Main menu

টিওবি (Travelers of Bangladesh – ToB) নিয়া চাইর কথা

টিওবি নিয়া কথা কওয়ার আগে, গেম থিউরি নিয়া হালকা বাতচিত করা যাইতে পারে মনে হয়। গেম থিউরির মূল সিগনিফিকেন্সটা ডিসিশন মেকিংয়ের ক্ষেত্রে। একটা গিভেন কন্ডিশনে সবগুলা শর্ত বিবেচনায় আইনা বেস্ট ডিসিশনটা নেয়ায় গেম থিউরি কাজে লাগবে। অন্য সকল থিউরি যেইখানে একটা আইডিয়াল সিনারিওর ভিতরে ডেমনস্ট্রেট করতে হয়, সেইখানে গেম থিউরি বিবেচনায় নিতে হয় ভেরিয়েবলগুলিরে। নট দ্যাট আর সকল থিউরি কামের না, একটা বেটার থিউরি ভাবনার একটা নতুন পার্সপেক্টিভ অফার করতে পারে, সেইটা সব সময়ই আমাদের একটা বেটার জায়গায় নিয়া যাইতে কাম করতে পারে। গেম থিউরির ব্যাপারটা হইল, এইটা এমনকি অন্য সকল থিউরি গুলির ইমপ্লিমেন্টেশন থিউরি হিসাবেও কামে লাগানো যাইতে পারে। এই থিউরির গাণিতিক হিসাব নিকাশের একটা স্পেস আছে। সেইটা আমার আয়ত্বের বাইরেই। আমি বরং থিউরিটা বুঝার ইন্ট্যুটিভ এপ্রোচ নিয়া কথা কইতে পারি; অবশ্যই আমার ধৈর্যশক্তির সমানুপাতে 😛। ভুলত্রুটি সহই।

বিষয়টা হইল, মানুষ রাইট ডিসিশান সব সময় নিতে পারেনা। এইটা সকল সময় এই কারণেই না যে সে জানে না যে রাইট ডিসিশানটা কোনটা, বরং অনেক সময় এই কারণেও যে তার আশপাশের মানুষ কেমনে ভাবতেছে, কোন ডিসিশান নিতে পারে সেইটা তার বিবেচনায় নিতে হয়। এইটা পুজি ব্যবস্থায় সবচে বেশি খেয়াল করা যায় শেয়ার মার্কেটে। শেয়ার মার্কেটে আইডিয়ালি পয়সা খাটানোর কথা সেইসব কোম্পানিতেই যাদের রিয়েলি প্রফিট করার পটেনশিয়াল আছে, যাদের প্রোডাক্ট ভালো, কোম্পানির কাজকাম ফ্রেশ, ক্লিয়ার দুই নাম্বারি নাই। কিন্তু অফেনটাইম সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পয়সা খাটাইতে এইসব প্যারামিটার ঘাটায় না, বরং দেখে কোন শেয়ারটার মার্কেটে বিক্রিবাট্টা অলরেডি বেশি। মানে মার্কেটে অন্য প্লেয়াররা কেমনে ভাবতেছে সেইটাই সে বিবেচনায় নিয়া থাকে। এই যে ডিসিশন নেয়ার ক্ষেত্রে আদার স্টেকহোল্ডারেরা কেমনে ভাবতে পারে সেইটা কারেক্টলি বিবেচনায় নিতে পারলেই বেস্ট ডিসিশানটা নেয়ার উপায় তৈরি হইতে পারে। গেম থিউরি সেই অপটিমাম জায়গাটাই ফর্মুলেট করে, যার ফলে আকাইম্মা কারেক্ট ডিসিশন নেয়ার চে ইম্পর্টেন্ট হয় কামের একটা ডিসিশান নিতে পারা যেইটা আল্টিমেটলি যেই জায়গাটায় আমরা যাইতে চাই সেই জায়গার দিকে আমাদের আগায় নিয়া যাবে। গেম থিউরি ভেরিয়েবল বেজড থিওরি। এইটা রিকগনাইজ করে দুনিয়ায় কোন আইডিয়াল কন্ডিশন নাই যেইটা ট্রুলি কোন ইউনিভার্সাল স্থিতাবস্থারে আপহোল্ড করতে পারে। এইটারে অনেকেই ভুলভাবে বোঝে যে তাইলে মনে হয় দুনিয়ার সকল খারাপরে এইভাবে নর্মালাইজ করা হইল। না। ঘটনা হইতেছে খারাপ আর ভালোও ডিসকভারেবল কোয়ালিটি; নতুন নতুন ভেনচারে খারাপের উৎখাতে ও ভালোর প্রতিষ্ঠায় নতুন নতুন এপ্রোচের শরণাপন্ন হইতে হবে তাই, সিম্পলি এই জায়গাটাই ইন্ডিকেট করতেছে এইটা। গেম থিউরি তাই রোড সিষ্টেম হইতে কম্যুনিকেশন হইতে এডুকেশন সিষ্টেম হইতে সাইকোলজি হইতে ইকোনমিকস হইতে পলিটিক্স হইতে সোসাইটি হইতে খাওয়াদাওয়া হইতে বিনোদন-ঘোরাঘুরি পর্যন্ত যে কোন কিছু আরেকটু বেটার বুঝতে ও বেটার করতে কামে লাগানো যাইতে পারে। তাই ওয়েলইন্টেনশানড লোকজনের এইটা ইউজ করতে পারার কেপাসিটি থাকতে পারা উচিত।

তো টিওবি নামের একটা গ্রুপ আছে। এই গ্রুপের পোস্টগুলি দেইখা গেম থিউরির কিছু কথা কওয়ার দরকার মনে হইল। ওইখানে দেশের বিভিন্ন স্পট নিয়া নানান পোস্ট দেয়। অনেক পোস্টেই অনেকে দেশের মাইনষেরে গাইলায়, কারণ দেশের মানুষ সব জায়গায় চিপসের পেকেট ফালায় আসে; কয়দিন আগেও যেইসব জায়গা ফকফকা ছিল, তা দেশী জানোয়ারগুলির কারণে হইয়া যাইতেছে ভাগাড়। তো এরা আমার মনে হইছে ভেরিয়েবলগুলি হিসাবে নিতে পারে নাই। একটা নাম্বার কী রিপ্রেজেন্ট করে এই আইডিয়াও এদের কাছে নাই। এই আইডিয়া থাকলে এরা বরং টিওবি গ্রুপটারেই নতুন নতুন ট্যুরিস্ট স্পট ভাইরাল করতে ক্ষান্ত দিতে কইত, ঘোরাঘুরির এক্সপেরিয়েন্স নিয়া যে সব পোস্ট সেগুলিরে মোডিফাই করতে কইত, অথরিটিরে আরেকটু একাউন্টেবল করতে চাইত। এদের বুঝা দরকার, কোন একটা স্পটে যদি প্রতিদিন তিরিশ জন কইরা লোকও যায়, সবচেয়ে আইডিয়াল কন্ডিশনেও দুই তিনজন লোক পাওয়া যাবে যারা স্পটে পলি ব্যাগ, বোতল প্যাকেট এগুলি ফালায় আসবে। এইভাবে বেশি না মাত্র চাইর মাসের এগ্রিগেশনেই কোন ট্যুরিস্ট স্পট নোংরা হইয়া যাইবে। সুতরাং যে কোন জায়গায়ই ক্লিনিং স্টাফ লাগবে, ডাস্টবিন লাগবে। শুধু এই দেশ না পৃথিবীর যে কোন দেশেই এইটা ঘটবে। অন্যান্য দেশে পরিষ্কার রাখতে পারে অথরিটি, কারণ অরা ভেরিয়েবলগুলি যতটা সম্ভব হিসাবে আনে, সিম্পলি পাবলিক গাইলায়ে বইসা নাই। তারপরও অনেক দেশেই এখন ম্যাস ট্যুরিজমরে ডিসকারেজ করতেছে। আর টিওবিতে ইন দা মিনটাইম কি হয় দেখেন। ঘোরাঘুরির নতুন নতুন স্পট এরা বাইর কইরা দিতেছে, সেইখানে যাওয়ার পথ বইলা দিতেছে এবং এই সবই ম্যাটার করে, কারণ গ্রুপটা হিউজ! মুহুর্তেই ভাইরাল হইয়া যায় খবর। তো নতুন নতুন স্পটগুলিতে তো এমনিতেই লিটার হ্যান্ডেল করার মেকানিজম নাই, ফলে প্রথম দুই তিন মাসের ধাক্কাতেই যা সর্বনাশ হওয়ার হইয়া যায়। তখন শুরু করে এরা গালি। অথচ এত বড় গ্রুপ আরও রেসপন্সিবলি জিনিসটা হ্যান্ডেল করতে পারত। এরা মনে করে প্রত্যেকটা পোস্টের নিচেই কোন জায়গায় ময়লা ফেলবেন না বললেই হইয়া গেল। আর তারপরও ময়লা হইলে পাবলিক গাইলায়ে দিলেই হইল!

প্রথমটা আকাইম্মা, কারণ ফেসবুকে একটা উপদেশ দেখা, আর স্পটে সেই উপদেশ পালন করা, দুইটা দুই। সকল মানুষ অন স্পটে সব সময় এলার্ট থাকতে পারবে না। ‘সবাই’ ও ‘সব সময়’ এই দুইটা জিনিসের কমন সেট নাই, এইটা নজরে আনতে পারলে, ফেসবুকের উপদেশের প্রিটেনশাস জায়গাটা বোঝা যাবে। ঘুরতে যাওয়া আর ঘোরাঘুরির পোষ্ট পড়া দুইটা দুই জিনিস; প্রথমটায় ফিজিকাল প্রেজেন্স থাকে, সেইখানে সামান্য অন্যমনস্কতারও ইমপ্লিকেশন থাকে। আর ঘুরতে গেলে অন্যমনস্ক তো হইতেই পারে লোকে! সবার হওয়ার দরকার নাই, অল্প কিছু লোক হইলেই হবে। আর দ্বিতীয়টা, পাবলিক গাইলানো, এইটা তো বিধ্বংসী! অথরিটির গাফিলতিরে ইনডেমনিটি দিয়া দেওয়া ও টিওবির পোস্ট গুলির যে খামতি আছে সেইটারেও এড়ায়ে যাওয়া। এইটার প্রভাব চক্রক্রমিক। এর ফলে ধরেন সাজেক যে ভাগাড় হইয়া গেছে তাতেও পাবলিক গাইলাতে পারবেন, তাতে রিসোর্ট মালিকদের যে গাফিলতি আছে বা বাংলাদেশের সরকারের যে নিবর্তনমূলক নীতি আছে পাহাড়ে তারেও এড়ায়ে যাওয়া যায় চাইলে। কারণ ময়লা তো পাবলিকই করে। সিম্পল এক্সপ্লানেশনগুলি যে ডেডলি তা এইসবেও বুঝা যায় কিছুটা।

টিওবি তাইলে কী করতে পারত। অনেক অনেক মানুষ অনেক অনেক ভেরিয়েবল ও ইন্সট্যাবিলিটি ধারণ করবে, এই বিষয়টা বুঝতে পারলেই, এরা সল্যুশনের অংশ হইতে পারত। প্রপার ম্যানেজমেন্ট নাই যেইখানে সেইসব জায়গা এক্সপ্লিসিটলি রিকমেন্ড করা বাতিল করতে পারে এরা, মাস ট্যুরিজমের এগেইনস্টে নীতিগত অবস্থান নিতে পারে এরা, অন দা স্পট এওয়ারনেস নিয়া কাজ করতে পারত এরা, ঘুরতে গেলে কোন রকম লিটার ফুটপ্রিন্ট না রাইখা আসার ওয়ে নিয়া বিস্তারিত ফিচার শেয়ার করতে পারত, অথরিটির ইন্যাকশনের বিপক্ষে কথা বলতে পারত এরা- মানুষ গিয়া ময়লা কইরা আসবে কোন জায়গা এইটা যদি পাবলিকের দোষ হয়ও, সেই জায়গাটা দিনের পর দিন ময়লাই থাকতে থাকা, বাড়তে থাকা সেইটা অথরিটির গাফিলতি ছাড়া অন্য কিছু না। কিন্তু টিওবির একটা পোস্ট দেখাইতে পারবেননা যেইখানে এরা ব্যবস্থাপনার প্রবলেম নিয়া দুইটা কথা কইতে পারছে। আমার কথা হইল যদি এই জিনিসগুলারে ডেলিবারেটলি এড়ায়ে গিয়া এরা ভাবতে পারে যে দোষ পাবলিকের তাইলে টিওবির ইন্টেনশান নিয়া আমাদের সওয়াল করতে হবে যে এইটা পাবলিকরে ডেমোনাইজ করার যে বাকশালি প্রোপাগান্ডা তারই আরেকটা অংশ কিনা!

 

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →