বাংলাদেশি ফিকশন: গালিভরের সফরনামা – আবুল মনসুর আহমদ
- বাংলা ক্ল্যাসিক। দ্বিজ কানাইয়ের মহুয়া।
- সুলতানার স্বপ্ন – রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
- বাংলাদেশি ফিকশন: গালিভরের সফরনামা – আবুল মনসুর আহমদ
- বাংলাদেশি ফিকশন: অগ্নিগিরি – কাজী নজরুল ইসলাম
- বাংলাদেশি ফিকশন: নেড়ে – সৈয়দ মুজতবা আলী
- শাহেদ আলীর গল্প – ঐ যে নীল আকাশ
- বই থেকে: একটি নীল বোতাম – হুমায়ূন আহমেদ
- ফিকশন: দেশ নাই
- ফিকশন: দোস্তি
গালিভরের সফরনামা
(অপ্রকাশিত শেষাংশ)
প্রকাশকের আরজ
গালিভর সাহেব ছিলেন মশহুর মুসাফির। দুনিয়ার ছোট-বড় ছেলে-বুড়ো সবাই তাঁর নাম জানেন, যেমন আমরা সবাই জানি ‘ইত্তেফাকে’র মুসাফিরের নাম। তবে তফাৎ এই যে, ‘ইত্তেফাকে’র মুসাফিরের খ্যাতি পাকিস্তানেই সীমাবদ্ধ; কারণ পাসপোর্ট-ভিসার হাংগামায় তিনি দেশের বাইরে সফর করিতে পারেন না। তাছাড়া, আজকাল বিদেশে সফর করিতে হইলে হাওয়াই জাহাজে চড়া চাই। হাওয়াই জাহাজের ভাড়া যোগাতে পারে কেবল সরকারি তহবিল। ‘ইত্তেফাকে’র মুসাফিরের এসব সুবিধা নাই। কাজেই, তিনি বিদেশে সফরে যাইতে পারেন নাই। কিন্তু গালিভর সাহেবের আমলে সফরের খুবই সুবিধা ছিল। পাসপোর্ট ভিসার কোন হাংগামা ছিল না। সের খানেক চিড়া, চার পয়সার বাতাসা অথবা কিছু চিনা বাদাম পুটলায় বাঁধিয়া বাহির হইয়া পড়িলেই হইত। গালিভর সাহেব তাই ইচ্ছামত সফর করিতে পারিতেন এবং করিতেন। তাই দুনিয়া-জোড়া তাঁর নাম।
এই গালিভর সাহেবের যে সফর-নামা আপনারা সবাই পড়িয়াছেন, সেখানা লেখা ইংরাজিতে। অজ্ঞ লোকের ধারণ, গালিভর সাহেব শুধু ইংরাজিতেই একখানামাত্র সফর-নামা লিখিয়াছিলেন। কিন্তু আসল কথা তা নয়। আসলে গালিভর সাহেব দুইখানা সফর-নামা লিখিয়া যান: একখানা ইংরাজিতে, অপরখানা বাংলায়। এইখানে এতকালের এই গোপন কথা আজ প্রকাশ করিয়া দেওয়া আমি আবশ্যক মনে করিতেছি যে, গালিভর সাহেব বাঙলা জানিতেন; কারণ, তাঁর মাতৃভাষাই ছিল বাঙলা-যেহেতু তিনি ছিলেন খাঁটি বাঙালি। তিনি ছিলেন অতিমাত্রায় স্পষ্টবাদী। তাঁর স্পষ্ট কথাকে লোকে গালি মনে করিত। তাই, শত্রুরা তাঁর দুর্নাম দিয়াছিল গালি-ভরা।
এই বইয়ের প্রথম মুদ্রণের পর আরও কিছু পুরাতন ও উলি-কাটা কাগজ-পত্র উদ্ধার করিয়াছি। তাতে দেখা যায় যে, গালিভর সাহেব নোয়াখালী জেলার বাশেন্দা ছিলেন। তাঁর আসল নাম ছিল গালিব। নোয়াখালী জেলার গালিবপুর গ্রাম আজও তাঁর স্মৃতি বহন করিতেছে। এতে স্বচ্ছন্দে অনুমান করা যাইতে পারে যে, দুশমনেরা গালিব নামকেই বিকৃত করিয়া ‘গালিবর বা গালিভর’ করিয়াছিল।
যা হোক, গালিভর সাহেবের দু’খানা সফর-নামার মধ্যে ইংরাজিখানা প্রকাশের ভার তিনি দিয়া যান জনাথন সুইফ্টের উপর; আর বাঙলাখানা প্রচারের ভার দেন তিনি আমার উপর। গালিভর সাহেব তাঁর ইংরাজি সফর-নামাখানা আঠার শতকেই প্রকাশের হুকুম দিয়াছিলেন; কিন্তু বাঙলা খানার প্রকাশ তিনি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখিতে ওসিয়ত করিয়া যান। তার কারণ এই যে, ইংরাজি সফর-নামা লিখিয়াছিলেন তিনি ফিজিক্যাল জায়েন্টে (দেও) ও ফিজিক্যাল ডুয়ার্ফ (বাউন)-দের লইয়া; আর বাঙলা সফর-নামা লিখিয়াছিলেন তিনি ইন্টেলেকচুয়াল জায়েন্ট (দেও) ও ইন্টেলেকচুয়াল ডুয়ার্ফ (বাউন) দের লইয়া। ফিজিক্যাল জায়েন্ট ও ফিজিক্যাল ডুয়ার্ফদের কাহিনী বুঝিবার মত বুদ্ধি-শুদ্ধি মানুষের আঠার শতকেই হইয়াছিল। কিন্তু ইন্টেলেকচুয়াল জায়েন্ট ইন্টেলেকচুয়াল ডুয়ার্ফদের কাহিনী বুঝিবার মত বুদ্ধি-আক্কেল বিশ শতকের আগে মানুষের হইবে না, গালিভর সাহেব ইহা আন্দাজ করিয়াছিলেন। বিশ শতকের ঠিক কোন সময়ে কোন সালে এবং কোন দিন ইহা প্রকাশ করিলে, পাঠকরা তা বুঝিতে পারিবে, সেটা আন্দাজ করিবার ভার গালিভর সাহেব আমারই উপর দিয়া গিয়াছিলেন।
কিন্তু গালিভর সাহেব একটু ভুল করিয়াছিলেন। লোকজনের বুদ্ধি-আক্কেল পাকিল কিনা, সেটা বুঝিতে গেলে বুঝনেওয়ালারও যথেষ্ট বুদ্ধি-আক্কেল থাকা চাই। দুর্ভাগ্যবশত আমার বুদ্ধি-আক্কেলের যথেষ্ট প্রখরতার অভাবে বড় দেরিতে আজ বুঝিতে পারিয়াছি যে, গালিভর সাহেবের বাংলা সফর-নামা বুঝিবার মত বুদ্ধি আক্কেল মানুষের অনেক আগেই হইয়া গিয়াছে। তথাপি ‘বেটার লেইট দ্যান নেভার’ এই নীতির উপর ভরসা করিয়া গালিভর সাহেবের বাঙলা সফর-নামা বিলম্বে হইলেও প্রকাশ করিলাম। প্রকাশ থাকে যে, আমার বাক্সপেটেরা বা আলমারি না থাকায় আমি গালিভর সাহেবের পাণ্ডুলিপিটি বাঁশের চোংগায় ভরিয়া ঘরের চালে লটকাইয়া রাখিয়াছিলাম। এত সাবধানতা অবলম্বনের ফলে পাণ্ডুলিপিটি চুরি যায় নাই বটে, কিন্তু উলিতে উহার কয়েক পাতা খাইয়া ফেলিয়াছে। উলির মাটি ঝাড়িয়া পুছিয়া যে কয় পাতা উদ্ধার করা গিয়াছে, নিম্নে তাই ছাপা হইল।
১. আবার সফর শুরু
না, আল্লাহ আমার বরাতে বিশ্রাম লেখেন নাই। তা যদি লিখিতেন তবে এরই মধ্যে আমার আক্কেল হইত। দেখিতেছি, আমার আক্কেল দাঁত গজায় নাই। আগের দুইট সফরে কত বালা-মুসিবতে পড়িলাম, নিশ্চিত মরণের হাত হইতে কানের কাছ দিয়া বাঁচিয়া আসিলাম। খোদা-খোদা করিয়া ঘরে ফিরিয়া নিজের দুহাতে দুই কান মলিয়া কসম খাইলাম: আর যদি ঘরের বাহির হই, তবে আমি আমার বাপের…ইত্যাদি।
কিন্তু কয়েকদিন ঘরে থাকিবার পরই আবার সফরের জন্য মন খেপিয়া উঠিল। ঘরে বসিয়া দম আটকাইয়া আসিবার উপক্রম হইল। কিন্তু মনকে চোখ রাঙাইয়া বলিলাম: হুশিয়ার মন, আবার বিদেশে যাইবার নাম করিবি ত খুন করিয়া ফেলিব।
মন চুপ করিল। কিন্তু তলে তলে সে কি ষড়যন্ত্র করিল খোদাই জানেন।
হঠাৎ দেখিলাম, একদিন জাহাজের ডেকে বসিয়া চিড়া-বাতাসা চিবাইতেছি। বুঝিলাম, মন আমাকে বড় জবর ফাঁকি দিয়াছে; আবার সফরে বাহির হইয়া পড়িয়াছি। মন আমার দিকে চাহিয়া মুচকি হাসিল। আমিও ফিক্ করিয়া হাসিয়া ফেলিলাম। বুঝিলাম, আমিও খুশী হইয়াছি।
কিন্তু বেশিক্ষণ খুশী থাকিতে পারিলাম না। সমুদ্দুরে ঝড় উঠিল। যথারীতি জাহাজ ডুবিল। বরাবরের মতই শুধু আমিই বাঁচিয়া রহিলাম।
কপালে দুঃখ আছে, মরিব কেন?
জাহাজ ডুবিলে কি করিয়া আত্মরক্ষা করিতে হয়, তা আমার জানা ছিল। একটা তক্তার সাথে নিজেরে ভাল করিয়া বাঁধিলাম। তক্তা ভাসিয়া চলিল।
কিন্তু কি আশ্চর্য। তক্তাটা অন্যান্য বারের মত ভাটির দিকে না গিয়া এবার উজাইয়া চলিল। এইভাবে চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত চলিবার পর তক্তা ভাসিয়া আসিয়া এক ঘাটি লাগিল।
দেখিলাম, ঘাটে কতকগুলি দেও ডুবাইয়া-সাঁতরাইয়া গোসল করিতেছে এবং মাঝে মাঝে সমুদ্দর হইতে বড় বড় তিমি মাছ ধরিয়া সরুজের তাপে ‘ফ্রাই’ করিয়া খাইতেছে। বুঝিলাম, এরা উজ-বিন-উনুকের বংশধর।
একটা দেও বাম হাতের দুই আংগুলে চিমটা দিয়া তক্তাসহ আমাকে ডান হাতের তলায় তুলিয়া লইল। স্রোতের চোটে আমার পরনের কাপড় খসিয়া পড়িয়াছিল। আমি লজ্জায় উহু-উহু করিতে লাগিলাম।
দেওটা তার সাথীদের ডাকিয়া বলিল: ওহে, এটা মানুষই বটে; তবে কোন অসভ্য দেশের বাউন। কারণ, ল্যাংটা থাকার দরুন এই বাউনটা শরমে মরিতেছে।
—বলিয়া দেওটা হাসিল। তার সংগীরাও হো-হো করিয়া উঠিল।
দেওটা বলিল: ওহে অসভ্য বাউন, তোমার শরমের কোন কারণ নাই। আরা সবাই পুরুষ এবং ল্যাংটা গোসল করিতেছি। ডাঙায় আমরার সবারই কোট-প্যান্টলুন আছে; কোটের পকেটে রুমালও আছে। তোমারে একখানা রুমালে জড়াইয়া লইব। কোন চিন্তা করিও না।
গোসল সারিয়া দেওএরা টানে উঠিল। টার্কিশ তোয়ালে দিয়া শরীর মুছিল। টার্কিশ তোয়ালে মানে আমরার দেশে রাজা-বাদশা-ওযির-নাজিররার দরবারি কামরায় এক একখানা দরবারি গালিচা।
শরীর মুছিয়া তারা কাপড় পড়িল। আমারে একখানা রুমালে জড়াইল। রুমাল মানে আমরার দেশের কুড়ি হাত দীঘে-পাশের একখানা ফরাশ।। রুমালে জড়াইয়া আমারে একজনের পাশ পকেটে ফেলিল।
২. বাউনের দেশে
তারা শহরের দিকে চলিল। কোটের পাশ পকেট হইতে গলা বাড়াইয়া আমি পথ-ঘাট ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখিতে লাগিলাম।
শহরে ঢুকিতেই দেখিলাম, রাস্তার পাশে খবরের কাজগের স্তূপ। পথচারী লোকেরা এক-একখানা কাগজ নিতেছে এবং পাশে রাখা একটি পাত্রে কাগজের দাম রাখিয়া যাইতেছে।
আমার বাহক ও সংগীরাও এক-একখানা কাগজ নিল এবং ঐভাবে ঐ পাত্রে কাগজের দাম রাখিয়া দিল। কাগজ বেচিবার ও দাম লইবার কোন লোক দেখিলাম না।
আমি অবাক হইলাম। বিক্রেতা নাই, তবু জিনিস বিক্রি হইতেছে: ব্যাপার কি? ভাবিতে ভাবেতেই আমার বাহকরা এক পুস্তকের দোকানে ঢুকিল। এক-একজনের এক-একখানা পুস্তক লইয়া মলাটে লেখা দামটা দরজায় রাখা একটি বাক্সে ফেলিয়া দোকান হইতে বাহির হইল। আমার বিস্ময় বাড়িল। বাহককে আমি বলিলাম: খবরের কাগজ ও বই-এর দাম নিবার ত লোক ছিল না, তবে দাম না দিলেই ত পারিতেন।
বাহক: পরের জিনিস নিব, দাম দিব না? এ কেমন-ধারা কথা বলিতেছ তুমি?
আমি: আচ্ছা, না হয় দাম দিলেনই; কিন্তু কিছু কম-টম দিলেও ত পারিতেন। কেউ ত আর জানিতে পারিত না।
বাহক: জানিতে পারিত না কি রকম? দোকানদার যখন বিক্রিত জিনিস ও বাক্সের পয়সা হিসাব করিয়া গরমিল পাইবে, তখনই ত সে বুঝিবে, কেউ নিশ্চয় কম পয়সা দিয়াছে।
আমি: কিন্তু আপনিই যে কম দিয়াছেন, এটা ত আর সে বুঝিতে পারিবে না।
বাহক: কিন্তু আমার দেশেরই কেউ-না-কেউ কম দিয়াছে, এটা ত সে বুঝিবে? দেশের একজনের বদনাম হইলেই ত গোটা জাতিরই বদনাম হইল।।
কথা বলিতে বলিতে আমার বাহক ও তার সংগীরা ট্রাম লাইনে আসিয়া পড়িল এবং ট্রাম আসিতেই একে-একে সবাই ট্রামে উঠিল।
ট্রামে কোন কণ্ডাক্টর নাই; চেকার নাই। যাত্রীরা যার-যার ভাড়া দরজায় আটকানো একটা বাক্সে ফেলিয়া দিয়া আসন গ্রহণ করিতেছে। আমার বাহকরাও তাই করিল। আমার ভাড়াও তারা দিল। আমার বাহক আসন গ্রহণ করিতেই আমি গলা বাড়াইয়া বলিলাম: বাক্সের পাশে লটকানো সাইনবোর্ডে যে ভাড়ার ‘রেট’ লেখা দেখা যায়, সেই অনুসারেই সবাই ভাড়া দেয়?
বাহক: নিশ্চয়। কেন দিবে না?
আমি: এক আনা ভাড়া দিয়া দশ পয়সার রাস্তা কেউ বেড়ায় না?
বাহক: কেন বেড়াইবে? কাকে ঠকাইবে? ট্রাম যে সরকারি সম্পত্তি। সরকারী মানেই ত আমরার সকলের।
আমি আমার বাহককে বুঝাইবার অনেক চেষ্টা করিলাম যে, প্রত্যেকটি খবরের কাগজে, বই-এ এবং ট্রামের প্রতি ভ্রমণে কিছু বাঁচাইলে অনেক টাকা সঞ্চয় হইতে পারে।
কিন্তু আমার বাহক ও তার সংগীরা আমার কথা বুঝিল না।
আমি বুঝিলাম, আল্লাহ বেচারাদের দেহ যতটা বড় করিয়াছেন, মগজ ততটা বড় করেন নাই। আহা মানুষ এত নিবোর্ধও হয়। বেচারার জন্য আমার মনে বড় কষ্ট হইল। এরা শরীরের দিকে দেও হইলেও মনের দিকে এরা বাউন মাত্র। আমার বাহক তার বাড়ি পৌঁছিল। সেখানে গিয়া কথাবার্তা ও চাল-চলনে বুঝিলাম, আমার বাহক দেশের রাষ্ট্রপতি, যাকে তারা বলে প্রেসিডেন্ট। তাঁর সংগীরা সে দেশের মন্ত্রী।
বিষ্ময়ে আমি চোখ বড় করিয়া বলিলাম: আপনারা এ দেশের প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রী? তবে সরকারি মোটরে চলাফেরা না করিয়া আপনারা পায়ে হাঁটিয়া এবং নিজের গাঁটের পয়সায় ট্র্রামে চলাফেরা করেন কেন? এ দেশে সরকারী মোটর নাই কি?
প্রেসিডেন্ট: থাকিবে না কেন? অনেক আছে। কিন্তু সেগুলি আমার শুধু সরকারী কাজেই ব্যবহার করিয়া থাকি, ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করি না। সাগরে গোসল করিতে যাওয়াটা এবং প্রাতঃভ্রমণ করাটা সরকারী কাজ নয়।
কিছুদিন থাকিয়াই বুঝিলাম, যেমন প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীরা, তেমনি দেশের লোকজনেরা সবাই বোকাচণ্ডী। নিজেরা বোকা না হইলে অমন বোকা লোকলে প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রী বানায়?
একদিন শুনিলাম, ভীষণ হৈ-চৈ। কি ব্যাপার? দেশে ইলেকশন হইবে। প্রেসিডেন্ট লোকটাকে আমার খুব পসন্দ হইয়াছিল। বোকা হইলেও লোকটা বড় সদয়। আমারে কত যত্ন করেন। কাজেই, নির্বাচনের নামে আমি ঘাবড়াইয়া গেলাম। বলিলাম: আপনি ইলেকশন দিতে গেলেন কেন? যদি হারিয়া যান? আর যদি প্রেসিডেন্ট হইতে না পারেন?
প্রেসিডেন্ট: দেশের লোক যদি না চায়, তবে প্রেসিডেন্ট হইব না। তাই বলিয়া কি নির্বাচন দিব না? নির্বাচনের সময় যে আসিয়া পড়িয়াছে।
আমি: সে সময় ত আপনি পিছাইয়া দিতে পারেন?
প্রেসিডেন্ট: আমার প্রেসিডেণ্টি বজায় রাখিবার জন্য শাসনতন্ত্র বদলাইয়া ফেলিব? কি বলিতেছ তুমি?
আমি: হাঁ, বদলাইয়া ফেলিবেন। এমন আইন করিবেন যাতে আপনি বরাবর প্রেসিডেন্ট থাকিতে পারেন।
প্রেসিডেন্ট: দেশের লোক প্রতিবাদ করিবে যে।
আমি: যারা প্রতিবাদ করিবে, তাদের গ্রেফতার করিয়া জেলে পুরিবেন।
প্রেসিডেন্ট: আমি জেলে পাঠাইলে কি হইবে? কোর্টের বিচারে তারা ত খালাস পাইবে।
আমি: কোর্টে যাইতে দিবেন কেন? নিরাপত্তা আইন করিবেন, বিনাবিচারে আটক রাখিবেন।
প্রেসিডেন্ট ও তাঁর মন্ত্রীদের অনেক বুঝাইয়াও আমি বিফল হইলাম। মাথায় মগজ না থাকিলে আমি কি করিতে পারি?
এতবড় রাজ্যের প্রেসিডেন্ট, তাঁর বাড়িতে নাই চাকর-চাকরানি, নাই খানসামা-হুকুমবরদার। বাড়ি-ঘর ঝাড়ু দিবার জন্য খানা-পিনা খিলাইবার জন্য সময়মত চাকর-বাকর যারা আসে, তারার না আছে লেহায না আছে তমিয। হুযুর-জাঁহাপনা তারা ত বলেই না। সামান্য ‘স্যার’ কথাটাও তারা ব্যবহার করিতে জানে না। এরার মধ্যে মনিব-চাকর বলিয়া কোন আদবের সম্বন্ধ নাই। চাকর মনিবকে নাম ধরিয়া ডাকে। মনিব চাকরকে মিষ্টার বলে। অর্থাৎ এমন অসভ্য দেশ এটা যে এখানে মুড়ি-মুড়কির এক দাম। যেখানে উঁচা-নীচা গুরু-শিষ্য নাই, সে দেশে কোন সভ্য মানুষ বাস করিতে পারে না। আল্লাহ যেমন হাতের পাঁচ আংগুল সমান করিয়া বানান নাই, তেমনি সব মানুষকেও তিনি সমান করিয়া পয়দা করেন না। উচ্চ-নীচ আল্লাহরই ইচ্ছা। এটা যারা মানে না, তারা ধর্মে বিশ্বাস করে না। অতএব এমন ধর্মহীন, অসভ্য আহমকের দেশে থাকিয়া কবে কোন্ বিপদে পড়িব, সেই ভয়ে একরাত্রে আমি কাউকে কিছু না বলিয়া সে দেশ হইতে পলাইয়া আসিলাম।
৩. দেওএর দেশে
দেহ সর্বস্ব বুদ্ধিহীন অসভ্য আহমকরার দেশে সফর করিয়া মানুষের নির্বুদ্ধিতা দেখিয়া মনটা খারাপ হইয়া গিয়াছিল। তাই কোন বুদ্ধিমানের দেশে সফর করিয়া মনটা বাহলাইয়া লইবার জন্য খেপিয়া গেলাম।
কোন্ দেশের লোক বেশি বুদ্ধিমান, তা খোঁজ লইবার জন্য অনেক দেশ-বিদেশের খবরের কাগজ পড়িলাম। কিন্তু আমার পসন্দমত কোন বুদ্ধিমান দেশের খোঁজ পাইলাম না।
তাই আত্মার শান্তি ও মনের সান্ত্বনা লাভের আশায় আপাতত হজে যাওয়াই ঠিক করিলাম। চিড়া-বাতাসা গাঁটরিতে বাঁধিয়া হজে গেলাম।
দেখিলাম, দেশ-বিদেশের বহু লোক হজ করিতে আসিয়াছে ও আসিতেছে।
এরার মধ্যে দেখিলাম, একদল শিশু এক হাওয়াই জাহাজ হইতে নামিতেছে। এতগুলি দুগ্ধপোষ্য শিশু কোথা হইতে কেন আসিল, জানিবার জন্য কাছে গেলাম।
দেখিলাম, আকারে শিশু মত হইলেও আসলে তারা বয়স্ক লোক। একজন অতিশয় বুড়া। সকলেই তারা খুব দামি পোশাকে সজ্জিত। তারার ছোট কদ দেখিয়া আমি যেমন তাজ্জব হইলাম, আমার বড় কদ দেখিয়া তারাও তেমনি অবাক হইল। গোড়াতে একটু ভয় পাইলেও অল্পক্ষণেই তারার ভয় ভাঙ্গিয়া গেল। খুব খাতির জমিল। আমি তারার মধ্যেকার সবচেয়ে বুড়া লোকটিকে কোলে তুলিয়া আলাপ করিলাম। জানিলাম, তিনি এক দেশের রাষ্ট্রপতি তাঁর ক্ষুদে সংগীটি ঐ দেশের ওযিরে-আজম এবং তার সংগীরা তাঁর মন্ত্রী। তাঁরা সরকারী হাওয়াই জাহাজে চড়িয়া সরকারী খরচে হজ করিতে আসিয়াছেন।
আমি কৌতূহলী হইয়া বলিলাম: সরকারী খরচে নিজেরার ধর্মকার্য করিতে আসিলেন, এতে আপনেরার দেশবাসী আপত্তি করিবে না?
রাষ্ট্রপতি: সে আপত্তির পথ বন্ধ করিয়াই আসিয়াছি; একটা সরকারী কাজের অজুহাত বানাইয়া লইয়াছি। এদেশের সরকারী লোকের সাতে কিছু সরকারী বাত-চিৎ করিলেই ত আমরার এ সফর সরকারী হইয়া গেল। আমরার দেশের উম্মী লোকেরাও ‘রথ দেখা ও কলা বেচা’ এক সংগেই করিয়া থাকে।
বুঝিলাম, এইরূপ বুদ্ধিমানের দেশই আমি খুঁজিতেছিলাম। আমি তাঁরার দেশে সফর করিতে আগ্রহ দেখাইলাম। তাঁরা আনন্দের সহিত রাজি ইইলেন। হজ সারিয়া তাঁরার হাওয়াই জাহাজে চড়িয়া তাঁরার দেশে সফরে গেলাম। ওযিরে-আযমের মেহমান হইলাম।
ওযিরে-আযমের বয়স আশি। তিনি চল্লিশ বৎসর বয়সে প্রথম ওযিরে-আযম নির্বাচিত হইয়াছিলেন, আজও ওযিরে-আযম আছেন। কেহই তাঁকে হটাইতে পারে নাই। তার মন্ত্রীরারও অনেকে বিশ-পচিশ, বৎসর যাবৎ মন্ত্রীত্ব করিতেছেন।
ঘনিষ্ঠতা হওয়ার পর ওযিরে-আযমকে জিজ্ঞাস করিলাম: আপনি কি কৌশলে একাদিক্রমে চল্লিশ বৎসর ওযিরে-আযম থাকিয়া গেলেন?
ওযিরে-আযম: অতি সহজ উপায়ে। ইলেকশন দেই না। যে-ই ইলেকশনের কথা বলে, তাকেই নিরাপত্তা আইনে বন্দী করি।
আমি: আপনার মন্ত্রীরাও কিছু বলেন না?
ওযিরে-আধম: দুই-এক জন যে না বলে না, তা নয়। কিন্ত যখন কেউ কিছু বলে অমনি তারে ডিসমিস করিয়া নতুন লোকরে মন্ত্রী করি। এতে করিয়া মন্ত্রীরার মাথা একটু ঠাণ্ডা রাখিয়াছি। এখন আর কেউ কিছু বলে না।
আমি: সবাইরে আপনি নিরাপত্তা আইনের ভয় দেখাইয়া বাধ্য রাখিতে পারিতেছেন?
ওযিরে-আহম: না, না, সবাইকে ভয় দেখাইয়া রাজ্য চালান কি সম্ভব? কিছু লোককে ভয় দেখাই, কিছু লোকে চাকুরি দেই, আর কিছু লোককে পারমিট-কন্ট্রাক্ট দেই। এতেই মোটামুটি প্রায় সব মাতব্বররা বাধ্য থাকে।
আমি: স্বার্থের লোভে এ-দেশের লোক অমন অন্যায় মানিয়া চলে?
ওযিরে-আযম: স্বার্থটা কি দোষের হইল? স্বার্থের জন্যই তো দুনিয়াদারি। রাষ্ট্র, পরিচালনাও তো মানুষের স্বার্থের জন্যই। আমরাও ত দেশেরই মানুষ। আমার দেশের লোকও সবাই বুদ্ধিমান। বুদ্ধিমান মাত্রেই নিজের ভাল আগে দেখে! আমার দেশের পাগলও আপনার মতলব ভাল বোঝে।
আমি: পরের অনিষ্ট করিয়াও ফি এদেশের লোকেরা আপনা মতলব হাসিল করে?
ওযিরে-আযম: কেন করিবে না? আমার দেশ বুদ্ধিমানের দেশ। তারা ‘সারভাইভ্যাল অব দি ফিটেস্ট’ নীতিতে বিশ্বাসী। মানুষের জন্য স্ট্রাগল ফর একজিস্টেন্স মানেই বুদ্ধির লড়াই। শরীরের লড়াইটা কেবল মাত্র নিম্নশ্রেণীর জীবজন্তুর জন্য—যেমন, গরুতে-গরুতে শিং দিয়ে গুঁতাগুঁতি হয়। আমার দেশের লোকেরা অস্ত্র-শস্ত্রের লড়াইয়ে বিশ্বাসী নয়। ও-ব্যাপারের তারা ধারও ধারে না। তারা বুদ্ধির যুদ্ধ করিয়াই সকল লড়াই ফতে করিতে চায়।
আমি: জীবনের সব ক্ষেত্রেই কি এই বুদ্ধির লড়াই চলে?
ওযিরে-আযম: কেন চলিবে না? কোথায় চলিবে না? রাজনীতিতে আমি আমার দুশমনদের কেমন করিয়া দাবাইয়া রাখিয়াছি, সেটা ত তুমি নিজ চোখেই দেখিতেছ। ব্যবসায়-বাণিজ্যেও এমনি বুদ্ধির লড়াই, চালাইতেছি। আত্মীয়-স্বজনকে দিয়া অথবা বেনামীতে নিজেরাই অধিকাংশ ব্যবসায়-বাণিজ্য চালাইতেছি! অপর লোক—যারারে পারমিট কন্ট্রাক্ট দিয়া থাকি, তারার সবার নিকট হইতেই মোটা রকম পার্সেন্টেজ লইয়া থাকি। মোট কথা, সামনে-পিছনে, ডাইনে-বাঁয়ে কোন দিক দিয়াই বিনাস্বার্থে একটি পয়সাও যাইতে দিতেছি না।
আমি: এ সবই ত বলিলেন আপনারার নেতারার কথা। দেশের জনসাধারণও কি এমনি ধরনের বুদ্ধির লড়াই করিতেছে ব্যবসার-বাণিজ্যের সকল ক্ষেত্রে?
ওযিরে-আযম: তা নয় তবে কি? আমার দেশবাসীকে তুমি কি মনে করিতেছ? বুদ্ধি ছাড়া তুমি এদেশে এক পা চলিতে পারিবে না। দোকানে জিনিস কিনিতে যাও, দোকানদার পাঁচ আনার জিনিস পাচ টাকা দাম হাঁকিবে। তুমি দু’পয়সা হইতে দামাদামি শুরু করিবে, তবে না তুমি ঠিক দামে জিনিসটি পাইবে। রেশনের দোকানে চাউল কিনিতে যাও, চাউলের মধ্যে পাইবে তুমি মণকরা আধামণ সাদা কংকর। দুধ কিনিতে যাও, সেরে পাইবে তিন পোওয়া পানি। দুধে পানি দেওয়ার প্রতিযোগিতাটা আমার দেশে আর্ট হিসাবে এত উন্নতি লাভ করিয়াছে যে, আজকাল বাজারে পানি-মিশানো দুধ বিক্রি হয় না, দুধ-মিশানো পানি বিক্রি হয়।
আমি: খাদ্যদ্রব্য লইয়া! এদেশে এমন ঠকামি হয়?
ওযিরে-আযম: ঠকামি বলিতেছ তুমি কাকে? এটা ঠকামি নয়, বুদ্ধির লড়াই। শুধু খাদ্যদ্রব্য কি বলিতেছ? ঔষধের মধ্যেও আমার দেশবাসীর বুদ্ধির কেরামতি দেখাইয়া থাকে। ইঞ্জেকশনের একটা এমপাউল চার টাকা দিয়া কিনিয়া রোগীর গায়ে ইঞ্জেকশন দিয়া তুমি ভাবিলে রোগী এবার বাঁচিয়া উঠিবে। কিন্ত রোগী মরিয়া গেল। কেন? কারণ, এ এমপাউলে ঔষধ ছিল না, ছিল আসলে শুধু পানি। এমপাউল তৈরী হয় লেবরেটরিতে। সেখানে না যায় রোগী, না যায় ডাক্তার। তেমন গোপনীয় জায়গায় সস্তা পানি থাকিতে দামী ঔষধ এমপাউলে ভরিয়া রাখিবে, এমন আহমক আমার দেশে একজনও পাইবে না।
আমি: বলেন কি? যে ঔষধের উপর মানুষের মরা-বাঁচা নির্ভর করে, তা লইয়াও এরপ প্রবঞ্চনা?
ওযিরে আযম: প্রবঞ্চনা নয় বুদ্ধির খেলা বল। ঔষধের কথা কি বলিতেছ? ধর্ম কাজেও আমরা আল্লাহ্র সাথে পর্যন্ত বুদ্ধির প্রতিযোগিতা করি। ভরপেট খাইয়া মুখ মুছিয়া ঠোঁট শুখনা করিয়া রাস্তায় দেখাই আমরা রোযা রাখিতেছি। আমরা ফরয নামাযের চেয়ে নফল বেশী পড়ি, কারণ আমরা আসল জিনিসের চেয়ে ফাউ বেশী নেই। আর সরকারী টাকায় আমরা কিভাবে হজ করি, তা ত তুমি আগেই দেখিয়াছ।
আল্লাহ তো পরের কথা, আমরা তাঁরে কেউ দেখি না। এই আমি যে জীবন্ত ওযিরে-আযমটা এখানে বসিয়া আছি, ভোটের সময় আমারে পর্যন্ত ভোটাররা বুদ্ধির লড়াইয়ে হারাইয়া দেয়। আমার দলের নিকট হইতে টাকা নিয়া আমার গাড়ীতে চড়িয়া আরেক দলকে ভোট দিয়া আসে। আমার দলের ভোটের বাক্স যায় খালি।
আমি: ও, তবে বুঝি আপনিও আপনার দেশবাসীর কাছে বুদ্ধির লড়াইয়ে হারিয়া যান?
ওযিরে-আযম: আরে না, না। আমারে হারাইতে পারে, এমন বাপের বেটা আজও জন্মায় নাই। পানি-মিশানো দুধ ও কংকর মিশানো চাউল দেয় বলিয়া খরিদ্দাররা দোকানদারের সাথে যা করে আমিও ভোটাররার সাথে তাই করিয়াছি।
আমি কৌতূহলী হইয়া বলিলাম: পানি-মিশানো দুধ ও কংকর মিশানো চাউল দেওয়ার বদলা খরিদ্দাররা কি করে?
ওযিরে-আযম: অন্ধকারে ফাঁক পাইলেই অচল টাকা ও জাল নোট দিয়া দাম পরিশোধ করে।
আমি: ও, তাই করে বুঝি? আপনি ভোটাররার বদমায়েশির জবাব কিভাবে দেন?
ওযিরে-আযম: ভোটের বেলা আমার টাকা নিয়া অপরকে ভোট দিয়াছে বলিয়া আমিও ৯২ নম্বরের এটমবোমা মারিয়া সমস্ত আইনসভাকে ‘হিরোশিমা-নাগাসাকি’ করিয়া দিয়াছি। বেটারা বসিয়া থাকুক এখন কচু মুখে দিয়া।
আমি: আপনার ৯২ নম্বরের বোমা মারিয়া আইন সভা বাতিল করিয়া দিয়াছেন, তবে আপনারা মন্ত্রী আছেন কিরূপে?
ওযিরে-আযম: আমরা ক্যাবিনেট-অব-ট্যালেন্টস কায়েম করিয়াছি। এতে আইন-সভার কোন দরকার হয় না।
আমি: এ সব যে আপনারা করেন, তাতে আপনেরার শাসনতন্ত্রের বিধান ভাগ হয় নাই?
ওযিরে-আযম: (হো হো করিয়) শাসনতন্ত্র? কিসের শাসনতন্ত্র?
আমি: (বিস্ময়ে চোখের ভুরু কুঞ্চিত করিয়া) কেন, আপনেরার দেশে কোন শাসনতন্ত্র নাই?
ওযিরে-আযম: তুমি কি পাগল হইয়াছ? না আমরারে পাগল ঠাওরাইয়াছ? আমরা শাসনতন্ত্র রচনা করিয়া কি নিজেরার গলার ফাঁসি তৈয়ার করিব? তা আমরা এতদিনেও করি নাই। ভবিষ্যতেও করিব না। শুধু আমরাই ইচ্ছামতো দেশ শাসন করিব, এটাই এ দেশের শাসনতন্ত্র! এটাই এ দেশের আইন।
আমি বুঝিলাম, হাঁ, বুদ্ধিমানের দেশ বটে। আল্লাহ্ এ-দেশবাসীকে কদে ছোট করিয়াছেন বটে, কিন্ত বুদ্ধিতে বড় করিয়াছেন। এদের তালুর চুল হইতে পায়ের নখ পর্যন্ত সবটাই মগজে ভরা। এরা দেহে বাউন হইলেও মনে এরা দেও।
এদেশেই স্থায়ীভাবে বসবাস করা আমি সাব্যস্ত করিলাম। আমার দেশ ভ্রমণের বাতিক স্বায়ীভাবে সারিয়া গেল।
আমি এখন হইতে গৃহী হইলাম।
জুলাই ১৯৫৪
বাছবিচার
Latest posts by বাছবিচার (see all)
- আমি – জহির রায়হান (১৯৬৭) - অক্টোবর 31, 2024
- (বই থিকা) ঈশ্বর কোটির রঙ্গকৌতুক – কমলকুমার মজুমদার - অক্টোবর 12, 2024
- নজরুলের চিঠি: ফজিলাতুন্নেসা ও নারগিস’কে - জুন 13, 2024