Main menu

পলিটিকাল ডাইরি ২০২৪ (চাইর)

This entry is part 5 of 4 in the series পলিটিকাল ডাইরি

অগাস্ট ১০, ২০২৪

১.
গতকালকে আমি একজনরে বলতেছিলাম, মুহাম্মদ ইউনুসের গভর্মেন্টের কনট্রোল নিতে আরো দুয়েক-এক সপ্তাহ লাগবে; যার সাথে কথা বলতেছিলাম সে অবাক হইতেছিল, তার মানে এখনো রিস্ক আছে! আমি বললাম, হাঁ, যতক্ষন না পর্যন্ত এডিমনস্ট্রেশনের কনট্রোল নেয়া যাইতেছে, ততক্ষন তো আছেই, কিনতু ইউনুস পারবেন!

তো, বলতে না বলতেই সকালে বাকশালের পাপেট প্রধান বিচারপতি ঝামেলা করা শুরু করছে। তো, এইগুলা আরো হবে। আওমি-বাকশালি ও বাম-বাটপারগুলা আরো ঝামেলা বাঁধানোর ট্রাই করবে।

এদের সাথে আসলে মানুশের মতো বিহেভ করা যাবে না, যেইসব বাকশালিগুলা এখনো পাওয়ারের নানান জায়গাতে আছে তাদেরকে লাত্থাইয়া, টাইনা নামাইতে হবে! পদত্যাগ ভালো-মানুশদের জন্য, এরা এইটা ডিজার্ভ করে না।

দুই.
বাংলাদেশের পলিটিকাল ইসটাকচার ও পলিটিকাল ভ্যাকুয়াম নিয়া কয়েকটা কথা শুনতে পারেন এইখানে:

তিন.
গনহত্যাকারী দল আওমি-লিগরে ফিরায়া আনার ট্রাই’টা কালচারাল ফ্রন্টের লোকজনই শুরু করবে বইলা মনে হয়…

রেব-পুলিশের লোকজনই বাংলাদেশের মানুশ খুন করে নাই, পলিটিকাল দল হিসাবে ছাত্রলিগ, যুবলিগ এবং আওমি-লিগের লোকজন এই গনহত্যায় অংশ নিছে; সংগঠন হিসাবে এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে পলিটিকাল এক্টিভিটির রাইটস দেয়ার মানে হবে গনহত্যার শহিদদের সাথে বেইমানি করা…

ডেমোক্রেটিক হওয়াটা এবং নাজি-পার্টির মতো দলরে রাজনিতি করতে দেয়াটা একই ঘটনা না – এইটা কন্সিডার করতে পারাটা দরকার আমাদের

চাইর.
ডেমোক্রেসির নামে নাজি-পার্টিরে (পড়েন, আওমি-লিগরে) পলিটিকস করতে দিতে পারেন না আপনি, অইটা ডেমোক্রেসি না, বরং যারা ডেমোক্রেটিক রাজনীতি করতে চায় তাদেরকে বিপদের মুখে ঠেইলা দেয়ার ঘটনা

আওমি-লিগ কোনভাবেই নাজি-পার্টির চাইতে আলাদা কিছু না, আওমি-ফ্যাসিস্ট আমলে কোন পলিটিকাল পার্টিরে মিছিল-মিটিং করতে দেয়া হয় নাই, টিভি-পত্রিকায় অন্য কোন দলের খবর প্রচার করা যায় নাই; আর সবচে জরুরি ঘটনা হইতেছে শেখ হাসিনা যদি ফ্যাসিস্ট হয়া থাকে সেইটা আওমি-ফ্যাসিজমের কারনেই সেইটা পসিবল হইছে, অথচ তাদেরকে লিগালি বিচার করা নিয়া কোন কথা নাই, বরং তাদের এনেবলার মাঠে-ময়দানে নামা শুরু করছে আবার…

বাংলাদেশি ফ্যাসিজম বাকশালি-ব্যবস্থা বাতিল করতে হইলে যেই দল এই অবস্থা তৈরি করছিল তাদের বিচার করতে হবে আগে, অথচ তাদেরকেই পলিটিকালি পুর্নবাসন চেষ্টা করা হইতেছে এখন বাংলাদেশে, দ্যাটস আ ভেরি বিগ রেড সাইন!

পাঁচ.
সমালোচনা করা যাবে-না না, কিনতু যখন আপনি ২বছরের বাচ্চারে বলেন কেন সে ২শ মিটার দৌড়ে গোল্ড-মেডেল জিততে পারে না, সেইটা সমালোচনা না, বরং মিন করে যে, আপনি কনটেকসট’টারে আমলে নিতে রাজি না

এবং এমন একটা টেকনিক যেইটা বাম-বাটপারদের খুব ফেভারিট; উনারা খালি পারফেক্ট একটা সিচুয়েশন প্রেডিক্ট কইরাই কথা বলেন না, বরং কনটেক্সটের ক্রুশিয়াল এলিমেন্টগুলা হাইড কইরা এমন রিয়ালিটি’রে প্রজেক্ট করেন যে, অইটা অই বাচ্চাটারই দোষ! মানে, যা নিয়া সমালোচনা করা হইতেছে সেইটা তেমন কোন ঘটনাই না, রিয়েল কনটেক্সট’টারে হাইড করাটাই হইতেছে ঘটনা।

উদাহারন হিসাবে, ‘সাম্প্রদায়িকতা’ বা ‘হিন্দু ঘর-বাড়িতে হামলার’ ঘটনাটারে নেন; এইখানে যা করা হইছে এবং করা হইতেছে, সেইটা হইতেছে কনটেক্সট’টারে ব্লার কইরা দেয়া হইছে; কারা করছে, কেন করছে, কিভাবে করতেছে, কয়জন ধরা পড়ছে, কি একশন নেয়া হইতেছে… – অই প্রশ্নগুলারে সামনে আনা হইতেছে না, এমনকি কতটুক ঘটতেছে সেইটারও কোন তথ্য কোথাও এভেইলেবল করা হইতেছে না; আর এইটা ঘটতেছে এমন একটা সময়ে যখন দেশে কোন থানা-পুলিশ নাই, কারন এই বাহিনির লোকজন সরাসরি গনহত্যার সাথে জড়িত ছিল…

মানে, কনটেক্সট’টারে জাস্ট নাই কইরা দেয়ার ঘটনা’টা এইখানে ঘটতেছে; এইটা অবশ্যই কোন এক্সকিউজ না, কিনতু ‘সাম্প্রদায়িকতার’ ট্রাম্প -কার্ড যে পতনের আগ থিকাই খেলা হইতেছে সেইটারে কনসিডারেশনের বাইরে রাইখা তো পুরা ইস্যুটারে ডিল করা যাইতে পারে না!

আমি বলতে চাইতেছি, এই যে কনটেক্সট’টারে ব্লার কইরা দিয়া ‘সমালোচনা’ হাজির করার টেনডেন্সি এইটা বাকশালি-সময়ের কথা-ই আমাদেরকে মনে করায়া দেয় অনেকটা…

 

অগাস্ট ১১, ২০২৪

এক.
সত্যের ইশারা সব জায়গাতেই থাকে, অনেকে অনেক জায়গায় তারে দেখতে পায়; তো, আমার এইরকম একটা জায়গা হইতেছে মারিয়া পুজো’র গডফাদার; অইটা মোটামুটি একটা পলিটিকাল ম্যানুয়াল।

৭-৮ বছর আগে বলছিলাম (আমিও আছি এই দলে :)) যে, গডফাদারে লুকা ব্রাসির মতো বিশাল দেহের একজনরে খুব কাছ থিকা গলায় তার পেচায়া মারা হয়; দূর থিকা গুলি কইরা না… মানে, যেইটা তার স্ট্রেংথের জায়গা, সেইখানেই কোপ’টা মারতে হয়; আওমি-লিগের প্রাইড ছিল পিপলের সংগঠন বইলা, এই কারনে পিপল আপ-রাইজিং ভিতর দিয়াই তার পতন সম্ভব হইছে

তো, এইরকম আরেকটা ঘটনা হইতেছে, ভিটো কর্লিয়নি যখন মাইকেল কর্লিয়নি’র কাছে ক্ষমতা হ্যান্ড-ওভার করে তখন বলে যে, তোমার কাছে সন্ধি’র পরস্তাব নিয়া আসবে বুঝবা সে-ই হইতেছে মেইন traitor; এইরকম-ভাবে যেই গ্রুপটা আওমি-বাকশালিদের পুর্নবাসনের, ‘গনতান্ত্রিক অধিকারের’ 🙂 দাবিটা তুলবে, অরা-ই হইতেছে ট্রেটর-গ্রুপ হবে এইখানে

দুই.
বাংলাদেশের এই স্বাধিনতা এই অঞ্চলের অন্য মজলুম জনতারেও জাগায়া তুলবে; ইনডিয়ার ডর’টা অই জায়গাটাতেই মেইনলি, যেই কারনে এট এনি কস্ট সাবোটাজ করতে চাইতেছে…

মনিপুরে যেই স্টেইট-লিড অপ্রেশন চালানো হইছে, জম্মু-কাশ্মিরে যা করা হইছে, সেই জুলুমের জবাব রাষ্ট্র হিসাবে ইনডিয়ারে তো দিতে হবে, টুডে অর টুমরো

একক রাষ্ট্রের দম্ভ খুব দ্রুতই শেষ হয়া আসবে বইলা আমার ধারনা; বড় বড় সাম্রাজ্য টিকে নাই এই কারনে না যে, কোন রাজা কোন ভুল করছিল, বরং সেইখানে বড় বড় মিলিটারি পাওয়াররে বসায়া খাওয়াইতে গেলে কমন-পিপলরে শোষন না কইরা, নির্যাতন না কইরা টিইকা থাকার কোন কারন নাই! একক রাষ্ট্র বা পাওয়ারফুল স্টেইট তার নাগরিকদের অধিকার ক্ষুন্ন না কইরা টিইকা থাকতে পারে না, যার ফলে স্বাধিন কনফেডারেশনাল স্টেইট হিসাবে আলাদা এবং ইন্ট্রিগ্রেটেট এনটিটি হওয়ার দিকেই আমাদেরকে যাইতে হবে মেবি…

তিন.
নিউজ-মিডিয়ার দালালদের বিচার করাটা কেন জরুরি?

গোয়েবলস কি কোন মানুশ খুন করছিলেন? 🙂 উনি তো খালি মিছা-কথা কইতেন, কোন মানুশ তো খুন করেন নাই! তারপরেও লিস্টে তার নাম সেকেন্ড পজিশনে কেন আসে?

বাংলাদেশের ঘটনাও একইরকমেরই; হাসিনা ও আওমি-লিগের পরে (হিটলার ও নাজি-পার্টির মতো) নিউজ-মিডিয়ার লোকগুলা হইতেছে গোয়েবলসের রোল’টা প্লে করছে…

তো, কাক বইলা কাকের মাংস খাওয়া যাবে না – এইরকম হইলে কোন সেক্টররেই বাকশালি-পিপলদের হাত থিকা মুক্ত করতে পারবেন না আপনি; ডাক্তার’রা বলবে ডাক্তারদেরকে কিছু করা যাবে না, টিচার’রা বলবে টিচারদেরকে কিছু করা যাবে না, পুলিশ বলবে পুলিশকে কিছু করা যাবে না! কিনতু বিচার তো করা লাগবে!

একটা ফ্যাসিস্ট সিসটেম, একটা বাকশালি বেবস্থা তো আপনা-আপনি এতোদিন টিইকা ছিল না, যারা এইটারে টিকায়া রাখছিল তাদের বিচার না হইলে অই বেবস্থার বেনিফিশিয়ারি যারা ছিল তাদেরকেই বাহাবা দেয়া হবে! পুলিশের এসপি’রাও তো খুন করে নাই, খুনের অর্ডার দিছে শুধু!

সাংবাদিকরা তো কেউ খুন করে নাই খালি বলছে যে, কোন খুন করা হয় নাই, সবকিছু ঠিকঠাক 🙂 এই মিছা-কথাগুলার কোন কনট্রিবিউশন নাই গনহত্যায়?

যেই লোকগুলাই কয়দিন আগে একটা একদলিয় বাকশালি সিসটেম টিকায়া রাখার জন্য কাজ করছে, তারা হঠাৎ কইরা ডেমোক্রেটিক হয়া উঠবে কি কারনে? ইভেন কেউ কি মাফ চাইছে এখনো, বা বলছে যে, ভুল করছিল? এইটা উনারা বলবেন কখনো এইটাও খুব আন-লাইকলি, কারন উনারা যেইটা করছেন, বিশ্বাস করেন বইলাই করছেন; ফ্যাসিস্টরা ভুল কইরা ফ্যাসিস্ট হয় নাই, বাকশালিরা ভুল কইরা বাকশালি হয় না, দে বিলিভ ইন ইট…

আর যারা ফেসিস্ট তাদেরকে দিয়া ডেমোক্রেটিক সমাজ যে আমরা যে তৈরি করতে পারবো না এই বুঝ’টা যত দেরিতে আসবে আমাদের ততটাই দেরি হবে, অই পথে হাঁটা’টা শুরু করতে…

চাইর.
ছাত্র-রাজনীতি নিয়া

ক্যাম্পাসগুলাতে পলিটিকাল দলের লেজুড়বৃত্তি বন্ধ করতে হইলে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে সবচে আগে 🙂 আর এইটা ফান কইরা বলা না, বরং স্টুডেন্ট পলিটিকসের গোড়ার জায়গাটারে খেয়াল না করলে এইটারে ফানি ঘটনা মনে হইতে পারে…

মানে, দেখেন, প্লেইন সাইটে উনারা তো কোন সন্ত্রাস দুর্নীতি করেন না, এমনকি কোন মুভমেন্টও করেন না, মাঝে-মধ্যে একটু হারমোনিয়াম বাজাইতেন, এখন কালচার-টালচার করেন একটু; পলিটিকসও করেন না তেমন একটা, তারপরেও উনাদেরই পয়লা ব্যান করার জন্য কেন বলতেছি আমি?

এক নাম্বার কথা হইতেছে, উনারাই অই ডিল্যুশনটা তৈরি করেন এবং টিকায়া রাখেন যে, ইসটুডেন্ট-পলিটিকস এবং নেশনাল-পলিটিকস একই ঘটনা! যারা পলিটিকাল দলের লেজুড়বৃত্তি বাদ দিতে চান উনারাও এই ফান্দে পাড়া দেন, জায়গা দুইটা কোন জায়গায় এবং কিভাবে আলাদা, সেইটা রিকগনাইজ না কইরা; মানে, একদল বলেন, ছাত্র-রাজনীতি চাই না আর এর এগেনেস্টে (ছাত্রদল বা ছাত্রলিগ না, বরং) ছাত্র ইউনিয়নই স্ট্রংগলি বলে এবং বলতে পারে যে, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা চলবে না! অই মোরাল গ্রাউন্ডটা উনাদের আছে যে, এইটা বলতে পারেন উনারা, এবং মোস্ট ইম্পর্টেন্টলি ছাত্র-রাজনীতি এবং পলিটিকাল দলের লেজুড়বৃত্তি যে একই ঘটনা – সেইটারে আর ডিসটিংগুইশ করতে দেন না, আলাদা করতে দেন না… এই রোল’টা রিকগনাইজ করতে পারাটা জরুরি; যে, উনারা হইতেছে সাইলেন্ট এনেবলার, অপ্রেশনের…

সেকেন্ড হইতেছে, উনারা খালি সিপিবি লেজুড় না, বরং ছাত্রলিগের কালচারাল উইং হিসাবে প্রো-ইনডিয়ান বয়ানের সৈনিক; দুই-চাইরজন ‘চে গুয়েভারা’ দিয়া তাদের অরগানাইজেশনাল মোটিভ’টারে জাস্টিফাই করা যাবে না আসলে; অনেকেই এই অরগানাইজেশনাল মোটিভ’টারে অস্বীকার কইরা বাইর হয়া আসছেন অনেক ভালোবাসা 🙂 এবং তিক্ত-মধূর মেমোরি নিয়া; কিনতু যেই কালচারাল এজেন্ডার সবক নিয়া আসছেন, সেইটারে খুব কমই উতরাইতে পারছেন… মানে, আমি বলতে চাইতেছি ছাত্র-রাজনীতি নিয়া পলিটিকাল ডিল্যুশন এবং কালচারালি প্রো-ইনডিয়ান নেরেটিভরে ‘সমুন্নত’ রাখা – এইটা দুইটা জিনিস ছাত্র ইউনিয়নের কোর ফেনোমেনা

তো, এইটারে কেমনে একাউন্টার করা লাগবে?

পয়লা কথা হইতেছে, ঘটনাটা কোনভাবেই – “ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধ” করা না, বরং “পলিটিকাল দলের লেজুড় হিসাবে কোন ইসটুডেন্ট অরগানাইজেশন” না থাকা, দুইটা কোনভাবেই একই ঘটনা না!

পারসন হিসাবে যে কেউ যে কোন পলিটিকাল দল করতে পারবে, কিনতু ক্যাম্পাসে পলিটিকাল দলের মেম্বার হিসাবে কোন এক্টিভিটি চালাইতে পারবে না; এবং একই সাথে ক্যাম্পাসেও ছাত্র-সংগঠন থাকবে, কিনতু তারা কোনভাবেই কোন পলিটিকাল দলের লগে এফিলিয়েটেট থাকবে না! এই দুইটা জিনিস যে আলাদা এইটা এস্টাবলিশ করা লাগবে। খালি কথা দিয়া না, এক্টিভিটির দিয়া এইটা করা লাগবে।

নতুন ছাত্র-সংগঠন হবে ক্যাম্পাস-ভিত্তিক, এবং আলাদা আলাদা; ঢাবি’র লগে জাবি’র বা চবি’র দল এক হবে না। (এইটা ক্রূশিয়াল, কারন তা নাইলে লেজুড়বৃত্তি জিনিসটা ফিরা আসবে অন্য একটা ফরম্যাটে।) নন-পার্টিজান হবে, কিনতু নন-পলিটিকাল না! ক্যাম্পাসের ইস্যুগুলা নিয়া উনারা কাজ করবেন একটা পলিটিকাল অ্যাওয়ারনেসের জায়গা থিকা। এইরকম কতগুলা জায়গা থিকা অপারেট করবে তারা…

এইটা আরো ভালোভাবে ভিজিবল হবে যখন ঢাকসু, চাকসু, জাকসু ইলেকশন এই ফরম্যাটে করা যাবে… আর বেটার হয় যদি নেকস্ট নেশনাল ইলেকশনের আগেই এই ইলেকশনগুলা করা যায়…


অগাস্ট ১২, ২০২৪

এক.
জুলাই গনহত্যার আলাপ মোটামুটি নাই হয়ে গেছে ফেইসবুকের নিউজফিড থিকা, নিউজ-মিডিয়াগুলাতেও কখনো আসেই নাই

মানে, ফেইসবুক তো দৈনিক পত্রিকার মতোই বা আরো বেশি, লাইভ নিউজের মতো, ঘন্টায় ঘন্টায় ইস্যু পাল্টায়; কিনতু বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচে বড় গনহত্যার দুই-এক সপ্তাহ পরেই এই নিয়া কথা-বার্তা গায়েব হয়া যাওয়াটা খুব একটা নরমাল জিনিস বইলা মনে হইতেছে না আর কি…

এটলিস্ট গনহত্যার বিচার শুরুর আগ পর্যন্ত একটা প্রাইমারি ফোকাসের জায়গা হয়া থাকার কথা এই জিনিসটা…

কয়েকটা সংগঠনের মিইলা-মিইশা এই কাজটা করা উচিত, ইনটেরিম গভর্মেন্টেরও গনহত্যার রিপোর্ট তৈরি করার জন্য একটা কমিটি থাকা উচিত, যারা লিগালি কাজগুলারে আগায়া নিবেন; মানে, কোনভাবেই এইটা তো ভুইলা যাওয়ার মতো কোন ঘটনা না!

দুই.
বাংলাদেশের ২০২৪-এর জুলাই-অগাস্টের ঘটনা কি বিপ্লব নাকি গন-অভ্যুত্থান?

১.
এইটা নিয়া তো কয়েকজনই কথা বলছেন, বলতেছেন, তবে তর্কটা আমি আসলে এখনই করতে চাই নাই; কারন ঘটনাগুলা এখনো ঘটতেছে বইলাই আমি মনে করি, যার ফলে এর পুরাপুরি বিশ্লেষন করার চাইতে ঘটনাগুলারে কিভাবে ঘটতে দেয়া যায় সেইটার দিকে ফোকাস দেয়াটারেই আমার ইনটেলেকচুয়াল একটিভিটি’র কাজ বইলা মনে করতেছি

তারপরেও দুই-একজন আমারে জিগাইছেন বা জানতে চাইছেন, এইজন্য বলতেছি

২.
এই জুলাই-অগাস্ট মাসে যা ঘটছে বাংলাদেশে সেইটা কি বিপ্লব নাকি গন-অভ্যুত্থান – এই নিয়া বেশ কিছু আলাপ তো হইছে আসলে; তো, সেইখানে আমার পজিশন হইতেছে যে, এইটা একটা গন-অভ্যুত্থান

বিপ্লব সংঘটিত হয় সার্টেন একটা রূপরেখা নিয়া, একটা প্রজেকশনের জায়গা থিকা যে এইটা এইটা আমরা করবো; সেকেন্ডলি একটা বিপ্লবী ফোর্স রাষ্ট্র-ক্ষমতাটারে পুরাপুরি দখল করেন… এইরকম কিছু জিনিস থাকে

বাংলাদেশে বাকশালি ফেসিজমের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা সবাই ফাইট করছে যে, এই জুলুমের শাসন আমরা চাই না; কিনতু কি চাই – (অনেকে চাইছেন এবং আমিও – ডেমোক্রেসি, কিনতু) সেইটার কোন স্পষ্ট রূপরেখা নিয়া সেইটা ঘটে নাই; এবং ইম্পর্টেন্টলি অনেকগুলা ফোর্স একসাথে হইছে এইখানে, যদি ভারসিটির ইসটুডেনটদের সাথে স্কুল-কলেজ-মাদরাসার ছাত্ররা যোগ না দিত, পলিটিকাল পার্টিগুলা না থাকতো, এমনকি শেষে মিলিটারি যদি স্ট্যান্ড না নিতো, এই গন-অভ্যুত্থান সফল হইতো না… তো, বিপ্লব বলাটা আরো নানান জায়গা থিকাই ভুল একটা বেপার

তবে এই গন-অভ্যুত্থান আমাদের সামনে অনেক সুযোগ এনে দিছে, অনেক চেইঞ্জই আমরা ইনিশিয়েট করতে পারি, কিনতু সেইটারে জোর কইরা যারা বিপ্লব বানাইতে চাইতেছেন তারা গন-অভ্যুত্থানে জড়িত ফোর্সগুলার মধ্যে একটা ডিফরেন্স তৈরি কাজটাই করতেছেন বইলা আমি মনে করি, যতটা না একটা থিওরেটিকাল বেইজ ক্রিয়েট করার কাজ উনারা করতেছেন

৩.
গন অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি হিসাবে আমি মনে করি, বাংলাদেশি ফেসিজম বাকশালরে রাষ্ট্র-ক্ষমতা থিকা নামানোটাই একমাত্র কাজ না, বরং এই বাকশালি বেবস্থাটারে বাতিল করতে পারাটা আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত, যেইটার সাথে মোটামুটি সবাই একমত…

কিনতু যারা এতোদিন এই বেবস্থাটারে টিকায়া রাখছে তাদেরকে ক্ষমতার জায়গাগুলাতে (মিলিটারিতে, পুলিশে, আদালতে, প্রশাসনে, মিডিয়াতে, কালচারাল জায়গাগুলাতে…) রাইখা এইটা করাটা পসিবল না, কারন বাকশাল একটা পলিটিকাল ঘটনাই ছিল না, ইকনোমিকালি ও কালচারালিও অপারেট করতো এইটা… অই জায়গাগুলারে ভাঙ্গতে না পারলে এইটা সবসময় নতুন একটা ফরম্যাটে ফিরা আসতে থাকবে, আবার…


অগাস্ট ১৩, ২০২৪

এক.
আগামি ৩টা ইলেকশনে আওমি লিগ অংশ নিতে পারবে না – মিনিমাম এই শাস্তিটা তো তাদের পাওনা, পলিটিকাল দল হিসাবে

২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪-এ যেই তিনটা ইলেকশন আওমি লিগ করছে, সেই ক্রাইমগুলার কোন শাস্তি হবে না? যদি ইকুয়াল পানিশমেন্টও দেন, তাদের তো আগামি ৩টা ইলেকশনে পার্টিসিপেট করার মোরাল রাইটস নাই…

বাদবাকি গুম, খুন, নির্যাতনের হিসাব তো আছেই; ব্যক্তি হিসাবে কারো এই ক্রাইমগুলা করা পসিবল ছিল না, যদি না দল হিসাবে আওমি লিগ তাদের দলের লোকজনদেরকে এই শেল্টার দিত

দুই.
FUCK the aesthetics of the FASCISTS!

কর্পোরেট স্পন্সরড ছাত্র ইউনিয়নের সুশিল দেয়াল-লিখনগুলা গন-অভ্যুত্থানের নিশানাগুলারেই খালি মুইছা দেয় নাই গন-অভ্যুত্থানের স্পিরিট’টারেও নাই করে দিছে

যেইরকম রোড সেইফটি মুভমেন্টের সময়ের “পুলিশ চুদি না” ছবিগুলা নানান অনলাইন স্পেইসগুলা দিয়া সরায়া দেয়া হইছে, ‘অশ্লিলতার’ অভিযোগে; একইরকমভাবে ‘সুন্দর’ হয় নাই বইলা এস্থেটিকগিরি চুদানো হইতেছে

দুইটারই গোড়া একটা – বাম-বাটপারদের বাকশালি এস্থেটিক, এইগুলারে চুইদা দিতে হবে

তিন.
সাখওয়াত সাহেবের ঘটনার implication হইতেছে যে, পি.আলো. ও ডি.স্টার বুদ্ধিজীবী এবং তাদের বুদ্ধিজীবীতা যারা প্রমোট করে, তাদের থিকা সাবধান থাকেন!

এরা হইতেছে বাংলাদেশে প্রো-ইনডিয়ান নেরেটিভ’টার মেইন স্টেক-হোল্ডার ও প্রমোটার; সাখওয়াত সাহেব অই এস্টাবলিশমেন্টেরই একটা প্রডাকশন…

যারা গনতন্ত্রের স্বার্থে আওমি লিগরে ফিরায়া নিয়া আসতে চায় না, বরং বাকশালি রিজিমের ক্রাইমগুলার সাথে আতাঁতের জায়গাগুলারে মেবি গোপন করতে চায়

গনতন্ত্র চাইলে নতুন দল তৈরি হইতে দিতে হবে, পুরান ক্রিমিনাল দলরে ফিরায়া নিয়া আসাটা কোন অপশনই হইতে পারে না

চাইর.
সাখওয়াত সাহেবের ঘটনার implication হইতেছে যে, পি.আলো. ও ডি.স্টার বুদ্ধিজীবী এবং তাদের বুদ্ধিজীবীতা যারা প্রমোট করে, তাদের থিকা সাবধান থাকেন!

এরা হইতেছে বাংলাদেশে প্রো-ইনডিয়ান নেরেটিভ’টার মেইন স্টেক-হোল্ডার ও প্রমোটার; সাখওয়াত সাহেব অই এস্টাবলিশমেন্টেরই একটা প্রডাকশন…

যারা গনতন্ত্রের স্বার্থে আওমি লিগরে ফিরায়া নিয়া আসতে চায় না, বরং বাকশালি রিজিমের ক্রাইমগুলার সাথে আতাঁতের জায়গাগুলারে মেবি গোপন করতে চায়

গনতন্ত্র চাইলে নতুন দল তৈরি হইতে দিতে হবে, পুরান ক্রিমিনাল দলরে ফিরায়া নিয়া আসাটা কোন অপশনই হইতে পারে না

পাঁচ.
ছাত্ররা কি করতে চায় সেইটা ছাত্রদেরকে ডিসাইড করতে দেন। হিন্দুরা কি চায় সেইটা হিন্দুদেরকে ডিসাইড করতে দেন। সবাই যেন তাদের চাওয়া-পাওয়ার কথা ডর-ভয় ছাড়া বলতে পারে সেইটা এনশিওর করাটা হইতেছে আমাদের সবার কাজ, যেন সবাই তাদের নিজেদের কথাটা বলতে পারে…

উপর থিকা ডিসিশান চাপায়া দেয়া হইলে সেইটা হবে ভুল একটা কাজ। বাইরে থিকা অনেকেই সাজেশন মেইক করতে পারেন, কিনতু গার্মেন্টসের ছরমিকেরা কি চান – এইটা তাদেরকে বলতে দিতে হবে!

আমাদের যেহেতু কথা বলার সুযোগ ছিল না, এই কারনে কথা বলতে গেলে অনেকের অনেক অস্বস্তি হবে, ভুল হবে, কনফ্লিক্টিং আলাপ হবে… কিনতু অইগুলা কাটায়া উঠা যাবে; কিনতু যদি আমরা যার কথা তারে বলতে না দেই, তাইলে কিছুই হবে না

এই কথা-বলার ইসপেইসটা আমাদেরকে তৈরি করতে হবে, ডায়ালগ যাতে পসিবল হয়া উঠতে পারে সেই জায়গাগুলারে ভাইব্রেন্ট রাখতে হবে… তা নাইলে ডেমোক্রেটিক হওয়ার দিকে আমরা আগায়া যাইতে পারবো না

(তারপরে দেখেন, আপনারা যা ভালো মনে করেন 😛)

ছয়.

বাকশালি-প্রেমের কবিতা

এইরকম একটা কথা আগেও চালু ছিল, কিনতু গনহত্যাকারি শেখ হাসিনার ইনডিয়ায় পালায়া যাওয়ার ভিতর দিয়া ফ্যাসিস্ট নয়া বাকশালি শাসনের একটা শেষ হওয়ার পরে এই কথা আবার নতুন কইরা উঠছে যে, বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিকরা কই? “এতোদিন কোথায় ছিলেন?” বাক বাকুম পায়রার মতন এই তসবি গোনা শুরু হইছে আবার…

তো, অনেক কবি অনেক কিছু লেখছেন – এইটা প্রমান করার দায়িত্ব আমি নেই নাই, কারন এই আফসোস-লিগের এক্সপেক্টশনটা অনেকটা এইরকম যে, ইজরাইলি পত্রিকায় ফিলিস্তিনের কবিরা কবিতা লেখেন নাই কেন! মানে, যেই এস্টাবলিশমেন্ট বাকশালি অবৈধ শাসনের একটা পিলার ছিল, সেইখানে বাকশাল-বিরোধি কবিতা দেখা যায় নাই কেন! আমার ধারনা, এখন যেহেতু অই অবৈধ শাসনের শেষ হইছে, এর বাম্পার ফলন আমরা দেখতে পাবো এখন, বাতাবি লেবুর মতন


অগাস্ট ১৪, ২০২৪

এক.
বাকশালে, ফেসিবাদে কোন টেনশন থাকে না – কোন আওয়াজ থাকে না; সবসময় একটা ‘জরুরি অবস্থা’ জারি থাকে, যেইখানে কোন পিপল ভয়েস যাতে শোনা না যায়; একটা কৃত্রিম, কবরের নিরবতা ধইরা রাখাটা হইতেছে ফ্যাসিবাদের একটা ফিচার

পরে যেইটা ‘আজাইরা হাউকাউ’ দিয়া ফিল-আপ করা হইতো; মানে, বেহুদা তর্কগুলা হাজির করা, আজাইরা আলাপ দিয়া অকুপাই কইরা রাখা… এইগুলা হয়া উঠছিল ঘটনা, যাতে কইরা ফেসিবাদি নিরবতাটারে আমরা ভালোবাসতে পারি, পছন্দ করতে পারি, আরো বেশি কইরা…

কিনতু ডেমোক্রেসিতে ঘটনা’টা এইরকম না, সবসময় টেনশন থাকবে একটা লেভেলে, কারন পিপল কথা বলবে – এইটা হইতেছে কোর ফিচার ডেমোক্রেসির, আমাদের শ্বাস নেয়ার আওয়াজ’টা শোনা যাইতে হবে (যদিও মিডিয়া আউটলেট’গুলা অই আওয়াজগুলারে ভচকায়া দিতে চাইবে; রিয়েল ডিবেটের সাথে বেহুদা তর্কগুলারে আলাদা করতে পারবো না আমরা সবসময়, তারপরও…), এইটারে ধইরা রাখতে হবে

উই শুড গেট ইউজড টু ইট!

দুই.
১৯৪৭-এ মুসলিম লিগের কারনে পুব-বাংলা পাকিস্তানে জয়েন করে নাই, বরং বর্ন হিন্দু ও কমিউনিস্টদের কারনে পাকিস্তানে জয়েন করতে বাধ্য হইছিল; নুরুল কবিরের এই রেফারেন্সটা দেখতে পারেন:

“বাংলা ভাগ হবে নাকি ঐক্যবদ্ধ থাকবে সে বিষয়ে ৪৭ সালে* সংসদ সদস্যদের মধ্যে ভোটাভুটি হয়। সিদ্ধান্ত হয় বাংলার হিন্দু মেজরিটি (পশ্চিমবঙ্গ) জেলাগুলার এবং মুসলিম মেজরিটি (পূর্ববঙ্গ) জেলাগুলার আলাদা আলাদা ভোট হবে। যদি দুই অংশেই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনপ্রতিনিধি বাংলাকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে চান তাহলে বাংলা ঐকবদ্ধ থাকবে, যদি কোন একটা অংশ বাংলাকে ভাগ করতে চায় তাহলে বাংলা ভাগ হবে। ভোটের প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়:

হিন্দু মেজরিটি (পশ্চিমবঙ্গ) জেলাগুলাতে ৫৮ জন বাংলাকে ভাগ করার পক্ষে ভোট দেন, ২১ জন বিপক্ষে ভোট দেন। এই ২১ জনই মুসলিম লীগের ছিলেন।

মুসলিম মেজরিটি (পূর্ববঙ্গ) জেলাগুলাতে ১০৬ জন বাংলাকে ঐক্যবদ্ধ রাখার পক্ষে ভোট দেন এবং ৩৫ জন বিপক্ষে ভোট দেন। পূর্ববঙ্গে যেই ১০৬ জন বাংলাকে ঐক্যবদ্ধ রাখার পক্ষে ভোট দেন তাদের ১০০ জন মুসলিম লীগের, ৫ জন নিম্ন বর্নের হিন্দু, ১ জন খ্রীষ্টান ছিলেন। যারা বাংলাকে ভাগ করার পক্ষে ভোট দেন তারা ছিলেন বর্ন হিন্দু এবং কমিউনিষ্ট।

যেহেতু যে কোন একটা অংশ বাংলা ভাগের পক্ষে রায় দিলে বাংলা ভাগ হয়ে যাবে সেজন্য পশ্চিমবঙ্গের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে বাংলা ভাগ হয়ে গেল।

পশ্চিমবঙ্গের এমপিরা বাংলা ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর আরেকটা সিদ্ধান্ত নিল সেটা হলো খন্ডিত বাংলাকে নিয়ে তারা ভারতে যোগ দিবে। পশ্চিমবঙ্গ ভারতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর পুর্ববঙ্গ সিদ্ধান্ত নিল তারা পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে যোগ দিবে।…”

/কলোনিয়ালিজম, পলিটিক্স অব ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড পার্টিশন অব বেঙ্গল; নুরুল কবির।

……
* ২০শে জুন

তিন.
ফেইসবুক ও টেলিগ্রাম

একটা জিনিস মেবি অনেকে খেয়াল করেন নাই যে, মুভমেন্টের সময়ে অনলাইন কমিউনিকেশন জায়গাটাতে টেলিগ্রাম একটা বড় রোল প্লে করছে; শুরুতেই ইন্টারনেট অফ করা হয় নাই, বরং ফেইসবুক কনট্রোল করা হইছে, কিনতু ফেইসবুক কনট্রোল কইরাও কমিউনিকেশন আটকানো যায় নাই, টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলাতে খবর পাইয়া যাইতেছিল লোকজন… এইটা ক্রুশিয়াল একটা ঘটনা ছিল বইলা আমি মনে করি, টেকনিকাল জায়গা থিকা…

মিডিয়াম বা প্লাটফর্ম ইম্পর্টেন্ট একটা ঘটনা, আপনি যেই প্লাটফর্মেই লেখেন না কেন, যদি সার্টেন ওয়ার্ড আপনি লেখতে না পারেন, কোন ইস্যু নিয়া যদি আপনি কথা বলতে না পারেন, আপনার চিন্তা থিকাও অই জিনিসগুলা হারায়া যাইতে থাকবে, ঝাপসা হয়া যাইতে থাকবে ধিরে ধিরে

খুনি হাসিনার নাম আমি-আপনি নিতে পারতাম না ফেইসবুকে (এখনো ফিলি**র নাম নেয়া যায় না, রিচ থাকে না কোন…), তো, এইভাবে এই জুলুমের শাসন একটা ওয়াক-ওভার পাইয়া যাইতো এবং আমাদের ভিজিবিলিটিরে কনট্রোল করতো, আর এখনো করে, নানান ইস্যুতে…

তো, যেই প্লাটফর্ম এই কাজ করে, সেই জায়গাটারে প্রাইমারি লেখালেখির জায়গা কইরা তোলাটা রিস্কি, চিন্তার জায়গা থিকাই

কিনতু যেহেতু যাদের সাথে ইন্টার-এক্ট করতে চাই আমরা সেই অডিয়েন্সটা আছে ফেইসবুকে, সেইজন্য ফেইসবুক থিকা বাইর হয়া যাওয়াটাও পসিবল না, বরং সেকেন্ডারি স্পেইস হিসাবে কনটিনিউ করাটাই বেটার

২.
আমি টেলিগ্রাম ইউজ করি গত এক বছর ধইরা; ফেইসবুক যখন আমার আইডি রেসট্রিক্ট কইরা দেয় তখন অল্টারনেটিভ সার্চ করা শুরু করি আমি সিরিয়াসলি, এবং টেলিগ্রামে যেহেতু যেই পোস্টই লেখেন না কেন আপনি, কেউ আপনার চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করলে সেইটা দেখতে পাবে, এই কারনে রিচ-টিচের কোন ঝামেলা নাই, এই ওয়ার্ড, অই ওয়ার্ড দেখলে খাইয়া ফেলবে অই ঝামেলাও নাই, যার ফলে বেটার…

এই যে, নিজের মতো কইরা কথা বলতে পারা, কোন ডর-ভয় ছাড়া – এইটা জরুরি একটা জিনিস

ফেইসবুকে এইটা করাটা টাফ, এবং কনট্রোল মেকানিজমগুলা এতো বেশি প্লাটফর্ম ওনার বা মডারেটরদের হাতে যে উনারা বা গর্ভমেন্ট চাইলে খুব সহজেই জায়গাটারে মেনিপুলেট করতে পারে; তো, এইটা ঝামেলার একটা ঘটনা

মানে, আমি বলতেছি না, কাউরে টেলিগ্রাম ইউজ করতে, আমি উনাদের ব্র্যান্ড এম্বেসেডারও না; কিনতু এই ডিফরেন্সের জায়গাটা আমি ফিল করছি আর কি, এবং একটা ক্রুশিয়াল মোমেন্টে যে পজিটিভ একটা ঘটনা হয়া উঠছিল, সেইটা জাস্ট রিকগনাইজ করে রাখার জন্য বইলা রাখতেছি

চাইর.
এই জিনিসটা আমি কয়েক জনরে কয়েকবারই বলছি যে, নয়া বাকশালের কোলাবরেটরদের বিচার হওয়ার চান্স কম এই কারনে না যে, ‘বাঙালি জাতটাই খারাপ’ 🙂 লোভী এবং ব্লা ব্লা ব্লা… বরং যারা এই বিচারের আওয়াজটা তুলবেন ও বিচার করবেন তারা এবং যাদেরকে বিচারের জন্য কন্সিডার করা হবে – তারা একই ক্লাসের লোক!

উনারা একজন আরেকজনরে মাফ কইরা দিতে পারবেন, যত বড় ভুল বা ক্রাইমই উনারা করেন না কেন! সাংবাদিকরা সাংবাদিকদেরকে, পুলিশ পুলিশদেরকে, ব্যবসায়িরা ব্যবসায়িদেরকে, উকিলরা উকিলদেরকে… এই পারসোনাল রিলেশনের জায়গাগুলাই হইতেছে সবচে বড় অবস্টেকল, অন্য যে কোন কিছুর চাইতে…

যারা অবৈধ শাসনটারে টিকায়া রাখছিলেন তারা আমাদের আশে-পাশেরই লোকজন, যাদের মনে খুব বেশি বেথা হয়তো আমরা দিতে পারবো না, জাস্ট সরায়া দিতে পারবো, কিনতু ছোট ছোট কনট্রিবিউশনগুলার রেসপনসিবিলিটি নিতে বাধ্য করতে পারবো না আসলে… আর এইটাই হইতেছে রিয়েল ডেনজারের জায়গাটা, যেইটার ভিতর দিয়া সিসটেমটা সারভাইব করবে, কোন একটা সময় হয়তো আবার রিভাইবও করতে পারবে…


অগাস্ট ১৫, ২০২৪

এই মুভমেন্টের সবচে বড় কালচারাল এচিভমেন্ট হইতেছে, রাস্তায় নামা, আন্দোলন করা, শ্লোগান দেয়া – এই জিনিসগুলারে cool হিসাবে এস্টাবলিশ করতে পারাটা

মানে, লড়াই করাটা যে সুন্দর – এইরকম এসথেটিকস তৈরি করার ঘটনাটা; যার ফলে যে কোন ইস্যুতেই রাস্তায় নামাটা এখন সহজ হবে; এইটা করলে আর ‘ক্ষ্যাত’ হয়া থাকতে হবে না 🙂

তিন.
যেই কথাটা মেবি তেমন কেউ বলতেছে না, সেইটা হইতেছে – মুজিব (এর ইমেজ, যেইটা ‘৯০ পরবর্তি ঘটনা) একটা ইনডিয়ান সিনেমা

১৯৭৩-এর জবরদস্তির ইলেকশনের পরেই উনার ইমেজে ভাটা পড়ছিল, ১৯৭৫-এ মারা যাওয়ার পরে তো কবর-ই হয়া গেছিল, লজ্জা ও ঘৃনায় উনার নাম কেউ নিত না; বাকশাল বাদ দিয়া যখন আওমি লিগ ১৯৮১’র দিকে রাজনীতি করতে শুরু করলো তখনো তারে ‘দেবতা’ বানানো হয় নাই; মুজিবের নাম মুখে নিলে পাবলিকের ভোট পাওয়া লাগতো না, পায়ও নাই ১৯৯১-এ; তো, তারপরেই এই “দেবতা” বানানোর প্রজেক্ট’টা শুরু হয়… এইটা ইনডিয়ান একটা প্রজেক্ট

বাংলাদেশে না হইলেও শ’খানেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম তার নামে; ভাসানী নভো থিয়েটার ছিল একটা অইটার নামও বদলায়া ফেলছে… এইরকম আরো অনেক উদাহারন পাওয়া যাবে

সেই সব প্রতিষ্ঠানের নাম এই অগাস্ট মাসেই পুরানা নামে ফিরায়া নিয়া যাওয়া উচিত


অগাস্ট ১৬, ২০২৪

ইনটেরিম গভর্মেন্ট নিয়া

এতোগুলা ইকনোমিক এডভাইজার না নিয়া উচিত হইতেছে এটলিস্ট ৩টা পাওয়ারফুল কমিটি তৈরি করা দরকার ইনটেরিম গভর্মেন্টের আন্ডারে –

১. ইকনোমিক রিফর্ম কমিটি
২. এডমেনিস্ট্রেটিভ রিফর্ম কমিটি
৩. লিগাল ও কন্সিটিটিউশন কমিটি

তাইলে ইনটেরিম গভর্মেন্টের এফিশিয়েন্টলি ফাংশন করা পসিবল হবে, তা নাইলে যেই লাউ সেই কদু-ই হবে।

২.
মাথা-ভারি লোকজন না ঢুকায়া ইনটেরিম গভর্মেন্টে বরং diversified লোকজনরে নেন, যদি ইনক্লুসিভ করতে চান

১. গার্মন্টেস ছরমিকদের থিকা একজনরে নেন
২. সরাসরি কৃষিকাজ করেন, এইরকম কাউরে নেন
৩. প্রবাসিদের একজন রিপ্রেজেন্টেটিভ রাখেন

আমাদের পলিটিকাল ইসট্রাকচারে এমন লোকজনদের কোন ভয়েস নাই, রাষ্ট্রে তো নাই-ই; কিনতু এইটা না করতে পারাটা কোন বাহাদুরি না, বরং এইটা যে আমাদের ফেইলওর-ই, এইটা মাইনা নিয়া এড্রেস করতে পারলে বেটার

আন-ফরচুনেটলি ইনটেরিম গভর্মেন্ট হইতেছে এখন প্রো-ইনডিয়ান ভালো-বাকশালিদের একটা গ্রুপ যাদের পলিটিকাল আইডিওলজি’র জায়গা থিকা কোন ডাইভারসিফিকেশন নাই-ই না খালি, সমাজের অন্য সব শ্রেনি-পেশা ও ক্লাসের লগেও কোন রিলেশন নাই, এইটা রিস্কি

৩.
ইনটেরিম গভর্মেন্টের এখনো কোন এজেন্ডা আমরা পাই নাই; ক্ষমতা নেয়ার ৩০ দিনের মধ্যে উনারা গনহত্যার বিচার এবং ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশনের জন্য কি কি কাজ করবেন, কতোদিনের মধ্যে করবেন – এই ঘোষনা আসাটা জরুরি

গোপনিয়তা না, বরং যতটা সম্ভব ট্রান্সপারেন্সি ছাড়া এই ইন্টেরিম গভর্মেন্ট নিজেরে এফেক্টিভ, এফিশিয়েন্ট, এমনকি ফাংশনাল রাখতে পারার কথা না

 

Series Navigation
The following two tabs change content below.
Avatar photo
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
Avatar photo

Latest posts by ইমরুল হাসান (see all)

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →