Main menu

স্যাডের জীবন: রলাঁ বার্থ।

স্যাডিজম বা স্যাডিস্ট শব্দটা বাংলাভাষায় যতোটা পরিচিত, স্যাডে বিষয়ে টেক্সট ততোটা না। একটা সময় হয়তো কিছু অনুবাদ হয়া থাকতে পারে, তাঁর লেখার; কিন্তু ব্যাপারটা এক ধরণের ট্যাবু যদি নাও হয়, তারপরও না-বলার ভিতর ত আছে, অবশ্যই। এইটা স্যাডের সমালোচনামূলক একটা জীবনী, যেইখান থিকা বাংলাভাষায় স্যাডে পড়া শুরু হইতে পারে।

রলাঁ বার্থের এই লেখা, “স্যাডের জীবন”, ইংরেজীতে অনুবাদ করছিলেন রিচার্ড মিলার। অরিজিনালটা ছাপা হইছিল স্যাডে, ফুরিয়ার, লয়েলা বইটাতে (পৃষ্টা: ১৭৩ – ১৮২), যেইটা পাবলিশ হইছিল ১৯৭৬সালে । ইংরেজী টেক্সটটা এইখানে পাওয়া যাবে: http://bit.ly/fvmjGa। আর বইটা পড়তে পারবেন এই ঠিকানায়: http://bit.ly/14WoHD3

– ই. হা.। 

____________________________________

 

১. শব্দের বুৎপত্তিগত শিকল: স্যাড, স্যাডো, স্যাডোনে, স্যাজো, স্যায়োজা (স্যাজের গ্রাম); আবার,  এই বংশ-পরাম্পরায় হারাইয়া যাওয়া, শয়তানি অক্ষরটা। এই অভিশপ্ত নাম নেয়াটা, উজ্জ্বলভাবে ব্যবস্থিত (এইটা উৎপাদন করে একটা কমন নাওন), অক্ষরটাতে, যা ফরাসিতে আমরা বলি, জেবরাস, দ্য জেড, দাঁতের সবচেয়ে মোলায়েম স্পর্শের পথে। [pullquote][AWD_comments] [/pullquote]

২. মানুষজন, যারা এখন সাধু সেইন্ট-জার্মেইন-ডেইস-প্যার্স এর সময়ে বাঁইচা আছেন, তাদের অবশ্যই মনে রাখা দরকার যে তারা একটা স্যাডানিয়ান এলাকার মধ্যে আছেন। স্যাডে জন্মাইছিলেন হোটেল দো কঁদে’র একটা ঘরে, যেইটা মোটামুটি রুঁয়-মঁসিয়ে-লঁ-পাঁস এবং রুঁয়-দো-কঁন্দে এর মধ্যে; তিনি ব্যাপ্টাইজড হইছিলেন সঁ-সঁল্পিস এ; ১৭৭৭-এ তিনি বন্দী হন লেটার দো কেঁসে ‘র (রাজা’র ফরমান) অধীনে, রু জ্যাকবের  হোটেল ডি ডেনমার্কে (সেই রাস্তাতেই যেইখানে এই বইটার ফরাসি এডিশন ছাপা হইছিল), আর সেইখান থিকা ভিনসেনাঁর অন্ধকূপ জেলখানায় নিয়া আসা হয়।

মার্কুইস দ্য স্যাডে

মার্কুইস দ্য স্যাডে

৩. ১৭৭৯ এর বসন্তে, স্যাডে যখন ভিনসেনাঁয় বন্দী, তিনি একটা চিঠি পান যা তারে বলে যে –  লাঁ কস্তেঁ’তে ফলের বাগান চোখ ঝলসাইয়া দিতেছে: চেরির কুঁড়ি ফুটছে, আপেল, নাশপাতি গাছগুলি, আঙুর, আর বলার দরকার নাই, ওক-ও আছে। স্যাডের জন্য, লাঁ কস্তেঁ ছিল একটা মাল্টিপল ব্যাপার, একটা সম্পূর্ণ জায়গা; প্রথম, একটা প্রাদেশিক জায়গা, আসল জায়গা, ফিরা যাওয়ার (তাঁর জীবনের প্রথম অংশ জুইড়া এইটা ছিল; স্যাডে যদিও একজন ফেরারি, ভূতগ্রস্থ, সেইখানে ক্রমাগত ফিরছেন, তাচ্ছিল্যের কামুকতায়);  পরবর্তীতে: সর্বময় ক্ষমতার একটা জায়গা, একটা অনুচিত্র এবং পুরা সমাজ যেইখানে তিনি মাস্টার, তার আয়ের একটা অনন্য উৎস, তার স্টাডির জায়গা (তার লাইব্রেরি সেইখানে ছিল), থিয়েটারের জায়গা (তারা কমেডিগুলা করতো), আর তার ল্যাম্পটের জায়গা (স্যাডের ছিল চাকর, ইয়াং চাষী-মেয়েরা, তরুণ সেক্রেটারিরা, সেশনের জন্য নিয়া আসা, যেইখানে মারকুইস নিজেও থাকতেন); এর জন্য, স্যাড লাঁ কস্তেঁতে বারবার ফিরতে চাইতেন তার ক্লান্তিহীন ভ্রমণের পরে, সেইটা গ্রামদেশে গিয়া মানসিক শান্তির জন্যে না, যেইটা দ্য আসপেল্ট জাঙ্গাল  এর গ্যাংস্টাররে দেখানো হইছে যে সে সেই ফার্মের গেইটে গিয়া মরতে চায় যেইখানে সে জন্মাইছিলো; সবসময়ের মতোই এইটা একটা বহুত্ব, অতি-নির্দেশিত, সম্ভবত বিপরীত অর্থমূলক।

৪. ১৭৬৮ এর ঈস্টার সানডে’তে, সকাল ৯টার সময়, প্লেস দো ভিক্টোয়াঁ’তে, রোজ কেলারের সাথে, যে একজন ভিখারি (যারে তিনি পরে আঁখতেয়ো’তে তার বাড়িতে কয়েকঘণ্টা চাবকান), গায়ে-পইড়া আলাপ করার সময়, তরুণ স্যাডে (আটাশ বছর বয়স) একটা ধূসর রেডিনগোট পড়ে ছিলেন, একটা বেত ছিল, একটা শিকারি ছুরি – আর একটা সাদা মাফলার । (যদিও তখন এমন একটা সময় যখন আই.ডি.’র ছবির অস্তিত্ব ছিল না, এইটা একটা প্যারাডক্স যে পুলিশের রিপোর্ট সন্দেহভাজনের পোশাকের বণর্নার ভিতর দিয়া দোষীকে প্রকাশ করে: যেমন সুন্দর সাদা মাফলার, একটা প্রবন্ধ অবশ্যই লেখা উচিত এই মূল কৌশলটাকে সন্তুষ্ট করার জন্য যা সবসময় মনে হইছে ম্যারকুইস স্যাডের অ্যাক্টিভিটির মধ্যে পৌরহিত্য করছে – কিন্তু আবিশ্যিকভাবে স্যাডিস্টদের মধ্যে না।)

৫. স্যাডে থিয়েটার কস্টিউমগুলা পছন্দ করতেন (ফর্মগুলা যা চরিত্রটাকে নির্মাণ করে); তিনি তার নিজের ডেইলি লাইফে সেইগুলা পরতেন। রোজ কেলার’রে চাবকানোর সময়, তিনি নিজে ফ্রজারের ছদ্মবেশ নিতেন (একটা নগ্ন কবন্ধের উপর হাতাবিহীন অর্ন্তবাস; মাথায় একটা রুমাল বাঁধা যেইরকম জাপানি বাবুর্চিরা পিন্দে জ্যান্ত বানমাছ দ্রুত কাটার সময়); পরে, উনি তার বউরে আদেশ দিছিলেন একজন বন্দী, অসুখী জামাইরে দেখতে আসার সময় অবশ্যই শোকের পোশাক পইরা আসার জন্য: যতোটা সম্ভব ডার্ক কালার, বুক ঢেকে রাখার, “একটা বড়, অনেক বড় ঘোমটা যেইটা চুলরে ঢাকবে না, এমনভাবে থাকবে যেন না-আঁচড়ানো একটা খোঁপা, কোন ফিতা ছাড়া।”

৬. ঘরোয়া স্যাডিজম: মার্সেইতে  স্যাডে চাইতেন যে, ম্যারিয়েন ল্যাভেন তাকে চাবকান একটা চামড়ার বিটার দিয়া যাতে বাঁকানো পিন লাগানো, যা তিনি তাঁর পকেট থিকা বাইর করতেন। এইরকম স্পেশাল ব্যবহারের একটা জিনিস (একটা সার্জিক্যাল যন্ত্রের মতো) দেইখা মেয়েটা ভয় পাইয়া যাইতো, আর স্যাড তখন চাকরানিরে একটা গরম ঝাঁটা আনতে বললেন; এই গৃহস্থালির সারঞ্জাম ম্যারিয়েনের কাছে পরিচিত ছিল আর এইটা দিয়া স্যাডের পাছায় বাইড়াইতে তার কোন দ্বিধা থাকতো না।

[youtube id=”NGSq7A6TZGM” mode=”normal” align=”right”]

৭. মঁন্তেয়োঁ’র লেডি প্রেসিডেন্ট তার মেয়ের জামাইয়ের প্রথম জীবনের নিগ্রহ জন্য প্রচ্ছন্নভাবে দায়ী (হয়তো তিনি তারে ভালোবাসতেন? একদিন, কেউ একজন মার্কুইসরে বলছিল যে, লেডি প্রেসিডেন্ট “এম.ডি স্যাডরে পাগলের মতো ভালোবাসেন”); তার চরিত্রের যে পরিচয় আমরা পাই, আর যা-ই হোক, একটা অবিরাম দ্বিধা: স্ক্যান্ডালের ভয়, “না-পারার ভয়”; স্যাডে মনেহয় ছিল তাঁর একটা বিজয়োল্লাস, অস্বত্বিকর বলি; বখে যাওয়া বাচ্চা, সে ক্রমাগত “টিজ করতো” (টিজ করা একটা স্যাডিস্টিক প্যাশন) তাঁর সম্মানিত এবং প্রতিষ্ঠিত সর্ম্পকগুলাকে; যেখানে সে যাইতো, সে হুকুমের রক্ষকদের হতাশাগ্রস্ত আতঙ্কটারে চাগাইয়া তুলতো: মিঁয়োলানাস দুর্গে তার বন্দিত্বের জন্য সবাই দায়ী (সারডিনিয়ার রাজা, মন্ত্রী,  রাষ্ট্রদূত, গর্ভণর) – যারা অবসেসড ছিলেন তার পালাইয়া যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়া যা ঘটার ক্ষেত্রে কখনোই ব্যর্থ হয় নাই। তার নিপীড়কদের সাথে সে যে খাতির করছিলো সেইটা ছিল একটা এসথেটিক্যাল ব্যাপার: এইটা বিদ্বেষপরায়ণ, একটা জীবন্ত, অভিজাত প্রাণীর জাঁকজমকপূর্ণ প্রদর্শনী,  উভয়েই অবসেসড এবং উদ্ভাবক,  ভ্রাম্যমাণ এবং নাছোড়বান্দা, ক্রমাগত পালাইতেছে এবং ক্রমাগত একই এলাকায় ফিরে আসতেছে, যেইখানে বিশাল ম্যানিকিন, অনমনীয়, ভীরু, জাঁকালো শুধু সরলভাবে চায় তারে ধারণ করতে (তারে শাস্তি দেয়া না: এইটা শুধুমাত্র পরে আসবে)।

৮. তার কাজগুলি পড়ার পরেই কেবল মার্কুইসের জীবনী আমাদের পড়ার দরকার, বোঝার জন্য যে তিনি তার কাজের কিছু জিনিস তাঁর জীবনে নিছিলেন – আর তার উল্টাটা না, যা তথাকথিত সাহিত্যিক বিজ্ঞান আমাদের বিশ্বাস করতে কয়। স্যাডের জীবনের “স্ক্যান্ডালগুলি” তার বইগুলা থিকা বাইর করা একইরকমের পরিস্থিতি না। বাস্তব দৃশ্যগুলা আর ফ্যাণ্টাসাইজড দৃশ্যগুলা সরাসরি সর্ম্পকযুক্ত না; সবগুলা সমান্তরাল প্রতিলিপি ছাড়া আর কিছু না, কম বা বেশি ক্ষমতাধর (জীবনের চাইতে কাজের ভিতর বেশি শক্তিশালী), একটা দৃশ্য যা অনুপস্থিত, অচিহ্নিত, কিন্তু অস্পষ্ট না, যার অপ্রীতীকীকরণ এবং স্পষ্ট উচ্চারণের স্থান কেবলমাত্র লেখার ভিতর হইতে পারে; স্যাডের লেখা এবং তার জীবন তার লেখালেখির ভিতর দিয়া সমান পায়ে হাঁইটা যাওয়া।

 

রলাঁ বার্থ

রলাঁ বার্থ

৯. ইতালি থিকা ফ্রান্সে ফিরার পর, স্যাডে নেপলস থিকা লা কসতোতে দুইটা বড় বাক্স পাঠাইছিলেন; দ্বিতীয়টা, ছয়শ কুইন্টালের, এমেইবল ম্যারে নামের নৌকাতে; এইটাতে ছিল: “মার্বেল,পাথর, একটা ফুলদানি অথবা ওয়াইন-দানি রেজিনের সাথে গ্রীক ওয়াইন ধইরা রাখার জন্য, এন্টিক ল্যাম্পস, ছাইদানি, সবগুলাই গ্রীক এবং রোমান, মেডেল, প্রতিকৃতি, ভিসুভিয়াসের কাঁচা এবং কাজ করা পাথর, একটা চমৎকার ভাস্কর্যের মটকা, আনকোরা; ইটুরিয়ান ফুলদানি, মেডেল, সর্পিল একটা ভাস্কর্যের অংশ, একটু অগ্নুৎপাতের সোরা, সাতটা স্পঞ্জ, ঝিনুকের একটা সংগ্রহ, একটা ছোট উভলিঙ্গ প্রাণী এবং এক ঝাঁকাভর্তি ফুল… একটা মার্বেলের ডিস যাতে সবরকমের ফলের প্রত্যেকটার জ্যান্ত সাইজের ছবি আঁকা, ভিসুভিয়ান মার্বেলের সিন্দুকের ড্রয়ার, একটা সার্সিয়ান র্বুচিনি অথবা কাপ, একটা নেপোলিয়ান চাকু, ব্যবহার করা কাপড় এবং ছাপা… প্রুফস অফ রিলিজিয়ন, ঈশ্বরের অস্তিত্বের উপর একটা গবেষণা-গ্রন্থ… দ্য রিজেক্টেড টাই, নাটকের একটা বর্ষপঞ্জি, দ্য গেলেন্ট সেক্সন, একটা মিলিটারি পঞ্জিকা, মাদাম দ্য পম্পাদিউ’র চিঠি… একটা ছন্দের ডিকশনারী” (লিঁ, ১, ৫৬৮)।  এইরকম বিচিত্র জিনিস সবদিক দিয়াই  বুঁভা এবং প্যেকুশেঁ’র সমতুল্য: শুধুমাত্র অল্পকিছু জিনিস বাদ গেছে, যা আমরা এইখানে পাই না, অল্পকিছু  যোগাযোগ, এইখানে পড়তে গেলে কিছুটা ফ্লবেরিয়ান দক্ষতার মতো ব্যাপার।  যা-ই হোক, মার্কুইস এই তালিকা লিখেন নাই, যদিও তিনিই সেইজন যে এই সংগ্রহ জড়ো করেছিলেন, যার নায়কোচিত সাংস্কৃতিক প্রকৃতি সংস্কৃতির সাথে হাস্যকর একটা সর্ম্পক হিসাবে ছিল। দ্বৈত প্রমাণ: অলঙ্কারময়তার শক্তিতে যাতে স্যাডে সক্ষম ছিলেন, আর লেখালেখির শক্তিকে তিনি তার কাজে লাগাইছিলেন

১০. স্যাডের কয়েকজন কমবয়স্ক সেক্রেটারি ছিল (রেলিনে, তরুণ মালাটিঁ বা লামালাতেঁ, রলাঁ, লেভারেঁ, যার প্রতি তিনি জেলাস ছিলেন এবং যার প্রতিকৃতি তিনি একটা ছুরিকলমের আগায় বিদ্ধ করে রাখছিলেন), তারা স্যাডিয়ান গেমের যার ভিতর দিয়া তারা একইভাবে লেখালেখির এবং লাম্পট্যের চাকর ছিল।

১১. স্যাডের ডিটেনশনের তালিকা শুরু হইছিল ১৭৬৩ তে (যখন তার বয়স তেইশ বছর) আর শেষ হইছিল তার মৃত্যুতে, ১৮১৪ তে। প্রায় বিরতিহীন এই বন্দিদশা পুরানা আমলের শেষ বছরগুলা, বিপ্লবের সংকট এবং সম্রাট, সংক্ষেপে, আধুনিক ফ্রান্সের অর্জনগুলার বিরাট পরিবর্তনের ফাঁকে এইটা আছে। যখন দোষ দেয়া সহজ, বিভিন্ন শাসন-আমলকে যা মার্কুইসকে বন্দীর পিছনে ছিল, একটা উচ্চতর অস্তিত্ব, দমনের একটা অনুচ্চারিত উৎস (সরকার অথবা রাষ্ট্র) যা স্যাডের মধ্যে দেখছিল অনৈতিকতা এবং নাশকতার একটা শুদ্ধ নির্যাস: স্যাডে ছিলেন একটা চিরন্তন দ্বন্দ্বের আর্দশ নায়কের মতো: তারা কি কম অন্ধ ছিল (আর তারপর, তারা ছিল বুর্জোয়া, তারা তাই ছিল না?), মিঁশেলেট আর হুগো তাঁর ভিতরে উদযাপন করতে পারতো স্বাধীনতার জন্য একজন শহিদের ভাগ্য। এই সহজলভ্য ইমেজের বিপরীতে, আমাদের মনে রাখা দরকার যে স্যাডের আটকাবস্থা ছিল ঐতিহাসিক, তারা তাদের অর্থ বাইর করবে সমসাময়িক ইতিহাস থিকা, আর যেহেতু ইতিহাস সংক্ষেপে সামাজিক পরিবর্তনের, স্যাডের বন্দিত্ব ছিল কমপক্ষে দুইটা পরপর এবং ভিন্ন স্থিরতার ব্যাপার, সাধারণভাবে বলতে গেলে, দুইটা জেল। প্রথমে (ভিয়েন্সে, বাস্তিলে, বিপ্লবের প্রাক্কালে স্যাডের মুক্তির আগ পর্যন্ত) আইনের বিষয় ছিল না। যদিও স্যাডের বিচার করা হইছিল এবং মৃত্যুদন্ড দেয়া হইছিল এক্সিস পার্লামেন্টের মাধ্যমে স্যাডোমির জন্য (মার্সেই এর ঘটনায়), লাঁ কস্তাঁতে কয়েক বছর পালাইয়া থাকা এবং আত্মগোপনের পরে যদিও তারে ১৭৭৭ এ রু জ্যাকবে গ্রেপ্তার করা হইছিল, এইটা ছিল একটা লেটার দো কেঁসে (মঁন্তেয়োঁ’র লেডি প্রেসিডেন্ট উস্কানিতে রাজা যা ইস্যু করছিলেন) এর অধীনে; স্যাডোমি’র অভিযোগ তুলে নেয়া হইছিল এবং রায় বাতিল করা হইছিল, তারপরও তারে জেলে যাইতে হইছিল কারণ লেটার দো কেঁসে ছিল একটা স্বাধীন কোর্ট ডিক্রি, যা কার্যকরী ছিল; এবং তারে যে ছেড়ে দেয়া হইছিল তার কারণ ছিল সাংবিধানিক সভা ১৭৯০ এ লেটার দো কেঁসে বাতিল করছিলো; এইভাবে এইটা সহজেই বোঝা যায় যে, স্যাডের প্রথম বন্দিত্বের কোন আইনি বা নৈতিক কোন মাহাত্ম্যই ছিল না; স্যাডেরে মুক্তি দেয়া হয় যারে “ধরে রাখা” হইছিল; এবং একটা পারিবারিক অর্থ অনুযায়ী তারে বাঁচানো হইছে; তার প্রথম বন্দিত্বের পরিস্থিতিটা ছিল ফিউডাল: জাতের আদেশ, নৈতিকতার না; রাজা, যে ছিল লেটার দো কেঁসের ছাড়কর্তা, এইখানে মোটেই জনগণের  প্রতিনিধি ছিলেন না। স্যাডের দ্বিতীয় বন্দিত্ব (১৮০১ থেকে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত: সেইন্ট-পিলেজে, বিঁকটে, এবং চার্টনে) আরেকটা ব্যাপার; পরিবার মুছে গেলে, বুর্জোয়া রাষ্ট্র ক্ষমতায়, এইটা হচ্ছে (এবং সুবিবেচক শাশুড়ি না) যা স্যাডেরে বন্দি করে (যদিও প্রথমবারের চাইতে একটা বিচারের মতো না) কুখ্যাত বই লেখার জন্য। এইখানে একটা বিভ্রান্তি (যা নিয়া আমরা এখনো চেষ্টা করে যাইতেছি) স্থাপিত হইছে নৈতিকতা এবং রাজনীতির মধ্যে। এইটা শুরু হইছে বিপ্লবী ট্রাইবুনালের সাথে (যার মারাত্মক অনুমোদন সবসময়ই পরিচিত), যা “যেইসব ব্যক্তিরা নৈতিক অপকর্মরে লালন করে”  তাদেরকে অর্ন্তভুক্ত করে জনগণের শত্রুদের হিসাবে; এইটা জ্যাকোবিনের ডিসকোর্সে চালু থাকে (“সে বড়াই করে” পিকস্ এ স্যাডের কমরেডরা বলতো “নিজেরে দেশপ্রেমিক দেখানোর জন্য বাস্তিলে তারে যে চুপ করানো হইছিলো পুরানা আমলে, যেখানে সে কোন ‘মহৎ’ জাতের ছিল না, সে অন্য ধরণের সমুচিত শাস্তির ভাগীদার হইতে পারতো”; অন্যভাবে বলতে গেলে, বুর্জোয়া সাম্য তারে তখনই, আইনিভাবে, একজন অনৈতিক অপরাধী বানাইয়া ফেলছে); তখন রিপাবলিকান ডিসকোর্সে (“জাস্টিন” ১৭৯৯ এ একজন সাংবাদিক বলছিল, “একটা কাজ যা রাজকীয় সংবাদপত্র লাঁ নেসেসিয়ারে মতো ভয়ংকর, কারণ যদি রিপাবলিকানদের তাদের সাহসের উপর পাইতে হয়, তারা নৈতিকতা দিয়া সমুন্নত; পরেরটার বিনাশ সবসময় সবসময় সাম্রাজ্যের বিনাশের দিকে নিয়া যায়”); আর শেষ পর্যন্ত, স্যাডের মৃত্যুর পর, বুর্জোয়া ডিসকোর্সে (রয়ার-কোলার্ড, জুলস জেনিন, ইত্যাদি);  স্যাডের দ্বিতীয় জেল (যেইখানে সে আজকে আছে, যেহেতু তাঁর বই ফ্রান্সে ফ্রিলি বেচাবিক্রি হয় না) এই কারণে না যে একটা পরিবার নিজেকে রক্ষা করতেছে, বরং একটা পুরা রাষ্ট্রের জড়ো-হওয়া পদ্ধতিগুলি (ন্যায়বিচার, শিক্ষা, প্রেস, সমালোচনা), যা – চার্চের  মতোই – নৈতিকতার সেন্সর করে এবং সাহিত্যিক উৎপাদনরে নিয়ন্ত্রণ করে। স্যাডের প্রথম আটকাবস্থা ছিল বিযুক্ত হওয়ার ব্যাপার (সিনিক্যাল); দ্বিতীয়টা ছিল (এখনো আছে) , শাস্তি-সংক্রান্ত, নৈতিক; প্রথমটা তৈরি হয় একটা প্রাকটিস থিকা, দ্বিতীয়টা একটা আদর্শ থিকা; এইটা তাই প্রমাণ করে যে স্যাডেরে দ্বিতীয়বার বন্দি করাটা, এইটা আবশ্যিকভাবে একটা দার্শনিক সাবজেক্টরে মবিলাইজ করে সর্ম্পূণ নিয়ম এবং তার একসেপশনের উপর ভিত্তি কইরা: তাঁর বইগুলা লেখার কারণে, স্যাডেরে চুপ করানো হইছিলো একটা পাগলমানুষ হিসাবে।

 

বইয়ের প্রচ্ছদ

বইয়ের প্রচ্ছদ

১২.  ভিনসেনাঁ অথবা বাস্তিলে তিনি যে চিঠিগুলি পাইছিলেন অথবা লিখছিলেন, স্যাডে সেইখানে দেখতে পাইতেন বা লিখে রাখতেন কিছু নাম্বার, যারে তিনি বলতেন সংকেত। এই সংকেতগুলা তারে সাহায্য করতো কল্পনা করতে অথবা পড়তে (এমন মনে হইতো যে তার পত্রলেখক ইচ্ছাকৃতভাবে সেইগুলা দিছে  এবং সেন্সর এড়াইতে পারছে) চিঠি-পাওয়া এবং তার বউয়ের দেখা করার মাঝখানের দিনগুলা, বাইরের বিনোদনের জন্য একটা অনুমতিপত্র, অথবা তার স্বাধীনতা; বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সংকেতগুলা ছিল পরশ্রীকাতর (সংখ্যা তত্ত্বটা আমার বিপক্ষে কাজ করতেছে…); নাম্বারের এই বাতিকটারে বিভিন্ন লেভেলে পড়া যাইতে পারে; প্রথম, স্নায়ুবৈকল্যের প্রতিরক্ষা: তার ফিকশনে স্যাডে স্থিরভাবে বুককিপিং করতেন: সাবজেক্টগুলার, তন্ত্রগুলার, দোষীদের শ্রেণীকরণ করা, আর, সবার উপরে, ইগনেশাস লয়েলা’র মতো, একটা খাঁটি অবসেসিভ টুইস্ট, তার চোখ এড়ানোর জন্য হিসাব রাখতো, নাম্বারের ক্ষেত্রে তার ভুলগুলার জন্য, তারপরও, নাম্বার, যখন এইটা একটা যৌক্তিক ব্যবস্থারে বিক্ষিপ্ত করে (বরং আমরা হয়তো বলতে পারি যে ইচ্ছাকৃতভাবে বিক্ষিপ্ত করার জন্য), একটা পরাবাস্তব ধাক্কা দেয়ার মতো ক্ষমতা রাখে: “১৮ তারিখে  ৯ টায়, ঘড়িটা ২৬ বার বাজলো” স্যাডে তার জার্নালে নোট রাখতেন; সবশেষে, সিগনিফায়ারে ঢুকার জন্য নাম্বার হইলো বিজয়ের পথ (এইখানে উচ্চারণের মিলের কারণে একটা শব্দ-কৌতুক আছে, ফরাসীতে, “টু কাম” ভিন্ট, এর অতীত-কাল হইলো “বিশ” নাম্বার, ভিন্টগ) : (অন্য আরেকটা দিনে যেহেতু আমাদের দরকার একটা ২৪, একটা চাপরাশি এম. লে নর (একজন পুলিশ অফিসার) হওয়ার ভাব করতেছিলো, যাতে কইরা আমি মঁসিয়ে এম.লে নর’কে লিখতে পারি আসার জন্য, ৪ টার সময় (vint le 4), এইভাবে ২৪(vingtquatre)।” গণনাপদ্ধতি হইলো লেখালেখির শুরু, এইটারে স্বাধীন করার অবস্থান: একটা সংযোগ যা আপাতভাবে ইডিওগ্রাফির ইতিহাসে সেন্সর করা,  যদি আমাদেরকে জে.এল.সেফারসের হায়রোগ্লাফিক এবং কালীকাকর এর উপর বর্তমান কাজগুলিকে বিশ্বাস করতে হয়: ভাষার ফোনোলজিক্যাল তত্ত্ব (জ্যাকবসন) অনুচিতভাবে ল্যাঙ্গুয়িস্টকে লেখালেখি থিকা আলাদা করছে; হিসাব করা তারে কাছাকাছি নিয়া আসবে।

১৩. স্যাডের একটা ফোবিয়া আছিল: সমুদ্র। স্কুলবাচ্চাদের কী পড়তে দেয়া হইবো: বোদলেয়ারের কবিতা (মুক্ত মানুষ, তুমি সবসময় সমুদ্ররে চেরিস করবা…”) অথবা স্যাডে (“আমি সবসময় ভয় পাইছি আর চূড়ান্তভাবে অপছন্দ করছি সমুদ্ররে…”)?

১৪. স্যাডের একজন প্রধান নিপীড়ক, পুলিশ লেফটেনেন্ট সার্টিন, একটা সাইকোপ্যাথলজিক্যাল অবস্থার শিকার ছিলেন যে, একটা ন্যায় (সাম্য) সমাজে তার ভিকটিমদের মতো একই ধরণের বন্দিদশা তার থাকতো: তার পরচুলার ফেটিশ ছিল: “তার লাইব্রেরীতে সব রকমের সব সাইজের পরচুলা থাকতো: সে পরিস্থিতি অনুযায়ী তাদের পড়তো; অন্য আরো কিছুর সাথে তার একটা গুড-লাক পরচুলা ছিল (পাঁচটা আলতোভাবে ঝুলানো ছোট কোঁকড়াচুল) আর একটা পরচুলা ছিল অপরাধীদের জেরা করার জন্য, অনেকটা সাপের মুখের মতো, যাকে বলা হইতো, নির্মম” (লিঁলে, II, ৯০); বিনুনির লিঙ্গমূর্তির মূল্য সর্ম্পকে সচেতন হইয়া, আমরা কল্পনা করতে পারি স্যাডে কিভাবে লালায়িত ছিলেন তাঁর ঘৃণিত পুলিশের ছোট পরচুলায় ক্লিপ পড়ানোর জন্য।

১৫. তাঁর সময়ের সামাজিক খেলাগুলি, দ্বিগুণ জটিল – কারণ ইতিহাসে খুব বিরল – ছিল সমকালীন এবং সংকেতময়, উভয়ই, পুরাতন আমলের ক্লাশগুলির জীবন্ত চিত্রপট দেখাইতো (দৃশ্যত অসচল) এবং ক্লাশের পরিবর্তন (বিপ্লবের ভিতর),স্যাডে ছিলেন খুবই সচল: একজন সামাজিক ভাঁড়, ক্লাস সিস্টেমে যে কোন ছোট জায়গা দখল করতে পারতেন; লা কস্তেঁ’র লর্ড, মাল কোঁলে’র প্রতি ভালোবাসায় একজন বুর্জোয়া তারে উচ্ছেদ করছিলো, একজন ভাড়া আদায়কারী, যে অভিনেত্রীদেরকে পরিচয় করাইতো একটা জাঁকজমপূর্ণ সুলতান (একটা ড্রেসিং টেবিল) দিয়া, পরবর্তীতে, পিক্ সেক্টরের একজন সদস্য, সে ছিল সামাজিকভাবে নিরপেক্ষ শিক্ষিত একজন লোকের মতো, একজন নাট্যকার;  ইমিগ্রেন্টের লিস্ট থিকা বাদ যাওয়া এবং তার প্রথম নামের প্রতি প্রাপ্ত দ্বিধা যা আজকেও আছে, সে সক্ষম ছিল (অথবা তাঁর পরিবার) প্রতিভাত হইতে ইতিহাসের পরিবর্তিত মুহুর্তগুলাতে, যেমনটা সে চাইতো, সামাজিক শ্রেণী’র বিন্যাসে। সামাজিক চলমানতার সোশিওলজিক্যাল ধারণারে সে সম্মান করতো, কিন্তু একটা কৌতুকপূর্ণভাবেই; খুদে শয়তান বোতলের মতো সে সামাজিক স্কেলে উপর-নিচ করতো, একটা প্রতিফলন, আবারো টার্মটার আর্থ-সামাজিক অর্থে, অনুকরণের জন্যে সে এই প্রতিফলন করতো না অথবা স্থির-সংকল্পের একটা পণ্য হিসাবে, বরং একটা আয়নার অ-আত্মসচেতনতার খেলা হিসাবে। চরিত্রগুলার এই ঘুর্ণিটাতে, একটা নির্দিষ্ট জায়গা: আদব-কায়দাগুলি, জীবনের পথ, যা ছিল সবসময় অভিজাত।

১৬. স্যাডে কুত্তা খুব পছন্দ করতেন; ছোট পা, দীর্ঘ রেশমি লোমের কুকুর (স্প্যানিওলস) এবং লোমওলা কুকুর (সেটরস); মিওলাসঁ এ উনার এইগুলা ছিল, ভিনসেনাঁতেও উনি তাদেরকে চাইছিলেন। এর মাধ্যমে কি নৈতিক (অথবা বাজেভাবে: পুরুষোচিত) নিয়ম নাশকতা’র সর্ব্বোচ লোকটা বাদ দিতে পারেন এই জন্তুগুলির প্রতি ক্ষুদ্র মমতা দিয়া?

১৭. ভিনসেনাঁতে, ১৭৮৩ তে জেলখানা কর্তৃপক্ষ বন্দীদের জন্য রুশো’র কনফেশানস  পাওয়া নিষিদ্ধ করেন। স্যাডে মন্তব্য করেন: “তারা আমারে এইটা চিন্তা করতে সম্মানিত করে যে একজন একাত্মবাদী লেখক আমার জন্য বাজে বই হইতে পারে; আমি যদি অই অবস্থায় থাকতে পারতাম… বুঝতে পারি, এইটা এমন জায়গা যেইখানে একটা জিনিসরে ভালো অথবা খারাপ বানানো হয়, অথচ সেই জিনিসটারে না… এইখানে শুরু করেন, প্রিয় স্যারেরা, আমারে বইটা পাঠানোর রিকোয়েস্ট করি, যথেষ্ঠ সুবুদ্ধির পরিচয় দেন বোঝার মাধ্যমে যে ধর্মান্ধ-পশমের-ভিতর মারা-যাওয়া আপনাদের জন্য, রুশো একজন ভয়ংকর লেখক, আর এইটা আমার লাইগা একটা চমৎকার বই হইতে পারে। আমার লাইগা, জঁ জ্যাকঁ হইলো আপনাদের লাইগা ইমিটেশন অফ ক্রাইস্ট  যা…”  সেন্সরশীপ দুইটা স্তরে কাজ করে: কারণ এইটা দমনমূলক, কারণ এইটা বেকুব; এই কারণে আমাদের সবসময় পরস্পরবিরোধী তাড়না থাকে এইটারে মোকাবিলা করার এবং একটা শিক্ষা দেয়ার।

১৮. হঠাৎ কইরা ভিনসেনাঁ থিকা বাস্তিলে বদলি হওয়ার সময় স্যাডে একটা বিরাট বাড়াবাড়ি কইরা ফেললেন, কারণ তিনি তার বিশাল বালিশটা নিয়া আসার অনুমতি পাইলেন না, যেইটা ছাড়া তিনি ঘুমাইতে পারতেন না, যেহেতু তিনি তার মাথা অস্বাভাবিকরকমের উঁচাতে তুইলা ঘুমাইতেন: “অসভ্যগুলি!”

১৯. তার সমস্ত জীবন ধইরা, ম্যারকুইস দো স্যাডের প্যাশন মোটেই ইরোটিক ছিল না (ইরোটিসিজম প্যাশনের চাইতে খুবই আলাদা), এটা ছিল থিয়েরেটিক্যাল: অপেরার তরুণ মহিলাদের সাথে তারুণ্যদীপ্ত অবৈধ যৌন যোগাযোগ, অভিনেতা বোরদেসকে লা কোস্তেঁতে ছয়মাস চুক্তিতে রাখা নাটকের জন্য, আর তার পীড়নের, একটা আইডিয়া: তার নাটকগুলি অভিনীত করা; জেলখানা থিকা নামেমাত্র ছাড়া পাওয়ার জন্য (১৭৯০), কমেডি ফ্রাঁসের অভিনেতাদেরকে বারবার রিকোয়েস্ট করা; আর সবশেষে, অবশ্যই চার্টনের থিয়েটারকে।

২০. একটা বহুত্ব, যার সর্ম্পকে স্যাডে ভালোই সচেতন ছিলেন, যেহেতু তিনি এইটা নিয়া হাসতেন: ১৭৯৩ এ একটা কমন-ল কেইসে নাগরিক স্যাডেরে জুরি হিসাবে মনোনয়ন দেয়া হইছিল (একটা জাল চেকের বিষয়ে): স্যাডানিয়ান টেক্সটের দ্বৈত শুনানিতে (যেইখানে স্যাডের জীবন একটা অংশ): অপরাধের আত্মপক্ষসমর্থনকারী এবং তার বিচারক একই সাবজেক্টের মধ্যে একজোট, যেন একটা বৈদিক শ্লোকের মধ্যে সস্যুরিয়ান অ্যানাগ্রাম উৎকীর্ণ করা (কিন্তু একটা সাবজেক্টের আর কি অবশিষ্ট থাকে যেখানে সাবজেক্ট নিজেই একটা দ্বৈত শিলাস্তম্ভের ভিতরে তৎপর থাকে?) ।

২১. দরদালানের দর্শন: সেইন্ট-পিলেজ এ বন্দী থাকা অবস্থায় (৬৩ বছর বয়সে), স্যাডে, আমাদের বলা হইলো যে, ব্যবহার করছিলো “তার কল্পনা যতোটা পারে, তার প্রত্যেকটা উপায়রে সে ব্যবহার করছিল… তরুণদেরকে প্রলুব্ধ এবং বিকৃত করার জন্য (তার ল্যাম্পটরে ফুলফিল করতে তরুণ বোকাদের সাথে)… যারা সেন্ট-পিলেজে বন্দী ছিল একই র্দুভাগা দশা ভোগ করতেছিল এবং দৈবাৎ কারণে তার সাথে একই করিডোরে আছিলো।”

২২. যে কোন আটকাবস্থা একটা শৃংখলা: একটা তিক্ত বিবাদ আছে এই শৃংখলার নিজের ভিতর; এইটা থিকা মুক্ত হওয়াটা না (এইটা স্যাডের ক্ষমতার বাইরে ছিল), বরং এর অবরোধগুলারে ডিঙ্গানোটা। তার জীবনের মোটামুটি পঁচিশ বছর একজন বন্দী হিসাবে, জেলখানায় স্যাডের দুইটা আসক্তি আছিলো: বাইরের ব্যায়াম এবং লেখালেখি, যেইটা গর্ভণররা এবং মন্ত্রীরা নিয়মিত করতে দিতো, আবার নিয়াও নিতো, একজন বাচ্চার কাছে দেয়া ঝনঝনি খেলনার মতো। বাইরের ব্যায়ামের দরকার এবং আকাংখাটা সহজেই বোঝা যায় (যদিও স্যাডে সবসময় তার অভাবরে প্রতীকী বিষয়বস্তুর সাথে, মেদবাহুল্যের সাথে সংযুক্ত করছেন);  এই দমন, আবশ্যিকভাবে, যে কেউ একজন দেখতে পারবে, লেখালেখি করাটা ছিল বইটারে সেন্সর করা; আর যা-ই হোক, এইখানে যেইটা গ্লানিকর যে, লেখালেখি করাটা শারীরিক  ভাবে নিষিদ্ধ ছিল; স্যাডের “যে কোন প্রকারের পেন্সিল, কালি, কলম এবং কাগজ” ব্যবহারের অনুমতি আছিলো না। হাত, পেশী, রক্ত সেন্সর করা হইছিল। চারদিকে ঘিরা ছিল নপুংসকীকরণে, বাইবেলীয় বীর্য বাইর হইতে পারতো না; ডিটেনশন হয়া উঠলো রিটেনশন; ব্যায়াম ছাড়া, কলম ছাড়া, স্যাডে হয়া উঠছিলেন থলথলে, হয়া উঠছিলেন একজন নপুংসক।

 

The following two tabs change content below.
Avatar photo
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →