Main menu

যারা জুলুমের বিরুদ্ধে ফাইট করতেছে তাদের মধ্যেকার থিওরেটিকাল ডিফারেন্সগুলা নিয়া মাথা ঘামানোটা হইতেছে একটা বিলাসিতা – নেলসন ম্যান্ডেলা

রিভোনিয়া ট্রায়ালে দেয়া নেলসন ম্যান্ডেলার জবানবন্দি

১৯৪৮ সালের ইলেকশনে আফ্রিকানার ন্যাশনালিজমের দল ন্যাশনাল পার্টি ক্ষমতায় আসে। পরে ১৯৬০ এ ন্যাশনাল পার্টির ডাকা গণভোটের মাধ্যমে সাউথ আফ্রিকা ব্রিটিশ সম্পর্ক ছিন্ন করে, রিপাবলিকের জন্ম হয়, মূলত আফ্রিকানার’দের ভোটেই এটা ঘটে। তখনও কোনো ইলেকশন বা গণভোটে নেটিভ তথা ব্ল্যাকদের ভোট দেয়ার সিস্টেম নাই। ব্ল্যাকদের কোনো পলিটিকাল রাইট-ই ছিল না।

ম্যান্ডেলার স্পিচটা পড়তে গেলে দেখবেন নেটিভদের “আফ্রিকান” বলতেছে। এই স্পিচ পড়তে গেলে বুঝার উপায় নাই যে, এই “আফ্রিকান” বলতে আসলে একটা জাতি না, বরং বেশ কয়েকটা জাতি আর ট্রাইব, আর এদের মধ্যে প্রচুর রেশারেশি-ও ছিল। ম্যান্ডেলার দল ছিল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি), যারা সব নেটিভ তথা ব্ল্যাকদের আফ্রিকান ন্যাশনালিজমের পতাকাতলে আনতে পারসিলো। আর এটা সম্ভব হইসিলো ন্যাশনাল পার্টির হোয়াইট সুপ্রিমেসি এবং জুলুমের কারণেই।

ন্যাশনাল পার্টি সাউথ আফ্রিকায় এপার্থেইড চালু করে। এপার্থেইড একটা আফ্রিকান্স ভাষার শব্দ, যার লিটারেল মিনিং এপার্ট-হুড বা সেপারেট-নেস। সাউথ আফ্রিকা এবং সাউথ ওয়েস্ট আফ্রিকা (বর্তমান নামিবিয়া)’তে কাস্ট সিস্টেম ধরনের ব্যাপার ছিল, যেখানে হোয়াইট’রা সবার উপরে, তারপর ইন্ডিয়ান এবং কালার্ড’রা, শেষে ব্ল্যাক আফ্রিকান’রা, আর এই হায়ারার্কির উপ্রে বেইজ কইরা আইন তৈয়ার হইতো, যেখানে নির্ধারণ কইরা দেয়া হইতো কার পলিটিকাল – ইকোনোমিকাল – সোশাল রাইট কদ্দূর, কাকে কোন রাইট থেকে এক্সক্লুড করা হবে, কে কার লগে বিয়েশাদি বা সেক্স করতে পারবে, এবং এমনকি কে কোথায় থাকতে পারবে, জমি কিনতে পারবে, কতটুক ফ্রি-লি মুভ করতে পারবে (একজন ব্ল্যাক কেবল তার নিজের জন্য নির্ধারিত জায়গায়, আর যেখানে তার হোয়াইট এমপ্লোয়ি তারে এমপ্লয় করসে সেখানে মুভ করতে পারতো, আর সেটাও এমপ্লোয়ির সাইন করা পাস বই ছাড়া না), আর এভাবেই মাইনরিটি হোয়াইট পপুলেশন গোটা সাউথ আফ্রিকায় নিজের কব্জা ধইরা রাখতে পারতো আর স্লেভারি উইঠা যাবার পরও ব্ল্যাক’দেরকে প্রকারান্তরে স্লেইভ-ই বানায়া রাখতো। তবে এপার্থেইড শব্দটা খালি সাউথ আফ্রিকার ক্ষেত্রে লিমিটেড থাকে নাই (আর এখন তো এপার্থেইড উইঠা গেসে ওখান থেইকা)। অন্যান্য দেশ, যেমন ইজরায়েলের ক্ষেত্রে অনেকসময় এই ওয়ার্ডটা ইউজ করা হয় এখন।

ন্যাশনাল পার্টি মূলত পুলিশি রাষ্ট্র কায়েম করসিলো। শান্তিপূর্ণ ওয়েতে প্রোটেস্টের রাস্তাগুলাও আইন কইরা বন্ধ কইরা দিতেছিলো। আর এএনসি-ও ক্রমশ ভায়োলেন্ট পলিসি এডপ্ট করতে থাকে। এইগুলার ডিটেইলস আপনেরা ম্যান্ডেলার স্পিচটাতে এবং ফাঁকে ফাঁকে অ্যাড করা টিকা’গুলাতে পাইবেন। আমি জাস্ট ব্যাকগ্রাউন্ডের কথাগুলা হালকা করে বইলা রাখতেছি, যাতে রিডারের কানেক্ট করতে সুবিধা হয়।

১৯৬৩ সালের ১১ জুলাই রিভোনিয়ার লিলিসলিফ ফার্মে আত্মগোপনে থাকা এএনসি’র বেশ কিছু নেতা এরেস্টেড হন। শুরু হয় রিভোনিয়া ট্রায়াল। নেলসন ম্যান্ডেলা নিজেও ১৯৬১ তে এখানে হাইডে ছিলেন। বাট রিভোনিয়া ট্রায়াল (যেই ট্রায়ালে তিনি এক নম্বর আসামী) শুরুর সময় তিনি অন্য মামলায় অলরেডি পাঁচ বছরের লাইগা দণ্ডপ্রাপ্ত। এটার ব্যাপারে স্পিচের শুরুতে ম্যান্ডেলা কথা কইছেন। যাই হোক, রিভোনিয়া ট্রায়ালে আসামীদের বিরুদ্ধে আনা চার্জগুলা ছিল – সাবোটাজ, গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়া, কমিউনিজম কায়েমের নীলনকশা করা, বিদেশী টাকা লইয়া দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা, এইসব।

এখানে একটা ব্যাপার হইতেছে ন্যাশনাল পার্টি গভরমেন্টের উপর জাতিসংঘ সহ নানা আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তেছিলো, ম্যান্ডেলা সেটা জানতেন। ওনার স্পিচের দ্বারা উনি দুনিয়ার কাছেও নিজেদের সিচুয়েশন এবং পজিশন ক্লিয়ার করছেন নিপুণতার সহিত। আর, সাউথ আফ্রিকায় ডেমোক্রেসির ধারণা তৈরীতে এই স্পিচ খুবই ইম্পর্টেন্ট রোল প্লে করসে, এবং পৃথিবীর জন্য, আর বিশেষ কইরা বাংলাদেশের মতো অভাগা দেশগুলার মানুষের জন্য এই স্পিচ সিগনিফিকেন্ট। নেলসন ম্যান্ডেলা আর তার দল তাদের স্ট্রাগলে যে প্রজ্ঞার পরিচয় দিছেন, সেইটা থেইকা আমাদের ডেমোক্রেসির পক্ষের নেতাদের আর দল’দের শেখার আছে বইলা আমার মনে হয়।

লাবিব ওয়াহিদ
মে, ২০২২

আমি এই মামলার এক নম্বর আসামী।

আমার একটা ব্যাচেলর ডিগ্রী আছে আর্টসে, এবং জোহানেসবার্গে একজন এটর্নি হিসাবে কয়েক বছর আমি অলিভার ট্যাম্বোর সাথে পার্টনারশিপে কাজ করসি। অনুমতি বাদে দেশ ছাড়া এবং ১৯৬১ সালের মে মাসের স্ট্রাইকে অংশ নেয়ার জন্য মানুষকে খেপায়া তোলার অভিযোগে আমি অলরেডি পাঁচ বছরের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত একজন কয়েদি।

শুরুতে আমি যেটা বলতে চাই তা হইলো, রাষ্ট্রপক্ষ তার শুরুয়াতে যেই কথাটা বলসেন যে সাউথ আফ্রিকার সংগ্রাম বিদেশী শক্তি বা কমিউনিস্টদের থাবার নিচে আছে, এইটা সম্পূর্ণ ভুল কথা। আমি যা করসি তা আমি করসি একইসাথে একজন ইন্ডিভিজুয়াল হিসাবে এবং আমার মানুষদের নেতা হিসাবেও, এবং আমি তা করসি সাউথ আফ্রিকায় আমার এক্সপেরিয়েন্সের কারণেই, আর আফ্রিকান ব্যাকগ্রাউন্ডের প্রতি আমার গর্ববোধ থেকেই আমি তা করসি, কোনো আউটসাইডার কী বললো না বললো তার লাইগা আমি এসব করি নাই।

তরুণ বয়সে ট্র্যান্সকাই’তে আমার ট্রাইবের মুরুব্বিদের কাছে আমি পুরানা দিনের গল্প শুনতাম। এর মধ্যে অনেক গল্প ছিল সেইসব যুদ্ধের যা আমাদের পূর্বপুরুষেরা জন্মভূমি রক্ষার লাইগা করসিলেন। ডিঙ্গেন, বেমবাতা, হিনসা, মাকানা, স্কুংথি, ডেলেসাইল, মোশুশু, সেখুখুনি – এনাদের গুণগান করা হইতো গোটা আফ্রিকান জাতির গর্ব হিসাবে। আমার আশা ছিল এটাই যে আমার জাতির সেবা করার এবং তার স্বাধীনতার স্ট্রাগলে নিজের ক্ষুদ্র অবদানটা রাখতে পারার সুযোগ যেন জীবন আমারেও দেয়। এটাই আমারে মোটিভেটেড করসে সেই কাজগুলা করতে যেই কাজগুলার জন্য আমার নামে এই মামলা করা হইসে।

এই পর্যন্ত বলার পর, এখন আমার অবশ্যই ভায়োলেন্স প্রশ্নে কিছু কথা বলার দরকার আছে। এই কোর্টে এখন পর্যন্ত যা যা বলা হইসে, তার কিছু সত্য এবং কিছু অসত্য। তবে, সাবোটাজ’এর পরিকল্পনার সাথে আমি যুক্ত ছিলাম না – এই কথা আমি বলবো না। কোনো বেপরোয়া ভাব থেইকা বা ভায়োলেন্সের প্রতি কোনো ভালোলাগা থেইকা আমি সাবোটাজের প্ল্যানিং করতে যাই নাই। আমি এইটা করসি ঠান্ডা মাথায় এখানকার পলিটিকাল সিচুয়েশনের মূল্যায়ন করার মাধ্যমে, যে সিচুয়েশনটা তৈরী হইসে অনেক অনেক বছর ধইরা শাদা’দের হাতে আমার জনগণের উপর চালানো স্বৈরশাসন, জুলুম আর শোষণের কারণে।

আমি কোনো দ্বিধা ছাড়াই স্বীকার করি, আমি ‘উমখন্তো ওয়ে সিজওয়ে’র জন্মের সাথে যুক্তদের একজন, এবং ১৯৬২ সালের আগস্ট মাসে এরেস্ট হওয়ার আগে পর্যন্ত এই সংগঠনে আমার স্পেশাল ভূমিকা ছিল।

আমার জবানবন্দিতে আমি রাষ্ট্রপক্ষের উইটনেস’দের তৈয়ার করা কিছু মিথ্যা ধারণা শুধরাবো। অন্যান্য জিনিশের পাশাপাশি, আমি এইটা ক্লিয়ার করবো যে এভিডেন্স হিসাবে উপস্থাপন করা কিছু কিছু কাজ উমখন্তো’র দ্বারা ঘটে নাই, এবং ঘটতে পারে না। আমি আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস এবং উমখন্তো’র মধ্যেকার সম্পর্কের বিষয়েও বলবো, এবং এই দুই সংগঠনে আমি পার্সোনালি কী রোল প্লে করসি সেইটার ব্যাপারেও বলবো। এবং কমিউনিস্ট পার্টির কী ভূমিকা ছিল সেইটা নিয়াও বলবো। এই সব জিনিশ ঠিকমতো ব্যাখ্যা করার খাতিরে আমার প্রথমে ব্যাখ্যা করা লাগবে উমখন্তো কোন উদ্দেশ্যে যাত্রা করসে; এইসব উদ্দেশ্য পূরণ করার কোন কোন উপায় সে প্রেসক্রাইব করসে, এবং কেন এইসব উপায় চুজ করা হইসে। আমি আরো ব্যাখ্যা করবো কীভাবে আমি এইসব সংগঠনের কাজেকর্মে জড়িত হইলাম।

অভিযোগে উল্লেখ করা কিছু কিছু জিনিশ আমি ডিনাই করি, ওগুলা স্পষ্টভাবেই সংগঠনের পলিসির বিরোধী। আমার জানা নাই ঐসব কাজের পিছনে কোন জাস্টিফিকেশন আছে, তবে এইগুলার পিছে যে উমখন্তো’র অনুমোদন থাকতে পারে না সেইটা পরিষ্কার করার লাইগা আমি সংক্ষেপে এই সংগঠনের জন্ম আর তার পলিসির ব্যাপারে কিছু বলতে চাই।

আমি অলরেডি ব্যাপারটা মেনশন করসি যে, উমখন্তো’র জন্মের সাথে আমি যুক্ত ছিলাম। আমি, এবং অন্য যারা এটার শুরুয়াত করসিলাম, তারা এইটা করসি দুই কারণে। এক, আমরা মনে করসি সরকারি পলিসিগত কারণেই আফ্রিকান জনগণের সামনে ভায়োলেন্স বাদে আর কোনো রাস্তা খোলা নাই, এবং, যদি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে জনগণের ফিলিংসকে চালিত ও নিয়ন্ত্রিত না করা যায় তাইলে সন্ত্রাসবাদ ছড়ায়া পড়বে এবং দেশের ভিন্ন ভিন্ন জাতি-বর্ণের মধ্যে শত্রুতা আর তিক্ততার জন্ম হবে। দুই, আমরা বুঝতে পারসি যে ভায়োলেন্স বাদে আফ্রিকান জনগণের পক্ষে শাদা বামুনবাদ [White Supremacy] এর নীতি থেইকা মুক্তিলাভ করা সম্ভব না। এই নীতির বিরোধিতা করার যাবতীয় আইনসম্মত উপায়কেই বন্ধ করা হইসে নতুন আইনের মাধ্যমে, এবং আমাদেরকে এমন একটা অবস্থায় ফেলা হইসে যে – হয় চিরকাল নিচু হইয়াই থাকতে হবে, অথবা সরকারকে ডিফাই করতে হবে। আমরা ডিফাই করার পথকেই বাইছা নিসি। আমরা প্রথমে আইন অমান্য করসি এমন উপায়ে যা যেকোনো রকম ভায়োলেন্সকে এভয়েড করে; যখন এইটার বিরুদ্ধে আইনি-ব্যবস্থারে ইউজ করা হইলো, এবং যখন সরকার অপজিশনকে দমন করার জন্য শক্তির প্রয়োগ করতে লাগলো, শুধুমাত্র তখন আমরা ডিসাইড করলাম ভায়োলেন্স দিয়া ভায়োলেন্সের জবাব দেয়ার।

কিন্তু যেই ভায়োলেন্সের পথ আমরা চুজ করসি তা টেররিজম না। আমরা যারা উমখন্তো গঠন করসি তারা সবাই আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সদস্য ছিলাম, নন-ভায়োলেন্স আর আলোচনার মাধ্যমে পলিটিকাল সমস্যার সমাধান করতে চাওয়ার যেই লম্বা ঐতিহ্য এএনসি’র আছে তা আমাদের রক্তে হাজির ছিল। আমরা বিশ্বাস করি সাউথ আফ্রিকার মালিক এখানকার সবাই, কোনো একটা গ্রুপ এর মালিক না, তা শাদা হোক বা কালো। আমরা ইন্টার-রেশিয়াল যুদ্ধ চাই নাই কোনো, একদম শেষ পর্যন্ত আমরা এটারে এভয়েড করতে চাইসি। যদি আদালতের কোনো সন্দেহ থাকে এই ব্যাপারে, আমাদের সংগঠনের গোটা ইতিহাস ঘাঁটলেই প্রমাণ হবে আমি যা বলসি, এবং যা বলতে যাইতেসি উমখন্তো’র এডপ্ট করা কৌশলের ব্যাপারে। এ কারণে আমি, আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের ব্যাপারে প্রথমে কিছু বলতে চাই।

আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস বানানো হয় ১৯১২ সালে, যেন আফ্রিকার মানুষের অধিকারকে বাঁচানো যায়। প্রথমে সাউথ আফ্রিকা অ্যাক্ট*, তারপরে নেটিভ ল্যান্ড অ্যাক্ট* বানাইয়া আফ্রিকার মানুষের অধিকার সিরিয়াস মাত্রায় কমাইয়া ফেলা হইসে। সাইতিরিশ বছর ধইরা, মানে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত, এই সংগঠন তার লড়াই সংগ্রামের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক রাস্তা ফলো করসে কঠোরভাবে। সে দাবী জানাইসে, পেশ করসে নতুন প্রস্তাবনা, সরকারের কাছে প্রতিনিধিদের পাঠাইসে এই ভরশায় যে শান্তিপূর্ণ আলাপ আলোচনার ভিতর দিয়া আফ্রিকার দুর্দশা দূর করা সম্ভব এবং এভাবেই ধাপে ধাপে আফ্রিকানদের পক্ষে সব পলিটিকাল রাইটস অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু হোয়াইট গভরমেন্ট’রা নির্বিকার থাকলো, আর আফ্রিকানদের অধিকার বাড়ার বদলে উল্টা কমলো। আমার নেতা চিফ লুতুলি, যিনি ১৯৫২ সালে এএনসি’র প্রেসিডেন্ট হইসেন, এবং পরে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাইসেন, তার জবানিতে :

“একটা বন্ধ দরজা, যা কখনো খুলবে না, ধৈর্য ধরে নরমপন্থার সহিত আমার জীবনের তিরিশটা বছর আমি সেই দরোজায় টোকা দিয়া গেলাম বৃথাই, এইটা কে ডিনাই করতে পারবে? নরমপন্থা কী ফল দিলো? গত তিরিশ বছর ধইরা আমাদের হক এবং আমাদের প্রোগ্রেসের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইন বানানো হইসে, যতক্ষণ পর্যন্ত না এমন হালতে আমরা আইসা পৌছাইসি যে অলমোস্ট কোনো অধিকার-ই আর নাই।”

*[সাউথ আফ্রিকা অ্যাক্ট (১৯০৯) – ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এই আইন পাশ হয়, যার মাধ্যমে ইউনিয়ন অফ সাউথ আফ্রিকা কায়েম হয়, ব্রিটিশ এম্পায়ারের একটা স্বায়ত্তশাসিত ডোমিনিয়ন হিসাবে। শাদা’দের হাতে কমপ্লিট পলিটিকাল কন্ট্রোল দেয়া হয়। কালো’দের পার্লামেন্টে বসার রাইট কাইড়া নেয়া হয়।]

*[নেটিভ ল্যান্ড অ্যাক্ট (১৯১৩) – সাউথ আফ্রিকার দশ ভাগের এক ভাগ জমিকে “রিজার্ভ” হিসাবে ডিফাইন করা হয়, এবং এইসব রিজার্ভের বাইরে কালো’দের জমি কেনা বা লিজ নেয়ার রাইট কাইড়া নেয়া হয়।]

১৯৪৯ এর পরেও, এএনসি ভায়োলেন্স এভয়েড করতে ডিটারমাইন্ড ছিল। তবে এই সময়ে, প্রোটেস্ট করার ক্ষেত্রে কঠোরভাবে সাংবিধানিক রাস্তা মাইনা চলার লেগেসি থেইকা আমরা সরে আসছি। এই সরে আসাটা ঘটসে এপার্থেইড আইনগুলার বিরুদ্ধে প্রোটেস্ট করার একটা ডিসিশনের মাধ্যমে, আমাদের নীতিটা ছিল শান্তিপূর্ণ অথচ বেআইনি উপায়ে কিছু আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার। এই পলিসি ফলো কইরাই এএনসি ডিফায়েন্স ক্যাম্পেইন* শুরু করে, যেখানে আমি ভলান্টিয়ারিং এর দায়িত্ব পাই। এই ক্যাম্পেইন দাঁড়াইয়া ছিল প্যাসিভ রেজিসটেন্সের নীতির উপর। ৮,৫০০ জনের বেশি মানুষ এপার্থেইড আইন অমান্য করে জেলে গেসিলো। কিন্তু অমান্যকারীদের দিক থেকে ভায়োলেন্সের একটা সিঙেল ঘটনাও ঘটে নাই। আমি, আরো উনিশজন সহকর্মী সহ, অভিযুক্ত হইসিলাম এই ক্যাম্পেইন অর্গানাইজ করায় ভূমিকা রাখার কারণে। কিন্তু আমাদের রায় স্থগিত করা হইসিলো, মেইনলি এই কারণে যে, আমরা নিয়ম-শৃঙ্খলা আর নন-ভায়োলেন্স মাইনা চলসিলাম পুরা প্রোসেসে। এই সময়েই এএনসি’র ভলান্টিয়ার সেকশন চালু হয়, এবং ‘আমাদেলাকুফা’* শব্দটা প্রথমবার ইউজড হয়: এই সময়েই ভলান্টিয়ারদেরকে কিছু নীতি মাইনা চলার কসম কাটতে বলা হয়। ভলান্টিয়ারদের প্রসঙ্গে এবং তাদের কসমের ব্যাপারে এভিডেন্স তুইলা আনা হইসে এই মামলায়, কিন্তু কনটেক্সটের পুরাপুরি বাইরে থেকে তা করা হইসে। এই ভলান্টিয়াররা শাদা’দের বিরুদ্ধে সিভিল ওয়ারে নামার জন্য কসম কাটা কোনো ব্ল্যাক আর্মি না, ছিলও না কখনো। এরা ছিলেন এবং আছেন ডেডিকেটেড কর্মী হিসাবে, যারা এএনসি’র দ্বারা ইনিশিয়েট করা ক্যাম্পেইনের জন্য লিফলেট বিলি করা, হরতাল অর্গানাইজ করা থেইকা শুরু কইরা ঐ পার্টিকুলার ক্যাম্পেইনের জন্য দরকারি যেইকোনো কাজ করতে প্রস্তুত। তারা ভলান্টিয়ার নামে পরিচিত এই কারণে যে, তারা স্বেচ্ছায় কারাবরণ করতে এবং সেখানে চাবুকের বাড়ি খাইতে রেডি আছেন, যা এই ধরনের কাজের শাস্তি হিসাবে এখন আইন দ্বারা প্রেসক্রাইবড।

*[ডিফায়েন্স ক্যাম্পেইন – ডিফায়েন্স ক্যাম্পেইন ছিল আইন অমান্য করার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী (যেমন, নিজেদের পাস বুক জ্বালায়া দেয়া, হোয়াইট-অনলি এরিয়াতে স্বেচ্ছায় গিয়া এরেস্ট হওয়া, হাজারে হাজারে এরেস্ট হইতে হইতে প্রিজন সিস্টেমকেই ফেইল করায়ে দিতে চেষ্টা করা)। ডিফায়েন্স ক্যাম্পেইন এর আন্ডারে প্রথমবার কোনো কমন লিডারশিপ (আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস, সাউথ আফ্রিকান ইন্ডিয়ান কংগ্রেস) একটা লার্জ স্কেলে মাল্টি-রেশিয়াল ডেমনস্ট্রেশন অর্গানাইজ করতে পারসিলো। ১৯৪৮ সালের হোয়াইট ইলেকশনে ন্যাশনাল পার্টি ক্ষমতায় এসে একের পর এক এপার্থেইড আইন চাপাইতে থাকে, এরই সিলসিলায় ১৯৫০ থেকেই ডিফায়েন্স ক্যাম্পেইনের আভাস মিলতে থাকে, এবং ১৯৫২ তে এটা চূড়ান্ত রূপ পায়।]

*[আমাদেলাকুফা – জুলু ভাষার শব্দ। এর অর্থ স্যাক্রিফাইস।]

ডিফায়েন্স ক্যাম্পেইনের সময়ে পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট* এবং ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট পাশ হয়। প্রোটেস্টে ঘটানো অফেন্সের জন্য আরো কঠিন শাস্তির এন্তেজাম করা হয় এই দুই আইনের দ্বারা। তারপরেও প্রোটেস্ট চলমান আছিলো এবং এএনসি তার নন-ভায়োলেন্সের পলিসিতে তখনও খাড়ায়া ছিলো। ১৯৫৬ সালে কংগ্রেস এলায়েন্সের ১৫৬ জন লিডিং মেম্বারকে এরেস্ট করা হয়, এর মধ্যে আমিও ছিলাম। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছিলো মারাত্মক বিশ্বাসঘাতকতার (হাই ট্রিজন), এবং সাপ্রেশন অফ কমিউনিজম অ্যাক্ট* এর আন্ডারেও চার্জ আনা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ এএনসি’র নন-ভায়োলেন্স পলিসিরে প্রশ্নবিদ্ধ করার ট্রাই করলেও, পাঁচ বছর পরে কোর্ট যখন রায় দিলো তখন দেখা গেলো এএনসি’র কোনো ভায়োলেন্স ওরিয়েন্টেড পলিসি নাই। আমরা সবগুলা অভিযোগ থেকেই বেকসুর খালাস পাইসিলাম, এর মধ্যে একটা অভিযোগ আছিলো এএনসি বর্তমান রেজিমরে সরাইয়া একটা কমিউনিস্ট স্টেট কায়েম করতে চায়। গভরমেন্ট সবসময়ই চাইসে তার যেকোনো অপনেন্টরে কমিউনিস্ট ট্যাগ দিতে। বর্তমান কেইসেও একই কাজ করসে তারা, কিন্তু আমি দেখাবো এএনসি অতীতে বা বর্তমানে কখনোই কমিউনিস্ট সংগঠন ছিল না।

*[পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট (১৯৫৩) – ডিফায়েন্স ক্যাম্পেইনের পরে হোয়াইট পার্লামেন্টে এই আইন পাশ করা হয়, যার দ্বারা কঠোর জরুরি অবস্থা জারি করার পাওয়ার দেয়া হয় গভরমেন্টকে, এবং আইনের বিরুদ্ধে প্রোটেস্ট করা সাজা বাড়াইয়া দেয়া হয়।]

*[সাপ্রেশন অফ কমিউনিজম অ্যাক্ট (১৯৫০) – হোয়াইট পার্লামেন্টের পাশ করা আরেকটা আইন, যার মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টি অফ সাউথ আফ্রিকা’কে ব্যান করা হয়, কমিউনিজম এর একটা ব্রড ডেফিনিশন দিয়ে সেই ডেফিনিশন এর আন্ডারে যেসব এক্টিভিটি এবং অর্গানাইজেশন পড়ে তার সবগুলারেই ইলিগাল হিসাবে ঘোষণা করা হয়, ইন্ডিভিজুয়াল মানুষকেও ব্যান এর আওতায় আনা হয়। মূলত এপার্থেইড এর বিরুদ্ধে থাকা যেকোনো কিছুরেই দমানোর কৌশিশ থেকেই এই আইন করা হইসিলো।]

১৯৬০ সালে শার্পভিলে শুটিংয়ের ঘটনা* ঘটলো। তারপরে জরুরি অবস্থা জারি হইলো, আর এএনসি’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হইলো। আমি আর আমার সহকর্মীরা, যত্নের সহিত পরিস্থিতির বিবেচনা করার পর, ঠিক করলাম যে এ আদেশ আমরা মানবো না। আফ্রিকার জনগণ এই সরকারের পার্ট না, যেসমস্ত আইন মোতাবেক তাদের শাসন করা হয় সেসমস্ত আইন বানানোতে তাদের কোনো হিসসা নাই। আমরা বিশ্বাস করি ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অফ হিউম্যান রাইটস এর কথায়, ‘‘গভরমেন্টের অথরিটির ভিত্তি হইতে হবে জনগণের কবুলিয়ত”। আমাদের মনে হইসে, এএনসির উপর নিষেধাজ্ঞারে মাইনা লওয়ার অর্থ হইলো আফ্রিকার মানুষের মুখ বাইন্ধা দেয়ারে মাইনা লওয়া। এএনসি বিলুপ্ত হইতে রাজি হইলো না, বরং আন্ডারগ্রাউন্ডে চইলা গেলো। ৫০ বছরের বিরামছাড়া পরিশ্রমে গইড়া তুলা এই সংগঠন, আমরা বিশ্বাস করি এরে বাঁচানো আমাদের কর্তব্য। আমি নিশ্চিত, আত্মমর্যাদা আছে এরকম কোনো হোয়াইট পলিটিকাল অর্গানাইজেশন-ও এমন কোনো সরকারের কথায় নিজেরে বিলুপ্ত কইরা দিবে না যেই সরকার তার কোনো মত-ই নেয় না।

*[শার্পভিল ম্যাসাকার (মার্চ ২১, ১৯৬০) – এএনসি’র একটা স্প্লিন্টার গ্রুপ প্যান-আফ্রিকানিস্ট কংগ্রেস (পিএসি) এই তারিখে সারা সাউথ আফ্রিকায় পাস ল’সমূহের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রোটেস্ট অর্গানাইজ করে। শার্পভিল ছিল ব্ল্যাকদের একটা টাউনশিপ। প্রোটেস্টার’দের জন্য ইনস্ট্রাকশন ছিল নিজেদের পাস বই’গুলা থানায় সারেন্ডার কইরা স্বেচ্ছায় এরেস্টেড হওয়া। শার্পভিলে এরকম ২০ হাজার মানুষ পুলিশ স্টেশনের কাছাকাছি হাজির হইসিলো। এরা নিরস্ত্র ছিল। পুলিশের ভার্শন মোতাবেক প্রথমে এদের থেকে ইট পাটকেল ছোড়া হইসিলো। যাই হোক, পুলিশের গুলিতে সেদিন ৬৯ জন ব্ল্যাক আফ্রিকান মারা যায়, ১৮০ জনের বেশি মানুষ ইনজুরড হয়, হতাহত’দের মধ্যে বাচ্চা আর মহিলার সংখ্যাও অনেক ছিল। এরপর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়, ১১ হাজার মানুষরে জেলে ভরা হয়, পিএসি আর এএনসি’কে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৯৬ সালের ১০ ডিসেম্বর সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা এপার্থেইড-পরবর্তী সাউথ আফ্রিকার নতুন কনস্টিটুশনে সাইন করেন এই শার্পভিল ম্যাসাকারের স্পটেই, শহীদদের প্রতি সম্মান দেখায়া।]

১৯৬০ সালে গভরমেন্ট একটা গণভোট করে, যার ফলে রিপাবলিক প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু এটা করা হয় আফ্রিকানদের ভোট নেয়া ছাড়াই, সংবিধানে যেসব চেঞ্জ আনার কথা বলা হইসে সেইগুলা নিয়া কেউ আফ্রিকানদের সাথে কোনো কথা কয় নাই, যদিও তারাই সাউথ আফ্রিকার জনসংখ্যার ৭০ পারসেন্ট। প্রস্তাবিত এই হোয়াইট রিপাবলিকে আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়া আমরা আতঙ্কে ছিলাম। ঠিক হইলো যে একটা প্যান-আফ্রিকান কনফারেন্স করা হবে, যার মাধ্যমে একটা ন্যাশনাল কনভেনশনের প্রস্তাব দেয়া হবে, এবং সরকার যদি কনভেনশন ডাকতে ফেইল করে সেক্ষেত্রে এই আনওয়ান্টেড রিপাবলিকের জন্মলগ্নে গণ-আন্দোলনের এলান করা হবে। নানারকম রাজনৈতিক চিন্তার আফ্রিকান মানুষ এই কনফারেন্সে যোগ দেয়। আমি কনফারেন্সের সেক্রেটারি ছিলাম, এবং আমি দায়িত্ব পাইসিলাম ন্যাশনাল স্টে-অ্যাট-হোম কর্মসূচীর বাস্তবায়ন করার। এরকম একটা স্ট্রাইক অর্গানাইজ করার লোককে এরেস্ট হওয়ার থেকে বাঁচার জন্য পালাইয়া বেড়াইতে হয়, যেহেতু আফ্রিকানদের যেকোনো রকম স্ট্রাইক-ই বেআইনি। এই কাজের জন্য আমারে চুজ করা হইসিলো, এবং তার ফলে আমি ঘরবাড়ি, ফ্যামিলি, জীবন-জীবিকা ছাইড়া পালাইয়া থাকতে বাধ্য হইসিলাম।

এই স্টে-অ্যাট-হোম কর্মসূচী, এএনসি’র পলিসি মোতাবেক, শান্তিপূর্ণভাবে হওয়ার কথা ছিল। যেকোনো রকম ভায়োলেন্স এড়ানোর জন্য অর্গানাইজার আর কর্মীদেরকে যত্নের সাথে ইনস্ট্রাকশন দেয়া ছিল। আর এর জবাবে গভরমেন্ট বানাইলো আরো আরো আইন, যেগুলা আগেরগুলার থেইকা কঠোর, গভরমেন্ট তার আর্মড ফোর্সকে রাস্তায় নামায়া দিলো, সারাসিনদের পাঠাইলো, আর্মড ভেহিকেল নামাইলো, টাউনশিপের* ভিতর সৈন্যদের পাঠায়া দিলো – সব মিলায়া, শক্তির এক বিরাট প্রদর্শনীর দ্বারা মানুষের মনে ভয় ঢুকায়া দিতে চাইলো। এইটা ছিল একটা ইন্ডিকেশন যে, গভরমেন্ট তার ক্ষমতার জোরে জনগণের উপর তার শাসন চালায়া যাইতে চাইতেছে। গভরমেন্টের এই ডিসিশনটা ছিল উমখন্তো’র জন্মের পথে একটা মাইলফলক।

*[টাউনশিপ – এপার্থেইড আইনের দ্বারা যেই জায়গাগুলারে নির্দিষ্ট করা হইসিলো কালো’দের থাকার লাইগা]

কিছু কিছু বিষয়কে মনে হইতে পারে এই কেইসের সাথে অপ্রাসঙ্গিক। কিন্তু, আমি মনে করি এর কোনোটাই অপ্রাসঙ্গিক না, কারণ আমার বিশ্বাস এই কথাগুলা শুনার পরে আদালত সেই এটিচিউড’কে এপ্রিশিয়েট করতে পারবেন যেই এটিচিউড ন্যাশনাল লিবারেশন মুভমেন্টের সাথে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি আর গ্রুপ পরিস্থিতির পরম্পরায় এডপ্ট করে নিসিলো। প্রাণহানি এড়াইতে হবে – এটাই ডমিনেন্ট আইডিয়া ছিল, আমি ১৯৬২-তে জেলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত। আর এখন আমি জানতে পারসি ১৯৬৩-তেও এটাই ডমিনেন্ট ছিল। আমরা, যারা আমাদের মানুষদের লিডার, তাদের কী করার ছিল আসলে? সরকারের শক্তি প্রদর্শন, আর আমাদের যেইকোনো ফিউচার একশনের প্রতি ছুইড়া দেয়া থ্রেটের সামনে খাড়ায়া, আমাদের কি উচিত ছিল হার মাইনা নেয়া? নাকি উচিত ছিল ফাইট করা? আর যদি ফাইট করতেই হয় তাইলে সেটা কোন উপায়ে?

আমাদের এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ ছিল না যে, আমাদেরকে আমাদের ফাইট চালায়া যাইতে হবে। এর বাইরে অন্য যেকোনো অপশন-ই হইতেছে লজ্জাজনক সারেন্ডার। ফাইট করবো কি করবো না এই প্রশ্নে আমাদের সমস্যা ছিল না, আমাদের সমস্যা ছিল কীভাবে ফাইট করবো সেই প্রশ্নে। আমরা, এএনসির লোকেরা, সবসময় একটা নন-রেশিয়াল ডেমোক্রেসির দাবির পক্ষে খাড়ায়া ছিলাম, এবং আমরা সবসময় এমন কাজ থেইকা দূরে থাকসি যেই কাজের কারণে ভিন্ন ভিন্ন রেইসের মধ্যেকার দূরত্ব আরো বাড়তে পারে। কিন্তু, নির্মম সত্যটা হইতেছে, ৫০ বছরের নন-ভায়োলেন্সের বিনিময়ে আফ্রিকান মানুষ পাইসে আরো বেশি দমনমূলক আইন, এবং আরো কমতে থাকা সংখ্যক অধিকার। কোর্টের জন্য হয়তো পরিস্থিতিটা বুঝা সহজ হবে না। কিন্তু ফ্যাক্ট হইলো, মানুষ অনেকদিন ধইরাই ভায়োলেন্সের পক্ষে কথা কইতেছে, তারা সেইদিনটার কথা কইতেছে যেইদিন তারা শাদা’দের সাথে যুদ্ধ কইরা তাদের দেশ ফেরত নিবে। আমরা, এএনসি’র লিডাররা, সবসময়ই তাদেরকে ভায়োলেন্স এভয়েড করা আর শান্তিপূর্ণ রাস্তা ফলো করার দিকে টানসি। কিন্তু ১৯৬১-তে, ততদিনে আমাদের কথা কওয়ার আর মুখ ছিল না, কারণ আমাদের নন-ভায়োলেন্সের মাধ্যমে নন-রেশিয়াল স্টেট কায়েমের পলিসি কিছুই এচিভ করতে পারে নাই, এবং আমাদের ফলোয়াররা এই পলিসির উপর থেইকা ভরশা হারাইতেসিলো, আর সন্ত্রাসবাদের ডিস্টার্বিং সব আইডিয়া জন্ম নিতেসিলো।

ভুইলা যাওয়া যাবে না যে, এই সময়ে আইসা ভায়োলেন্স সাউথ আফ্রিকার পলিটিকাল পরিস্থিতির একটা ফিচার হইয়া উঠসিলো। ভায়োলেন্স ঘটসিলো যখন ১৯৫৭-তে জিরুস্টের মহিলাদেরকে পাস ক্যারি করার আদেশ দেয়া হইসিলো, যখন ১৯৫৮ তে সেখুখুনিল্যান্ডে ক্যাটল কালিং চালু করা হইসিলো, যখন ১৯৫৯-এ কেটো ম্যানর’এর মানুষ প্রোটেস্ট করসিলো পাস চেক করার বিরুদ্ধে, যখন ১৯৬০-এ গভরমেন্ট পোন্ডোল্যান্ড’এ বান্টু অথরিটি* ইম্পোজ করতে চাইসিলো। ৩৯ জন আফ্রিকান মানুষ মারা গেসিলো এইসব ঘটনায়। ১৯৬১-তে ওয়ার্মবাথে রায়ট হইসিলো। আর, ট্র্যান্সকাই এই গোটা সময়টা জুড়েই উত্তপ্ত কয়লার ভিতর ছিল। প্রত্যেকটা ঘটনা পরিষ্কারভাবে এটাই দেখায় যে, ভায়োলেন্সকে একমাত্র সমাধান হিসাবে দেখার চিন্তাটা আফ্রিকানদের মধ্যে দিন দিন শক্তিশালী হইতেসিলো। এবং আরো দেখায় যে, যেই গভরমেন্ট তার হুকুমত টিকায়া রাখে শক্তির জোরে, সে জনগণকে এটাই শিখায় যে জুলুমকে থামানোর জন্য শক্তির জোর-ই খাটানো লাগবে। আর্বান এরিয়াতে অলরেডি ছোট ছোট গ্রুপ রাইজ করতেসিলো, এবং তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্ল্যানিং করতেসিলো ভায়োলেন্ট ফর্মে পলিটিকাল স্ট্রাগল চালানোর। এই সময়ে এমন একটা ঝুঁকি তৈয়ার হইসিলো যে, যদি ঠিকমতন ডিরেকশন না দেয়া যায় তাইলে এই গ্রুপগুলা আফ্রিকান এবং হোয়াইট’দের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কাজকর্মে জড়ায়া পড়তে পারে। পার্টিকুলারলি জিরুস্ট, সেখুখুনিল্যান্ড এবং পোন্ডোল্যান্ডে আফ্রিকানদের মধ্যে জন্ম নেয়া ভায়োলেন্সগুলা ছিল খুবই ডিস্টার্বিং। ঘটনাগুলা দ্রুতই গভরমেন্টের বিরুদ্ধে স্ট্রাগলের জায়গা থেকে সরে আইশা নিজেদের মধ্যে বিবাদে রূপ নিতেসিলো, এবং প্রাণের ক্ষয় আর তিক্ততা বাদে অন্য আর কিছু এচিভ করার সম্ভাবনা হারাইতেসিলো।

*[বান্টু অথরিটি – সাউথ আফ্রিকায় ব্ল্যাকদেরকে মেজরিটি থেইকা মাইনরিটি’তে পরিণত করার একটা গ্র্যাজুয়াল প্রোসেস ছিল এই বান্টু অথরিটি বা বান্টুস্তান কায়েম করা। “বান্টু” ওয়ার্ডটা নিয়া আলাপ করতে গেলে জিনিশটা লেংদি এবং জটিল হইয়া পড়বে, তাই সেটা এড়ায়া গিয়া খালি এইটুক বলি – ন্যাশনাল পার্টি গভরমেন্ট ব্ল্যাকদেরকে বিভিন্ন ছোট ছোট রিজার্ভে আবদ্ধ কইরা সেইসব এলাকাকে বান্টুস্তান নাম দিতো, এবং ঐ লোকেদের সাউথ আফ্রিকান নাগরিকত্ব কাইড়া নিতো। এই সময় অন্তত চারটা এলাকাকে স্বাধীন বান্টুস্তানি রাষ্ট্র ঘোষণা করে সাউথ আফ্রিকান গভরমেন্ট। ১৯৯৪ এ প্রথম নন-রেশিয়াল ইলেকশনের পর সাউথ আফ্রিকার পার্লামেন্টে এইসব বান্টুস্তান বাতিল হইয়া যায়।]

১৯৬১ সালের জুন মাসের শুরুতে, অনেক দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়া সাউথ আফ্রিকার সিচুয়েশনের একটা লম্বা অ্যাসেসমেন্ট খাড়া করাইবার পর, আমি এবং আমার কিছু কলিগ, এই কনক্লুশানে পৌঁছাইলাম যে, যখন দেশে ভায়োলেন্স অনিবার্য হইয়া দাঁড়াইসে, তখন যদি আফ্রিকান লিডাররা শান্তি আর নন-ভায়োলেন্স প্রচার করতে চায় তাইলে সেটা হবে বাস্তব-বর্জিত এবং ভুল একটা কাজ। সময়টা ছিল এমন যখন গভরমেন্ট শান্তিপূর্ণ দাবিগুলার জবাব দিতেসিলো ফোর্স এপ্লাই কইরা।

এই কনক্লুশন সহজে আসে নাই। যখন অন্য সবকিছুই ফেইল করসে, যখন শান্তিপূর্ণ প্রোটেস্টের সবগুলা রাস্তা বন্ধ কইরা দেয়া হইসে, শুধুমাত্র তখন ডিসিশন নেয়া হইসে ভায়োলেন্ট ফর্মে পলিটিকাল স্ট্রাগলের রাস্তায় হাঁটার, উমখন্তো ওয়ে সিজওয়ে’র জন্ম দিবার। আমরা মনের খুশিতে এটা করি নাই, বরং সরকার আমাদের লাইগা আর কোনো অপশন রাখে নাই। উমখন্তো’র মেনিফেস্টো, যেটা ১৬ ডিসেম্বর ১৯৬১ তারিখে প্রকাশিত হয়, এবং যেটা আদালতে নমুনা হিসাবে তোলা হইসে, ওখানে লেখা আছে :

“প্রত্যেক জাতির জীবনেই এরকম সময় আসে, যখন খালি দুইটা পথই খোলা থাকে – হয় দাসত্ব মানিয়া লইতে হবে, অথবা ফাইট করতে হবে। সাউথ আফ্রিকার জন্য এখন এরকমই একটা সময় হাজির হইসে। আমরা দাসত্ব মানিয়া লইবো না। আমাদের মানুষ, আমাদের ফিউচার আর আমাদের ফ্রিডমের স্বার্থে আমরা আমাদের সব শক্তি জড়ো কইরা পাল্টা আঘাত করবো।”

১৯৬১’র জুনে এটাই ছিল আমাদের মনের অবস্থা, যখন আমরা ন্যাশনাল লিবারেশন মুভমেন্টের পলিসিতে চেইঞ্জ আনার চেষ্টা শুরু করসিলাম। আমি শুধু এটাই কইতে পারি যে, এটা করাটারে আমি আমার নৈতিক দায়িত্ব হিসাবে ফিল করসিলাম।

আমরা যারা এই ডিসিশন নিসিলাম, তারা এরপর এএনসি সহ বিভিন্ন অর্গানাইজেশনের লিডারদের সাথে এ ব্যাপারে কথা কইতে শুরু করলাম। আমি বলবো না কাদের সাথে আমাদের কথা হইসিলো, বা তারা কী কইসিলো, তবে স্ট্রাগলের এই ফেজে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের কী ভূমিকা ছিল সে ব্যাপারে এবং উমখন্তো ওয়ে সিজওয়ে’র পলিসি আর উদ্দেশ্যের ব্যাপারে আমি কথা বলবো।

এএনসি’র দৃষ্টিভঙ্গি ছিল পরিষ্কার, নিচে তার সারমর্ম দেয়া হইলো :

এএনসি একটা মাস পলিটিকাল অর্গানাইজেশন, যার নির্দিষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্য আছে। এর সদস্যরা নন-ভায়োলেন্সের পলিসিকে সাপোর্ট কইরাই এখানে জয়েন করসে।

এইসব কারণে, এএনসি ভায়োলেন্সে জড়াইতে পারে না, এবং চায় না। এটা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। এরকম একটা বডিকে বদলায়া সাবোটাজ চালানোর জন্য উপযোগী ছোট, ক্লোজ বন্ধনে যুক্ত সংগঠনে রূপ দেয়া সম্ভব না। এটা পলিটিকালি ঠিক কাজও হবে না, কারণ এর ফলে মেম্বাররা দুইটা এসেনশিয়াল কাজ থেইকা দূরে সইরা পড়বে : পলিটিকাল প্রোপাগান্ডা আর অর্গানাইজেশন। সংগঠনের গোটা নেচার চেইঞ্জ কইরা ফালানোটা পারমিসিবল-ও না।

অন্যদিকে, যে সিচুয়েশন আমি বর্ণনা করলাম, সেই সিচুয়েশনে খাড়ায়া এএনসি তার পঞ্চাশ বছরের নন-ভায়োলেন্স পলিসি থেইকা সরে আসতে প্রিপেয়ার্ড ছিল এই এক্সটেন্ট পর্যন্ত যে, প্রোপারলি কন্ট্রোলড ভায়োলেন্সকে সে ডিজএপ্রুভ করবে না। ফলে যেসব মেম্বাররা এরকম কাজে জড়াবে তারা এএনসি’র মধ্যে কোনো ডিসিপ্লিনারি একশনের মুখামুখি হবে না।

আমি ‘প্রোপারলি কন্ট্রোলড ভায়োলেন্স’ বলতেসি, কারণ যে সংগঠন আমরা বানাইসি তারে এএনসি’র পলিটিকাল গাইডেন্স-ই মানতে হবে, এবং এরকম কোনো এক্টিভিটির দিকে যাওয়া যাইবো না যার পিছে এএনসি’র সম্মতি নাই। এই ভায়োলেন্সের ফর্ম কী হবে তা কীভাবে ঠিক করা হইসিলো সেটা আমি কোর্টকে বলবো।

আমাদের ডিসিশনের বেসিসে ১৯৬১’র নভেম্বরে উমখন্তো’র জন্ম হয়। যখন আমরা আমাদের ইরাদা পাকা করলাম, আর আমাদের প্ল্যান খাড়া করাইতে থাকলাম, এএনসি’র নন-ভায়োলেন্স আর রেশিয়াল হারমোনি’র ঐতিহ্য তখন আমাদের সাথে ছিল। আমাদের ফিল হইতেসিলো যে, কালো আর শাদা’দের মধ্যে একটা সিভিল ওয়ার লাইগা যাবার পথেই দেশটা আগাইতেসে। আমরা এই সিচুয়েশন নিয়া আতঙ্কের ভিতর ছিলাম। সিভিল ওয়ারের সম্ভাব্য অর্থ হইলো, এএনসি যা কিছুর পক্ষে আছে সেইগুলার ডেস্ট্রাকশন; সিভিল ওয়ার লাইগা গেলে এরপর রেশিয়াল হারমোনি একটা দূর কল্পনায় পরিণত হইতে পারে। যুদ্ধের পরিণাম কী হইতে পারে তার নজির আমাদের ইতিহাসে অলরেডি আছে। সাউথ আফ্রিকান ওয়ারের ক্ষত মুছতে পঞ্চাশ বছর লাইগা গেছে। আরো অনেক সময় চইলা যাবে একটা ইন্টার-রেশিয়াল সিভিল ওয়ারের ক্ষত মুছতে, যে যুদ্ধে নিশ্চিতভাবেই দুই পক্ষের প্রচুর জীবন খরচ হইয়া যাবে।

সিভিল ওয়ারকে এভয়েড করতে চাওয়ার চিন্তাই এত বছর ধরে আমাদের মধ্যে ডমিনেন্ট ছিল, কিন্তু ভায়োলেন্সকে আমাদের পলিসির পার্ট হিশাবে এডপ্ট কইরা নিবার পর, আমরা বুঝতে পারলাম কোনো একদিন এইরকম একটা যুদ্ধের মধ্যে আমরা পইড়া যাইতে পারি। প্ল্যানিং করার সময় এইটা আমাদের মাথায় রাখা লাগতো। আমাদের দরকার আছিলো এমন একটা প্ল্যান যেইটা ফ্লেক্সিবল, যেইটা আমাদেরকে সময়ের প্রয়োজন মোতাবেক কাম করতে সুযোগ দেয়; সবচেয়ে বড় কথা, প্ল্যানটা হইতে হবে এমন যেখানে সিভিল ওয়ার হইতেসে লাস্ট অপশন, ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি অনুযায়ী-ই এ বিষয়ে অন্তিম সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা সিভিল ওয়ারের আকাঙ্ক্ষায় ছিলাম না, তবে যদি সিভিল ওয়ার অনিবার্য হইয়া পড়ে সেক্ষেত্রে আমরা রেডি থাকতে চাইসিলাম।

ভায়োলেন্স চার প্রকারের হইতে পারতো। সাবোটাজ, গেরিলা ওয়ারফেয়ার, টেররিজম, আর ওপেন রেভোলিউশন। আমরা প্রথমটা এডপ্ট করার সিদ্ধান্ত নিসিলাম, এবং অন্য কোনো সিদ্ধান্তে যাইবার আগে আমরা প্রথমটারেই পুরাপুরি ব্যবহার করতে চাইসিলাম।

(টু বি কন্টিনিউ)

The following two tabs change content below.
Avatar photo

লাবিব ওয়াহিদ

কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →