জনরোষে কি কেবল ‘ভাস্কর্য’ ভেঙ্গে পড়তেছে?

বেশ একদল “শিল্পী সমাজ” পাওয়া যাইতেছে যারা ফ্যাসিস্ট শক্তির আইকনিক মুর্তি/ভাস্কর্য এবং কালচারালি কনফ্লিক্টেড মুর্তি/ভাস্কর্য ভাঙ্গা নিয়া চিন্তিত। তাদের চিন্তা ও তৎপরতার অন্তসারশূন্যতা ও ধোঁয়াশা সংকটের সমাধানের থেকে আরো বেশী সংকটময় করে তুলতে পারে।
আমি সমস্ত ভাঙ্গাভাঙ্গি নিয়া কথা বলবো না। কেবল ২টি “মুর্তি/ভাস্কর্য” নিয়া আলোচনা করবো।
১। ধরুন একটি মুদি দোকান ভাঙ্গা হয়েছে আর ভাঙ্গা হয়েছে একটি সংসদ ভবন। এখন আপনি প্রতিবাদে বললেন বা প্রতিবাদ মূলক কোন পোস্টারে লিখলেন যে “স্থাপত্য ভাঙ্গা যাবে না”। কিনবা কোন সংবাদ মাধ্যম নিউজে হেড লাইন করলেন ” ২টি স্থাপত্য” ভাঙ্গা হয়েছে। যেমন অনেক উদবিগ্ন শিল্পী বলতেছে “ভাস্কর্য” ভাঙ্গা হয়েছে।
তাহলে সংকট কি হয় বুঝতে পারছেন নিশ্চয়?
সকলের সুবিদার্থে আরো পরিস্কার করে বলি। মুদি দোকান ও সংসদ ভবন ২টাই স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন। যদি মুদি দোকানের স্থাপত্য না বলে কেবল স্থাপনা বলেন আবার সংসদ ভবনের স্থাপত্য না বলে কেবল স্থাপত্য বলেন এতে ২টারই গুরুত্ব কমে। এবং প্রায় এক বিমুর্ত ধারণা তৈরী হয় ভাঙ্গাভাঙ্গি সম্পর্কে। সত্যও লুকানো গেল এতে।
শেখ মুজিবের যে মুর্তি/ভাস্কর্য জনরোষে ভাঙ্গা হয়েছে তা ছিল এই জনরোষ তৈরীর মূল আইকন, অর্থাৎ যে ফ্যাসিস্ট শক্তি গণঅভুত্থানের মধ্যে দিয়া বিদায় নিল তার মূল প্রতিক । শেখ মুজিব নিয়া জনমনে নানা রাজনৈতিক চয়েজ থাকা অস্বাভবিক না। কিন্তু জনতা যে ফ্যাসিস্ট রেজিমের উপরে ক্ষুব্ধ ছিল তা তো এই মুজিব বিক্রির, দেশ তার বাপের, ইত্যাদির যে আইকন তা তো এই মুজিবের মুর্তিতেই আছে বলে মনে করছেন বিক্ষুব্দ জনতা, (এমনকি কিছু জাইগাতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি দেরও তা করতে দেখাগেছে, জনতার সাথে সাথে)। ফলে তারা কেবল ভাস্কর্য ভাঙ্গে নাই ভেঙ্গেছে সেই ফ্যাসিস্ট আইকনের মুর্তি।
এখন যদি এই ভাঙ্গাকে আপনি কেবল “ভাস্কর্য” ভাঙ্গা বলেন তাইলে সত্য/ফ্যাক্ট লুকানো হয় বা সত্যের অবলোপন করা হয়। এইটা কংফ্লিক্ট করে আরেক জাইগাতে। ফ্যাসিস্ট রেজিমও তো কইতেছেই ” বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য” ভাঙ্গা হয়েছে আর অন্যদিকে কেউ কেউ দাবী করছেন কেবল “ভাস্কর্য” ভাঙ্গা হয়েছে। কোনটা ঠিক? এক অর্থে ২টাই ঠিক। কিন্তু পরের টা ফ্যাক্টস লুকায় এবং একটিকে কেবল “ভাস্কর্য” বিরোধী বা শিল্প বিরোধী কর্মকাণ্ড হিসাবে দেখানোর রাজনীতি চালু হয়।
Continue reading