Main menu

আমাদের নিয়ত এবং বাংলাদেশের ফিউচার

বিপ্লব বা হাসিনা খেদানির পরে এখন হাসিনার কন্সটিটুশন লইয়া আলাপেরে অনেকে বেহুদা কইতেছেন; এই অনেকের ভিতর বেশিরভাগ খুব শম্ভব ফরহাদ মজহারের ধান্দা /ইনটেনশন /নিয়তের ব্যাপারে শন্দেহ রাখেন মনে; তার লগে এমন একটা ভাবনাও মালুম হয় আমার জে, একটা ইগোর ব্যাপার কাম করতেছে, এখন কন্সটিটুশন লইয়া আলাপ তাদের কাছে ফরহাদ মজহারের এজেন্ডার ভিতর, ডিছকোর্ছের ভিতর ঢুইকা পড়া ছেরেফ।

এখন ফরহাদ মজহারের নিয়ত লইয়া কতগুলা লোকের এমন শন্দেহ খোদ ওনারো জানা আছে, আই বিলিভ! হজরত মজহার তাইলে কি করবেন, ঐ শন্দেহে থাকা লোকগুলারে বাদ দিয়াই আগাইবেন, নাকি ওনার নিয়ত আরেকটু খোলাশা করবেন? ওদিকে, ওনার নিয়ত লইয়া শন্দেহ করার আদৌ কারন আছে কি?

আলাপটা আমি কন্সটিটুশন লইয়া আলাপের জরুরত দিয়াই শুরু করি। হাসিনার রাইখা জাওয়া কন্সটিটুশনের বুনিয়াদি/ফান্ডামেন্টাল এমেন্ড করার পার্লামেন্টারি কোন উপায় নাই, এইখানে দেশের জনগনের বাশনার কোন ছাপ পড়ার অপশন নাই। একমাত্র রাস্তা হইলো জুডিশিয়ারি! তার মানে, জুডিশিয়ারির কান্ধে বন্দুক দিয়া কন্সটিটুশন এমেন্ড করার হাসিনা-তরিকাতেই হাটা হইতেছে তাতে! এইটা আলবত বিপ্লবের ইস্পিরিটের লগে বেইমানি!

ওদিকে, এই জুডিশিয়ারি হাসিনার কন্সটিটুশনের আন্ডারে হাসিনারই বানানো জুডিশিয়ারি (জাস্টিজ মানিকের কথা মনে কইরা দ্যাখেন), কিন্তু দলিলে এইটা ইনডিপেন্ডেন্ট। খেয়াল করলে দেখবেন, বিপ্লবের পরে শবচে কম এফেক্টেড হইছে জুডিশিয়ারি। এই জুডিশিয়ারির কাছে বিপ্লবের/লিবারাল ডেমোক্রেটিক ভ্যালুজ আশা করার উপায় নাই এবং হাসিনার কন্সটিটুশন বহাল দশায় এই জুডিশিয়ারিতে আপনে কোনভাবে ইন্টারভেন করতেও পারবেন না।

এখন দলিল মোতাবেক, রাশ্টের শবচে পাওয়ারফুল পোতিশ্ঠানের নাম জুডিশিয়ারি, শেইটা হাসিনার কন্সটিটুশনের চেতনা ধারন করার মানে হইলো, এই বিপ্লব, শরকার, রদবদল–কোনটার লেজিটিমেছি নাই, অবৈধ এবং পানিশেবল। তাইলে দেখা জাইতেছে, জুডিশিয়ারিতে ইন্টারভেন করা, হাসিনার মতো গায়ের জোরে/রিক্রুটমেন্টের ভিতর দিয়া জুডিশিয়ারিকে ইউজ করা জেমন বিপ্লবের ইস্পিরিট-বিরোধি, তেমনি জুডিশিয়ারিকে রিফর্ম না কইরা হাসিনার মনের মতো রাখারও উপায় নাই! খোদ কন্সটিটুশনের একটা বিহিত করা বাদে এই মুশকিল কেমনে আছান করবেন আপনে?

ওদিকে, ফরহাদ মজহারের ইনটেনশন/নিয়ত লইয়া শন্দেহ করার কারন আছে কি? আমার মতে আছে। ২৩ তারিখ রাতে একটা পোস্ট দিছিলাম এমন: “ছেরেফ ‘গনতান্ত্রিক’ কইলে কিলিয়ার কাট কিছু মিন করে না; বাংলাদেশের বামেরা একটা ধানাইপানাই করে এই ব্যাপারে।

খেয়াল করলে দেখবেন, চায়না নিজেরে রিয়াল ডেমোক্রেছি দাবি করে, কমুনিস্টদের ভিতর পিপলের ডেমোক্রেছি বইলা একটা ব্যাপার আছে, বাংলাদেশের আমজনতার গনতন্ত্রের আইডিয়ার লগে জেইটার কোনই রিশতা নাই।

ছো, কিলিয়ার কইতে হবে; বাংলাদেশের আমাজনতার ডেমোক্রেছি ভাবনা কয়েকটা শব্দে হাজির করা শম্ভব: মাল্টি পার্টি পলিটিক্স, ভোটিং- ইলেকশন, ফিরিডম অব কনশ্যেন্স, পেরাইভেট ঔনারশিপ।

দেশের বামেরা, আপনাদের ধানাইপানাই ছাড়েন।”

আজকে মুরাদুল ইসলাম ফরহাদ মজহারের পুরানা একটা ভিডিও-বয়ান দেইখা চায়না মডেলের ব্যাপারে হজরত মজহারের পিরিতির কথা জানাইছেন (এইখানে খেয়াল রাখা দরকার জে, ‘গনতান্ত্রিক অধিকার কমিটি’ও কিন্তু বামেরা বানাইছে এবং তারাও ছেরেফ ‘গনতান্ত্রিক’ শব্দেই তাদের ইরাদা জানাইতেছেন!)।

আমি আশা করবো, এই দুই পক্ষই তাদের নিয়ত খোলাশা করবেন, ফরহাদ নিজের বামেরই লোক, ভোলা ঠিক হবে না আমাদের, একেবারেই।

এরপরে আমাদের ভাবা দরকার, ফরহাদের তরিকাই একমাত্র তরিকা কিনা? না। ইউনুস পেছিডেন না হইলেও কন্সটিটুশনের ফয়ছালার রাস্তা খোলা থাকে। দেশের পলিটিকেল পাট্টিগুলার লগে শরকার-দার্শনিক/ভাবুক-আর্মির আলাপের ভিতর দিয়া কন্সটিটুশনের বুনিয়াদি বটমলাইনের ব্যাপারে একমত হইয়া কন্সটিটুশন বানাবার জন্নই ইলেকশন হওয়া শম্ভব, ইলেকশনের ভিতর দিয়া পাওয়া জনগনের ডেলিগেটরা রাশ্টের ফর্মেশন ঘটাবে। হাসিনার কন্সটিটুশন তারে লেজিটিমেছি দেবে না, তাতে কি, ঐটা তো এই শরকারকেও লেজিটিমেছি দিতে পারে না! একটা কন্সটিটুশন ফাইনাল হবে রেফারেন্ডামে, তারপর শেই কন্সটিটুশনের আন্ডারে জেনারেল ইলেকশন হবে।

আইডিয়াটা হইলো এই জে, বাংলাদেশের জনগন আগে রাশ্টের ফর্মেশন ঘটাবার বাশনায় কখনো কোন নাগরিক চুক্তি করে নাই, এই পয়লা শেইটা ঘটবে; বিপ্লবের ভিতর দিয়া, বাকশাল/হাসিনা/ফেছিজমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে বাংলাদেশের জনগন শান্তিতে থাকার বাশনায় একটা নাগরিক চুক্তি করতে একাট্টা হইছে। তারা এখন শেই চুক্তিটা করতেছে।

আবার এইটা ঘটাইতে ইউনুসের পেছিডেন হওয়ার ভিতর দিয়া কাম আগানোর রাস্তায়ও হাটা জাইতে পারে। কিন্তু শেইটা করতে একটা কিলিয়ার-কাট টাইমলইন লাগবে; কি কি করতে জাইতেছে শে, কেমনে, রাশ্টের বুনিয়াদি বটমলাইন কি হবে, এইগুলা আগেই কিলিয়ার করতে হবে। দুনিয়ার কোন কোন দেশে কন্সটিটুশন নাই মর্মে হজরত ফরহাদের একটা আর্গুমেন্ট আছে, ঐটাতে মস্ত ঝামেলা আছে; আমাদের ইতিহাশে আগে জেহেতু একটা কন্সটিটুশন আছিলো, একদম কিলিয়ার লেখা দলিল, বিপ্লবের পরের কন্সটিটুশনও তাই রিটেনই হইতে হবে, নাইলে আগেরটাই একটিভ বইলা দাবি করার অপশন খোলা রাখা হবে।

রকম শাহের বয়ান
২৫ আগস্ট ২০২৪

The following two tabs change content below.
Avatar photo

রক মনু

কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →