Main menu

এডিটোরিয়াল: আমাদের ডেটা প্রতিপালন বা, ডিসকোর্সের বুদবুদগুলি

কয়দিন আগে একটা পোস্ট দিছিলাম, আরও এক দেড় বছর আগের একটা পোস্ট শেয়ার দিয়া। ওইখানে বলতে চাইছিলাম বিশ কোটি নাম্বারটা প্রসেস করার ক্ষেত্রে পিপল সাইকোলজিকালি ইউজড টু না। আবার বিশ কোটি মানুষ আর বিশ কোটি টাকা এক জিনিস না। দুই বিশ কোটির কনসেপচুয়াল ওভারল্যাপিং করতে থাকে মানুষ, অল দা টাইম।

তো এই জায়গাটা নিয়া আমি আরও কয়েক জায়গায়ই বলছিলাম। এইটা পার্টিকুলারলি আমাদের দেশে ইম্পর্টেন্ট কারণ আমাদের দেশে এন্টিপিপল আনডেমোক্রেটিক গবর্নমেন্ট আছে। এই দেশের আমলায়তনে সব কিছুতে পিপল ‘অসভ্য’ বলার রেওয়াজ আছে। এবং একটা অটোক্রেসিতে যেটা হয় গবর্নমেন্ট থ্রাইভই করে পিপলের গ্রুপগুলির এগেইনস্টে পিপলরেই দাড় করায়ে। ফলে সবকিছুতে পিপলের দোষ বাইর করার প্রেক্টিসটা এখন আমলায়তন আর এলিট সার্কেল ছাড়ায়া পাবলিক পরিসরে গুরুত্ব পাওয়া শুরু হইছে। তো এইখানেই আমার কাছে মনে হয় বিশ কোটি নাম্বারটা আসলে কি মিন করে সেই ব্যাপারে সঠিক বোঝাবুঝি কম আমাদের মইধ্যে।

বিশ কোটি মানুষের দেশে পাবলিক ব্লেমিংএর চর্চা, রুলিং ক্লাসরে তাদের ফেইল্যুর হইতে এস্কেপ করার রুট বানায়া দেয়ার সমান। নো ম্যাটার হোয়াট, বিশ কোটি মানুষের ভেতর দেয়ার উইল অলওয়েজ বি পিপল হু উড নট আন্ডারস্ট্যান্ড, হু উড নট ফল ইন লাইন, আপনে চাইলে যে কোন গিভেন টাইমে এনাফ নাম্বার অব পিপল পাইয়া যাইবেন ব্লেইম করার জন্য। এই কারণেই রুলিং ক্লাসের জন্য ব্লেইম শুড নেভার বি এন অপশন। আপনে কিসে কনসেন্ট্রেট করবেন এইটা অলওয়েজ ইম্পর্টেন্ট এই কারণে যে, পিপলরে ব্লেইম করারা নট জাস্ট নিজেদের আনএকাউন্টেবল রাখার ওয়ে ক্রিয়েট করে, লগে ইনক্রিজিংলি অথোরিটারিয়ান হইয়া ওঠার রেশনেলও তৈরি করতে থাকে। যেইখানে একটা ডেমোক্রেটিক সিস্টেমে অথরিটি বাধ্য হয়, নিজেদের একশন প্ল্যান নিয়া প্রোপিপল সল্যুশন বাইর করতে, ডিসিশন মেকিংএ ক্রিয়েটিভ হইতে। ইট ইজ নো ওয়ান্ডার, ডেমোক্রেসিতেই গভর্নেন্সের ক্ষেত্রে আপনে সবচেয়ে জিনিয়াস, মাল্টিফেসেটেড সল্যুশনগুলি পাইবেন। ডেমোক্রেসিতে ল, একাডেমিয়া, এডুকেশন, হেলথকেয়ার, ইকোনমি সবকিছু ইউজ কইরা সিস্টেম অফার করতে হয়। এই ড্রাইভ অথরিটারিয়ান গবর্নমেন্টে থাকেই না। আমি মোটামুটি নিশ্চিত আমাদের দেশের গবর্নমেন্টের ক্ষেত্রে, দে আর প্লেয়িং উইথ দ্যাট বিশ কোটি নাম্বার টু জাস্টিফাই দেয়ার ফেইল্যুর ইন গভর্নেন্স, এন্ড বিশ কোটি নাম্বারটা নিয়া যে ইন্ডিভিজুয়াল পিপলের ওপেক কনসেপশন আছে সেইটারে ইউজ কইরা পিপলরে মিসগাইড করে।

ফেসবুক টেসবুকে আতেলদের, ভার্সিটিপড়ুয়া তালেবদের আলাপেও দেখবেন অন মাস ব্লেমিংএ মনোযোগ। মানে লার্জ কোয়ান্টিটি অব পিপল যে প্লুরালিটি ধারণ করে সেইটা সম্পর্কে অনবগত। এইখানে দেখবেন হিন্দু বাড়ি পুড়লে মুসলমানের দোষ দেয়। কিন্তু মুসলমানের দোষ দিয়া তো আপনে বার থেকে চোদ্দ কোটি মানুষের একটা পুলরে শুধরায় ফেলতে পারবেন না! এই অন মাস ব্লেমিংএ এই আওয়ামী লীগ সরকারের যে সুবিধাটা হইছে, কেন্দ্রের বাইরে পেরিফেরিতে মুসলিম সেন্টিমেন্টরে ক্যাশ কইরা এরাই হিন্দু বাড়ি পুড়ায়, তারপর এই দলেরই আরবান ক্লাসের পোলাপান কেন্দ্রে নেরেটিভ তৈরি করতে থাকে মুসলমানদের ব্লেইম দিয়া। সাম্প্রদায়িকতা ব্যাখ্যার প্রেক্টিসটা সব সময়ই এইভাবে হইয়া আসার কারণে এর কোন সল্যুশনও নাই খেয়াল কইরেন।

তারপর, যে কোন কনফ্লিক্টিং সিচুয়েশনে, এক গ্রুপের কামকাইজের প্রেক্টিসরে বার হিসাবে সেট কইরা আরেক গ্রুপের কামের শুদ্ধিপরীক্ষা চলতে থাকে। এবং এইটা করে ভাবুকেরাই। মানে এমনকি ভাবুকদের মইধ্যেও লার্জ নাম্বাররে প্রসেস করার কোন ইন্টুইটিভ সেন্স দেখা যায় না। বিপুল মানুষের স্যাম্পল সাইজে, যে কোন মতের পক্ষে বিপক্ষেই আপনের এনাফ সাপোর্টার পাইয়া যাওয়ার কথা। ফলেই এক মতের সাপোর্টারের পজিশন দিয়া আরেক মতের সাপোর্টারদের আপনে গ্রেস দেখাইতে বা ব্লক মারতে পারেন না! যাচাইয়ের এই পদ্ধতি আজ হউক, কাল হউক একটা লুপের ভেতর ঢুইকা যাইতে বাধ্য। রেডিকেল শুনাইলেও একজন আতেল এই ক্ষেত্রে যেকোনো ইস্যুতে বরং ঠিক আর বেঠিক এই দুইয়ের ভেদাভেদ,কম্বিনেশন অফার করার ভেতর দেয়া নেরেটিভ তৈরি করবে। যেমন ধরেন, কুরবানীতে রক্ত-জবাই দেইখা অনেকে কুরবানী লইয়া মন্দ বলে, তার এগেইনস্টে কুরবানীঅলারা বলবে তাইলে তুমি গোশত খাও কেন! ভেগান হইয়া যাও। এইখানে ভেগান না হওয়ার হিপোক্রেসি বাইর কইরা কুরবানীর জবাইয়ের পক্ষে কিন্তু কোন লজিক পয়দা হয় না, বরং আরেক পক্ষের উইকনেস দেখায়ে কুরবানীর সমস্যা বা সুবিধারে এড়ায়েই যাওয়া হয়; এবং এইভাবে আসলে কোন সাচ্চা ভেগান কুরবানীর ব্যাপারে সিমিলার নালিশ জানাইলে তা রেডিলি ভেলিড হইয়া যাইতে পারে। এছাড়াও এর আগেও একবার বলছিলাম পরীমনি ইস্যুতে, পরীমনি নিয়া কথা কইতে আবু ত্বহা নিয়া কথা কওয়ারে যারা শর্ত বানায় তারা শয়তানের সাপোর্টার। এইরকম তো আরও আছে যে বলবে ফিলিস্তিন নিয়া বলার আগে উইঘুর নিয়া বইলা নাও, কাশ্মীর নিয়া বলার আগে পাহাড় নিয়া বইলা নাও। এইখানেও দুনিয়ার ভাস্টনেস, সাতশ কোটি মানুষের দুনিয়ার কেওসরে গ্রাস্প না করতে পারার ইশারা আছে। আর ডায়ামেট্রিক অপজিশনগুলি নিয়া ভাবুকদের আলাপ আরও প্রবলেমেটিক, জনৈক নওশীনঅলা বলবে, পরীমনির ডেরেছ নিয়া কথা কইলে বুলিং কিন্তু নওশীনের হজ্ব নিয়া কথা কইলে বুলিং না! এইভাবে বুলিং এর সুরাহা কিন্তু হইল না। বরং এক এন্ডলেস হিপোক্রেসি আবিষ্কারের ট্রেজার হান্টের শুরু হইয়া গেল। এন্ডলেস কারণ স্যাম্পল সাইজ তো বিশাল, হিপোক্রেসি আর কন্ট্রাডিকশনের নজিরের কখনোই কোন অভাব হইবে না আপনের। এইটা একটা অগস্ত্য যাত্রাই, এর কনক্লুশন যদি থাকে তা মূলত দুইরূপ- এক, দেশে পাকি প্রেতাত্মার জায়গা হবে না, দুই, দেশে ইসলামবিদ্বেষীদের জায়গা হবে না।

লার্জ নাম্বারের সেটের ভেতর এই লার্জ লার্জ সাবসেটগুলিরে যদি আমরা আমাদের বোঝাবুঝির ভেতর না আনতে পারি, অন্তত কগনিটিভ রিকগনিশন না থাকে, তাইলে আল্টিমেটলি আলাপের স্পেইসগুলি কিছু ব্লাইন্ডস্পটই ক্রিয়েট করতে থাকবে, যে ব্লাইন্ড স্পটগুলির প্রেজেন্স একটা ওপেক, আনকন্ডিশনাল, আনএকাউন্টেবল পাওয়াররে তৈরি ও সার্ভ করতে থাকবে। মানে আমরা মাঝে মাঝে বলি না, অমুক আলাপ দিয়া তমুক আলাপ বন্ধ কইরা দিলো সরকার- কথাটার একটা ইডিওলজিকাল সাবটেক্সট আছে- এমন একটা গবর্নমেন্ট আছে এইখানে যেইটা কিনা লার্জ নাম্বার অব পাবলিক ডিসকোর্স দিয়া সেইম নাম্বার অব পাবলিক ডিসকোর্সরে অফ কইরা রাখতে পারে। এমনি একটা ইনক্লুসিভ ডেমোক্রেটিক হুকুমতে গবর্নমেন্ট এত এত আলাপে চাপের ভেতরেই থাকার কথা উলটা।

এখন আলাপ তো বন্ধ করা যাবে না। আমি মনে করি এইখানে ভাবুকদের প্রধান কাজই হইল, লার্জ নাম্বারের একটা বেসিক বোঝাবুঝি মাথায় রাইখা, হরেক আলাপের ইন্টারসেকশনগুলিরে রিকগনাইজ করতে পারা, দরকার হইলে ইনভেন্ট করা। ইন্টারসেকশনালিটি ইম্পর্টেন্ট। ইন্টারসেকশনালিটির বুঝ ছাড়া এনভায়রনমেন্টালিজম আর হিউম্যানিজমরে কন্ট্রাডিক্টরি লাগবে আপনের, যেইটা ক্যাশ করবে অথরিটি। আপনের যদি অথরিটিরে রিয়েলি কোশ্চেন করতে হয়, আপনে এমন এক পরিবেশবাদের দাবি লইয়া আসবেন, যেইখানে লোকাল পিপলরে কমপ্লিমেন্টারি হিসাবে দেখা যাইতেছে।

অর্থাৎ এক পার্সপেক্টিভ দিয়া আরেক পার্সপেক্টিভরে না গাইলায়ে, পার্সপেক্টিভগুলার জ্যামিতিটা বুঝতে হবে আপনেরে। তাতে যেটুকু বাদ যাবে, তারে আমরা বলতে পারবো, আসলেই খারাপ। যেমন আমরা বলতে পারি, জুলুম খারাপ, ফেসিজম খারাপ, রেসিজম খারাপ। মূল জায়গাটা হইল, লার্জ নাম্বার যে কম্পলিকেশন তৈরি করতেছে, তারে কনসেপচুয়ালি গ্রাস্প করতে পারতে হবে, এই কাম আতেলের, এই কাম একাডেমিয়ারও, যারা একটা ওভারঅল ওপেসিটির ভেতরেও ভালো আর খারাপের ভেদরেখাটারে ঝাপসা হইতে দেবে না।

অগাস্ট ২৬, ২০২১

 

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →