রক মনু’র কবিতা
।। আকাইমা ২০১৬ ।। গোরস্তান ।। কৈতর ।। দুধভাই’র গোশত ।। পার্লিন অপার ।। এলেম ।। জংঘা ।। নওশাবা ।। ইজ্জত ।। মোম ।। সাত মসজিদ রোডে ।। লালমাটিয়ায় বিশ্টি ।।
…………………………………
আকাইমা
মিরপুরে জাইয়া দেখি
পার্কের কাম
লোকে চালাইয়া নিতেছে গোরস্তানে।
আর আমি কি
একটা মরা বছরের চামড়া খুইলা নিয়া
একজোড়া জুতাও বানাইতে পারবো না!
/২০১৬
গোরস্তান
উত্তরে মাথা দিয়া ঐখানে,
চিৎ হইয়া
শুইয়া আছে আমার বাপ।
তুমি তার চামড়া খাইলা,
গোশত খাইলা,
তার হাড়ের ভিতর ঢুকাইয়া দিলা
তোমার শিকড়!
ও বকুল,
ফুল ফোটাও জখন তখন,
আমার বাপের গোশতের দৌলতে;
তোমার ফুলের ঘেরান তবু কেন
দুনিয়ার আর জতো বকুলের মতো!
কেন তোমার ফুলে পাই না
আমার বাপের একটু ঘেরান!
আমার বাপেরে খাইছো,
তুমি তাই আমার বইন,
তুমি আমার ভাই,
আমিও তোমার বাপের রক্ত খাওয়া
তোমারই এক ভাই;
আমার তো ফুল নাই,
থাকলেও
শেই ফুলও কি
তোমার ফুলের মতোই হইতো–
আর শব মানুশের না ফোটা ফুলের মতোই জার ঘেরান!
বাপেরে খাইছো,
আমার মায়রেও হয়তো খাবা,
একদিন কি আমারেও খাবা!
আমার মায়রে খাবার পরে
তোমার কোন ফুলের ছুরত কি আমার মতো হবে?
আমারে খাবার পরেও
তোমার ফুলেরা কি এমনই থাকবে?
নাকি আমার মাইয়া তোমার কোন ফুলে
পাইয়া জাবে এক রত্তি আমার ঘেরান!
নাকি তোমার কাছে ছবক লওয়া উচিত আমার?
বা তাবত মানুশের?
নিজের না ফোটা ফুলে
বাপের ঘেরান না থাকাই কি ভালো!
আমার ছায়া থিকা জেইদিন আজাদ হইলো আমার মাইয়া,
শেইদিনই কি শবচে খুশির দিন হওয়া উচিত আমার!
মাইয়াপোলার ভিতর নিজেরে না পাওয়ার বেদনা উতরাইয়া,
তোমার মতোই বেপরোয়া হওয়া উচিত নাকি মানুশেরো!
/৫ ডিশেম্বর, ২০২০
কৈতর
তার খবর লইয়া জেই কৈতর আশে
আমি তারে খাই।
সে জদি জাইয়া,
তারে দেয় আমার খবর!
আমি তো দিয়াছি খবর,
জেই খবর দিতে চাই;
আমার কৈতরগুলাও
আর ফেরে নাই।
আমাদের পিরিতি—
এই মাংশের জোগান,
কৈতরে আধা-একিন,
তারপর চাউলের রুটি দিয়া
কৈতরের মাংশ আর ঝোল।
/২০১১
দুধভাই’র গোশত
আমি আর আমার মা
এই গরুর দুধ খাই।
আমাদের দুই জনের দুধ মা উনি।
এই বাছুর আমাদের দুধ ভাই।
আমার দুধ ভাইয়ের গায়ে
গরুর গন্ধ,
তার গায়ে বাড়ছে গরুর গোশত।
এই মেশিনও আমার দুধ মা;
এনার কোন বাছুর নাই,
গরুর গন্ধ নাই এনার গায়,
গরু না হইয়াই দিতেছেন গুড়া গুড়া দুধ।
লোহালক্কর খাই না আমি,
ওনার বাছুর থাকলেও খাইতাম না।
আমি ওনার দুধ খাবো।
আমি গরুর দুধ খাবো না।
যার মাংস খাইতে চাই—
সে আমার দুধ ভাই না হয় যেনো,
অবশ্য দুধ ভাইদের গোশত
খারাপ লাগে নাই কোনদিন;
অতি অবশ্য,
খাইতে খাইতে তারে
ভাই ভাবি নাই কোন দিন।
/১৬ অক্টোবর, ২০১৩
পার্লিন অপার
আমার মাইয়া।
আরো একটা আছে–
ওর নাম… না থাক।
আজকে অপারের দিন;
আজকে অপার আমারে জিগাইছে:
বাবা, হোয়াই জোকস্ আর ফানি!
ধানাইপানাই করলাম আমি।
ভালো জবাব তো নাই আমার কাছে বা
জানি না একদম!
না জানি যদি জোকস্ কেন ফানি,
জবাব যদি না থাকে আমার কাছে,
দুই দিন পরে যদি জিগায়–হোয়াট ইজ এ ফার্স এক্সাক্টলি?
এই যে তুমি, আমার বাপ–আমার গার্জেন,
পালতেছ তোমার ছায়ায়,
আমারে দিতেছ ভরসা হরদম…
মাগার চিনাইতেছ চোরাগলি–
কাদার ভিতরের বাইম মাছের মতো যেন চলতে পারি!
আমারে দিয়া দিলা গুটিবসন্তের টীকা,
দুনিয়া গোল্লায় যাইতেছে,
না যেন যাই আমি!
কেউ কি আসতেছে
মেরামত করবে দুনিয়া…
জানো নাকি কিছু?
জবাব নাই তো আমার কাছে!
জিগায় যদি অপার–
এই দেশটা নাকি আমারো?
চারপাশে কই তার আলামত!
এইগুলার নামই কি ফার্স?
আমি তো বাপ,
বাপের কেরামতি থাকতে হয়,
নাইলে আমারে যে হারাইয়া দেবে
দুনিয়ার ফাদার-ফিগারেরা!
তাই জবাব থাকা চাই আমার কাছে।
আছেও।
জবাব দিবো আমি–
ফার্স মানে তামাশা।
এন্ড
নো মোর কোশ্চেনস্!
/ছেপ্টেম্বর, ২০১৮
এলেম
কত কি পারি নাই,
শেই কবে আমার না পারার শুরু–
শেশ হবে না কোন দিন!
পাশের বালিশে শুইয়া ছিল আমার মাইয়া,
শেই বালিশের চাইতে শক্ত আমার পিঠে
এখন শে!
মনে হইতেছে ঘুমাইয়া পড়ছে–
রেগুলার দম তার,
পিঠে হইতেছে মালুম।
এইটা আমি পারলাম,
এই উপুড় হইয়া শুইয়া থাকা–
পিঠের উপর ১৫ কেজির একটা পোটলা,
দমে দমে জানান দিতেছে–
শে এক পোটলার বেশি কিছু…
জে আমার পিঠ চায়,
চায় ঘুম,
শেই পিঠ আমি দিতে পারলাম–
বা তার ঘুম!
আমার না পারার লম্বা লিস্টি
পছন্দ করে না শে–
আমারে তাই দিলো একটা পারা!
কত কি পারি না…
জেমন গান,
পারি না গাইতে, হয় না–
কখনো গাইতে চাইলে মন,
আগে তালা দিয়া লই নিজেরই কানে!
শেই গান ভালবাশে আমার মাইয়া!
তার নাকি আরাম হয়,
আছমান থিকা কত কত ঘুম
নাকি পাকড়াও কইরা আনে আমার শেই গান!
