দুর্বল কোনো লোকের স্থান বাংলাদেশে বোধহয় এখন থেকে আর নাই – মুহাম্মদ আসাফ-উদ-দৌলা (২০১১)
[সম্ভবত ২০১১/২০১৩ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা প্রেসক্লাবে ‘সাংস্কৃতিক ঐক্য ফ্রন্ট’-এর কোন পোগরামে মুহাম্মদ আসাফ-উদ-দৌলা এই কথাগুলা বলছিলেন। সাল’টা কোন সোর্স থিকা কনফার্ম করতে পারি নাই আমরা। ইউটিউবে উনার ভাষণের ভিডিও’টা এখনো এভেইলেবল। বাছবিচারের জন্য এই ট্রান্সক্রিপ্টটা করে দিছেন হুসাইন হানিফ।]
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম
শ্রদ্ধেয় সভাপতি, আমি খুব কম জায়গায় আজকাল যাই। এবং কে সভাপতিত্ব করবেন এইসব না জেনে আমি কোথাও যাই না আজকাল। আমার ছোট ভাইয়ের মতো মাহমুদুর রহমান সভাপতিত্ব করবে জেনে আমি এসেছি। কেননা সম্প্রতি বিগত এক বছর আমি তাকে একজন সাহসী সৈনিকের ভূমিকায় দেখেছি। দুর্বল কোনো লোকের স্থান বাংলাদেশে বোধহয় এখন থেকে আর নাই।
আমি ১৯৪৭ সালে ফিরতে চাই। ’৪৭ সালের, আমার তারিখ মনে নাই, সেপ্টেম্বর মাস, সেন্ট্রাল ওয়ার্কিং কমিটি মিটিং অফ ইনডিয়ান নেশনাল কংগ্রেস, প্রিসাইডেড ওভার বাই জওহরলাল নেহেরু, বোম্বে। তার মধ্যে একটি লাইন এই লাইনটি আপনারা অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন, তার মধ্যে একজন প্রশ্ন করেছিলেন, এই যে পাকিস্তান হয়ে গেলো ইস্ট পাকিস্তান ওয়েস্ট পাকিস্তান, আমাদের এই ভারতমাতাকে ভেঙে ভাগ করা হলো কিভাবে এই জিনিস আমরা আমাদের ন্যাশনাল সাইকিতে এডজাস্ট করব?
তখন একটা রেজুলেশন এডাপ্ট করা হলো, এই রেজুলেশনটার ওয়ার্ডিং রান লাইক দিস – “উই হিয়ার বাই ডিসাইড টু একসেপট দা প্রেজেন্ট পার্টিশন ফর দা টাইম বিইং”; এই “ফর দা টাইম বিইং” শব্দটি আমি কোনো রাজনীতিবিদ কিংবা সাংসদের মুখে ৪৭ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এই সেনটেন্সটি দ্বিতীয়বার উক্তি করে মানুষকে জানিয়ে দেওয়া, এটা শুনি নি। এবং সেই লক্ষ্যে বিজেপিই থাকুক ক্ষমতায় কিংবা কংগ্রেসই থাকুক ক্ষমতায় আর ইন্ডিয়ার কম্যুনিস্ট পার্টির ক্ষমতায় থাকাও সেটা কোনো মুসলমানের জন্য কোনো সুসংবাদ না। কেননা আমি মনে করি কেননা আমি তাদের সময় বেড়ে উঠেছি, এখানে আমরা যারা উপস্থিত আছি, ডেফিনেটলি সাদেক ভাই, আমার চাইতেও বেশি একটু দেখেছেন; আমরা জানি আমরা কাদের সাথে লেখাপড়া করেছি, কাদের সাথে থেকেছি, কারা আমাদের প্রতিবেশি ছিল, সুতরাং ফর দা টাইম বিইং এর উপরে ভর করে একটা পরিকল্পনা, তাদের অনেক বুদ্ধি তাদের অনেক ধৈর্য, এবং তারা আমাদের মত এই পিয়াজ খাওয়া এই অস্থির জাতি দুদিন পাঁচ দিনের প্ল্যান করে তিন মাসের প্ল্যান করে তারপর আর মুসলমানের কিছু মনে থাকে না। গরম জাতি নাকি খুব। আমাকে আমার অংকের মাস্টার প্রফুল্ল বাবু বলতেন, অংক কী করবি তুই তো ১০০ পাবি না, ওই ৯৮ ৯৯ ই পাবি, তার কারণ তোরা গরুর গোশত খাস আর পিয়াজ আর রসুন খাস, তোরা হল গরম। তো গরম হলে নাকি গণিত হয় না। এইটা প্রমাণ করার জন্যই ২০০ তে ২০০ পেয়েছিলাম আমার প্রবেশিকা পরীক্ষায়। তো যাই হোক, এইভাবে মানুষ হয়েছি, এবং ক্লাসে প্রথম হয়ে কোনোদিন আমার রোল নাম্বার ১ হয় নাই। আমার রোল নাম্বার টু। আমি জীবনে প্রথম রোল নাম্বার ১ হযেছি ১৯৪৮ সালে। এবং আমার সাথে যে দ্বিতীয় হতো সে ইন্ডিয়ার ১৯৫৮ ব্যাচের অল ইন্ডিয়া আইএসে প্রথম। তার নাম তুষার কান্তি ঘোষ। ওয়েস্ট বেঙ্গলে চীফ সেক্রেটারি ছিল। তো, হি ইউজড টু হেভ রোল নাম্বার ১ এন্ড আই হেড রোল নাম্বার টু। এইভাবে আমার ১৯৪৩ ১৯৪৮ পর্যন্ত কেটেছে জিলা স্কুলে।
আমাদের সকলে যদি একটি জিনিস মনে রাখি সেই লক্ষ্যে একটি কাজ হচ্ছে, অবিরত ভাবে অবিরামভাবে ১৯৭১ ছিল তার একটি স্টেপ। এটা যদি বাংলাদেশের মানুষের প্রতিকৃতি হয়… আজকে আমি কয়েকটা কথা বলব যা আপনারা রেকর্ড করবেন, আমার বয়স যা হয়েছে, আর সময় টময় নেই, লিখে যেতে পারব না। যেগুলি আপনারা লিখবেন, কারণ আমি মিথ্যাচারণ করি না, আমি মিথ্যা কথা বলি না, আল্লাহ আমার সাক্ষী। সেই হিসাবেই আমি কয়েকটা কথা বলতে চাই। Continue reading