Main menu

রাবেয়া বসরী

প্রাচ্যের মশহুর সুফি কবি ফরিদুদ্দীন আত্তার [১১৪৫-১২২০] শুরু জীবনে ছিলেন একজন চিকিৎসক এবং ফার্মাসিস্ট। উনি ওষুধ বানাইতে খুব ভালোবাসতেন। ফলে এই কাজে দ্রুত উন্নতি করেন। একসময় ইরানের নিশাপুরে বিশাল এক ওষুধের কারখানাই গড়ে তুলেন। একদিন ওই কারখানার সামনে এক ফকির আইসা আত্তাররে বললো, অ মিয়া, অনেক তো ব্যবসা করছ, এইবার কিছু দাও। আত্তার তার হিসাবপাতিতে ব্যস্ত ছিলেন। ফকিরের দিকে উনি তাকাইলেন না। এইবার ওই লোক কিছুটা চড়া গলায় দেরহাম চাইলো আর বললো – মিয়া, সামান্য পয়সা দিতে যা অবস্থা, প্রাণ দিতে না জানি কেমন করবা। এই কথাটা আত্তারের কানে গেল। তিনি গলায় একটু ঝাঝ* নিয়া বললেন, তুমি যেমনে প্রাণ দিবা আমিও অমনেই দিবো। ফকির এই কথায় তার কাধের পুটলিটা নামাইলো আর তার উপর মাথা রাইখা চোখ দুইটা বন্ধ করলো এবং টুপ করে মইরা গেল।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]

এই ঘটনায় আত্তার বড় রকমের ঝাকি খাইলেন। কয়েকদিন ভাবার পর উনি সব কিছু রাইখা জ্ঞান হাসিলের জন্য সেই সময়ের রেওয়াজমতো  এলমি-সফরে বের হন। দীর্ঘ যাত্রার পর প্রখ্যাত আলেম সুফি মাজদুদ্দীন বাগদাদীর হাতে বায়াত শেষে নিজের শহরে ফিরেন আর বিখ্যাত হন নিশাপুরের আত্তার নামে।

আত্তার তার সুফি কবিতা দিয়া পুরা ফার্সি কবিতার চেহারা পাল্টায় দেন। ফার্সি কবিতায় সুফি কবিদের মুরুব্বি সামাভীর তরল প্রকাশের পথে না গিয়া আত্তার পাখিগো কনফারেন্স ডাকলেন। পরে রুমি আইসা সেই পাখি সম্মেলনে মোহনীয় এক বাশি বাজাইলেন। লম্বা সময় ফার্সি চলা হিন্দুস্তানের বাংলা কবিতায়ও সেই সুর আইসা পড়লো কিছু; শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গেয়ে ওঠলেন – “থাক থাক নিজ মনে দূরেতে, আমি শুধু বাশরীর সুরেতে, পরশ করিব ওর প্রাণমন অকারণ, মায়াবন বিহারীনি…।” অবশ্য উনার আব্বা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরও এই একই কান্না পার হতে চাইছেন সুফি কবিতার সাকো দিয়া। বন্ধুমহলে উনারে ডাকা হইতো ‘হাফেজে দেওয়ান’ নামে। কারণ দেবেন্দ্রনাথ বিশ্বখ্যাত প্রেমের কবি হাফিজের কবিতা সংকলন ‘দেওয়ান’ ভালবেসে পুরাটা মুখস্থ করে ফেলছিলেন। আর শিরাজের হাফিজ ছিলেন আত্তারের অনুরক্ত, চিন্তায় ও ভাবে।

এইদিকে আত্তার তার আধ্যাত্মিক জীবনে বিশেষভাবে যেই কয়েকজন দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিলেন, তাদের মধ্যে হিজরী দ্বিতীয় শতকের সুফি কবি রাবেয়া বসরী (৯৯-১৮০ হিজরি) অন্যতম। রাবেয়ার প্রতি আত্তারের ভালবাসা ছিল তার কান্নার মতো গাঢ়। আত্তারের কবিতার বই অনেক থাকলেও গদ্যের বই মাত্র একটা। সময়ের বিশিষ্ট আলেম, বুদ্ধিজীবী আর সুফিদের জীবনী নিয়া রচিত ‘তাজকিরাতুল আউলিয়া’ নামের এই কিতাবে রাবেয়া বসরীরে যতটা পারছেন তুলে ধরছেন আত্তার। দুই-একটা জায়গায় জনশ্রুতিরেও বিশেষ মূল্য দিয়া উল্লেখ করছেন। এইটা খুব সহজ একটা ব্যাপার – যেই লোক পাখিদের সম্মেলন ডাকতেছেন, তিনি মৃত হাসান বসরীর সাথে রাবেয়ার সাক্ষাতরেও দারুণ করে দেখবেন। প্রখ্যাত হাদিস শাস্ত্রবিদ ও সুফি কবি হাসান বসরী (রহ.) মারা গেছেন ১১০ হিজরীতে। তাই পরিণত রাবেয়ার সাথে হাসানের দেখা হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা থাকে না।

আমি আত্তারের ‘পান্দেনামা’ নামে একটা কবিতার বই পড়ি কৈশরে, যখন বয়স বারো কি তের। তার কবিতাগুলা ভালো লাগত খুব। ওইগুলা ছিল উর্দু গজলের মতো সুরেলা। আমরা মাদ্রাসার বাচ্চারা বিকালে ধানক্ষেতের বাতায় গিয়া বসতাম, নালায় বইতে থাকা সেচকলের টলমলা পানিতে পা ডুবায় দিতাম আর পান্দেনামার ফার্সি কবিতাগুলা গাইতাম।

তো এত বছর পর সেই আত্তারের সাথে ফের মোলাকাত, তার লেখার সামান্য হিস্যা অনুবাদের মধ্য দিয়া। এর পুরাটাই শ্রদ্ধেয় ইমরুল ভাইয়ের কারণে সম্ভব হইছে। উনি এমনকী তাজকিরাতুল আউলিয়ার দারুণ একটা ফার্সি এডিশনের পিডিএফও খুজে দিছেন। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি বিভাগের অধ্যাপক রেইনল্ড এ. নিকলসনের সম্পাদনায় সংকলনটা লন্ডন থেকে বের হইছে ১৯০৫ সালে। এর শুরুর ভূমিকায় দারুণ সব ওয়াজ করছেন ফার্সি ভাষার পন্ডিত মির্জা মুহাম্মাদ কাজভিনী।

তাজকিরাতুল আউলিয়া বাংলা ভাষায় প্রথম অনুবাদ করেন গিরিশ চন্দ্র সেন, তাপসমালা নামে, ১৮৮০ সনে। বাহ্মধর্মে দীক্ষিত গিরিশ চন্দ্র তার অনুবাদে নানাভাবে আত্তারের লেখারে প্রাণহীন করছেন এবং পৌরণিক কাহিনী বানায় ফেলছেন, উনি এর ভেতর দিয়া বাহ্মধর্মের গোড়াটারে মজবুত করতে চাইছেন। বাদবাকি যেই অনুবাদগুলা বাংলাদেশের বাজারে আছে, সোলেমানিয়া বুক হাউজ আর রাবেয়া বুক হাউজের, একদমই আন্দাজি, নিজেদের মতো বানানো – ‘এক দেশে ছিল এক বাঘ’ টাইপের। এইজন্য যখন ইমরুল ভাই তাজকিরাতুল আউলিয়া থেকে দুই চারজনের জীবনী অনুবাদ করে দেওয়ার প্রস্তাব করলেন, আমি সাথে সাথেই রাজি হইছি। 

রাবেয়া বসরীর কিছু কবিতা* আছে, যেইগুলা উনি আরবি জবানে লিখছিলেন। তার আট দশ লাইন যদি মরহুমার জীবনী শুরুর আগে পড়ে নেওয়া যায়, তো খারাপ হয় না।

 

আত্মার ক্ষতগুলা শেয়ার করতে

জীবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হইলো নিজের ইচ্ছারে ঠিক করা
আমি খুব ঘুরতে ছিলাম, বেচাইন হয়ে আন্ধার মতো বইসা ছিলাম একগাদা অন্ধকার নিয়া
কিন্তু আমি আমার ইচ্ছা জানতে পারলাম যখন তোমার ইচ্ছা জানতে পারলাম
আর তুমি ছাড়া অন্যসব সংযোগ বেখেয়ালি বাতাসের মতো উইড়া গেল

আমি তোমারে ডাকি নিজের আত্মার ক্ষতগুলা শেয়ার করতে

আর তোমারে গোপন কইরা রাখি চোখের পাতায়
এর পুলক তুমি টের পাও, আর আমি তা জানি

আমি তোমারে ভালবাসি তুমি এর যোগ্য আর তুমি আবেগী
আবেগের জন্য আমি নিজেরে ডুবাই রাখি তোমার সময়ে
তোমার উধাও হয়ে থাকা আমাদের দেখা হওয়ার খবর দেয়
এইটা তোমার গুণ, তুমি এইজন্যই এত উপযুক্ত
এখন তোমার জন্য যা ঠিক, আমার জন্য তা নিষিদ্ধ
আর তুমি এইটার যোগ্যও।

আমার খুব আকাঙ্খা জ্বরগুলারে ছোয়ার
যেন জীবনের আগুন তোমার আলোয় মিশে যায়
আর আমি নিজের আবেগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চাই না
তুমি যা চাইছো যেভাবে, সব ঠিক আছে।

 

হাসসান আতিক

 

* চাঁদ ছাড়া আর কোনো শব্দে চন্দ্রবিন্দু না ব্যবহারের রীতি মানা হয়েছে
* রাবেয়া বসরীর এই পঙ্ক্তিগুলা সম্প্রতি মিসরের গবেষক ও ইতিহাসবিদ মুহাম্মদ শাবান আইয়ুবের সম্পাদনায় আল জাজিরায় প্রকাশিত।

 

 ……………………………………

 

সে এক নুক্তাবিহীন আলিফের মতো

রাবেয়া বসরী ছিলেন তার মা-বাপের চতুর্থ মেয়ে। রাবেয়া মানেও চতুর্থ। জন্ম থেকেই তিনি একটা সংখ্যার নাম পাইলেন। যারে তিনি টানতে টানতে একসময় এক-এ নিয়া তুললেন। আর একটা আলিফের মতো নুক্তাবিহীন হয়ে থাকতে থাকলেন এই এতদিন পরও।

রাবেয়ার জন্ম হইছিল গরিব বাপের ঘরে। তিনি যে রাতে জন্মাইলেন, ঘরে বাতি জ্বালানোর মতো তেল ছিল না। তার বাপরে তার মা যাইতে বললেন পড়শির বাড়ি, তেল ধার চাইতে। কিন্তু রাবেয়ার বাপ ওয়াদা করছিলেন জীবনে আর ধার চাইবেন না কারো কাছে, খোদা ছাড়া কারো কাছে হাত পাতবেন না। তবু আসন্ন সন্তানের জন্য বিবির অনুরোধে যাইতে হইলো। তবে তিনি পড়শির দরজায় টোকা দিলেন না, শুধু হাতের তালু দিয়া নিরবে ছুঁইলেন। আর ফিরা আসলেন এবং কানতে কানতে একসময় ঘুমায় গেলেন।

চোখের পানি কোটরে কিছুটা শুকায় আসছে কিংবা তখনও চোখের পাতা ভিজাই ছিল, উনি একটা স্বপ্ন দেখলেন। তার স্বপ্নে স্বয়ং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চইলা আসছেন। আর তারে বলতেছেন, ও মিয়া কানতেছ কেন!  বড় আলোর কাছে সব সময় ছোট আলো নিভা যাইতে চায়। তোমার ঘরে এক বিশেষ মানুষের জন্ম হইতেছে। যার সুপারিশে আমার হাজারো উম্মত কঠিন হাশরের দিনে নাজাত পাবে। ওঠো, আর বসরার গভর্নর ঈসার কাছে যাও। একটা চিঠি তারে দিও।

চিঠিতে লেখবা – ‘তুমি প্রতি রাতে ঘুমের আগে ১শ বার নবীর নামে দরুদ পইড়া থাকো, আর জুমার রাতে পড় ৪শ বার। গত জুমায় তুমি দরুদ পড় নাই। তার বদলায় ৪শ দিনার দান কর।’

রাবেয়ার বুযুর্গ বাপ এইটুকু দেখার পর জাইগা উঠলেন এবং ফের কানতে থাকলেন। তার চোখের পানিতে দাঁড়ি ভিজা যাইতেছিল। সকাল হইলে তিনি চিঠিটা লিখলেন। আর ডাকের মাধ্যমে পাঠায় দিলেন। বসরার গর্ভনর রাসুলের পয়গামে খুশিতে আত্মহারা হয়ে তৎক্ষণাত দরবেশদের মাঝে ২ হাজার দিনার বিলি করলেন। আর লোক মারফত ৪শ দিনার পাঠাইলেন রাবেয়ার বাবার কাছে। এর কিছুক্ষণ পর নিজে হাজির হয়ে বললেন, আপনার যখন যা কিছু লাগে, আমারে জানাবেন। আমি আপনার খেদমতের জন্য হামেশা তৈরি। আপনার জন্য আমার দরবারের কোনো দরজায় খিল নাই বলে জানবেন। এরপর গর্ভনর বিদায় নিলে রাবেয়ার বাবা দরকারি সব সামানপাতি কিনা আনলেন। আর কাঁদতে থাকলেন, যতটা কাঁদা যায় মনের ভিতর।

রাবেয়া মায়ের কাছে বড় হইতে ছিলেন। তাদের পরিবারে অভাব ছিল, কিন্তু খোদার জন্য মন খালি কইরা দেওয়ায় তারা অভাবের কষ্টে ছিলেন না। রাবেয়ার বয়স যখন বারো, এমন সময় তার মা মারা যান। কিছুদিন পর বাপেরও মৃত্যু হয়। এইদিকে বসরায় সেইসময় চরম দুর্ভিক্ষ চলতেছিল। রাবেয়া আর তার বোনেরা কঠিন সেই দিনগুলায় প্রচ- ঝড়ের বাতাসে উইড়া যাওয়া গাছের ডালপালার মতো কই কই হারায় গেলেন। তারা সবাই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন। রাবেয়া একা অসহায় শিশু মানুষটি বাড়িতেই ছিলেন। একবার নিরবে কানতে কানতে বাড়ির পথ ধইরা কোথাও থেকে ফিরতেছিলেন। তখন এক লোক তারে তুলে নিয়ে যায় এবং দাসি বানায় ফেলে। কিছুদিন পর আরেক লোকের কাছে বিক্রি করে দেয়। ওই মনিব তারে বাড়িতে নিয়া আসে এবং ভারি ভারি সব কাজ করাইতে থাকে।

লাঞ্চনা বঞ্চনায় সবুর কইরা রাবেয়া ওই মনিবের কাছে থাকতে থাকেন। একদিন এক অচেনা দরবেশরে দ্রুত পাশ কাটাইতে গিয়া রাবেয়া হোচট খেয়ে মাটিতে পইড়া যান আর চোট লাইগা তার একটা হাত ভাইঙা যায়। রাবেয়া উইঠা বসেন এবং বইসা থাকেন। বেশ কিছুক্ষণ পর সে তার কম বয়সী হাত দুইটা আকাশের দিকে তুলে, আর ডাক দিয়া বলে – হে খোদা, তুমি আমার হাত নিয়া নাও, আমার অনেক দুঃখের ভিড়ে এইটা তেমন কিছু না। শুধু জানাও, তুমি আমার প্রতি রাজি কিনা, তুষ্ট কিনা?

তার সেই কান্না ছিল একটা বৃষ্টির মতো, যার প্রবল ধারায় তার হৃদয় ডুইবা যাইতে ছিল। সেই আকুতির মাঝে এমন এক বোবা কাতরতা ছিল, যা সে ছুঁইতে ছিল, আর ছুড়ে মারতে ছিল। তখন গায়েবি আওয়াজ আসলো, লা তাহযান – ঘাবড়ায়ো না। তোমার হৃদয় এমন এক মাকামে পৌঁছাবে, যারে ঈর্ষা করতে থাকবে আসমানের ফেরেশতারাও। উঠো, কান্না থামাও।

এমন আকস্মিক ঘটনায় রাবেয়ার মনে নতুন শক্তির সঞ্চার হইলো। তিনি মনিবের বাড়িতে ফিরা আসলেন এবং দিনভর রোজা আর রাতভর ইবাদতের মুজাহাদায় মশগুল হয়ে রইলেন। এই সময়ে একরাতে তার মনিবের ঘুম ভাঙলো মিহি চাপাকান্নার শব্দে। সে তার রুম থেকে বের হইলো আর রাবেয়ার কামরায় গিয়া দেখলো এক কোণায় সে সেজদায় পইড়া আছে, আর কানতে কানতে বলতেছে – হায় পরোয়ারদেগার, আমার সকল সময় তোমার জন্যই রাখতে চাই। কিন্তু আমি তা পারি না। তুমি নিজের বন্দেগি করতে বইলা আমারে বানাইছ মানুষের দাসী। আমারে তুমি হাত বাইন্দা দরিয়ায় ফেলছ, যেন ডুইবা যাই তোমার নামে, কিন্তু আমি তো আরেকটু শ্বাস নিয়া রাখতে চাই, যেন তোমার নামের বুদবুদ আঁইকা দিতে পারি দরিয়ার ঢেউয়ে, পাড় থেকে পাড়ে তাদের মিশায় দিতে পারি। কিন্তু তুমি আমারে বানাইছ মানুষের দাসী।

এই কথাগুলা মনিব শুনতে শুনতে খেয়াল করলো – সেজদায় থাকা রাবেয়ার উপর অচেনা এক নূরের ধারা নামতেছে। আর তা সারা ঘর আলো কইরা তুলতেছে। এই দৃশ্য দেখার পর মনিব ডরায় গেল। সে সকাল হইতে না হইতেই রাবেয়ার কাছে আইসা খুব আদব নিয়া বলল – মুহতারামা, আপনি আজ থেকে মুক্ত। আপনি চাইলে চইলা যাইতে পারেন বা আমার বাড়িতেও অবস্থান করতে পারেন। আমি আপনার খেদমতের জন্য প্রস্তুত।

রাবেয়া তখন ওই বাড়ি থেকে বাইর হইলেন এবং দূরে একটা ছোট ঘর বানায়া ইবাদতে হারায় গেলেন। এক সময় উনি লোকালয় ছাইড়া দূর বনে থাকতে থাকলেন। নিজেরে আরও বেশি একা করে মিশতে থাকলেন বাতাসের মতো, যেখানে মিশতে চাইতেন; বইতে থাকলেন জলরাশির মতো, যতদূর বইতে চাইতেন।

তিনি ক্লান্ত হইতেন না। তার আত্মা ঘুমন্ত চোখের পাতারে নিয়ে গেছিল আলোর পরিক্রমায়, এক জেগে থাকা ঘুমে।

 

কাবা তো পাথরের আর আমি মাটির

এইভাবে অনেক বছর পর তিনি হজের নিয়তে মক্কাগামী এক কাফেলায় যোগ দিলেন। সাথে তেমন কিছুই ছিল না। সওয়ারি বলতে একটা ছোটখাটো গাঁধা আর অল্পকিছু শুকনা খাবার। কাফেলা চলতে ছিল দীর্ঘ মরুপ্রান্তরে। মক্কা তখনও বেশ দূরেই, রাবেয়ার দুর্বল গাঁধাটা ধীরে ধীরে চললেও তেমন আগাইতেছিল না। এমনকী একসময় জানোয়ারটা হাঁটু ভাজ কইরা মাটিতে উপুর হয়ে পড়ল আর মইরা গেল। তখন অন্যরা বাহনের ব্যবস্থা করতে চাইলে রাবেয়া তা ইগনোর করলেন। বললেন, তোমরা সামনে আগায়তে থাকো। তকদিরে থাকলে আমি কাফেলায় যুক্ত হবো। তখন লোকেরা তারে রাইখা আগায় গেল। আর রাবেয়া তার সেই পুরানা দুই হাত তুলে খুব নিচু আর স্থীর স্বরে বললেন – ওগো কাবার মালিক, তুমি যদি নিজ ঘর দেখাইতে ডাইকাই থাকো, তবে কেন আমার গাধাটার প্রাণ নিলা, একজন নারী এই মরুপ্রান্তরে কী করবে, সে কি এইখানে বইসা কাবারে ডাইকা আনবে, না তারই উচিত কাবার কাছে যাওয়া। তার পুরানা হাত দুইটা এই বলে বলে কাঁপতে ছিল, খুব সময় পার হয় নাই, গাঁধাটা গা ঝাড়া দিয়া উঠল আর রাবেয়ারে নিয়া মিলিত হইলো কাফেলার সাথে।

এক রেওয়েতকারী বলেন, অনেক বছর পর মক্কায় আমি সেই ছোটখাটো, সেই কপালে সাদা গোল দাগওয়ালা গাঁধাটারেই বিক্রি হইতে দেখি, আমরা এলাকাবাসী সবাই ওইটারে খুব ভালো করেই চিনতাম। রাবেয়ার দুয়ায় সে দীর্ঘ হায়াত পাইছিল হয়তো।

মক্কায় কিছুদিন থাকার পর এক বিজন প্রান্তরে চইলা গেলেন রাবেয়া। আর তিনি তার আগের চেনা আমানতদার হাত দুইটা তুলে আরজি জানাইতে থাকলেন – কাবা তো পাথরের আর আমি মাটির। মাটি-পাথরের এই মধ্যস্থতায় আমি খোদার সাথে মিলিত হইতে চাই না। আমি তারে সরাসরি দেখতে চাই। উনি তার হাত দুইটা তুইলাই রাখলেন এবং কানতে থাকলেন। তখন তিনি সুদূরের উত্তর পাইলেন, তিনি এই উত্তর বাইরের না ভেতরের কানে শুনছেন, তা আমার জানাটা জরুরি না। যখন মানুষ তার মাটিতে নূর নামায় আনতে পারে, তখন তার রুহুই সব। রাবেয়া সেই উত্তর শুনলেন – ‘তুমি কি জানো না, মুসার সেই ইচ্ছা পূরণে তুর পাহাড়ের কী দশা হইছিল, কীভাবে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছিল সব। আমার ভালবাসাই কি তোমার জন্য যথেষ্ট না!’ এই কালামে রাবেয়া শান্ত হইলেন আর হাত নামায় নিলেন। এরপর দ্বিতীয়বার যখন হজে গেলেন, দেখলেন, তিনি পৌঁছার আগেই কাবাঘর তার কাছে চইলা আসছে। তখন তিনি বললেন – আমি ঘর চাই না, ঘরের মালিকরে চাই।

 

ইব্রাহিম নাখেয়ীর সাথে দেখা এবং নতুন কান্নার শুরুটা

ওই যুগের বড় বুজুর্গ ইব্রাহিম নাখেয়ী হজ আদায় করতে মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হইলেন। কিন্তু তার রওনা কোনো সাধারণ রওনা ছিল না। তার না ছিল সওয়ারি না ছিল কাফেলা। তিনি পায়ে হাঁইটা একা একা জার্নি শুরু করলেন এবং প্রতি কদম পর পর দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে থাকলেন। আর খোদার ঘরের দিকে প্রেমে বিভোর হয়ে আগায়তে লাগলেন। এইভাবে মক্কায় পৌঁছতে ১৪ বছর লাইগা গেল। কিন্তু পৌঁছায় দেখলেন, কাবাঘরটা নাই! এমনভাবে নিশ্চিহ্ন হইছে, যেন তা কখনো ছিলই না। ইব্রাহিম মনে করলেন – হয়তো আন্ধাই হয়ে গেছেন এতদিনে, তার চোখের পাতা মনি দুইটারে নিশ্চিত ঢাইকা ফেলছে। এই হতবাক সময়টা ঝুইলা থাকতে থাকতেই তিনি আওয়াজ পাইলেন – ও ইব্রাহিম ঘাবড়ায়ো না, কাবা আছে। সে এক বৃদ্ধার সম্মানে আগায় গেছে তারে অভিনন্দন জানাইতে, তারে নিয়া আসতে। ইব্রাহিম নাখেয়ী পেরেশান হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন – কে উনি? আওয়াজ আসলো, সে হইলো রাবেয়া। এইটুকু আলাপের মধ্যেই ইব্রাহিম দেখলেন কাবাঘর তার জায়গায় চইলা আসছে। আর তার পাশে দাঁড়ায় আছেন এক বৃদ্ধা। ইব্রাহিম তারে বললেন, আপনি তো পৃথিবীর নিয়মরেই উল্টায় দিছেন হে মুহতারামা। তখন রাবেয়া বললেন, আর আপনে তো শোরগোল ফেইলা দিছেন। কাবায় আসতে গিয়া চৌদ্দ বছর পার করছেন। ইব্রাহিম কইলেন, আমি নামাজ পড়তে পড়তে আসছি, তাই এত দেরি। রাবেয়া কইলেন – আপনি দূরত্ব বানাইছেন নামাজ দিয়া আর আমারে এইখানে নিয়া আসছে অক্ষমতা, আত্মার অপারগতা। আমিও যদি নামাজ পইড়া পইড়া আসতে পারতাম!

সেই বছর হজ শেষে রাবেয়ার ভয় হইলো তবু। তিনি বসরায় ফিরে ভাবলেন, যদি আগের অবস্থাতেই থাকি, তার মানে হজ কবুল হয় নাই। কারণ হজ কবুল হইলে খোদা রাজি হয়ে যান। খোদা রাজি হইলে কলবের কোনো হা-হুতাশ থাকে না।

শায়েখ ফরমাদির বর্ণনা করেন, রাবেয়া পরেরবার হজের উদ্দেশ্যে পথ আগায়তে লাগলেন হামাগুড়ি দিয়া। উনি ইব্রাহিমে প্রভাবিত হইছিলেন হয়তো। প্রতি কদমে তার নামাজ পইড়া আগাইতে থাকার ওই ভালবাসা দেইখা খুব কানছিলেন রাবেয়া। নিজেরে এক রকম তুচ্ছ লাগতেছিল, যা আসলে হামেশাই লাগতো।

হামাগুড়ি দিয়া দিয়া দীর্ঘ সাত বছর পর মক্কার আরাফার ময়দানে পৌঁছাইলেন যখন, তিনি খোদার দিদার লাভের প্রস্তাব পাইলেন। তখন রাবেয়া আরজ করলেন, হে খোদা, আমার সেই মাকাম নাই, তাকদ নাই। আমারে আপনি দীনতা দেন, হীনতা দেন। রাবেয়া তখন শুনতে পাইলেন – দীনতা আমার নাখুশির প্রকাশ। তবে আমি তাদেরই এইটা দিয়া থাকি যারা আমার সাথে পুরাপুরি মিলায় যায়। আমি এইগুলা দান করি, আর তখন এইসবে তাদের কিছু যায় আসে না। বরং সুবিধাই হয়। তারা মিলনের স্বাদ হইতে বঞ্চিত হয়ে আরও স্থির হয়। এইভাবে তাদের সাথে আমার একচুল দূরত্বও থাকে না। কিন্তু তুমি হে রাবেয়া, এখনো দুনিয়ার পর্দার আড়ালে পইড়া আছ। দীনতা ধারণের লায়েক তুমি হও নাই। তুমি উপরের দিকে তাকাও।

রাবেয়া এই নির্দেশে উপরে তাকায় দেখেন – আকাশে একটা রক্তের নদী বইতেছে। থোকা থোকা মেঘের বদলে আকাশে রক্তের ঢেউ মউজ মারতেছে। রাবেয়া বোবা চোখ নিয়া বিস্ময়ে তাকায় থাকেন। তখন তারে বলা হয় – এইগুলা হইল আমার ওইসব বান্দার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ, যারা এক দুই স্তর আইসা আর উঠতে পারে নাই। যারা বিচ্ছেদে ফালা ফালা বুক নিয়া তড়পাইতেছে, আর তাগো বুকের রক্ত-দরিয়ায় আসমান ভাইসা যাইতেছে। রাবেয়া তুমি কি বুঝতে পারছ এইবার – মানুষের হৃদয় কী জিনিস?

রাবেয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন আর সঙ্গে সঙ্গে তা লুকাইতেও চাইলেন এবং বললেন – যদি রেজামন্দি না থাকে যে আমি মক্কায় অবস্থান করি, আমারে বসরায় যাওয়ার এজাজত দেন। আফসোসের কালো তিল আমার আত্মারে ঢাইকা ফেলতেছে।

এরপর রাবেয়া বসরায় চইলা আসলেন। আর নিজেরে গুটায় নিলেন একটা ছোট্ট কুঠুরিতে, যেন দুই আসমানের মধ্যবর্তী পর্দাগুলা খুইলা ফেলতে পারেন; যতটা দ্রুত সম্ভব।

 

রুটির হিসাব যেইভাবে মিলে

একবার রাবেয়ার কাছে দুই জন বুজর্গ আসলেন। তারা চাইতেছিলেন যেন আলাপের পর রাবেয়া তার উত্তম রিজিক থেকে তাদের কিছু খাইতে দেন। আর তাদের ক্ষুধাও চেহারা থেকে লুকাইতে পারতেছিলেন না। রাবেয়া এইটা দেইখা থালায় থাকা দুইখান রুটি তাদের আইনা দিলেন। তখনও দুই দরবেশ খাইতে শুরু করেন নাই, হাত ধুইতে পেয়ালা নিছেন মাত্র, একজন ফকির আইসা দরজায় দাঁড়ায়ে খাবার চাইলেন। তখন রাবেয়া রুটি দুইটা নিয়া তারে দিয়া দিলেন। দরবেশরা এই ঘটনায় কিছু বুঝতে চাইতেছিলেন বইলা রা করলেন না। একটু পর একজন দাসী আইসা কিছু রুটি আর ভুনা মাংস দিয়া যাওয়ার অনুমতি চাইলো। রাবেয়া তার আনা রুটিগুলা গুণতে লাগলেন এবং গুণা শেষে দেখা গেল আঠারটা রুটি। রাবেয়া সেইগুলা দাসীর হাতে দিয়া বললেন – এই রুটি আমার না। ভুলে তুমি এই ঘরে নিয়া আসছ। দাসী বলে, না না। আপনার কাছেই পাঠাইছেন আমার মালিকে। আর আমি তো আপনারে চিনি। রাবেয়া কইলেন, তুমি গিয়া বলো, এই রুটি আমার না। আমি নিবো না।

দাসী চইলা গেল। আর ফিরা আসলো ২০টা রুটি নিয়া। রাবেয়া গুইণা দেখলেন আর বললেন – এইবার ঠিক আছে। তিনি রুটিগুলা দুইভাগ কইরা দুই দরবেশরে খাইতে দিলেন। ভুনা মাংস দিয়া ভরপুর খাওয়া শেষে এইবার দুইজন রাবেয়ারে রুটির এই হিসাব নিয়া জিগাইলেন। তখন তিনি বললেন, তোমার দরজায় কেউ অভাব নিয়া আসলে তুমি তার হাতে যা তুইলা দাও, তার দশগুণ খোদাতালা ফেরৎ দেওয়ার অঙ্গিকার করছেন। তখন দুই দরবেশ বুঝলেন- কীভাবে রুটির হিসাব মিলাইতে হয়। তারা একটা বাঁশির মতো বাইজা উঠলেন আর রাস্তায় মিলায় গেলেন।

 

সমঝদার চোর এবং পাখির আনাজ নিয়া আসা

একবার এক চোর আইসা রাবেয়ার হুজরায় ঢুকলো এবং একটা পুরাতন কম্বল তুইলা নিয়া দরজার দিকে আগাইলো। কিন্তু যেইদিক দিয়ে ঢুকছিল সেইদিকে দরজা খুঁজে পাইতেছিল না। তবে কম্বল হাত থেকে রাইখা দিতেছিল যখন, দরজা দেখা যাইতেছিল। ফের কম্বল হাতে নিতেই বন্ধ হয়ে যাইতেছিল। চোর ব্যাপারটা পরিষ্কার হইতে কয়েকবার চেষ্টা করলো – সে ঠিক দেখতেছে, নাকি ধন্ধে পইড়া গেছে। সে দেখলো, না, একটা রিমোটের মতো কম্বলটা দরজা খোলার কাজ করতেছে। বাইরে যাইতে হইলে কম্বল রাইখাই তারে যাইতে হবে। সে তখন করুণমুখে উপরে তাকাইলো। আর শুনতে পাইলো – তুমি ভুল জায়গায় আসছ। যার জিনিস নিতে চাও তারে তো তার আত্মাই ধোকা দিতে পারে না। চোর সমজাদার ছিল। সে সেলাম দিয়া বিদায় নিলো।

একবার রাবেয়া টানা রোজা রাখতেছিলেন। শরীররে আত্মার সাথে মিশায় দেওয়ার চেষ্টার মাঝখানের সময়টাতে উনার খুব ক্ষিধা লাগে। কিন্তু রান্না করতে গিয়া কাজের লোক দেখলেন ঘরে আনাজ নাই। তো প্রতিবেশির কাছ থেকে আনাজ আনতে গেলে রাবেয়া তারে নিষেধ করেন। আর খোদার ব্যবস্থা ছাড়া কারো কাছে হাত না বাড়ানোর কথা মনে করায় দেন। এই সময়ে একটা গানের পাখি কই থেকে আইসা একটা আনাজ ফালায় যায় আর কাজের মহিলা খুশিতে সেইটা নিয়া রান্না ঘরে ঢুকে। কিন্তু রাবেয়া তা রানতে বারণ করেন। তিনি শুকনা রুটিই খান আর আনাজ থেকে দূরে থাকেন এবং বলেনÑ ওইটারে ছেড়ে দাও, ওই পাখির গানেরই মতো, যা হাওয়ায় ভাসে আর মিলায় যায়।

এর কিছুদিন পরেই, রাবেয়া বনের ধারে ইবাদতে রত ছিলেন। আর বনের নিরীহ পশুরা গোল হয়ে তারে দেখতেছিল। এমন সময় হযরত হাসান বসরী তার কাছে আসেন আর পশুরা সব পালায় যায়। তখন রাবেয়া তার তাকানো দেইখা জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি আজ খাবারে কি খাইছেন? হাসান উত্তরে বললেন, রুটি আর মাংস। রাবেয়া বললেন, এইজন্যই বনের পশুরা দূরে সইরা গেছে। তারা জানে – তারা মাংস খায় না, তাদের মাংসই তাদের খায়।

(টু বি কন্টিনিউড…)

The following two tabs change content below.
Avatar photo

হাসসান আতিক

কবি, অনুবাদক। আরবি, ফার্সি, উর্দু এই তিন ভাষা থেকে অনুবাদ করেন। পেশায় সাংবাদিক। জন্ম আর বাড়ি টাংগাইলের বাসাইলে ।
Avatar photo

Latest posts by হাসসান আতিক (see all)

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →