Main menu

পাবলিক তর্ক: “কানার হাটবাজার” বইয়ের প্রোগ্রাম নিয়া

যুক্তি আর তর্ক এক জিনিস না। তর্কে যুক্তি যে থাকে না – তা না; যুক্তিটা যুক্তি হইছে কিনা, কেমনে সেইটা যুক্তি হইছে বা হয় নাই, রিলিভেন্ট না ইরিলিভেন্ট – সেই বিচারটাই থাকে; এতো সাবজেক্টিভ সেই বিচার যে এমন একটা মোমেন্ট আসে যখন রেটরিক ছাড়া আর কোনকিছুতে ভরসাও করা যায় না। পাবলিক তর্কে একটা অডিয়েন্সও থাকেন যাদের সামনে পারফর্ম করা লাগে। ব্যাপারটা তখন আর যুক্তির জায়গাটাতে স্ট্যান্ড করে না, কোনভাবেই।  [pullquote][AWD_comments][/pullquote]

তাই বইলা তর্ক’রে বাতিল কইরা দিতে রাজি না আমরা। একটা ইস্যুতে তর্ক করতে গিয়া যেই যেই জিনিস আইসা জড়ো হয়, সেইটা দিয়া ওই সময়ের প্রায়োরিটিগুলারে লোকেট করার একটা ব্যাপার থাকে। ২০১১ সালের ৬ই মে সুমন রহমানের “কানার হাটবাজার” বইটার পাবলিকেশনের একটা প্রোগ্রাম হয় ঢাকা ইউনির্ভাসিটির আর সি মজুমদার হলে। পরে প্রোগ্রামের একটা ঘটনা নিয়া সুমন রহমান ফেসবুকে একটা নোট লিখেন, তখন তর্কটার শুরু করেন মাহাবুব মোর্শেদ, আরো অনেকেই আইসা বাহাসটাতে কন্ট্রিবিউট করতে থাকেন। ব্যাপারটা তখন ঠিক বইটা নিয়া আলাপ না আর, বরং ভার্চুয়াল রিলেশনগুলিরে, মিল-অমিলের জায়গাগুলিরে, বলা আর না-বলাগুলিরে আমরা কেমনে ডিল করবো সেই জায়গাটা তক গিয়া পৌঁছায়।

তর্কটারে একটা ইউনিফর্মিটি দেয়ার  জায়গা থিকা সবার নোট আর কমেন্ট রাখি নাই আমরা। তবে রিলিভেন্ট লিংকগুলি দেয়া আছে। কিছু লিংক এখন মনেহয় আর কাজ করে না, সেইক্ষেত্রে আসলে করার কিছু নাই। সুমন রহমান এবং মাহবুব মোর্শেদ’রে থ্যাংকস উনাদের নোটগুলি রাখার অনুমতি দেয়ার লাইগা। কমেন্টারদের কাছ থিকা অনুমতি নেয়া হয় নাই, কারো চোখে পড়লে, কোন আপত্তি থাকলে জানাইয়েন। এইখানে অনুমতি নিয়া একটা গ্রে এরিয়া থাকলেও আমরা মিউচুয়ালি ডিসিশান নিতে আগ্রহী।

– ই.হা.

 

———————————————————————-

 

মে ১০, ২০১১

সুমন রহমান

“কানার হাটবাজার” নিয়ে সলিমুল্লাহ খানের আলোচনার প্রেক্ষিতে

 

গত ৬ মে আর সি মিলনায়তনে আমার বই “কানার হাটবাজার” নিয়ে এক প্রাণবন্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তাগণ এই বইয়ের নানান দিক নিয়ে তাঁদের মূল্যবান মতামত তুলে ধরেন। বেশ কিছু সমালোচনা হাজির হয়েছে অনুষ্ঠানে, যার দুয়েকটি সম্পর্কে আমার কিছু বলা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এই কিস্তিতে সলিমুল্লাহ খানের কিছু সমালোচনার ব্যাপারে আমার বক্তব্য:

আর্ট ও নিম্নবর্গীয়পনা

এ বিষয়ে তার আপত্তি জানান সলিমুল্লাহ খান। “আর্টের নিম্নবর্গীয়পনা” বলে একটা অধ্যায় আছে বইতে, সেটাতে আমি দেখিয়েছিলাম আর্ট (সঙ্গীত ও সাহিত্য) কীভাবে নিম্নবর্গকে রিপ্রেজেন্ট করার চেষ্টা করছে, ঢাকা শহরের প্রেক্ষিতে। সলিমুল্লাহ খানের কাছে প্রথমেই মনে হল যে, “আর্ট” কাকে বলে এ বিষয়ে আমি “প্রশ্নহীন”। অর্থাৎ, তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, এখানে প্রথমেই আমার উচিৎ ছিল “আর্ট”-এর স্বরূপ বিষয়ে প্রশ্নসংকুল হওয়া। যেহেতু সেটা আমি হই নি, ফলে তিনি আমাকে “প্রশ্নহীনতার সংস্কৃতি”র ধারক বাহকদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।

অদ্ভূত ব্যাপার! আমি বই লিখেছি নগর, জনসংস্কৃতি ও গণমাধ্যম নিয়ে — অথচ সেখানে “আর্ট কি” জাতীয় তাত্ত্বিক/দার্শনিক আলোচনার অভাবকে জনাব খান আমার প্রশ্নহীন দশার স্মারকরূপে ঠাহর করলেন। পরের বক্তব্যে ফরহাদ মজহার অবশ্য বিষয়টা পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, বইটি দর্শনের বই নয়। বটেই। জনাব খানেরও সেটি অজানা থাকার কথা নয়। আমি আলাপ বিস্তার করছি ঢাকাই জনসংস্কৃতি (বর্তমান প্রসঙ্গে আর্ট) কিভাবে নিম্নবর্গকে রিপ্রেজেন্ট করার চেষ্টা করছে। সেখানে “আর্ট কাহাকে বলে” আলাপটাকে নিশ্চিতভাবেই আমি আমার এখতিয়ারের বাইরের বিষয় বলে গণ্য করেছি। এখনো করছি।

সলিমুল্লাহ খানের দ্বিতীয় মেজর আপত্তি “নিম্নবর্গীয়পনা” শব্দটি নিয়ে। এতে তিনি ঠাহর করেছেন যে, আর্ট যে উচ্চবর্গের জিনিস, আমি এই পূর্বধারণার সাফাই গেয়েছি প্রকারান্তরে। এই সমালোচনা আমাকে বিস্মিত করেছে। নাগরিক প্রপঞ্চ নিয়ে উৎপাদিত আর্ট কীভাবে নিম্নবর্গকে রিপ্রেজেন্ট করছে ঢাকার প্রেক্ষিতে, এটা এই অধ্যায়ে আমার বলবার কথা। ফলে আমি লিখেছি “আর্টের নিম্নবর্গীয়পনা”। যে কথা সবাই জানেন, উচ্চবর্গ ঐতিহ্যগতভাবেই  পুনরুৎপাদনযোগ্য শিল্পের নিয়ন্ত্রক। কিন্তু নিম্নবর্গের ভোক্তাশক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই হোক, সহানুভূতি থেকেই হোক, নিম্নবর্গের জীবন এসব আর্টে একটা উল্লেখযোগ্য জায়গা নিয়ে নিচ্ছে। ফলে আমরা পপুলার আর্টে যে নিম্নবর্গকে পাচ্ছি, যে উচ্চবর্গের চোখ নিয়ে দেখা নিম্নবর্গ। এ কারণেই লিখেছি “নিম্নবর্গীয়পনা”। নিম্নবর্গের সাথে “পনা” অনুসর্গের উপস্থিতিও সলিমুল্লাহ খানকে আমার অভিসন্ধি বিষয়ে সংশয়ী করে তুলতে পারে নাই  দেখে আমি বিস্মিত।

লুম্পেনপ্রলেতারিয়েত

সলিমুল্লাহ খানের মনে হয়েছে কিছু কিছু শব্দকে আমি ইচ্ছা করেই পরিহার করি। দৃষ্টান্ত দিতে গিয়ে তিনি “লুম্পেনপ্রলেতারিয়েত” শব্দটার কথা বলেন। “লুম্পেনপ্রলেতারিয়েত” মার্কসের টার্ম। শহুরে গরিব, যারা উৎপাদনের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, তাদের নির্দেশ করতে গিয়ে তিনি এই টার্মটি ব্যবহার করেন। আমি যেহেতু শহুরে গরিবদের নিয়েই আলোচনা করছি, সেক্ষেত্রে গোটা বইতে একবারও “লুম্পেনপ্রলেতারিয়েত” শব্দের উল্লেখ না-থাকাটা সলিমুল্লাহ খানের চোখে পড়েছে।

অবশ্য খান জানিয়েছেন যে তিনি আমার বইটা সবটা পড়েন নি। কামনা করেছিলেন যেন যেটুকু বাকি আছে, সেটুকুর কোথাও এই টার্মটা থাকে।  ঈশ্বর তাঁর কামনা পূরণ করেছেন। “হাড্ডি খিজির” নিয়ে আমার আলোচনায় তিনি “লুম্পেনপ্রলেতারিয়েত”কে পেয়ে যাবেন। কিন্তু গোটা বইতে একবার অন্তত “লুম্পেন প্রলেতারিয়েত” টার্মটি থাকার মাজেজা কি, এটা আমি জানি না। ফলে এ বিষয়েও প্রশ্নসংকুল থাকতে চাই।

একতরফা বই

“কানার হাটবাজার” বই নিয়ে এটা সলিমুল্লাহ খানের একটা মন্তব্য। একতরফা বলতে তিনি ঠিক কোন্ তরফা বুঝিয়েছেন আমি নিশ্চিত হতে পারি নি। ফলে এ বিষয়ে আমার বক্তব্য নেই।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মূল্যবান মতামত প্রদানের জন্য এই অবসরে সলিমুল্লাহ খানকে আবারো ধন্যবাদ জানাই।

 

কমেন্টস:

Mohammad Arju প্রথমে সলিমুল্লাহ খান যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা আমার শোনা হয় নি। তবে পরে ব্রাত্য রাইসু’র প্রশ্নের জবাবে খান এর ব্যাখ্যার পর আপনি অনেকানেক সংক্ষিপ্ত করে যা বলেছিলেন সেই দিন- আমার মনে হয় সেটা যথেষ্ট।

তাছাড়া ব্লগীয় পাঠক হিসাবে আমি নিশ্চয় কম্পিউটার স্ক্রিনের শব্দের আকুতি টের পাই। ফলে, আপনার ব্যবহার করা ‘নিম্নবর্গীয়পনা’র মত শব্দগুলোর ব্যবহারের মর্তবাও টের পাওয়া যায়- সসমসাময়িক ব্লগের অনান্যা আলোচনায় আপনার অংশগ্রহন থেকে। যেটা হয়তো ছাপা বইতে বিচ্ছিন্নভাবে আপনার পাচ ছটা নির্বাচিত প্রবন্ধ দেখে কেউ টের নাও করতে পারেন।

কিন্তু ‘বাঙালীপনা’ শব্দে ‘পনা’ যে ভাব নিয়ে আসে- সেটা তো আলোচকদের টের পাওয়ার কথা। ‘নিম্নবর্গীয়’ এর পরে ‘পনা’ নিশ্চয়ই একই ভাব আনে।

