যেকোনো সে কি ভাবতে থাকবে যেকোনো শে’রে নিয়া
(ধরা যাক) যেকোনো একটা দিনের যে কোনো একটা সকালের কথা। যেকোনো সে ঘুম থেকে উঠে যেকোনো একটা চেয়ারে আইসা বসলো— যেকোনো দিনের একই নাস্তায়—হয়ত নয়টা কিংবা দশটা অথবা দশটা তিরিশে।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]
নয়টা তো সকাল-ই।
লেকিন দশটাও সকাল।
আর সাড়ে দশটা ভি সকাল।
যেকোনো নাস্তাতেও যেকোনো কিছুই থাকে। একটা ডিম পোচ, দুইটা রুটি; রুটিগুলা পৃথিবীর লাহান। যেকোনো সে এখন তিনটা পৃথিবী খায়; এক কাপ চা— যেকোনো দুধ চা, দুধ চা না খাইলেও চলে; পৃথিবী দিয়া ভিজায়া খেতে খেতে চা গুলা গুলায়ে উঠে; কিন্তু যেকোনো আলু ভাজিটাও ভালো। যেকেউ নাস্তাতে ডিম পোচের বদলে আলু ভাজি দেয় (কতিপয় বাসায় দেয় লেটকাইন্না সুজি)—যেকোনো একটা নর্মসের মতোই। এ’রম কপাল যেকোনো ভাবেই হোক থাকা লাগবে বটে।
দশটা তিরিশের পর আর নাস্তা আসে না। যেকোনো সে বইসা থাকে চেয়ারটাতেই। হয়ত সে সারাদিনই বইসা থাকে ঠিক অইখানটায়। মাগার সাড়ে দশটার পর আর নাস্তা আসে নাকো।
সাড়ে নয়টায়: কামের বুয়া আহে।
দশটা তিরিশে : দুধওয়ালা দুধ দিয়া যায়।
সাড়ে এগারোটায় : ময়লার বাঁশির বাজনা।
যেকোনো সে ভাবতে বসে যেকোনো কিছু নিয়া। কি ভাববে সে? কামের বুয়া আইসা একঘণ্টা কাম কইরা যায়। দুধওয়ালা প্রতিদিন একই দুধ দেয় (এক রঙা দুধ দিতে গরুগুলার কি বিরক্ত লাগে না?), একই সাইজের ডিম খাইতে খাইতে যেকোনো সে বিরক্ত। আর যেকোনো কিছু ভাবতে গেলেই তো সেইম সেইম যেকোনো কিছুই আসে। তাইলে, কি ভাববে সে?
যেকোনো ভাবেই হোক চ্যাপ্টা দুপুর হইতে থাকে। যেকোনো কেউ লেপ্টাইয়া থাকে ঠিক অইখানের চেয়ারটায় (এইটা যেন যেকোনো অইখানটাই)।
ঢংঢং একটা-দুইটা-তিনটা।
যেকোনো ঘড়িতে কোনো মতে তাগদা দুপুর হয়— ধাক্কায় অথবা ঠেলায়।
মেবি দুপুরের শুরুয়াত দুপুর একটায়।
আর দুপুর দুইটা আসে তারপর।
যেকোনো একটা ঘড়িতে ঢংঢং কইরা তিনটা বাজে।
(কি করবেন বলেন? যেকোনো ঘড়ির সিস্টেমই যেন যেকোনো হেরাই বানাইছেন )
এ’রম একটা দুপুর নিয়া যেকোনো সে বুঝতেই পারে না কি করবে অখন; দুপুরগুলা কি বিক্রি কইরা দিবে ইন্ডিয়ার কোনো কচ্ছপের কাছে? আর কীইবা ভাবতে থাকবে এমন দুপ্পুর বেলায়। দুপুরগুলা লুক লাইক যেকোনো একটা দুপুর। যেকোনো সে ভাবতে বসে কাক নিয়া; হেলথ কনশাস দুইটা কাক যেন হাঁটতেছে টিনের চালে। যেকোনো কসরতে যেকোনো ময়লার ভ্যানের মাথায় তারা চক্কর মারতে থায়ে। যেকোনো পাশের বিল্ডিংয়ের লিফটগুলা উঠতেছে এক্কেরে লিফটের মতোই। ইশকুল ড্রেস পরা কয়েকটা মাইয়া খটখট সিঁড়ি বাইতেছে যেকোনো হিট সিরিয়ালের গসিপ লইয়া। কয়েকটা সিঁড়ি উপর-নিচ করতেছে যেকোনো সাধারণ সিঁড়ির লাহান; আর বেবাক টাইমে ঝিমাইতেছে দুই-তিনতলায়।
অথবা হরহামেশা এগুলাই হয়। নতুন কইরা আর কি ভাবতে বসবে যেকোনো সে? যেকোনো হাইঞ্জ যেকোনো কারণেই হোক তাড়াতাড়ি চইলা আসে; আর যেকোনো কেউই কইতে পারবে, এটা তো উইন্টারের যেকোনো একটা দিন। যেকোনো হাইঞ্জে যেকোনো সে কী যে করবে ভাইবাই শেষ করতে পারে না (আর যেকোনো হাইঞ্জ নিয়া লাইক এইরকমই তো ভাবে সবে)।
কিন্তু এখন আর হাইঞ্জ নিয়া কথা বইলা লাভ কী।
যেকোনো হাইঞ্জ পার কইরা যেকোনো রাইত তো চলে আসছেই নিকটে। যেকোনো সে বইসা আছে অই চেয়ারটায় আর ভাবতেছে আর কি কি যেকোনো একটা দিনে ভাবতে পারত সে।
যেকোনো সোশ্যাল সাইটে ফুচকি দিতে পারে— লেকিন এটা সে যেকোনো দিনই করে।
যেকোনো আগের মেইল এগেইন চেক করতে পারে আর যেকোনো পর্নস্টারের নামে আরো দুইতিনবার সার্চ মারতে পারে— যেকোনো সে এইরকম করছে গতমাসে পঁয়ত্রিশশো বার।
কে জানে যেকোনো কেউ হয়ত যেকোনো সে’র মতোই চেয়ারে লেপ্টাইয়া বইসা ভাবতেছে যেকোনো এগুলাই; কিংবা একজন আরেকজনরে ম্যালা আগে থেকেই ফলো দিয়া রাখছে যেকোনো ইন্সটায়। অথবা যেকোনো কেউ-ই হয়ত যেকোনো সে (হইতেও পারে)। কিংবা হাছাই তারা একজন আরেকজনের লগে বাৎচিত করতে চায় আর দেখা হইলেই যেকোনো ভাবে জিগাবে :তুমি কি কসম লিভারপুল সাপোর্ট করো?
তেমনি হয়ত যেকোনো কেউ যেকোনো সে কে জিগাইতে পারে, ‘তোমার কি গার্লফ্রেন্ড নাই? আশ্চর্য! তুমি তো তারে নিয়া ভাবতে পারো আরেকটা যেকোনো দিন।’
যেকোনো কেউ’র লগে দেখা হইলেই বুঝি গার্লফ্রেন্ডের আলাপ পাড়তে হয়— যেকোনো সে চেইতা গিয়া ভাবলো।
ক্যান যে তুমি যেকোনো শে’র ব্যাপারে যেকোনো আগের দিন ভাবতে পারলা না— যেকোনো কেউ কান্নার ইমো দিয়া কইলো ।
মেহেরাব ইফতি
Latest posts by মেহেরাব ইফতি (see all)
- লাগে যেন আপনে আমার মুখের ভিত্রে হাঁটতেছেন : রেন হ্যাং (১৯৮৭-২০১৭) এর কবিতা - জুলাই 19, 2020
- যেকোনো সে কি ভাবতে থাকবে যেকোনো শে’রে নিয়া - মে 11, 2020
- মিথ্যার লগে কাভি কইরো না বসবাস ।। আলেকজান্দার সলঝেনিৎসিন - এপ্রিল 18, 2019