চোখ বোজে আমার মাইয়া,
আমার গানের বেতালে বেতালে ঘুমাইয়া পড়ে শে!
আজব!
আমার মাইয়া এতো ছোট্ট!
তবু কেমনে জেন জানে–
খুব হিশাব কইরা চায়,
তার পেরায় শব চাওয়া আমি পুরাইতে পারি–
শবুজ বেলুন একটা,
আরেকটা লাল,
কয়েকটা রঙিন কাগজ,
বা একটা পেস্ট্রি
বা দুইটা চকলেট বিস্কুট…
কেমনে জেন
শে আমার পারার শিমার মাঝেই চাইতে থাকে!
কত কি পারি নাই!
তবু
আমার মাইয়া আমারে হরদম বুঝায়–
কত কি জে পারি!
আমি জেন শেই কবে শুরু করছিলাম পারা–
জনমের কয়েক বছর আগে,
জেন মরনের পরেও পারতেছি,
আর পারতেছি!
আমার পারা জেন
আমার জিন্দেগির চাইতে বড়ো!
আহা, বাছুর!
আমার চোখের শামনে
বানাইয়া রাখো এক মিছা আমি,
জেন শেই মিছা আমিটাই আমি,
জেন আমার না পারার বেদনা পার হইয়া
আমার পারার শুখ
আছমান ছাপাইয়া ওঠা তুফান–
হলদিয়া লাল
মেজেন্টা আর শবুজ!
/১১এপ্রিল ২০১৮
জংঘা
১.
হায় দেশ,
তুমি ভাইংগা গেলা!
নাইলে তো পাছপোর্ট লাগতো না,
শোনাবন্ধুর হাত ধইরা
হাটতে হাটতে কান্চনজংঘা চইলা জাইতাম!
শিত একটু বেশি অবশ্য,
আমার শোনাবন্ধু তো একটা খেতা মাত্র–
হয়তো অতো পাতলা খেতাও না,
তবু কান্চনজংঘার শিত হয়তো মানতো না
শোনাবন্ধুর ওমে!
তবু এক লগে কাপতাম আমরা,
এই নিদারুন লোকালয়ে
এক লগে কি কাপা জায়!
হায় দেশ!
তুমি ভাইংগা গেলা, কেন গেলা!
অবশ্য কান্চনজংঘা তো ইনডিয়ার মতোই!
ইনডিয়া জেমন ইম্পোস্টার এক দেশ,
ছুপারপাওয়ারের পেখম পইরা থাকে,
জং ধরা ট্যাংক লইয়া,
আর ঐ জংঘা আরেক ইম্পোস্টার,
বহু দিন তাবত দুনিয়ার
শবচে উচা পাহাড়ের ভাব ধইরা আছিল নাকি!
বরফে শাদা, খাড়া নাকের শাচ্চা এরিয়ান জেন!
তবু শে তো কান্চনজংঘা,
আমার পিরিতি উত্তরে ধায়,
অতি উচা ঐ জংঘায় গোত্তা খাইতে চায়,
পুরান ঢাকার ছাকরাইনের ঘুড্ডির মতো!
তখনি মনে পড়ে পাছপোর্ট…,
হায় দেশ!
তিস্তার শব পানি লইয়া জাও,
মাগার একটা পাছপোর্ট দাও মোরে,
কান্চনজংঘার এতো দুরে থাকবো না আমি!
আমি গোত্তা খাবো শাদা শাদা বরফে,
আমি শোনাবন্ধুর লগে কাপাকাপি করবো
কান্চনজংঘার শিতে,
অথবা এমন ঘশাঘশি করবো আমরা–
কান্চনজংঘার তাবত বরফ গলাইয়া ফেলবো,
আমাদের ঘশাঘশির গরমে!
ভাশাইয়া দিবো নিচের দুনিয়া…
/২ নভেম্বর ২০২০
২.
আদাবরে পাতা মিয়ার শরাইখানা।
মানে রিশকার গেরেজ,
খাওয়া আর ঘুমানো গেরেজেই–
৩০০ টাকা রোজ, রিশকার ভাড়া, লগে খাওয়াও, লগে ঘুমাবার চিৎ-কাইত বোডিংও।
উত্তরদিকে পাতা মিয়ার বাড়ি,
বাড়িতে বাপ আর ভাই,
বউ নাই পাতা মিয়ার একজনও,
এই দারুন ২২ বছরেও!
বাপ আর ভাইয়ের লগে ঝগড়া হইছে
লালমনির হাটের পাতা মিয়ার;
তাই গাছে উইঠা পাতা মিয়া
চাইয়া রইলো আরো উত্তরের কান্চনের জংঘার দিকে,
চাইয়া থাকতে থাকতে খিদা লাইগা গেল!
কিন্তু পাতা মিয়ার তো ঝগড়া–
বাপ আর বড় ভাইয়ের লগে!
পাতা মিয়া তাই ঢাকায়,
আদাবরের গেরেজে ঘুমায়,
খোয়াবে আশে কান্চনের জংঘা,
ঘুম ভাংগে,
রিশকা লইয়া বাইরায়,
কামাই করে দুই পয়শা।
শেই গাছটা তো থাকবেই মনে হয়,
থাকবে কান্চনের জংঘাও,
ওহ, কেমন নিঠুরিয়া বেরহম কুয়াশা লালমনির হাটের,
শিত তো আইশাই পড়লো…
এ বছর কোন জংঘা,
কান্চনের বা অকান্চনের,
জে কোন এক কিছিমের জংঘা,
এ বছর আদৌ
আর দেখা হবে
আবিয়াতো পাতা মিয়ার!
নাকি একটু বেশি দামের
দুইটা জাইংগা কিনবে পাতা মিয়া,
দড়িতে শুকাইতে দিয়া চাইয়া থাকবে পাতা মিয়া,
মাঝে মাঝে পরবেও তো!
নিজের দুইটা জাইংগার দিকে চাইয়া চাইয়া,
জেন বা আর কারো জাইংগা,
ভাবতে ভাবতে চালাইয়া নিতে হবে নাকি
পাতা মিয়ার এই বছর!
/৭ নভেম্বর ২০২০
নওশাবা
এই কোরবানির ঈদেও আমরা হাসির নাটক দেখবো।
নটনটিরা হাসবে,
হাসবেন আপনারা। আমিও। আমরাও।
দুই-চারটা দুঃখের সিন কি থাকবে?
নাটকের নট আর নটিরা
তাদের চোখে মুখে ফুটাইয়া তুলতেছে দুঃখ আর জখম;
ক্যামেরার সামনে যাবার আগে
তারা দুইবার দেইখা লয় নওশাবার ছবি,
যেন আরেকটু ভালো হয় দুঃখের অভিনয়!
যেন মানুষের মনে গাঁথে তাদের দুঃখী মুখ,
যেন বিশ্বাস করে তারা–
এইসব দুঃখ তাজা আর খাঁটি,
এমনকি দুঃখের ইতিহাস মুইছা ফেলছে যেন কে!
নওশাবার নজরে নাই কোন স্মৃতি–
কেবল তাজা জখম,
জখমের ইতিহাসও গায়েব,
যেন কালা মার্বেল চোখ…
ফাটা, মাঝ বরাবর, কিছুই দেখতেছে না
নওশাবার চোখেরা।
দুইটা ফাটা মার্বেল পাথরে
দগদগে জখম কেবল,
আর কোন ভাব নাই,
সেই কবে মরছে এই সব কালা মার্বেল!
নওশাবার সুরত নকল কইরা
নট আর নটিরা দুঃখের প্রাকটিস করে আয়নায়।
অথচ ঈদে তো হাসির নাটক করার কথা–
দেইখা হাসবো আমরা,
নট এবং নটিরা হাসবে নাটকে।
হাসির ছবক কই পাবে তারা?
অথচ হাসতে তো জানতোই তারা,
কেন আর মনে নাই তাদের হাসার তরিকা!
নওশাবার মুখের ঠিক উল্টা
কোন হাসা মুখের ছবি পাওয়া যায় নাকি দেশে আজকাল?
ততটা ফূর্তি কি আছে আর দেশে…,
ফূর্তিতে যারা আছে
কেমন তাদের হাসিগুলা, বা ফূর্তি তাদের!
কেউ কেউ ডরাইলে হাসে,
কেউ কেউ ডর দেখাইয়া ফূর্তিতে হাসে।
এই সব হাসির ছবক
কি ঈদের হাসির নাটকে চলতে পারে?
অন্যের মুখে যন্তনার ছাপ দিয়া
যে হাসলো,
তার কাছেই কি হাসতে শিখবে
এই ঈদের নাটকের নট ও নটি?
এবারের ঈদের নাটক দেইখা
আমাদের হাসিগুলাও কি তেমন হইয়া উঠবে?
নওশাবার মুখ ঢাইকা দেওয়া হাসি
হাসবো নাকি আমরা এই ঈদে!
এই সব হাসিতে
জমবে বুঝি এবারের ঈদের নাটক…
/২১ আগস্ট ২০১৮
ইজ্জত
বাঘের কথা মনে পড়লো।
শেই বাঘটা, কয়দিন পরেই জে না খাইয়া মরবে!
শেই বাঘটার দাতের ভিতর আটকাইয়া থাকতো হরিনের গোশত, খিলাল থাকে না বাঘেদের,
বাঘেদের বেরাশ-টুথপেস্ট বানাবার কোম্পানি নাই।
দাতের ফাকে আটকাইয়া থাকা হরিনের গোশত খাইতে খাইতে বাঘের দাতগুলাও খাইয়া ফেলছে ব্যাকটেরিয়া!
এখন শে আর শিকার করতে পারে না, ধরতে পারে না হরিন, পারলেও গোশত ছিড়তে পারে না কামড়াইয়া!
বাঘটার পোলামাইয়াগুলা মানুশের পোলামাইয়ার চাইতেও খারাপ! মনেই পড়ে না মা বা বাপের কথা, এক টুকরা গোশত ছিড়াও দেয় না!
আমি কি হরিনের কাছে মাফ চাইয়া বাঘের মাড়িতে লাগাইয়া দিবো কয়টা দাত?
নাকি মইরা জাইতে দিবো বাঘটারে, খুশি হইয়া উঠবো নাকি মরা হরিনগুলার লগে!
নাকি ফার্মের মুরগির মাংশ দিবো হর রোজ!
রোজিনা হরিন খাওয়া বাঘ ফার্মের মুরগি কি খাবে!
নাকি বাঘের ইজ্জত লইয়া মইরা জাবে শে,
না খাইয়াই…!
/২৬ অক্টোবর ২০২০
মোম
ছোট্ট একটা মোম জ্বলতেছে।
হুশিয়ার–
দেইখা ফেলবে,
দেইখা ফেলবে শবাই!
তার গায়ে আলো ঢালো।
/২০১১
সাত মসজিদ রোডে
সাত মসজিদ রোডে
খিচুড়ির ঘেরান বানাইছে
আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন।
লগে খিচুড়িও!
রাস্তার উল্টাদিকেই থাকে ছায়ানট,
থাকে শান্তি।
আর এই পাশে আমি আর
কতগুলা মানুষ,
মুখ বন্ধ কইরা খাওয়ার ছবক পায় নাই,
বা সেই ছবক বেহুদা লাগে,
তাই ফালাইয়া দিছে তারা!
তারা ফচ ফচ কইরা খাইতেছে।
মুখ বন্ধ কইরা খাওয়ার ছবক
ফালাইয়া
আমিও যদি খাইতে বইসা যাই
মেলামাইনের প্লেটে…
আমারে কি চিনতে পারবে পরিচিত কেউ?
আমার মুখে ফচ ফচ আওয়াজের পর্দার নিচে
আমিই যে আছি–
বুঝবে কেউ!
এই রাস্তায় চেনা লোক হাঁটে আমার–
ওপারে
ধানমন্ডির দৃক-পাঠশালার কেউ কেউ
আমারে চেনে,
আর ক্যামেরাও আছে তাদের–
ইন্সটাগ্রামে আমার এমন ছবিরে ডরাই,
ছবি তো করে না ফচ ফচ!
কিন্তু রাইতেও তো থাকে আমিন মোহাম্মদ!
তারা বানায় এই ঘেরান
আর খিচুড়ি!
রাইতে যাই তাইলে!
কিন্তু বাপে তো আমার মইরা ভুত!
মানে ভুত যদি হয়,
তার তো নাই আর শরীলের বোঝা!
ভুতের নজর তো মানে না আন্ধার!
সে যদি আসে ঘুরতে আসে,
দেখতে যদি আসে আমারে,
সে যদি দ্যাখে–
খিচুড়ি খাইতেছি আমি,
মুখে ফচ ফচ ফচ…
বইসা খাইতেছি রাস্তায়,
আশে পাশে খয়রাতি
আর রিক্সাঅলা
বেশ্যার পোলা-মাইয়া
আসলে যারা ভাইবইন–
চেনে না,
নিজের মিন্সট্রুশন সাইকেল
মনে মনে হিসাব কইরা
চোখ টিপলো মাইয়া!
পোলার গলায় আটকাইয়া গেল খিচুড়ি…
দুঃখ পাইতে লাগে না তো গোশত,
ভুতেরাও পাইতে পারে আলবত!
আমার বাপের মনে জখম,
মেলা দুঃখ হবে তার,
ছায়ানটের শান্তি সে পাবে না!
তার পোলা খিচুড়ি খায় রাস্তায়,
আমিন মোহাম্মদে…
কেউ যদি নাও দ্যাখে,
ফচ ফচ আওয়াজের নিচে লুকাইতেও যদি পারি,
মাথায় যদি পইড়া লই মেলানিয়া ট্রাম্পের হ্যাট,
কেউ যদি নাও চেনে আমারে,
না খাই খিচুড়ি তবু !
আমার শরম তবু পারি সামলাইতে,
না পারি সইতে বাপের দুঃখ।
/মে, ২০১৮
লালমাটিয়ায় বিশ্টি
বড়ো মুছিবতে খুজি খোদার কৃপা
কে দেবে শন্ধান!
শারা অংগে তুমি লেপা
আমার গতরে ফুইটাছে ফুল
হাছনাহেনা, শেফালি-বকুল
দুনিয়ার ভোমরা
আমায় করে হয়রান।
মন তবু জাইতে নারাজ নদির ঘাটে
গাংগে বুঝি তুমি কাটে
আর কি পাবো খুশবু তোমার!
এতো শুখ কি হায়
ভাংগা কপালে জোটে!
না পারিলাম রুখতে ঘড়ি
আশাড় আশে তার নিয়মে
এতো পানি, এতো পানি
আছমানি বয়ামে–
বিশ্টি নামে, বিশ্টি নামে, বিশ্টি নামে!
আমার শারা অংগে তোমার ঘেরান,
ধুইয়া দিলো বিশ্টি শয়তান!
বড়ো মুছিবতে খুজি খোদার কৃপা
কে দেবে শন্ধান!
/১২ জুলাই ২০২০
রক মনু
Latest posts by রক মনু (see all)
- এডিটোরিয়াল: ‘উইন্টার ইজ কামিং’ - মার্চ 10, 2024
- ফিকশন: দোস্তি - এপ্রিল 4, 2023
- রাজনিতির দাগ খতিয়ান: বাকশাল-দুছরা বিপ্লব এবং তার পর - ডিসেম্বর 5, 2022