Faizul Latif Chowdhury: আমার ত্বক যথেষ্ট পুরু নয়, প্রত্যুত্তর সহ্য করার ক্ষমতা নেই বললেই চলে, তবু দুটি একটি কথা বলি। সেদিনের আলোচনায় আমি ‘সালাম’ প্রথা উঠে যাওয়ার নব্য নাগরিক এবং উচ্চমার্গীয় সংস্কৃতির কথাটি খুব সংক্ষেপে উত্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আশংকা ছিল বেশী বললে সংস্কৃতি-মনস্কতার পরিবর্তে ধর্মমনস্কতার দায় ঘাড়ে চাপবে। (২) পেন্টাগনের কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছি, We are America, we create reality. You can analyze. We create another reality and you still can analyze as much as you can. ইত্যাদি। কিন্তু পরবর্তী বাক্যটি উচ্চারণ পরিহার করেছি পাছে misunderstanding হয়। রচনাগুলোতে চমৎকার বিশ্লেষণ ছিল কিন্তু অনুরূপ reality’র স্রষ্টা (creator) সম্পর্কে প্রশ্ন ছিল না। সূযোর্দয়, সুনামি ইত্যাদি ছাড়াও মানুষ, মনুষ্য-সংস্থা পরিকল্পিতভাবে reality’র জন্ম দিচ্ছে। তারা কারা? এই রাজনৈতিক প্রশ্নটি আজ অপরিহার্য। কিন্তু লেখককে সব কথাই বলতে হবে কেন? আর বক্তাকেই-বা perfect হতে হবে কেন? বক্তৃতার সময় অনেক কথা চলে আসে যা আপাতদৃষ্টিতে digressive মনে হবে। বক্তৃতায় তা কিন্তু মানায়। যা হোক, সুমন রহমানের চিন্তা-চেতনার গতিপ্রকৃতি আমাকে প্রমুগ্ধ করেছে। তিনি ভাবুক, বিশ্লেষক। এটাই বড়ো কথা।

Sumon Rahman Faizul Latif Chowdhury, সম্ভবত এ কারণেই বইয়ের গোড়ার প্রবন্ধটা লিখেছিলাম। সেখানে বলেছি, আমার পদ্ধতি দুটো: জাতিতাত্ত্বিক ও চিহ্নতত্ত্বীয় বিশ্লেষণ। একটা টেক্সটকে সামনে রেখে এই পদ্ধতিদ্বয়ের মাধ্যমে আমার পক্ষে টেক্সট যে ইভেন্টের সিগনিফায়াররূপে কাজ করে তার creatorকে তালাশ করা অসম্ভব। রাজনৈতিক অর্থনীতিতে সেটা সম্ভব। কিন্তু আমি যে জ্ঞানকাণ্ডটি আশ্রয় করেছি তার নাম সাংস্কৃতিক অধ্যয়ন, রাজনৈতিক অর্থনীতি নয়।

Imrul Hassan ফরহাদ মজহার-এর এই কথার সাথে আমারও দ্বিমত আছে যে, ভূমিকাটা অ-গুরুত্বপূর্ণ; বরং এই ভূমিকাটারে ছাড়া বইটারে আইডেন্টিফাই করাটাই ত মুশকিল, লেখাগুলা খুবই বিচ্ছিন্ন এবং আলাদা আলাদাভাবে কোন জায়গায় দাঁড়াইতে পারে না; ভূমিকাটাই একত্রিত করছে, একটা ফ্রেম-এর মধ্যে নিয়া আসছে, লেখাগুলারে… এখন এই ভূমিকাটা/ফ্রেমটা নিয়া দ্বিমত/বহুমত থাকতে পারে, সেইটা ভিন্ন ব্যাপার, কিন্তু ভূমিকাটারে অ-গুরুত্বপূর্ণ কইরা ফেলা মানে বইটারে প্রথমেই সাইড লাইনে ফেইলা দেয়া, উদ্দেশ্যটারে অগ্রাহ্য করা (এইভাবে আইডেন্টিফাই করা যে, এইটা যতোটা একটা সাহিত্য-কর্ম, চিন্তাশীলতার বিষয় ততোটা না!)…

আর সলিমুল্লাহ খান ফরহাদ মজহার-এর মতো বইটারে অ-গুরুত্বপূর্ণ করেন নাই, কিন্তু সুমন রহমানের দেখাটারে কোনভাবে দেখার দরকার আছে বইলাই মনে করেন নাই, কারণ সুমন রহমানের বইয়ের ফ্রেমটাতেই উনি যান নাই… আমার ধারণা ‘কানার হাটবাজার’ এর জায়গায় ‘বনলতা সেন’ নিয়া বললেও উনার কথার খুব একটা হেরফের হইতো না…

এইজন্য বিচ্ছিন্নভাবে সলিমুল্লাহ খান-এর ইস্যুগুলারে এড্রেস না কইরা বরং উনার সমালোচনা-পদ্ধতি নিয়া কথা বলতে আমি আগ্রহী… উনি উনার কথা-ই বলছেন, বইটা নিয়া বলেন নাই… বলছেন, বইটার মধ্যে কি কি নাই, যে জিনিসগুলা নাই সেইগুলা কেন দরকার, তার গুরুত্ব ইত্যাদি… বইটার ভিতর কি আছে এবং কেন ও কিভাবে এইটাতে উনি যাইতেই চান নাই…

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মনে হয় তা-ই ঘটে, একটা বিষয়রে আমরা ত যার যার নিজের জায়গা থিকাই দেখার চেষ্টা করি; কিন্তু ‘নিজের জায়গা’টাই যদি বলার বিষয় হয়, বইটার আর কি গুরুত্ব সেইখানে?

এইভাবে আমার মনে হয়, পুরা অনুষ্ঠানে আলোচকরা-ই গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন, বইটা হয়া উঠছিল অ-গুরুত্বপূর্ণ।

Sumon Rahman কিছু কিছু বিষয় পরিষ্কার হওয়া ভাল। সলিমুল্লাহ খান যখন দারিদ্র প্রসঙ্গে আমার কাজী নজরুল ইসলামের রেফারেন্সের সমালোচনা করেন, আমি মনে করি এটা বৈধ সমালোচনা। বা ফরহাদ মজহার যখন এই বইকে দর্শনের বই হিসেবে পড়তে নারাজ থাকেন, সে বিষয়ে তাঁর ব্যাখ্যা আমার বিচারে বৈধ। ফরহাদ মজহার তার বক্তৃতায় স্পষ্ট করেই বলছেন যে, আমার বইতে বিষয় আর বিষয়ী আলাদা এটা স্পষ্ট। কিন্তু দর্শনের আলোচনায় বিষয় আর বিষয়ীর ফারাক থাকে না। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এ কারণেই আর্টের বিষয়ী-অধিকন্তু কোনো নৈর্ব্যাক্তিক আলোচনা এই বইয়ের এখতিয়ারের বাইরে। আর “আর্টের নিম্নবর্গীয়পনা” বলতে আমি কী বুঝাচ্ছি সেটা বইয়ের ভূমিকাতে যেমন স্পষ্ট,এই নোটেও তেমনি। রিপিটিশন না করি।

Imrul Hassan Sumon Rahman, আপনার কথার পরে, আমার কথাগুলারে ‘ভুল-বোঝা’র একটা জায়গা তৈরি হইতে পারে… আমি ফরহাদ মজহার এবং সলিমুল্লাহ খান-এর বইটার ব্যাপারে এপ্রোচের কথা বলছি, যেইটা এক ধরণের ‘খারেজি’ প্রক্রিয়া; সলিমুল্রাহ খান তার ‘দার্শনিকতা’র কথা বলছেন যেইটা বইটাতে নাই; আর ফরহাদ মজহার বলছেন, এইটা দর্শন-এর বই না… আমার রিডিংটা এইরকম যে, লেখাগুলার ভিতর যে এক ধরণের দার্শনিকতা আছে, ভূমিকাটা সেইটারে আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করে (আমি মনে হয় আগে বলছি যে, অনেকক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ করে)… এখন ‘দর্শন’ কি জিনিস, সেইটার সংজ্ঞা নিয়া আমি নাহয় একটু কনফিউজডই থাকি!

Mahbub Morshed সুমন ভাই,
আজকে একটা স্টেটাস দিছি। আপনার নোটের প্রসঙ্গে সেইটা প্রাসঙ্গিক হইতে পারে, নাও পারে। এইখানে দিলাম তুইলা।
‘যখন মুখে বলা কোনো কথাকে লেখায় বর্ণনা করার প্রক্রিয়া চলে তখন লেখকের বিশেষ কর্তব্য হইলো পরিপ্রেক্ষিতের সমগ্রতার যথাসম্ভব বিবরণ দেওনের চেষ্টা নেওয়া। পরিপ্রেক্ষিত বর্ণনা ছাড়া আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা অবৈধ বইলা গণ্য হইতে পারে।’

Sumon Rahman Mahbub Morshed, আপনার এই ফতোয়া এই নোটে প্রযোজ্য নয়। খেয়াল করলে দেখবেন, নোটে তারাই ট্যাগিত, যারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থাৎ, আপনার ভাষায়, “পরিপ্রেক্ষিতের সমগ্রতার” যথাসম্ভব নৈকট্যে ছিলেন। বরং, আপনি যদি মনে করেন যে, আমার খণ্ডিত চয়ন “পরিপ্রেক্ষিতের সমগ্রতার সাথে অসংগতিপূর্ণ সেইটাই দৃষ্টান্ত আকারে দেখান। বিমূর্ত দার্শনিক বাণী প্রদানের চেয়ে এটা বরং কাজের হবে।

Naseef Amin “আর্টের নিম্নবর্গীয়পনা” প্রসঙ্গে “আর্ট কি মাল” এই প্রশ্ন একটা ভেলিড প্রশ্ন বলিয়া আমার মনে হইয়াছে। যে বাজার-ব্যবস্থার পাটাতনে দাঁড়াইয়া আর্ট এখন আর্ট হইয়া উঠে সেই জায়গা থিকা সর্বোচ্চ ভোক্তা সমাগমের কাঙ্খা একপ্রকারের নূতন বাস্তবতা যুক্ত করে। আর্টরে তখন ‘মগজ-মনন-মজ্জা-গতরগত’র জায়গা থিকা উপড়াইয়া একটা নির্দিষ্ট বর্গের “ইমাজিনারি”র আওতাধীন করা হয়। যেই বর্গ এই বিশেষ “ইমাজিনারি”র বর্গা লইয়াছে তাহারা আর্টের শ্রেণিকরণে একটারে “ফাইন আর্ট” আরেকটারে “ফোক আর্ট” হিসাবে তফাতে রাখে। ফলত সেই “ইমাজিনারি”র আওতায় এস্থেটিকেরও শ্রেণিকরণ ঘটে। ফোক আর্ট থিকা তখন ঘামের গন্ধ বাহির হয় আর ফাইন আর্ট থিকা ফাইন পার্ফিউমের খুশবু। সেই মোতাবেক বাজার নির্ধারণ হয়। ফোক আর্টের নামকরণের মধ্য দিয়া উহারে এঞ্জিয়ো পণ্য বানাইয়া উহার মূল্য নির্ধারণ করা হয়। এই তথাকথিত ফোক আর্ট হইতে আহিস্তা আহিস্তা আর্ট তকমাটিও একদিন খসিয়া পড়ে। কেননা উহা আড়ং কি প্রবর্তনা তথা বিবিধ এঞ্জিয়োর মধ্য দিয়া একপ্রকার ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল মেটিরিয়ালে পরিণত হয়। লেকিন কথিত ফাইন আর্ট নিজ জায়গায় থাকিয়া “ইন্টেরিয়র ডিজাইন” নামক বিবিধ নাম লইয়া ভিন্ন ভিন্ন কম্পার্টমেন্ট তথা পসরা খুলিয়া বসে। পুরা ব্যাপারটা তাহা হইলে কি দাঁড়াইল? বাজার ব্যবস্থা আর এস্থেটিক বিচারে “ফাইন আর্ট”ই একমাত্র আর্ট হিসাবে বিরাজিল। ফলত ঐ নির্দিষ্ট বর্গের “ইমাজিনারি” বাকি বর্গের “ইমাজিনারি”তে পরিণত হইল। তাই আমরা এখন আর্ট বিষয়ক আলোচনা শুরু করিতেই ঐ নির্দিষ্ট বর্গের “ইমাজিনারি”র আওতায় থাকিয়া শুরু করি। তাই আর্ট বিষয়ক আলোচনা শুরু করিতে সলিমুল্লাহ খান আগে ‘আর্ট কি মাল’ প্রশ্ন তুলিয়া আর্টের পাটাতন দেখাইয়া দেন। দেখাইয়া দেন যেই আর্টের নিম্নবর্গীয়করণের কথা উঠিছে অই আর্ট আদতে সেই নির্দিষ্ট বর্গের “ইমাজিনারি”। তাই কথাখানা “আর্টের নিম্নবর্গীয়পণা” না হইয়া ‘নিম্নবর্গরে আর্ট তথা অই নির্দিষ্টবর্গের “ইমাজিনারি” খাওয়ান’ হইলেই ব্যাপারখানা ফকফকা হয়। কেননা “আর্টের নিম্নবর্গীয়পণা”র মধ্যে “আর্ট” শব্দটার উপ্রে জোর পড়িতেছে। এই জোর পড়িবার অর্থ হইল এই বিশেষ “আর্ট” শব্দটারে হোল-সেট ধরা আর “নিম্নবর্গীয়পণা”রে সাব-সেট ধরা। তাহা হইলে কি দাঁড়াইল? আর্ট নিয়া আদতে কোন আপত্তি নাই; আপত্তি আছে নিম্নবর্গীয়পণা নিয়া – এইতো দাঁড়াইল। এখন আমার মনে হইয়াছে সুমন ভাই কইতে চাইতেছেন এই নিম্নবর্গীয়পণাটা খারাপ। কিন্তু সলিমুল্লাহ খান কইতেছেন, আরে পুরা আর্ট নামক জিনিসটাই তো ভাওতা। কেননা উহা তো এখন একটা নির্দিষ্ট বর্গের “ইমাজিনারি”। মগজ-মনন-মজ্জা-গতরগত স্বতঃস্ফূর্তার যে আর্ট ওইটারে তো এখন ফোক আর্ট নামে ডাকা হয়। ব্যাপারখানা দেখিয়া মনে হয় ফোক আর্টের গা দিয়া ঘামের গন্ধ বাহির হয়; তাই উহা যত না বেশি আর্ট তার চাইতে বেশি ফোক। এখন ফোক আর্টের ব্যাপারখানা এমন হইয়াছে উহা এখন অই নির্দিষ্ট বর্গই তৈরি করায় এবং নিম্নবর্গরে স্বপ্ন শিখায়। দেখাইয়া দেয় আদতে স্বপ্ন কি রূপে দেখিতে হয়। স্বপ্ন দেখিবে এবং দেখাইবে অই নির্দিষ্ট বর্গ। আর অই নির্দিষ্ট বর্গের নাম বুর্জোয়া।

Mahbub Morshed সুমন ভাই,
আমি ভাবছিলাম আমার ফতোয়া বোধহয় এইখানে প্রযোজ্য হবে। হইলো যখন তখন আর কী করা। হতাশ হইলাম।

Sumon Rahman Naseef Amin, ফাইন আর্ট জিনিসটা বুর্জোয়া বর্গের বানানো জিনিস, এই আপ্তবাক্য আমার অজানা নয়। তাতে আমি অমতও করি না। বুর্জোয়াবর্গের ইমাজিনারি হইলেই তা “ভাঁওতা” কিনা, এ নিয়া বিতর্ক চলিতে পারে। অনেকদূর পর্যন্ত। পপুলার আর্ট কি আদৌ বুর্জোয়া শ্রেণী অ্যাবসলিউটলি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, নাকি একটা পর্যায়ে জনরূচি থেকে প্রতিরোধ তৈরি হয় — এই তর্কটি অ্যাডোর্নোপন্থীদের সাথে গ্রামশিপন্থীদের। বইয়ের ভূমিকাটা পড়েন, আলাপটি সংক্ষেপে পাবেন সেখানে। কিন্তু, এই বিতর্ককে তাত্ত্বিক ফর্মেটে আমার বইতে পুনর্জাগ্রত করতে চাই নাই আমি। সচেতনভাবেই, কারণ সেইটাকে আমি আমার পুস্তকের স্কোপের বাইরে বিবেচনা করতেছি। ভূমিকায় বলেছি, এজন্য যে, এই ইংগিতের ওপর দাঁড়িয়ে সমসাময়িক ঢাকার সংগীত ও সাহিত্যে নিম্নবর্গের সাথে উচ্চবর্গের আদর্শিক সংঘাতটা কোন্ লেভেলে জারি আছে, সেইটার একটা ডেমো দেয়াই আমার উদ্দেশ্য। ডিসিপ্লিনের বাউন্ডারিটাও আমি ভূমিকার শেষদিকে সুনির্দিষ্ট করে বলেছি, যাতে বাউন্ডারির মধ্যে আমি আমার চিন্তাটাকে পরিস্ফূট করতে পারি। বইটায় একটু অভিনিবেশ দিলে আশা করি বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

এস এম রেজাউল করিম ——————-
কিন্তু সলিমুল্লাহ খান কইতেছেন, আরে পুরা আর্ট নামক জিনিসটাই তো ভাওতা। কেননা উহা তো এখন একটা নির্দিষ্ট বর্গের “ইমাজিনারি”।/নাসিফ আমিন
——————-
ফাইন আর্ট জিনিসটা বুর্জোয়া বর্গের বানানো জিনিস, এই আপ্তবাক্য আমার অজানা নয়। তাতে আমি অমতও করি না।/সুমন রহমান
——————-
সো, ইমাজিনেসন আর্ট হবার অন্তরায় বইলা একমত হইলেন দুইজনে। অধিকন্তু, নাসিফ আমিন ইমাজিনারি’রে ভাওতা কইলেন, সুমন রহমান আর্টরে কইলেন ‘বানানো’, ‘ইমাজিনারি’ থেকে ‘বানানো’ বলতে সুমন রহমান আলাদা কিছু বলরেন কিনা, বুঝি নাই। না বুঝলে ক্ষতি নাই, যা বুঝছি তাতে আর্ট বিষয়ে কিছু কথা লেখা যায় বটে।

বুর্জোয়ার আর্ট ইমাজিনারি বলার মধ্য দিয়া বলা হইলো–প্রলেতারিয়েত যা করে তাতে ইমাজিনেসন নাই, ফলে আর্টও নাই; প্রলেতারিয়েত তাই নমস্য। এখন ‘ভাষা’ যদি একটা ইমাজিনারি জিনিস হয় তাইলে সেইটা বুর্জোয়ার তৈরি হতে হবে, আর প্রলেতারিয়েতের যদি ‘ভাষা’য় ভাগ থাকে তাইলে হয় ‘ভাষা’ জিনিসটা বস্তুগত, নতুবা ‘প্রলেতারিয়েতের ইমাজিনেসন নাই’–কথাটা মিথ্যা, সম্ভবতঃ শ্রেণীবিদ্বেষী। অন্যদিকে, ‘ভাষা’ বস্তুগত হবার অর্থ এইটা সমাজপূর্ব ঘটনা, মানুষ এইটা অর্জন করেছে, সৃষ্টি করে নাই; বিষয়টা সমাজে ঈশ্বরের ঘোরাঘুরির নিশ্চয়তা বিধান করতেছে, ফলে মেটা-ফিজিক্যাল। দেখা যাইতেছে, বুর্জোয়া আর্টরে ‘ইমাজিনারি’ ও ‘বানানো’ বলবার মধ্য দিয়া ‘রিয়ালিস্ট’ হবার যেই প্রণোদনা ওনারা দিলেন, সেইটার মধ্যে বস্তুবাদ থাকার অঙ্গীকার এমবেডেড থাকলেও আখেরে সেইটা মেটা-ফিজিকসে পর্যবসিত হইতেছে!

ওদিকে, ভাববার চেষ্টা করা যাইতে পারে–আর্ট ইমাজিনারি বা বানানো হইলে সমস্যা কী বা ইমাজিনারি বা বানানো না হইলে সেইটা কী বস্তু ঘটে। প্লেটো তাঁর সময়ের আর্টিস্টদের (সেই সময়ের ক্রাফটসম্যান) চিহ্নিত করছিলেন ‘ইমিটেটর’ বইলা, যাঁরা খালি ‘আইডিয়াল ডিভাইন ফর্ম’ গুলার কপি করে, সেইখানে কোন ক্রিয়েসন নাই। সেইখানে বানানো বা ইমাজিনেসন বইলা কিছু নাই, সবই এসেনশিয়াল। নাসিফ আমিন (নাসিফ আমিন সলিমুল্লাহ খানরে রিপ্রেজেন্ট করলে সলিমুল্লাহ খান ইনক্লুডেড) আর সুমন রহমান আর্ট/’বুর্জোয়া আর্ট’রে বানানো আর ইমাজিনারি বইলা কি প্রলেতারিয়েতরে ‘ইমিটেটর’ ছাড়া আর কিছু হইতে নিষেধ করতেছেন? ওনারা ‘সৃষ্টি’ বিষয়টারেই বুর্জোয়ার হাতে দিয়া দিলেন, এইটারে মার্ক্সের উৎপাদন তত্ত্বের প্রগাঢ় এন্টি-থিসিস বলা যাইতে পারে বটে, যেইখানে প্রলেতারিয়েতের ‘রিপিটেসন’ ছাড়া কিছু করার নাই, তাঁরা না বানানো বস্তুর লগে না ইমাজিনেসনরে মিলাইয়া নিজে শুইয়া আছে বুর্জোয়া আর্টের ক্যানভাস হইয়া, তাদের মেটাফর নাই, তাঁরা বস্তুগত।

Sumon Rahman “অর্থাৎ ওনারা আর্টের বানানো হওয়ায় সমস্যা আছে বইলা প্রচার করতেছেন।” – Rezaul Karim.মনু, আমি বলতেছিলাম (ফাইন) আর্ট বুর্জোয়া শ্রেণির বানানো হইলেই “ভাওতা” কিনা সেই তর্ক অনেকদূর পর্যন্ত চলিতে পারে। অ্যাডোর্নোপন্থী এবং গ্রামশিপন্থীদের ফারাকের রেফারেন্সও দিয়াছিলাম। জায়গাটা আপনের চোখে পড়ল না দেইখা সাতিশয় আশ্চর্য হইলাম।

এস এম রেজাউল করিম Sumon Rahman Imrul Hassan

আপনি নাসিফ আমিনের সাথে এই পর্যন্ত একমত যে–‘(ফাইন) আর্ট বুর্জোয়া শ্রেণির বানানো (না.আ.-র শব্দে ইমাজিনারি)…’, আমার তর্কটা এই জায়গাতেই।

প্রথমতঃ
যা কিছু আর্ট পদবাচ্য তার ‘বানানো’/ইমাজিনারি (বাস্তবের কপি/ভূতপূর্ব হবার পরিবর্তে) হবারই কথা, ফলে কোন এক টা/ধরণের আর্ট ‘বানানো’-এইটা বললে অন্যান্য আর্টও বানানো–তা বলা হয় না; বরং উল্টাটাই বলা হইলো–কোন কোন আর্ট আছে যেইগুলা ‘না বানানো’। এই কারণে বললাম–“ওনারা আর্টের বানানো হওয়ায় সমস্যা আছে বইলা প্রচার করতেছেন।”

দ্বিতীয়তঃ
তর্কটা হইতে পারে কে কোন আর্ট বানাইলো, সেইটা নিয়া। এইখানে আপনার বক্তব্য হইলো–(ফাইন) আর্ট বুর্জোয়া শ্রেণির বানানো। ‘বানানো’কে নিছক ‘ক্রিয়েটেড’ অর্থে ধরলেও কতক সমস্যা থাইকা গেল।
এর মধ্য দিয়া আপনি ‘(ফাইন) আর্ট’-এর উপর যে নিঃসংশয় সমরূপতা আরোপ করলেন, সেই বিষয়েও আমার লিখবার আছে। আপনার বক্তব্য মতে ‘বুর্জোয়ার অভয়ারণ্য’ বইলা কিছু পাওয়া যাইতেছে যেইখানে অন্যরা নাক গলাইতে পারে না। আপনি দ্বান্দ্বিক বৈপরীত্যবিহীন ‘(ফাইন) আর্ট’ আছে বলছেন, এই রকম সম্পর্কহীনভাবে বুর্জোয়া বা অন্য কেউ বা (ফাইন) আর্ট কোথাও নাই।
বুর্জোয়া সামাজিক সম্পর্কে থাকে আর তার আর্ট সার্বভৌম–বিবৃতিটা কি বৈধ?

 

মে ১২, ২০১১

মাহবুব মোর্শেদ

গত শুক্রবার কানার হাটবাজারে গিয়া…

 

অফ ডে হইলে যা হয় আর কি। দুপুরের খাওয়াটা দেরি হয়ে যায়। দেরিতে খানাপিনার পর একটা মিহি মসলিনের মতো ঘুম চোখের সামনে দিয়া ঘুরাফিরা করতে থাকে। ৬ তারিখও এমনই এক চিকন ঘুম ঘনায়ে আসতেছিল। কিন্তু ভাবলাম ঘুমায়ে কাজ কী। যাই, আলোচনা শুইনা আসি। আলোচনা আমার পরম প্রিয় লেখক সুমন রহমানের বই নিয়া। বইয়ের নাম কানার হাটবাজার। বাইর হইছে বিগত বই মেলায়। আলোচনা করবেন, সাখাওয়াত টিপু, জাকির হোসেন রাজু, কাজল শাহনেওয়াজ, ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, সলিমুল্লাহ খান, ফরহাদ মজহার। সুমন রহমানের বই ও আলোচকদের তালিকা নিয়া আমার মধ্যে একটা বিভ্রম দানা বাইন্ধা উঠছিল। ফলে আলোচনার ফল ও অফল নিয়া আগ্রহী হয়া উঠছিলাম। বস্তুত ফলাফল নিয়া আমি তৃপ্ত। আখেরে বহুত লাভবান হইছি। অনেককে জিজ্ঞেস কইরা জানছি, তারাও লাভবান/লাভবতী হইছেন।

প্রথমত আরসি মজুমদার অডিটরিয়ামের মতো রিমোট এরিয়ায়, শুক্রবার বিকালের ওই অনুষ্ঠানে শ খানেক তরুণ বুদ্ধিজীবীকে হাজির করতে পারা এবং পুরা আলোচনায় ধইরা রাখতে পারা সুমন রহমানের বইয়ের কৃতিত্ব বইলা আমি দাবি করবো। দ্বিতীয়ত, সলিমুল্লাহ খান ও ফরহাদ মজহারের মতো হেভিওয়েট, ফায়ারব্রান্ড বুদ্ধিজীবীকে আলোচনায় হাজির করতে পারাটা সুমন ও তার বইয়ের কৃতিত্ব বইলা মনে হয়। তরুণদের লেখা নিয়া এই দুইজন সবসময়ই মুখর, খোঁজ রাখেন। ফলে, অনুরুদ্ধ হয়া হউক আর স্বেচ্ছায় হউক তারা যে আলোচনায় হাজির হইছেন এবং সিরিয়াসলি আলাপ পাড়ছেন সেইটা বিশেষ ঘটনা। তৃতীয়ত, আলোচনা ডাকা হইছে শুধু ফেসবুকের মাধ্যমে। এই ডাকে যে এত লোক সাড়া দিতে পারে, সেইটা সম্ভব কইরা দেখাইলেন সুমন। তাকে অভিনন্দন জানাই।

আলোচনা শেষে, অনেককে জিগাইলাম প্রতিক্রিয়া কী? তারা এক বাক্যে কইলেন, সুমন সফল। সুমন দেখায়ে দিলেন। যেইখানে ফরহাদ মজহারের গুরুত্বপূর্ণ বই ভাবান্দোলন নিয়া এই দেশে একটা রিভিউ হয় না, সেইখানে তরুণ বুদ্ধিজীজীর একটা বই নিয়া আস্ত একটা সেমিনার বিশাল ঘটনা বটে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে কী হইছে সেইটা একটা প্রশ্ন বটে। আলোচনা শুনতে শুনতে মনে হইতেছিল, কেউ কেউ সলিম ভাই বা ফরহাদ ভাইয়ের আলোচনা আদারওয়াইজ নিতে পারেন। এমনকি লেখকও রিঅ্যাক্ট করতে পারেন। বিশেষ কইরা দ্বিতীয়বার ব্রাত্য রাইসুর প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়া সলিমুল্লাহ খান যেভাবে সুমন রহমানের বইটা আবর্জনা বলে ফেলে দিলেন (পরে তুলে নিছিলেন) তাকে একটু অস্বস্তি যে জাগতে পারে তা একটু অনুমান করছিলাম। বস্তুত, সলিমুল্লাহ খান ও ফরহাদ মজহার বইটার পিঠ কিছুটা চাপড়ায়ে দিলেও তাত্ত্বিক জায়গা থিকা বেশ তুলাধুনাই করছেন। সলিম ভাইয়ের ভঙ্গিতে স্নেহ একটু কম ছিল, ফরহাদ ভাইয়ের স্নেহ একটু বেশি ছিল। এইটুকুই তফাৎ। এখন যদি কেউ জিগান সলিমুল্লাহ খান বা ফরহাদ মজহার ঠিক কী বলছিলেন তবে আমাকে ব্যক্তিগত স্মৃতিসাগরে গিয়া আয়াসসাধ্য স্মৃতিচারণ করতে হবে, নয়তো রেকর্ডার হাতড়াইতে হবে। কিন্তু তখন যা বুঝছি তাতে তাদের উভয়ের কথাকে ন্যায্য বইলা মনে হইছে। আমার সমর্থন তাদের দিকেই গেছে। তারা যে আর্গুমেন্ট তুলছেন সেইগুলা আমি বুঝছি, নিতেও পারছি। প্রয়োজনে সে আলাপের ট্রান্সক্রিপ্টও আমরা করবো।

ভাবছিলাম, আলোচনার মর্ম থাকবে মনের মাঝে, আর সুমনের কর্মের প্রশংসা করবো বাহিরে। কিন্তু গোল বাঁধলো সুমন রহমানের কথাতেই। তিনি ফাইট-ব্যাক করলেন। আলোচনায় সলিমুল্লাহ খান কী প্রসঙ্গে, কোন পরিপ্রেক্ষিতে কী বলছেন তা উল্লেখ না কইরা তার বক্তব্যের কয়েকটা খণ্ডিত উদ্ধৃতি দিয়া তার কথা খারিজ অর্থাৎ নিজের পক্ষে যুক্তি দেওনের প্রয়াস নিছেন।

বিষয়টা আমার ভাল লাগলো না। উপর চালাকি মনে হইলো। সুমন মার খাইয়া মার হজম করতে পারেন নাই। মাইর খাইছেন এইটা আমরা দেখছি। কিন্তু এখন উনি বলতেছেন মাইরটা খান সাহেব যুতমতো দিতে পারেন নাই। কিন্তু সেমিনারের বিষয়কে ফেসবুকে খণ্ডিতভাবে আইনা তিনি যে ভাল কাজ করেন নাই সেইটা অল্প হইলেও বুঝতেছি। তাই একটু বিনয়ের সঙ্গে তার পোস্টে কমেন্ট করছিলাম যে :

সুমন ভাই,

আজকে একটা স্টেটাস দিছি। আপনার নোটের প্রসঙ্গে সেইটা প্রাসঙ্গিক হইতে পারে, নাও পারে। এইখানে দিলাম তুইলা।

‘যখন মুখে বলা কোনো কথাকে লেখায় বর্ণনা করার প্রক্রিয়া চলে তখন লেখকের বিশেষ কর্তব্য হইলো পরিপ্রেক্ষিতের সমগ্রতার যথাসম্ভব বিবরণ দেওনের চেষ্টা নেওয়া। পরিপ্রেক্ষিত বর্ণনা ছাড়া আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা অবৈধ বইলা গণ্য হইতে পারে।’

উনি আমার উত্তরে লিখলেন,

‎Mahbub Morshed, আপনার এই ফতোয়া এই নোটে প্রযোজ্য নয়। খেয়াল করলে দেখবেন, নোটে তারাই ট্যাগিত, যারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থাৎ, আপনার ভাষায়, “পরিপ্রেক্ষিতের সমগ্রতার” যথাসম্ভব নৈকট্যে ছিলেন। বরং, আপনি যদি মনে করেন যে, আমার খণ্ডিত চয়ন “পরিপ্রেক্ষিতের সমগ্রতার সাথে অসংগতিপূর্ণ সেইটাই দৃষ্টান্ত আকারে দেখান। বিমূর্ত দার্শনিক বাণী প্রদানের চেয়ে এটা বরং কাজের হবে।

এই উত্তরের মধ্যেও তার উপর চালাকিটা খেয়াল করলাম। উপর চালাকি থিকা রক্ষা পাওয়ার একটাই উপায়, সেইটা হইলো ওইদিনের সেমিনারের পুরো বিররণ প্রকাশ করা। সুমন রহমানের পক্ষে সেইটা সহজ। উনার প্রতি অনুরোধ কইরা রাখলাম। তবে উনি যদি, খণ্ডিতভাবে তর্ক চালানোটাকে যৌক্তিক মনে করেন তবে অন্য কাউকে সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে।

 

কমেন্টস:

শামসেত তাবরেজী আমি বুঝলাম না মাইর খাওয়ার প্রসঙ্গ আসল কোত্থকে। যার যা বলার বলছে। সুমনের রাইট আছে পাল্টা জবাবের, তাই দিছে। মাহবুব মোর্শেদ এইভাবে বলছে কেন? কিছু কি অগোচরে ঘটছে? প্রভু, তুমি রক্ষা কর!

Mahbub Morshed তাবরেজী ভাই, সুমন তো সেমিনার শেষে বক্তা হিসাবে নিজের বক্তব্য বলছেন। আত্মপক্ষ সমর্থন করছেন। তারপর আবার এই নোট কেন?

Imrul Hassan “আলোচনায় সলিমুল্লাহ খান কী প্রসঙ্গে, কোন পরিপ্রেক্ষিতে কী বলছেন তা উল্লেখ না কইরা তার বক্তব্যের কয়েকটা খণ্ডিত উদ্ধৃতি দিয়া তার কথা খারিজ অর্থাৎ নিজের পক্ষে যুক্তি দেওনের প্রয়াস নিছেন। ।বিষয়টা আমার ভাল লাগলো না। উপর চালাকি মনে হইলো।”

Mahbub Morshed, এইখানে ‘পরিপ্রেক্ষিত’ এবং ‘প্রসঙ্গ’ বলতে কি বুঝাইলেন, সেইটা আমার কাছে অস্পষ্ট; কারো বলা বা লেখা’র যদি উত্তর করতে হয়, তাইলে ত তার ‘মূল’ পয়েন্টারে (এইখানে ‘খন্ডিত’) ধইরাই বলতে হবে…

আর ‘পরিপ্রেক্ষিত’ এবং ‘প্রসঙ্গ’-এর মানে যদি হয় যে, ট্রান্সক্রিপ্ট উল্লেখ কইরা বলা-কথার উত্তর করতে হইবো, তাইলে ত মুখের কথার উত্তর মুখেই দিতে হইবো; লেখালেখি করা যাইবো না… ট্রান্সক্রিপ্ট থাকলে ভালো; কিন্তু বলা-কথার উত্তর করার জন্য ‘অবশ্য পালনীয় শর্ত’ হইতে পারে না…

যার বলা-কথা’র উপর লেখা হইছে, তিনি যদি মনে করেন তার বক্তব্য ‘খন্ডিত’ করা হইছে, তাইলে তিনি ট্রান্সক্রিপ্টটা হাজির করতে পারেন… পাঠক যদি মনে করেন ‘পুরাটা’ না শুইনা তিনি বুঝতে পারতেছেন না, তিনিও দায়িত্ব নিতে পারেন; কিন্তু এইটা লেখকের ‘উপর-চালাকি’ কেমনে হইলো?

Mahbub Morshed ইমরুল হাসান,
হাতের কাছে অভিধান নাই। অভিধান জোগাড় কইরা শব্দগুলা বইলা আমি কী বুঝাইছি তা কইতে পারবো।
তবে আপনে যেমন আমার কথা আমারে খাওয়ায়ে দিতে চাইলেন এইটা ভাল লাগলো।

Imrul Hassan Mahbub Morshed, ব্যাপারটা যে অভিধান-এর না, সেইটা মনে হয় স্পষ্ট আর আপনার কথা’র অর্থ করা ত আপনারে তা খাওয়ানোর চেষ্টা না… আলাপের ভিতর এইরকম রেটরিক থাকাটা (যদিও সুস্বাদু একটা ব্যাপার) তর্কের ক্ষেত্রে একটা দুর্বলতা …

Faizul Latif Chowdhury সেদিন আমার বক্তব্য ছিল খণ্ডিত। বলেছিলাম, আজকাল বাস্তবতাগুলোর অনেক কিছু মানুষ / মানুষেরা (যেমন মার্কিন প্রশাসন) পরিকল্পিতভাবে তৈরী করে, আবার পরিবর্তন করে। যা উহ্য রেখেছিলাম তাহলো ”(এমতবস্থায়) বাস্তবতার বিশ্লেষণের সঙ্গে-সঙ্গে বাস্তবতা সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে অনুসন্ধান থাকলে ভালো হয়”। মাহবুব মোর্শেদ লেখাটি অনুরূপ একটি অনুসন্ধান। ক্ষমতাধর একটি বাস্তবতা তৈরী করে, প্রয়োজন হলে তা গুঁড়িয়ে দিয়ে নতুন বাস্তবতা হাজির করে। আমরা কোন্ বাস্তবতার ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ করবো? এ বিষয়ে বিশ্লেষকদের সচেতন থাকা দরকার। সুমন রহমানের মতে এটি পলিটিক্যাল ইকনমিস্টদের কাজ। ঠিক। কিন্তু মেকী বাস্তবতার বিষয়ে নতুন কোন দৃষ্টিকোণের প্রয়োজন থাকতে পারে, মনে হয়। ধন্যবাদ মাহবুব মোর্শেদ।

 

মে ২০, ২০১১

 

সুমন রহমান

মাহবুব মোর্শেদের “এক্সপেরিমেন্টাল” মিথ্যাচার

 

গত শুক্রবারে কানার হাটবাজারে গিয়া মাহবুব মোর্শেদ তার “পরম প্রিয় লেখক” সুমন রহমানের বইয়ের উপর অনুষ্ঠিত আলোচনা শোনেন। সেখানে তিনি শোনেন “ফায়ারব্রান্ড বুদ্ধিজীবী” ফরহাদ মজহার এবং সলিমুল্লাহ খান সুমনের বইটাকে “তাত্ত্বিক জায়গা থিকা” আচ্ছামত “তুলাধুনা” করতেছেন! এক পর্যায়ে সলিমুল্লাহ খান এই বইকে “আবর্জনা” বলে ফেলে দেন। বই পড়া না থাকলেও উনাদের তুলাধুনার আর্গুমেন্টকে মাহবুব মোর্শেদের কাছে “ন্যায্য” মনে হইছে। তারপরও তিনি ভাবছিলেন যে “আলোচনার মর্ম” ভিত্রে রাইখা বাইরে সুমন রহমানের বইয়ের পিঠ চাপড়ায়া দিবেন। কিন্তু সেইটা হইতে না দিয়া সুমন “ফাইট ব্যাক” করলেন। ফেসবুকে সলিমুল্লাহ খানের বক্তব্যকে খণ্ডিত আকারে উপস্থাপন কৈরা নোট দিলেন। এইটা মাহবুব মোর্শেদের কাছে “উপর চালাকি” মনে হইছে। তার মনে হইছে, সুমন “মাইর খাইয়া মাইর হজম” করতে পারেন নাই।

সলিমুল্লাহ খানের সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় আমি যে নোটটি (http://web.facebook.com/note.php?note_id=10150181365068122)ফেসবুকে দিই, সেখানে মাহবুব ফতোয়া দেন যে, পরিপ্রেক্ষিত যথাসম্ভব তুইলা না ধৈরা আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা অবৈধ। জবাবে আমি বলি যে, নোটে ট্যাগড সকলেই যেহেতু বক্তৃতাগুলা শুনেছেন, ফলে পরিপ্রেক্ষিতের সাথে আমার আর্গুমেন্ট অসংগতিপূর্ণ হইলে তারাই ধরায়া দিবেন। মাহবুবের কাছে এইটাও “উপর চালাকি” মনে হইছে।

নোটে  ট্যাগড থাকায় আমি দেখলাম, ঐখানে অনেকেই মাহবুবের মিথ্যাচার, শব্দপ্রয়োগ ও অবজ্ঞা করার ভঙ্গি নিয়া ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাইছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমাকেও অনেকে বলছেন কিছু বলার জন্য। তাদের এই অনুরোধে আমি বেকায়দায় পড়ছি। মাহবুব মোর্শেদের এই আচরণ নতুন নয়। অতীতে বহুবার দেখা গেছে এই লেখক পরিচয়ধারী অবলীলায় ব্যক্তিআক্রমণ করেন, অসম্মানজনক আচরণ/মন্তব্য করেন, তথ্য ম্যানিপুলেট করেন, মিথ্যাচার করেন। এইটা তার সাহিত্যিক স্বভাবের অন্তর্গত, বা বলা যায় এইগুলাই হয়ত তার সাহিত্য। ফলে, প্রায় শ-দেড়েক দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতিতে “কানার হাটবাজার” নিয়া যে আলোচনা হইল, তার মাহবুব মোর্শেদকৃত ভাষ্য শুইনা আমি অবাক হই নাই। বরং মনে হইছে, ঐ নোটে মাহবুব তার বুদ্ধিবৃত্তি ও অসুয়াস্বভাবের সাথে সুবিচারই করছেন। অর্থাৎ “গত শুক্রবারে কানার হাটবাজারে গিয়া” মাহবুব মোর্শেদ কী শুনতে চাইছিলেন, তারই ডেমো তার নোট। মাহবুবের সেই বাসনা পূরণ না হওয়ায় আমি বড়জোর দুঃখপ্রকাশ করতে পারি। কিন্তু একটা বই নিয়ে এত দীর্ঘসময় যেভাবে ক্রিটিক্যাল আলোচনা, মত-মতান্তর হইল তাকে ম্যানিপুলেট কৈরা এই জাতীয় ভাষ্য তো দাঁড় করাইতে পারি না। যাই হোক, সেসব আলোচনার অধিকাংশই মাহবুব মোর্শেদের বুদ্ধিবৃত্তির এন্টেনার বাইর দিয়া গেছে, তার নোট পড়লে এরকমই মনে হয়। এই মনে হওয়া দুঃখই বহিয়া আনে। সাহিত্য না হোক, হোক সেইটা সাংস্কৃতিক অধ্যয়ন বা রাজনৈতিক অর্থনীতি — স্বাভাবিক প্রবৃত্তি ও প্রস্তুতির জায়গা থেকেই একজন সাহিত্যিকের পক্ষে এসব বিষয় আশয়ের সাথে আরো ভাল যোগাযোগ তৈরি হওয়া উচিৎ ছিল। মাহবুবের এই নোট তার অসুস্থতা, অসহিষ্ণুতা ও প্রস্তুতির দৈন্যকে প্রকট করে।

দুর্ভাগ্যবশত, মাহবুব মোর্শেদের সাহিত্যের সমঝদার আমি হইতে পারি নাই, তার “বুদ্ধিবৃত্তিক” নড়াচড়ারও না। ফলে, তার এ ধরনের বিদ্বেষের সাথে যোগাযোগের ল্যাংগুয়েজ আমার জানা নাই। অনেকেই জিগাইতেছেন, এই ধারার অসুস্থতা ও অসহিষ্ণুতার খপ্পর থেকে মুক্তচিন্তা ও ক্রিটিক্যাল যোগাযোগের পরিবেশটাকে কীভাবে রক্ষা করা যায়? আমার ততটুকু পর্যন্ত ভাবার আগ্রহ হয় না, তাই চুপচাপ থাকি। এখন বন্ধুরা বলতেছেন , আমার এই “ঔদাস্য” থিকা মাহবুব মোর্শেদ নাকি বরং তার আগামি ম্যানিপুলেশনের জ্বালানি জমাইতেছে! মাহবুব মোর্শেদ, কুলদা রায় বা হিমুরা যদি নিজ নিজ বঞ্চনার বোধের ওপর খাড়ায়া যদি ক্রিটিক্যাল চিন্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে চায়, সেক্ষেত্রে আমি কী করতে পারি? নীরবতা ছাড়া তাদের অসূয়াসৃষ্ট মিথ্যাচারের মোকাবেলা আর কী দিয়ে করা সম্ভব?

 

কমেন্টস

Faruk Wasif: আপনার এই নোট বিষয়ে মন্তব্য করবো না। পূর্বাপর ঘটনা পরম্পরার সংগে ফেসবুক বিনা অন্য মাধ্যমে পরিচিত নই বলে মন্তব্য না করার একটা সুযোগ আমার থাকছে। বরং আমি একটি ঘটনাটা নিয়া কথা বলার আগ্রহ বোধ করি। কোনো আলোচক প্রকাশ্য সভায় কারো বই যদি ছুড়ে মারেন, ‌’প্রতিকী’ভাবে একে আবর্জনা গণ্য করায় অন্যদের প্রভাবিত করায় তার অর্জিত লেখকমান বিনিয়োগ করেন, আমি তার নিন্দা করতে বাধ্য। আমাদের ‘সিনিয়র’ লেখকরা পরস্পরকে যেমন এনগেজড করে আলোচনা বা স্বীকার করেন না, তেমনি নবীনতরদেরও তারা পারলে অস্বীকার করতে চান। এই মনোভাব সামন্তসুলভ, অগণতান্ত্রিক। তাতে নবীনের সমস্যা যত না, তার থেকে বেশি কায়েম হওয়া ব্যক্তিটির সমস্যা। তিনি নিজেকে এর মাধ্যম চূড়ান্ত ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেন, ঈশ্বরের মতো পূর্বাপরহীন স্বয়ম্ভু দেখান। এটা সুস্থ্যচর্চা না। আমি সলিম ভাইযের পার্টিকুলার ওই আচরণের নিন্দা জানাই।

Mohammad Arju: সলিমুল্লাহ খান ভিন্ন একটা প্রসঙ্গে ‘আবর্জনা’ বোঝাচ্ছিলেন- আবর্জনা হল রাইট থিং ইন দি রং প্লেস। উনি বলছিলেন, যে আপনার সামনে প্লেটে যদি একটা ‘কেক’ থাকে তবে ওটা খাবার কিন্তু যখন ওটা আপনি ফেলে দিচ্ছেন বা পড়ে যাচ্ছে {এই ফেলে দিচ্ছেন বলতে বলতে তিনি হাতে থাকা বইটা ফেলে দেন) তখন ওটা আর খাবার না, ওটা আবজর্না। (এর মানে কি এই যে, ‘তিনি বইটা ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন’?)

এস এম রেজাউল করিম:এই নোট যতটা না মাহবুব মোর্শেদের কোন কর্মের বিশ্লেষণ, তারচে বেশি মাহবুব মোর্শেদের প্রোফাইল রচনা বা জনসমাজে তারে পরিচয় করাইয়া দেওয়া। জনসমাজ মাহবুব মোর্শেদরে যেইভাবে চিনত, সেই চেনা যে ঠিক না–তাই বলতেছেন সুমন রহমান, Shafiq Shaheen, Aminul Bari Shuvro, Sohel Hasan Galib। বিদ্যমান (পাবলিক ইমেজ) ভুল মাহবুব মোর্শেদরে ওনারা ফের রচনা করতেছেন।

আমার ধারণা, কর্মরে সমালোচনা করতে যাইয়া কর্মীর চরিত্রে পৌঁছাইলে পরবর্তি কর্ম হয়তো থামানো যায়, কিন্তু ইতিমধ্যে কৃত কর্মটি প্রতিষ্ঠা পাইতে থাকে। ফলে চরিত্রহনন/পুনঃরচনার নৈতিক ও আইনী দিক বাদ রাখলেও এইটারে আমার ভুল স্ট্রাটেজি মনে হয়।

Imrul Hassan: Rezaul Karim এসাথে আমার দ্বিমত আছে, কয়েকটা বিষয়ে… প্রথমত, স্ট্রাটেজি হিসাবে সুমন রহমান-এর এই নোটটারে আমি সমর্থন করি… কারণ এইখানে একটা ‘কমিউনিকেশন’ সম্ভব হইছে, নিরব থাকলে কিংবা অন্য পদ্ধতি নিলে ত কমিউনিকেশনই সম্ভব হইতো না… প্রাথমিক সাফল্য আসছে! 🙂

দ্বিতীয়ত, আপনি চিন্তিত যে ‘প্রাথমিক সাফল্য’ আসলেও লং রানে এইটা ক্ষতিকর হইবো; আমি সেই সম্ভাবনাটারে ইগনোর করি এই কারণে যে, এইটা যাদের ‘উপায়’ তাদের কাছেই ফেরত দেয়া হইতেছে, আর এর মাধ্যমে ‘উপায়’টারে ‘সমালোচনা’ করা হইতেছে; কিন্তু এর ‘সাফল্য’ দেইখা যদি অনেকেই এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু করেন, তাইলে এইটা তাদেরই ব্যাপার যে তারা নিজেদরকে এই ‘সমালোচনা’র অর্ন্তভুক্ত করবেন কিনা…

তৃতীয়ত, এইটা ‘ভুল মাহবুব মোর্শেদ’-এর পুনঃরচনার চেষ্টা মনে হয় নাই, বরং একটা কর্মরে কর্মী’র অনান্য কর্মের সাথে মিলাইয়া দেখার চেষ্টা, সেইখানে একটা ‘ধারা’রে চিহ্নিত করার চেষ্টা আছে, যেইখানে উনার কন্ট্রিবিউশন আছে; এই ‘মাহবুব মোর্শেদ’ যে এইরকমই ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন, এর কি গ্যারাণ্টি? মানুষ হিসাবে, সাহিত্যকর্মী হিসাবে এবং লেখক হিসাবে তিনি কি নিজেরে পরিবর্তন করেন নাই বা করবেন না? মাহবুব মোর্শেদ বিষয়ে আপনার এই ‘স্থির-চিন্তা’ নিতে পারি নাই।

Mahbub MorshedSumon Rahman সুমন ভাই,
আপনের এই নোটটা মাত্র চোখে পড়লো। অনেকগুলা লাইক দিলাম। আপনার এই নোট উদ্যোগের সফলতা কামনা করি।
তবে আপনি প্রথম যে নোট দিছিলেন কানার হাটবাজার নিয়া সেইখানে আমি যে আর্গুমেন্ট তুলছিলাম। সেইটারে আপনি বাতিল করায় আমি সেই আর্গুমেন্ট প্রমাণ করছি। এইখানে আমার বিষয়ে কুৎসার পাশাপাশি আর্গুমেন্টের জবাবটা অন্তত আশা করছিলাম। এইখানেও তো জবাব দিলেন না।
আমার আর্গুমেন্ট কী ছিল তা ভুলে গেলে মনে করায়ে দিতে পারি। আপাতত আপনার স্মৃতির উপর ভরসা করতেছি।
আপনে যেমনে মুক্তবুদ্ধি চর্চার পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে নামছেন তাতে আপনেরে ফেসবুকের প্রক্টর ঘোষণা করার দাবি জানাই। আর আমার অসুস্থতা খুঁজে পাওয়ায় আপনারে ডাক্তার উপাধি দিলাম। দুইটা পোস্ট পাইলেন।
প্রস্তুতির দৈন্য শুইনা হাহাহাহা করে হাসলাম।

Sumon RahmanMahbub Morshed, আপনের আর্গুমেন্টকে আপনের সাহিত্যের সমান গুরুত্বই আমি দেই। তবু গনতান্ত্রিক করুনাবশত যে জবাবটুকু দিয়াছিলাম, জানতাম এইটা আপনের এন্টেনায় আটকাইবে না। যে কারনে আপনের সাহিত্যের সমঝদার আমি না, একই কারনে আপনের আর্গুমেন্টের তথা আপনের বুদ্ধিবৃত্তির। এর বাইরে, ফেসবুকে বাংলা লিখনেওয়ালা লোক হিসাবে আপনেরে আমি অত্যন্ত ইরিটেটিং বৈলা জানি। আমাকে ইরিটেড করতে দেয়াকে আমি অন্যের গনতান্ত্রিক অধিকাররূপে দেখি না। আপনের এই হীন স্বভাবের অবসান হোক।

Mahbub MorshedSumon Rahman sumon vai, apner korunar onto nai. asto note dia boschen aar koitechen koruna koira jobab disen. oi jobab to jobab chilo na apni gayer jore amar argument kharij korte chaichilen. pore ami note dia asha korchilam apnar nojore poruk. seta je eto derite porbe ta bujhi nai. kintu eikhane je argument nai seitai amare obak korche.
amar hin sovaber pashapashi apner juktihin sovaber-o obosan hok.

 

মে ২১, ২০১১

ইমরুল হাসান

সাম্প্রতিক ‘সাহিত্যিক বিতর্কে” আমার ‘অবস্থান’

 

ব্যাপারটা এতক্ষণে গিয়া ‘আসল’ জায়গায় ঠেকছে – ‘যুক্তি’র দাবিতে।

সুমন রহমান-এর কানার হাটবাজার বইটা নিয়া একটা আলোচনা অনুষ্ঠানে সলিমুল্লাহ খান বইটা নিয়া কিছু সমালোচনা হাজির করেন। অনুষ্ঠানে সময় না থাকায় সুমন রহমান সলিমুল্লাহ খান-এর সমালোচনার উত্তর করেন ফেসবুক-এর একটা নোটে । সেইখানে মাহবুব মোর্শেদ একটা দাবি জানান যে, সুমন রহমান যদি সলিমুল্লাহ খান-এর কথার সমালোচনা করতে চান তাইলে সলিমুল্রাহ খান-এর কথা আগে হাজির করা তার দায়িত্ব, সমালোচনা করার আগে ‘প্রেক্ষাপট’ বর্ননা করা জরুরি। সুমন রহমান এই ‘দায়িত্ব’ নিতে অস্বীকার করছেন; বলছেন যে, যেহেতু সবাই ওই ঘটনাতে ছিলেন, তাই ওই ‘প্রেক্ষাপট’ নতুন কইরা হাজির করার কোন দরকার নাই। তখন মাহবুব মোর্শেদ উদ্যোগী হয়া সেই ঘটনার একটা ‘বয়ান’ হাজির করলেন । সুমন রহমান সেই ‘বয়ান’টারে ‘এক্সপেরিমেন্টাল’ মিথ্যাচার বইলা শনাক্ত করলেন এবং বললেন যে, এই ধরণের ‘মিথ্যাচার’ মাহবুব মোর্শেদ নিয়মিতই করেন এবং এইটা একটা বাজে কাজ, এর একটা সুরাহা দরকার।

এই বিষয়টা নিয়া নোটগুলা যেহেতু আমি ফলো করতেছি, এর একটা ভাষ্য আমিও দিলাম, উপরে। এখন এই ‘ভাষ্য’টা ‘নিরপেক্ষ’ কোন বয়ান না। এইটা আমার আন্ডারস্ট্যান্ডিং। এখন এই ‘আন্ডাস্ট্যান্ডিং’ বা ‘বুঝ’টা এক হইলো ‘উদ্দেশ্যহীন’ না; দ্বিতীয়ত, আমি এইটা চাইও যে, কেউ কেউ এইভাবে দেখুক – এইটা হয়তো চিন্তারই একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এই প্রেক্ষিতে মাহবুব মোর্শেদ কানার হাটবাজার-এর আলোচনাটাতে তার ভাষ্যরে যে একটা ‘নিরপেক্ষ’ বা ‘যুক্তিপূর্ণ’ ঘটনা বইলা দাবি করতেছেন, সেইখানে আমার আপত্তি আছে এবং সুমন রহমান যে তার বক্তব্যরে ‘উদ্দেশ্যমূলক’ কইরা তোলছেন, সেই ‘অবস্থান’-এর প্রতি আমার সমর্থন আছে।

বাকি রইলেন ব্রাত্য রাইসু, উনি যে উনার অবস্থানটারে ‘যুক্তিপূর্ণ’ কইরা তোলার চেষ্টা কইরা যাইতেছেন, সেইটা দেখতেও ভালোই লাগতেছে। মনে হইতেছে যে, এই ‘অবস্থান’ বিষয়টা যতোটা না ‘যুক্তি’র তার চাইতে ত অনেকবেশি ‘রাজনীতি’র; তাইলে উনি কি সুমন রহমান-এর ‘অবস্থান’-এর জোরটারে ভয় পাইতেছেন? কেন?

 

মে ২৪, ২০১১

মাহবুব মোর্শেদ

সুমন রহমানের বই নিয়া দেওয়া বিভিন্ন নোট (এইখানে প্রায় সব লেখার লিংক পাইবেন)

 

আগে কী ঘটছে সেইটা নিয়া নতুন করে বইলা লাভ নাই। শুধু এইটুকু বলি, সুমন রহমানের বই নিয়া সেমিনারে সলিমুল্লাহ খান ও ফরহাদ মজহার কী বলছিলেন সেইটা বিস্তারিত না বইলা সুমন রহমান আলোচনার একটা জবাব দেওয়ার চেষ্টা নিছিলেন।

(https://www.facebook.com/note.php?note_id=10150181365068122)। সেই নোটে গিয়া আমি কইছিলাম, সলিমুল্লাহ খান কী বলছেন সেইটা না বইলা জবাব দিবার চেষ্টা অবৈধ। সুমন আমার কথা নেন নাই। ফলে, আমি যুক্তি দিয়া জিনিশটা বুঝানোর চেষ্টা নেই। এরকম আলোচনায় পরিপ্রেক্ষিত কেন জরুরি এবং পরিপ্রেক্ষিত ছাড়া আলোচনা কেন উপর চালাকিতে পরিণত হয়।

(https://www.facebook.com/note.php?note_id=10150592353525314)। উদাহরণ হিসাবে সলিমুল্লাহ খানের বই ফেলে দেওয়া নিয়া আমি একটা পরীক্ষামূলক খণ্ডিত বক্তব্য হাজির করছিলাম। সলিমুল্লাহ খান সুমনের বই ফেলে দিছিলেন ঠিকই। কিন্তু তিনি একটা গল্প বইলা বই ফেলছিলেন। গল্পটা না বললে বুঝা যায় না, তিনি সুমনের বইটাকে সুমনের বই মনে কইরাই ফেলছিলেন নাকি আবর্জনা প্রসঙ্গে একটা গল্প বইলা ফেলছিলেন সেইটা যেমন বিস্তারিত বর্ণনা ছাড়া বুঝা সম্ভব না তেমনি সলিমুল্লাহ খানের উত্তরে সুমন বুঝা সম্ভব না সলিমুল্লাহ খান আসলে কী বলছিলেন। তাই সুমন যদি সলিমুল্লাহ খান কী বলছেন সেইটা বিস্তারিত বইলা নিজের কথা বলতে সেইটা হইতো ভাল। আমার নোটের প্রতিক্রিয়া হিসাবে সুমন একটা নোট দিছেন (http://on.fb.me/iRj7NJ)। নোটের শিরোনাম ‘মাহবুব মোর্শেদের “এক্সপেরিমেন্টাল” মিথ্যাচার। আমার নোট যে এক্সপেরিমেন্টাল সেইটা আমি নিজে কইছি, সুমনের আবিষ্কার না। সুমন আমার বিবরণকে মিথ্যাচার বলছেন, এইটা তার আবিষ্কার। আমার বর্ণনা খণ্ডিত এবং পরীক্ষামূলক। কিন্তু মিথ্যাচার? সলিমুল্লাহ খান যদি বইটা না ফেলতেন আর আমি যদি বলতাম, ফেলছেন তাইলে মিথ্যা হইতো। সুমন রহমানের অবস্থানে যুক্তি পাই নাই আমি। ফলে, এই নিয়া তার প্রথম নোট এবং আমার উত্তরে তার দ্বিতীয় নোট দুইটাকেই উপর চালাকি ছাড়া আর কিছু মনে হয় নাই। আমি বলছিলাম, আমার নোটকে যদি এক্সপেরিমেন্টাল মিথ্যাচার বলতে চান তবে তার কর্মকাণ্ডরে বলতে হয় অলআউট মিথ্যাচার। সোজাসাপ্টা মিথ্যাচারের নমুনা সেইগুলা। আমি মিথ্যাচারের দিকে যাইতে চাই না। আমি উপর চালাকি বলা পর্যন্ত থিতু আছি।

সুমন রহমান যখন যুক্তিতে কুলাইতে পারলেন না তখন তার দ্বিতীয় নোটে একটা পরিবেশ আন্দোলনের ডাক দিলেন। আমি বিভিন্ন জনের সমালোচনা কইরা যেসব নোট দিছি সেইগুলার উল্লেখ কইরা বলতে চাইলেন, আমি ক্ষতিকর এবং পরিবেশ দূষণ করতেছি। এই আন্দোলনে যোগ দিলেন সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ। ইতিপূর্বে ইনি সাহিত্যিক আলোচনায় আমাকে বাপ-মা তুইলা গালি দিছিলেন। সুমন ও সুব্রত’র পরিবেশ আন্দোলনে তাদের অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ীরা যখন আমাকে উদ্দেশ করে ব্যক্তিগত কুৎসা রটনা করতেছিলেন তখন ব্রাত্য রাইসু প্রতিবাদ করেন। ভিন্ন নোট দিয়া তিনি তার প্রতিবাদ হিসাবে দেওয়া কমেন্ট একত্রিত করছেন। (https://www.facebook.com/note.php?note_id=10150187407725723)। পরে এই বিতর্কে মাহবুব পিয়ালের অবস্থান নিয়া আরেকটা নোট দিছেন (http://on.fb.me/kZSwLE)।

এই তর্কের মধ্যে সুমন রহমানের ঘনিষ্ট সহযোগী ইমরুল হাসান একটা নোট দিয়া তার অবস্থান ব্যক্ত করছেন(https://www.facebook.com/note.php?note_id=10150266396915752)। তার নোটে গিয়া আমি কিছু প্রতিক্রিয়া দিছি। তো, ইমরুল তার নোটে বলছেন। আমার সঙ্গে কথা বলার রিস্ক উনি নিতে চান না। আমি যেন তার নোটে না যাই, আমার ওয়ালে গিয়া প্রতিক্রিয়া লিখি। আর উনি আমার কমেন্ট ডিলেট দিবেন। ইমরুলের নোটের উপর তার অধিকার আছে। তিনি চাইলে আমার কমেন্ট ডিলেট দিতে পারেন। কিন্তু যখন দেখলাম ইমরুল কমেন্ট ডিলেটের ক্ষেত্রে বাছাই করতেছেন তখন আমি তার নোটে করা আমার সব কমেন্ট ডিলেট দিলাম। নিজেরে নোট থিকা আনট্যাগ করলাম। পরে দেখি, উনি এইটারে ওনার বিজয় হিসাবে দেখতেছেন এবং আমার ডিলেট প্রক্রিয়াকে আত্মহত্যা বলতেছেন। প্রশ্ন হইলো কেউ যদি তর্কে না পাইরা তার নোট থিকা আমারে তাড়ায়ে দেন আমার কমেন্ট ডিলেট করেন। তাইলে আমি যদি চইলা আসি তাইলে কি সেটারে আত্মহত্যা বলা যায়?

পরিশিষ্ট হিসাবে ইমরুলের লগে আমার কথোপকথন পড়েন :

Mahbub Morshed আমার নোট যদি হয় এক্সপেরিমেন্টাল মিথ্যাচার তাইলে সুমনের প্রথম নোটরে বলতে হবে অলআউট মিথ্যাচার। আর বেশি কিছু বললাম না। সামনের মাসে এই নিয়া বিস্তারিত নোট দিবো।

Yesterday at 12:58pm · Like · 2 people

Imrul Hassan আপনার প্রপাগান্ডা আমি এনজয় করি, এইখানেও করলাম।

Yesterday at 1:12pm · Like · 1 person

Mahbub Morshed  হাহাহা। আমার সামনের নোটের শিরোনাম হবে ‘সুমন রহমানের অলআউট মিথ্যাচার’। সুমনের মিথ্যাচার ধরায়ে দেওয়ার জন্য একটু খাটতে হবে। সেমিনারে দেওয়া ফরহাদ ভাই ও সলিমভাইয়ের বক্তব্য ট্রান্সক্রিপ্ট করার কাজ চলতেছে। নানা ব্যস্ততা যাইতেছে। একটু সময় তো লাগবেই।

23 hours ago · Like

Imrul Hassan ট্রান্সক্রিপ্টটা দিয়েন, তাইলে ‘ফরহাদ ভাই ও সলিমভাই’রেও ধরা যাইবো… উনাদের চিন্তা যে ‘আল্টিমেট’ কিছু না এবং অনেকক্ষেত্রেই ‘গত প্রজন্মের একটা চিন্তা’, সেইটারে আইডেন্টিফাই করার দরকার আছে…

21 hours ago · Like

Mahbub Morshed  apnar ei montobbe pura atonkito bodh kortechi. facebook chaira polaite hoibo mone hoy. seshe dekha gelo transcript durer kotha, ami-i nai.

20 hours ago · Like

Imrul Hassan ‎’তো এই হৈলেন মাহবুব।’…

যা-ই হোক, আপনার আতংকও এনজয় করলাম; কিন্তু ‘রস’-এর আলাপ আর না বাড়াই, Mahbub Morshed…

20 hours ago · Like

Mahbub Morshed আতংক একটা স্বতস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া। আপনে ফরহাদ মজহার আর সলিমুল্লাহ খানকে ধরার বাসনা ব্যক্ত করায় আমার আতংক প্রকাশিত হয়া গেছে। আটকাইতে পারি নাই। কিন্তু বিধাতার কী পরিহাস! আমার কাছে যা আতংক আপনার কাছে তা রসমাত্র। আপনার নিকটে যা খেলা, আমার নিকটে তাই হয়তো মৃত্যুর নামান্তর।

25 minutes ago · Like

Imrul Hassan আপনার লগে কথা-বলার রিস্ক আমি নিমু না। ফরহাদ মজহার বা সলিমুল্লাহ খান-এর চিন্তারে ধরার কথা কইলে আপনার ডর লাগে; এরপরে ছিনতাইকারী রাস্তায় ধইরা পিটাইলে কইবেন, আমি আপনারে মারাইছি। এই জাতীয় ‘স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া’ নিজের ওয়ালে গিয়া দেখান। নমুনা হিসাবে আপনের উপরের কমেন্ট ৬ঘন্টা পরে রাখমু, এরপর ডিলিট করবো।

8 minutes ago · Like

Mahbub Morshed  ৬ ঘণ্টা কেন? এখনই ডিলেট মারেন। আপনের তুলনাবোধ দেইখা কষ্ট লাগলো। কষ্টও একপ্রকার অনুভূতি।

Imrul Hassan আপনার ‘স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া’ নিজের ওয়ালে গিয়া দেখান।

আমি এরপর কমেন্ট করছিলাম

বটে? (কপি করি নাই)

এর উত্তরে ইমরুল কইলেন :

Imrul Hassan নিজেই তার আগের সব কমেন্ট ডিলিট কইরা নিজেরে আনট্যাগ করছেন এই নোট থিকা… তার এই ‘আত্মহত্যা’য় সমবেদনা জানাই।

20 hours ago · Like · 1 person

ইমরুলের এই সুইসাইড থিওরি দেইখা আমি ওনার উপর বিরক্ত হয় ওনারে আনফ্রেন্ড করছি। এখন মনে হইতেছে, আনফ্রেন্ড করাটা ঠিক হয় নাই। এই নোটে ওনারে ট্যাগ করার দরকার আছিল। তাই আবারও ওনারে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাইলাম।

 

কমেন্টস:

Sumon Rahman Mahbub Morshed, আপনি আবার বিরক্তও হন দেখতেছি! আপনেরে আর আপনের “ঘনিষ্ট সহযোগী” ব্রাত্য রাইসুরে ব্লক করবার সিদ্ধান্ত আছে আমার। পরে জানা গেল কী এক নোট নাকি আসতেছে! আগেই বলেছি আপনার বুদ্ধিবৃত্তির গ্রাহক আমি নই, তবু আপনার হবু-নোটকে আমার পাঠের বিষয় করবার আপনার ইচ্ছাটাকে (যদি থাকে) ফেসবুক-ফ্রেন্ড হিসাবে আপনার অন্তিম ইচ্ছা হিসাবে গণ্য কৈরা ব্লক করাটা দুয়েকদিনের জন্য ঠেকায়া রাখলাম। তো, সেই নোটই কি এই নোট? না হৈলে এইসব জাবেদা খাতার হিসাব আমার ওয়ালে শেয়ার কৈরেন না।

Mahbub Morshed Sumon Rahman সুমন ভাই, সেই নোটের কাজ চলতেছে। নোট দিতে দিতে জুন-জুলাই হয়ে যাবে। যদি পারেন তো জুলাই পর্যন্ত লিস্টে রাখেন। আর আপনার ইচ্ছা অনুসারে ওই নোটের আগে আপনেরে আর ট্যাগ করবো না।

Imrul Hassan http://www.facebook.com/note.php?created&&note_id=10150269908830752

কমেন্ট করতে গেলে একটু বড় হয়া যায়, তাই একটা নোটই দিলাম, যেহেতু নোটটা আপনার-আমার কথাবার্তা নিয়া, তাই কাউরে ‘বিরক্ত’ না কইরা আপনারেই ট্যাগ করলাম… ‘স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া’ দেখাইয়েন না, প্লিজ!

এস এম রেজাউল করিম এফবি ফ্রেন্ড’রে বাংলায় অনুবাদ না কইরা বোঝায় কিছু সুবিধা পাওয়া যাইতে পারে। এফবি ফ্রেন্ড কি ‘বন্ধু’? আমার সেইটা মনে হয় না। এইখানে ডিলিট বা ব্লক করায় তাড়ানোর চাইতে পলায়ন বেশি ঘটে সম্ভবত। এইটারে বাসার ড্রইংরুম বা আড্ডা কর্নার হিসাবে না দেইখা সোস্যাল গণস্পেস হিসাবে দেখলে ক্ষোভ কিছু কম হইতে পারে। কাউরে আপনারা যখন ডিলিট বা ব্লক করেন তখন অন্যদের সাথে যে নৈকট্য প্রদর্শিত হইতে থাকে, অন্যরা সম্ভবত তত নিকটের নয়।

Sumon Rahman Rezaul Karim, “তাড়ানো” আর “পলায়ন” এর মধ্যে যে ফারাক আবিষ্কার করলেন সেজন্য আপনারেও অভিনন্দন জানাই! ইংরেজিতে একটা শব্দ আছে: get rid of, আমার ব্লক/ডিলিট সেই অর্থে। আর ফেসবুকের স্পেইস সম্পর্কে আরেকটু অভিনিবেশ দিয়েন, তাতে নিজের বুদ্ধিবৃত্তির প্রতি সুবিচার হবে।

এস এম রেজাউল করিম Sumon Rahman, ‘আপনারেও’র মধ্যে খবর আছে, খোঁজ নাই, খোঁজ চাইলাম না।
বিচার পর্যন্ত বুঝি কিছুটা, সু বুঝিই না প্রায়; বোঝা বিচারটাও চাপাইয়া দিতে চাইতেছি এফবি ফ্রেন্ডদের ইচ্ছুক ঘাড়ে। ‘get rid of’-এর আগে আছে ‘engagement’, আমি কইতেছিলাম–এফবি ফ্রেন্ডরা অত এনগেজড না, এই যে মাহবুব মোর্শেদ ইমরুল হাসানরে ডিলিট করলো, আপনে ব্লক করতে চাইতেছেন, যেইখানে ফ্রেন্ড হওয়া এত সোজা, সেইখানে এত ঘটা কইরা ডিলিট করা বা ব্লক করা কেন? তাতে একটা মেসেজ দেওয়া হয় হয়তো, কিন্তু সেই মেসেজটারে আমার ‘অভিমানমূলক’ লাগে, যেইখানে কিনা অভিমানের ভালো একটা গ্রাউন্ড নাই আর কি।

 

মে ২৪, ২০১১

ইমরুল হাসান

মাহবুব মোর্শেদ-এর নোটের উত্তরে…

 

“কিন্তু যখন দেখলাম ইমরুল কমেন্ট ডিলেটের ক্ষেত্রে বাছাই করতেছেন তখন আমি তার নোটে করা আমার সব কমেন্ট ডিলেট দিলাম।“ – মাহবুব মোর্শেদ।

চিন্তার ক্ষেত্রে ‘বাছাই’ জিনিসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, হরেদরে সব জিনিসরে একই মূল্যায়ন আমি করি না… যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি ‘স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া’ না দেইখায়া আপনার ‘অবস্থান’-এর কথা বলতেছিলেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনারে নিতে পারছি, খামাকা এতকিছু এন্টারটেইন করার ত দরকার নাই… বয়স হইতেছে, কত কাজ-কাম বাকি,  সবকিছুরে উত্তর-করার আওতায় নিয়া আসতে গেলে গেলে নিজের কাজ করবো কখোন…

‘পরে দেখি, উনি এইটারে ওনার বিজয় হিসাবে দেখতেছেন এবং আমার ডিলেট প্রক্রিয়াকে আত্মহত্যা বলতেছেন। প্রশ্ন হইলো কেউ যদি তর্কে না পাইরা তার নোট থিকা আমারে তাড়ায়ে দেন আমার কমেন্ট ডিলেট করেন। তাইলে আমি যদি চইলা আসি তাইলে কি সেটারে আত্মহত্যা বলা যায়? ‘ – মাহবুব মোর্শেদ।

‘বিজয়’-এর দরকার আমার নাই, ওইটা আপনিই নিয়েন; ‘শেষ-কথা’ বলতে চাইলে সেইটাও বইলেন… আমি আমার কথাগুলা বলতে পারলেই যথেষ্ঠ… আর আমি ত আপনারে তাড়াই নাই, আপনি নিজে নিজেরে আনট্যাগ করছেন; ওইটারে ‘আত্মহত্যা’ বলা যাবে না কেন?

‘তার নোটে গিয়া আমি কিছু প্রতিক্রিয়া দিছি। তো, ইমরুল তার নোটে বলছেন। আমার সঙ্গে কথা বলার রিস্ক উনি নিতে চান না। আমি যেন তার নোটে না যাই, আমার ওয়ালে গিয়া প্রতিক্রিয়া লিখি। আর উনি আমার কমেন্ট ডিলেট দিবেন।‘ – মাহবুব মোর্শেদ।

এই কথাটাও আপনার একধরণের ‘সিমপ্লিফিকেশন’ (একটু ‘নরোম’ কইরা বললে)… কারণ আমি বলি নাই আমার নোটে আপনি কথা বলতে পারবেন না, বলছি ‘স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া’গুলা না দেখাইতে… যেহেতু ব্যাপারটা ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ তাই হয়তো নিজেরে কন্ট্রোল করতে পারতেছন না… যা-ই হোক, সেইটা আপনার ব্যাপার… যতক্ষণ পর্যন্ত আমারে এফেক্ট না করে, আমার বলার কিছু নাই…

“ইমরুলের এই সুইসাইড থিওরি দেইখা আমি ওনার উপর বিরক্ত হয় ওনারে আনফ্রেন্ড করছি। এখন মনে হইতেছে, আনফ্রেন্ড করাটা ঠিক হয় নাই। এই নোটে ওনারে ট্যাগ করার দরকার আছিল। তাই আবারও ওনারে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাইলাম।” –মাহবুব মোর্শেদ।

হা হা হা… আপনার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আমি একসেপ্ট করছি এবং একটা ব্যক্তিগত বার্তাও পাঠাইছি… আমার বয়স হইতেছে, তাই হয়তো ‘বিরক্তি’বোধও কমতেছে, কিন্তু আপনি এখনো ইয়াং রয়া গেলেন, প্রথম আলো’র ‘বর্ষসেরা তরুণ’-এ নাম না লিখাইয়া হয়তো রিটায়ার করবেন না!

পাদটীকা: ‘সুমন রহমানের ঘনিষ্ট সহযোগী’ হইতে আমার কোন আপত্তি নাই, আমি উনার অনেক চিন্তার গ্রাহক এবং আমাদের ব্যক্তিগত সর্ম্পকও অনেকদিনের, যার ফলে উনার সাথে আমার চিন্তার বিরোধ-এর জায়গাগুলাও আমি অনেক সহজেই রাখতে পারি… এবং সকলেই সম্ভবত জানেন যে, ‘সুমন রহমান’ এবং ‘ইমরুল হাসান’ একই ব্যক্তি নন!

 

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →