Main menu

মাসিয়াত জাহিনের কবিতা

ডুমার্স

তবে কি আমি মৃত
তবে কি ওই অনেকদিন আগে
হাঁটাবাবা কবিতাটা পড়ার পর পর
আমি মারা গেছিলাম

তবে কি এমনেই মানুষ মরে
হঠাত বন্ধ হয় কবিতা
বৃষ্টি ভাল লা গা
লজ্জ্বায় লা ল হয়া
তবে এমনেই মরে মানুষ
হঠাত হাঁটাবাবার হাটা কাটা বাটা
সব মিনিংলেস
লেস ফাকিং লেস লাগতে থাকা

পরদাদা কাকের চোখ কাটে
মুড়ির মত স্বপ্ন পোতায়
গাধার মত ভালোবাসা
অলস অলস গাধা গাধা

এভরিথিং ইজ সিনজোনড বেব!
তাই আমি আকাশও সিনজোন করেছি
কেমোনে হবে কবিতা বলো
বাতাস ও বিলাই খেয়ে ফেলেছে
খেয়ে মরে গিয়েছে পেট ফুলিয়ে

আহা।

ওর অস্তিত্ববাদ গেছে
অনস্তিত্ববাদ গেছে

বেবি আমাকে একটা স্লোগান দাও
রক্ত লাল! রক্ত লাল!

আমি কেন ঘুমে অসুখে বিসুখে
স্লোগান দিতে থাকি
এভরিথিং ইজ সিনজোনড বেব

আর সিনেমায় দেখি কাকের চোখ কাটা
ইজম না কোন আমি আম্মু
আমি তোমাকে তোমার আম্মুর মত ভালোবাসি
স্যুররিয়াল না আমি তো

কিন্তু স্বপ্নে দেখি কাকের চোখ কাটা
কাটা
কারণ আমার হাত কেটে বন্ধুরা
হাত
কেটে ছেড়েছে ছেড়ে গেছে?

আম্মু
বেবি!

এভরিথিং ইজ সিনজোনড বেব

 

প্রমিজ

একদিন তুমি সব পাবা
কিন্তু তোমার মাথা বাতাসের মত খালি হয়া যাবে
ভালো বাতাস না
টিনের ক্যানের মত
বদ্ধ বাতাস

দেন উই উইল হ্যাভ আ কনভারসেশন।

একদিন হাঁসগুলি মারা যাবে
জীবনানন্দের বাচ্চারা
অচল দেখে মেরে ফেলছিলো লোকে
ওদেরকে পাশে নিয়ে বসব

ওইদিন আমরা কথা বলব।

সুইসাইড নোটে সবাই লেখে
আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না
আমি লেখবো
আমার মৃত্যুর জন্য সবাই দায়ী

ওইদিন সকালে
ময়লা ভোর দেখতে দেখতে
উই উইল হ্যাভ আ কনভারসেশন।

জাস্ট প্রমিজ কর
তুমি বলবানা
‘ভোরটা সুন্দর’

 

সাদা ঘোড়া

একটা সাদা ঘোড়া পড়ে আছে মাটিতে
হঠাৎ দেখে চমকায় গেলাম
যেন মৃত
একটা
সাদা টেনিস বল..
সফেদ কাপড়?
এভাবেই জীব কি পড়ে থাকে জড়ের উপর

নিজেকে প্রাণ ভেবে
প্রতিদিন কাটাই
আজ রাতে অনেক কাঁদি
কাল রাতে ভুলে যাই,

নিজেকে প্রাণ ভেবে প্রতিদিন কাটাই
ম্যানিকুইন নিয়ে ফেলে আসি বাজারে
আর স্তম্ভিত গুণি
গুণি যখন মোরগগুলা তীব্র হয়ে ওঠে
তীব্র গুণি

প্রাণ ভেবে ভেবে
সাদা ঘোড়ার কথা মনে পড়ে
কাঁদতে কাঁদতে হাঁটতে শহরের কেন্দ্রে চলে যাই
মনে হয় সবার বুক কেটে ভিতর শুয়ে পড়ে বলি
আমাদের দুঃখগুলো কে মনে রাখবে?

 

চোখ

একজোড়া চোখ
দেখে গান
তান
সুর মাপে
নেমে যায় শরীর বেয়ে
পদ্মার ধারে।

চোখ নীল হলেই
সমুদ্র না
হতে পারে কঙ্কাল
কুকুরের
হতে পারে ভুতুড়ে
খুনি
চিৎকার দেখে ফিরে আসা
হেঁটে আসা।

তাও একজোড়া চোখ
থাকে
প্রেমিকের
প্রেমিকার
খয়েরি
কয়েদি
তাও একজোড়া চোখ
যাকে স্বস্থানে রেখে
আমরা হেঁটে আসি
হেসে আসি
দরজা খুলে
খেতে বসি।

 

গতি

শুধু জড়বস্তুগুলাই সত্য কারণ
এদের আশেপাশে থাইকা
তুমি পরশু যারে নিয়া
চব্বিশ ঘন্টা ভাবতা
ওই তুমি ভাবারেই মিথ্যা ভাবো।
আরো কতরকম
পরিবর্তন হয়—
এরা খাড়ায় থাকে স্থিতিশীল।

ওই পাখি হয়তো তরশুও আসছিলো
এবং এইখান দিয়াই তার বাচ্চার জন্য
খাওন নিয়া গেছে।
তুমি দেখোনাই
কিন্তু ওই টেবিলটা দেখছে।

আর এইযে পিঁপড়ারা পুঁজিবাদ থেইকা
বোধহয় সমাজতন্ত্রে চইলা গেছে
তোমার কি কোন হুঁশ আছে?

একটা জড়বস্তু না হওয়ায় তোমার
কত অহংকার!
অথচ মাঝে মাঝে মনে হয়
এমন হওয়ার জন্য আমরা ক্রমাগত দৌঁড়াইতেছি আর
হইতে পারতেছি না।
আমরা অত বিনয়ী না যে
দেখবো চায়া চায়া
কিছু করার বদলে।

আর দৌঁড়াইতে দৌঁড়াইতে কেবলি
স্থির হয়া যাইতেছি।
একটা মরা স্থিরতা।
এমনই হবে যেহেতু
স্থিরতার পাঠ চুইকা গেছে ইতিহাসে।

পরদাদার পরদাদার উপর হইতে পারো
জেলাস!
অথবা দেখতে পারো
একটা তানপুরা তাকায় আছে
একটা তেলাপোকার দিকে
আর আমাদের নিয়া হাসতেছে।

 

সিরিনিটি

ইটস আ ডেথ! ইটস আ ডেথ!
বৃষ্টি নিয়া আমার
পুরান জিনিস
নতুন কইরা
সকল কথা
বলা শেষ।

 

পরিচয়

নিজ শরীরের ঘ্রাণ চিনতে বা চিনাইতে
যারে তুমি কইতে পারো ‘পরিচয়’
কোথাও স্থায়ী হইতে হয়।

আমি জাইগা থাকতে চাই একটা
বেবুনের সাথে এবং জংলার মধ্যেই।
কখনো শুধু অভিজ্ঞতার লোভে আমি
রওনা দেই সেখানে
যেখানে আমারে কেউ নিবে না
কেউ নিবে না।

আমি ঘরে থাইকা
ডাক্তার হইতে চাইনাই
কারণ আব্বা বলছিলো।
আর আব্বারে যে কেউ বলছিলো
এটা সে বোঝেও না।

আর আমি ঘর ছাড়লে
লাগে ডর
এমন ডর যে:
কেউ তো দেখতেছেও না
এই ঘর ছাড়া আর কান্নাকাটি।

তোমরা মনে করো যে নিজেরে
অদৃশ্য লাগা
খুব অস্থির ফিলিং
সুপারহিরো মার্কা।

কিন্তু,
নিজ শরীরের ঘ্রাণ চিনতে বা চিনাইতে
যারে তুমি কইতে পারো ‘পরিচয়’
কোথাও স্থায়ী হইতে হয়।

 

The following two tabs change content below.
Avatar photo

মাসিয়াত জাহিন

মাসিয়াত জাহিন। ১৯৯৯ এর অক্টোবরে জন্ম। ঢাকায় থাকেন। বুয়েটে সিভিল এঞ্জিনিয়ারিং নিয়া পড়েন। সাহিত্য ও দর্শন নিয়া আগ্রহী। কবিতা লেখেন ও অনুবাদ করেন।
Avatar photo

Latest posts by মাসিয়াত জাহিন (see all)

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →