জাপানী দুঃখ অথবা সাচ্চা ‘সেক্যুলারিজম’
২০০৫ সালের দুইটা ফিকশন, একটা সিনেমা আরেকটা কেচ্ছা। ‘নেভার লেট মি গো’ নামে কেচ্ছাটা লিখছেন বৃটেনে থাকা জাপানী রাইটার, ইশিগুরো। আর সিনেমার নাম ‘আইল্যান্ড’, হলিউডের সিনেমা–স্কারলেট জোহানসেন এইটার নায়িকা।
দুইটার মাঝে কোন যোগাযোগের কথা কেউ কন নাই। তবু আমার হিসাবে দুইটা প্রায় একই ফিকশন। কনসেপ্ট এবং কনটেক্সট একই, কিন্তু অথরের ফিলোসফির ফারাক ফিকশন দুইটারে দুই চেহারা দিছে। সম্পর্ক ছাড়াই এমন সম্পর্ক হলিউডে/আমেরিকায় মাঝে মাঝে দেখা যায়। যেমন, ২০০৮ সালের জাপানী ‘ব্যাটল রয়্যাল’ সিনেমার কনসেপ্ট আপনে পাইবেন এক আমেরিকান কেচ্ছায়, যেইটা পরে ‘হাঙ্গার গেমস্’ নামে সিনেমা হইলো, জেনিফার লরেন্সকে গিফট্ পাইলাম আমরা! এইখানে কইতে হয়, সিনেমা সবগুলাই দেখছি আমি, কেচ্ছা পড়ি নাই একটাও! ইশিগুরোর কেচ্ছা আপনে পাইবেন একই নামের একটা সিনেমায়, কিরা নাইটলি যেই সিনেমায় আছেন।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]
তো আইল্যান্ড বা নেভার লেট মি গো, দুই ফিকশনেই কনটেক্সটে আছে একটা ডিসটোপিয়ান ফিউচার, যেইখানে নতুন এক কিসিমের হেলথ ইন্সুরেন্স থাকে। এই ইন্সুরেন্স সিস্টেমটা চলে ক্লোনিং দিয়া। আপনে যদি ইন্সুরেন্স করেন তাইলে কোম্পানি আপনার একটা ক্লোন বানাবে, সেই ক্লোনকে পালবে। পরে আপনের যে কোন অর্গান যখন যখন আর কাম করবে না তখন তখন আপনার ক্লোনের সেই সব অর্গান/অঙ্গ কাইটা আপনার শরীলে লাগাইয়া দেওয়া হবে–কিডনি বা হার্ট বা ব্রেন। আপনার ক্লোন হওয়ায় ক্রস-ম্যাচিং প্রোবলেম থাকতেছে না কোন। কোন অঙ্গ নিতে গেলে আপনের ক্লোন যদি মরে তাইলে বাকি অঙ্গগুলা ফ্রিজে রাখা হবে যাতে ভবিষ্যতে আপনের দরকারে ঐগুলা লাগানো যায়।
এমন একটা সেটিং-এ ঘটনার শুরু। তারপর দুই অথর বা ডাইরেক্টর দুই দিকে গেছেন। দুই রাস্তায় যাবার কারণ হিসাবেই কইতেছিলাম ফিলসফির ফারাকের কথা।
ইশিগুরোর লেখা পড়ি নাই বইলা সিনেমাতেই থাকতেছি। দুই সিনেমাতেই আপনার মনে হইতে পারে, ক্রাইসিসটা ঘন হইতেছে পিরিতির ভিতর দিয়া। আসলে কিন্তু তেমন না। হলিউডে পপুলার একটা থিম হইলো–সারভাইভাল, ডিসটোপিয়ান ফিউচারের সিনেমা তো মনে হয় ১০০{855ff4e32ca5c8db0719e8f837cd158afce0d103a8821dfb7d995472b79aa6d7} সারভাইভালের গপ্পো! পপুলার তো অবশ্যই, ফিলসফিক্যাল বেসলাইন মনে হয় এই সারভাইভাল। এই কারণে এমন হলিউডি সিনেমা মোটামুটি একটা অসম্ভবের গপ্পো কয়। কখনো আবার চিপাচাপা বাইর কইরা সারভাইভাল দেখাইয়া দেয়। অসম্ভবের গপ্পো তো হামেশাই পাইবেন–রেভন্যেন্ট থিকা ম্যাড ম্যাক্স: ফিউরি রোড।
কিন্তু ‘নেভার লেট মি গো’ পিরিতের সিনেমাই, ডিসটোপিয়ান ভবিষ্যতের পিরিতি, কিন্তু সারভাইভালের গল্প না এইটা, পোস্টারের দৌড়ের ভিতর সারভাইভালের গন্ধ পাইতে পারেন, কিন্তু না, ক্লোনদের স্যাড রোমান্টিক থ্রিলার।
দুইটারে তুলনা কইরা আমার মনে হইলো, সারভাইভালের আইডিয়া এবং মানুষ সারভাইভ করতে পারে–অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে মানুষ, এই বিশ্বাস মানুষের দুঃখকে স্পেশাল এক চেহারা দেয়। আর সারভাইভালের তেমন আইডিয়া না থাকায় ‘নেভার লেট মি গো’ সিনেমায় দুঃখের চেহারাটা খুবই যুদা, এইটা আমি জাপানি সিনেমার বাইরে পাইছি বইলা মনে পড়ে না, তাই নাম দিছি জাপানি দুঃখ।
সারভাইভাল আছে কয়েক কিসিমের। নিজে না বাঁচলেও লিগেসি রাইখা মরতে পারাও সারভাইভাল। যেমন ধরেন, ব্রেভহার্ট সিনেমায় স্কটিশ ওয়ালেসকে ফাসি দেয় ইংল্যান্ড, কিন্তু প্রিন্সের বউয়ের পেটের বাচ্চায় আছে ওয়ালেসের রক্ত, সেই বাচ্চাই আগামীতে ইংল্যান্ডের মসনদে বইবে–এইটাই ওয়ালেস এবং স্কটিশদের সারভাইভাল। কিছুদিন আগে সারভাইভালিস্ট নামে এক সিনেমাতেও দেখলাম, এমনই লিগেসি রাইখা মরতে পারা। কিন্তু ম্যাড ম্যাক্স বা দ্য আইল্যান্ড বা রেভন্যেন্ট সিনেমায় হিরো সারভাইভ করেন, তারা হারাইয়া দেন বিরাট শক্তিকে, অসম্ভবকে সম্ভব কইরা ফেলেন।
এখন ভাবেন, সারভাইভ করতে যদি না পারেন, ফেল করেন তাইলে কেমন লাগবে আপনার? দুঃখ লাগবে আলবত। কিন্তু সারভাইভ করতে না পারায় নিজের ব্যাপারে কি কি মেসেজ পাইলেন আপনে?
সারভাইভ করতে পারেন নাই মানে আপনে আনফিট। নেচারাল সিলেকশনে বাদ পড়ছেন আপনে, জিতছে আর কেউ। যে জিতলো সে আপনার কম্পিটিটর। ইভোল্যুশনের আইডিয়া দিয়া বুঝবেন যে, আপনে হারাইয়া যাবেন, ইতিহাস থিকা আপনে বাদ। যে জিতলো তার তুলনায় আপনে ইনফিরিয়র। আপনে যদি আনফিট ইনফিরিয়র না হন, তাইলে তো পারতেন! কারণ কেউ না কেউ পারে, অসম্ভব বইলা কিছু নাই। নিজেরে আনফিট এবং ইনফিরিয়র হিসাবে জানলেন আপনে, এইটা আপনার মাঝে ডিপ্রেশন ঘনাইয়া তুলতে থাকবে। আপনের দুঃখ তখন ডিপ্রেশনেরই একটা চেহারা। এই দশা আপনারে সুইসাইডের খুব কাছে লইয়া যাবে, জীবনের অর্থ নাই আর আপনার কাছে।
কিন্তু দেখেন, মানুষের পারার লিস্টের চাইতে না পারার লিস্ট লম্বা মনে হয়! মানুষ যে পারে, এইটা বেশির ভাগ সময় মিছা কথা! আপনে যা পারেন নাই, তা হয়তো কেউ পারবে না। কারণ মানুষ পারে না।
সারভাইভালের গপ্পো তাইলে মানুষের চাইতে মানুষকে বড়ো বানাইয়া দেখায়, মানুষ নামের ঐ আইডিয়াটা ভূয়া! এই হিসাবে সারভাইভালের গপ্পো মানুষকে মেটাফিজিক্যাল বানাইয়া ফালাইতেছে; মানুষের আইডিয়াটা তাইলে রেশনাল না, রিজনিং কাম করতেছে না এইখানে। তাই কইতেছি, মানুষের এই আইডিয়াটা ‘সেক্যুলার’ না মোটেই, মেটাফিজিক্যাল, হামবড়া স্পিরিচুয়াল/আধ্যাত্মিক। নিজের ডেফিনিশন বা পাটাতনটাই আপনের যদি সেক্যুলার না হয় তাইলে পরে আর কতটা আশা করতে পারেন! বা এইভাবে সেক্যুলারিজম নিজেই আরেকটা আধ্যাত্মিক প্রজেক্টই।
[youtube id=”sXiRZhDEo8A”]
নেভার লেট মি গো সিনেমায় ড্রাইভিং ফোর্স হইলো ডিজায়্যার বা বাসনা, সারভাইভাল নয়। সারভাইভালের আইডিয়ার মাঝে ডিজায়্যার আছে, কিন্তু সেইটা একটা টুল, সারভাইভালের দরকারে জীবের মাঝে বাসনা থাকে। কিন্তু এই জাপানি বাসনার লগে সারভাইভালের সম্পর্ক নাই, কিন্তু ডিজায়্যার বা লাভ বা বাসনার দরকারেও জিন্দা থাকা দরকার; নেভার লেট মি গো’র ক্লোনেরাও তাই জিন্দা থাকতে চায়, কামিয়াবির লোভে না, বাসনার দরকারে; কেননা তাগো পিরিতি আছে, আছে বাসনার ১৬ আনা!
কিন্তু আখেরে তারা জানতে পারে, তাগো পারপাস হইলো সার্ভ করা, নিজেদের অঙ্গ দিয়া অন্যরে বাঁচাইয়া রাখা। না, কোন রিভল্ট করে না তারা, মাইনা লয়; মাইনা লয় কওয়াটা অবশ্য মুশকিল, এই কথাটার মাঝে হার মানার ভাবনা আছে একটা! কিন্তু হার মানার ব্যাপার নাই এইখানে, তারা স্রেফ নিজেদের সীমানা জানতে পারলো!
দুঃখ পায় তারা, যাইতে দিতে হয় তাদের, চইলা যায়, কিন্তু না পারার কারণে নয়, বরং তারা জানতে পায়, বাসনার মঞ্জিল তাগো পাওনার ওপারে! ইনফিরিয়রিটির ফিলিং নাই, হারের বেইজ্জতি নাই, কেবল হারাবার দুঃখ আছে–না পাবার দুঃখ, সাচ্চা দুঃখ–না পারার গ্লানি নয়।
জাপান লইয়া ভাবার কিছু ব্যাপার আছে। দুনিয়ায় একমাত্র জাপান হোয়াইট ইউরোপের ডাইরেক্ট হাতের বাইরে, মানে কলোনাইজেশনের পরশ ছাড়া ইউরোপের ফিলোসফি, সায়েন্স, টেকনোলজি, পলিটিক্যাল ভাবনাগুলা নিছে এবং একমাত্র সেই জাপানই ইউরো-আমেরিকান সায়েন্স এবং টেকনোলজির লগে টক্কর দিতে পারতেছে! দুইটা এটম বোমা খাইতে হইছে তারে। ধর্মের হিসাবে যদি ভাবেন, খৃস্টান এবং মোসলমানের খুনাখুনির তুলনায় খৃস্টান এবং বৌদ্ধের খুনাখুনি খুব কম না। খৃস্টানের হাতে হিরোশিমা-নাগাসাকির বৌদ্ধ খুনের মাপে খৃস্টান-মোসলমান একপক্ষ আরেকপক্ষের উপর করে নাই কিছু! ইউরোপের সারভাইভাল এবং রিভেঞ্জের ভাবনা জাপানি সমাজে ততো সেন্ট্রাল হইলে খৃস্টান বনাম বৌদ্ধ ডিসকোর্স হয়তো পাইতাম আমরা!
এটম বোমার ব্যাপারটা যদিও অতো ওজনদার আছিল না তখন! কয়দিন আগে একটা লেখা পড়ছিলাম। সেইখানে কইতেছে, জাপানের শ’খানেক শহর হিরোসিমা-নাগাসাকির সমান বা তারো বেশি পুড়ছিল মার্কিন বোমা হামলায়, দিনে ৫/৭ টা কইরা কোন কোন দিন। তার ভিতর ঐ দুইটার চাইতে বড়ো বড়ো শহরও আছে। বোমা একটা না কয়টা লাগলো পুরা শহর পোড়াইতে সেইটা যারা পোড়ে তাগো ভাবনায় অনেক হেরফের ঘটায় না!
কিন্তু পরে মার্কিন বা জাপানি সরকার এটম বোমা হাইলাইট কইরা দুই পক্ষই সুবিধা পায়। আমেরিকা দুনিয়ার ১ নম্বর মোড়ল হইয়া ওঠে এটম বোমার সুপিরিয়রিটি দিয়া। আর জাপান তার জনতারে কইতে পারে, আমাদের জেতার কথা কিন্তু নতুন এক মহাবোমা আমাদের হারাইয়া দিছে!
আজকের জাপানি সমাজে খৃস্টান বা আমেরিকার প্রতি তেমন ঘেন্না নাই! জাপানি সমাজ ইউরোপের কলোনাইজেশনের বাইরে থাকাতেই মনে হয় কাম এবং তার ফলের একটা আইডিয়া এখনো খুবই সেন্ট্রাল!
ইউরোপঘেষা চিন্তায় যদিও মনে হইতে থাকে, ইন্ডিভিজ্যুয়ালিজম একান্তই ইউরোপের মাল; কিন্তু এইটার আইডিয়া এবং সুরত যদি খেয়াল করেন, দেখবেন, বৌদ্ধধর্মে এইটা সবচে পোক্ত মনে হয়! ব্যক্তির মুক্তি বৌদ্ধধর্মে কেউ ঠেকাইতে পারে না, নিজের বাইরে তার কোন দুশমন নাই, সুখের ব্যাপারে আপনে আর কারো কাছে ধরা না, দুঃখের ব্যাপারেও না; মুক্তি মানে নিজের থিকা মুক্তি, স্বাধীনতাও যেইখানে আপনের মুক্তির রাস্তায় আরেকটা কাঁটা!
বৌদ্ধধর্মে সারভাইভাল কি? সারভাইভাল একটা মোহ, লিপ্সা–দুঃখের কন্টিন্যুশন! কিন্তু নেভার লেট মি গো সিনেমারে বৌদ্ধ সিনেমা কইবার উপায় নাই; এইটা স্রেফ ইউরোপের মেটাফিজিক্যাল সারভাইভালের মিছা কথা না লওয়া। এই সিনেমায় বাসনা আছে, এবং সেইটা পজিটিভ। সুখ একটা চাইবার মতো জিনিসই, সেই জন্য বাঁচতে চায় সিনেমার ব্যক্তিরা–বৌদ্ধধর্মে যেইটা দুঃখেরই আরেকটা কারণ! দুঃখ এবং মুক্তির এই বৌদ্ধ আইডিয়া হয়তো ইউরোপের সারভাইভালের ঐ মিছা কথা না লইবার হিম্মত দিছে ইশিগুরোকে। এইটাই হয়তো আর্টিস্ট/রাইটার হিসাবে ইশিগুরোর সিগনেচার।
সারভাইভালের আইডিয়া দুঃখের কেমন সুরত বানাইতে পারে সেইটা বুঝতে আপনেরা সত্যজিতের পথের পাঁচালী খেয়াল করতে পারেন। এইখানে বুঝতে সুবিধা পাইবেন আরো; কারণ, বিভূতি আর সত্যজিতের পথের পাঁচালীর তুলনা করতে পারতেছেন! বিভূতির থিকা সত্যজিৎ যুদা হইয়া যাইতেছেন ঐ সারভাইভালের আইডিয়া দিয়া; কেননা, বিভূতিতে ঐটা আসল সুর না, সত্যজিতে যেমন।
সত্যজিতের সিনেমার নাম বরং হওয়া উচিত আর কিছু, বিভূতির পথের বদলে সত্যজিৎ দেখাইতেছেন–এক জায়গা থিকা আরেক জায়গায় যাওয়া, যাওয়াটাই দেখাইতেছেন, সারভাইভালের দরকারে। বিভূতির ফিকশনে জিন্দেগি বা লাইফ একটা সফর, সেই সফরের রাস্তার গপ্পো মারতেছেন উনি, সত্যজিতের জিন্দেগি বা লাইফ মানে টিকে থাকা, সফর সেইখানে টিকে থাকার বা সারভাইভালের দরকারে করতে হয় কখনো, আরাম হইলে সেইখানে শিকড় গজাও। বিভূতিতে পথ/রাস্তার শুরু আরো আগে কোথাও, রাস্তা খতম হয় না কখনো, পথের কোন একটা স্পটে কতখন থাকা মানে বিশ্রাম/খান্তি, খুবই টেম্পোরাল–দুই দিনের ঠিকানা। সত্যজিতে রাস্তার শুরু অপু-দুর্গার বাপের বাড়ি, রাস্তায় নামতে হইতেছে কারণ–সারভাইভ করা যাইতেছেন না, রাস্তা খতম হইতেছে কলোনিয়াল মডার্ন শহরে।
সত্যজিতের সারভাইভাল ন্যারেটিভে সনাতন/পুরানা বামুন আর ভাত পাইতেছে না পুরানা সিস্টেমে, আগে যেইখানে ভাতের উপরি ইটও পাইছিল, সেই ইটেই দালান হইছিল। সেই দিন আর নাই। দালান ভাঙছে, ভাতই জোটে না, দালান মেরামত করবে কেমনে! সেই দালান এখন সাপেরা দখলে নিতেছে, সর্বজয়ারা হারতেছে এইবার! সর্বজয়ার অর্থ আদতে এইখানে সব সইতে পারা, সইয়া যাওয়াই যেন জয় করা :)।
সাপের তুলনায় আনফিট তারা, ফিটনেস পরমাণ করতেই যেন দুর্গা চুরি করে, কিন্তু ভোগ করতে পারে না, আসলে আনফিট, তাই মরে।
টিকতে পারে না তারা, সফরে নামতে বাধ্য হয়, নামে। কলোনিয়াল মডার্ন শহরে বরং ধর্মের রমরমা ব্যবসা, বাজারে এই মাল ভালো বিকায়, সেইখানে যাইতেছে বামুন। আর পোলারে পড়াইতে হবে কলোনিয়াল পড়া, সে যেন পারে পৈতা ছাড়াই ভাত জোটাইতে।
বিভূতির সফরের রাস্তার গপ্পো এইভাবে সত্যজিতে হইয়া ওঠে ইউরোপের কাছে ইন্ডিয়ার হারের দলিল, বিভূতির পথের পাঁচালী সত্যজিতের মুন্সিয়ানায় হইয়া ওঠে মডার্নাইজশন জাস্টিফাই করার প্রোপাগান্ডা লিফলেট। বিভূতির সফরের দুঃখ সত্যজিতে হইলো নিজেরে ইনফিরিয়র হিসাবে জানার ডিপ্রেশন। সত্যজিতের পথে গাড়িতে যাইতে থাকা দুঃখী মুখগুলা মডার্ন অডিয়েন্সকে তাই অতোটা ছুইয়া যায়।
৭ই জুন ২০১৭–২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০১৮
রক মনু
Latest posts by রক মনু (see all)
- হিস্ট্রিওগেরাফি এন্ড পলিটিকেল লয়ালটি - অক্টোবর 18, 2024
- খলিফা হইয়া ওঠা - সেপ্টেম্বর 2, 2024
- আমাদের নিয়ত এবং বাংলাদেশের ফিউচার - আগস্ট 25, 2024