বনা

মন যদি ভেঙ্গে যায়, যাক, যাক, কিছু বলবো না

কি আছে না হয় আমি কেঁদেই কাটাবো এ জীবন
না হয় ছলনা দিয়ে বুঝিয়ে রাখবো এ মন

তোমার জীবন তৃষা পেয়েছি পথের দিশা
এগিয়ে চলেছো সেই পথে
সেই তো অনেক বড় সান্ত্বনা

মন যদি ভেঙ্গে যায়, যাক, যাক, কিছু বলবো না

 

আমাকে পোড়াতে যদি এত লাগে ভালো

সিঙ্গার: বশির আহমেদ
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: মনের মতো বউ (১৯৬৯)
ডিরেক্টর:রহিম নেওয়াজ

আমাকে পোড়াতে যদি এতো লাগে ভালো
জ্বালো আগুন আরও জ্বালো
ঢালো আরও ব্যথা ঢালো
আমাকে পোড়াতে যদি এতো লাগে ভালো

আমি তো পুড়ে পুড়ে অঙ্গার হয়েছি
দিয়েছ আঘাত যত সবই তার সয়েছি
নিঠুর ওগো তবুও তোমাকে লেগেছে ভালো
তোমাকে বেসেছি ভালো

জ্বালো আগুন আরও জ্বালো
ঢালো আরও ব্যথা ঢালো
আমাকে পোড়াতে যদি এতো লাগে ভালো

এই হৃদয় ধূপসম তোমারই পূজায়
যাক যদি জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়

কিছু তার সুরভি, কিছু তার বেদনা
পড়বে তোমার মনে, যেখানেই থাকো না
সেদিনের সে স্মৃতি জানি তোমার মনে জ্বালবে না আলো

আমাকে পোড়াতে যদি এতো লাগে ভালো

 

এ কী সোনার আলোয় জীবন ভরিয়ে দিলে

সিঙ্গার: সাবিনা ইয়াসমিন
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: মনের মতো বউ (১৯৬৯)
ডিরেক্টর:রহিম নেওয়াজ

এ কী সোনার আলোয় জীবন ভরিয়ে দিলে
ওগো বন্ধু, কাছে থেকো, কাছে থেকো
রিক্ত আমার ক্ষুদ্র প্রাণে, তোমার আঁখিটি রেখো

আমি দিয়েছি আমার হৃদয় লুটিয়ে
তোমার প্রেমের জন্য
তুমি দু’হাত বাড়ায়ে বুকেতে জড়ায়ে
করেছো আমায় ধন্য

বুকের পাঁজরে তেমনি লুকিয়ে রেখো
এমনি আমায় প্রাণের বাঁধনে
সোনার খাঁচাতে রেখো

ওগো বন্ধু, কাছে থেকো, কাছে থেকো

জীবন হবে যে এতো সুন্দর
কখনো ভাবিনি আগে
এতো সুখ আর এতো আনন্দ
স্বপ্নের মতো লাগে

ওগো, যদি কোনোদিন জলছবি সম
মুছে যায় এই ছবি
আমি ঘুম ভেঙে দেখি স্বপ্নের মতো
হয়েছে বিফল সবই

সেদিন বন্ধু, আমার কথাটি রেখো
রাতের নিরলে আমার স্মৃতির
প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখো

ওগো বন্ধু, কাছে থেকো, কাছে থেকো

 

এ খাঁচা ভাঙ্গব আমি কেমন করে

সিঙ্গার: খান আতাউর রহমান
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: জীবন থেকে নেয়া (১৯৭০)
ডিরেক্টর: জহির রায়হান

এ খাঁচা ভাঙ্গব আমি কেমন করে?

দিকে দিকে বাজল যখন
শেকল ভাঙার গান

আমি তখন চোরের মত
হুজুর হুজুর করায় রত

চাচা আপন বাঁচা বলে
বাঁচিয়েছি প্রাণ

আসলে ভাই একা একা
বাঁচার নামে আছি মরে

এ খাঁচা ভাঙ্গব আমি কেমন করে?

 

এক নদী রক্ত পেরিয়ে

সিঙ্গার: শাহনাজ রহমতুল্লা
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: আবার তোরা মানুষ হ (১৯৭৩)
ডিরেক্টর: খান আতাউর রহমান

এক নদী রক্ত পেরিয়ে
বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা
তোমাদের এই ঋণ কোন দিন শোধ হবে না
না না না শোধ হবে না

মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সাত কোটি মানুষের
জীবনের সন্ধান আনলে যারা
সে দানের মহিমা কোন দিন ম্লান হবে না
না না না ম্লান হবে না

হয়তোবা ইতিহাসে তোমাদের নাম লেখা রবে না
বড় বড় লোকেদের ভীড়ে
জ্ঞানী আর গুণীদের আসরে
তোমাদের কথা কেউ কবে না

তবু হে বিজয়ী বীর মুক্তিসেনা
তোমাদের এই ঋণ কোন দিন শোধ হবে না
না না না শোধ হবে না

থাক ওরা পড়ে থাক ইতিহাস নিয়ে
জীবনের দীনতা হীনতা নিয়ে

তোমাদের কথা রবে সাধারণ মানুষের ভীড়ে
মাঠে মাঠে কিষাণের মুখে
ঘরে ঘরে কিষাণীর বুকে
স্মৃতি বেদনার আঁখি নীড়ে

তবু হে বিজয়ী বীর মুক্তিসেনা
তোমাদের এই ঋণ কোন দিন শোধ হবে না
না না না শোধ হবে না

 

দিন যায় কথা থাকে

সিঙ্গার: সুবীর নন্দী
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: দিন যায় কথা থাকে (১৯৭৯)
ডিরেক্টর: খান আতাউর রহমান

দিন যায় কথা থাকে
সে যে কথা দিয়ে রাখলো না
ভুলে যাবার আগে ভাবলো না

সে কথা লিখা আছে বুকে
দিন যায় কথা থাকে

সে কথা নয়নে আগুন আলপনা আঁকে
স্মৃতির পাপিয়া চোখ গেলো বলে ডাকে

সে জ্বালা যন্ত্রণা, কাউকে বলবো না
বলবো আছি কি যে সুখে
দিন যায় কথা থাকে

মন পাখি তুই থাকরে খাঁচায় বন্দি
আমি তো করেছি দুঃখের সঙ্গে সন্ধি

কি আছে পাওনা, কার কাছে দেনা
যাক সে হিসাব চুকে
দিন যায় কথা থাকে

সে যে কথা দিয়ে রাখলো না
ভুলে যাবার আগে ভাবলো না

সে কথা লেখা আছে বুকে
দিন যায় কথা থাকে


মন মাঝি তোর বৈঠা নে রে

সিঙ্গার: রুমানা ইসলাম
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: দিন যায় কথা থাকে (১৯৭৯)
ডিরেক্টর: খান আতাউর রহমান

মন মাঝি তোর বৈঠা নে রে
আমি আর বাইতে পারলাম না
সারা জনম উজান বাইলাম
ভাটির নাগাল পাইলাম না
আমি আর বাইতে পারলাম না

দুখের দেশে দুখের নদী
কাইন্দা বইয়া যায়
সুখের আশায় মন মাঝি তুই
কান্দোস হায় রে হায়

মন মাঝি তুই বেভুল যেমন
আমি কপাল-পোড়া তেমন
সুখ দুখের কিনার পাইলাম না
আমি আর বাইতে পারলাম না

মন মাঝি তোর বৈঠা নে রে
আমি আর বাইতে পারলাম না

 

মায়ের মতো আপন কেহ নাই

সিঙ্গার: রুমানা ইসলাম
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: দিন যায় কথা থাকে (১৯৭৯)
ডিরেক্টর: খান আতাউর রহমান

মায়ের মত আপন কেহ নাই রে
মায়ের মত আপন কেহ নাই
মা জননী নাই রে যাহার
ত্রিভুবনে তাহার কেহই নাই রে

এই দুনিয়ায় নয়ন মেলে
মাগো, তোমায় দেখেছি
তোমার বুকে হেসে খেলে
তোমার কথাই শিখেছি

তাই তো বলি, তোমার মত
মরমী কেউ নাই মাগো
তোমার মত আপন কেহ নাই রে
তোমার মত আপন কেহ নাই

আমি আঘাত পাইলে তোমার
চক্ষে নামে পানি
সেই পানিতে ধুয়ে মাগো
কোলেতে লও টানি।

তুমি যেদিন থাকবে না মা
সেদিন আমার হবে কি
সুখে থাকি দুঃখে থাকি
কাহার আসবে যাবে কি।

তাই তো বলি তোমার মত
দরদী কেউ নাই মাগো
তোমার মত আপন কেহ নাইরে
তোমার মত আপন কেহ নাই

 

হায়রে আমার মন মাতানো দেশ

সিঙ্গার: রুমানা ইসলাম
মিউজিক: খান আতাউর রহমান
সিনেমার নাম: ডানপিটে ছেলে (১৯৮০)
ডিরেক্টর: খান আতাউর রহমান

হায়রে আমার মন মাতানো দেশ
হায়রে আমার সোনা ফলা মাটি
রূপ দেখে তোর কেন আমার
নয়ন ভরে না
তোরে এত ভালোবাসি তবু
পরান ভরে না

যখন তোর ঐ গাঁয়ের ধারে
ঘুঘু-ডাকা নিঝুম কোন দুপুরে
হংস-মিথুন ভেসে বেড়ায়
শাপলা-ফোঁটা টলটলে ঐ পুকুরে

নয়নপাখি দিশা হারায়
প্রজাপ্রতির পাখায় পাখায়
তাদের কথা মনে ধরে না

রূপ দেখে তোর কেন আমার
নয়ন ভরে না
তোরে এত ভালোবাসি তবু
পরান ভরে না

হায়রে আমার মন মাতানো দেশ

যখন তোর অই আকাশ নীলে
পাল তুলে যায় সাত সাগরের পসরা
নদীর বুকে হাতছানি দেয়
লক্ষ ঢেউয়ে মানিক জ্বালা ইশারায়

হায়রে আমার বুকের মাঝে
হাজার তারের বীণা বাজে
অবাক চোখে পলক পড়ে না

রূপ দেখে তোর কেন আমার
নয়ন ভরে না
তোরে এত ভালোবাসি তবু
পরান ভরে না

হায়রে আমার মন মাতানো দেশ
হায়রে আমার সোনা ফলা মাটি

পাখি রে তুই দূরে থাকলে

সিঙ্গার: সুবীর নন্দী
মিউজিক: আমীর আলী
সিনেমার নাম: লাল গোলাপ (১৯৮৪)
ডিরেক্টর: সি বি জামান

পাখি রে, তুই খাঁচা ভেঙে আমার কাছে আয়
চোখের মণি চোখের কাছে না থাকলে
মনটা আমার আকুল হয়ে মরে যেতে চায়

পাখি রে, তুই দূরে থাকলে
কিছুই আমার ভালো লাগে না
পাখি রে, তুই দূরে থাকলে
কিছুই আমার ভালো লাগে না
পাখি রে তুই

পাখি রে, তুই কাছে থাকলে
গানের সুরে পরান দোলে
হৃদয় নাচে সুরের তালে

মনে মনে তোমায় ডাকি সারা বেলা
তা কি জানো না?
পাখি রে, তুই দূরে থাকলে
কিছুই আমার ভালো লাগে না
পাখি রে তুই

যদি কোনোদিন আমার পাখি
আমায় ফেলে উড়ে চলে যায়
এক একা রবো নিরালায়

পাখি রে, তুই কবে আমার আপন হবি
কিছুই জানি না

পাখি রে, তুই দূরে থাকলে
কিছুই আমার ভালো লাগে না

The following two tabs change content below.

বাছবিচার

এডিটর, বাছবিচার।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →