Main menu

ইনারিতুর সাদা নায়ক

গোল্ডেন গ্লোব পাইলো ইনারিতু-রেভন্যেন্ট-ডিক্যাপ্রিও; রেভন্যেন্টের কাছে হারলো ম্যাড ম্যাক্স: ফিউরি রোড-জর্জ মিলার।

রেভন্যেন্ট লইয়া আলোচনাগুলিতে দেখবেন ইস্যু হিসাবে থাকে ন্যাচারাল লাইট-সিনেমাট্যোগ্রাফি, স্ট্যান্ট, অ্যাডভেঞ্চার; বাট যদি বোঝার ট্রাই করেন যে, এই থিম/ঘটনা লইয়া এখন একটা সিনেমা বানাবার কথা মনে আইলো ক্যান? এই ঘটনা লইয়া আগেও সিনেমা হইছে, সেইটা অবশ্য দেখি নাই আমি। বাট রিস্ক লইয়া কইতাছি, এখন এই সিনেমা বানাবার ইন্টারেস্টের গোড়া আলোচনার মেইন ইস্যুগুলির কোনটাই না; মুভির ঘটনাটা ঘটার সেই টাইমে পসিবল কিছু হিস্ট্রিক্যাল ফ্যাক্টস ডিল করার দরকারেই এখন এই মুভি।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]

গত কয় বছরে হলিউড প্রি-কলম্বাস আমেরিকান পিপল নতুন কইরা রিপ্রেজেন্ট করতাছে; এই রিপ্রেজেন্টেশন রিডেম্বশন এক ধরনের, ১৯৬০-৭০ দশকে মেইনলি ওয়েস্টার্ন সিনেমা যেমনে প্রি-কলম্বাস আমেরিকান পিপলরে রিপ্রেজেন্ট করছিলো সেই পাপ মোছার ট্রাই করতাছে হলিউড এখন। এই পাপটা অবশ্য স্লেভারি সূতায় যাওয়া আমেরিকান কালাদের ব্যাপারেও ফিল করে হলিউড। সো, এখন হলিউডে ওয়েস্টার্ন বানানো হইতাছে বড় বড় বাজেট-ব্যানারে। মনে কইরা দ্যাখেন টারান্টিনোর ডিজ্যাঙ্গো আনচেইন্ড বা এ বছরের হেইটফুল এইট; টারান্টিনো কালাদের লইয়া ডিল করছেন; ২০১৫ সালের আরো কয়েকটা ওয়েস্টার্ন সিনেমা দেখছি যেগুলি প্রি-কলম্বাস আমেরিকান পিপল ইস্যুটারে ডিল করতাছে আগের থেকে সিগনিফিক্যান্টলি ডিফরেন্ট অ্যাপ্রোচে; আগের সেই ঘেন্না জাগানো ক্যানিবাল রেড ইন্ডিয়ানরা যেন নাই আর! রিঅ্যাকশনও অবশ্য আছে–বোন থমাহ্যক যেমন! এখনকার হলিউডে রিপ্রেজেন্টেড প্রি-কলম্বাস আমেরিকান পিপল রেসপেক্ট পাইতাছে বেশ; কইতে পারেন, তাগো মেডিক্যাল জ্ঞান আপহোল্ড কইরা ভালো ওঝা হিসাবে দেখাইতাছে। হুম, রেড ইন্ডিয়ানদেন ভালো ওঝা হিসাবে আগেও কমবেশি দেখানো হইছে, বাট এখনকার মতো দেখানো হইতো না; কেন কইলাম? কারণ, খেয়াল করেন, আগে রেড ইন্ডিয়ানদের ওঝার লগেই কিন্তু ভালো কুত্তা হিসাবেও দেখানো হইছে–মানে ওয়েস্টে অন্যকে ট্র্যাক করতে তাগো ইউজ করা হইতো; এগ্রেসিভ ক্যানিবালিজম তো আছেই লগে।

ম্যাডম্যাক্স ফিউরি রোড সিনেমার একটা সিন

ম্যাডম্যাক্স ফিউরি রোড সিনেমার একটা সিন

বিপরীতে এখন ইউরোপ থেকে যাওয়া কালচারের প্যারালাল একটা কালচার হিসাবে দেখানো হইতাছে, আবার তারা হামলাকারী না, বরং পয়লা হামলাটা করতাছে ইউরোপিয়ানরাই; ভালো ইউরোপিয়ানরা কেমনে তাগো লগে পীরিত করছিলো, তাগো রেসপেক্ট করতে পারছিলো ইউরোসেন্ট্রিজম এড়াইয়া– সেইগুলি এখনকার রিপ্রেজেন্টেশনে বিরাট দেখাবার ব্যাপার। হলিউডে এই পর্বের বড়োসড়ো শুরু (আগের পর্ব থেকে ক্লিয়ার ডিপারচার) মনে হয় ১৯৯০ দশকে কেভিন কস্টনারের ড্যান্সেস উইথ দ্য উলভস্ দিয়াই।

 

[youtube id=”uc8NMbrW7mI”]

 

যাই হৌক, রেভন্যেন্ট সিনেমায় ডিক্যাপ্রিও যে নায়ক সেইটা কেবল দুশমনী নেচারে সারভাইভ করতে পারার ভিতর নাই, আরো বেশি আছে প্রি-কলম্বাস পিপলের লগে পীরিত করাতেই; টম হার্ডি যে ভিলেইন সেইটা খালি ডিক্যাপ্রিওর লগে দুশমনির কারণেই না, আরো বেশি ঐ পিপলের প্রতি দুশমনির কারণেই; দুইজনের দুশমনিতে রেসিজম কেমনে রোল প্লে করছিলো সেইটারে একটা বিরাট দেখাবার ব্যাপার বানাইছেন ইনারিতু–ইভেন মনে হইতে পারে যে, রেসিজম না থাকলে ঐ ঘটনাটাই থাকতো না, রেসিজম না থাকলে টম হার্ডি ভিলেইনই হইতো না আসলে! মজা হইলো, এই সিনেমা এইটাও কিন্তু কইতাছে যে, আমেরিকায় আর্লি ইউরোপিয়ান সার্ভেয়াররা বেসিক্যালি রেসিস্ট আছিলোই না–যেই সরকারি দপ্তর দেখানো হয় সেইটার লিডারও কিন্তু ভালো, স্রেফ দুয়েকজন দুষ্ট লোকরাই প্রি-কলম্বাস পিপলদের মাইরা সাফ কইরা ফেলছিলো!

কইতেছিলাম, হারা মুভিটা হইলো ফিউরি রোড; এইটাতেও নতুন একটা ব্যাপার আছে, যেইটা হলিউড আগে ততো করে নাই; মেয়েদের দেখাবার ব্যাপারে, মুভিতে ডিটারমাইনিং মেইন রোল দেবার বেলায় নতুন ট্রেন্ডের ফলো করতাছেন জর্জ মিলার; হাঙ্গার গেমস্ বা এবারের জয়’র জেনিফার লরেন্স ক্যারেকটারে খেয়াল করলে ভালো বুঝবেন ব্যাপারটা। ফিউরি রোডে আলতো ফিমিনিজম আছে, মেল-ফিমেল পজিটিভলি মেলে তাইলে কেমন বিপ্লব হইতে পারে সেই প্রোপোজাল আছে অনেকটা; মাসকুলিন এক্সপ্লয়টেশনের পিক কতটা ভায়োলেন্ট আর আগলি হইতে পারে সেইটাও বেশ দেখাইছেন জর্জ মিলার প্রায় গোপনে, মানে অডিয়েন্স যেমন অ্যাকশন চান সেই অ্যাকশনের ভিতর দিয়াই। ফিউরি রোড অ্যাকশন সিনেমার ডেফিনিশনে সিগনিফিকেন্ট কন্ট্রিবিউশন রাখছে ইন ফ্যাক্ট, কয় বছর গেলে মালুম হবে সবার।

 

[youtube id=”KmYNkasYthg”]

 

খেয়াল করার ব্যাপার হইলো, ইস্যু হিসাবে রেসিজম মেল-মেল ব্যাপার যেন, মেয়েরা শিকার হয়, বাট সেইসব মেয়েরা আসলে যেন কোন এক পক্ষের পোলাদেরই, রেসিজমের আলোচনা ফেমিনিজমরে পুসকে হিসাবে ট্রিট করে; সো, রেভন্যেন্ট হইলো মেল-মেল ব্যাপার, আর ফিউরি রোড আসলে মেল-ফিমেল ব্যাপার; গোল্ডেন গ্লোব মেল-মেল ব্যাপারটারে আপহোল্ড করলো আর কি! বেশ অন্যায্যই হইছে মনে করি আমি, রেভন্যেন্টের চাইতে বেটার মুভি ফিউরি রোড, হিউজ ডিফরেন্স; কাহিনির ভিতরে নিজ নিজ আন্ডারলাইং ইস্যুগুলি ডিল করাতেও ইনারিতু অনেক পিছনে, ইনারিতু ইভেন খাপছাড়া, ইনসার্ট করছেন যেন জোর কইরা, মুভির পার্ট না–এমন মনে হইতে থাকে! ফিউরি রোডে ডিরেক্ট যা দেখাইতে চাইতাছেন সেইটা লইয়া মুভি–ইস্যু এবং অ্যাকশনের এমন মিলমিশ হওয়া সিনেমা বেশি নাই মে বি!

দূরের যেন এমন একটা ব্যাপার হইলো, এই অ্যাওয়ার্ড মে বি কইতাছে ডেমোক্রেট ক্যান্ডিডেট হিসাবে হিলারি ভালো হবেন না!

 

১১ জানুয়ারি ২০১৬

The following two tabs change content below.
Avatar photo

রক মনু

কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →