Main menu

চাকুরী’র পরীক্ষা (বঙ্গদর্শন পত্রিকার আর্টিকেল, ১২৮৫ বাংলা)

বঙ্গদর্শন পত্রিকার সাত নাম্বার বছরে, ৮১ নাম্বার সংখ্যায়, বাংলা ১২৮৫ সালের পৌষ মাসে এই লেখাটা ছাপা হইছিল।  মানে, ১৪৩/১৪৪ বছর আগের লেখা এইটা।

এইখানে দুইটা জিনিসরে হাইলাইট করতে চাইতেছি আমরা। এক হইলো, অইকালেও “বিসিএস পরীক্ষা” ইর্ম্পটেন্ট একটা ঘটনা ছিল। পরীক্ষা কেমনে নেয়া হইতো, কেমনে নেয়া উচিত – এই নিয়া আলাপ। ফার্স্ট কথা হইতেছে, চাকরির জন্য পরীক্ষা নেয়া ভালো; জাত দেইখা, বংশ দেইখা, বাপ-মা দেইখা চাকরি দেয়ার চাইতে। কারণ চাকরি করতে গেলে কিছু জিনিস জানা লাগে যেইটা শিখতে পারার কিছু ব্যাপার আছে, সেইগুলা যেই ভাবেই হোক, যাচাই-বাছাই করতে পারাটা দরকার। আর সেই যাচাই-বাছাই যদি ভালো না হয়, ক্ষতি যতোটা না সরকারের, তার চে বেশি দেশের মানুশের।… এই কথাগুলা এখনো সত্যি।

সেকেন্ড জিনিস হইলো, এর ভাষা। এইটা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ভাষা। এরপরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষা, সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাষাও আমরা পার হয়া আসছি, গত ১০০/১৫০ বছরে। এই লেখা পড়া যায়, কিন্তু কেউ লেখতে পারার কথা না আর। ‘সাহিত্য’ করার লাইগা লেখা তো যায়-ই, কিন্তু খুব বেশি দরকার না পড়লে কেউ ইন্টারেস্টেড হয়া পড়ার কথা না। কারণ এইটা না যে, বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ বা মুজতবা আলী মারা গেছেন, বরং সমাজের মানুশের কাজকাম, চলাফেরার লগে এর ডিসট্যান্স এতোটাই বাড়ছে যে, অনেক দূরের জিনিস লাগে। এইটা ভাষার হারায়া যাওয়া না, পুরান একটা ভঙ্গিমার বরং ধীরে ধীরে ইরিলিভেন্ট হয়া উঠার। একটা সময়ের ভাষা আরেকটা সময়ে গিয়া দূরের জিনিস হয়া উঠবেই, এই সাহিত্যের সমস্যা না, ভাষার সমস্যা না; বরং এইটাই ঘটে, ঘটতেছে, সবসময়।

তো, মাঝে-মধ্যে দূরের দেশে ঘুরতে যাইতে চাই তো আমরা; এইরকম ভাষার ভিতর ট্রাভেল করতে পারেন একটা, বিষয়ের ভিতরেও; যে, হায় হায়, তখনো বিসিএস নিয়া আর্টিকেল লিখতো বঙ্কিমচন্দ্ররা। 🙂 

…………………………

বিবাহ উপলক্ষে যেরূপ কুলপরিচয়ের প্রয়োজন হয়, পূৰ্ব্বে চাকুরী উপলক্ষেও সেইরূপ প্রয়োজন হইত। তৎকালে বিশ্বাস ছিল যে, কর্ম্মদক্ষতা কেবল সৎকুলেই সম্ভব, অসৎকুলে দুর্লভ। সে বিশ্বাসের বিশেষ হেতুও ছিল; তৎকালে শিক্ষা কুলগত ছিল, এক্ষণে আর তাহা নাই, এক্ষণে শিক্ষা সকলকুলেই সম্ভব, কার্যদক্ষতাও কাজেই সকল কুলেই পাওয়া যাইতে পারে। কাজেই কাৰ্যদক্ষ ব্যক্তি নির্ব্বাচন করা কিছু কঠিন হইয়াছে।

যোগ্য ব্যক্তিকে কার্য্যে নিযুক্ত করা যে অতি কঠিন তাহা সকলের সংস্কার নাই। সাধারণতঃ বিশ্বাস আছে যে, উপযুক্ত ব্যক্তিরাই কার্য্যে নিযুক্ত হইয়া থাকেন, কিন্তু যাহারা কিঞ্চিৎ বিশেষ জানেন, তাহাদের মত স্বতন্ত্র। এইজন্য ইংলণ্ড দেশের একজন প্রধান ব্যক্তি আপনাকে মন্ত্রিত্বপদে নিযুক্ত হইবার সন্তাবনা বুঝিয়া আপন কর্ত্তব্যকার্য্যের তালিকায় লিখিয়াছিলেন যে, আমি মন্ত্রী হইয়া কেবল যোগ্যলোককেই রাজকার্য্যে নিযুক্ত করিব। তিনি জানিতেন যে এইটি বড় সহজ নহে, ইহার নিমিত্ত বিশেষ প্রতিজ্ঞা আবশ্যক। অযোগ্য ব্যক্তির অনুরোধের জয়পতাকা তুলিয়া সর্ব্বদাই সর্ব্বত্র দাড়াইয়া থাকে, তাহাদের উল্লঙ্ঘন করা অতি কঠিন । এই জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিকে কার্য্যে নিযুক্ত করা হয় না।

ইদানীং বিজ্ঞরাজপুরুষেরা অনুরোধের মূলোচ্ছেদ করিবার নিমিত্ত এবং যোগ্য ব্যক্তিকে সহজে নিরাকরণ করিবার নিমিত্ত এক উপায় উদ্ভাবন করিয়াছেন, তাহা পরীক্ষা। পরীক্ষা এক্ষণে সকল রাজ্যেই প্রচলিত হইয়া উঠিয়াছে। আমাদের দেশেও প্রায় ৩২ বৎসর হইল কতকাংশে আরম্ভ হইয়াছে।

পরীক্ষা দিয়া চাকুরী করা এক্ষণকার নিয়ম। যাহারা পরীক্ষা দিতে অসমর্থ অথচ চাকুরীর লোভ রাখে, কেবল তাহারাই পরীক্ষার বিদ্বেষী হওয়া সম্ভব। যদি আর কেহ ইহার বিদ্বেষী গান, তাহা হইলে হেতু অনুসন্ধান করা আবশ্যক।

উমেদার ব্যতীত সত্যই অনেক লোকে এই নিয়মের বিরোধী দেখা যায়; তাহারা মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করেন যে, উপযুক্ত কর্ম্মচারী নির্ব্বাচন করিতে গেলে পরীক্ষাই তাহার একমাত্র উপায়। অথচ আবার চুপি চুপি জিজ্ঞাসা করেন, “ভাল! পূর্ব্বকালের ডেপুটি মাজিষ্ট্রেট অপেক্ষা এক্ষণকার ডেপুটি মাজিষ্ট্রেটরা অযোগ্য কেন? পূর্ব্বেও তাহাদের পরীক্ষা ছিল এক্ষণেও ত সেই পরীক্ষা আছে।” আবার বলেন “উকীলদের পরীক্ষা পূর্ব্বে ছিল এখনও আছে, তবে পূর্ব্বকালের উকীল অপেক্ষা এক্ষণকার উকীলেরা ভাল কেন?”

এ কথার প্রথমেই আপত্তি হইতে পারে যে, এক্ষণকার ডেপুটি মাজিষ্ট্রেটরা যে অপেক্ষাকৃত অযোগ্য, অথবা এক্ষণকার উকীলেরা যে অপেক্ষাকৃত উপযুক্ত তাহার প্রমাণ কি? প্রমাণ পুরাতন লোক, এই প্রস্তাবলেখক তাহার মধ্যে একজন। যাহারা উভয় সময়ের কর্ম্মচারী দেখিয়াছে, তাহাদের প্রমাণ গ্রহণ না করিলে আর প্রমাণ নাই। তাহাদের প্রমাণ যদি গ্রহণ করা যায়, তাহা হইলে স্বীকার করিতে হয় যে পরীক্ষাসত্ত্বেও এক্ষণকার ডেপুটি মাজিষ্ট্রেটগণ অযোগ্য। পরীক্ষা সত্ত্বেও যদি এরূপ হয় তবে পরীক্ষার প্রয়োজন? যোগ্যব্যক্তি নির্ব্বাচন করিবার নিমিত্ত পরীক্ষা যে একমাত্র উপায় অথবা বিশেষ উপায় তবে তাহা মিথ্যা হইল? অন্যদেশে পরীক্ষাদ্বারা যোগ্য লোক নির্ব্বাচন হইতেছে, অন্ততঃ কতকাংশে হইতেছে, কিন্তু আমাদের দেশে তাহার বিপরীত ফল কেন হয় তদন্ত করা আবশ্যক।

পূর্ব্বে যৎকালে আমাদের দেশে উপযুক্ত ব্যক্তি বড় পাওয়া যাইত না, তখন গবর্ণমেণ্ট উপযুক্ত লোক সংগ্রহ করিতে সক্ষম হইয়াছিলেন; আর এক্ষণে যোগ্যলোক বাঙ্গালার সর্বত্র শত শত পাওয়া যায়, অথচ যোগ্যলোক রাজকার্যে নিযুক্ত হয় না, ইহার হেতু কি? এই কথা লইয়া বাঙ্গালিরা মধ্যে মধ্যে গোপনে আন্দোলন করিয়া থাকেন। অনেকের বিশ্বাস জন্মিয়াছে যে, গবর্ণমেন্ট এক্ষণে ইচ্ছাপূৰ্ব্বক অনুপযুক্ত লােক নিযুক্ত করেন, তাহাদের মধ্যে কয়েক বৎসর অবধি একটা কথা রটিয়াছে যে ডিসরেলি সাহেব যখন ইংলণ্ডের রাজমন্ত্রিপদে নিযুক্ত ছিলেন,সেই সময় একবার তথায় কথা উপস্থিত হয় যে ইলংন্ড হইতে আর অধিক (covenanted servant) কবনান্টেড সারবান্ট পাঠাইবার প্ৰয়োজন নাই, এই সনদি সাহেবদের বেতনে ভারতবর্ষের অনর্থক অনেক অর্থব্যয় হইতেছে। বিশেষ ডেপুটি মাজিষ্ট্রেটদের মধ্যে যেরূপ উপযুক্ত ব্যক্তি দেখিতে পাওয়া যায়, এক্ষণে অনায়াসে অধিকাংশ কার্য তাহাদের উপর নির্ভর করা যাইতে পারে। ডিসরেলি সাহেব তাহাতে ভাবিলেন সনদি চাকরেরা বেতনদ্বারা ভারতের অনেক টাকা ইংলণ্ডে আনিতেছে, তাহাদের সংখ্যা কম হইলে ইংলণ্ডের অর্থাগম কম হইবে। অতএব এই আশঙ্কায় ডিসরেলি সাহেব গোপনে নিষেধ করেন যে, আর যেন বিশেষ উপযুক্ত বাঙ্গালিকে উচ্চপদ না দেওয়া হয়, তবে এখানে সেখানে দুই একটি ভাল লোককে কৰ্ম্ম দিলে ক্ষতি নাই বরং না দিলে নিন্দা হইবে। অনভিজ্ঞ বাঙ্গালিমহলে এরূপ অমূলক কথা রটিবে তাহার আর আশ্চর্য্য কি? নিত্য যাহা হয়, তাহার সামান্য ব্যতিক্রম দেখিলে যে বাঙ্গালিরা দেবতাদের দোষারোপ করে সে বাঙ্গালির লােক, নির্বাচন সম্বন্ধে সামান্য ব্যতিক্রম দেখিলে যে ডিসরেলি সাহেবকে বা ইংরেজরাজশাসনকে দোষারোপ করিবে ইহার আর আশ্চৰ্য্য কি? “যদি গোপন অনুমতি সম্বন্ধে তাহাদের এতদূর বিশ্বাস যে তাহারা অনায়াসে বলিয়া থাকেন “যদি গোপন নিষেধ না থাকিবে তবে ব্যবসাদারেরা বা জমীদারগণ যে শ্রেণীর লোকদের কুড়ি কি পচিশ টাকায় চাকর রাখেন এক্ষণে সেই শ্রেণীর লোকদের গবর্ণমেন্ট চারিশত পাঁচশত বেতন দিয়া কেন রাখিতেছেন।” আমরা স্বীকার করি ঐ শ্রেণীর লোক এক্ষণে ডেপুটি মাজিষ্ট্রেটের মধ্যে অনেক দেখা যায় বটে, কিন্তু তাহার হেতু গবর্ণমেন্টের কোন কুঅভিসন্ধি নহে, গবর্ণমেন্ট নিরপেক্ষ হইয়া কেবল পরীক্ষা দ্বারা সেই সকল লোক নিযুক্ত করিয়াছেন। যদি তাহাতে অনুপযুক্ত ব্যক্তি নিযুক্ত হইয়া থাকে তবে সে দোষ পরীক্ষার। তাহার পরিচয় সংক্ষেপে দেওয়া যাইতেছে। যোগ্য লোক নির্ব্বাচনের জন্য পরীক্ষাই সর্বোৎকৃষ্ট উপায় সন্দেহ নাই কিন্তু উপযোগী পরীক্ষা এপর্য্যন্ত উদ্ভাবিত হয় নাই। এই জন্য ভুল হইতেছে এবং অনেক দিন পর্য্যন্ত এই ভুল চলিবে।

যখন গ্রে সাহেব গবর্ণর ছিলেন, তখন এই নিয়ম করা হয় যে পরীক্ষা করিয়া ডেপুটি মাজিষ্ট্রেট নিযুক্ত করিতে হইবে, নিযুক্ত করিয়া আবার তাহাদের পরীক্ষা লইতে হইবে। পূর্ব্বে এ প্রথা ছিল না, নিযুক্ত হইবার পূর্ব্বে আর কোন পরীক্ষা হইত না, গ্রে সাহেব তাহা প্রথম করিলেন, করিয়া ভাবিলেন, আর অযোগ্য লোক ডেপুটি মাজিষ্ট্রেটীপদে নিযুক্ত হইতে পারিবে  না। নিযুক্তের পূর্ব্বে পরীক্ষা, নিযুক্তের পরে পরীক্ষা, শুনিলে তাহাই আপাত বোধ হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ গ্রে সাহেবের সময় হইতেই আরও বিশেষরূপে অযোগ্য ও সামান্য লোক নিযুক্ত হইতে আরম্ভ হইল। গ্ৰেসাহেব বোধ হয় ভাবিয়া ছিলেন যে, যাহারা সম্ভ্রান্তবংশোদ্ভব, যাহারা অনায়াসেই “সুপারিষের” যোগাড় করিতে পারে, সচরাচর তাহারাই ডেপুটিমাজিষ্ট্রেট হইয়া থাকে ; তাহারা অযোগ্য হইলেও ঐ পদ প্রাপ্ত হইয়া থাকে। আর যাহাদের বংশ: গৌরব নাই, অথচ যোগ্য ব্যক্তি তাহারা এ পদ প্রায় পায় না; অতএব এ কুপ্রথার পথবোধ করিবার নিমিত্ত গবর্ণর সাহেব সর্ব্বসাধারণকে জ্ঞাত করিলেন যে, যে কেহ ইচ্ছা করেন তিনি পূর্ব্বাহ্নে নিয়মিত একটি পরীক্ষা দিয়া আপনার নাম ডেপুটি মাজিষ্ট্রেটী রেজেষ্টরীতে লেখাইতে পারেন, ডেপুটি মাজিষ্ট্রেট কেবল সেই পরীক্ষোত্তীর্ণদের দেওয়া যাইবে। বলা আবশ্যক যে পরীক্ষাটি বড় কঠিন নহে, একটু ইংরেজি, একটু অঙ্কশাস্ত্র, একটু ইতিহাস এই লইয়া সেই পরীক্ষা। আমাদের দেশে বালকেরা স্কুলে সচরাচর যাহা অধ্যয়ন করে কেবল সেই সম্বন্ধে এই পরীক্ষা। সরলচেতা গ্রেসাহেব এই নিয়ম বদ্ধ করিলে সামান্য কেরাণী, গ্রাম্য স্কুলমাষ্টারগণ নাচিয়া উঠিল। তাহারা আপনাদের অযোগ্যতা জানিত, তাহারা কস্মিনকালে হেডকেরাণী বা হেড মাষ্টার হইবার প্রত্যাশা করিত না এক্ষণে তাহাদের কপাল খুলিল, অনায়াসে পরীক্ষা দিয়া তাহারা ডেপুটিমাজিষ্ট্রেট হইতে লাগিল। কে্হ কেহ রহস্য করিয়া এই সকল ডেপুটিদের “গ্রের গাধা” বলিয়া থাকেন। গ্রেসাহেব আপনার ভুল শেষ বুঝিয়াছিলেন। কিছুদিন পরেই সেই পরীক্ষা বন্ধ করিয়াছিলেন। গ্রের-সকল ডেপুটিই গাধা নহেন, গুণবান ব্যক্তি অনেকে আছেন সন্দেহ নাই।

গ্রে সাহেবের পর ক্যাম্বল সাহেব গবর্ণর হইলেন। তিনি জানিতেন বাঙ্গালিরা শিক্ষাদোষে দুর্ব্বল অতএব ব্যায়াম শিক্ষার উৎসাহ দিবার নিমিত্ত ডেপুটি মাজিষ্ট্ৰেটিপদ বলিষ্ঠের পারিতোষিক স্থির করিলেন। তাহাদের প্রপমতঃ কাৰ্য্য প্রণালী শিক্ষার নিমিত্ত সব ডেপুটিপদ নুতন সৃষ্টি করিলেন, যাহারা অশ্বারোহণে, সন্তরণে, পদসঞ্চালনে বিলক্ষণ পটু তাহারাই সবডেপুটি হইবার অধিকারী হইল। এই পদের নিমিত্ত সামান্যমত জরিপ জমাবন্দি আর একটু আইন জানিলেই হইবে এইরূপ বিজ্ঞাপন দেওয়া হইল। ক্যাম্বল সাহেবের বিজ্ঞাপন প্রচার হইলে আবার গ্রাম্য স্কুলমাষ্টারদিগের মধ্যে উৎসাহ পড়িয়া গেল, কেরাণি ও মুহুরিদলের সুবিধার জন্য গবর্ণর সাহেব হুকুম দিলেন যে তাহারা জরিপ জমাবন্দি প্রভৃতি শিক্ষা করিবার নিমিত্ত ছুটি চাহিলে অনায়াসে ছুটি পাইবে। সুবিধার আর সীমা রহিল না। সেই সকল মুহুরি, কেরাণি. গ্রাম্যশিক্ষক প্রথমে সবডেপুটি হইয়া এক্ষণে ডেপুটিমাজিষ্ট্রেট হইয়াছেন। ক্যাম্বল সাহেব হস্তপদের গুণ পরীক্ষা করিয়া তাহাদের নিযুক্ত করিয়াছিলেন এই জন্য কেহ কেহ রহস্য করিয়া তাহাদের “ক্যাম্বলি উট” (Campbel’ls Camel) বলেন।

কিরূপে অযোগ্য ও সামান্য ব্যক্তিরা ইদানীং ডেপুটিমাজিষ্ট্রেট পদলাভ করিতে পারিয়াছে তাহা বােধ হয় এই সংক্ষিপ্ত পরিচয়দ্বারা অনায়াসে অনুভব হইতে পারিবে। ইংরেজ কর্ম্মচারী এ দেশে প্রয়োজন ইহা বিলাতে প্রতিপন্ন করিবার নিমিত্ত অযোগ্য বাঙ্গালিকে উচ্চপদে আসীন করা হয় নাই। পরীক্ষা করিয়া তাহাদের নিযুক্ত করা হইয়াছে, যদি তাহাতে অযোগ্যব্যক্তির পদ প্রাপ্তি হইয়া থাকে সে দোষ পরীক্ষার।

পরীক্ষার দোষ গুণ দুই আছে। পরীক্ষার গুণ আছে বলিয়া সকল দেশেই পরীক্ষা আরম্ভ হইয়াছে, পরীক্ষা থাকিলে অনুরোধের বল হ্রাস হইয়া যায়। এক্ষণে বিনাপরীক্ষায়, কেবল অনুরোধের বলে, আর কেহ মুন্সেফ হইতে পারেন না। ডেপুটিমাজিষ্ট্রেটিতে অদ্যাপিসে নিয়ম বলবৎ হয় নাই, হইবারও বিলম্ব আছে, তথাপি কখঞ্চিৎ সে নিয়ম গবৰ্ণর ক্যাম্বল সাহেবের সময়ে হইয়াছিল। একবার তিনি একজন জজসাহেব কর্ত্তৃক অনুরুদ্ধ হইয়া বলিয়াছিলেন যে, আপনার ভ্রাতষ্পুত্রকে আমিম একারেক ডেপুটি মাজিষ্ট্রেট দিতে পারি না, তিনি উপযুক্ত হইলে অনায়াসে নেটিব সিবিলসার্ব্বিসের অর্থাৎ সবডেপুটি পরীক্ষা দিতে পারিবেন। তাহা হইলে অল্প দিনের মধ্যে ডেপুটিমাজিষ্ট্রেট অনায়াসে হইতে পারিবেন। পরীক্ষার প্রথা ছিল বলিয়া ক্যাম্বল সাহেব অনুরোধে উপেক্ষা করিতে পারিয়াছিলেন। পরীক্ষার অকাট্য নিয়ম থাকিলে কেহ অনুরোধ করিতে আইসে না। কাজেই উপযুক্ত ব্যক্তিকে মনোনীত করিবার বাধা কমিয়া যায়।

পরীক্ষা সঙ্গত ও শ্রেয়ঃ বলিয়া সর্ব্বত্রে প্রচলিত হইতে আরম্ভ হইয়াছে। প্রকৃত পরীক্ষা হইলে তাহাই বটে, কিন্তু যে প্রণালীতে আমাদের দেশে পরীক্ষা আরম্ভ হইয়াছে তাহা প্রায় অসঙ্গত। যে কার্য্যে যে গুণ আবশ্যক তাহা উমেদারের কাছে কি না নির্দ্ধারণ করাই পরীক্ষা। কিন্তু পরীক্ষার পূর্ব্বে স্থির করা চাই যে, কোন পদের নিমিত্ত কি কি গুণ আবশ্যক। পূর্ব্বাহ্নে তাহা স্থির করিয়া পরীক্ষা করিলে সেই পরীক্ষা সার্থক হয়। নতুবা আমাদের গবর্ণমেন্ট যেরূপ পরীক্ষা করে, সেই রূপ পরীক্ষা অনর্থক। যদি নিয়ম করা যায় যে বলিষ্ঠপদ দেখিয়া “ডাক রনার” নিযুক্ত করা যাইবে তাহা হইলে সঙ্গত হয়। কিন্তু যদি বলা যায়, বলিষ্ঠপদ দেখিয়া মাজিষ্ট্রেট দেওয়া যাইবে তাহা হইলে কে না উপহাস করে? বলিষ্ঠপঙ্গ মনুষ্যমাত্রেরই প্রয়োজন সন্দেহ নাই। কিন্তু মাজিষ্ট্রেটী কার্য্যের নিমিত্ত যে তাহা বিশেষ আবশ্যক ইহা কেহ প্রতিপন্ন করিতে চাহিলে কে তাহাতে কর্ণপাত করে?

গবর্ণমেন্ট অপেক্ষা লোকে পরীক্ষক ভাল, অনেককে গবর্ণমেন্ট উকিলির ছাপ দিয়া ছাড়িয়া দেন, তাহার পর লোকে তাহাদের বাছনি করে। গবর্ণমেন্টের পরীক্ষায় তাহারা সকলেই যোগ্য, লোকের পরীক্ষায় তাহাদের মধ্যে অনেকেই অযোগ্য ; তাহাই তাহাদের অবস্থার তারতম্য। উকিলদের আইনজ্ঞ হওয়া উচিত সত্য, কিন্তু তদ্ভিন্ন তাহাদের আর গুটি কতক গুণ থাকা আবশ্যক, তাহা না থাকিলে কেবল আইন জানা বৃথা হয়। গবর্ণমেন্ট সেই গুণ গুলির পরীক্ষা একেবারে করেন না, কাজেই দেখা যায় আইনের পরীক্ষা দিয়া যোগ্যতার সার্টিফিকেট হাসিল করিয়াও অনেক উকিল, অযোগ্য বলিয়া আদালতে প্রায় অগ্রাহ্য হইয়া থাকেন; কাজেই বলিতে হইবে এক্ষণে উকিলের যে পরীক্ষা আছে তাহা অসম্পূর্ণ।

ডেপুটিমাজিষ্ট্রেট সম্বন্ধেও সেইরূপ। তাহাদেরও কেবল আইনের পরীক্ষা হইয়া থাকে। কিন্তু সকলেই নিত্য দেখিতে পান যে, কেবল আইন জানিয়াই মাজিষ্ট্রেট ভাল হয় না। আইনজ্ঞমাত্রেই যদি ভাল মাজিষ্ট্রেট হইত, তাহা হইলে পরীক্ষোত্তীর্ণ মাজিষ্ট্রেটদের মধ্যে আর তারতম্য থাকিত না, সকলেই ভাল মাজিষ্ট্রেট হইতেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখা যায় পরীক্ষোত্তীর্ণদের মধ্যে অনেকে অযোগ্য আছেন।

বিচারকদিগের পক্ষে আইন জানার আবশ্যকতা আছে সত্য, কিন্তু মাজিষ্ট্রেটগণ কেবল বিচারক নহেন, তাহাদের অন্য কার্য্যের নিমিত্ত অন্য গুণ আবশ্যক; কেবল আইনের পরীক্ষায় সে সকল গুণের পরীক্ষা হয় না; বিশেষতঃ আইনের নিত্য পরিবর্ত্তন হয়, একসময় গুটিকতক আইনের পরীক্ষা করিয়া ছাড়িয়া দিলে ভবিষ্যৎ আইন সম্বন্ধেও পরীক্ষা হইয়া রহিল এ কথা বলা অসঙ্গত। তবে বড় জোর এই মাত্র বলা যায় যে, একবার যে ব্যক্তি উদ্যোগ করিয়া আইনের পরীক্ষা দিতে পারিয়াছেন, তিনি উদ্যোগী পুরুষ। তাহার স্মরণশক্তিও আছে।

কিন্তু উদ্যোগ আর স্মরণশক্তি কেবল এই দুই থাকিলেই লোকে বিচারাসনে বসিবার যোগ্য হয় এমত নহে। বিচারপতিদের নানাগুণ আবশ্যক, গবর্ণমেন্ট তাহার একটিও পরীক্ষা করেন না, বোধ হয় করিতেও পারেন না। অপক্ষপাতিতা বিচারপতির পক্ষে নিতান্ত আবশ্যক, এক্ষণে তাহার কোন পরীক্ষা নাই, এইরূপ শত শত বিষয়ের কোনটিরই পরীক্ষা হয় না, কেবল আইনের পরীক্ষা হয়। অধিক কি যেটী সর্ব্ব প্রধান, সেই চরিত্রের পরীক্ষাই নাই। তাহাই বলিতেছিলাম গবর্ণমেন্টের পরীক্ষা অতি অসম্পূর্ণ। একজন বিচারপতি মধ্যে মধ্যে কোর্ট ফি গোপনে আত্মসাৎ করিতেন, হঠাৎ ধরা না পড়িলে তিনি অদ্যাপি বিচারপতির উচ্চ আসনে আসীন থাকিতেন, গবর্ণমেন্ট তাহাকে পরীক্ষা করিয়া বিচারপতির পদ দিয়াছিলেন কাজেই লোকে তাহাকে বিশ্বাস করিতে বাধ্য, না করিলে গবর্ণমেন্টকে অবমাননা করা হয়। তাহাকে বিশ্বাস করিলেও লোকের সর্বনাশ হয়। এঅবস্থায় সচ্চরিত্র দেখিয়া বিচারপতি করা গবর্ণমেন্টের কর্ত্তব্য, তাহা না করিলে গবর্ণমেন্টের বিশেষ ক্রটি। যোগ্য অযোগ্য বিচার না করিয়া রাজপ্রতিনিধিরা চাকুরি বিতরণ করেন, তাহারা সেলামের উপর সেলাম লইয়া চলিয়া যান, কিন্তু পশ্চাতে কণ্টক রাখিয়া যান। সে কণ্টক সমাজের অঙ্গে বিদ্ধ হয় তাহাতে বিদেশী গবর্ণমেন্টের অখ্যাতি জন্মে।

চরিত্রের পরীক্ষা করা অতি কঠিন। সদ্বংশজাত হইলে সচ্চরিত্র হয়, ইহা পুর্ব্বের বিশ্বাস, অদ্যাপিও সে বিশ্বাস কতকাংশে আছে। এইজন্য গবর্ণমেন্ট পুর্ব্বে বংশ অনুসন্ধান করিতেন; শুনা যায় এক্ষণেও তাহা করিয়া থাকেন। কিন্তু তাহার ফল বড় দেখা যায় না, ইতরবংশভূত অনেক লোক এক্ষণে উচ্চপদে নিযুক্ত হইতেছে।

বস্তুতঃ তাহাতে কোন ক্ষতি নাই, যদি কর্ম্মচারী নিজে পবিত্র হন, তবে পূর্ব্ব পুরুষ অপবিত্র বলিয়া কি হানি। কিন্তু পদাকাঙ্ক্ষীরা নিজে পবিত্র কি না, ইহা অনুসন্ধান করিবার নিমিত্ত গবর্ণমেন্ট কি উপায় অবলম্বন করিয়া থাকেন, তাহা আমরা জানি না। অনেকের ধারণা যে এই অনুসন্ধান সম্বন্ধে গবর্ণমেন্টের কোন উপায়ই নাই। তাহা সম্ভব। আমরা শুনিয়াছিলাম যে ডেপুটি মাজিষ্ট্রেট পদাকাক্ষী কোন ব্যক্তি সম্বন্ধে গবর্ণমেন্ট একবার একজন ডিষ্ট্ৰীক্ট মাজিষ্ট্রেটকে অনুসন্ধান করিতে একখানি “ডিমি অফিসিয়াল” পত্র লিখিয়াছিলেন, মাজিষ্ট্রেট সাহেব সে ব্যক্তিকে নিজে চেনেন না, অতএব উমেদারের নিবাস যে অঞ্চলে তথাকার ডেপুটিমাজিষ্ট্রেটকে সেইরূপ এক পত্র লেখেন। ডেপুটিমাজিষ্ট্রেট খাঁ বাহাদুর নতুন আসিয়াছেন, কাহাকেও জানিতেন না, কাজেই তিনি থানা সবইন্সপেক্টারকে লিখিলেন, সবইন্সপেক্টার যথানিয়মে তলবি পরওয়ানা পাঠাইলেন। পরওয়ানা হস্তে দুইজন কনে বল উমেদারের বাঢ়ী আসিয়া দাঁড়াইলে বাবুর চক্ষুস্থির হইল, কনে বলদের সঙ্গে অগত্যা তাহাকে আসামির ন্যায় যাইতে হইল, তাহার অন্দরমহলে কান্না উঠিল, পাড়ার লোকেরাও “আহা” বলিয়া বিপদের সময় যথেষ্ট সহানুভূতি প্রকাশ করিতে লাগিল। শেষ উমেদার বাবু দারগা সাহেবের সম্মুখে উপস্থিত হইলে তিনি তাহার এজাহার লইতে আরম্ভ করিলেন। নাম, ধাম, পিতার নাম, জাতি, পেশা, বিষয়সম্পত্তি, কি বিদ্যা, কত বিদ্যা, কেমন চরিত্র, আনুপূর্ব্বিক সকল প্রশ্ন করিয়া শেষ বগা- নিয়মে রোয়দাদে লিখিলেন যে এ ব্যক্তি সচ্চরিত্র ও ভদ্রবংশ বটে। ইহাকে ডেপুটিমেজিষ্ট্রেটি দেওয়া যাইতে পারে।

এ কথা যদি সত্য হয়, তবে রহস্যের বিষয় বটে, কিন্তু আক্ষেপও হয়। চরিত্রের পরীক্ষা অতি কঠিন, কোন রাজ্যেও তাহা সুসম্পন্ন হয় না। ইংলণ্ড হইতে বিশেষ পরীক্ষা করিয়া যে সকল সনদি সাহেবকে এ দেশে জজ, মেজিষ্ট্রেটি পদের নিমিত্ত পাঠান হইতেছে তাহাদেরও চরিত্রপরীক্ষা। হয় না। যেস্থলে চরিত্র পরীক্ষার কোন উপায় নাই, সেখানে বােধ হয় সকল লােকই সচ্চরিত্র, সত্যবাদী, এবং সদাশয় বলিয়া অনুভব করিয়া লইতে হয়। যতক্ষণ তাহার অন্যথা স্পষ্ট না দেখিতে পাওয়া যায়, ততক্ষণ এ অনুভব ভিন্ন আর উপায় নাই।

আমরা এপর্য্যন্ত যাহা বলিলাম, তাহার সংক্ষেপ এই যে অনুরোধে “চাকুরী” দেওয়া অপেক্ষা পরীক্ষা করিয়া চাকুরী দেওয়া ভাল। কিন্তু প্রকৃত পরীক্ষা আবশ্যক: যে পরীক্ষা এক্ষণে গবর্ণমেন্ট করিয়া থাকেন তাহা অসম্পূর্ণ।

আমাদের আর একটু বলিতে ইচ্ছা যে অযোগ্য ব্যক্তি রাজকার্য্যে নিযুক্ত হইলে যে ক্ষতি, তাহা গবর্ণর সাহেব বা কমিসনর সাহেবের নহে। ক্ষতি সমাজের।

 

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →