স. মুহম্মদ নাহিন রহমানের কবিতা
পৃথিবীর সেইসব চায়ের দোকান
আমাকে বিক্রি করে দিয়েছিলো যারা চায়ের দোকানে, তাঁদের প্রতি আমার কোনো ক্ষোভ নাই মা-
প্রতি রাতে ঝুলে থেকে থেকে বাসি বন রুটি- পুরাতন কুকুরের অভ্যস্ত খাবার হতে হতে আমার-
তবু, মনে হয়-
আমায় তবু, তারা দেখতে আসুক একবার।
একবার কিনুক, দুধ চা দিয়ে ভেজা মিষ্টি বন রুটি হয়ে-
একবার ঘুমিয়ে পড়ি তাদের স্নিগ্ধ বুকে-
সুইসাইড
একদিন জানবা, সুইসাইড ও বিরক্তিকর,
সিনেমার মত, পপুলিস্ট।
অইদিন লেভেলে আসবা তুমি- অইদিন কথা হবে।
সব থেকে নির্বাণ হয়ে, মৃত্যুরে সবচাইতে
উজ্জ্বল, মোহনীয়, আরবি আতর-
মনে করে, ঝাঁপায় পড়ার
নেশা, কৈশোর-
একদিন, শেষ হোক-
আমি তো কোথাও যাইতেসি না।
আমি নিচে বইসা আছি,
অনেক নিচে,
এতটা নিচে-
আসতে হইলে-
তোমারে, তোমার কবর পার হয়ে
আরো দুই হাত নিচে,
চোখ বন্ধ করে দিতে হবে লাফ।
ঐখানে, এখনো আছি আমি-
স্থির, কোথাও যাইতেসিনা যেন, তাড়া নাই
সারামাস
অলস জুম্মাবার, অইখানে
আইসো একদিন-
চা খাবো, অইদিন কথা হবে।
দূরত্ব
বয়ামের ভেতর দেখবা, দূরত্ব পইড়া আছে- তোমার,
অথচ, তুমি তারে
ধ’রতেই পারতেসোনা। ভাবো,
একটা মানুষ পইড়া আছে- দূরে
যে দূরের দুঃখ বুঝতেসে না।
যেভাবে দূর ক্রমে-
লীন হয়ে যাইতেসে, মানুশ, জানে কি?-
পৃথিবী
একদিন আত্মহত্যা ক’রবে শুধু বিষাদহীনতায়;
লোনলি সউলস, বেঁচে থাকো
আর,
অল্প বয়স্ক মেয়েদের থেকে দূরে থাকবা,
এতটা দূরে-
যেন, তারা যখন অর্ধেক বুক হয়ে ডাকতেসে তোমারে ডার্ক শাওয়ারে-
আর, সাধতেসে- মুখে মুখে কফি,
তখনও- যেন, তোমার কোনো কাজ থাকে।
মনে রাখবা, এই জায়গাটা-
অনেক ক্ষুধার্ত, আর- মানুশের পেটে দীর্ঘদিন
কোনো দানা পড়ে নাই, এমন মানুশই মূলত,
ভালোবাসে- বিকেল বেলাতে শিকার ক’রে খেতে
মানুশের গোশ। তাই-
দূরে থাকো।
গোশ হয়ে উঠো না- এমন৷ যেন-
বিকালের মার্কেটপ্লেসে- কেউ, বেচে কিনে
খায়, এইসব বুড়া গোশ।
তুমি যা ভাবতেসো-
তা নাই, মেইনলি- কোনো গোপন চুমুই নাই
যা মুছে দিতে পারে, এইসব-
ভুল কোট টাই-
আকাশ কালো করে আসা লোনলিনেস।
মৌনতার চে
মৌনতার চে সুন্দর কিছু নেই কিন্তু, আছে-
এরপরের লাইনে, কি লিখবো? শূন্যতা?.. তিনটি ডট? পৌনপুনিক ?…
জটিল সব ম্যাথমেটিকসের মত মনে হয়, মাটির স্থির নিচে- সকল খনিজ- প্রতিদিন আরো, গভীরে চলে গেছে যারা- অভিমানের মতন, মুখ কালো- আরো মৌন
আরো দুঃখী ভাব নিয়ে- যারা
নিভে যাচ্ছিলো- আরো অন্ধকারে,
একদিন- জটিলতর ক্রোমা হয়ে
স্থির ফুটে ওঠে সূর্যের অভিমুখে-
স্থির-
মৌনতার চে, সুন্দর, যা কিছু আছে- তা হল, তুমি।
মেলানকলি
তুমি ভাবতেসো দুঃখরে কেন মেলানকলি বলে বলে বুঝানো লাগতেসে-
এটাই বিষাদ-
আর, আমি ভাবতেসি
এই শব্দটাও শেষ হয়ে গেল।
এবার, কি? তোমার- মুখের দিকে
তাকায়ে থাকার বাইরে-
আর কোনো ভাষা- আছে? আমার আর-
দেখতেসো না- কত কত কথা
চারিদিকে, বলে-
সকল, মানুষ শুধু চাপতেসে- ব্যাকস্পেস….
যেন, মানুষের-
সব কিছু বলা শেষ।
এপ্রিল’২০
সমস্যা অইটা না- যে, ওরা তোমারে বিক্রি করতেসে।
সমস্যা-
আমার তুমারে কিনবার টাকা শুধু নাই।
এই, তুমি কি প্রতিবাদ করতে পারো না? তুমি সার্কাসের বান্দর?
তুমি কি টিয়াপাখির খাঁচা?
তুমি আর কিছুদিন- মাছের বরজে মাছ হয়ে আর কিছুদিন –
ভেসে থাকতে পারলা না? –
আর, কিছুদিন গেলেই তো-
আমিই তোমারে কিনে নিতাম। তারপর,
দেখতাম আমি- তুমি কেমন আরবী জানো
কতখানি পানি, কতখানি জল-
তোমার শরীর কাঁপানো- মুদ্রার ঝাঁকি, শুধু একা একা দেখতাম!
অথচ, তার আগেই- তুমি বিক্রি হয়ে গেলা।
সাইলেন্স
খিয়াল ক’রে দেখো- কি কথা ব’লতেসে- একজন লোক- আরেকজন লোকের সাথে-
রাত্তির শেষ ক’রে এসে-
নাথিং, যখন- কেউ কিছু আর ব’লতে পারেনা- সাইলেন্স-
টানা সাইলেন্স-
তাকেই কবিতা ব’লে মনে হতে থাকে-
স. মুহম্মদ নাহিন রহমান
Latest posts by স. মুহম্মদ নাহিন রহমান (see all)
- স. মুহম্মদ নাহিন রহমানের কবিতা - নভেম্বর 30, 2022