তানভীর মাহমুদ গাজী’র কবিতা
জ্বরে
আমি জানি না ওইটা কীসের শব্দ
ভাইসা আসে
সাইরেনটাইরেন হবে
মেঘ করে বাইরে
সব স্টিল হয়ে আসে
সবকিছু দিয়া কেমন ডিলিট ডিলিট লাগে
শয়তানের দেবতারে
যে লোক পূজা করে
তারো আশেপাশে ছাগল চড়ে আমি দেখছি
কাটামাথা লইয়া তার পিছে পিছে দৌড়ায়
আমার মুতের রং লাল
আমার চক্ষু ঘোলা
তবু কাটামাথার নিচ দিয়া যে রক্ত পড়িতেছে গড়ায়ে
তা আমার মুতের চেয়েও গাড়ো
আহ তবু কবিতাটবিতা বালছাল মানুষটানুষ ভেবে
একদিন কত মাল খাবো ভেবেছি
একদিন হলুদ হলুদ পুলিশগুলা নীল হইয়া গেল।
টেনিসবল
মন ফেরত দিতে গিয়া ফালাইলা ড্রেনে
উঠাইয়া ধুইলাম ডিটারজেন্ট দিয়া
যেমন ছোটোকালে ধুইয়া টেনিসবল
আবার যাইতাম মাঠে।
রুটিয়ালার দোকানে
জ্বর হইলে ভাত খাইতে হয় না।
রুটিয়ালার দোকানে রুটি খাইতেছি।
রুটিয়ালা ডাইল আর ভাজি একলগে রান্ধে।
সে রান্ধে না। রান্ধে তার মাইয়া। রুটিয়ালার মাইয়া কলেজে পড়ে।
সেই মাইয়ার মা নাই, একলা একলা যা পারে করে।
রুটিয়ালা তার মাইয়ার কথা বলতে থাকে।
রুটিয়ালার মাইয়ার বিয়া আল্লায় দেবে।
মাইয়া অনেক ভালো, অনেক গুন কিন্তু বিয়া হয় না।
সে কি আমার লগে তার মাইয়া বিয়া দিতে চায়?
মাইয়া পানি আনতে গেছে।
খাওয়া শ্যাষ কইরা আমি তার জন্য বইসা রইছি রুটিয়ালার দোকানে।
তুমি তো একা হয়ে গেলা
তোমারে তো রাইখা গেলা
আমার কাছে
কিন্তু
আমারে যে নিলা না
তুমি তো একা হয়ে গেলা।
তোমারে না পাইয়া
তোমারে না পাইয়া
অনেকে কবি হইলো
তোমারে না পাওয়ার কবিতা তারা লিখলো
আর বখাটেরা
আরো তোমারে না পাওয়া লোকেরা
দুঃখ করে মদ খাইলো সন্ধ্যায়
কেউ বড়ো আর্টিস্ট হইলো
তারা তোমারে না পাওয়া সব বিমূর্ত ছবি আঁকলো
আর টাকা কামাইলো কতো
কেউ গাইলো তোমারে না পাওয়ার গান
কনসার্টে
আর মিউজিক ভিডিয়োতে
মেয়েরা নাচলো
কেউ জিমে গেলো
কেউ বাবা খাইলো
কেউ হইলো বিজনেস তাইকুন
সিনেমাআলারা তোমারে না পাইয়া
বানাইলো সিরিয়াল কিলারের ছবি
আর মেয়েরা
কতো যে সুন্দর তোমার চাইতেও
অরা দরজায় লাইন দিয়া আছে
তুমি চলে যাওয়ার পর
তোমারে না পাইয়া কতো কী হইলো
কিন্তু
তোমারে
পাওয়া আর
হইলো না।
আমার ইগো
আমার ইগো ওই সিম গাছটা
বাড়ির ভিতরে যারে লাগাইছিলা
সে খালি বড়ো হয়
চাল ফুটা করে আকাশের দিকে ওঠে
আরো বড়ো হয় স্বাস্থ্যল ইগো
তুমি তো ছেড়ে দিছো তারে
ইগো তোমার নাই বা কেটে গেছিল কোনো মোটিভেশনাল স্পিচে
আমি তো তারে ছাড়তে পারি না
ভালোবাসলে ছাড়তে কষ্ট হয়
আমি তারে মায়া করি রোজ
ফলে অলরেডি বড়োও হইছে বেশ
এখন ইগোর নিচে আমি বসে থাকি
অর মাথায় চড়ে আকাশ দেখব বলে।
আনফ্রেন্ড করে দিয়ে গেছে যারা
আনফ্রেন্ড করে দিয়ে গেছে যারা
তাদের মনে পড়ে
মেমরিতে গেলে পুরান পোস্টে
ছবিতে তাদের লাইক দেখি
কমেন্ট করেছিল কেউ
ছিল হৃদ্যতা
আর নাই
গুডবাই হয়ে গেছে তারা
আনফ্রেন্ড করে দিয়ে গেছে যারা
তারা ভালো
প্রোফাইলে যাই তাদের তারা মেয়ে হলে
কারো কারো হয়ে গেছে বিয়ে
কেউ কেউ একা আছে এখনো দুঃখ করে নিজেকে নিয়ে
কেউ গেছে বিদেশে চলে
কারো কিছু জানছি না
প্রোফাইলটা লক করা বলে
পুরোনো মেমরিতে আমারেও কি সার্চ করে তারা
আনফ্রেন্ড করে দিয়ে গেছে যারা?
সবুজের নাম
সবুজের নাম কে দিলো সবুজ?
আর এত্তো বোরিং কালার কেন নিলো খোদা
সব সরল রং দিয়া আমারে আঁকল তাঁর মতোই সরল।
আমারে বলল, “দেখো তুমি তো আয়না, তোমার ভেতরে জগতের রূপ দিয়া দিছি।”
লাল
লাল, হাইব্রিড তরমুজগুলা কেটে দেখো
লালেরও অধিক তা
বালি বালি নাই
আমারে কেটে দেখাব যে আমি
ততধিক লাল নাই
আমার ভেতরে সাদা সাদা হয়ে দাগটাগ লেগে আছে
আমার লালটুকু যেন রাখো তুমি
আলাদা তোমার কাছে
তানভীর মাহমুদ গাজী
Latest posts by তানভীর মাহমুদ গাজী (see all)
- তানভীর মাহমুদ গাজী’র কবিতা - সেপ্টেম্বর 20, 2021