Main menu

পাখির নাম কী হবে? ইউ ডিসাইড। শুধু পাখিই থাকুক?

[show_avatar email=1013 align=left user_link=website show_name=true] [show_avatar email=1017 align=right user_link=website show_name=true]

___________________________

আনিকা শাহ অ্যান্ড চিংখৈ অঙোম
____________________________

 

আমাদের দুইটা পাখি ছিল। আমার আর আনিকার। দাম মনে নাই। সালও না।

চিংখৈ বিয়ে করলা কোন সালে? ২০১৪? সেই সাল।

আমরা অইদিন বইমেলায় একসাথে যাই। অনেক্ষণ হাঁটাহাঁটি করি। চারুকলার মোল্লা দিয়ে ঢুকি মনে হয় প্রথমে। তারপর হাঁটতে হাঁটতে কই কই।

বইমেলায় যাইতে একটা কালি মন্দির। কিছু একটা হইতেছিল তখন যখন আমরা মন্দিরটার সামনে দিয়ে হেঁটে যাই। মিউজিক শুনে আগ্রহী হই আমরা। কির্তন হইতেছিল।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]

ভিতরে ঢুকে আমরা মন্দিরের পাশে গিয়ে দাঁড়াই। কির্তন শুনি কিছুক্ষণ। ঝাপসা ঝাপসা মনে আছে আমার। আনিকার মনে থাকতে পারে স্পষ্ট। কিংবা তারও ঝাপসা ঝাপসা। কিংবা সে পুরোটাই ভুলে গিয়ে থাকতেও পারে।

আমরা যখন সেই ঝাপসা ঝাপসা মন্দির থেকে বের হই হই, এক ভক্ত আমাদের কপালে তীলক আঁইকা দিতে আগায়া আসে।

তিলকসংক্রান্ত কিছুই আমার মনে নাই। ইন ফ্যাক্ট আমার ধারণা এইটা চিংখৈ-এর কন্সট্রাক্টেড মেমোরি। কিংবা এই মেমোরির সাথে ওভারল্যাপ করা অন্য কোনো মেমোরি।

মন্দির থেকে বের হয়ে বইমেলায় গিয়ে দেখি বিরাট ভীড়। বইমেলার বাইরে আরেক মেলা বৈকি। পিঠা, চটপটি, ফুচকা, চানাচুর, পপকর্ন, পাখি, খেলনা, বেলুন, ধুলা, বালি, নয়েজ, ইত্যাদি।

আমরা কিছু খাইছিলামও বোধহয়।

সন্ধ্যা নাইমা গেছে তখন। অন্ধকার আকাশ। রেন্ডমলি হাঁটতেছিলাম আমরা। উদ্দেশ্যবিহীন। একটা মেলানকলিরে সাথে নিয়া।

মেলানকলিটাও কন্সট্রাক্টেড। ওভারল্যাপিং।

আমাদের পাখিটা উড়তে পারে। মানে ওড়ানো যায়। চাবি দেয়ার মতো কী একটা করতে হয়। তারপর ছাইড়া দিলে পাখিটা পাখির মতো ডানা ঝাপটাইতে ঝাপটাইতে উড়তে থাকে। তারপর চাবি ফুরায়া গেলে ডানাগুলা ক্লান্ত হয়ে আসে। ক্লান্ত পাখিটা মাটিতে নাইমা আসে। কিছুক্ষণ ছটফট করতে থাকে। তারপর নিথর। পাখিঅলার সাগরেদ তখন পাখিটারে নিয়ে আসে। আবার চাবি দেয়া হয়।

দূর থেকে দেখতেছিলাম আমরা এইসব।

আমরা দুইটা পাখি কিনি। দাম কমাবার চেষ্টা ছিল আমাদের। পারি নাই। পাখিঅলা বলে প্যাকের মধ্যে মেনুয়াল আছে, অইটা দেখে আমরা নিজেরাই জোড়া লাগায়া পাখি বানায়া ওড়াইতে পারব। আমাদের হাতে দুই প্যাকেট পাখি ধরায়া দেয় লোকটা। দাম মনে নাই। সালও না।

২০১৪। আমি বোধহয় পরে ঠিকঠাক বানাইতে পারব কি না এরকম সন্দেহ প্রকাশ করছিলাম, বা তখনই বানায়ে দেখতে চাইছিলাম, এবং নিজেই বাতিল করছিলাম সেই প্ল্যান। এরকম কিছু।

হাঁটতে হাঁটতে এইসব কথা বলতেছিলাম বোধহয় আমরা। নাকি পরে রিকশায় বসে। ঝাপসা ঝাপসা মনে আছে আমার। চিংখৈ-এর মনে থাকতে পারে স্পষ্ট। কিংবা তারও ঝাপসা ঝাপসা। কিংবা সে পুরাটাই ভুলে গিয়ে থাকতেও পারে।

 

 

তারপর অনেকদিন।

একদিন আনিকার সাথে কথা হয়। ম্যালাদিন পরে। পাখি নিয়ে। এমনি অন্য কথা এর মাঝে হইছে অনেক।

আমরা কেউই পাখিটারে ওড়াই নাই। আনিকা চেষ্টা করছিল। পারে নাই। আমি চেষ্টা করি নাই। ভুলে যাই। এইসব আলাপ হয় আমাদের।

হ্যাঁ, আমি জোড়া লাগাইতে পারছিলাম, কিন্তু উড়াইতে পারি নাই। পাখি উড়তো না।

আমি আনিকাকে বলি, তোমার পাখিটা নিয়ে আইসো। আমি শিখায়া দিব। তুমি ওড়াবা।

চিংখৈ খুব ভাব নিয়ে এমনভাবে বলছিল যেন ও পারবেই। যেন ও পেরেই থাকে, এসব।

বসুন্ধরা সিটিতে ফুডকোর্টে বসে খাইতে খাইতে আমি আনিকার পাখিটারে বাইর করি প্যাক থেকে। পলিথিন প্যাকে মোড়া প্লাস্টিকের পাখি।

ফুডকোর্টে বাইর করছিলাম? বাইরে সিঁড়িতে না?

আমি ট্রাই করি কিছুক্ষণ। জোড়াটোড়া লাগায়া পাখির শেইপ একটা দাঁড় করাই। কিন্তু মেকানিজমটা ঠিক করতে পারি না। দমঅলা ডানাটারে ঠিক করতে পারি না।

আমাদের আর পাখি ওড়ানো হয় না।

তোমার পাখিটার কী হইছিল পরে?

আমারটা আমি জানিই না কই। হারায় গেছে।

হুম্‌। আমি ফালায় দিছি।

 

১৮ মে ১৬

ছবি: আনিকা শাহ।

ছবি: আনিকা শাহ

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →