Main menu

অন ডেবট ট্রাপস অ্যান্ড লিবারালিজম (On Debt Traps and Liberalism)

প্রথমেই আমি উল্লেখ করে নিচ্ছি যে লিবারেলিজম এবং ক্যাপিটালিজম কে আমি ইন্টারচেইনঞ্জেইবলি ব্যবহার করব। এদের উৎস একই। এই দুইটাই মধ্যযুগের ইউরোপের সুনির্দিষ্ট কিছু বাস্তবতার জন্যে উদ্ভব হয়েছিল। এই দুইটার উদ্ভব হওয়ার জন্যে ক্রিস্টিয়ানিটি যেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল, ক্রিশ্চিয়ানিটি এই পোস্ট রোমান ইউরোপকে কিছুটা হইলেও স্থিতিশীলতা দিছিল যাতে একে অন্যকে এনাইলেট করতে না পারে। যদিও ক্রিশটিয়ানিটি কখনওই হমোজেনাস ছিল না, ক্যাথলিক প্রটেস্টেন্ট ভাগ ছাড়াও তাদের ছিল হাজার হাজার সেক্টের ফ্যাঁকড়া। এইসব সেকতগুলো সবসময় নাইস প্লে করত না একে অপরের সাথে। এইকারনে মধ্যযুগের ইউরোপে একধরনের লোকাল সভারিনিটি কখনো ডি জুড়ে, আর কখনো ডি ফ্যাক্টভাবেই বজায় ছিল।

সুতরাং অধিকাংশ বিষয়ে কোন শক্তিশালী এডমিনিস্ট্রিটিভ স্টেইট ছিল না। জনগণকে সহজে কোন কিছুতে কেন্দ্রীয়ভাবে জোর করা যেত না, লোকাল অটোনমির কনসেন্ট ছাড়া। এই লোকাল অটনমিগুলো নিজেরা ইফেক্টিভলি ওয়ান পার্টি স্টেইট চালাইত। কিন্তু যেহেতু তাদের ব্রড এক্সেপটেন্স ছিল, অর্থাৎ লোকাল জনগণের লোকাল অথরিটির প্রতি এলিজেন্স ছিল, সেহেতু তারা লোকাল ডিসেন্টের মোকাবিলা করতে পারত সহজে।

এই কারনে যদি কোন সাফিশেন্টলি বড় মনার্কি কিছু ইমপ্লিমেন্ট করতে চাইত, চার্চ ছাড়া তাদের গতি ছিল না। শুধুমাত্র এই নেটওয়ার্কই বড় এনফোর্সমেন্ট ক্যাপাসিটি বড় আকারে কিছু করার উইদাউট স্পেন্ডিং এ লট অফ মানি। যুদ্ধ এবং অন্যান্য বড় কাজে মনার্কিকে অনেক পয়সা খরচ পরত। মার্সেনারি আর্মির যুগে না পয়সা দিয়া আর্মি পালা মোটামুটি অসম্ভব। আর যারা যুদ্ধ করে তাদের দাবিও বেশী থাকে। এভারেজ জনগণের চেয়ে দাবি বেশী হওয়াটাই ইতিহাস বারবার দেখছে। রোমে একসময় সিচুয়েশন এত খারাপের দিকে গেছিল, নতুন সম্রাটের মুকুট পড়ার বোনাসের লোভে প্রিটোরিয়ান গার্ড সম্রাটের বিরুদ্ধে সকল বিদ্রোহ সমর্থন করত। রোমে অভ্যুথানের স্ট্রাকচারই দাড়ায়ে গেছিল, যে বিদ্রোহ করতে চায় সে প্রিটোরিয়ান গার্ডের কাছে গিয়ে দর কষাকষি করত। এমন ঘটনাও ঘটছে, প্রিটোরিয়ান গার্ড স্বতঃপ্রণোদিতভাবে সম্রাটের গলা কেটে নেক্সট এম্পেরেররশিপ নিলাম করছে। এক বেকুব রোমান ধনী ভাবছে এই চান্স সিজার হওয়ার। তার বুঝা উচিত ছিল এত সহজে যেই আর্মি এলিজেন্স পরিবর্তন করে, তারা নিলামে জয়ী রোমান বেকুবের পক্ষ ত্যাগ করতে বেশী সময় নিবেনা। সামবডি জাস্ট নিডস টু আউটবিড হিম। অর্থাৎ পটেশনলিয়াল বিদ্রোহী জানত কত টাকার টোপ ঝোলাতে হবে।

সুতরাং আর্মি = সুপার এক্সপেনসিভ।

চার্চ সেদিকথেকে ইমেডিয়েটলি ততটা পয়সা দাবি করে না। যদিও ভবিষ্যতে কড়ায় গণ্ডায় আদায় করে নেয়। কিন্তু দ্যাট প্রবলেম ইজ ফর আ ফিউচার ইউরোপিয়ান প্রিন্স।

এই কারনেই স্প্যানিশ ইনকুইজেশন চালানোর দায়িত্ব পাইছিল ডমিনিকান অর্ডার। পাবলিক ইনকুইজেশন ইমপ্লিমেন্টেশনে একটা রিলিজিয়াস অর্ডার এততা এফিশিয়েন্ট হওয়ার কথা না, যতটা একটা আর্মি পারত। বাট দ্যাট উড কস্ট আ ফরচুন।

এই প্রেক্ষাপট আসলে লিবারেলিজমের উত্থানের জন্যে বোঝা খুব জরুরী। অর্থাৎ যেসব যায়গায় তাত্বিকভাবে কমপ্লিট একজেকিউটিভ পাওয়ার থাকলেও বাস্তবে আসলে ততটা ছিল না। মানুষের জীবনের অনেক দিকই ইফেক্টিভলি সেন্ট্রালাইজড কোন অথরিটির নাগালে ছিল না। লোকাল অথরিটি ছিল অবশ্যই। বাট লার্জ স্কেইলে ছিল না।

এই ধরনের পরিবেশে জন্ম নিছে লিবারেলিজ এবং ক্যাপিটালিজম।

এখন এভাবে জন্মনেয়া লিবারেলিজম আসলে কি ধরনের “প্রসেসের” উদাহরণ।

ক্যাপিটালিজ এসেনশিয়ালই একটা স্টোকাসটিক প্রসেস। একটা টাইম ভ্যারিয়িং র‍্যান্ডম প্রসেস। এন্ড হি ডাজেন্ট প্লে ভেরি নাইস। এই প্রসেসে একটা এক্সটিংকশনের ব্যাপার আছে। যেই পার্টি এই প্রসেসে টিকে থাকে, তাকে বাকিদেরকে আউটলিভ করতে হয়। সার্টেন পার্টিকে প্রতি টাইম উইন্ডোতে বিলুপ্ত হইতে হয়।

আমার এজাম্পশন হচ্ছে এইটা ইভোলিউশনারি প্রসেস। ইভোলিউশনারি প্রসেসের একটা বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এইটা একেবারেই ফেয়ার না। যে হারে, সে শুধু হারেই না, বিলুপ্ত হয়ে যায়। এবং অধিকাংশ সময়ে, এভোলিউশনারি সাইকোলজিস্ট আর শার্লাটাল পোস্ট হক র‍্যাশনালাইজার বায়োলজিস্টরা যাই বলুক, অধিকাংশ সময়েই সুনির্দিষ্ট ফিটনেস এডভান্টেজের জন্যে কোন স্পিসিস টিকে যায় না। কারন অনেক সময় ফিটনেস বিষয়টা জিনপুলের এমন কিছু জিনের উপর নির্ভর করে, যারা ওই জিনপুলের নগণ্য বাসিন্দা ছিল। কেউ পাত্তা দিত না। কোন কাজে আসত না। কিন্তু ভবিষ্যতের কোন ননলিনিয়ার আনপ্রেডিক্টিবল ঘটনার কারনে ঐ জিনগুলা ফিটনেসের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াইল। অর্থাৎ কজাল লিংক উল্টা। আগে আসছে সমাধান। পরে আসছে প্রবলেম।

এই ধরনের প্রসেস হাইলি আনইকুয়াল হয়। কারন এই ধরনের প্রসেস মার্টিঙ্গেল না। এড়া প্রতি মুহুর্তে একটা মাল্টিভ্যারিয়েট গসিয়ান জাম্প দেয় না।

এই ধরনের প্রসেসকে পারেটো প্রসেস, বা এক্সপোনেনশিয়াল প্রসেস বলে। উদাহরণ হিসেবে আমরা কশি প্রসেসের কথা ভাবতে পারি। কশি প্রসেস প্রতি টাইম উইন্ডোতে কশি ডিস্ট্রিবিউশন থেকে একটি ভ্যালু সিলেক্ট করে। কশি ডিস্ট্রিবিউশন হচ্ছে একটি এক্সপোনেনশিয়াল ডিস্ট্রিবিউশন যার গড় এবং ভ্যারিয়েন্স দুইটাই ইনফাইনাইট।

বটম লাইন হচ্ছে, এই ধরনের প্রসেসে যে টিকে থাকে সে আউটসাইজডভাবে রিওয়ার্ডেড হয়, কারন সিম্পলি সে রিওয়ার্ড নেয়ার জন্যে বেচে আছে। ম্যাক্সিমাম পার্টি বিভিন্ন র‍্যান্ডম কারনে টিকতেই পারে না, তাদের ব্যবসাগুলো সব টিকে থাকা পার্টি পাইয়া যায়।

ক্যাপিটালিজম কে যেভাবেই সিমুলেইট করা হোক না কেন, এটার এন্ড স্টোরি সবসময়েই হবে একটা পারেটো প্রসেস, উইথ বিগ উইনার্স এন্ড নট সো মাচ এলস।

সমস্যাটা হয় যখন ক্যাপিটালিজমের সাথে জাতি রাষ্ট্রের ধারনা যোগ করি।

ক্যাপিটালিজম তার নেচার অনুযায়ি পৃথিবীর কিছু যায়গায় বেশী সফল হবে। সুতরাং যেই দেশগুলো হেড স্ট্রার্ট পাবে তাদের ইকোনমি স্থিতিশীল হওয়া শুরু করবে। তাদের রিজার্ভ বাড়া শুরু করবে। স্থিতিশীল ইকোনমিতে মানি মার্কেটে ইন্টারেস্ট রেইট কমে যাবে। সুতরাং আগায়া যাওয়া দেশগুলো বুঝবে তাদের গ্রোথ বজায় রাখতে তাদের যেইসব দেশের এখনো বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট ফেইজ বাকি আছে, সেইগুলোতে ইনভেস্ট করলে ইউ ক্যান বি পার্ট অফ দেয়ার গ্রোথ। গরীব দেশকে ধরেন একটা বিশাল স্কাই স্ক্রেপার বানায়া দিলেন, অথবা একটা ট্রেইন স্টেশন। অথবা বিশাল একটা ড্যাম। ঐ দেশ খুব কৃতজ্ঞ হবে। কারন তারা কোনভাবেই এইটা এফোর্ড করতে পারত না। অন্যদিকে ঋণের কিস্তি ধইরা নেয়া হয় রাষ্ট্রের গ্রোথের মাধ্যমে যোগাড় হয়ে যাবে। অনেক সময় আসলে এই যোগাড়টা হয় না। তখন যেই অবস্থাটা তৈরী হয় তাকেই আমি বলতেছি ডেবট ট্র্যাপ।

এইটা বুঝার জন্যে চলেন গ্রীসের গল্পটা শুনি।

গ্রীস একটা দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ব্যাডলি ম্যানেজড রাষ্ট্র ছিল। তাদের মনে হইল মিলেনিয়ামের প্রথম অলিম্পিকে তাদের হোস্ট হওয়া দরকার। গ্রীস পশ্চিমা সভ্যতার সূচনাবিন্দু। নতুন মিলেনিয়ামের অলিম্পিক গ্রীসে হওয়ার একটা সিম্বোলিক মানেও আছে। গাড়ল ইউরোপিয়ান ব্যাংকগুলোও চিপ ক্রেডিট প্রভাইড করতে লাগল। সিভিলাইজেশনাল ব্যপার স্যাপার, এইটাতো বুঝতে হবে। সেই বিপুল পয়সা গ্রীসের বিশাল করাপ্ট বুরোক্র্যাসিতে হারাইয়া গেল, নষ্ট হইল। চিপ ক্রেডিট আর সামাজিক সুরক্ষা মিলে গ্রীসের ক্ষমতাবানেরা আনন্দ ফুর্তি করল কিছুদিন। যখন ইনস্টলমেন্ট দেয়ার সময় আসল দেখা গেল গ্রীস বাজেট ডেফিসিটকে সামালাইতে পারতেছে না। আবার আসল দরদি ইউরোপিয়ান ব্যাংক (এর বিপুল অংশ ছিল জার্মান ব্যংকগুলো), বলল আহা, বাবুসোনা তোমার ঋণের কিস্তি দিতে সমস্যা হইতেছে? নেও তোমাকে আরও কিছু ঋণ দিলাম এইটা দিয়া তুমি কিস্তি দাও। অর্থাৎ এই নতুন ঋণগুলো এসেনশিয়ালি আর গ্রীসে পৌঁছাইত না। তারা ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের এক একাউন্ট থেকে আরেক একাউন্টে ট্রান্সফার হইত আর গ্রীসের ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকল চক্রবৃদ্ধিহারে। এর মধ্যে গ্লোবাল ফিনানশিয়াল ক্রাইসিস এ গ্রীসের ইকোনমি ধইসা পরল। গ্রীসের এখন রাষ্ট্র চালানোর পয়সা নাই। তাদের জরুরী ভিত্তিতে পয়সা দরকার। ইউরোপিয়ান দরদিরা আইসা বলল তোমাকে এক শর্তে আরও পয়সা দিব। প্রথমত এই পয়সার একটা অংশ আগের ঋণ পুরণের কাজে লাগবে। দ্বিতীয়ত তুমি রাষ্ট্রের খরচ কমাবা। পেনশন স্কিম ছোট করবা। কল্যাণ রাষ্ট্রের কম্পোনেন্টগুলো ছেঁটে ফেলবা। গ্রীস রাজি হইল। তাদের আর বিশেষ কিছু করার ছিল না। এই পর্যায়ে গ্রীসের জনগণ পুরা ব্যাপারটার এবসার্ডিটির ব্যাপারে সচেতন হওয়া শুরু করে। সিরিজা পার্টি এবং তাদের লেদার জ্যাকেট পড়া ফিনান্স মিনিস্টারের উত্থান স্পেসিফিক্যালি হইছে এই এবসার্ডিটির রিএকশন হিসেবে। কারন গ্রীসের কোন র‍্যাশনাল উপায় ছিল না এই ডেবট ট্র্যাপের চক্র থেকে বের হতে, যদিও গ্রীসের জনগণের মেজরিটির এই ব্যাপারে নেওয়া সিদ্ধান্তের পার্ট ছিল না। একটা জাতি রাষ্ট্র কি কখনও ডেবট ট্র্যাপ থেকে বের হতে পারে? কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট তাকে কখনই বের হতে দিবে না। এইধরনের এবসার্ড সিচুয়েশনে অন্য যেকোন প্রতিষ্ঠান ব্যাংকরাপ্টসি ঘোষণা করে সারেন্ডার করত। কিন্তু একটা জাতি রাষ্ট্র কিভাবে ব্যংক্রাপটসি ঘোষণা করবে?

জাতিরাষ্ট্রের পার্মানেন্স তাই নিশ্চিত করে ক্যাপিটালিজম এবং জাতিরাষ্ট্রের পৃথিবীতে কিছুদেশ পার্মানেন্ট ডেবট বণ্ডেজে পতিত হবে।

ডেবট কিন্তু এক ধরনের পলিটিক্যাল ব্যাপার। যে আপনার কাছে টাকা পাবে, তার একধরনের ক্ষমতা আপনার উপর থাকে। আপনার বিহেভিয়ারকে প্রভাবিত করতে পারে, আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এমনকি যদি আপনি তাকে ফাকি দিতে চান তার পড়েও। সুতরাং রাষ্ট্রগুলো যখন এই ডেবট ট্র্যাপে পরবে তাদেরকে দিয়া অনেক কিছু করায়া নেয়া যাবে। আপনাদের হয়ত মনে আছে ইরাক আক্রমণের জন্যে যুক্তরাষ্ট্র যখন মিলিটারি কোয়ালিশন ঘোষণা করে, তখন সেই তালিকায় পুরানা পাপীরা ছাড়া প্রচুর ইঋলেভেন্ট ছোটখাট দেশ ছিল। ইরাক আক্রমণ কিন্তু ন্যাটোর আম্ব্রেলায় হয় নাই। যেইসব ছোট দেশ এই কোয়ালিশনে নাম লেখাইছিল তাদের বেশীরভাগই ছিল ডেবট ট্র্যাপে পরা দেশ। সুতরাং ডেবট ট্র্যাপের মাধ্যমে আপনি ছড়ি ঘুরাতে পারবেন।

তবে এই বিষয়টাকে একটু এশিয়ান ফ্লেবার দিয়ে নেক্সট স্টেইজে নিয়ে যাইতে সাহায্য করে চীন।

চীন বহুদিন যাবত একটা একটা লোনশার্কের মত আচরণ করতেছে। উদাহরণস্বরূপ আফ্রিকায় মাত্র একটা দেশ যেইখানে চিনা ঋণে উন্নয়ন কাজ চলতেছে না। সেইটা হইতেছে সোয়াজিল্যান্ড। পুরা একটা মহাদেশ তারা ডেবট ট্র্যাপে ফালায়া দিছে। অবশ্য চায়না বেনেভলেন্সও দেখায় আফ্রিকাতে। অনেকগুলো দেশের পার্লামেন্ট ভবন চাইনিজদের গিফট হিসেবে বানানো। সবচেয়ে বড় উদাহরণ হইতেছে আফ্রিকান ইউনিয়নের হেডকোয়ার্টার। বছর কয়েক আগে আফ্রিকান ইউনিয়নের হেডকোয়ার্টারের আইটি অপারেশন এর লোকরা নোটিশ করে তাদের কিছু সার্ভার থেকে তাদের অথোরাইজেশন ছাড়াই সাংহাই এর একটা আইপিতে ডাটা যাইতেছে রাতের বিভিন্ন সময়ে। পরে তারা পুরা বিল্ডিং খুঁজে দেখে প্রত্যেকটা বিল্ডিং এর প্রত্যকেটা ইঞ্চি গোপন মাইক্রোফোন সহ অনেক কিছু দিয়া বাগড। ঐ বিল্ডিঙের বাতাসের শব্দও চায়না শুনতে পায়। আফ্রিকা জুড়ে যেই ডজন ডজন পার্লামেন্ট ভবন চিনারা উপহার দিছে সেইগুলার অবস্থাও মনে হয় না আলাদা।

আর পশ্চিমাদের ডেবট ট্র্যাপকে লেভারেজ করার উপায়ের সাথে চায়নার লেভারেজ করার ফান্ডামেন্টাল পার্থক্য আছে। এইটাও বলতে পারেন এশিয়ান ফ্লেবার। যেমন শ্রীলংকার পোর্ট দখলের কথা অনেকেই শুনছেন। চিন্তা করে দেখেন পুরা আফ্রিকা মহাদেশের আনাচে কানাচে যদি এইরকম টুকরা টুকরা চাইনিজ সভারিনিটিওয়ালা টেরিটরি থাকে তাইলে ঘটনাটা কেমন দাড়ায়।

এই পুরা বিষয়টা সম্ভব হইতেছে জাতিরাষ্ট্রের স্ট্রাকচারের জন্যে। পার্মানেন্ট জাতিরাষ্ট্র উইথ ইন্টারন্যাশনাল বর্ডার মানে হচ্ছে প্রতিটা ফকির দেশের আছে স্থায়ী ঠিকানা। সেইখানে পেটমোটা মহাজনরা লাঠি নিয়া হাজির হয়ে আপনার উপর টোটাল কন্ট্রোল দাবি করতে পারে। আপনার ডিফল্ট হওয়নের কোন রাস্তা নাই। সাবমিশন একমাত্র রাস্তা।

বাংগুদেশের কিছু এক্টিভিস্ট চীনপন্থি বাতাস দেন ভারতের কাউন্টারে গিয়া। মেগা ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট এ চীনমুখি করাইতে চান। তারা হয় নাইভ অথবা কাঠবলদ। প্রথমত কিপ্টা ভারত জীবনেও আপনাকে বেশী পয়সা দিবে না। ওদের ইকোনমিক লেভারেজ নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে বানানোর ইচ্ছা নাই। কিপ্টা তো, বুঝতে হবে। ইন্ডিয়ান ওয়ার্কফোর্স, মার্কেট ইত্যাদি এই দেশে ছয়লাব হয়ে গেলেও ইন্ডিয়ান স্টেইট ব্যাংকের চিপ ক্রেডিট এখনো এখানে দুর্লভ। সুতরাং আপনার ডেভেলপেন্ট প্রোজেক্ট ইন্ডিয়া খুব জেনারেস হইয়া কইরা দিবে না। দিবে চায়না। সুতরাং চাইনিজ ডেবট ট্র্যাপে পরার সম্ভাবনাই বেশী।

এই অবস্থায় চাইনিজ গিফটের দিকে দৌড়ানোর ভবিষ্যৎ ভালো না। সমস্যা হইতেছে জনগণের এইসব ব্যাপারে কোন ইনপুট নাই। ইনপুট দেয়ার সকল উপায় সিস্টেম্যাটিক্যালি ধ্বংস করা হইছে। সুতরাং থিংস আর লুকিং ব্লীক।

আমার মনে হয় পিছাইয়া পরা দেশগুলো যতদিনে রিজিড জিওগ্রাফিক্যালি ডিফাইন্ড দেশের ডাউনসাইডসগুলা বুঝবে তত ভাল। সমস্যা হইতেছে এই বিষয়টা ডেবট ট্র্যাপে যেই দেশগুলো পরে তার ক্ষমতার কাছের লোকদের সমস্যা না। তাদের আসলে বিশেষ ক্ষতি হয় না। ওর্স্ট কেইসে তাদের ক্ষমতা চইলা যায়, তারা এক্সাইলে থেকে সেমিনার সভাসমিতি করে হাতিঘোড়া মারে। ডেবট ট্র্যাপের পুরা ঝাল যায় সাধারণ জনগণের উপড়ে। কারন তার ট্যাক্সের পয়সার সিঙ্ঘভাগ চইলা যায় এমন ঋণকে সার্ভিস করতে যেইটা নেয়াড় ব্যাপারে তার কোন কনসেন্ট ছিল না। সে হঠাত করে দেখে তার স্কুলে কারেন্ট নাই। তার শিক্ষকরা দুই নম্বর। তার সিভিল সার্ভেন্টরা ডাকাইত। তার ব্যাংক একটা পঞ্জি। ইত্যাদি ইত্যাদি।

মানবজাতি একসময় এই সত্যটা বুঝত। অর্থাৎ ডেবট ট্র্যাপ একটা পর্যায়ে গিয়ে কাউন্টার প্রোডাক্টিভ হয়ে যায়, সাফারিং ছাড়া সেইটা আর কিছুই প্রডিউস করতে পারে না। জেনারেশনের পর জেনারেশন ভিশাস সাইকেলে আটকে গিয়ে মানুষ হিসেবে যে অসীম পটেনশিয়াল নিয়া সে পৃথিবীতে আসছিল, তার পুরাটাই নষ্ট হয়। মধ্যযুগ পর্যন্তও তাই ডেবট ফ্রগিভনেস একটা কমন বিষয় ছিল। সাধারণত মনার্কিগুলো ডেবট ফরগিভনেসকে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করত। যাতে কমার্শিয়াল ট্রানজেস্কশনের ট্রাস্ট নষ্ট না হয়, সেই জন্যে রাষ্ট্র ডেবট নিজের ঘাড়ে নিয়া, পাওনাদারদের ট্যাক্স রিবেইটের মাধ্যমে সেইটা সেটল করে ফেলত। আর মনার্কের অন্যতম লেজিটিমেসির প্রমাণ ছিল যে সে ইচ্ছা করলে এইটা করতে পারে।

ইউরোপে মনার্কির হাত থিকা পাবলিক পার্সের কন্ট্রোল ১৩শ শতকের দিকেই ধীরে ধীরে চইলা যায় পার্লামেন্টের হাতে। প্যারাডক্সিক্যালি মনার্ক যখন পাবলিক পার্সের কন্ট্রোল হারাইল একই সাথে হারাইল ডেবট ফরগিভনেসের ক্ষমতা। আর ডাবল এন্ট্রি বুককিপিং নিশ্চিত করল জেনারেশনের পড় জেনারেশন ডেবটের হিসাব রাখা। ডেবট তাই আর ট্রানজিয়েন্ট বিষয় থাকল না। হইয়া উঠল ঈশ্বরের মত অবিনশ্বর একটা বিষয়। যা যুদ্ধ, মহামারী, অনাহার, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোনকিছুইতেই মুইছা যায় না। কারো জন্যে ক্লিন চিট নাই। সেকেন্ড চান্স নাই।

এই পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ ডেবট ট্র্যাপে পইড়া যাওয়াটা এক হিসেবে ক্যাপিটালিজম, আরও সঠিক করে বলতে গেলে লিবারেলিজমের ইনএভিটেবল এন্ড গেইম।

ক্লাসিকাল লিবারেলিজমে এর নিদান নাই।

কিসে আছে আমি জানি না।

আমরা ভাবতে পারি অবশ্য। ভাবাটা জরুরী।

The following two tabs change content below.
Avatar photo
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →