Main menu

নেচারাল হ্যাবিট্যাট, হিস্ট্রিওগ্রাফি এবং রেডিকালাইজেশন

This entry is part 13 of 14 in the series রকম শাহ'র বয়ান

পোজেক্টটা বুঝতে হবে আপনাদের।

ইজরাইল রাশ্টো পয়দা হবার আগে জায়নিজম কি, শেইটা ভালো বোঝা জায় নাই; ফিলিস্তিনে আগেই কতোগুলা রায়ট ঘটার পরেও অনেকেই খুব শম্ভব জায়নিজমের ব্যাপারে মায়া করতেন। ইসকনকে আপনার বুঝতে হবে জায়নিজমের প্যারালাল হিশাবে উইথ এ পোস্ট-কলোনিয়াল ফ্লেভার।

ইসকনের পোজেক্টটা কেমন তাইলে? ছেরেফ ইসকনে নজর দিয়া এইটা বুঝবেন না, বরং এইটারে পলিটিকেল এবং কালচার-ছিভিলাইজেশনাল হিস্ট্রিওগেরাফির কনটেক্সটে বশাইয়া বুঝতে হবে।

পোস্ট-কলোনিয়াল এবং ছিভিলাইজেশনাল ইশুটা বুঝতে মাথায় রাখতে হবে বিবেকানন্দকে। বিবেকানন্দ ‘ছিভিলাইজেশনাল প্রাইড’-এর ছবক দিয়া গেছেন, কলোনিয়াল ইনডিয়ায় বড়ো হইয়াও। এই গর্বের গোড়ায় আছে ইউরোপিয়ানদের বরাবর এরিয়ান হিশাবে নিজেদের ইংরাজের ‘রেশিয়াল কাজিন’ মনে করা। এনশিয়েন্ট ইনডিয়া হইলো এরিয়ান কির্তি, তাই শেই এরিয়ানদের বাছুর হিশাবে বামুন-খত্রিয়েরা গর্ব করতে পারে এবং ইংরাজের কলোনিয়াল শাশনের ভিতরেও ঐখান থিকাই বিবেকানন্দের দেমাগ এবং গর্ব পয়দা হইছে।

এই ভাবনার ভিতর রেছিজম থাকলেও এইটা ততো ঝামেলার হইতো না; ঝামেলা হইতেছে তখন, জখন এই নজরে পুরা হিন্দু-শনাতন ধর্মরে বোঝাবুঝি শুরু হইলো এবং কওম/কম্যুনিটি উতরাইয়া ঐ জায়নিজমের মতোই হিন্দু-শনাতনিদের ‘নেচারাল হ্যাবিট্যাট’ হিশাবে ইনডিয়ারে দেখা শুরু করলো কংগেরেছি-আরএছএছ-বিজেপির হিস্ট্রিওগেরাফি।

‘নেচারাল হ্যাবিট্যাট’ আইডিয়াটা একটু বোঝা দরকার আমাদের: জেমন ধরেন, ইলিশ মাছের নেচারাল হ্যাবিট্যাট আছে বা কাদা-কাকড়া বা শুন্দরবনের হরিনের বা ঘুঘুর বা পেংগুইনের; এই ছেইম আইডিয়া মানুশের বেলায় খাটে না, মানুশের কালচারাল এচিভমেন্ট তার ছার্ভাইভাল খমতা এতোই বাড়াইয়া দিতে পারছে জে, এমনকি পুরা এই পিথিবি তো বটেই, মংগলকেও তার হ্যাবিট্যাট ভাবতে শুরু করছে! মানুশের বেশুমার খমতা থাকবার পরেও এমনকি মানুশের একটা ধর্ম বা রেছ বা জাতি নিজের ‘নেচারাল হ্যাবিট্যাট’ হিশাবে জখন কোন একটা জমিনকে শাব্যস্ত করে তখন হাজার হাজার বছর ধইরা মানুশের মাইগ্রেশনকে অ্যাবনর্মাল হিশাবে ধরা হইতেছে! দুরে দুরে চইলা গেলেও ঐ ভাবনা ঐ ধর্ম বা রেছ বা জাতিকে শেই ইমাজিন্ড/কল্পনার নেচারাল হ্যাবিট্যাটে ফিরতে ডাকতে থাকে! জায়নিজম ঠিক এই কামটাই করে এবং তার ফলাফল হিশাবেই আমরা প্যালেস্টাইনে জেনোছাইড দেখতেছি! পিছনের মোরালটা এমন জে, ফিলিস্তিনিরা, ইহুদি বাদে জে কেউ প্যালেস্টাইনে আশলে দখলদার, মাইগ্রেশন জেইখানে অ্যাবনর্মাল! তাই ইতিহাশের শকল নড়চড় আনডু করতে চায় ইজরায়েল, জেইখানে কিনা খোদ তাদের ক্লেইমটাই খুবই মিথিক্যাল, অন্তত জায়নিস্ট একিন মাত্র, জায়নিজমের বাইরের মানুশের তেমন একিন থাকার পক্ষে হিস্ট্রিকেল এভিডেন্স পেরায় গরহাজির! Continue reading

দা স্মা‍র্টনেস অফ রিকশা

অনেকেই মনে করেন মেগা-সিটিতে রিকশা (বা অটোরিকশা) একটা উপদ্রব, “আনস্মার্ট”একটা জিনিস। রিকশার পক্ষে ওকালতি করতে গেলে শুনতে হয়, এইসব নাকি গরিব-বান্ধব রোমান্টিসিজম (রিকশার পার কিলোমিটার যা ভাড়া, রিকশা নিম্নবিত্তের বাহন না তো)। রিকশা আমরা বানাই নাই, জাপানিজরা বানাইসে, কিন্তু দুনিয়ার মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই যে রিকশা টিকে আছে, তার কারণ আমাদের গরিবি না, তার কারণ আমাদের অসামান্য সমতল টেরেইন, বাংলাদেশ ইজ দা ফ্ল্যাটেস্ট কান্ট্রি অন আর্থ।

নন-মোটরাইজড ট্রান্সপোর্ট ইউরোপিয়ানরা খুব চায়, শহরে শহরে বাইসাইকেল র‍্যুট ডিজাইন করার জন্য তাঁরা কম্পিটিশন ডাকে। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের মত কেউ পেরে উঠে না। কারণটা আমাদের মতই, নেদারল্যান্ডসের লো-লায়িং টেরেইন। ফান ফ্যাক্ট: নেদারল্যান্ডসের বাইসাইকেল সংখ্যা ওদের জনসংখ্যার থেকে বেশি (ইভেন ফানিয়ার ফ্যাক্ট: ওদের সাইকেল আমাদের মসজিদের জুতার মতো, একজনেরটা খোয়া গেলে সে আরেকজনেরটা নিয়ে যায়। The saying goes: you’re not Dutch if you never stole a bicycle)। সমতল জমিনের আরো এডভান্টেজ নেয়া যায়।

আপনি বার্লিনে যান (গুগল ম্যাপেই যান), যে কোন একটা লোকেশন থেকে আরেকটা লোকেশনে যাবার ডিরেকশন চান। আপনার বাসা থেকে হাঁটা দূরত্বে একটা ট্রাম (Strassen-bahn) বা বাস পাবেন, সেখান থেকে S Bahn – U bahn (র‍্যাপিড রেইল, মেট্রো) – Stassen-bahn এর কোন নেটওয়ার্ক ধরে আপনাকে গন্তব্যের হাঁটা দূরত্বে পৌঁছে দিবে। এবার স্টুটগার্ট চলেন। একই দেশের ভিন্ন একটা শহর, একই বাস-ট্রাম-মেট্রো কম্পানি, কিন্তু স্টুটগার্টে আপনার স্টেশন পর্যন্ত যেতে একটু বেশিই হাঁটতে হবে।

কারণটা এই যে, বার্লিন ছিলো একটা লো-লাইয়িং মার্শল্যান্ড, আর স্টুটগার্ট একটা ভ্যালি, নেকার রিভার ভ্যালি। ওই অসমতল জমিনে ইচ্ছামতো ট্রাম টানা যায় না।

আমরা আমাদের অসামান্য সমতল হবার এডভান্টেজটা নেই না (ট্রামও তো গরিব!), আবার আমরাই দেখি যে রাস্তায় বাসের এলোমেলো চলাচল যানজটের অন্যতম কারণ। তো ট্রাম তো বেইসিকালি বাস-অন-ট্র‍্যাক, তার লাইনচ্যুত হবার সুযোগই নাই। ট্রাম অবশ্য স্লো। কিন্তু এই ঘনবসতির শহরে কোনটা আমার প্রায়োরিটি, স্পিড নাকি ফ্লো? বাসের তৈরি বটল-নেক কি সেই ফ্লো ব্যাহত করে না? এলিভেইটেড এক্সপ্রেস-ওয়ে দিয়ে ৮০ মাইল গতিতে চলে বাকি রাস্তা আপনাকে জ্যাম ঠেলেই আগানো লাগে তো।

মিজারেবল ফ্যাক্ট: সমতল জমিনে ট্রামের কথা তো ভাবিই না, আমরা BRT তুলে দিসি ফ্লাইওভারে!

Continue reading

পলিটিকাল ডাইরি – ২০২৪ (তিন)

This entry is part 3 of 3 in the series পলিটিকাল ডাইরি

অগাস্ট ০৫, ২০২৪

১.
বসুন্ধরা গেইট থিকা পুলিশ পালাইছে! দেশ স্বাধীন! বুক ভরে শ্বাস নেন!

২.
স্বাধিনতা তুমি আবরারের হাসি-মাখা মুখ
স্বাধিনতা তুমি আবু সাইদের চওড়া বিশাল বুক
স্বাধিনতা তুমি মুগ্ধ’র কপাল বাইয়া পড়া ঘামের ফোটা

স্বাধিনতা তুমি আবার আশায় বুক বাঁধা,
আবার হাঁটতে শুরু করা,
পথে পথে দেখা ফুটতেছে কতো ফুল

স্বাধিনতা তুমি নরোম-সরোম প্রেমের কবিতা
চুপচাপ বইসা থাকা, নিরবতার আওয়াজ শোনা
গাছের পাতাগুলা যেন বাতাসে গাইতেছে বাংলাদেশের গান, আবার…

/আ লং ওয়াক টু ফ্রিডম

৩.
যেই মিল-মিশের ভিতর দিয়া এই মুভমেন্ট হইছে, সেইটা নেকস্ট ইলেকশন পর্যন্ত কনটিনিউ করতে হবে; ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশে নানা মত নানা পথ থাকবে, কিনতু কেউ কারো শত্রু না।

মনে রাখবেন, বিপ্লবের চাইতেও সবচে ইম্পর্টেন্ট দিন হইতেছে বিপ্লবের পরের দিন!

আমাদের সেলিব্রেশন চলবে। তবে অনেকে নানান ধরনের সুযোগ নিতে চাইবে, অনেকে অতি-বিপ্লবী হয়া উঠতে চাইবে, কিনতু যে কোন কিছুর চাইতে ডেমোক্রেটিক থাকাটার দিকে আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে। ইনক্লুসিভ হইতে হবে যে কোন এক্টে, অ্যাকশনের জায়গাটাতে।

তবে অবশ্যই গনহত্যাকারী, তাদের সহযোগি ও এনেবেলারদের কোন মাফ হইতে পারে না, যত দ্রুত সম্ভব এদের বিচার করতে হবে; তা নাইলে ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশের দিকে আমরা আগায়া যাইতে পারবো না, কোনদিনই।

৪.
দেশে যেহেতু এখন কথা বলার সুযোগ তৈরি হইছে, অনেকে কথা বলবেন, সকলেই কথা বলবেন; তো, আপাতত আমার পয়েন্ট এই কয়টা –

১. অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কোন অবস্থাতেই, আই রিপিট কোন অবস্থাতেই ১৮০ দিনের বেশি হইতে পারবে না।

কারন নন-ইলেকটেড গর্ভমেন্টে ফেরেশতা বসাইলেও সে আরেকটা অটোক্রেট হয়া উঠবে।

২. এই সরকারের প্রধান একজন নন-মিলিটারি ও নন-পলিটিকাল পারসন হওয়াটা বেটার।

৩. এই সরকারের এটলিস্ট ৩০%, মানে ৯ জন মেম্বার থাকলে তার মধ্যে ৩ জন ছাত্র-প্রতিনিধি হইতে হবে।

৪. সেকুলার-লিবারাল ফ্রন্টের মেম্বার যেমন থাকা লাগবে ইসলামিস্ট-ঘরানার লোকজনরেও রাখা লাগবে; ইনক্লুসিভ হইতে হবে

৫. সরকারের প্রধান কাজ হবে দুইটা – ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশনের বেবস্থা করা এবং এর জন্য যা করার দরকার সেইগুলা করা; এবং শেখ হাসিনা ও তার সহযোগিদের গনহত্যার বিচার করা

৬. এর বাইরে আরেকটা জিনিস নিয়া আমি সর্তক থাকার জন্য বলবো, যারা আওমি-লিগের সরাসরি সাার্পোটার ও বেনিফিশিয়ারি তাদের সবাইরেই আমরা মোটামুটি চিনি ও জানি; কিনতু যারা দুইদিন আগেও হাসিনার নাম মুখে নিতে গেলে ডরের চোটে পাদ মাইর দিতো, তারা অনেক ‘ভুল’ ধরতে আসবে, এমনকি ‘অতি-বিপ্লবি’ কাজ-কাম করার জন্য ‘জরুরি পরামর্শ’ দেয়া শুরু করবে – তাদের থিকা সাবধান থাকাটা বেটার

৭. কারন, এই ফ্যাসিস্ট নয়া বাকশালের পতন মানে সবকিছু বেহেশত হয়া উঠা না, বরং একটা নরমালিটির দিকে, ডেমোক্রেটিক অবস্থার দিকে যাওয়ার শুরু মাত্র, এর বেশি কিছু না

৮. এই আন্ডারস্ট্যান্ডিং’টা, যারা অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করছেন, তাদেরও থাকলে ভালো… হঠাৎ কইরা সবকিছু ভালো হয়া উঠবে না, কিনতু ভালো-মন্দ বিচারগুলা করাটা যেন আমরা শুরু করতে পারি, সেইটার দিকে যাওয়া

৯. প্রতিশোধ, রিভেঞ্জ কখনোই সমাধান না; বিচারের জায়গাটা তৈরি করতে পারতে হবে আমাদের, ন্যায়বিচার বা জাস্টিসের সমাজ তৈরি করার দিকে যাইতে হবে
Continue reading

শহিদী তামান্না – ইয়াহিয়া সিনওয়ার

[এমন একটা সময় পার করতেছি যখন আমাদের দেশে একটা গণহত্যা ঘইটা গেছে। এবং ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যা চলতেছে৷ প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে ফিলিস্তিনের ছবি, ভিডিও নানানকিছু আমাদের সামনে আইসা পড়ে। আমরা কথা বলতে থাকি। আমাদের আন্দোলনেও আমরা ফিলিস্তিনি পতাকা উড়াইছি। গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বইলা যাইতেছি৷ অনেকগুলা দিন ধরে আমরা ফিলিস্তিনে এই গণহত্যার বিরুদ্ধে নানানভাবে দাঁড়াইছি। মিছিল, কবিতা, গান থেকে শুরু কইরা নানান এক্টিভিজম চালাইতেছেন কবি, লেখক এক্টিভিস্টরা। এই মর্মান্তিক, বর্বর হত্যাকাণ্ডের সামনে এইসব দাঁড়ায়া থাকা আসলে কতটুক কাজে আসবে আমরা জানি না। কিন্তু আমরা কথা বলতেছি এইটাই আপাতত ফ্যাক্ট।

গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ এ হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার ইজরায়েলি হামলায় শহিদ হন। তার শেষ সময় পর্যন্ত লড়াই চালায়া যাওয়ার ভিডিও বের হয় এবং ভাইরাল হয়ে যায় যা মানুষের ভিতর ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি করে৷ আমি কয়েকদিন আগে টিকটকে পোস্ট করা একটা ভিডিও পাই ফিলিস্তিনি একটিভিস্ট paliNada- এর। যিনি ইয়াহিয়া সিনওয়ারের লাস্ট উইল অনুবাদ করছেন আরবি থেকে (যেইটা তাঁর শহিদ হওয়ার পর সামনে আসে)। আরবিতে বলা হয় ওসিয়ত। ভিডিও দেখার পর আমি মূলত খুঁজে বাইর করি এই রাজনৈতিক মেনিফেস্টো যেইটা ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল ২৪ অক্টোবর পাবলিশড করে। এরপর workers world জার্নাল, প্রেস টিভি এবং নানান জায়গায় পাবলিশড হয় এবং ব্যাপকভাবে ছড়ায়া পড়ে৷ এই ওসিয়ত এত বেশি ইন্সপায়ারিং এবং এর ভাষা এত শক্তিশালী এবং পোয়েটিক আমি শখের বসেই প্রথম কয়েকটা লাইন অনুবাদ করি। এবং পরে ভাবি পুরাটাই অনুবাদ করার৷ আমার মনে হইছে, এই উইল যেকোনো মানুষের পড়া জরুরি। এইখানে দেশ ও তার নাগরিকের ইনসাফের জন্য যে লড়াইয়ের কথা বলা হইছে তা খালি ফিলিস্তিন না যেকোনো মজলুম মানুষরে হিম্মত দিবে। এই জায়গা থেকেই আমার এই কাজ করা।]

 

আমি ইয়াহিয়া, এক শরণার্থীর সন্তান—যে নির্বাসনরেই বানাইছে তাঁর মাতৃভূমি এবং খোয়াবরে বদলায়া ফেলছে চিরকালীন লড়াইয়ে।

এই কথাগুলা লেখার সময় জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত আমার মনে পড়তেছে! গলিতে দৌড়ায়া বেড়ানোর শৈশব থেকে জেলখানার দীর্ঘ বছরগুলা। মনে পড়তেছে, এই জমিনের বুকে ঝরে পড়া প্রতিটা রক্তের ফোঁটা’র কথা।

আজাদির দিকে দীর্ঘ সফর

আমি ১৯৬২ সালে খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরে জন্মাই, ফিলিস্তিন তখন টুকরা টুকরা স্মৃতি হয়া গেছে এবং রাজনীতিবীদদের টেবিলে হইছে বিস্মৃত মানচিত্র। আমি তো সেই ব্যক্তি যার জীবন আগুন ও ছাইয়ের ভিতর গড়া, এবং আমি জীবনের পয়লাই বুঝছিলাম যে জালিমের দখল মাইনা নেয়া মানে আমৃত্যু কয়েদখানা। আমি সেই ছোট্টবেলা থেকেই জানি, এই জমিনে বাঁইচা থাকা স্বাভাবিক ঘটনা না, এবং এখানে যারা জন্মায় তাদের অন্তরে ধারণ করতে হয় একটা অবিচ্ছেদ্য হাতিয়ার; তাদের বুইঝা নিতে হয় আজাদী এক দীর্ঘ সফর। তোমাদের কাছে আমার ওসিয়ত সেই শিশুর কাছ থেকে শুরু হইতেছে, যে প্রথম পাথর ছুঁড়ছিল জালিমের দিকে, সে জানছিল পাথরই পয়লা শব্দ যা আমরা উচ্চারণ করি এমন এক দুনিয়ার মুখের উপর যে আমাদের জখমের সামনে বোবা হয়ে থাকে।

গাজার গলিতে আমি শিখছি, একজন মানুষের কদর তার বয়স দিয়ে হয় না, সে তার মাতৃভূমির জন্য কী কুরবানি দিছে তা দিয়ে মাপা হয় তার উচ্চতা। আমার জীবন ছিল এই : জেলখানা ও যুদ্ধ, জখম ও তামান্না। ১৯৮৮ সালে আমি প্রথম জেলে যাই এবং আমারে যাবজ্জীবনের সাজা শোনানো হয়, কিন্তু ডর কী জিনিস আমি জানি না। সেই আন্ধার ঘরের প্রতিটা দেয়ালে আমি একটা জানলা দেখতে পাইতাম যা দূর দিগন্তের দিকে খুইলা যাইত এবং প্রতিটা গরাদের মধ্যে এমন এক আলো যা আমাদের আজাদির রাস্তারে করতো রোশনাই। কারাগারে আমি শিখছি, সবুর খালি গুণই না বরং হাতিয়ার, একটা তিতা হাতিয়ার , যেন ফোঁটায় ফোঁটায় এক অসীম সমুদ্র পান করা।

“যা তোমার হক তার জন্য কখনো আপোস কইরো না”

তোমাদের প্রতি আমার ওসিয়ত: কয়েদখানারে ডরায়ো না, কারণ আমাদের আজাদির দীর্ঘ সফরে এটা একটা হিস্যা মাত্র।

কারাগার আমারে শিখাইছে, স্বাধীনতা কেবল চুরি করা হক না, এটা এমন এক কনসেপ্ট যা জখম থেকে জন্মায় আর তার চেহারা গইড়া ওঠে সবুর দিয়ে। ২০১১ সালের “ওয়াফা আল-আহরার” বন্দি বিনিময় চুক্তিতে জেলখানা থেকে বাইর হওয়ার পর আমি আর আগের মতো ছিলাম না। আমি আরো মজবুত হই, এই ঈমানের সাথে যে আমরা যা করতেছি তা কেবল সাময়িক লড়াই না, এ আমাদের তকদির; এমন এক তকদির যা আমরা আমাদের রক্তের শেষ বিন্দু দিয়া ধরে রাখি। Continue reading

‘শোনার বাংলা’র এছথেটিক দলা

ক।

আমার বউ আর আমার বড়ো মাইয়ার নাম পার্লিন অপার। ওর একটা পেন্সিল বাক্স আছিলো; শক্ত পেলাস্টিকের। ভাংছে। ও নিজেই হয়তো। জানি না। তাই ও আমারে এইবার বাক্সের বদলে ব্যাগ কিনতে বললো।

ইশকুল থিকা দুই মাইয়ারে লইয়া বাশার নিচে আইলাম, গেটে ওদের নামাইয়া আমি একটা বিড়ি ধরাইলাম [ 🙁 , ছাইড়া দিবো, কছম! ], তারপর গেলাম ইছলামিয়া লাইবেরিতে। কিনা ফেল্লাম একটা ব্যাগ, ১৮০ টাকার নিচে নামাইতে পারলাম না, ছ্যাড!

এই দোকানে এছি আছে, কিন্তু পরে একটা কাচা পেপে কিনতে হবে, তাই বের হইয়া আশতেছিলাম। তখন দেখলাম, ‘কিআ’। অনেকগুলাই, অক্টোবর২০২৪ ইশু। একবার ভাবলাম জিগাই–কেমন কেনে লোকে, কারা? বাদ দিলাম পরে; জবাব শুইনা মন খারাপ হইয়া জাইতে পারে! আর এইগুলা আমার ততো জানাও লাগে না, আমি মোটামুটি আন্দাজেই কাম চালাইতে পারি! জেইটা আন্দাজেই চলে, শেইটা জাইনা লাভ কি আর 🙂 ! আর লোকের জবাবে অতো ভরশাও পাই না আমি, মানুশ হইলো আর্টিশ, মোটিভ মোতাবেক বানাইয়া কইতে পারে কাহিনি, আশলে কয়টা বেচা হয়, শেইটা ব্যাপার না ততো!

এনিওয়ে, আমি ‘কিআ’ উল্টাইয়া দেখলাম একটু; বিজনেছ ভালোই মনে হইলো, মেলা অ্যাড, বেইচা পয়শা উশুল করা লাগে না ওনাদের, আন্দাজ করলাম!

তো, দেখলাম, এডিটর হইলেন আনিসুল হক বুয়েটিয়ান। বাকি রাইটারদের ততো চিনলাম না।

শুরুতে কিছু চিঠিপত্র, তারপরেই আনিসুল হকের লেখা; উনি আলো’র কাহিনি কইছেন দেখলাম; নাহ, বুয়েটিয়ান দেইখা ভাইবেন না জে, অপটিক্স–উনি আন্ধারের উল্টাদিকে আলো’র কাহিনি কইতেছেন, ঐ ‘আলোকিত মানুশে’র কেচ্ছা আর কি!

কইতেছেন জে, দেশের তরুনরা নাকি নয়া শুরুজ উঠাইছেন দেশে; কাভারেও একটা ছবি, বেশুমার তরুন বাংলাদেশের নিশান লইয়া চিল্লাইতেছে, শেই ছবি; এই তরুনদের মনে হইলো শবাই বাংলা মিডিয়ামের হইবেন–মানে এস্টেরিওটাইপ মোতাবেক ছবি একখান।

নজরুলের একটা কবিতা দিয়া শুরু করছেন উনি, একটু পরেই রঠায় চইলা গেছেন, তারপর আলো আর আলো। এইখানে খেয়াল করার ব্যাপার হইলো, এই জে নয়া শুরুজ/আলো, শেইটা কিন্তু কোন আন্ধারের পরে আশে নাই, আগে কোন রাইত আছিলো না, ডিফরেন্ট আলো আছিলো খুব শম্ভব। আরো মজার ব্যাপার হইলো, এই লেখার কোথাও আওমি লিগ নাই, হাসিনা নাই, বাকশাল নাই, ফেছিজম নাই, পুলিশ বা তাদের গুলি নাই, শহিদও নাই–এই আলো খুবই আছমানি ব্যাপার।

এইটার টার্গেট রিডার কারা? ১২/১৫ বছরের বাচ্চারা খুব শম্ভব, হাই ইশকুলের মাইয়াপোলারা হবার কথা। পরথম আলোর ‘বন্ধুশভা’র পোলামাইয়াপান হয়তো এইটা টার্গেট খদ্দের।
Continue reading

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →