তপু’র কবিতা
।। মোরালিটি বাঁচুক ।। কয়েকটা ভিন্ন ভিন্ন স্মৃতি ।। আমি আছি ।। ইতি ‘মোমেন্টাম’ ।। নয়া পারফিউমের গ্রান ।। শিলাবৃষ্টি ।। যেন একটা জীবন্ত লাশ না হইয়া যান ।।
……………….
মোরালিটি বাঁচুক
মোরালিটি কোনও বস্তু না,
মোরালিটি ডমিন্যান্ট ডিসকোর্সের
প্রভাবশালী চাকর।
একটা রাষ্ট্রের মোরালিটি বাচেঁ
মিডিয়ার কল্যানে।
একটা সরকার মানে
একটা ডমিন্যান্ট ডিসকোর্স।
মিডিয়া মানে মোরালিটি,
আমাদের সরকার
মিডিয়ারে চাকর বানাইয়া রাখে।
যেন মিডিয়া এক
প্রভাবশালী চাকর।
লাগে যেন তারা সরকারের দাস।
আর যারা দাস না
সরকার তাদের গলা ঠিইপা ধরে।
দাস বানায়।
যেন মিডিয়া;
সরকারের কেনা গোলাম।
মিডিয়ার না কত পাওয়ার?
কিন্তু দেখেন!
দিনশেষে তারা সরকারের চাকর-ই।
তাই আমাদের একটা মিডিয়া দরকার
যারা মোরালিটি’র যত্ন নিবে।
এবং কয়েকটা জার্নালিস্ট;
মিডিয়া এবং শমাজ’রে
উদ্ধার করবে।
তাই মোরালিটি ফিরা আসুক
জার্নালিস্ট-মিডিয়াদের উছিলায়।
মোরালিটি ফিরা আসুক
জীবন-মরণের তাগিদে।
যেন আমরা মোরালিটিরে বাঁচাইয়া রাখতে পারি।
তাই মোরালিটি বাঁচুক।
কয়েকটা ভিন্ন ভিন্ন স্মৃতি
শরীরে আমার মধ্যাহ্নের ঘ্রাণ,
নক করতেছি গাঁওয়ের প্রত্যেকটা দরজায় দরজায়
খুঁজতেছি কয়েকটা ভিন্ন ভিন্ন স্মৃতি
কৃষ্ণবর্ণ মেঘ আর তীব্র বিদ্যুৎরেখায়
আধো আলোছায়া মাখা গাঁওটা জাইগা উঠে,
ভাইসা ওঠে যাপনচিত্র।
কিন্তু খোঁজাই সার,
ভাঙা সাইকেল, বিয়ারিং-গাড়ি, অফুরন্ত চোখের জল,
কার্ণিসে চোঁয়ানো বৃষ্টি, আধিরাইতের বাঁশির সুর।
হায়! সব হারাইতেছি,
খুঁজতে খুঁজতে প্রায় স্তব্ধতা।
দুপুর গড়াইয়া সন্ধা নামে।
কয়েকটা ভিন্ন ভিন্ন স্মৃতি জোড়া দিতে দিতে
আমি নিবিড় ভালবাসার শিকড়ে পা জড়াইতেছি।
খুঁজতেছি পরম আশ্বাসে ভরা সূর্যাস্তের মেঠো চেনা পথ।
গাঢ় মমতায় জাইগা থাকা রাত আমায় শুশ্রূষার আশ্বাস দেয়।
রুগ্ন দুইহাতে খুঁজতেছি কয়েকটা ভিন্ন ভিন্ন স্মৃতি,
যেখানে আমার জন্য অপেক্ষায় মুঠোভরা আলো,
আর আশ্চর্য আনন্দের ইশারা।
আমি আছি
আমি আছি: তবুও জানি; এখনও আমি কেয়ার করি না।
আমার মিত্ররা হারানো স্মৃতির মতো আমারে ত্যাগ করলেও;
আমি কেয়ার করিনা,
তারা সারপ্রাইজ হয়ে আসে এবং ভেনিশ হয়;
আত্মার ছায়ার মতো।
তবুও তাদের ছায়ার সঙ্গে আমি বাস করি।
নিন্দা ও শোরগোলের মধ্যে কিছু নাই,
স্বপ্ন জাগ্রত থাকে সমুদ্রে,
যেখানে জীবনের জ্ঞান বা আনন্দ নাই,
কিন্তু আমার জীবনের গৌরবের বিশাল জাহাজ ধ্বংস;
অদ্ভুত-না, বরং বাকিদের চেয়ে আলাদা।
আমি এমন এক জায়গার জন্য অপেক্ষা করি
যেখানে কেউ থাকেনা;
এমন একটি জায়গা যেখানে নারীরা হাসেনা বা কাঁদেনা
সেখানে আমার রব থাকেন
এবং ঘুমান। শৈশবের গাঢ়ঘুমের মতো:
যেন সেখানে আমি শুয়ে থাকি উদ্বিগ্ন, অস্থির হয়ে;
নীচের ঘাস আর ধনুকাকৃতি আকাশের উপরে।
ইতি ’মোমেন্টাম’
“কবে এক পূর্ণিমা রাইতে তুমার লগে শেষ দেখা
আর কবে দেখছি জানি,
মনে না-ই।
কতো পূর্ণিমা যায়-আসে
তুমার লগে মোলাকাত হয়না
আরো কতোদিন হবেনা?
তারপর কোন একদিন হবে
আর আমি তুমারে বলতে থাকবো-
অনেক দিন তো মোলাকাত হয়না!
এইভাবে চলতে থাকবে দিনের পর দিন
বৎসরের পর বৎসর
তারপর একদিন হয়তো জানা যাবে
বা হয়তো জানা যাবে না,
যে তুমার লগে আমার
বা আমার লগে তুমার
আর কোনোদিন মোলাকাত হবেনা”
নয়া পারফিউমের গ্রান
লাশের শরীরে পারফিউমের গ্রান
কতো পারফিউম মারা
একটা বেওয়ারিশ লাশ
দেখা যায় বেওয়ারিশ লাশের ঘর
শাদা কাপড়ে ঘুরা
সদ্য মইরা যাওয়া এক নতুন লাশ
শরীরে পারফিউমের গ্রান
মনেহয় সড়ক, ট্রেন দুর্ঘটনায়
মইরা যাওয়াদের একজন
বা তীর্থযাত্রী, অভিবাসী
অথবা সন্তানরা তাড়াইয়া দেওয়া
এমন বৃদ্ধদেরও
হইতেও পারে এমন
অনেক অতি দরিদ্র ব্যক্তিরা
হাসপাতালে মইরা যাওয়া
তাদের সৎকারের দায়িত্ব নিতে
আগাইয়া আসে না এমন কেউ
অথবা সদ্য মার্ডার হওয়া
এক নববধূর মৃত প্রাণ
সেই লাশের শরীরের কোন
নয়া পারফিউমের গ্রান।
শিলাবৃষ্টি
আমি শিলাবৃষ্টি ধরলাম
হাতে নিলাম
কিন্তু আমার হতাশায়
তারা গলে নাই হয়ে গেলো!
আমি ধরে রাখতে পারলাম না
এতটুকুও না,
তারা থাকতে চায় না!
যেন একটা জীবন্ত লাশ না হইয়া যান
সম্পর্ক মাইনা নেওয়া
বিচ্ছিন্নতা
মাইনা নেওয়া’র
নামান্তর
বিচ্ছিন্নতা মানতে না চাইলে
না মানেন
কমিউনিকেশন গ্যাপ থাকলে
তা পূরনে করেন
নো তাড়াহুড়া
তারপরেও সময় নেন
তাও যদি না হয়
তাইলে মাইনা নেন
মাইনা নিয়া মদ খান
ভালাটা খান
সিগারেট খাইতে চাইলে
তাও খান
তবে
দিনে দুইটার বেশী না
কাজকর্মে মন দেন
যাতে অকর্মা হইয়া না যান
তারপরও
মাইনা নেওয়া বিচ্ছিন্নতা লইয়া
বাঁইচা থাকেন
যেন আপনার বাঁইচা থাকাটা
মেটার করে
আর নিজের প্রতি
খেয়াল রাখেন
আর খেয়াল রাখেন
যেন একটা জীবন্ত লাশ না হইয়া যান
আদনান আহমেদ তপু
Latest posts by আদনান আহমেদ তপু (see all)
- তপু’র কবিতা - মে 24, 2021