Main menu

পোস্ট পলিটিকাল ক্রাইসিস Featured

মনে করেন, আপনি হাঁটতে যান সকালে। এই হাঁটার মধ্যে ভাল লাগা/ফ্রেশ লাগার ব্যাপার আছে। তাই যান। কিন্তু, সাথে এই আলাপও জোড়া দেন যে, হাঁটলে শরীরের উপকার হয়।

এইটা কথা মিছা না। কিন্তু এইটার উপরে যখন জোর দিবেন বেশি, তখন ফ্রেশ লাগার যে এনজয়মেন্ট, তার বদলে এইটা একটা একম্পলিশমেন্ট হয়ে দাঁড়ায়। আর ফ্রেশ লাগার এনজয়মেন্ট যখন হারায়া ফেলেন, তখন মেইন নিউরোলজিকাল ইফেক্টটাই হারায়া যায়।

কোথাও বেড়াইতে যান। ছবি তোলা স্বাভাবিক। কিন্তু ছবি তুলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রামে দেয়াটা যদি ঘুরতে যাওয়ার মনোশারীরিক প্রক্রিয়ার চেয়ে বেশি ইম্পর্ট্যান্ট হয়, তাহলে স্ট্রাগলটাই হারায়া ফেললেন। আর যেইখানে স্ট্রাগল নাই, সেইখানে কনট্রাডিকশন নাই। আপনি লেস বিয়িং, মোর কমোডিটি।

কোন দেশের যোগ্য নেতা দরকার। এইটা ইম্পোর্ট কইরা আনতে পারবেন? না। তার জনসংযোগের মধ্যে দিয়ে পলিটিকাল হরাইজন আবিষ্কার হবে। সোসাইটি চেঞ্জ হবে। কনফ্লিক্ট হবে। যোগ্য নেতার চাইতেও এইটা দরকার। পলিটিক্সের মেইন কাজই এইটা।

শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর খালি দেশ চালাইছেন। রাজনীতি করেন নাই। প্রথমে বাকিদের এভয়েড করছেন। পরে কনফ্লিক্ট এভয়েড করতে এক পার্টি করছেন। ফলে, রাজনীতি হয় নাই।

যুদ্ধের আগে উনি কি করছেন? মুসলিম লীগের সাথে ফাইট করছেন। অপোজিশনের সাথে ফাইট করছেন। ফলে পলিটিকাল হরাইজন তৈরি হইছে। তিনি নেতা হয়ে উঠছেন। বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হইছে। পরে নিজেই নিজেরে পোস্ট পলিটিকাল কাল্টে স্থাপনের চেষ্টা করছেন। ফলে, ব্যার্থ হইছেন। আব্দুর রাজ্জাক স্যার কি বলছিলেন?

‘কথায় কথায় আমি জিগাইলাম, আপনের হাতে ত অখন দেশ চালাইবার ভার, আপনে অপজিশনরে কী করবেন। অপিজিশন ছাড়া দেশ চালাইবেন কেমনে। জওহরলাল নেহেরু ক্ষমতায় বইস্যাই জয়প্রকাশ নারায়ণরে কইলেন, তোমরা অপজিশন পাটি গইড়্যা তোল। শেখ সাহেব বললেন, আগামী নির্বাচনে অপজিশান পাটিগুলা ম্যাক্সিমাম পাঁচটার বেশি অাসন পাইব না। আমি একটু আহত অইলাম, কইলাম, আপনে অপজিশনরে একশো সিট ছাইড়্যা দেবেন না? শেখ সাহেব হাসলেন। আমি চইল্যা আইলাম। ইতিহাস শেখ সাহেবরে স্টেটসম্যান অইবার সুযোগ দিছিল। তিনি এইডা কামে লাগাইবার পারলেন না।’

বিগত উন্নয়নের আলাপও তাই ছিল। উন্নয়নই যদি হয়, তাইলে নির্বাচিত নেতার কি দরকার? প্রোপার পলিটিক্সের মধ্যে দিয়ে না গেলে কোন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সম্ভব না। যত বড় নেতাই হোক। কারণ, তার ডাইনামিক্সই নাই। উপরে মনে হইতে পারে। কিন্তু তা কলাপ্স করে। প্রগ্রেস অসম্ভব। হেগেল বুইঝা পড়েন।

একজন হিরোর জার্নি কি? ইয়ুং আমাদের কি বলে? হারকিউলিসের দেবতার সন্তান হয়েও পরীক্ষায় পাশ করতে হয়? অডিসিউস ফেরার পরেও তার বৌরে পুনরায় তীর ধুনকের পরীক্ষায় জয় করতে হয়? লোহা কেন আগুনে পোড়াইতে হয়?

অর্থাৎ আপনি পলিটিকাল প্রসেস ছাড়া পলিটিকাল ফলাফল ভোগ করতে পারবেন না। সেইটা ভুল রাস্তা। বিগত নির্বাচন ও রাজনীতিহীন সময় ছিল এইরকম পোস্ট পলিটিকাল মরুভূমি।

যেসব ফল দেখেন, তা মরীচিকা। দেখেন, কত কি ফেইল করছে! করবে!

স্বর্গ আর দুনিয়ার পার্থক্য কি জানেন? আপনি চাইলেই পান। আঙুর খাইতে চাইলে, আঙুর পান। গাছ লাগাইতে হয় না৷ ম্যানুফ্যাকচার করতে হয় না। অপেক্ষা করতে হয় না।

দুনিয়া এবং সমাজ ওইভাবে চলে না। প্রত্যেকে উপাদানের আন্তঃসম্পর্ক আছে। বাস্তুসংস্থান আছে। সেই জিনিসগুলা মিসিং থাকে। স্ট্যাবিলিটি নষ্ট হয় বা ওগুলা এভয়েড করে কোন প্রগ্রেসের দিকে যাইতে পারে না।

আদালতের রায় পলিটিকাল প্রসেস ওভারকাম করতে পারে না। টেকনোক্রেট দিয়ে কি দেশ চালানো যায়? পলিটিকাল প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যাইতে হবে। রোদে পুড়তে হবে। বৃষ্টিতে ভিজতে হবে। কেন মা বসুমতি তুমি এতই কৃপণা? মনে আছে?

পোস্ট পলিটিকাল ক্রাইসিস থেকে আমাদের বাইরে যাইতে হবে। আপনি গাছ না লাগায়া ফল খাইলে, সেই ফলে বিচি থাকার কথা না৷ পরের গাছটার সম্ভাবনা থাকে আর? পরের ফল কই পাইবেন? পার্টি গ্রো করবে কিভাবে?

আলথুসার কইছে না এইটা? প্রোডাকশনের কন্ডিশন রক্ষা না কইরা আপনি উৎপাদন সাসটেইনেবল করতে পারবেন না। কারণ, তারপর প্রোডাকশন সিস্টেমটাই ভেঙে পড়বে।

আদালতের রায়ে নেতা নির্বাচিত হওয়ায় পোস্ট পলিটিকাল যে কালচারের মধ্যে আমরা ছিলাম, তারই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলো।

জিজেকের মত কইরা বলতে হইতেছে, আপনি ক্যাফেইন ছাড়া কফি খাইতে চান কিনা?

The following two tabs change content below.
Avatar photo

কবির আহমেদ

জীবিকার জন্য একটা চাকরি করি। তবে পড়তে ও লেখতে ভালবাসি। স্পেশালি পাঠক আমি। যা লেখার ফেসবুকেই লেখি। গদ্যই প্রিয়। কিন্তু কোন এক ফাঁকে গত বছর একটা কবিতার বই বের হইছে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →