মঈন উদ্দিনের কবিতা
ইগো
পালিত তিতির মোরগ হাতে
পা তছর দিয়া বান্ধা
রানি বিলকিস চাওয়ামাত্র
কয়েকটা আসছে কলতলায়
সেমাইয়ের থালি হাতে
দুয়েকজনকে গ্রেফতার করেন
বইলা চইলা গেলেন উনি।
শাহিদা, মোছাঃ ইরানি
আর জাফির খানম
বাকিগুলার নামও এনলিস্টেড
বালামখাতা অল্প খোলা
শিঙা হাতে ঠোঁট ছেদার কাছাকাছি রাইখা
খেদ নিয়া গোল কইরা ফুঁ দিতে গিয়া
শুকনা কমলার খোসা কুচি
পানের খিলিতে যায়।
তুলা ধুনে রেদোয়ান
ঠোলে ভইরা গিট দেয়
অনতিদূরে লেইকের পাড়ে
টুলের উপরে প্যানাসনিক ক্যাসেটে
হাই বীটে বাজে
জিয়াউল হক।
সেফটিফিন এলো যে সন্ধ্যায়
এক্স-রে ফিল্মে।
ঔষধ কোম্পানির গাড়ি
লাইনচ্যুত হয়া
ক্র্যাক খাইছে।
সার্কেল জুইড়া
সিদ্ধ ছোলার ঘ্রাণে
শাহিদা আক্তার বলে
ফেইসে ব্লাশ নিয়া
সাত নম্বর ল্যাম্পের পোস্ট
ফালায়া বামে মোড় নিয়া
তেরো নম্বর বাসায় গিয়া
দরজা নক কইরা বলেন
আপনার ইজি চেয়ার
ইজ আন্ডার এরেস্ট।
প্রসিডিওর
রেড়ির তেল ব্রাশ কইরা
তাতে প্যারাফিন ওয়াক্স দেন।
আটত্রিশ লিংকের চেইন বান্ধেন
পরে প্যাডেল মারেন আস্তে।
আপনার মাছ মরা
তার উপরে ডুলা ভাঙা
মিহি মতন সিলভার চূর্ণ
হামানদিস্তায় ভাজেন।
বেনেমসলার দোকানে গেছেন
বিলাইর লোম থিকা আপনার
এলার্জি হইছে
শরীরে গা-বান্ধার যত
পুরাতন তাবিজের ঠোল আছে
চেঞ্জ কইরা ফালান।
বইতে পড়ছেন রাজা
আর ভিখারি দুইজনরেই
একদিন মরতে হবে
রেড়ির তেল ব্রাশ কইরা
তাতে প্যারাফিন ওয়াক্স দেন।
আটত্রিশ লিংকের চেইন বান্ধেন
পরে প্যাডেল মারেন আস্তে আস্তে।
পটাশ পারমেঙ্গেনামে স্নান
(আঁইশশূন্য মাছ মাগুর ও শিঙ্গীকে — )
কেইস:
সর্পাঘাতে স্তব্ধ মিল্লাতের ওয়াইফ
ডায়াগনসিস:
বিশাখা গাইডলাইন দেয়
মুনির উট কিংবা ঘোড়ারে
সাসপেক্ট কইরা আগায়।
সর্পদষ্টরে ধুইয়া পুছে ফেলে
বাবলা গাছের কচি ডাল কুটে
একটা কাঁচা মরিচ খায়া
বলে ঝাল নাই।
দষ্টস্থানে রুলিং মিলের
কুল এন্ড ক্লিন রড আইনা
হালকা টাচ কইরা বলে
স্যরি, ধুপধুনার ব্যবস্থা করেন।
পাওয়ার অফ মিল্ফ
জায়ফর্দ:
প্রতিলোম ঘনঘটা
শিতিবর্নের কোলবালিশ
আর এন্টি-অনকোজেন
লিস্টে রাখেন।
ম্যারেজ সিরেমনি:
সাতটা ওয়াল ক্লকে
দাঁড় বায় আর
ঘিয়ে ভাজতে গিয়া প্রতিবার
খুন্তিটা দেয়ালে রাখলে
সাতবার দেয়াল ঘেঁইষা
সেপারেট সাতটা
শিরনির ধারা নামে।
বর্ষাবাস শেষে
খইয়ের মালা গলায় দিয়া
কাঠের টুকরা
নাকি খাঁজকাটা কুমির আপনি?
মাছসুন্দর
ডট পিএনজি ফাইলে
ইত্যাকার তৃষিত বিলাই
নড়েচড়ে আধাঁরো শ্মশানে
চৌকস কাঁকড়া জানে
আর জানে তার কাজিন
বৃক্ষচারি গুল্মের দোহাই
হাই-ভোল্টেজ রোডে ডাইকা
পাঙ্খাপুলাররে পুছারেন
পৌষের মন্দির ধোয়া প্রাতে
সর্পবেণীর জবা লাল থুইয়া
বাচ্চা চিংড়িবৃন্দ কেমনে রাইত গুজারেন!
নিশার তন্দ্রায় অর নভেলে কত দেখছি
পানপাত্রে সব মাছের মাথা বিহার
সে খুব সুন্দর গল্প …
উইদ ফলস আইল্যাশ।
স্বেচ্ছানর্তন শেষে ডাহুক
অতলে ঢুলে-ঢুলে নিশি-পদ্ম খেলেন
দমে দমে ক্যপচার লগনে
আড়াই জিলাপী ভাসতেছেন ।
গনিত-ধুরন্ধর
(চোখের পাতার উপরে ফুলকপির মত এবড়োথেবড়ো আঁচিল থাকাটা মাইনা নিতে হইছে যারে –)
উটের দুধ পুরা গুষ্টি শুদ্ধো খাইয়া
ছাগলের দিকে একটা ফ্যামিলি
আগাইতে গিয়া ভোরের হাওয়ায়
আর্মপিট পেইনে বলে আনারফল টক
ব্রাম্মিনি কাইটের সফেদ চেহারা হাত বুলায়া
র্যাডিয়াস মাপার স্কেল নাড়েন
পিছলা পথে পা টিপা হাঁটা ইয়াজুজ
তার কলিগরে দেইখা কুইক হাঁইটা যায়।
রাজা রোডে নাইমা
ফার্স্টে ডানে পরে বামে
আবার ডানে তাকায়া
জেব্রাক্রসিং পার হয়।
সজারু এন্ড গং আইসা ট্রান্সক্রাইব করে
ডায়ালেক্টের চিপা কিসিমের
গলি দিয়া ঢুইকা
লন্ড্রির সামনের ব্রিজ দিয়া বাইর হন
টরচার বয় আইসা বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘুইরা যায়
দ্য গ্রেট কিং খালি ভেঁপু বাজায়।
সহসা চকিতে চিল্লায়া উঠেন রাজা
একটা উপসাগরের পানি খাইয়া
নাই কইরা ফেললো
আপনারা কই আছিলেন!
চুরি
রিটায়ার্ড ফাদার ইন ল’
তক্তার উপরে লেবেল করা
কিন্তু নার্গিস তো জাইগা
বিলাইর পায়ের পাতায়
আলিশান সোফা থিকা
এক টুকরা ফোম ছোলায়া
ইন্সটল কইরা দিছেন
হাজার বছর ধইরা এখন
সে সাইলেন্স বাজায়া হাঁটে
কিন্তু থ্রি হুইলারের মত দ্রুতগামী
কুক্কুরের মতন শুঁইকা বলে
মামা আপনার লালশাক বাসি
ইন ল’ তক্তার উপরে টায়ার্ড
কিন্তু নার্গিস তো জাইগা
নাইলনের সুতার মত নার্গিসের
কাপড়-চোপড়ে ছড়ায়া আছে
তার জব ডেসক্রিপশনে লেখা
পার্কিংয়ে ঘোটকিনী
লবিতে স্পিডবোট বইসা আছেন
এখন ঠিকঠাক চিলের মত
কানের দুলটা নিয়া নিতে পারলেই হয়।
নালন্দা মহাবিহারে বেয়ারব্যাক
মাটির হাতে-টেপা ঘোড়া নিয়া
বালেগা হইতে না পারা
টিনেজারের হাত থিকা
চা-পাতার মত সেপারেট
ঘোড়ার পিঠে
জিন্সের প্যান্ট বিছায়া
সিডেটিভ দেওয়া
আচকানের পকেটে দেখে
আঠারোটা মিসকল হইয়া রইছে।
হাতে মালিক গাজি
পিঠে ব্যাকপ্যাক আছেন।
এলাকার মুরুব্বি মাথায়
হাত বুলায়া বলেন
বাদাউন থিকা আসছেন ঘোড়া
বেশ তাড়াহুড়ায় খালি পায়ে
বোরখা খুইলা বসেন প্লিজ
ফ্রেশ হইয়া
বেয়ারব্যাক টার্মটা জাইনা নেন।
এরাবিয়ান ম্যাউ
ডাইনিং কাম দেবার্চনার রুমে
ভৈরবনারায়ন সারাউন্ডিংয়ে আছেন
আর র্যাভিস ভাইরাস নিয়া ঘুরা বিলাই
একচুয়ালি তার কাছে তো নয়টা
বোনাস লাইফ আছে এক্সট্রা
চেয়ারের আশেপাশে পূজনীয় হয়া
ভৈরবনারায়নের বউ আইসা দরজা
লক কইরা দিলেন বাইর থিকা
আর দুনিয়াবি অরিফিসগুলার একটায়
তুবড়িবাজির প্যাকেট নিয়া এরাবিয়ান ম্যাউ
দাঁড়ায়া থাকলেন সুপারি গাছের মতন।
ইপিটাইজার
পুষপুষ হইতে নাইমা মিল্টন
রেলের পাতকূয়ার জল খাইতে নিয়া
অশান্তি লাগায় বালি খুঁইড়া
দাঁড়োয়া নদী থিকা জল আনতে গেলে
গোয়ালা পাইয়া বলে
গরুর দুধে অল্প মহিষা দুধ মিশাই
আমরা মানকচুর তরকারি খাই।
ডিজায়ার
[ধীরে ধীরে তার কপাল থেকে হাতখানা সরিয়ে দিল আমার।
বললাম- ‘তোমার কপাল তো খুব গরম।’
কোন উত্তর দিল না।
-‘আচ্ছা বুকটা একটু দেখতে দেবে?’
আবার ঠোঁট কামড়ে কান্না।…
-‘বুক দেখতে চেয়েছিলে না?’
মাথা হেঁট করে- ‘থাক।’
-‘কেন? দেখো, তুমি আমার স্বামী, দেখবেই বা না কেন?’
কয়েক মুহূর্ত কেটে গেল।…
-‘ভাল কথা, দেখা ত হল, এখন সেফটিপিনটা আটকে দি?’
‘দাও।’
-‘না, আমার আর প্রবৃত্তি নেই।’
: জীবনানন্দ সমগ্র, কারুবাসনা, ৫ম খন্ড, পৃ: ৬৯-৭১]
লোকটা ভার্বালি বলতেছে নয়
কিন্তু তার ফেইসে ঘুরতেছে বারো।
মিড-লাইফ ক্রাইসিস
পুকুরের সারফেইসে কড়ই ফুল হইয়া
ভাইসা থাকেন
বাতাসে হয়ত লেয়ারটা পেরিফেরাল হয়
এরকম ক্রনিক নস্টালজিয়ায় থাইকা
পুরা শরীরে র্যাশের মত ছড়ায়া আছেন
হেলাল যদি ক্রিটিক হয়
উনার হেয়ার লসের ক্রনোলজিটা
পঙ্কতিলকের মত জ্বলে
তার স্কিলে ভরা হাত
ফলে মসজিদ কমিটির সদস্য হয়া
সাকসেসফুল হইতে হইতে এখন
ভালই ওয়েটগেইন করছেন।
সেকেন্ড কাজিনের
বাঁশের ঠুকরি উপর করা কবরের
দিকে তাকায়া
ক্যারিয়ার নিয়া ভাবেতেছেন
কিন্তু গলার চামড়ায়
একটা ব্ল্যাক বক্স
আন্ডার-গার্মেন্টসের
ঢিলা রবার দিয়া বান্ধা।
দুধরাজ পাখির মত কালার চেঞ্জ
হওয়ার ডাটা উনার ফ্লপিতেই আছে
কিন্তু নিজের রোল নিয়া সে
ভাবতেই পারেনা শেষে ডেথের চিন্তা
আইসা যায় আবার।
ভায়োলেট কালারের মত কিছুটা
শরম নিয়া ভাবেন দক্ষিনমুখি
হইয়া কিচেনে এতদিন রানছেন বইলা
রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বাইড়া গেল
কাঠমিস্ত্রি হইতে পারেন নাই
বইলা আজকে বাটালি এভয়েড
কইরা চলতে হয় তারে।
বিরহের আগুন
পেইশেন্টের মতন নিউট্রাল
রোলে বইসা নুরুন্নাহার
একটা বজ্রপাত থিকা রিকভারির
কাহিনি শুনাইলেন
সেটের মাঝখানে উনার কাজিন
সেন্স হারাইয়া পইড়া আছেন
ছোট মাছের জাল নিয়া ঘুরা
একটা টিম ঝুলে ঝুলে যাইতেছে
চুলার ছাই ফেলা একটা গর্তে
স্ট্যান্ডিং কমিটি কোমর সমান
গাঁইথা বললেন একটা সানফ্লাওয়ার
ক্ষেত দিয়াই ব্যান্ডেজ মাইরা যান
এরপর গ্রাজুয়ালি গলা পর্যন্ত
মাটি চাপা দিলে
রোগি অল্প চোখ মেইলা
বলে ধর্মসাগরের শীতল জল দেন।
হিস্ট্রি
বাজারে এক আজিব ঘটনা ঘটছে
জন্তুটা সব দুনিয়াবি স্ফুর্তি ডিনাই
কইরা লাকড়ির স্তুপের উপ্রে বইসা
একটা এভোয়েডেন্সের খেলার চাল দিছে।
বাজারের সব দোকান ক্লোজ হয়া গেলে
শ্যাডোর ভিতরে সে একটা মাছিরে
ধরতে চাইতেছে এরকম একিউট ক্ষিপ্রতায়
দৌড়ায়া পাম ওয়েলের ড্রামের কাছে যায়।
সারাদিন একটা টিউবওয়েল থিকা লালা
ঝরার মত ঘটনা চাউড় হইলেও চোয়ালের
আশেপাশে বাজার কমিটি ফেনাই দেখে
পরে ফিউনারেলে শোনা যায় যে
জন্তুর পেট চিড়লে পেটের ভিতর থিকা
ট্রান্সপারেন্ট সোপ তৈরির একটা খসড়া
প্রজেক্টের ফাইল-ডাটাবেজ পাওয়া গেছে।
মঈন উদ্দিন
Latest posts by মঈন উদ্দিন (see all)
- আমার গান কি সাহিত্য? – বব ডিলান - এপ্রিল 25, 2021
- “রসুন চাষের ঘটনাবলী” নভেলের একটা অংশ - মার্চ 18, 2021
- মঈন উদ্দিনের কবিতা - ডিসেম্বর 29, 2020