#মি_টু, সোশাল মিডিয়ায় কথা কওয়া, মামলা, হিউমিলিয়েশন ইত্যাদি লইয়া
হিউমিলিয়েশন ও মর্যাদারে একলগে একটা ইউনিভার্সাল ঘটনা হিসাবে দেখতে পারলে, এইটারে আর ভেরিয়েবল হিসাবে ডিল করা লাগে না; মানে তখন এইটা আর ডিসাইসিভ ফ্যাক্টর হিসাবে থাকতে পারেনা।
এই সোসাইটিতে সবচে বড় বেইজ্জতির ঘটনাগুলি ঘটতে পারে, এখনো, থানায় মামলা করার মধ্য দিয়াই।
আপনে যখন পাবলিকলি কারু নামে কিছু কওয়ারে হিউমিলিয়েশন কইতেছেন, আইনী পদ্ধতিতে যাওয়ার জন্য মোটিভেট করতেছেন, তখন যার বিরুদ্ধে থানায় যাইতে কন তার মর্যাদা কীভাবে রক্ষা হয়? বরং মর্যাদা জিনিসটা তখন এমন ফ্রিঞ্জে অবস্থান করে যে, এইটা আর পুনরুদ্ধার করা বস্তুত অসম্ভব হইয়া পড়তে পারে; হিউমিলিয়েশন তখন সলিডিফাইড, হালাল ঘটনা। এমনকি মামলায় খালাস হইলেও।
বরং, কেউ কারু বিরুদ্ধে নন ফর্মাল প্লাটফর্মে নন ফর্মাল অভিযোগ করলে, অভিযুক্ত ব্যক্তি নন ফর্মাল প্লাটফর্মেই নিজের স্বপক্ষে কিছু কওয়ার সুযুগ থাকে, উপরন্তু অভিযোগ ফর্মাল না বইলা, অভিযোগের ভিত্তি লইয়াও প্রশ্ন তুলতে পারে। চাইলে।
আমার বিরুদ্ধে ঘটা কোন অন্যায় নিয়া সবিস্তারে কথা কওয়াটারেই আমি রিভেঞ্জ বানায় দিতে চাইনা।
কথা কইলাম আর রিভেঞ্জ হইয়া গেল ব্যাপারটা এমন স্বয়ংক্রিয় না।
রিভেঞ্জ হইতে পারে কথার ইনফ্লিকশনটা অর্থাৎ রিভেঞ্জ বইলা যে হিউমিলিয়েশনটা; যেটা আগেই বলছি, এইটা কনস্ট্যান্ট বা ইউনিভার্সাল। মামলা কইরা সেইটা আরও বেশি বেশি করা পসিবল, মিথ্যা মামলা দেশে বা বিদেশে অহরহ হইতেছে। এখনো মামলা করার সুযোগ থাকলে লোকে মামলাই করে।
নন ফর্মাল প্লাটফর্মে অন্যায় লইয়া কথা কওয়ার ঘটনাটা তখন ঘটে যখন ভুক্তভোগী সবচে ভালনারেবল অবস্থায় থাকে বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে। মানে যখন একটা সামাজিক সংহতি ছাড়া তার হাতে কোন অপশনই থাকে না।
যেমন প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কথা কওয়ার ক্ষেত্রে, কিংবা অলরেডি অবস্কিওরড, মানে এভিডেন্স সাক্ষী কিছুই আর অবশিষ্ট নাই এমন কেসগুলার ক্ষেত্রে।
এই ধরণের ক্ষেত্রগুলিতে অভিযোগকারীর এমন নন ফর্মাল অবস্থান বিচাররে বাধা প্রদান তো করেই না, বরং অথরিটিরে একটা সুয়ো মোটো প্রসেস ইনিশিয়েট করতে মোটিভেট করতে পারে।
হলিউডের হার্ভি ওয়েনস্টাইনের কেসটা এই ক্ষেত্রে উল্লেখ করা যাইতে পারে। উনারে উনার ক্রমিক নিপীড়নক্রিয়ার জন্য আটকানো তো পসিবলই ছিলো না, যদি না একজন উনার বিরুদ্ধে কথা কইতেন, এবং তার দেখাদেখি অন্যরাও কথা কওয়ার সাহস না দেখাইতেন। কারণ এভিডেন্স বলতে তো কিছু ছিল না, যেহেতু ভালনারেবল মাইয়াদের এক্সপ্লয়েট করতেন, তাই ইমিডিয়েট একশন তো কেউ নিতো না।
আপনে যদি এখন মাইয়াদের দোষ বলেন ইমিডিয়েট একশন নেয়নাই কেন? দোষ মাইয়াদেরই। এইভাবে যদি ওইখানকার অথরিটিও দেখত, তাইলে চিন্তা করেন এই প্রিডেটরটারে তো এখনও ধরাই হইত না। বরং অথরিটি ব্যাপক অভিযোগে ঠিকঠাক সাড়া দিতে পারছে বইলাই কিছুটা হইলেও এখন এগুলি লাইনে আসছে। মি_টু ও এই কারণে আমার কাছে একটা সিগনিফিকান্ট ঘটনা।
নর্মালাইজড, গাইড়া বসা, ওপেন সিক্রেট ধরণের প্রভাবশালীদের কুকামগুলি আইনের নজরে আনতে, একটা সামাজিক সংহতির জায়গা তৈরি করতে নন ফর্মাল অভিযোগগুলি জাস্ট হেল্পফুল এইরকম না; এইটাই একমাত্র অপশন।
এখন একটা ঘোরতর পুরুষতান্ত্রিক সোসাইটির জন্যও প্রকৃতপক্ষে এইটাই একমাত্র ডিস্টার্ব।
এই ডিস্টার্বরে রিয়েলি অফ রাখার আসলে তেমন কোন কনভিন্সিং ওয়েও নাই। কারণ এই অপশনটা একই সাথে ফ্লেক্সিবলও; এইখানে অভিযোগকারী অভিযোগ করলে অভিযুক্তেরও সুযুগ থাকে একই প্লাটফর্মে মোটামুটি একই অডিয়েন্সরে নিজের স্বপক্ষে দুইটা কথা শোনানোর।
মানে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অন্যায় হইলে, অভিযুক্ত অভিযোগ জানাইতে পারে। সেও তখন অভিযোগকারী। পলিফোনিক কোয়ালিটিটা সোশাল স্পেসে থাকেই।
এখন কাজের কাজ হইতে পারে, এই ফ্লেক্সিবল অপশনটা যেন সব সময়ই ফ্লেক্সিবল থাকতে পারে, সেইটা নিয়া কাম করা। কোন স্টিগমা তৈরি না করা। স্টিগমা না থাকলে হিউমিলিয়েশনটা তখন ফেক্টর হিসাবে থাকতে পারে না আর।
এইক্ষেত্রে স্টিগমার উল্টা হইতে পারে এম্পেথি; কেউ যদি চায় তার সাথে ঘটা অন্যায় লইয়া কিছু বলবেন ইনফর্মালি, তার প্রতি যেন থার্ড পার্সনদের দিলটা নরম থাকে; তেমনি যার ব্যাপারে অভিযোগ সে কিছু বললেও যেন লোকে হামলায় না পড়ে। কিছু বলার থাকলে তো বলাই যায়; সেইটা যেন হামলায় পড়া ধরণের হেইট স্পিচ না হয়, ইনফর্মড হয়; রিডিকিউলিং না হয়।
যারা মনোযোগ দিয়া সোশাল মিডিয়ায় কথা কওয়ার এগেনস্টে স্টিগমা বানাইতেছেন, এর চে এম্পেথি লইয়া কাম করা আরও ইজি তো! না হইলেও কঠিন কিছুনা, এই সামান্য সংযমের চর্চা করা।
তো এই ধরণের ক্ষেত্রে পুনঃপুনঃ হিউমিলিয়েশন কার্ডটা যে ইউজ করার রীতি তৈরি হইছে; তাতে বুঝা যায় যে আর তেমন কোন অপশন নাই প্রভাবশালীদের হাতে, অপশন থাকলে এই দূর্বল কার্ডটা বারবার ইউজ করতে হইত না।
মানে হিউমিলিয়েশন জিনিসটা এইক্ষেত্রে ওয়ার্ল্ডওয়াইড ভাইরাল করায় পাওয়ারের কারবার আছে বইলা আমার সন্দেহ।
আর দূর্বল কার্ড কারণ হিউমিলিয়েশন ইজ অলওয়েজ দেয়ার, ফর্মাল স্ট্রাকচারের ভেতরে হিউমিলিয়েশন বরং আরও ফর্মাল হইয়া যায়।
/অগাস্ট ৩০, ২০২০
…………………
কমেন্টস
ইমরুল হাসান:
“এখন কাজের কাজ হইতে পারে, এই ফ্লেক্সিবল অপশনটা যেন সব সময়ই ফ্লেক্সিবল থাকতে পারে, সেইটা নিয়া কাম করা। কোন স্টিগমা তৈরি না করা। স্টিগমা না থাকলে হিউমিলিয়েশনটা তখন ফেক্টর হিসাবে থাকতে পারে না আর।”
আমার কনসার্ন’টা এই জায়গাটাতেই; ব্যাপারটা মেবি স্টিগমাটাইজড হয়া যাইতেছে; আর হইতেছে একটা আইডিওলজিক্যাল জায়গা থিকা। আমরা বুঝতে পারতেছি যে, ফর্মাল জায়গাগুলা কাজ করতেছে না; কিন্তু ইনফরম্যাল জায়গাগুলা কিভাবে কাজ করতে পারে, সেই অল্টারনেটিভ জায়গাগুলারে এক্সপ্লোর করতে পারাটা দরকার। পাওয়ার’রে হিউমিলেট করতে পারাটাই দরকার, কিন্তু এইটারে বিজয় হিসাবে দেখাটা ঝামেলার জিনিস হইতে পারে।
ইব্রাকর ঝিল্লী:
বিজয় না এইটা। বা বিপ্লবও না। আমি আরেকটু বেসিক জায়গা থেকে ডিল করতে চাই এইটা, যে জিনিসটা একদমই অকাজের কিনা। বা এইটুকু অন্তত এক্সপ্রেস করার জায়গা থাকা উচিত তো। 🙂
ইব্রাকর ঝিল্লী
Latest posts by ইব্রাকর ঝিল্লী (see all)
- এডিটোরিয়াল: গনতন্ত্র হারাইয়া কি পাইলাম: ফেসিবাদ নাকি বাকশাল? - মার্চ 27, 2024
- ইব্রাকর ঝিল্লীর ১২খান বাংলা কবিতা (বানান ইগনোর কইরেন পিলিজ) - ফেব্রুয়ারি 9, 2024
- বুক রিভিউ: মুহূর্তের ভিতর মুহূর্ত গইলা পড়ে - নভেম্বর 7, 2023