দুশমনের নাম ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’

১. একটা ইনফরমেশন
আনিসুজ্জামান (১৯৩৭ – ২০২০) উনার “বিপুলা পৃথিবী” (২০১৫) বইয়ের ৩১ নাম্বার পেইজে লেখতেছেন – “ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ তারিখ রাষ্ট্রীয় সফরে বঙ্গবন্ধু গেলেন কলকাতায়। সেখানে তিনি অভূতপূর্ব সংবর্ধনা পেলেন। কলকাতার জনসভায় প্রদত্ত বক্তৃতায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে জাতীয়তাবাদ কথাটা যোগ করলেন তিনি।”
তার মানে, উনার কথা যদি মানি, তাইলে রাষ্ট্রিয়ভাবে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ হইতেছে পোস্ট ১৯৭১-এর ঘটনা, এর আগের না! তো, এইটা জাস্ট একটা ইনফরমেশন হিসাবে ব্যাকগ্রাউন্ডে মনে রাখলে ভালো
২. একটা উপমা
ধরেন আপনি আপনার সেকেন্ড ওয়াইফ/হাজব্যান্ডের লগে ডির্ভোসে গেলেন, তার মানে কি আপনি আপনার ফার্স্ট ওয়াইফ/হাজব্যান্ডের কাছে ফিরা যাইতে চাইতেছেন? তা তো না! ফার্স্টের জনের লগে মিলে নাই বইলাই ডির্ভোসে গেছিলেন; আর ধইরা নেন সমাজে একলা থাকা যেহেতু ঝামেলার, সেকেন্ড ম্যারেজে আপনার যাইতে হইছিল। কিন্তু সেইটা যে কোন সমাধান না, এই ভুল বুঝতে পাইরা আপনি তারপরে একলা না, বরং ইন্ডিপেন্ডেড হইছেন।
এখন এই ইমাজিনারি পারসনের জায়গায় ‘বাংলাদেশ’ নামের আইডেন্টিটি’টারে বসান। প্রাইমারি লেভেল থিকা জিনিসটা টের পাইতে পারবেন কিছুটা। (বিয়া ব্যাপারটাতে ক্রিটিকাল হইয়েন না, উপমা হিসাবেই দেখেন।)
হিন্দু-জমিদারদের ইকনোমিক এক্সপ্লয়টেশনের কারণেই বাংলাদেশ কলকাতা তথা ইন্ডিয়ার পশ্চিমবাংলার লগে থাকতে পারে নাই, ইন্ডিপেন্ডেডই থাকতে চাইছিল আসাম নিয়া, না পারার কারণে পাকিস্তানে যাইতে হইছিল। কিন্তু অইটা টিকে নাই বইলা তার মানে এইটা না যে, বাংলাদেশ ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদে’ ফিরা যাইতে চায়। বাংলাদেশ একটা ইন্ডিপেন্ডেড রাষ্ট্র এবং এই দেশের মানুশ-জন এইটাই থাকতে চায়। কিন্তু এর বেইজ যদি হয় ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ তাইলে সেইটা কখনোই সম্ভব না, বা ট্রিকিই হয়া উঠার কথা, নতুন আইডেন্টিটি ক্লেইম করার জায়গাটা।
৩. হিস্ট্রিকাল কনটেক্সট
‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ অন্য যে কোন ধারণার মতোই কোন এবসুলেট ধারণা না, বরং একটা সময়ের হিস্ট্রিকাল কন্সট্রাকশন। মেইনলি কলকাতা-সেন্ট্রিক হিন্দু কমুনালিজমের একটা ধারণা।* ‘ভাষা-ভিত্তিক’ একটা ন্যাশনালিজম বইলা রিড করলে আসলে ভুলই হবে কিছুটা। কোন ধারণারেই এর পলিটিকাল মাজেজটার বাইরে গিয়া রিড করতে গেলে সেইটা অসম্পূর্ণ একটা রিডিং-ই হওয়ার কথা। ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদের’ ব্যাপারেও এইটাই হইছে এবং হইতেছে।
[*যেই কারণে ‘বাঙালি’ আইডেন্টিটির ভিতরে ‘মুসলিম’ হওয়াটা খালি কঠিন না, বরং বাড়তি একটা জিনিস মনেহয়। এইটা খালি মনে-হওয়ার ঘটনা না আর কি।… আরেকটা জিনিস হইলো, দুনিয়াতে ইসলাম এবং ‘ইসলামিস্ট জঙ্গি’ যেমন একই জিনিস না, একইরকমভাবে হিন্দু-ধর্ম এবং ‘হিন্দু কমুনালিজমরে’ গুলায়া ফেইলেন না! ]
এখন ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ কি? এর সংজ্ঞায়ন করাটা আমার উদ্দেশ্য না, বরং যে কোন বস্তু বা ধারনার জায়গাটারে ডেফিনেশনের ভিতর আটকায়া রাইখা বুঝতে চাওয়ার ঘটনাটা যে একটা ‘মর্ডানিস্ট প্রকল্পের’ সমস্যা – সেইটা রিকগনাইজ করতে রাজি হওয়াটা জরুরি; বাঙালি জাতীয়তাবাদের ‘হাজার বছরের ইতিহাসের’ শুরু আসলে ‘বঙ্গভঙ্গের’ সময়ে, এর আগে ‘বাঙালি’ ছিল-না না, কিনতু ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ পাইবেন না তেমন…
তো, যেই হিস্ট্রিকাল টাইম এবং কনটেক্সটে এর শুরু হইছিল, সেইটা আমরা পার হয়া আসছি। যেই কারণে, আহমদ ছফা ‘বাঙালি মুসলমানের’ কথা বইলা ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’রে রিলিভেন্ট করতে চাইছেন।** এই উপমার কনটেক্সটে এইটা হইতেছে ধরেন – ‘বাচ্চা নিয়া নাও, তাইলে কোন ঝামেলা হবে না’-টাইপ ঘটনা। এইটা ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’রে বাতিল করতে চাওয়ার কোন ঘটনা না, বরং যে কোন মূল্যে ধারণাটারে আপগ্রেড করতে চাওয়ার বা টিকায়া রাখতে চাওয়ার ঘটনা। আহমদ ছফার অনেক পজিটিভ কন্ট্রিবিউশন এবং দরদি-চিন্তার বাইরে এই ভুলের কথা আমাদেরকে রিকগনাইজ করতে পারতে হবে।
[**এইটা আহমদ ছফা’র আবিষ্কার না, যেই ক্রেডিট উনারে দেয়াটা নিয়ম হয়া দাঁড়াইছে এখন। এইটা ফার্স্ট কইছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। পরে যখন যখন কলকাতাতে বাঙালি (হিন্দু) জাতীয়তাবাদের ভাইব বা জোয়ার উঠছে তখনই মুসলমানদের মুভমেন্টগুলাও ভিজিবল হইতে থাকছে, ১৯২০ সালের দিকের খেলাফত আন্দোলন হুট কইরা হয় নাই আর কি! এবং ঢাকার মুসলিম সাহিত্য সমাজ ছিল একটা সিগনিফিকেন্ট ঘটনা।… তো, আহমদ ছফা বাংলাদেশ আমলে জিনিসটারে মোর ওয়ার্কেবল আইডিয়া হিসাবে রিলিভেন্ট কইরা তুলছিলেন।]
বাংলাদেশে এখনো মাইনরিটি’র উপরে যে কোন রকমের জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন চালু আছে পলিটিকালি এই ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ এবং ‘বাঙালি মুসলমান’ ধারণার উপর ভর দিয়াই। পাহাড়ে, সমতলে আদিবাসীদের জমি দখল অবশ্যই একটা ক্ষমতার ঘটনা, কিন্তু এইটা জাস্টিফাই করা হয় ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ ও ‘বাঙালি মুসলমান’-এর ধারণার বেসিসে। মানে, এই বেইজটা না থাকলে, ঘটনাগুলা ঘটতো না – তা না, কিন্তু এইরকমের উছিলাগুলা যে জরুরি, সেইটা খেয়াল করতে পারাটা দরকার।
৪. অতীতের ভূত
একটা আইডিওলজি যতো লিনিয়ার হইতে থাকে, তত সেইটা জুলুমের হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে। ব্রিটিশ কলোনির এগেনেস্টে ন্যাশনালিজমের বিজয়ের ভিতর দিয়া জুলুমের লোকালাইজেশন হইছে, জুলুম শেষ হয় নাই। এইটা খুব স্পষ্টভাবে আমাদের বুঝের মধ্যে থাকলেও বলাবলির মধ্যে থিওরেটিকাল জায়গাতে ব্যাপারগুলা কম-বেশি মিসিংই। কলোনিয়ালিজমের আইডিওলজি ছিল এনলাইটমেন্ট, যে ইউরোপিয়ান শাদা চামড়ার মানুশ হইলেই আপনি ‘মানুশ’ এবং বেটার হিউম্যান বিইং। ইউরোপিয়ান ভার্সেস নেটিভ। অই আইডিওলজিকাল ট্রাপ থিকা আমরা এখনো বাইর হইতে পারি নাই। বাঙালি ভার্সেস পাহাড়ি, বাঙালি ভার্সেস অবাঙালি/বিহারি… এইরকম জিনিসগুলা জারি আছে।
মানে, ন্যাশনালিজমের আইডিওলজিতে একটা ন্যাশনাল-প্রাইড’রে বাইছা নিতে হয়, একটা লিনিয়ারিটিরে। যদি এইরকম কোন প্রাইড না থাকে, সেইটা কোন ন্যাশনালিস্ট ইমোশনরে ইন্সপায়ার করতে পারে না। এই কারণে নায়কের দরকার পড়ে সবসময়, ন্যাশনালিজমের। একটা ইনফিরিয়রিটি এবং একই সাথে একটা সুপিরিয়রিটি ছাড়া এই প্রাইড সাসটেইন করতে পারার কথা না।
আমি যেইটা বলতে চাইতেছি, থিওরেটিকাল গ্রাউন্ড থিকা ন্যাশনালিজম কলোনিয়ালিজমের চাইতে আলাদা কোন জায়গাতে এগজিস্ট করে না। যার ফলে রাষ্ট্র-ব্যবস্থাতেও মেজর কোন চেইঞ্জ আসে নাই বা আনার দরকার পড়ে নাই। বরং কলোনিয়াল বুরোক্রেসিটাই কন্টিনিউ হইতে থাকতেছে। যখন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া থিকা আমরা আলাদা হইছি, আমরা টের পাইছি যে স্টিল আমাদের উপরে জুলুমটা আউটসাইডার লোকজনই করতেছে, যেই কারণে পাকিস্তান থিকা আলাদা হওয়াটা একটা কলোনিয়াল ফাইটেরই এক্সটেনশন, এক রকমের; যে, বাইরের শত্রু’র হাত থিকা মুক্তি পাওয়া।
কিনতু হিস্ট্রিতে কখনোই আমরা পুরানা টাইমে ফিরা যাইতে পারি না। যেইরকম পাকিস্তান আমলে ফিরা যাইতে পারি না, একইরকমভাবে ব্রিটিশ ইন্ডিয়াতেও না। কিন্তু অতীতের ভূতগুলা আমাদেরকে কখনোই ছাইড়া যায় না। বরং ফিরা ফিরা আসে। এইরকম একটা ভূত হইতেছে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’, যেইটা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উপ্রে সওয়ার হইছে।
৫. বহু-জাতি
খুব ব্রডলিই দেখেন, বাংলাদেশে কিন্তু খালি বাংলা-ভাষায় কথা-বলা লোকজনই থাকে না, আরো কিছু ভাষা আছে। এমনকি বাংলা-ভাষাটারে জাইত্তা ধইরা মাইরা ফেলার, জোর কইরা প্রমিত (আল্টিমেটলি কলকাত্তাইয়া) হওয়ার যেই চেষ্টা সেইটাও এই ‘বাঙালি’ হওয়ার জায়গা থিকাই আসছে। মানে, আইডিওলজি হিসাবে যেহেতু লিনিয়ার এইখানে সবসময় ‘এক’ হইতে হবে – এই চাপটা আছে। থিওরেটিকাল জায়গা থিকা এই কারণে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ বাংলাদেশের ভিত্তি তো হইতেই পারে না, বরং দুশমন একটা।
বাংলাদেশ যে একটা বহু-জাতির একটা দেশ হইতে পারে, তার একটা অস্বীকার হইতেছে এই ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’। যেইটা সবসময় খালি একটা ‘এন্টি-মুসলমান’ আইডেন্টিটি হিসাবে পারসিভ হয়া একটা ‘ইসলামি মৌলবাদী’ জোশ’রে জাগায়া তোলে না, বরং বাংলাদেশের অন্য সব মাইনর আউডেন্টিটিরে নাগরিক-অধিকারের জায়গা থিকা স্পেশাল এবং ভারনারেবল কইরা তোলে।
আইডেন্টিটি এমন একটা জিনিস না যেইটা আমরা ইনহেরিয়েট করি, বরং আইডেন্টিটি এমন একটা জিনিস যেইটা আমাদেরকে তৈরি করতে হবে। আমি বলবো, এই জায়গা থিকা আমাদের ইন্টেলেকচুয়াল কাজ হইতেছে পুরানো কোন ধারণার কাছে ফিরা যাওয়া না, বরং বাংলাদেশের নতুন, ইনক্লুসিভ এবং বহুজাতির একটা ধারণারে তৈরি করা। আর কোন পুরান টার্ম দিয়া এইটা করা পসিবল না, কখনোই।
৬. ঢাকার হেজিমনি
তো, নতুন গ্রাউন্ড যদি আমরা খুঁইজা পাইতে চাই আমাদের এগজামিন করতে পারাটা দরকার যে, কিভাবে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ ফিরা আসছিল বা আসতেছে বারবার?
একটা কারন তো অবশ্যই ১৯৪৭’র পরে রাষ্ট্রিয়ভাবে ‘পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদ’ (ইভেন ‘মুসলিম জাতীয়তাবাদ’ও না) তৈরি করার ট্রাই করা হইতেছিল, যেইখানে পুব পাকিস্তানের দাবি ছিল স্বায়ত্ত-শাসনের; মানে, বহু-জাতির দেশ হইতে রাজি হয় নাই পাকিস্তান, বরং একটা অন্যায় যুদ্ধ চাপায়া দেয়া হইছিল আমাদের উপরে, আমরা তখনো বহু-জাতির দেশই হইতে চাইছি, কিনতু অই পলিটিকাল এসপিরেশনের জায়গাটা ইগনোরড হইছে মুক্তিযুদ্ধের পরে আইসাও, যেইটা ১ নাম্বার পয়েন্টের ইনফরমেশনে আছে
এর আরেকটা কারন হইতেছে ১৯৪৭’র পরে যারা ঢাকা শহরের কালচারাল পাওয়ারের জায়গাগুলাতে ছিলেন তাদের মোটামুটি সবাই-ই ছিলেন কলকাতা-ফেরত মুসলমান, এবং খেয়াল করলে দেখবেন ১৯৪৭-এর পরে কলকাতা মোটামুটি শিকখিত-মুসলমান শূন্য হয়া উঠছিল; তো, যারা হিজরত কইরা ঢাকায় আসছিলেন, তারা অই এসথেটিকসরে তো ডিজ-অউন করেন নাই! বরং ঢাকাতে সেইটারে রি-এস্টাবলিশ করছেন, এবং খেয়াল কইরা দেখবেন ঢাকার পিপলদের যেই মফস্বল-হেইট্রেট সেইটা অনেকটা কলকাতা-বাহিত রোগই আসলে
লাস্টলি, দেখেন, সমস্যা হইতেছে যে, যেন একটা সেন্টার-পয়েন্ট লাগবেই! একটা লিনিয়ারিটি ক্রিয়েট করা লাগবে – তা নাইলে যেন হবে না! এই যে সেন্টার-ফেটিশ – এইটা থিকা বাইর হইতে হবে, যদি বাঙালি জাতীয়তাবাদের জায়গা থিকা বাইর হইতে চাই আমরা
৭. বড়-বাংলা একটা ব্যাক-ওয়ার্ড টেনডেন্সি
এইখানে আমি দেখি যে, পুরানা আইডিওলজিগুলা সব সময়ই নতুন বোতলে ফিরা আসার সম্ভাবনা নিয়া থাকে, এইরকম একটা টেনডেন্সি হইতেছে বৃহৎ বঙ্গ বা বড়-বাংলা টাইপের ঘটনাগুলা, যেইটা কোন না কোনভাবে অই জাতিয়তাবাদি ধারনাগুলারই এক ধরনের এক্সপানশন, যেইটা আঞ্চলিক আধিপত্যবাদই তৈরি করার দিকে আগায়া যাবে, থিওরেটিকালি এই সম্ভাবনাই বেশি
কিনতু আমাদেরকে শুধু আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদ না আঞ্চলিক আধিপত্যবাদের যেই টেনডেন্সিগুলা দেখি সেইগুলারে আরেকটা আধিপত্যবাদি আইডিয়া দিয়া সমাধান করা পসিবল না, বরং একই বেইজে পইড়া থাকার ঘটনাই হয়া উঠবে, খারাপ-আইডিওলজিরে ভালো-আইডিওলজি দিয়া রিপ্লেইস করার ঘটনা না এইটা, বরং আইডিওলজিকাল বেইজটারে চেইঞ্জ করার ঘটনা হইতে হবে সেইটা
৮. রিজওনাল কো-হেরিয়েন্স
এই জন্য আমি মনে করি, একটা রিজিওনাল কো-হেরিয়েন্সের জায়গা তৈরি করার দিকে আগাইতে পারতে হবে আমাদেরকে; আমাদের নেইবার যে জাতি, গোষ্ঠি, এনটিটি আছে তাদের সাথে মিল-মহব্বতের জায়গাগুলা তৈরি করতে হবে, জাতীয়তাবাদিতার সেন্ট্রালনেসের বদলে পেরিফেরির যে প্লুরালিটি, ডাইভারসিটি সেই জায়গাগুলাতে ফোকাস করতে হবে
এর একটা থিওরাইজেশন তো করা-ই যায়, কিনতু তার বদলে জায়গাটারে তৈরি করতে হবে প্রাকটিকাল একশন এবং আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের বেসিসে, এমন না যে একটা ‘মূলনীতি’ ঠিক করা লাগবে, তার বেসিসে ইনক্লুশনগুলা হবে, বরং ইনক্লুশন দিয়াই শুরু করতে হবে, যেইটার বেসিসে কিছু ‘মূলনীতি’ তৈরি হইতে পারবে, এবং যেইগুলা টাইম টু টাইম চেইঞ্জও করা যাবে
এখন একটা ফ্রেমওয়ার্ক তো থাকবেই, কিনতু সেই ফ্রেমওয়ার্কটা তৈরি করার জন্যই জাতিয়তাবাদি আবেগগুলার কাছ থিকা দূরে সরতে পারতে হবে আমাদেরকে, তাইলে অই সম্ভাবনার জায়গাগুলারে কিছুটা দেখতে পাইতে পারবো আমরা
৯. সামারি
আমার কথাগুলার যদি সামারি করি, তাইলে পয়েন্টগুলা এইরকম হবে –
১. বাঙালি জাতীয়তাবাদ হইতেছে একটা বাংলাদেশ-বিরোধি ধারনা, হিস্ট্রিকালি ব্রিটিশ কলোনিয়াল পিরিয়ডের, এবং পলিটিকালি এলিট হিন্দুজমের ফেনোমেনা, যেই আইডিওলজিকাল ফ্রেমওয়ার্ক থিকা আমাদের বাইর হইতে পারাটা জরুরি
২. কিনতু এই ফ্রেমওয়ার্কটা কিভাবে অপারেট করে, এবং ফিরা আসতে পারে – অই জায়গাগুলারে যদি আমরা ঠিকমতো লোকেট করতে না পারি, তাইলে চিন্তার নতুন বেইজ আমরা তৈরি করতে পারবো না
৩. নতুন বাংলাদেশের আইডিওলজিকাল বেইজ হইতে পারে রিজিওনাল কো-হেরিয়েন্স, যেইখানে অন্য জাতি, সমাজ, দেশ ও স্টেইটগুলার লগে নতুন এসোসিয়েশনের ভিতর দিয়া জিও-পলিটিকাল একটা সাসটেইনেবল পলিটিকাল একো-সিসটেম তৈরি করতে পারবো আমরা
তো, এইগুলা তো খুব অল্প কথাতেই বলা হইলো, যেইখানে অনেকগুলা ডিপ ডিবেট হইতে পারে, কিনতু একটা প্রপোজাল হিসাবে, একটা আলাপের শুরু হিসাবে কন্সিডার করা যাইতে পারে!
ফি আমানিল্লাহ!


Latest posts by ইমরুল হাসান (see all)
- দুশমনের নাম ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ - মার্চ 12, 2025
- প্লে-লিস্ট: আজম খান - ফেব্রুয়ারি 28, 2025
- পলিটিকাল ডাইরি ২০২৪ (চাইর) - জানুয়ারি 27, 2025