Main menu

বাংলাদেশের হাসপাতালগুলায় কি সমস্যা বা কি করলে লোকজন দেশের বাইরে/ইন্ডিয়া যাবে না?

বাংলাদেশের হাসপাতালগুলায় কি সমস্যা বা কি করলে লোকজন দেশের বাইরে/ইন্ডিয়া যাবে না?

যারা যায়, তারা কেন যায়- এই প্রশ্নের উত্তর আগে লাগবে। কিছু পেশেন্টের যাইতে হয়, কারণ বাংলাদেশে সম্ভবত মেডিকাল রিসার্চ/এডভান্স লেভেলের ট্রিটমেন্ট যথেষ্ট হয় না। তবে, সেই ধরনের পেশেন্ট খুব বেশি থাকেও না, যে পরিমাণ পেশেন্ট বাইরে যায় তার তুলনায়। ডাক্তারদের বিভিন্ন গবেষণা এবং সারা দুনিয়ায় যেগুলা হইতেছে, সেই বিষয়ে এডভান্সড নলেজ এবং টেকনোলজির সাপোর্ট দেয়া লাগবে। সরকারি আর্থিক সাপোর্ট দেয়া লাগবে।

এখন, সব লোক সিরিয়াস সমস্যা নিয়ে যায় না। সাধারণ সমস্যায়ও যায়। কেন? ফার্স্ট অফ অল, ব্যাড ইম্প্রেশন এবং ইনকনফিডেন্স।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলায় কি সমস্যা হয়? সব ধরনের টেস্ট করা যায় না অথবা রোগীর প্রেশারে দ্রুত করানো যায় না। অর্থাৎ ইনভেস্টমেন্টের ইস্যু আছে। পরীক্ষা নিরীক্ষার জিনিসপত্র/মেশিন সাপ্লাই দিতে হবে। সেই পরিমাণ লোকবল থাকতে হবে। চারশো রোগীর সাপ্লাই দিতে আটশো লোক হ্যান্ডেল করা সম্ভব না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই যত বেশি সম্ভব সার্জারি বা এডভান্সড ট্রিটমেন্ট লাগবে,যাতে ঢাকায় যাইতে না হয়। ঢাকার চার পাঁচটা হাসপাতালে বাকি তেষট্টি জেলার পেশেন্ট সামলানো সম্ভব না। মেডিকেল কলেজ হসপিটালগুলারও ক্যাপাসিটি বাড়াইতে হবে।

ডাক্তারের রোটেশন প্রয়োজনে বাড়ানো যাইতে পারে। দরকার হলে বেশি ডাক্তার নিয়োগ দেয়া যাইতে পারে।

হাসপাতালের বড় সমস্যা স্টাফ/নার্স এবং দালাল সমস্যা। লোকজনের ধারণা আছে যে, হাসপাতাল ডাক্তারেরা চালায়। এইটা বেশ ভুল ধারণা। দেখবেন, ডাক্তারেরা মেডিকেলে সবচেয়ে কোণঠাসা৷ আমি মেডিকেল প্রশাসনের স্ট্রাকচার জানি না। এইসব স্টাফের এসিআর/সার্ভিসবুক ইত্যাদি যারা নির্ধারণ করে, তাদের চেঞ্জ হইতে হবে। রোগীর লোকজন ডাক্তারের কাছে খারাপ ব্যবহার পায়, এমন ঘটনা কম। দেখবেন, ম্যাক্সিমাম এগুলা দারোয়ান/পিয়ন/নার্স ইত্যাদি সেক্টর থেকে আসে। এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিকভাবে দূর্বল। কেন? সেই কারণে হাত দিতে হবে।

হাসপাতালে বাথরুম, বিশুদ্ধ পানির সোর্স এবং পরিচ্ছন্নতা সমস্যা কোথাও কোথাও প্রকট। একজন রোগীর অন্তত ইউজেবল বাথরুম লাগবে।
রোগীর সাথে সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিমাণে থাকতে হবে।
প্রাইভেট প্র‍্যাকটিসের ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালের ফর্মূলাই ইউজ করা যাইতে পারে।
যে রোগীর প্রফেসর লাগবে, সে প্রফেসর দেখাবে।
রোগীকে জুনিয়র ডাক্তার রেফার করলেই যাবে। সরাসরি যাইতে পারবে না। অর্থাৎ একজন প্রফেসর সাধারণ রোগী দেখে সময় নষ্ট করবে না।
তাতে রোগী রিডিস্ট্রিবিউট হবে। বহু ডাক্তারের রোগী নাই। আবার, জ্বর হলেও প্রফেসরের কাছে রোগী যায়। প্রফেসর লেভেলের একজন ডাক্তারের জন্য এগুলা সময় নষ্ট। একই সাথে, জুনিয়র ডাক্তারের স্কিল আনইউজড থাকতেছে। অপচয় হইতেছে। সাথে, রোগীর তুলনায় ডাক্তার কম। ডাক্তারের দরকার আমাদের বেশি। সরকারি মেডিকেলের ক্যাপাসিটি বাড়াইতে হবে।

এগুলা করতে যে খরচ, বাংলাদেশের মত ইকোনমির দেশের তা নাই বা ছিল না,তা না। বাজেটের কত পার্সেন্ট স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় হয়?
এইগুলা এনশিওর করতে পারলে, দশ টাকার টিকিটের বদলে একশো টাকার টিকিটেও মানুষ যাবে। কারণ, প্রাইভেট ক্লিনিকে তাদের তার চাইতে বহু খরচ হয়।

এখন, এগুলা কারা চায় না? প্রাইভেট সেক্টর চায় না। সরকারি মেডিকেল/হেলথ কমপ্লেক্সগুলা ডেভেলপ করলে, তাদের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি। এইটা তাদের বিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রি। ফলে, তারা চায় না যে, সরকারি মেডিকেল সেক্টর ডেভেলপ করুক। সম্ভবত তারা এইসব সরকারি পদক্ষেপ এবং ব্যয়ে ইনফ্লুয়েন্সও করে। এবং তারা পলিটিকালি ইনভলভ অথবা কানেক্টেড।

কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে স্বাস্থ্যখাত খুবই ভাইটাল। আমাদের সমস্ত ক্যাপাসিটিই আছে। রিসোর্সও আছে। কলকাতা এবং চেন্নাইতে যা সম্ভব, তা আমাদের এখানে হয় না কেন? বাংলাদেশের স্টুডেন্ট/ডাক্তারদের মেধা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই। প্রোপার ট্রেনিং এবং ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে খুবই সম্ভব। ডাইভার্সিফাইড এক্সপেরিয়েন্সের প্রয়োজনে ডাক্তারদের ফরেন এটাচমেন্টের ব্যবস্থা করা যাইতে পারে।

রাষ্ট্রের ইচ্ছা থাকলেই এইটা সম্ভব। ভারতের অর্থনীতি দেখা আমাদের কাজ না। ট্রেড রিলেশন থাকতে পারে। কিন্তু কৃত্রিম সংকট তৈরি করে যে ট্রেড, তা দেশ ও রাষ্ট্রবিরোধী।

The following two tabs change content below.
Avatar photo

কবির আহমেদ

জীবিকার জন্য একটা চাকরি করি। তবে পড়তে ও লেখতে ভালবাসি। স্পেশালি পাঠক আমি। যা লেখার ফেসবুকেই লেখি। গদ্যই প্রিয়। কিন্তু কোন এক ফাঁকে গত বছর একটা কবিতার বই বের হইছে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →