বিচারপতির স্কাইপি কনভারসেশন (২০১২): পার্ট ১ – ‘গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া, তারা একটা রায় চায়’
[মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক (নাসিম) বিচারের নানাদিক নিয়া আহমদ জিয়াউদ্দিন এবং রায়হান রশিদের সাথে স্কাইপিতে কথা বলেন। ২০১২ সালের আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে বিভিন্ন দিনে মোট ১৭ ঘণ্টার কথা-বলার রেকর্ড থিকা কিছু অংশ দা ইকনোমিস্ট ও আমার দেশ পত্রিকায় ছাপা হয়।
ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন হইতেছেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ল’ইয়ার এবং ‘সেন্টার ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড স্টাডিজ ইন বেলজিয়াম’-এর ল’ইয়ার এবং ‘সেন্টার ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড স্টাডিজ ইন বেলজিয়াম’-এর ডিরেক্টর। উনি ব্রাসেলস ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষকতাও করতেন। রায়হান রশিদ যুক্তরাজ্যে থাকেন। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম প্রায় নিয়মিতই সন্ধ্যার পর স্কাইপিতে আলোচনা করেন তাদের সঙ্গে। ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন এবং রায়হান রশিদের সঙ্গে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তাদের স্কাইপি আলোচনা থেকেও এটা স্পষ্ট।
বিচারপতি নিজমুল হক নাসিম প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্কাইপি আলোচনার বিষয়টি স্বীকার করে দা ইকোনমিস্টের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন ২০১২ সালের ৬ই ডিসেম্বর। আমার দেশ পত্রিকায় এই কনভারসেনের অংশ ছাপানো শুরু করে ২০১২ সালের ৯ই ডিসেম্বর; ১১ই ডিসেম্বর বিচারপতি নিজামুল হক পদত্যাগ করেন। ডিসেম্বর ১৩, ২০১২ তারিখে আদালতের আদেশে এই কনভারসেশন ছাপানো নিষিদ্ধ করা হইলেও ২৬শে ডিসেম্বর সেই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়, কিনতু আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন মিডিয়া-আউটলেটে এই কনভারসেশন ছাপানো হয় নাই, যেইটা ছিল বাংলাদেশের বিচারবিভাগরে মেনিপুলেট করার সবচে ক্রুশিয়াল একটা এভিডেন্স।
এইরকম একটা ঘটনারে বাকশালি-মিডিয়া নানানভাবে ওভার-লুক করে গেছে এবং এখন ‘ভুলে গেছে’ 🙂 যেইটা বাংলাদেশি নিউজ-মিডিয়ায় একটা ট্যাবু ঘটনা। এমনকি, এই বিচার-কাজ নিয়া ঘটা অন্যায় ও গাফিলতির ঘটনায় কোন ইনভেসটিগেশন, বিচার ও শাস্তির ঘটনাও ঘটে নাই।…
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় ছাপানো সেই ৫০ হাজার শব্দের ডকুমেন্টস থিকা সিলেক্টিভ কিছু অংশ এইখানে রাখতেছি আমরা।]
১৪ অক্টোবর ২০১২
নিজামুল হক নাসিম : হ্যালো…।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : কেমন আছেন, কেমন?
নাসিম : আছি ভালোই, আপনে কেমন আছেন?
জিয়াউদ্দিন : আছি ভালোই, আজকে আমরা তো একটু গণতন্ত্র চর্চা করে এলাম আর কি।
নাসিম : কী চর্চা…?
জিয়াউদ্দিন : গণতন্ত্রের চর্চা আর কি।
নাসিম : ও গণতন্ত্র!
জিয়াউদ্দিন : আজকে আমাদের এই লোকাল, স্থানীয় সরকার ও প্রাদেশিক সরকারের ইয়ে ছিল আরকি।
নাসিম : আচ্ছা…।
জিয়াউদ্দিন : ভোট ছিল।
নাসিম : ভোট ছিল, ভোট?
জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ, ভোট।
নাসিম : বা… বা… বা খুব ভালো।
জিয়াউদ্দিন: কিন্তু এগুলো তো হচ্ছে, পানসা ভোট আসলে।
নাসিম : এ্যা…
জিয়াউদ্দিন : এগুলো পানসা-টানসা টাইপের ভোট আরকি।
নাসিম : তা তো বটে, ভোট হয় বাংলাদেশে। ওইসব ভোটে কোনো আরাম আছে—কেনো আরাম নাই।
জিয়াউদ্দিন : মানুষ যাচ্ছে ভোটিং সেন্টারে যার যার। একটা, দুইটা, তিনটা কইরা মানুষ যাইতেছে, চাইরটা কইরা যাইতেছে, আস্তে কইরা গাড়ি থেকে নাইমা চইলা গেল। আবার আস্তে… কোনো মানুষ নাই, কেউ রিসিভ করতেছে না, কেউ জিন্দাবাদ নাই… কোনো কিছু নাই।
নাসিম : ভালো…।
জিয়াউদ্দিন : এইবারে আরেকটু নতুন জিনিস করেছে আরকি। এর আগের বারে ইলেকট্রোনিক ভোটিংই ছিল, কিন্তু এইবার টাচ্ ইলেকট্রোনিক ভোটিংয়ের আরেকটা, সেফটি মেজার এইবার ইনট্রিডিউস করছে আরকি। তাতে হচ্ছে যে, এটা আরও সিকিউরড হইছে যে, আপনার ভোটটা ওরা আইডেনটিফাই করতে পারবে।
নাসিম : ও জাগায় তো ভোট দেয়া কম্পালসারি, না?
জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ কম্পালসারি দেইখাইতে যাইতে হয়, না হইলে তো মানুষ বোধহয় যাইতও না। এইবার একটু বেশি মনে হচ্ছে আমার কাছে, স্থানীয় নির্বাচনে একটু ইন্টারেস্ট থাকে মানুষের। কারণ এটা এই, এই লোকাল গভর্নমেন্টের তো, এখানে রাস্তাঘাটের প্ল্যানিং-ট্যানিং থেকে শুরু করে সার্ভিস-টার্ভিস সবই তো লোকাল গভর্নমেন্ট প্রভাইড করে। সেই জন্য একটা ইন্টারেস্ট আছে আর কি। বাট এ্যাঁ, এটা হচ্ছে যে, বাসায় বাসায় চিঠি পাঠাচ্ছে যে, চিঠি দিয়ে যাচ্ছে দুই-চারটা কেনডিডেট দেখি, দু-একটা পার্টির কেনডিডেট আসছেও আর কি। মানে চিঠি দিতে আসছে আর কি। সব কেনডিডেটই আসে আর কি। নিজে আইসা বাসায় বাসায় চিঠি দিয়া যায় আর কি। কিন্তু এতটুকুই আর কি, এর বেশি কিছু না। দুই-একজন বইলা গেছে, আমরা কিন্তু তোমার প্রতিবেশী।
নাসিম : হে, এ্যাঁ…।
জিয়াউদ্দিন : তা ঠিক আছে। আপনার আজকের দিন কেমন ছিল? আমি তো দেখলাম কয়েকটা নিউজ আজকে।
নাসিম : ভালোই, আর খবর-টবর কী?
জিয়াউদ্দিন : এ্যাঁ…, খবর তো আমরা কালকে নিজেরা কথা বলছি। সো… একটা চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে এগুলোর। আপনার সাথে কালকে যেটা কথা হইছে। কাল মালুম ভাইর সাথে কথা হয় নাই। কাজেই… আজকে ওই গোলাম আযমেরটা কতদূর আগাইছে?
নাসিম : গোলাম আযম ফার্স্ট হাফ হইছে। সেকেন্ড হাফে আবার সাঈদী ধরছিলাম। আগাচ্ছে আর কি। সাঈদীর তো ওই ডকুমেন্ট জমা হচ্ছে। ১৩ নম্বর সাক্ষী এখনও চলতেছে, চলবে…।
জিয়াউদ্দিন: উনাদের কারো সঙ্গে কালকে কথা হয় নাই অবশ্য। কালকে বোধহয় ছুটির দিন ছিল দেইখ্যা উনারা ব্যস্ত ছিলেন বোধহয়, এইজন্য স্কাইপি আসতে পারে নাই।
নাসিম : আইজকে তো… আচ্ছা দেখা যাক, সাঈদী এবং গোলাম আযম কেসই তো আগাচ্ছি।
জিয়াউদ্দিন: হ্যাঁ, ওই যে দুই নাম্বারের চক্করটা। এটা বুঝার জন্য আলোচনা কালকে রাত্রে হওয়ার কথা ছিল। আমি ধারণা করছিলাম হয়তোবা আজকে হবে। দেখা যাক, আমি মনে করি এইটা যে, দুই-তিনটা স্ট্র্যাটিজি হতে হবে। একটা হচ্ছে যে, একটা অলরেডি মেসেজ দেওয়া হইছে আর কি…। আইনমন্ত্রীকে দেয়া হইছে। মানে দেওয়ার কথা আজকে মেসেজ পৌঁছানোর কথা আছে।
নাসিম : মেসেজ দেলে কি কাজ হইবে…, মেসেজে?
জিয়াউদ্দিন : তা জানি না। কিন্তু এটা তো দিতে হবে। একদিক থেকে শুরু করতে হবে আরকি। এটা উনাকে মেসেজটা দেওয়া হচ্ছে যে একটা, ইয়েটা-ডিসিশনটা হবে দুই বছরে। মানে এটা একটা কাইন্ড অব পলিসি ডিসিশনের পার্ট হিসাবে হবে। যে, কোনো কেসটা আগে যাচ্ছে? অ্যাটলিস্ট প্রথম কেসটা। সেকেন্ড হচ্ছে যে, না হলে এটা একদম উপরে যেতে হবে। কারণ এখানে গুড রিজন আছে। যে, সবচেয়ে বেশি যার দায়বদ্ধতা—বেশি, যেটা সবচেয়ে বেশি সিগনিফিকেন্ট পলিটিক্যালি অ্যান্ড আদারওয়াইজ, সেগুলো তো আগে অ্যাড্রেস করতে হবে। বিশেষ করে রেসপনসিবিলিটির দিক থেকে। এটার রিয়েল এরিয়াতেও সিগনিফিকেন্ট এবং পলিটিক্যাল কনটেক্সটেও সিগনিফিকেন্ট। যে বড়গুলারে বাদ দিয়া ছোটগুলারে আগে নিয়া আসার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। এটা প্রথম থাইকা এই সমস্যাটা ছিল। কিন্তু এখন এইটা যে পর্যায়ে আসছে, এটাকে ওভারকাম করা যেতে পারে, যদি মন্ত্রীর একটা সিদ্ধান্ত হয়। এখন পর্যন্ত ১২টা সাক্ষী এই সেন্সে বাকি আছে। আর ওইখানে যে কেসটা নিয়ে কথা হচ্ছে, একজাক্টলি সেই কেসটা কী অবস্থায় আছে, সেটা আমি জানি না। কয়টা সাক্ষী ডি ডব্লিউ চলতেছে… ডিডব্লিউই তো চলতেছে ওদের ওইখানে, তাই না?
নাসিম : না, ডি ডব্লিউ শুরু হয় নাই।
জিয়াউদ্দিন : ওই কেইসে ডিডব্লিও শুরু হয় নাই এখনও?
নাসিম : না।
জিয়াউদ্দিন : আচ্ছা, তার মানে তারা অনেক বেশি… না কাছাকাছিই তো এগিয়ে আছে বলা যেতে পারে। নাকি না?
নাসিম : হ্যা.. হ্যা… হ্যা…।
জিয়াউদ্দিন : ওইটার ডি ডব্লিউ শুরু হইতে… ওইটার ব্যপারে আপনার কি কোনো ধারণা আছে? ঠিক আছে…। আজকে আমি জিজ্ঞাসা করব।
নাসিম : না… না… আমার ধারণা নাই।
জিয়াউদ্দিন : ওইটার প্রসিকিউটিং ল’ইয়ার কে?
নাসিম : তা-ও আমি জানি না।
জিয়াউদ্দিন : এইগুলাই জিজ্ঞাসা করে নিব আজকে, যদি কথা হয়। আর আমাদের আরেকটা লিস্টও করতে হবে। আসলে কে কে হেল্প করতেছে, কে প্রসিকিউটার, মানে লিড প্রসিকিউটার, এই আর কি। কাদের মোল্লার মামলাটা… এটা বোধহয় তারেক।
নাসিম : না, তারেক না। তারেক দেখে কামারুজ্জামান। সে মামলা ঢিল দেছে…।
জিয়াউদ্দিন : আচ্ছা, তার মানে, এটা অন্য কেউ দেখে তাহলে। এটা একটা সিনক্রোনাইজ একটা ডিসিশনটা হতে হবে, এই জিনিসটা বুঝাতে হবে যদি…।
নাসিম : শোনেন, আমি একটা জিনিস মনে করি। যেডা আমার ব্যক্তিগত মতামত যে, সম্ভব হইলে গোলাম আযম ফার্স্ট, সাঈদী সেকেন্ড, কাদের মোল্লা থার্ড। আর যদি তা প্রবলেম হয়, তাইলে সাঈদী ফার্স্ট, গোলাম আযম সেকেন্ড, কাদের মোল্লা থার্ডই থাক। কেননা সাঈদীর কেসটা ডিফারেন্ট। এই সাঈদীর কেসটার লগে আইনের সম্পর্ক খুব বেশি না। এডা আমাদের দেশি দরবারের মতোই। গোলাম আযম হইলো সেটেলমেন্ট অব ল’ হয়ে যাবে এবং…
জিয়াউদ্দিন : রাইট।
নাসিম : এই গোলাম আযম হইলো টিম লিডার। সাঈদী সাইড ট্র্যাক। সাঈদীর লগে আপনার লিডার-টিডারশিপের কোনো প্রশ্ন আসতেছে না। গোলম আযমের রায়ের পরে আপনার নিজামী, মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান—সবগুলা রায় হইতে পারে, এর পরে। কিন্তু গোলাম আযম ফাস্টে। ওই গ্রুপের থেকে একমাত্র সাঈদী, সাকা এরা বায়রায় (বাইরে)। সাকারে তো আমি থামাইয়াই দিছি। সাঈদীরে থামাচ্ছি না। কারণ, সাঈদী প্রায় শেষ। এইটা যদি উনাদেরকে বইল্লা… এইডা ওনাদেরকে (ট্রাইব্যুনাল-২) হায়ার লেভেল থেইকা বইল্লা, থামায়া দিতে হবে যে, আপনি কাদের মোল্লারে ঢিল দেন। ঢিল দিয়া বাকিগুলারে সামনে আগান। কেননা, ওই যে অ্যাবসেন্ট যে আছে, ওর নাম জানি কী…? ও বাচ্চু, হ্যারে দিয়া শুরু করেন। আরেকজনরে নিয়া আগান সামনে। এরপর আপনার, পর পর ৩-৪টা রায় দিয়া দেন, অসুবিধা নাই কোনো। বাট আফটার গোলাম আযম। নট বিফোর দ্যাট।
জিয়াউদ্দিন : এইখানে আরেকটা ব্যাপার আছে, এটা আপনি যেটা বললেন, সেটা ঠিক। আবার লিগ্যাল অ্যাঙ্গেল থেকেও এটা ঠিকই যে, সাঈদীরটা লিডারশিপে বা অফ ল’ ইনভলবমেন্ট নাই। কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, বাইরের ওয়ার্ল্ডে অর্থাৎ আউটসাইড দ্য কোর্ট রুম…।
নাসিম : তারা চাইবে গোলাম আযমের রায়।
জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ, এটা হচ্ছে ইম্পরটেন্ট। সেই অডিয়েন্সটা আছে। আর সেকেন্ড হচ্ছে খুবই ইম্পরটেন্চ. । যদি, সাঈদী যদি প্রথম হইয়া যায়, তাইলে এইটা কিন্তু হিস্টোরিক। মানে ইট উইল নট হিস্টোরিক অ্যানিথিং। মানুষের প্রত্যাশাটা থাকবে হচ্ছে এ্যাঁ এ্যাঁ……।
নাসিম : গোলাম আযমের দিকে।
জিয়াউদ্দিন : সকল দিক বিবেচনা করে বড়টার রায়…।
নাসিম : হ্যাঁ… শিওর।
জিয়াউদ্দিন : কাজেই সেইটাকে ওইভাবেই টিউন করে নিতে হবে। এখন হয়তোবা পরের দিন জাজমেন্ট দিলেন বা এক সপ্তাহ পরে জাজমেন্ট দিলেন, কোনো অসুবিধা নাই। মানে ডিসিশন এরা পরে দেক, কোনো অসুবিধা নাই। কিন্তু পরে হতে হবে।
নাসিম : এডা আমি একমত আপনার লগে। এরা চাপে কেবল… গোলাম আযম শেষ করতে গেলে…। কেননা গোলাম আযম এখনও আইও চলতেছে, তারপর ডিফেন্স উইটনেস হবে। তারপরও এইডা আপনার জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির আগে হবে না। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি লাগবে শেষ করতে। এই পর্যন্ত গভর্নমেন্ট ওয়েট করবে না। গভর্নমেন্ট রায়ের জন্য পাগল হইয়া গেছে। সাঈদীরডা হলে আমি ডিসেম্বরে রায় দেতে পারব। গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া। তারা একটা রায় চায়।
জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ…, না মানে.., কিন্তু আরেকটা, তাদের সাথে তো কোনো কথা হইতেছে না। সাঈদীরটা আগে রায়ের মধ্যে সিগনিফিকেন্সটা কী? তারা তো শুধু একচোখা হিসাবেই আগাইতেছে, বা তারা পেনিকড হইতেছে। এখানে পেনিক তো হওয়ার কিছু নাই।
…
নাসিম : সাঈদী তো প্রায় শেষ। ঈদের আগে তাদের সাক্ষী শেষ হয়া যাবে আশা করতেছি।
জিয়াউদ্দিন : ঈদের আগে কি তার সাক্ষী, ডি ডব্লিউ শেষ হয়া যাবে?
নাসিম: হ্যাঁ শেষ হয়া যাবে। আর গোলাম আযমের কেইসে তারা দুই সপ্তাহ সময় চাইছে, সাক্ষীর নাম দেওয়ার জন্য। সেইডা আমি রিজেক্ট কইরা বলছি, কালকে পাঁচটা দিবেন, পরশু সাতটা দিবেন, এইডা লাস্ট চান্স। বললাম আমি। কিন্তু, তারা দেল না, তাইলে কী করবেন আপনে। আমি যদি স্টপ কইরা দেই, তাইলেও তো হইচই হবে যে, সাক্ষীর নামই জমা দিতে দেয় নাই। টাইম চাইছে টাইম দিতা…। তখন গভর্নমেন্ট কইবে, তুমি টাইম দেতা, খমাহা (খামোখা) তাদেরকে আরেকটা পয়েন্ট, তাগো পক্ষে যোগ করাইলা…
জিয়াউদ্দিন : কিন্তু এরা তো আসলে কাউন্টার-এনকাউন্টার।
নাসিম : তাই তো।
জিয়াউদ্দিন : এজন্যই তো প্রবলেমটা। যে, আইসিটি যে যতগুলা কাজ করছে…।
নাসিম : এ গভর্নমেন্টই তো তহন আমারে কইবে, তুমি টাইম দিতা। তুমি একদিন সময় তাগো দেতা, দিয়া রাখতা হেগো কোর্টে।
জিয়াউদ্দিন : ঠিক আছে। দেখেন আপনি ওইভাবে। দেখা যাক এই… এইটা কতদূর আগানো যায়।
নাসিম : আমার প্ল্যান হইলো, ল’ সেটেল হইবে গোলাম আযমের কেইসে, এইডা ঠিক। সাঈদীর কেইসে কোনো ল’ সেটল হইবে না। নরমাল একটা জাজমেন্ট দিয়া, নরমাল না সেডা ভালো জাজমেন্ট ইনশাল্লাহ হবে। তবুও যা হয় হবে, সেডা ভিন্ন কথা।
জিয়াউদ্দিন : ফার্স্ট কেস তো…! ফার্স্ট কেইসের একটা সিগনিফিকেন্ট আছে। এবং ফার্স্ট কেইসের জাজমেন্টটা একটা ফরম্যাটের মধ্যে আসবে।
নাসিম : সে তো বটেই।
জিয়াউদ্দিন :এবং পরবর্তীগুলাও ‘মোর অর লেস’ ওই একই ফরম্যাটের উপরে হবে। ভিন্ন ভিন্ন জিনিস হবে। কিন্তু, ফরম্যাটিংটা ঠিকই থাকবে। আর এইটাকে ছোট কেস হিসাবে দেখার কোনো স্কোপই নাই, যেহেতু এইটা আইসিটির কেস। আইসিটির প্রত্যেকটা কেসই সিগনিফিকেন্ট। আর এইটা এইভাবেই দিতে হবে। কারণ এটা ন্যাশনালি এবং ইন্টারন্যাশনালি স্ক্রুটিনাইজ হবে।
নাসিম : আর আমি এমন টেকনিক শুরু করছি যে, আমি সাকার কেস রাখি না, টাইম দিয়া দেই। আপনার নিজামী রাখি না। যদি সাঈদীরে বাধা দেতে চায় তাইলে গোলাম আযম চলবে। গোলাম আযমরে বাধা দিলে, সাঈদী চলবে। যার ফলে ওরা…
জিয়াউদ্দিন : না… না… ঠিকই আছে। এটাই আপনার ফার্স্ট ট্র্যাকে থাকতে হবে। ডান-বাম সব চালাইয়া যেতে হবে।
নাসিম :আমি তো সুযোগ দিচ্ছি তাদের। তারা বলে যে, এইডা অ্যাডজর্নমেন্ট দেন ওইডা শুরু করেন। এই সুযোগই দিচ্ছি না আমি, এ দুইডার মধ্যে একটা আরম্ভ করতে হইবে। কেস করতে হইবে তোমার, কোনডা করবা কও। যেডা করবা, যেডার সাক্ষী আছে হেইডাই নিব। বল, কোনডা করবা। হা… হা….হা ….(হাসি)
জিয়াউদ্দিন : হা… হা… হি… হি…(হাসি)
নাসিম : আইদার সাঈদী অর গোলাম আযম—এই দুইডার কোনো অ্যাডজর্নমেন্ট হবে না, এডাও বলে দিছি।
জিয়াউদ্দিন : ভেরি গুড।
নাসিম : আমি আজকে এডাও বলছি, যেদিন ক্রস আইওর শেষ হবে, সঙ্গে সঙ্গে ডিফেন্স উইটনেস শুরু হয়ে যাবে। এটা বলে দিলাম আপনাদের। বি রেডি ফর দ্যাট। উইদাউট অ্যানি গ্যাপ, উইদাউট অ্যানি অ্যাডজর্নমেন্ট, ইমিডিয়েটলি আফটার অ্যান্ড অফকর্স একজামিনেশন অব আইও, দ্য ডিফেন্স উইটনেস উইল বি স্টার্টেড। ওরা খুশি মনে নেয় নাই, কিন্তু শোনতে হইছে ওদেরকে।
জিয়াউদ্দিন : না… না… এর মধ্যে তো কোনো অন্যায় নাই।
নাসিম : সোজা হিসাব।
জিয়াউদ্দিন : এইটা তো আগে থাইকা জানিয়ে দেওয়াই উচিত। ইটস নট দ্যাট যে, আপনি হঠাৎ কইরা বললেন যে, এখনই তোমারে সাক্ষী দিতে হইবে আরকি। সো.. দে আর গেটিং এনাফ ওয়ার্নিং বিফোর হ্যান্ড। এইটা ভালো আর কি। এই যে কথাগুলা না, মিডিয়াতে আসতেছে না। এগুলা আবার অন্য কোনো থার্ড কোনো অপশন নাই তো। কারণ গভর্নমেন্ট আইসিটির কোনো একটা, মানে কিছুই তো করল না, ইভেন আইসিটির নিজের একটা মিডিয়া উইংও করল না ট্রাইব্যুনালে এই গভর্নমেন্ট। তারা আসলে একটা প্রো-অ্যাক্টিভলি, এটার পক্ষে ক্যাম্পেইনটা করতে পারে বা জানাতে পারে। যে, দেখ-কীভাবে এ ঘটনাটা কিন্তু এইভাবে ঘটে নাই। আজকে যদি বন্ধ করে, এটার পিছনে অনেকগুলি কারণ আছে। এত কিছু এইভাবে এইভাবে বলা হইছে…।
নাসিম : ওই, একমাত্র উঠলে ওডে ডেইলি স্টারে। উঠতে পারে কালকে। এইসব ল্যাঙ্গুয়েজ ডেইলি স্টারে দিয়ে দেয়।
জিয়াউদ্দিন : এইটা ভেরি ইম্পরর্টেন্ট যে, এই কথাগুলা আসা, যে এটা কোনো আনফেয়ার প্রসেস না। এটা টার্গেটেড প্রসেস না এবং তাদের যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যদি কোনো অ্যাডভার্স ডিসিশন নেওয়া হচ্ছে এটা বিকজ অব দেম। হ্যাঁ, ঠিক আছে এটা ভালো হইছে।
নাসিম : আপনি তো ইনশাআল্লাহ ২২ তারিখ নামতেছেন, না ?
জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ, আমি ২২ তারিখে।
…
জিয়াউদ্দিন : সাঈদীর জাজমেন্টের একটা রাফ স্কেচ তৈরি করা হইছে। স্ট্রাকচারটা কী হতে পারে হয়তোবা কাল আমি স্ট্রাকচারটা আপনাকে পাঠাব। জাস্ট টু দেখার জন্য। এটাকে আমরা রিয়েলি, এই স্ট্রাকাচরটা এমনভাবে করছি আমরা, তাতে খুব বেশি কষ্ট হবে না আপনার। আমাদের কিন্তু এমন করতে হবে, যেটা আমাদের দেশের কিছু টুকু থাকে। কিন্তু, এইটার স্ট্যান্ডার্ডটা, মানে অন্যরা যেন এইটা ফিল করে। আমাদের মেইন টার্গেট যদিও ডিসিশনের ক্ষেত্রে, মেইন টার্গেট হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ। কিন্তু, এটার যে ক্রিটিক্যাল অ্যাঙ্গেলে যেটা দেখবে, সেটা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ওইভাবে দেখবে না। তো, এই জাজমেন্টটা কীভাবে ওয়ার্ডেড হচ্ছে, কীভাবে স্ট্রাকচার্ড হইছে, কীভাবে ফ্রেইম হইছে…।
নাসিম : হ্যাঁ সেটা তো বটেই।
জিয়াউদ্দিন : এই জিসিগুলো কিন্তু আমাদের লোকগুলা বেশি দেখবে না। আমাদের লোকেরা দেখবে, সে আপনার কনক্লিউশনটা কী হইছে এবং বড় বড় ফ্যাক্ট কী হইছে। কিন্তু যারা এই জিনিসটা ক্রিটিক্যালি দেখবে এবং রেফার করবে এবং পরবর্তীকালে এটাকে আন্ডারমাইন্ড করার চেষ্টা করতে পারে এবং সেইটা না করার জন্য এইটাকে ফরম্যাটের দিক থেকে…, এইটাকে ওই স্ট্যান্ডার্ডে নিয়ে আসতে হবে আমাদেরকে।
নাসিম : হ্যাঁ…।
জিয়াউদ্দিন : কাজেই স্ট্রাকচারটা, যদি স্ট্রাকচার রাইট, তাহলে আমরা মনে করি যে, বাকিগুলাও পারা যাবে। যেমন এই যে আমি বলতেছিলাম, আমি ইটালিয়ান যে অরগানাইজেশনের মিট করলাম এবং কথা বললাম, তারা আসলে অ্যাপ্রিশিয়েট করছে আমাদের এই অর্ডারটা। মানে রিক্যুজালের অর্ডারটা। কিন্তু তারপরেও তাদের ফিলিংসটা হচ্ছে যে, এখানে জাজকে মনে হইছে একটু হার্শ আরকি। কিন্তু, এইটা যে একটা ওয়েলড্রাফটেড, ওয়েলরিটেন, ওয়েল একটা কিছু, এইটা তারা অ্যপ্রিশিয়েট করছে। তারা ইক্যুয়ালি অ্যাপ্রিশিয়েট করছে মালুম ভাইয়ের ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের জন্য আমাদের করা প্রেজেনটেশনটা। যে কারণে তারা মালুম ভাইরে আনতে চাচ্ছে। আমি বললাম যে, উনাকে না নিয়ে এসে অন্য কাউকে আনতে হবে। সো…, সেই আলোচনা এখনও চলতেছে। ওরা হইলো ওইটা দেখে আগে আর কি…।
নাসিম : হ্যাঁ।
জিয়াউদ্দিন : ওরা দেখে, যে টেক্সটটা তৈরি হইছে, সেইটা ঠিক ওয়েদার ইট লুকস রাইট। ওইখানে আমাদের লুকস রাইটও দিতে হবে। আবার যেহেতু ইনকেইস প্রথম কেসটা যদি সাঈদীরই হয়, বা যে কোনো কেস হউক না কেন, এ দুটার, ডাজ নট মেটার। আমার মনে হচ্ছে যে, এইটা একটা অপরচুনিটি যে, আপনার কিছু রেফারেন্স দিতে হবে যে, এই প্রসেসটার শুরুটা কীভাবে হইছে।
নাসিম : সে তো বটেই।
জিয়াউদ্দিন: এবং কী কী প্রবলেমের ভিতর দিয়া গেছে আর কি।
নাসিম : হ্যাঁ।
জিয়াউদ্দিন : মানে ওই সেন্সে ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল। আউট সাইড যে, প্রবলেমগুলা বা লার্নিং প্রসেসটা কী ছিল। সো, ইট্স কাইন্ড অব ফার্স্ট কেইসেই এইটা থাকবে আর কি। আর বাকিগুলায় আর ওইভাবে থাকবে না।
নাসিম : হ্যাঁ… সেইডাই, সেইডাই।
জিয়াউদ্দিন :কিন্তু ফার্স্ট কেইসে এইডা দিতে হবে যে, এইটা কোথা থেকে আমরা শুরু করলাম। অ্যান্ড দ্যান আমরা কীভাবে শেইপ করেছি, রুলস অব প্রসিডিউর আমরা কী করলাম, কেন করলাম। মানে এই সামারি হলো এইটা। এটা হচ্ছে যে, আপনার ইতিহাসটা তুলে ধরা এবং আপনাদের কথা বলাটা। কেননা ট্রাইব্যুনাল তো কখনও সুযোগ পায় না কথা বলার। সো… জাজমেন্ট ইজ দ্যা অনলি ওয়ে অর অর্ডার ইজ দ্য অনলি ওয়ে যে, ট্রাইব্যুনাল স্পিকস। সো… এইটাকে একটা সুন্দর স্ট্রাকচারের ভিতরে এনে স্ট্রাকচারটা টানলে জাজমেন্ট লিখাটা হয়ে যাবে। এইটা করতে পারলে… আর এইটা করাটাই আমাদের মেইন উদ্দেশ্য।
নাসিম : হ্যাঁ, সেইডাই, সেইডাই।
জিয়াউদ্দিন : সো দ্যাট, এইটা আমরা সেল করতে পারব ইজিলি। ওদের যে চিন্তা-ভাবনা, আর ওরা যে জাজমেন্টগুলো পড়ে, দেখা যাবে কি একেবারে ওই জাজমেন্টের সাথে অলমোস্ট খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে। এবং ওরাও দেখবে ঠিকই আমরা একই স্ট্রাকচার ফলো করছি। আমরা যে বাংলাদেশের ট্র্যাডিশনাল ওয়েটা ফলো করি, সেই হিসাবে এটা নেওয়া যাবে না। কারণ, এই কেসটা সেই কেসগুলা না এবং এই কেসগুলাকে ইভেন কি ছোট কেস, সাঈদীর কেসটা আনুপাতিক হারে লেস লিগ্যালি কমপ্লিকেটেড, কিন্তু সেটা হচ্ছে লিগ্যাল আলোচনাটা কম হবে সেখানে ওই সেন্সে। কিন্তু তারপরও তো ডিগ্রি অব লিগ্যাল আলোচনা থাকতেই হবে। কারণ এখানে কিন্তু, ওই ইস্যুগুলা সেটেল হয়ে যাবে।
কারণ, এটা যদি ক্রাইম এগেইনেস্ট হিউম্যানিটি হয়, যেটাই হয়, সেটাই করতে হবে। কাজেই এইটা আমি বোধহয় আজকে… আমি কালকে রাত্রে স্ট্রাকচারের কাজ করছি একটু, এখনও এটা কমপ্লিট না। আমি এটা যেভাবে আগানোর চেষ্টা করতেছি সেটা হচ্ছে যে, আমি কয়েকটা চার্জ ফ্রেম… লিডিং চার্জ ফ্রেমগুলা দেখব আবার নতুন করে দেখব। যে, তারা কীভাবে এটাকে স্ট্রাকচারটা করছে আর কি। কীভাবে গুছাইছে জিনিসটা এবং কীভাবে শুরুর দিকে কী কী দিচ্ছে তারা। প্রত্যেকটা কেস ডিফরেন্ট ফ্রম আদার ওয়ান।
আমি দেখছি স্ট্রাকচারের শুরুতে তারা কীভাবে দিচ্ছে, মাঝখানে কী দিচ্ছে, শেষের দিকে কী দিচ্ছে এবং এইগুলা আমাদের সিচুয়েশনটাতে আমরা কীভাবে এটাকে করতে পারি। সেই হিসাব করে প্রবাবলি কালকের ভিতরে একটা জাজমেন্ট স্ট্রাকচার পাঠিয়ে দেব। একটা রাফ স্কেচ পাঠায় দিব ফর আপনার ইনফরমেশন। আপনি দেখেন যে, এইভাবে করলে আপনার পোশায় কি না। তারপরেও এর ভিতরে, বডিতে কী দেওয়া হবে, না হবে, কতটুকু লেখা হবে এবং কত ডিপে যাওয়া হবে, কত এক্সপ্রেসে যাওয়া হবে, কত এনালিটিক্যাল হবে—সেগুলো হচ্ছে পরে আনব….।
নাসিম : হুম… (গম্ভীর)
জিয়াউদ্দিন : এইটা হচ্ছে রাফলি স্পিকিং হেডলাইন এবং সাবহেডিংগুলো কী হবে এবং কোনো কোনো ইস্যুগুলা কাভার করা যেতে পারে। এরপরে তো আরও ডেফিনেটলি, মানে কাজ যখন করবেন তখন দেখা গেল কি, আরও অনেক রকম ইস্যু আসবে, যেটা আপনার মনে পরে যাবে তখন আমাকে আবার জানাবেন। আমি ওইখানে কিছু স্ট্যাটিসটিকস দেওয়ার চিন্তা করতেছি। যেমন কতগুলা অর্ডার হইছে, কতগুলা রিভিউ পিটিশন গেছে, জাস্ট এ রকম। কারণ এইটা তো আপনার শেষ কথা, এরপর তো আর কথা থাকতেছে না ট্রাইব্যুনালের।
নাসিম : হ্যাঁ…।
জিয়াউদ্দিন : কাজেই, আপনাকে আরেকটা জিনিস মনে রাখতে হবে। এই জাজমেন্টের ক্ষেত্রে যে, প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে এইটা কিন্তু আপনার কথা টু অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালস, মানে অ্যাপিলেট অথরিটি। এই জাজমেন্টটা পড়লে অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে যে প্রশ্ন আসতে পারে সেইটারও উত্তর কিন্তু এই ট্রাইব্যুনালে থাকতে হচ্ছে। অর্থাত্ এই যে যেসব ইস্যুগুলো আসছে, সেই ইস্যুগুলো যেগুলো চ্যালেঞ্জ করা হইছে, এ নাম্বার অব মেজর চ্যালেঞ্জেস, সেগুলার উপরে ছোট ছোট আলোচনা করে, এই যে কেন এইগুলাকে ডিল করা হইছে আর কি। ডিটেইল আলোচনা কিন্তু রিলেভেন্ট অর্ডারে আছে। এইটা পড়লেই যেন বোঝা যায় এবং অ্যাপিলেট জাজেসরা যেন অ্যাটলিস্ট এই জাজমেন্টটা যদি পড়ে, তাহলে যেন বুঝে যে, আসলে এই ট্রাইব্যুনাল চিন্তা কী করছিল। প্রত্যোকটা অর্ডারের পিছনে ট্রাইব্যুনালের কী চিন্তা ছিল এবং কী র্যাশনাল বা কী যুক্তি ট্রাইব্যুনাল ব্যবহার করেছে এবং সেইটা কতটুকু লজিক্যাল। মানে এইটা এই অর্ডারের ভিতরে, মানে এইটা এই জাজমেন্টে বলে দেব যে, হাউ লজিক্যাল র্যাশনাল রিকয়্যার্স— আমরা কী কী বিবেচনায় এইটা নিয়েছি এবং কেন নিয়েছি। প্রথম যেটা হবে সেটা পলিটিক্যালি সিগনিফিকেন্টও হচ্ছে, কিন্তু লিগ্যালি সিগনিফিকেন্টের দিক থেকে যেটাই হোক না কেন, এইটার ট্রিমেন্ডাস সিগনিফিকেন্ট আছে আসলে ফার্স্ট কেস হিসাবে। বাট, এইটা একটু সময় লাগবে। এখানে আমাদের মেজর কনসার্নটা হচ্ছে, সরকার যে চাপ দিতাছে এইটা আমরা… রিয়েলি আপনারা উনাদের সাথে বিভিন্নভাবে আমাদেরকে যোগাযোগ করতে হবে। এবং বলে দিতে হবে। বিকজ দিস ইজ সাম থিং… এইভাবে হাত-পা টাইট করে দেওয়াটা ঠিক না। কারণ যেটা চিন্তা করা হচ্ছে এবং এইটাই যদি করতে হয়, এইটা কিন্তু আপনিও তো ফিল করতেছেন এবং বলতেছেন যে, জাজমেন্টটা কিন্তু ৫০০ পাতার জিনিস হবে। তাইলে এইটা আপনি সাত দিনের ভিতরে নামায় দিবেন কেমন কইরা?
নাসিম : প্রশ্নই ওডে না।
জিয়াউদ্দিন : এটা কোনো কথা হইলো! এই সমস্ত ডকুমেন্ট কমপেয়ার করে, সমস্ত ডকুমেন্ট দেখে শুনে এইটা তো আর চাট্টিখানি কথা না। এইটা হইলো ট্রাইব্যুনালের ব্যাপার। এটা হচ্ছে ফার্স্ট জাজমেন্টের ব্যাপার। এটা জাজমেন্টের ব্যাপার, এইটা তো অ্যাপিলে যাবে। উনাদের কনসিডারেশনের সাথে এইটা আমাদেরকে কোনো অবস্থাতেই উনাদের টাইম ফ্রেমের সাথে এইটা হবে না। মানে এইটার অর্থ এই নয় যে, এইটাকে দেরি করা হবে। এই জন্য কাজটা এখন থেকেই শুরু কইরা দেয়া হচ্ছে। একটা স্ট্রাকচার যদি আমরা কইরা ফেলতে পারি, তাইলে আমি মনে করি যে, বাকিগুলা সবগুলাকেই ওই ওই …।
নাসিম : হ্যাঁ, সে তো বটেই। আগানো যাইবে তাইলে অনেকখানি।
জিয়াউদ্দিন : এদিক-সেদিক, এদিক-সেদিক কইরা ফিটিং করানো যাইবে। আরেকটা কেইসে দেখা গেল যে কি, আরো কিছু দিতে হচ্ছে বা কিছু কমায়ে দিতে হইতাছে, সেগুলা আমরা তখন ইজিলি করতে পারব। এটা আমরা অলমোস্ট চার্জের যেভাবে ইয়ে করছিলাম না.. টেমপ্লেট যে রকম করছিলাম চার্জের ক্ষেত্রে…।
নাসিম : হ্যাঁ… হ্যাঁ… হ্যাঁ…।
জিয়াউদ্দিন : ঠিক ওই চার্জের ক্ষেত্রে টেমপ্লেট যেভাবে করছি, জাজমেন্টের ক্ষেত্রেও মোটামুটি একই টেমপ্লেট। ওই একই রকম একটা কিছু আগে তৈরি করছি। ওইটা আমি ইফেক্টিভলি কাজ করছি। আর সরকারের ওই চাপটা আমাদেরকে সহ্য করতেই হবে। কীভাবে করব দ্যাট উই ডোন্ট নো। বাট, এইটা তাদেরকে বোঝাইতে হবে ওইভাবে এইটা চাপচাপি না করা। এইটা ইয়ে না। প্রডাক্ট না যে, জাস্ট আপনে কইলেন আর মেশিন না যে, বাইর হয়া গেল। আর এইগুলা উনাদের বুঝার মতোও অবস্থা নাই। তারপরও বুঝাইতে হবে, তারপরও উনাদের সাথেই তো কথা বলতে হবে। আমরা যতই মানে রায়হান আমাকে এবার জোরে-শোরে বলছে, আপনি আইনমন্ত্রীর সাথে মানে ইয়ে করে আসবেন। লাভ হউক, আর না হউক, কিন্তু আমরা তো আসলে… কাজ করার নাই তো কেউ আর। যতরকম আমার এভিনিউ আছে, অন্যান্য যত এভিনিউ আছে, ইনক্লুডিং এক নাম্বার পর্যন্ত পৌঁছানোর এভিনিউ—এইসব এভিনিউ ব্যবহার করতে হবে এবং বুঝাইতে হবে আসলে যে রিয়েলিটিটা কী। শুধুমাত্র উইক এন্ডে আইসা, কনফারেন্সে গিয়া বা সেমিনারে গিয়া একটা বইলা দিল, ওইটা হবে না।
আর এইটা আপনাদের জন্য রিয়েলি কষ্টের, আপনাদের কোনো হ্যান্ড তো নাই, যে এই কাজগুলা করবে। আপনাদের হ্যান্ড নাই, ঠ্যাং নাই, কিচ্ছু নাই। তো কী কইরা কী হবে। তাদেরকে আপনারা বইলা দিবেন যে, এই জাজমেন্ট যেভাবে হইতেছে, যা হইছে, অন্ততপক্ষে ৫০০-৭০০ পাতার কইরা এক একটা জাজমেন্ট হবে।
নাসিম : হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই, মিনিমাম ৫০০ পৃষ্ঠার হবে।
জিয়াউদ্দিন : দেন হাউ ডু ইউ এক্সপেক্ট ইট যে, এটা ওভারনাইট কইরা ফেলা হবে? আপনি যদি আমারে অর্ডারটা দিতেন, আমি অর্ডার পোরশনটা কইরা দিয়া, আমি পরে জাজমেন্টটা লেইখা দিতাম, শান্তিমতো কইরা। ওইটা বোধহয় শাহিনুর সাহেবদের সাথে আলোচনা কইরা এইটা করছে। এই যে আইনের এই পরিবর্তনটা, সময় কমিয়ে দেয়ার পরিবর্তনটা। কারণ উনারা গিয়া বলছে হয়তো যে, আমরা কইরা দিবোনে কোনো অসুবিধা নাই। আমরা একসাথে সবই দিতে পারব, যখন অর্ডার দিব তখন জাজমেন্টটা দিয়া দিব হাতে। কিছু একটা হইছে মানে এইটা তো আপনাদের কাছ থেকে আসে নাই।
নাসিম : না।
জিয়াউদ্দিন : এইটা একমাত্র সাসপেক্ট। আমার সন্দেহ হচ্ছে, এইটা শাহীনুরদের ওইখান থাইকা আসছে। দেখি, রায়হানকে দেখি, পাই কি না এখন। ঠিক আছে তা হলে…
নাসিম : আচ্ছা।
জিয়াউদ্দিন : আমি আপনাকে কালকে স্ট্রাকচারটা পাঠাব। ওকে ঠিক আছে।
নাসিম : আচ্ছা, রাখি খোদা হাফেজ।
বাছবিচার
Latest posts by বাছবিচার (see all)
- বিচারপতির স্কাইপি কনভারসেশন (২০১২): পার্ট ১ – ‘গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া, তারা একটা রায় চায়’ - ডিসেম্বর 9, 2024
- আমি – জহির রায়হান (১৯৬৭) - অক্টোবর 31, 2024
- (বই থিকা) ঈশ্বর কোটির রঙ্গকৌতুক – কমলকুমার মজুমদার - অক্টোবর 12, 2024