মারেফতি শাশন
- রাজনিতির দাগ খতিয়ান: বাকশাল-দুছরা বিপ্লব এবং তার পর
- এস্টে কিরিয়েটিভ
- এডিটোরিয়াল: শ্যামলা এরিয়া
- মানুশ
- মাইনোরিটি লইয়া রকম শাহের বয়ান
- গনতন্ত্রের বুনিয়াদি ঘাপলা
- মারেফতি শাশন
- ইনছাফের পুলছেরাত অথবা ওয়াকিং অন দ্য এজ অব জাস্টিস
- বেক্তি বনাম শমাজ বনাম রাশ্টো
- বাপের জুলুম এবং জাতির আব্বারা
- খলিফা হইয়া ওঠা
- হিস্ট্রিওগেরাফি এন্ড পলিটিকেল লয়ালটি
এই জামানার পার্টি কালচার খুব পচ্চিমা মাল মনে হইলেও এইটার গোড়া ইরানে; কেবল পার্টি কালচার না, গার্ডেন, কার্পেট বা খোদ আইডিয়া অব ড্রয়িং রুমই পারশি মাল কইতে পারেন! এগুলারই আরেকটা ভার্শন পাইতেছেন দরবারি জলশায়, বাইজির দরবারে, এমনকি মাজারে। অন্তত ২৫০০ বছর আগে এইগুলা ইরানে পয়দা হইয়া শেই জামানার ইরানের কেপিটাল পার্সিপোলিশে শবচে ভালো দশায় পৌছায়।
ছেকান্দার বাদশা বা জারে অনেকে আলেকজান্ডার বইলাও চেনে, উনি পুরা পার্সিপোলিশ পোড়াইয়া ফেলেন আগুনে; ছেকান্দার বাদশা হইলেন ইতিহাশের পয়লা হুলিগান, তার নজরে পার্সিপোলিশ, তার ডিনার, পার্টি, ড্রয়িং রুম, কার্পেট, বাগান ইত্তাদি হইলো বেহুদা ফুটানি, এমনকি পাপ, মরাল বিমারি, তাই পোড়াইয়া দিলেন পুরা পার্সিপোলিশ।
ছেকান্দারের আগেও কত কত রাজা বাদশা দখল করছেন কত কত নগর বন্দর, তারা কেউ অমন মরাল ডাক্তারি করে নাই। ছেকান্দার কেন করলেন, ঐ ডাক্তারি বিদ্দার ছবকই বা কই পাইলেন ছেকান্দার?
ছেকান্দার হইলেন পেলেটোর খোয়াবের বাছুর, এরিস্টোটলের তালিম পাইছেন, গিরিক দর্শন আমল করছেন ছেরেফ, তার আমল মানেই পার্সিপোলিশের ছাই হইয়া জাওয়া।
ছেকান্দারের কিছু পরে বাদশা পিয়াদাশি বা অশোকও ছবক পাইছিলেন শিদ্ধার্থ বা বুদ্ধের, কলিংগো জুদ্ধের পরে বৌদ্ধ হইছিলেন উনি। ঐ জুদ্ধে নাকি লাখ লাখ মানুশ আর জানোয়ারের মরন আর তাগো রক্তে লাল দয়া নদি দেইখা পিয়াদাশির মন আউলা হইয়া গেছিলো, তারে শান্তি দিছে তখন বৌদ্ধ ধম্ম! কিন্তু জিবের নাগর, খুনে বেদনা পাওয়া বৌদ্ধ পিয়াদাশিও ১৮ হাজার জৈনরে পাইকারি খুনের অডার দিছেন। কেন? কারন ওনাদের এক গুরু নাকি একটা ছবি আকছিলো, তাতে দেখা জাইতেছিলো, গৌতম বুদ্ধ এক জৈন দরবেশকে কুর্নিশ করতেছে।
তাইলে দেখা জাইতেছে জে, ছেকান্দার আর পিয়াদাশি বা অশোক, দুইজনেরই নিজের বয়ান আছিলো, তারা বয়াতি, এলেমদার, থিংকার বাদশা এবং বেদরদি খুনি! খেয়াল করলে দেখবেন, হিটলার বা মুছোলিনি বা এস্টালিন বা এখনকার চিনের পেছিডেন, ইনডিয়ার উজির-শরদার বা পিএম, এনাদেরো নিজেদের বয়ান আছিলো, এনারা বয়াতি, আতেল, ভাবুক, থিংকার, দার্শনিক শাশক। লগে আমরাও কিন্তু একজন বয়ানঅলা ( বাকশালি উন্নয়ন) থিংকার-রাইটারের শাশনে জিন্দেগি কাটাইতেছি এখন। এনাদের ভিতর দুইটা জিনিশ কমন পাইবেন–নিঠুরিয়া মন আর নিজের বয়ান।
নিজেদের বয়ানের দুশমনকে এনারা মরাল বিমারিতে ধরা ঠাউরায় আলগোছে এবং টার্মিনেট করে, কোন মরাল ডিলেমা নাই, কোন শন্দেহ হয় না নিজেরে, ১০০% বেদরদি নিঠুরিয়া মন লইয়া শাশন করতে পারেন এনারা! দুনিয়ায় পেলেটোর খোয়াব তরজমা করছেন, কইরা জাইতেছেন এনারা।
আমার আশপাশে একটা আন্দাজ দেখতে পাই আমি, মাঝে মাঝেই; এমন জে, এলেম মানুশকে দরদি বানায়। এইটা ভুল আশলে, মিছা কথা! বাস্তবে জেনোছাইডের জন্ন বয়ানের তালিম লাগে, একটা বয়ানের এলেম ছাড়া জেনোছাইডের ডিছিশন লওয়া জায় না। পার্ছোনাল জেলাছি আর দুশমনি দিয়া খালেদাদের জেলে ঢুকানো জায় বড়জোর, কিন্তু কিশোরদের কান ফাটানো জায় না, মুশতাকদের খুন করা জায় না, আরো বেশুমার রিমান্ড-গুম-খুন-ক্রছফায়ারে পাইকারি খুন ঘটানো জায় না। এগুলার জন্য এস্পেশাল একটা টেনিং লাগে, একটা বয়ানে নিজেরে শান দিয়া ধারালো, নিঠুরিয়া বেদরদি একটা মন বানাইতে হয়, নাইলে অতো খুনে বুক কাপে, মরাল ডিলেমা হয়, নিজের এখতিয়ার লইয়া শন্দেহ গজায়।
তাইলে বেপারটা কি, কেন এবং কেমনে এমন হয়? শমাজে এমনিতে অনেকগুলা বয়ান একটিভ থাকে, ফলে শবগুলাই থাকে দুর্বল, একটু আবছা; ফলে মানুশেরা নিজেদের ভিতর অনেকগুলা টেনশনে থাকে, কন্টাডিকশনে ভরপুর থাকে আমজনতা এবং এইটা ভালো আশলে! এই কন্টাডিকশনগুলা আখেরে দরদ পয়দা করে মনে! বয়ানগুলা দুর্বল হবার কারনে নিঠুরিয়া মরাল গজাইতে পারে না ভালো, বরং অনেক বেশি ফিলিং চর্চা হয়। ফেমিলি ইত্তাদিও ফিলিং দিয়া ফয়ছালা করে জিন্দেগি।
উল্টাদিকে, কোন একটা বয়ান বা ডকট্রিন ফিলিং ছাড়ানো একটা পারপাস দেয় মানুশের জিন্দেগিরে; আর মজবুত একটা পারপাস আপনারে হরদম ছবক দিতে থাকে জে, ফিলিং মানে দুর্বলতা; ইমোশন মানে পারপাসের আলগা হইয়া জাওয়া, এমনকি আপনার পারপাসের বেপারেও হইতে হবে নিশ্কাম, ইমোশনের কুয়াশায় পারপাছ আবছা হইয়া পড়ে!
এর লগে জোগ হইতেছে, জিন্দেগি খুব ছোট্ট, ছবরের টাইম নাই, তাড়া আছে, মরার আগেই তো কাম শারতে হবে! ফিলিং উতরাইয়া উঠতে না পারলে, নিঠুরিয়া মন বানাইতে না পারলে, শকল হার্ডল জরুর টার্মিনেট/খতম করা না গেলে পারপাস পুরা করা জাবে না এই ছোট্ট জিন্দেগিতে!
জে কোন একটা বয়ানের এমন মজবুত পারপাস কারো মন পুরাটা দখল করলে পেরায়ই অমন একটা তাড়াহুড়া গজাবারই কথা! আর তেমন কারো হাতে জদি তাবত খমতা নাজিল হয়, তেমন কারো শাশনে জেমন থাকবার কথা, আমরা তেমনই আছি এখন।
এখন, দুনিয়া অমন হাজারো বয়ান আছে, পোরতিটা বয়ানের একটা এথিক্স আছে, শেই এথিক্স বরাবর কতগুলা মরাল কোডও আছে; এবং কোন একটা দেশেই ঐ হাজারো বয়ান থাকবে, আছে এবং দুশমনিতে ভরা বহু এথিক্সও থাকে, আছে। এই জামানার একাডেমির একেকটা ডিছিপ্লিনও আশলে অমনই একেকটা বয়ান! এবং ডিছিপ্লিনগুলা তাই আখেরে একেকটা দুশমন এথিক্সও নাজিল করে দেশে, শমাজে!
একাডেমিতে পলিটিক্স বা রাজনিতিও একটা ডিছিপ্লিন হিশাবেই আছে, কিন্তু বাস্তবে পলিটিক্স মানে একটা একক কোন এথিক্সের হুকুমত না, বরং বহুত দুশমন বেশুমার এথিক্সের ভিতর একটা শালিশি! শেই শালিশির রায়ের নামই আইন, রাশ্টের মুছাবিদা বা কন্সটিটুশন। শেই কারনেই আইন বা রাশ্টের মুছাবিদা খুবই টেম্পোরাল জিনিশ, শমাজে নয়া এথিক্স হাজির হইলে জেনো নয়া শালিশি করা জায়, নয়া ফয়ছালায় জেনো জাইতে পারি আমরা! দুশমন বয়ান আর এথিক্স জেনো মারামারি-কাটাকাটি না করে, শেই মর্মে শকল বয়ানের ভিতর চুক্তি হইতেছে একটা পলিটিক্স নামের শালিশিতে। পলিটিক্স নিজেই জদি একটা বয়ান হইয়া ওঠে বা কোন একটা বয়ান আর এথিক্সের দখলে চইলা জায় রাশ্টো, শেই রাশ্টো তখন জালেমের হুকুমত, বেদরদি নিঠুরিয়া খুন তখন হরদম এজাজত পাইয়া জায় ঐ বয়ানের আদালতে/বিবেকে, পারপাস পুরাইয়া মরার লোভ তখন পাইয়া বশে বয়াতি শাশকেরে!
তাই বহু বয়ানের পিছফুল শালিশির ভিতর দিয়া একটা টেম্পোরাল মুছাবিদার বদলে কোন একটা বয়ানের শাশন মানে জুলুমের হুকুমত। কিন্তু মানুশ তো বয়ান এড়াইতে পারবে না, কোন একটা বয়ানের তাবেদার হইয়া উঠতেই পারে মানুশ, তেমন কোন বয়াতি তাইলে কি আমরা শাশক হইতে দিবো না? বা আমি বা আপনিই বা কোন একটা বয়ানের পারপাস পুরা করার নেশায় নিঠুরিয়া খুনি না হইয়া থাকবো কেমনে?
এইটার অনেক বেশি উপায় নাই মনে হয়! দুয়েকটা ফয়ছালা দেখতে পাই আমি। আমার হিশাবে শবচে মোক্ষম মনে হয় একটা ‘বটমলাইন’ মাথায় রাখা, তারপর ঐ বটমলাইনের লগে হরদম ক্রছচেক করা।
এই বটমলাইনটা কি, কেমন? আমার হিশাবে ঐ বটমলাইনটা খুবই ছিম্পল: জুলুম হারাম। জুলুম কি? জুলুম হইলো গোলামির ফল, কাউকে জে কোন গোলামিতে রাখলেই জুলুম পয়দা হয়। গোলামি কি? জে কেউ জা কিছুতে নারাজ, তারে তা করতে বাদ্ধ করার নাম গোলামি; মানুশের কবুলিয়তের বাইরে মানুশকে গায়ের জোরে শাশন/বাদ্ধ করার নাম গোলামি।
এইখানে আরেকটা বেপার কিলিয়ার হইতে হবে আমাদের। বাচ্চা, ছিকনেস, কিরমিনাল ইত্তাদি তদারকির বেলায় কবুলিয়তের ফুশরত মিলবে না হামেশাই! তাইলে উপায়? উপায় হইলো, এইগুলারে প্যারেন্টিং ক্যাটেগরিতে ফেলতে হবে; প্যারেন্টিংকে ডিফাইন করতে হবে, শেই ডেফিনিশনকে পোশ্নও করতে হবে হরদম। প্যারেন্টিং-এর লিমিট ছাড়াইয়া কখন জুলুম/টর্চার শুরু হয়, শেইটা ঠিক করতে আমাদের ইমোশন আর ফিলিং এস্তেমাল করতে হবে। ফিলিং আর ইমোশনে আরো বেশি গুরুত্ত দিতে হবে আমাদের, আমাদের বয়ানগুলার লগে ফিলিং আর ইমোশনের জেই কন্টাডিকশন, তারে কেমনে কমানো জায়, শেই দিকেও নজর দিতে হবে।
কেবল মানুশ না, শকল মাকলুকাতের বেলাতেই জুলুমকে মিনিমাম করতে পারতে হবে; জুলুম/গোলামি জেকোন পরান বা জিবের শুখ/হেপিনেস ঠেকাইয়া দেয়; জিন্দেগি ছোট্ট, আশলেই ছোট্ট, জতোটা পারি নিজের এবং অন্নের শুখের বন্দোবস্ত করাই পলিটিক্স অথবা জে কোন বয়ান/ডিছিপ্লিনের আলটিমেট মনজিল! এস্টালিনের খাদেম জিজেকের বয়ানে ইমান আইনা শুখের দরকারে শন্দেহ কইরেন না…
#রকমশাহেরবয়ান ২৩ মার্চ ২০২১
…
রক মনু’র লেখা “কবুল, কবুল, কবুলিয়তের শাশন” বইটা কিনতে পারেন এই লিংক থিকা:
https://www.rokomari.com/book/203281/kobul-kobul–kobuliater-shashon
রক মনু
Latest posts by রক মনু (see all)
- হিস্ট্রিওগেরাফি এন্ড পলিটিকেল লয়ালটি - অক্টোবর 18, 2024
- খলিফা হইয়া ওঠা - সেপ্টেম্বর 2, 2024
- আমাদের নিয়ত এবং বাংলাদেশের ফিউচার - আগস্ট 25, 2024