Main menu

মাইনোরিটি লইয়া রকম শাহের বয়ান

This entry is part [part not set] of 12 in the series রকম শাহ'র বয়ান

বাংলাদেশি হিন্দুর বেদনা

অন্নের বেদনা বুঝতে শবচে দরকারি জিনিশের নাম দরদ। কেবল বেদনা না, আরেকজনের শুখও আপনে বুঝতে পারবেন না দরদ ছাড়া। এবং দরদ আর ভালোবাশা দুই জিনিশ; নিজের বাছুর ভালোবাশেন আপনে, তার শুখ বা ব্যথা–দুইটাই বুঝবেন শহজে, তার হাশি বা ফুর্তি ভালো লাগে আপনার, কত কি করেন তার জন্ন, তার ভালো লাগার দরকারে!

কিন্তু দুনিয়ায় আপনে ভালোবাশতে পারবেন ছেরেফ ২/৪ জনরেই, বেশিরভাগ মানুশ বা আর শব মাকলুকাতেও আপনের ভালোবাশা নাই; তাই ছেরেফ ভালোবাশা দিয়া আর কারো শুখ বা বেদনা বুঝতে পারবেন না আপনে, এইটার জন্ন আপনের লাগবে দরদ। দরদ আর ভালোবাশার ফারাক বুঝতে আরেকটা ব্যাপার ভাবতে পারেন; ভালোবাশার মানুশটা বা কুত্তাটা বা গাছটা চোখের শামনে না থাকলেও, ৩ মাশ মোলাকাত না হইলেও মনে পড়তেছে, তার হালত চিন্তা কইরা উতলা হইতেছেন, বিচ্ছেদ নামের একটা মনপোড়া ঘেরান পাইতেছেন বুঝি, কিন্তু গরহাজিরে দরদ অতো উতলায় না, চোখের শামনে একটা এক্সিডেন্ট দেখলেন বইলাই ঠাং ভাংগা লোকটারে হাশপাতালে লইয়া গেলেন, মনে মনে হয়তো ভাবতেছেন, ক্যান জে এই দিকে আইছিলাম! মরাল ডিউটির বাইরেও তার বেদনা আপনের উপর আছড়াইয়া পড়তেছে ছাতিমের কাচা গুইয়া গন্ধের মতো!

তো, ভালোবাশা বেশ অটোমেটিক ঘটনা, পরানের ভিতর আগেই ঢুইকা আছে জেন! কিন্তু দরদের ছবক লাগে। চর্চার ভিতর দিয়া আপনে দরদ বাড়াইতে পারেন, আবার দরদ নাই কইরা দিয়া পুরাই নিঠুরিয়া এক শয়তান হইয়া উঠতে পারেন। ভাবেন, জেই মোলায়েম লোকটা পুলিশে ঢুকলো, ৩ বছর পরে শেই লোকটা রিম্যান্ডে পাইয়া একজনের নখ উপড়াইয়া ফেলতেছে, তার ফেমিলিরে হাতুড়ির ছবি পাঠাইয়া কইতেছে, পয়শা লইয়া আশো, নাইলে জয়েন্টে জয়েন্টে হাতুড়ি দিয়া বাড়ি দিবো–কেমন চর্চার ভিতর দিয়া এইখানে আইলো শে! তার ভালোবাশা কিন্তু কমে নাই, বউয়ের একাউন্টে টাকা রাখতেছে, মাইয়ার মুখে আব্বা ডাক শুনলে তার মন নাচে, ফোকলা মায়রে ভর্তা কইরা দিতেছে পান-শুপারি, আরেকটা ফেলাটে রাখছে আরেকটা মাইয়ারে, রিম্যান্ডের ঐ লোকটার নখ তার ফেমিলিরে পাঠাইয়া জেই টাকা পাইলো, ঐ টাকাতেই কোরবানির আগে নকল দাত বানাইয়া দেবে ঐ মাইয়ার বাপেরে! তার ভালোবাশা আরো বাড়ছে এই কয় বছরে, দরদ একদম শুন্ন হইয়া!

আমি নিজে খুব দরদি মানুশ আছিলাম না, কিন্তু গত ১০/১৫ বছরে আমি এইটা একটু একটু কইরা বাড়াইতে পারছি মনে হয়! বিবেক নামের মরাল দড়ি তো আছেই, তার বাইরেও দরদ নামের জিনিশটা আমি চর্চা করতে চাইছি। আমি তাই মাইনোরিটির বেদনা বুঝতে পারি মনে হয়!

কিন্তু কেবল দরদ না, মাইনোরিটির বেদনা বুঝতে পারার আরো কিছু রাস্তা আছে আমার! এই জিন্দেগিতে আমি জে কোন কালেকটিভে মাইনোরিটিই আছিলাম মনে হয়–নিজের ফেমিলি থিকা ভার্ছিটির র‍্যাগ, নিজের ডিপার্টমেন্ট-কেলাশ, হল, চাকরি–শবখানেই তো! মাইনোরিটির ফিচার জদি ভাবি ‘কমজোর’, তাইলে ছাত্রলিগ আর ছাত্রদলের শাশনে কাটাইছি কয়েক বছর, রুম থিকা বাইর কইরা দিতে চাইছে–এগুলার ভিতরে আছিলাম। এখন, এই তুমুল বাকশালে জয়েন করতে পারতাম, ওনাদের ডিজিটাল আর্মির ছিপাই হইতে পারতাম, হই নাই। ফেছবুকে আতলামি করি, বয়ান দেই, কেউ পাত্তা দেয় না, দুয়েকজন জারা পছন্দ করে, তারাও আমার ভাশা বা বানানে মহা বিরক্ত, জে কোন অর্থেই মাইনোরিটি আমি, কেবল ধর্ম আর জাতি বাদে! এই ধর্মের মেজরিটিও আশলে নামে, ধর্মে জারা মাইনোরিটি, তারা হয়তো মেজরিটি ভাবে বা ধর্মের মাইনোরিটি হিশাবে আমার বাড়িতে হামলা হবে না, কিন্তু ধর্ম বলতে আমি জা বুঝি, আমার ধর্মরে আমি জেমনে তাফছির করি, নিজের বয়ানে হাজির করি, তা আশলে কেবল মাইনোরিটি না, আমি একলাই হয়তো!

কিন্তু এইভাবে ভাবা হয়তো ঠিক হয় না, দুনিয়ার শবাই কোথাও না কোথাও মাইনোরিটি, অন্তত কমজোর অর্থে! বাংলাদেশে নিজেরে মাইনোরিটি কইয়া মাইনোরিটির বেদনার মাপে আমার বেদনারে দেখা ঠিক হবে না, তাদের বেদনারে পেরায়ই ছোট করা হবে তাতে!

তো, বাংলাদেশে মাইনোরিটি বলতে জাতি হিশাবে মাইনোরিটির আলাপ ততো নাই, কেবল ধর্মের মাইনোরিটিই বুঝায় লোকে, তাও আহমদিয়াদের না, এমনকি খিরিস্টানদেরো না, বৌদ্ধ না, কেবল হিন্দুরাই জেন মাইনোরিটি এই দেশে! এই ভুলভাল মানার পরেও কইতে হয় জে, হিন্দুদের উপর হামলা বাস্তব, হিন্দু হিশাবেই তারা জুলুমের শিকার হয় মাঝে মাঝে।

বাংলাদেশে কলিকাতাই ভাশা, এছথেটিক্স, বাংগালি জাতিবাদ, বাকশালি জুলুম জেমনি কমাইতে হবে আমাদের, তেমনি হিন্দুদের উপর জুলুমও কমাইতে হবে, জে কোন জুলুমই খারাপ, তাই হিন্দু হিশাবে জেই জুলুম, তাও শমানই খারাপ!

তো, হিন্দুদের উপর জুলুম কমাইতে কি কি করতে পারি আমরা? মেজরিটি ছেরেফ জুলুম না করলেই তো হয়! কিন্তু তা কি হইলো, মেজরিটি তো জুলুম করতেছে, অন্তত মেজরিটির নামে, মেজরিটির জিকির করতে করতে হিন্দুদের উপর হামলা করা জায়, জাইতেছে আরামে! দেশের শরকার, পুলিশের এই ব্যাপারে জা জা করা উচিত, তা করে না তারা, তাদের জুলুমের ভাগ আমরা শবাই পাইতেছি, তাই হিন্দুরাও পাইতেছে। এগুলা ঠেকাইতে পারতেছি না আমরা, বা হিন্দুরা। তবে শরকারি জুলুম হয়তো হিন্দুদের উপর তুলনামুলক কম, অন্তত এই বাকশালি হুকুমতে! ছেরেফ কোরোছফায়ার চিন্তা করেন, দেশে হিন্দু জদি হয় ১০%, কোরোছফায়ারের ভিকটিমদের ভিতর কি তাদের ১০% শেয়ার আছে? ঠিকঠাক হিশাব বাদেই আন্দাজ করতে পারি, নাই। ইনডিয়া হিন্দু রাশ্টো, বাকশালি হুকুমতে তাই ইনডিয়ান হাতিরেও ‘আপনি’ কইতে হয়, বাংলাদেশে হিন্দুর শার্থ দেখায় ইনডিয়া একটিভও থাকে হরদম! ইতিহাশের এই শর্তগুলা জেমনি একদম আমলে না নেওয়া ঠিক হবে না, তেমনি এমন কোন ঘটনার দোশ দেশের হিন্দুদের দেওয়াও ঠিক হবে না!

কিন্তু এইগুলা বাদে জদি ভাবতে চাই, মানে হরদম হাজির থাকার পরেও একটু মুলতবি রাইখা জদি ভাবতে রাজি হই দুয়েকটা পোশ্ন–দেশের হিন্দুরা কি কি করতে পারে তাদের উপর জুলুম কমাইতে–তা কি তারা করতেছে? কতটা করা শম্ভব আশলে, তাদের পক্ষে? ইনডিয়ার বদলে তারা জে বাংলাদেশের নাগরিক, এইটা কি একদমই নেগেটিভ তাদের জন্ন? বাংলাদেশটারে ইউজ কইরা তারা কি এমন কিছু করতে পারতো বা পারে জা ইনডিয়ায় পারতো না?

বাস্তবে জদি দেখেন, বাংলাদেশটারে ইউজ কইরা এই দেশের হিন্দুরা এখনি একটা ফায়দা হাছিল করে, অন্তত পোলা হিন্দুরা, ইনডিয়ার হিন্দু হইলে জেইটা পারতো না! ইনডিয়ায় ২০০৪ শালে ১৯৫৬ শালের আইনটারে হালনাগাদ করছে দেখলাম, তাতে হিন্দু মাইয়াদের মা-বাপের ওয়ারিশ বানানো হইছে, পোলা বাছুরের শমান ওয়ারিশ। কিন্তু বাংলাদেশের পোলা হিন্দুরা বাংলাদেশটারে ইউজ কইরা মাইয়া হিন্দুদের ঠকাইতে পারতেছে আরামে!

২০২০/২১ শালে দেখলাম বাংলাদেশের একটা হিন্দু গুরুপ হিন্দু ওয়ারিশ আইনটারে হালনাগাদ করতে শরকারের লগে দেন-দরবার শুরু করছে; মজার ব্যাপার হইলো, হিন্দু-বৌদ্ধ-খিরিস্টান মোর্চার রানা দাশগুপ্ত ঐ ঘটনারে কইতেছে, কিছু এনজিও আর মোছলমানদের উশ্কানি! দেশে ছেকুলারদের ভিতর জারা হিন্দু আছেন, ছেকুলার থাইকাই তারা হিন্দু থাকতে পারেন, জেমনি ছেকুলার থাইকাই মোছলমানও থাকা জায়, এইটা নিজ নিজ ধর্মরে বুঝবার একটা নজর মাত্র; তো, এই নজরে হিন্দু মাইয়ারা জেন ওয়ারিশ হইতে পারেন, তার ওকালতি করবারই কথা। পোলাদের শমান জদি এখনি নাও করা জায়, অন্তত ওয়ারিশ হিশাবে দাবি করবার কথা। জেমনি মোছলমান ছেকুলাররা মাইয়া-পোলা শমান ওয়ারিশ, এমন দাবি করবেন, শেইটাই হবার কথা। মোছলমানদের তুলনায় হিন্দুদের কিছু বাড়তি শুবিধাও আছে এই ব্যাপারে; মোছলমানদের কেতাবে জেমনি কিলিয়ার-কাট হুকুম আছে বইলা দাবি করে মোছলমানরা, তেমনটা হিন্দু ধর্মের বেলায় করা কঠিন, হিন্দুদের বহু শাস্ত্র, বহু মত; উনিশ শতের কলোনিয়াল কলিকাতায় ঐ কারনেই রামমোহন বা বিদ্যাশাগর বাড়তি মওকা বাইর করতে পারছিলেন শাস্ত্রে।

কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখতেছি, বাংলাদেশটারে ইউজ কইরা শবচে মাইয়া-দুশমন শাস্ত্রেই ভর করতেছেন রানা দাশগুপ্তরা বা হিন্দু ছেকুলাররাও এমনকি! দুনিয়া এমনিতে খুব ঘোরেল জায়গা বটে, বাম ছেকুলার হিন্দুরা মার্ক্সের দোহাই দিয়া আমাদের হয়তো কইবেন, আমরা তো পেরাইভেট মালিকানাই রাখতে চাই না, আমরা কেমনে ওয়ারিশ বানাইয়া মাইয়াদের পেরাইভেট মালিকানার দিকে ঠেইলা দিবো! এই কথা কইয়া পোলা ওনারা ভোগ করতে থাকবেন বাপের দৌলত!

কয়দিন আগে রিদয় মন্ডল ইশকুলে ছাইন্স বুঝাইতেছিলেন, শেইটা কেমনে জেন ধর্মের দিকে ঘুইরা গেল, শরকার তারে গেরেপ্তার করলো, পরে মিডিয়ায় অনেক নাটক কইরা একটা পরিবেশ বানানো হইলো, তারপর জামিনে বাইরাইলেন উনি; ধর্মের ব্যাপারে হিন্দু ছেকুলাররা এমনে দেখেন পেরায়ই, ইছলাম তো বটেই, হিন্দু ধর্মের বেলাতেও, কিন্তু ঐ তারাও কেন জেন মাইয়া হিন্দুদের ওয়ারিশ করার ব্যাপারে আলাপ করেন না! রিদয় মন্ডল নিউজ হইলেন ছাইন্স আর ধর্মের ইশুতে, মাইয়া হিন্দুদের ওয়ারিশ বানাবার কোন একটিভিজমে না। লেখক ভট্টাচার্জ এই ব্যাপারে কিছু কইছেন কি? বাপ্পাদিত্ত বা মেঘমল্লার?

মজার ব্যাপার হইলো, রানা দাশগুপ্ত ঐ আইন হালনাগাদ করার ব্যাপারে শমাজের দোহাই দিছেন, শমাজের লগে নেগোছিয়েশনের ভিতর দিয়া কেন এবং কেমনে আগানো দরকার, শেই ব্যাপারে কথা তুলছেন, নছিহত করছেন এবং ঐ কারনেই ঐ উশ্কানির কথা কইতেছিলেন হয়তো। এই জে উনি হিন্দু শমাজের ভাবাভাবিরে খুব পাত্তা দিলেন, এনারাই কিন্তু আর শব ব্যাপারে আরো বড়ো মোছলমান শমাজের ভাবাভাবিরে পাত্তা দেন না! শমাজের লগে নেগোছিয়েশনের ভিতর দিয়া জদি আগাইতে চান, তাইলে মংগল শোভাজাত্রার ব্যাপারে রানা দাশগুপ্তের একটা এস্টেটমেন্ট পাবার কথা না আমাদের! ওদিকে, এই বাকশাল শরকারের আইন দপ্তরের উজির কইছেন জে, হিন্দু নেতারা একমত হইয়া না আশলে কিছু করার নাই আমাদের! উনিও এই ব্যাপারে শমাজের ভাবাভাবি আমলে নেবার জরুরত দেখলেন, কিন্তু ঐ শোভাজাত্রা থিকা ইলেকশন–এই শব ব্যাপারে আরো বড়ো শমাজের তোয়াক্কা করেন না!

এখন, আমি কি জনাব দাশগুপ্তরে শমাজের তোয়াক্কা না করতে কইতেছি? মোটেই না। আমরা জদি একটা শান্তির রাস্তা তালাশ করি, শেই রাস্তায় এমন ইশুগুলার ফয়ছালা করতে চাই, কেমনে করা উচিত? এগুলা লইয়া পাবলিক বাহাস হবার কথা আশলে, মিডিয়ায় টকশো হবে, পক্ষগুলা ক্যাম্পিং করবে, জনতার দরবারে তাদের পজিশন তুইলা ধরবে, দাওয়াত দেবে জনতারে। তারপর গনভোট হবে, ভোটের ভিতর দিয়া আমরা ফয়ছালা করবো; এবং শেই ফয়ছালাও হবার কথা মেয়াদি, হয়তো ১০ বছর, ততদিনে শমাজে নতুন মানুশ আশবে, পুরানা অনেকে থাকবে না, দাওয়াতের নয়া নয়া তরিকা হাজির হবে, শক্তিমান আতেল-বয়াতি আশবে, তারা জনতারে কোন ব্যাপারে হয়তো রাজি করাবে, আবার গনভোট হবে, এমনে হয়তো নয়া কোন ফয়ছালা পাবো আমরা! শকল আইন কানুন আশলে মুছাবিদা মাত্র, রাশ্টের কন্সটিটুশনও তাই, এগুলা হালনাগাদ করতে হয়, এগুলা পার্মানেন্ট করা, তেমনে ভাবা ভুল, শমাজে তাতে মারামারি বাড়ে, নয়া মানুশ আর নয়া জামানারে আমলে না নিলে শান্তি বরবাদ হইয়া জায় শমাজের।

আমার এই আলাপকে ‘মায়ের চাইতে মাশির দরদ বেশি’ বইলা টিটকারি মারতে পারেন ওনারা, তবে আমারে টিটকারি মারার পরে এই ব্যাপারে ভাববেন একটু, শেইটাই আমার আবদার!

কিন্তু এগুলার বাইরে বাংলাদেশ নামের রাশ্টের আর কি ফায়দা লইতে পারেন ওনারা? আমার হিশাবে আরো অনেক ফায়দা লইতেছেন এখনি, এবং আরো লইতে পারেন এবং তার অনেকগুলা হিমালয়ের দখিনের এই মস্ত ভুবনে খুবই দরকারিও!

ইনডিয়ার তুলনায় বাংলাদেশে জাতপাত মাইনা চলার দরকার, শামাজিক পেরেশার অনেক কম; বহু হিন্দু জাতের লিমিটের বাইরে বিয়াশাদি করতেছেন, পাতের ব্যাপারে অচ্ছুত হবার খপ্পর থিকা রেহাই পাইতেছেন একটু আরামে; এমনকি তাই না, বাংলাদেশে বামুন হবার বেলায় বেদের খুবই ওভারলুকড কিছু কানুনের ফায়দা পাইতেছেন ওনারা, ইনডিয়ায় জেইটা পাইবেন না! মানে বঙ্কিমের বরাতে জানি, বামুন আশলে জাতের ব্যাপার না ততো, শুদ্রও বামুন হইতে পারে, এইটা এলেমের একটা ছিলছিলার মামলা। বাস্তবে, এখনকার বাংলাদেশে শুদ্ররা মন্দিরে বামুনের কাম করতেছেন শুনছি, বামুন হয়তো নাই কোন এলাকায় বা কোন মন্দিরে/মন্ডপে বামুন জাইতেছেন না–হয়তো মেথর পট্টিতে! ইনডিয়ায় বামুনের রাস্তায় হাটার কারনে, বামুনের বদনা ছোয়ার কারনে শুদ্র গাভিন মাইয়ারে পিটাইয়া মারার ঘটনাও আছে! বাংলাদেশের হিন্দুরা জাতপাতের ঐ পুরা ব্যাপারটা অনেক আরামের কইরা তুলতে পারেন আশলে, ইনডিয়ার হিন্দুদের ছবকও দিতে পারেন। ধরেন, শাস্ত্র থিকাই দেখাইয়া দেওয়া জায় জে, বামুন আশলে কোন জনমগত ব্যাপার না, এইটা ধর্ম এবং এলেমের মামলা; এইটা ওনারা বঙ্কিমের মতো বামুন বয়াতির দোহাই দিয়াই দাবি করতে পারেন।

অথবা ভাবেন, একজন হিন্দু, একদম শাস্ত্র মানা হিন্দু, জিনি হিন্দুদের ভিতর এক শময় গোশত খাবার রেওয়াজের কথা শাস্ত্রে পাইছেন, কিন্তু তা বাদেও জিনি মনে করেন জে, শেই ছহি গরু আর নাই দেশে, বা খুবই কম, এখনকার গরু হাইবিরিড, তার উপর মেডিকেলি পলুটেড, জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং-এর ফল; তাই পিওর দেশি গরুর গোশতের ব্যাপারে শন্দেহ করার উপায় থাকলেও বিদেশি গরুর গোশত খাইতে কোন বাধা নাই! ইনডিয়ায় বহু শুদ্র এমনিতেই গরু খায়, মোছলমানরা খায়, অন্তত খাইতে চায়, শেই শুদ্র আর মোছলমানদের পিটাইয়া মারে বিজেপিরা, কিন্তু বাংলাদেশের শুদ্ররা অমন ভিকটিম হবেন না, গরু খাইয়া মবের পিটানিতে মরতে হবে না বাংলাদেশে। তাইলে বাংলাদেশ মানে ঐ হিন্দুর জন্ন ছিকিউরিটি আশলে! মাইনোরিটি হবার কারনে তাদের একটা বাড়তি শুবিধা হইলো, শমাজ তাদের উপর হামলা চালাইতে গেলে তারা রাশ্টের শেলটার পাইতে পারেন, আবার রাশ্টো হামলা চালাইতে গেলে শমাজের! এইটা মোছলমানদের ভিতর জারা মাইনোরিটি মোছলমান, তারা পান না পেরায়ই! এইটা বুঝতে আহমদিয়া মোছলমানদের উপর পেরেশারের কথা ভাবতে পারেন। ওদিকে, বাংলাদেশে কোরবানির টাইমে বহু হিন্দুর মন খারাপ হয় আলবত, এই ব্যাপার বাদেও আমাদের কোরবানির জবাই আরো ছিস্টেমেটিক হওয়া উচিত, রাস্তার উপরে গোবর-রক্তের এমন ডিছপ্লে না কইরা পারা উচিত আমাদের! আমাদের লোকাল গভমেন্টের আরো অনেক কিছু করার আছে এই ব্যাপারে!

বাংলাদেশের পলিটিকেল পাট্টিগুলা জদি খেয়াল করেন, কোনটারই এন্টি-হিন্দু কোন এজেন্ডা নাই, অন্তত লিখিত ইশতেহারে, কোন কোনটার ভিতরে ভিতরে কনভার্শনের একটা বাশনা থাকতে পারে, কিন্তু হিন্দু খেদাইয়া দেবার এজেন্ডা নাই। আনলাইক ইনডিয়া, বাংলাদেশের দলগুলা আশলে মাইনোরিটি পলিটিক্স করে না, ধর্মের মেজরিটির ইন্টারনাল পলিটিক্স চলে এইখানে। আনলাইক ইনডিয়া, বাংলাদেশে হিন্দুদের কেউ বিদেশি ভাবে না, হিন্দুধর্মরে কেউ বিদেশি ভাবে না, পলিটিকেল ইতিহাশের হিন্দু আমলকে বিদেশি শাশন বলে না কেউ; হিন্দুদের এবাদত, তাদের লাইফ এস্টাইল, তাদের খাবারের মেনু লইয়াও কোন নালিশ নাই বাংলাদেশে; বরং চাকমা-মারমাদের ব্যাপারে আজেবাজে কতগুলা কথা চালু আছে জাতে হিন্দু আর মোছলমান–দুই কিছিমের বাংগালিই হয়তো শরিক!

এই তফাত খেয়াল করার দরকার আছে, এই কারনে বাংলাদেশের পলিটিকেল পাট্টিগুলার থিকা ছিকিউরিটির চুক্তি করতে পারে হিন্দুরা, কিন্তু ইনডিয়ায় বিজেপির লগে মোছলমানরা ছিকিউরিটির চুক্তি করতে পারে না!

আওয়ামি লিগের ফান্দে পড়া ঠিক হবে না বাংলাদেশের হিন্দুদের! দেশে এন্টি-হিন্দু একটা ছেন্টিমেন্ট বাস্তব, মব কালচার, দখলদারি, ডাকাতি ইত্তাদি বহু কায়দায় ঐ ছেন্টিমেন্টের ফায়দা লোটে অনেকেই, হিন্দুদের উপর হামলা ঘটে, কিন্তু বাস্তব হিশাবে লিগের হাতে/আমলে হিন্দুরা মোটেই কোন বাড়তি ছিকিউরিটি পায় না। জেইটা হয়, শহরের/আরবান হিন্দুরা বড়ো বড়ো কয়টা পজিশনে বইশা আম-হিন্দুদের উপর জুলুমকে নর্মালাইজ করে, গেরামের হিন্দুরা শমান হুমকির ভিতরেই থাকতে থাকে এবং গেরামের হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনায় পুলিশ আশল শয়তানদের ছাড় দিয়া পলিটিকেল অপোজিশনরে আরেকবার ধোলাই দেয়! তাতে ঐ হিন্দুর কি লাভ?

বরং কোন পলিটিকেল পাট্টির এন্টি-হিন্দু কোন এজেন্ডা না থাকার মওকা এস্তেমাল করতে হবে হিন্দুদের। এমন একদিন হয়তো আশবে জেদিন জে কোন হামলার ঘটনাতেই আমরা ইনছাফ কায়েম করতে পারবো, তার আগে দেশের শকল খমতাহিনেরাই জেমন বহু কিছিমের চান্দা দিয়া ছিকিউরিটি কেনে, হিন্দুদেরও শেই ফর্মুলায় চলাই মনে হয় এলেমদারি কাম হবে! ইনডিয়ায় কংগেরেছের হাতে মাইনোরিটি পলিটিক্সের শুরু, তার আখেরি ফল বিজেপি; ইনডিয়ান বাংলায় এখন মমতার ফান্দে পইড়া আছে মোছলমানরা, এইটারো ফল খুব খারাপ হবে–বিজেপি বাড়তেছে তলে তলে! বিজেপির হিশাব শোজা–মোছলমানদের ভোট তো তার দরকার নাই, ছেরেফ হিন্দুরা ভোট দিলেই তো ৩ ভাগের ২ ভাগ ভোট পাইতে পারে তারা! তেমন ফান্দে পড়া উচিত হবে না বাংলাদেশের হিন্দুর, তাতে তাদের তো খতি বটেই, ঝুকি আরো বাড়ে, মোছলমানরাও রেডিকেল হবার একটা বাড়তি উশ্কানি পায়! নিজেদের ছিকিউরিটি লইয়া তাই অমন জুয়া খেলা উচিত হবে না!

 

পোস্ট-কলোনিয়ালিজম, বাংলাদেশের হিন্দু এবং বিজেপি বয়ান

কিন্তু নিজেদের জানমালের ছিকিউরিটি বাদেও বাংলাদেশের হিন্দুদের খুব বড়ো একটা দায়িত্ত আছে আমার হিশাবে ইনডিয়ার ১০০ কোটি হিন্দুর ব্যাপারে!

১৯৪৭ শালে ইংরাজের কলোনি থিকা আজাদ হইলেও পোস্ট-কলোনিয়ালিজম নামের ইতিহাশ ভাবনা বেশি দিন আগের না। এবং হালে পোস্ট-কলোনিয়ালিজম কেবল নিজের আইডি আর ইতিহাশ বোঝাপড়ার একটা পাওয়ারফুল ভংগিমা না, এইটা জরুর একটা পলিটিকেল পোজেক্টও; আরেক দিকে পোস্ট-কলোনিয়ালিজম একটা জাস্টিফাইং টুল, কতগুলা কামে এথিকেল এজাজত পয়দা করতে পারে, জেই এজাজত ইতিহাশে ঐ টুল হাজির হবার আগে শোজা আছিলো না একদমই! ব্যাপারটা এমন কখনো বা–দিল্লিতে ইউরোপের এক ধলা মাইয়ারে গ্যাঙ রেপ করলো বিজেপিরা, তখন ইংরাজের কলোনিয়াল জামানায় কতো কতো নেটিভ মাইয়া ইংরাজের রেপের শিকার হইছে, শেই আলাপ তোলা ধরেন; তাতে ঐ ধলা মাইয়ার রেপটারেই ইতিহাশে ধলা মানুশের বেশুমার জুলুমের ব্যাপারে ইনছাফ কায়েমের নিশানা হিশাবে দাবি করা হইলো আশলে!

ইনডিয়ায় বিজেপিরা পোস্ট-কলোনিয়ালিজম নামের ঐ টুল এমনভাবে এস্তেমাল করতেছে, ইতিহাশে জার নজির নাই আর! ইন্দিরার কংগেরেছের হাতে আজাদ ইনডিয়ার পলিটিক্সে হিন্দু ধর্ম একটা টুল হইয়া ওঠার শুরু, গাভি আর বাছুর দিয়া ইন্দিরা ইলেকশনে পোশ্টার বানাইছিলো, শেই ঘটনা লইয়া এক মামলায় ইন্দিরা গদি হারাইতেছিলো, খমতায় থাকতে ইন্দিরা তখন ইমার্জেন্সি জারি করে, ইনডিয়ায় বাকশাল বা ফেছিজম কায়েম করে ইন্দিরা। তাতে শবচে বড়ো খতিটা হইলো, ইনডিয়ার ডেমোক্রেটিক পলিটিক্স গতি হারায়। আমাদের খেয়াল রাখা দরকার জে, বিটিশ ইনডিয়ায় কংগেরেছ আর মুছলিম লিগ নামে দুইটা বড়ো পাট্টি আছিলো, আজাদ হবার পরে ইনডিয়ায় কংগেরেছ একমাত্র বড়ো দল হইলো, মুছলিম লিগের কায়কারবার মোটামুটি পাকিস্তানের ঘটনা হইয়া উঠলো। তো, একটা ফাংশনিং ডেমোক্রেসি হইতে ইনডিয়ার আরেকটা বড়ো দল দরকার ছিলো; এবং শেইটাই পয়দা হইতেছিলো ইন্দিরার টাইমে, উনি জেইটা বাকশাল কায়েম কইরা আটকাইয়া দিছিলেন! ঐ ফাকা পলিটিকেল ময়দানেই বিজেপির আজকের বিজেপি হইয়া উঠতে থাকা।

বিজেপির আজকের ন্যারেটিভ বা বয়ানে ‘ইনডিয়ান’ হইয়া ওঠার জাত্রায় পোস্ট-কলোনিয়ালিজম শবচে বড়ো টুল! বিজেপির ইনডিয়ান নেশনালিজের এমন বাড়ন্ত টাইমটারে আমরা হাল জামানার ফেনা হিশাবে দেখতে পারতাম; ইনডিয়ান নেশনালিজম ইনডিয়ার ততো খতি হয়তো করতে পারতো না, জদি পোস্ট-কলোনিয়াল হইতে জাইয়া আবার শেই বিটিশ আমলের ইতিহাশ ভাবনাই বাইছা না নিতো বিজেপি! মানে খেয়াল করলে দেখবেন, ইউরোপের ওরিয়েন্টালিস্টরা ইনডিয়ারে জেমনে ডিফাইন বা তারিফ করছিলো, আজকের বিজেপি ইনডিয়ারে মোটামুটি তাই ভাবে, এবং তেমন ইনডিয়া হইয়া ওঠারেই বিজেপি নাম দিছে ইনডিয়ান হওয়া এবং শেই ওরিয়েন্টালিস্ট নজরে নিজেদের দেখাটারেই পোস্ট-কলোনিয়ালিজমের চর্চা হিশাবে দ্যাখে! বিজেপির ভিতর পোস্ট-কলোনিয়ালিজমের এই চর্চা মালুম করতে পারে না বইলাই হয়তো তারে ছেরেফ ধর্মের রাজনিতি করা একটা পলিটিকেল পাট্টি ভাবে অনেকে।

তো, শেই ইনডিয়া কেমন? শেই ইনডিয়া একটা এরিয়ান ছিভিলাইজেশন, ৩০০০ বছর আগের, বেদের দর্শন থিকা রামায়ন-মহাভারত এপিক লেখা, মস্ত এরিয়ান শংস্কৃত ভাশা বানাইছে, কৌটিল্ল থিকা বাৎশায়ন–কত কি কির্তি তার শেই শোনালি জামানায়! তারপর বহু বিদেশি হামলা জেন শেই শোনালি জামানার বাতি নিভাইয়া দিতে থাকে, রেশিয়াল কাজিন আরেক এরিয়ান বিটিশের কলোনাইজেশন আশলে শেই দুর্দশা থিকা বাইরাইতে পারার শুরু, ২০০ বছর তারা দরকারি ছবক নিছে, এখন শেই শোনালি জামানা ফিরাইয়া আনার পালা এবং বিজেপি শেইটাই করতেছে।

বিজেপির বয়ানের কাউন্টারে আমি একটা ছবি দিতে চাইতেছি এইখানে, তবে এগুলা লইয়া আরো ভালো ছবি দিছেন হয়তো ইতিহাশের অনেকেই; এই লেখাটারে পড়বার শুবিধার কথা ভাইবা এই ছবিটা তবু আকতে হইতেছে আমার!

তো, বিজেপির এই ন্যারেটিভ বহু মিছা কথা এবং ফেভারেবল আন্দাজের উপর খাড়াইয়া আছে। শুরুতেই কইতে হয়, হরপ্পা-মহেনজোদারো এরিয়ান ছিভিলাইজেশন না এবং এরিয়ান বইলা কেউ জদি আইশাও থাকে হিমালয়ের দখিনের এই মস্ত ভুবনে, তারা শিন্ধু ছিভিলাইজেশনকে আগাইয়া নেয় নাই, বরং চাপা দিয়া লোকাল মানুশের উপর নিজেদের কালচারের জোব্বা পরাইছে; জাত-পাত, অচ্ছুত ইত্তাদি আইডিয়া থিকা বুঝবেন জে, ঐ ঘটনা মোটেই পিছফুল আছিলো না, খুবই ভায়োলেন্ট ঘেন্নার ভিতর দিয়া ঘটছে! শেই আদি পাপের কাফফারা হিশাবেই হয়তো গৌতম বুদ্ধ হাজির হইছিলেন ময়দানে, জুলুমকে নাজায়েজ বইলা এলান করলেন বুদ্ধ।

ওদিকে, আদি শেই এরিয়ানরাই এইখানে আদি বিদেশি; এবং বিদেশিদের লগে কানেকশন বরং ইনডিয়ার বাজা/মরা টাইমকে আবার জিন্দা করছে পেরায়ই! আদি শেই এরিয়ানদের শকল জুলুমের পরেও তারাই হয়তো এইখানে বোরোন্জ আর লোহা লইয়া আশে! এইখানে দেখবার মতো ব্যাপার হইলো, আদি শেই এরিয়ান জেমন মেছমার কইরা দেয় লোকাল ছিভিলাইজেশন (খরা বা নদির গতি পাল্টানোর কারনেও শেই ছিভিলাইজেশনের হায়াত কমতে পারে), পেরায় ৩০০০ বছর পরে ইংরাজের কলোনাইজেশনও মেছমার কইরা দেয় তখনকার হিন্দুস্তানরে! দুনিয়ার শবচে ধনি এম্পায়ার হইয়া পড়ে শবচে গরিবের ভুবন! আদি এরিয়ানরাও শংস্কৃত ভাশা আর ছাইন্স লইয়া আইছিলো, ইংরাজও তেমনি ছাইন্স আর ইংরাজি লইয়া হাজির হইলো! তখনকার দুনিয়ায় জোগাজোগের বহু রাস্তা পয়দা হওয়ায় এমনিতেই জেই পিছফুল বিনিময় হইতে পারতো, ইংরাজ শেইটারে জুলুম আর চাপাইয়া দেবার মচ্ছব বানাইয়া তোলে। তবু কতক মিলের পরেও কইতে হয়, আদি এরিয়ানরা অন্তত ইংরাজের মতো পাচার করে নাই এইখানের দৌলত! ইংরাজ এমনই পাচার করছে জে, তার শেই ছবকও রাইখা গেছে, এই এলাকাটারে একটা দোজখ বানাইয়া রাইখা আজকেও পাচার করতেছে বাংলাদেশের বাকশাল!

আরো আরো বিদেশি কানেকশন হইছে; গিরিক ছেকান্দারের লগে কানেকশনের পরে আমরা পাইলাম বাদশা অশোক, তার আগে ইনডিয়া ঝিমাইতেছিলো। হজরত ছেকান্দারের লগে কেবল গিরিক/মেছিডোনিয়ানরা আছিলো না, ইনডিয়ায় আশার আগে জেই জেই এলাকা জয় করছেন, শেই শব এলাকার লোকজনও আছিলো এবং তারা অনেকেই থাইকা গেছেন, ছেটেল করছেন এইখানে। আট-কালচার থিকা মিলিটারি, বহু দিকেই তাদের কির্তি আছে এবং অশোকের মিলিটারি কারবার থিকা অশোকের খাম্বার আইডিয়া, অনেক ব্যাপারেই ঐ গিরিক আছর আছে।

তারপরে আইলো আরব-তুর্কি-মোগল; এদেরকে মোছলমান নামের একটা কাতারে ফালাইয়া দেখা ভুল; জাতি-কালচারে তারা অনেক জুদা তো বটেই, এমনকি ধর্মের ব্যাপারেও শিয়া-ছুন্নি টেনশন আছিলো মেলা! আরো খেয়াল করার ব্যাপার হইলো, আনলাইক ইংরাজ, তারা এইখানে ছেটেল করছে এবং ইংরাজের মতো পাচার করে নাই। তুলনায় আমেরিকা-ইউরোপে আজকে জেই ইনডিয়ান বা বাংলাদেশিরা ছিটিজেন হইয়া ছেটেল করছেন, তারাও বরং অনেক বেশি পাচার করে! ইনডিয়া-বাংলেদেশের ডলার-ইউরোর মস্ত একটা ভাগ আশলে ওনাদের পাচার করা পয়শা!

আজকের মর্ডান জামানায় হিমালয়ের দখিনা ভুবনের বড়ো ২/৩টা ভাশা পয়দা হইছে আরব-তুর্কি-মোগলদের আমলে; উর্দু-হিন্দি-বাংলা নামে চলতি ভাশাগুলা ওনাদের ছোয়ায় পয়দা হইছে। শংস্কৃত এড়াইয়া আমজনতার ভাশায় আট-কালচার-ধর্ম করার চেশ্টা করছিলো আগে বৌদ্ধরা, কিন্তু বামুন-খত্রিয়ের শাশন বৌদ্ধদের উপর জেনোছাইড চালাইছে, খেদাইয়া দিছে, পাহাড় পর্বতে পাঠাইয়া দিছে ঠেইলা; ফলে আমজনতার ভাশায় আট-কালচার-লিটারেচার হইতে পারে নাই আর; শেই চিপা থিকা আমজনতার ভাশা আজাদ হয় তুর্কি-মোগলের মদদে! শেই কারনেই আজকে এই এলাকায় নাচ-গান-কবিতা-রান্ধন-পোশাক, শবখানেই তুর্কি-মোগলের রোশনাই পাইতেছেন। শেলাই করা কাপড় থিকা মোংগল হামলা ঠেকাইয়া ইনডিয়ারে বাচানো–এগুলা তুর্কি-মোগলের ইমামতিতে ইনডিয়ার তাবত হিন্দু-মোছলমানের কির্তি। তখনকার জামানায় শবাই নিজ নিজ পরিচয় বহাল তবিয়তে রাইখাই কেমনে এক লগে জিন্দেগি পার করতেছিলো, তার নিশানা পাইবেন খোদ দেশের নামে–হিন্দুস্তান (হিন্দুস্থান না কিন্তু)!

বিটিশ কলোনাইজেশনের আগের এই ঘটনাগুলারে ছাটাই করছে ইংরাজের ইতিহাশ, ওরিয়েন্টালিজম! কেবল আদি এরিয়ানদের এইখানে আদিবাশি ধইরা বাকি শবাইরে বিদেশি বানাইয়া দিছে; ইতিহাশে ইনডিয়া জখন শবচে ধনি, শবচে পাওয়ারফুল, শেই জামানারেও ইংরাজের ইতিহাশ ভাবনা কলোনাইজেশন হিশাবে দাগাইয়া দিছে এবং বিজেপি শেই ইতিহাশের ছবক লইয়াই আজকে পোস্ট-কলোনিয়ালিজম চর্চা করতেছে!

ইনডিয়ায় বিজেপি একটা দল তো বটেই, তারচে বেশি হইলো, একটা ন্যারেটিভ, এইটার নাম দিলাম, ‘বিজেপি বয়ান’। খেয়াল করেন, এইখানে আমি হিন্দুইজম/হিন্দুত্তবাদ ইত্তাদি টার্মে ডাকি নাই! কারন, বিজেপিরে হিন্দুত্তবাদি কইলে হিন্দুধর্মটারে তার এখতিয়ারের মামলা হিশাবে মাইনা নেওয়া হয় এবং আম হিন্দুরে বিজেপির পতাকার নিচে ঠেইলা দেওয়া হয়! একই কারনে আমি খিরিস্টান বা মোছলমানদের ব্যাপারেও খিরিস্টান ছুপ্রিমেছি বা ইছলামবাদি ইত্তাদি টার্মও পছন্দ করি না। হোয়াইট ছুপ্রিমেছির মতো টার্ম হিশাবে খিরিস্টান ছুপ্রিমেছি ইউজ করা জায় না; হোয়াইট হওয়াটা অপশনাল না, খিরিস্টান হওয়া অপশনাল এবং হোয়াইট ছুপ্রিমেছি রেছিস্ট, কিন্তু খিরিস্টান বা হিন্দু বা ইছলাম ছুপ্রিমেছি তা না। চোখা নজরে বিচার করলে দেখবেন, একজন খিরিস্টানের ভিতর খিরিস্টান ছুপ্রিমেছি না থাকলে তার তো খিরিস্টানই থাকার কথা না! নিজের পরিচয়ে গর্ব করার নিন্দা করা জায় না, তার দরকারও নাই; আমাদের দরকার এমন একটা দুনিয়া জেইখানে শবাই জে খিরিস্টান বা হিন্দু বা মোছলমান বা বৌদ্ধ বা নাস্তিক হবে না, ঘটনা হিশাবে এইটা মাইনা নেওয়া। জেই আর্ট বা ছিনামা আপনের মতে বেটার, ঐটা চর্চা করেন বা দেখেন আপনে, তাতে কি আর শব ছিনামার গায়ে আগুন লাগাইয়া দেওয়া হয়? না; ধর্ম বা কালচার বা ভাশাও তাই। টার্ম হিশাবে ঐগুলা ইউজ করে ছেকুলার/লিবারালরা, পচ্চিমেই ছিলো, এখন তাগো নেটিভ মুরিদরাও করতেছে। এবং পচ্চিমে খিরিস্টানিটি এস্তেমাল কইরা জারা আশলে হোয়াইট ছুপ্রিমেছির পলিটিক্স করেন, তাগো হাতে ধরাশায়ি হইতেছে পচ্চিমের লিবারাল/ছেকুলাররা! আপনে জখন কাউকে খিরিস্টান ছুপ্রিমেছিস্ট নামে ডাইকা গালি দেন, টিটকারি দেন, শে ঐটারে পড়ে তার খিরিস্টান হবার ঘটনারে টিটকারি দিতেছেন আপনে; শে তখন পছিবলি ভাবে, আমি তো খিরিস্টানই এবং এইটা আমার গর্ব, তখন আপনের লগে তার পলিটিকেল দুশমনি গজায় এবং আপনারে শায়েস্তা করার বাশনায় হোয়াইট ছুপ্রিমেছিস্ট পলিটিকেল গুরুপের নিশানের নিচে জমায়েত হয়! একই মডেল হিন্দুইজম বা ইছলামিজমের বেলাতেও খাটে!

আরো ভাববার ব্যাপার আছে: হিন্দু ধর্মের শেই শব জিনিশই নেবে বিজেপি জেইগুলা তার পলিটিকেল পোজেক্টের লগে মানানশই, ফলে তার হিন্দুধর্ম একান্তই তার মজহাব, তা পুরা হিন্দুধর্ম না কখনোই! জেমন ধরেন, বিজেপি কি হিন্দুধর্মের বহুবিয়ারে মারহাবা কইয়া চর্চা শুরু করছে? শে কি শহমরন ফিরাইয়া আনার পায়তারা করতেছে? হিন্দু মাইয়াদের ওয়ারিশ হবার আইন বাতিল করার দিকে হাটতেছে? জাতপাতের কায়কারবার বিজেপি ময়দানে হাজির রাখলেও বাস্তবে কংগেরেছ বা বাম দলগুলার (অন্তত উত্তর ইনডিয়ায়) তুলনায় বিজেপিতে শুদ্র পলিটিকেল লিডার বেশি! হিন্দু হওয়া একদম বংশগত বইলা একটা ঢালাও আন্দাজ থাকলেও বিজেপি ‘ঘর ওয়াপছি’ নামে পোজেক্ট চালায়, তাতে হিন্দু হওয়াও জাইতেছে এখন। খিরিস্টান বা ইছলাম ধর্মের লগে টক্কর দেবার রাস্তার নাম ঐ ‘ঘর ওয়াপছি’। এগুলা না দেখা মোটেই ঠিক হবে না!

বাস্তবে বিজেপি তার পোস্ট-কলোনিয়াল ইনডিয়ায় জেই রাম রাজ্জ বানাইতে চাইতেছে, তাতে একমাত্র দুশমনের নাম মোছলমান। এই দুশমনির ভিতর পচ্চিমের কুরুছেডের ঘেন্নার বশতি তো আছেই, তার লগে বাস্তব ফ্যাক্টর হইলো, হিমালয়ের দখিনের এই মস্ত ভুবনে ৭০/৮০ কোটি মোছলমান আছে; এতো এতো খিরিস্টান জদি থাকতো, তাইলে তাদেরো দুশমন হিশাবে বিজেপি বয়ানে জায়গা হইতো মনে হয়!

এমনিতে বিজেপি বয়ানে আরো কিছু দেখবার ব্যাপার আছে। এই বয়ান মোছলমান খেদাইতে চায়, তাগো আন্দাজি ‘মহাভারত’ বানাইতে হিমালয়ের দখিনের পুরা জমিন দখলে নিতে চায়, কিন্তু হিন্দু ধর্মের ব্যাপারে তারা জেমন ছিলেক্টিভ, মোছলমানির ব্যাপারেও তাই। আজকের বলিউড, তার নাচ-গান-ফ্যাশন-হিন্দি ভাশা-খাবার ইত্তাদি লাইফ-এস্টাইলের পেরায় পুরাটা খাড়াইয়া আছে মোগল কালচারে, এমনকি কেপিটাল দিল্লিও তুর্কি-মোগলের বানানো, দিল্লি জায়গাটা পেরাচিন শেই মহাভারতের হস্তিনাপুর না কিন্তু! কিন্তু ওগুলার কোনটাই বিজেপি বাদ দিতে চায় না, এগুলার মোছলমানিও তার পোবলেম না, বরং দখিন ভারতে তারা হিন্দি ভাশাটারে চাপাইয়া দিতে চাইতেছে! ছো, মোছলমানি ততো না, পোবলেম হইলো মোছলমান, মোছলমানের নিশানা বইলা এক নজরেই জেইগুলা চেনা জায় বইলা মনে করে বিজেপি বয়ান, ঐগুলা ধুলায় মিশাইয়া বা হাওয়ায় উড়াইয়া দিতে চায় বিজেপি বয়ান। মোছলমানরা চইলা গেল বা ঘর ওয়াপছি হইলো, আর মোছলমানের নিশান হিসাবে থাকা মশজিদগুলা ভাইংগা ফেললো, তাজমহল বা কুতুবমিনার ইত্তাদি মোছলমানের কিলিয়ার-কাট ইমারতগুলারে মন্দির বানাইলো, এইটাই বিজেপি বয়ানের মনজিলে মাকছুদ এবং রাম রাজ্জ বানাইয়া তোলা।

ইনডিয়ায় বিজেপি বয়ান তাবত হিন্দুরে রেডিকালাইজ কইরা ফেলতেছে; বিজেপি বয়ানে পোস্ট-কলোনিয়াজমের হাজিরা মালুম না হইলে আপনে ঠিক বুৃঝবেন না জে, কেন ইউরোপ-আমেরিকায় থাকা, বড়ো বড়ো কর্পোরেটে চাকরি করা শিক্ষিত হিন্দুরা পেরায় শবাই বিজেপি বয়ানের গাহেক!

 

পরিচয়ের ইশারা

বিজেপি বয়ান লইয়া এতো কথার ভিতর দিয়া আমি আশলে বাংলাদেশের হিন্দুদের কাছে একটা আবদার পেশ করতে চাইতেছি! আমারে মোছলমান ধইরা আপনাদের মনে হইতে পারে জে, আমি ইনডিয়ার মোছলমানের শার্থ দেখতে চাইতেছি; আপনাদের এই মনে হওয়ারে অনার দিতে রাজি হইয়াও জিগাই, আপনাদের কি মনে হয় জে, বিজেপি বয়ান জেই ঘেন্নার পলিটিক্স করতেছে, ইনডিয়ার পাড়া-মহল্লায় মব পয়দা করতেছে, তারা জখন তখন খুন করতেছে, রেপ করতেছে, মোছলমান মাইয়াদের লাশ কবর থিকা তুইলা রেপ করার ডাক দিতেছেন বিজেপি নেতারা–এইগুলা কি মেন্টালি হেলদি ভাবতে পারেন আপনারা? বিজেপি বয়ান ইনডিয়ার হিন্দুদের ধিরে ভ্যাম্পায়ার বানাইয়া তুলতেছে! আমি আপনাদের দায়িত্ত লইতে কইতেছি কিছু, ওনাদের বাচান পিলিজ, ঐগুলা মানুশের তো বটেই, এমনকি হিন্দু হিশাবেও শরমিন্দা হবার মতো ব্যাপার, অন্নের পোরতি মিনিমাম দয়া-মায়া-দরদ জদি আর না থাকে, শেইটা কেমন শমাজ মানুশের!? আমারে ছেরেফ মোছলমান ভাবলেও এই পোশ্নটা একটু ভাববেন পিলিজ!

কিন্তু এর মানে কি এই জে, আমি আপনাদের পিনাকি হইতে কইতেছি? না। পিনাকি বাস্তবে পেরাকটিছিং হিন্দু হইলেও আম-হিন্দুরা আরো বেশি হিন্দু থাকবেন, এবং শেইটাই নর্মাল, পিনাকির তুলনায় হিন্দুধর্ম লইয়া আরো বেশি গর্ব থাকবে আপনার, শাস্ত্রে আরো বেশি ভক্তি থাকতে পারে, এইটা কোন পোবলেম না! আপনাদের আমি ছেরেফ কয়েকটা হাচা কথা ভাবতে কইবো, এবং এইগুলারে হাচা কথা হিসাবে মানতে পারলে জেমনটা করা উচিত, তেমন কিছু করবেন, এইটাই আশা আমার!

শুরুতেই ইতিহাশ আর ভুগোলে একটু নজর দিতে কইবো। বিজেপি বয়ানে জেই ‘মহাভারত’ পাইবেন, বেদ-পুরানের শেই মহাভারত আর আজকের ইনডিয়ার মেলা তফাত! এখনকার উত্তর ইনডিয়া এবং পাকিস্তানের কতকটা মিলে শেই মহাভারত। ইংরাজের কলোনাইজেশন জারে ইনডিয়া কইছে, বিজেপি বয়ানের মহাভারত বাস্তবে শেই ইনডিয়া, বেদ-পুরানের মহাভারত না! বেদ-পুরানের মহাভারত মোতাবেক বাংলদেশ বা ইনডিয়ান বাংলা হইলো জংগল, শব্ভতার বাইরের দুনিয়া, অচ্ছুতেরা থাকে ঐ জংগলে, ছিভিলাইজেশনের বাইরে পুরা। দখিন ভারত হইলো রাক্ষশের এলাকা! জেই কুরু রাশ্টের মছনদ লইয়া মহাভারতের জুদ্ধ, শেই কুরু আবার শেই মহাভারতের ১৬টা ভাগের একটা মাত্র, আজকের মহারাশ্টের কতকটা।

তারচে বড়ো ব্যাপার হইলো, শেই মহাভারত, ১৬টা জনপদ এক রাশ্টো আছিলো না কখনোই এবং শেই চেশ্টাও আছিলো না। ১৬টার শবগুলায় আবার রাজার শাশনও আছিলো না, মানে একটা কনফেডারেশন টাইপের জিনিশ আছিলো, রাজা থাকলেও তারা আর্জ/এরিয়ান/খত্রিও আছিলো না কেউ কেউ, এডমিনও বামুনের হাতে আছিলো না কোন কোন জনপদে। দেরাবিড় আছিলো দখিনে–এরা বিজেপি বয়ানের এরিয়ান/আর্জ না, হরপ্পা-মহেনজোদারোর ছিভিলাইজেজেশন বরবাদ হবার পরে শেই মানুশেরাই দখিনের দেরাবিড় জনপদ বানাইছেন বইলা কইতেছেন ইতিহাশের অনেকে; শেই কারনেই আজকের দখিন ইনডিয়ার লোকেরা নন-এরিয়ান তামিল-তেলেগুতে কথা কয়। পচ্চিমে জবন-মেলেচ্ছো, পুবে অচ্ছুত জংলি। হিমালয়ের দখিনের এই মস্ত ভুবনের একটা পাট মাত্র শেই মহাভারত, আজকের ইনডিয়ার চাইতে অনেক ছোট এবং শেই মহাভারতের বাইরে তো বটেই, শেই মহাভারতেও কখনো একটা মাত্র ধর্ম আছিলো না।

বিজেপি বয়ান মোতাবেক হিন্দু ধর্ম একান্তই শেই মহাভারতের ঘটনা। কিন্তু আজকের হিন্দুধর্ম দেখেন, তাতে জেই শিব পাইবেন, শেই শিবের শবচে বড়ো মন্দিরটা বেদ-পুরানের মহাভারতে তো না-ই, এমনকি ইংরাজের ইনডিয়াতেও না! শেইটা হইলো কম্বোডিয়ায়, আংকর ওয়াত। ইন্দোনেশিয়ায় অনেক পুরানা মন্দির আছে, হিন্দুও আছে। জেই দখিন ইনডিয়া মহাভারত মোতাবেক রাক্ষশের এলাকা শেইখানেই বরং বিজেপির ছেন্টারের (উত্তর ইনডিয়া) চাইতে বহু পুরানা হিন্দু ধর্ম পাইবেন, মন্দিরও, এমনকি ভাশাও! এবং আর্কিটেকচার খেয়াল করলে দেখবেন, দখিন ইনডিয়ার মন্দিরগুলা অনেক বেশি মেলে কম্বোডিয়া বা থাইল্যান্ড বা ইন্দোনেশিয়া বা এমনকি বার্মার বাগানের লগে! বরং উত্তর ইনডিয়ায়, বিজেপির ছেন্টারের হিন্দু মন্দিরগুলাতেই ছেন্ট্রাল এশিয়ান বা মোগল আর্কিটেকচারের ছোয়া পাইবেন বেশি! তাইলে আদি হিন্দু ধর্ম বা শনাতন ধর্মের পুরা ইজারা কেন উত্তর ইনডিয়ার বিজেপি বয়ানের দখলে ছাইড়া দেবেন? আমি কইবো, বরং আংকর ওয়াতে মোছলমানের মতো হজ করতে জাইতে পারে বাংলাদেশের হিন্দুরা, রথ-জাত্রা করতে পারে ইন্দোনেশিয়ায়! এমন কিছু ঘটনায় বিজেপি বয়ানের ছিংগুলারিটি দুর্বল হবে, ইনডিয়ার হিন্দুদের হয়তো ভ্যাস্পায়ার হইয়া ওঠার ভিতর একটা শন্দেহ ঢুকাইয়া দেওয়া জাবে!

ভুগোল লইয়া ভাবার দরকার আছে আরো। রাশ্টো হিশাবে আজকের ইনডিয়ারে বুঝতে ঐ ভাবনা দরকারি। রাশ্টো হিশাবে ইনডিয়া আর ইজরাইলের কিছু মিল আছে, দুনিয়ার আর কোন রাশ্টের লগে জেইটা পাইবেন না। ইজরাইল জেমন দুনিয়ার তাবত ইহুদিরে তার দেশের ছিটিজেন হইতে ডাকতে থাকে, তেমনি ইনডিয়াও ডাকতে থাকে।

এই দুই রাশ্টের একটা জটিল আউলা ব্যাপার বা প্যারাডক্স আছে; এরা জেই দুই ধর্মরে নিজেদের নেশনাল ধর্ম কইতেছে, শেই ধর্ম দুইটা এক্সপ্যানশনিস্ট না, কিন্তু দুনিয়ার তাবত হিন্দু আর ইহুদি এই দুই দেশে গেলে দেশ হিশাবে এদের খুবই ইম্পেরিয়াল হইতে হবে, নাইলে জায়গা দেওয়া জাবে না! ইজরাইল তাই করতেছে, বিজেপির ইনডিয়া এইটা এখনো আরেক তরিকায় হাছিল করতে চাইতেছে– নিজ দেশের মোছলমানদের খেদাইয়া দিয়া। তার বাইরে শেই মহাভারতের বদলে বিজেপি জেই বানোয়াট মহাভারত বানাইছে, তাতে হিমালয়ের দখিনের পুরাটাই দাবি করে তারা।

তো, ইজরাইল আর ইনডিয়া জেইটা করে, তারা একটা বয়ান বানাইছে জে, দুনিয়ার শকল ইহুদি আর হিন্দুর নেচারাল দেশ হইলো ইজরাইল আর ইনডিয়া। ইজরাইলের বিরাট কোন ছিনামা ইন্ডাস্ট্রি না থাকলেও ইনডিয়ার আছে এবং বলিউড ঐ বয়ানটারে রেগুলার ছড়াইতে থাকে, ইনডিয়ার টিভিগুলাও একই কাম করে, ইনডিয়া জাইতে ফুশলাইতে থাকে। এইটা আশলে আরো পুরানা ঘটনাই, শেই ইংরাজের কলোনিয়াল/ওরিয়েন্টালিস্টদের হাতেই এইটার পয়দা; আবারো কই, এইটা বেশ মজার ব্যাপার জে, পোস্ট-কলোনিয়াল হইতে চাওয়া বিজেপি আদতে তার বয়ানের মালমশলা পুরাটাই হাতাইয়া নিছে কলোনিয়াল ওরিয়েন্টালিস্টদের ভাবনা থিকা!

বাংলাদেশের হিন্দুদের কাছে আমার আবদার হইলো, বিজেপির ঐ বয়ানে ইমান আনবেন না পিলিজ! তাতে আপনাদের লাভও নাই আশলে।

খেয়াল করেন, আপনে জদি এমনকি হিমালয়ের দখিনের এই পুরা ভুবনকেই মহাভারত ভাবেন, আপনে তো তাইলে এখনো শেই মহাভারতেই আছেন! আবার আপনে জদি শেই পুরানা মহাভারতকে ভাবেন আপনের নেচারাল দেশ, তাইলে আজকের ইনডিয়ায় গেলেও আপনে শেই মহাভারতের শিমানার বাইরেই থাকবেন মোটামুটি! মানে শবাই তো আর মহারাশ্টে জমিন পাইবেন না, শেই মহাভারতের জংগলে, মানে ইনডিয়ান বাংলায় ঠাই পাইবেন কোন মতে!

ঐ বয়ানে আপনের মগজ ধোলাই হবার আরো অর্থ হইলো, বাংলাদেশে আপনের চৌদ্দ পুরুশের ভিটার পোরতি মায়া উইঠা জাবে আপনের! ওদিকে, শব ছাইড়া ইনডিয়ায় জাইয়া আপনে জাতের কলের একদম নিচেই থাকবেন! বাংলাদেশের এমনকি বামুনরাও ইনডিয়ার কাছে ভেজাল বামুন! উত্তর ইনডিয়ার লোকেরা এমনকি বাংগালির গায়ের থিকা মাছের ঘেরান পায় নাকি, খুবই পপুলার মশকরাও আছে এগুলা লইয়া! ওদিকে, পাকিস্তান আমলে জেমনি উর্দুর পেরেশার আছিলো, ইনডিয়ার বাংলায় হিন্দির পেরেশার তারচে অনেক বেশি, কলিকাতার রাস্তাঘাটে বাংলার চাইতে বেশি শুনবেন হিন্দি! আবার হিন্দি ভাশাটা খেয়াল করলে দেখবেন, তার লগে উর্দুর তফাত পাইবেন না খুব, বিজেপির ঢুকানো কতগুলা শংস্কৃত শব্দ বাদে! জেমন ধরেন, ‘মেরা জুতা হ্যায় জাপানি…’ গানটা হিন্দি নাকি উর্দু? দুইটাই!

আমার এই কথায় অনেকে মন খারাপ করতে পারেন; হিন্দুরা ইনডিয়ায় জায়–এমন একটা কথা বাংলাদেশে শুনতে হয় বহু হিন্দুর এবং এইটা আরামের ব্যাপার না মোটেই। ঐ কথাটা দেশের হিন্দুদের জেমনি গড় হিশাব করে শেইটা আলবত আপত্তিকর। তবে আমি দুয়েকটা জিনিশ ভাবতে কইবো লগে। বাংলাদেশে বহু মোছলমান দেখবেন, মক্কা-মদিনা চইলা জাইতে চায়, চৌদ্দ পুরুশের ভিটার মায়া তাগো দিলে খুব একটা দেখা জায় না! এইটাই বয়ানের পাওয়ার, কোন একটা বয়ানের গাহেক হইলে মানুশের এমন হইতে পারে–এইটা মোটেই হিন্দু বা মোছলমান বা ইহুদি হবার মামলা না! বাস্তবে ঘটনা হইলো, ছৌদি আরব তো বাংলাদেশি মোছলমানদের গোলামের বেশি পাত্তা দেয় না, গোলাম হিশাবে জাইয়া তাগো গু-মুত ছাফ কইরা দুইটা পয়সা পকেটে লইয়া ফিরতে হবে, ছৌদি ছিটিজেন হবার উপায় নাই! ইনডিয়া এইখানেই জুদা!

আরো খেয়াল করলে দেখবেন, এইগুলা মোটামুটি শিক্ষিত হিন্দু-মোছলমানের ঘটনা! জীবনানন্দ-নচিকেতা-শুনিল-শির্শেন্দুরা ঐ বয়ানে ইমান আনছিলো, তারা জেন হিন্দুদের নেচারাল দেশে চইলা গেছে! কিন্তু আপনে লাখো জাহেল বা অশিক্ষিত হিন্দু পাইবেন দেশে জারা শত জুলুমেও ভিটামাটি ছাড়ে না, ১৯৭১ শালে পাকিস্তান আর্মির হামলায় ইনডিয়ায় শেলটার নিছিলো, কিন্তু ১৬ ডিশেম্বরের পরে ফিরা আশছে বাংলাদেশে। তেমনি জাহেল মোছলমানরাও মক্কা-মদিনা চইলা জাবার বয়ান লইয়া ততো মাথা ঘামায় না, আল্লার দুনিয়ার জে কোন দেশেই ইমানদার মোছলমান থাকায় কোনই অশুবিধা দ্যাখে না তারা! আবার ১৯৪৭ শালের পরে ইনডিয়ায় ঘরবাড়িতে আগুন দিয়া খেদাইয়া না দিলে গরিব-জাহেল মোছলমানরা ভিটা-মাটি ছাড়ে নাই, কিন্তু বহু শিক্ষিত মোছলমান এমনিতেই চইলা আশছে! বাংলাদেশে এখন জেই বিহারি মোছলমানরা আছে, তাগো খেদাইয়া দিছে ছেরেফ, পাকিস্তানের পোরতি বাড়তি কোন পিরিতের কারনে আশে নাই এবং জাগো খেদাইতে পারে নাই তখন, তারা এখনো বিহারেই আছে! মোটের উপর, বয়ান একটা ছবক, তা পরানের ভিতর ঢুকাবার নাম শিক্ষা, গরিব-জাহেল হিন্দু-মোছলমানের অতো টাইমও নাই, শিক্ষা কেনার পয়শাও নাই!

১৯৪৭ শালের আগে জখন ইনডিয়া আর পাকিস্তানের জন্ন কংগেরেছ আর মুছলিম লিগের হুলাহুলি চলতেছিলো, তখন হিন্দু-মোছলমান মারামারি-রায়ট হইছে, বেশুমার মরছে ঠিকই, কিন্তু দুই দলের কারো ইশতেহারেই হিন্দু-মোছলমান খেদাইয়া দেবার কোন এজেন্ডা আছিলো না। মজার ব্যাপার হইলো, তেমন এজেন্ডা না থাকলেও দুই দিকের শিক্ষিত লোকেরাই ধইরা নিছিলেন জে, ইনডিয়ায় মোছলমান থাকবে না কোন, আর পাকিস্তানে থাকবে না কোন হিন্দু! তাই রায়ট-খেদাইয়া দেবার বাইরেও বেশুমার মাইগেরেশন হইছিলো।

হিন্দু-মোছলমানের ঐ মাইগেরেশনের অর্থ কওম বা কমুনিটির জন্ন একই কিছিমের আছিলো না। এইখানে ধর্মের ঘর হিশাবে মশজিদ আর মন্দিরের কিছু তফাত খেয়াল করা দরকার আমাদের। রায়টের ভিতর বা শান্তির কালেও মশজিদ আর মন্দিরে হামলার ঘটনা পাই আমরা; বিজেপি বয়ান মোতাবেক মন্দির ভাংগার বদলা নিতে মশজিদ ভাংগার এজেন্ডা আছে। শেই বয়ানে মশজিদকে মন্দিরের প্যারালাল হিশাবে ধরা হইছে। কিন্তু এইটা খুবই ভুল।

খেয়াল করেন, হিন্দু-মোছলমান পয়শাঅলারা মন্দির-মশজিদ বানায়, কিন্তু মশজিদ বানাইয়া কমুনিটিরে দিয়া দিতে হয় আর মন্দির বেশিরভাগ শময় কোন এক হিন্দু ফেমিলির ঘটনা কেবল; মানে মশজিদ বাড়ির বাউন্ডারির বাইরে, মন্দির বাউন্ডারির ভিতরে। মশজিদ নিজেই একটা এনটিটি, একটা এজমালি ওয়াকফ্ এস্টেট কিন্তু মন্দির ছেরেফ ঐ হিন্দু খান্দানের একটা নিশানা! তারা বামুন আইনা নিজেদের মন্দিরে পুজার আয়োজন করে, ঐ বাড়ির মন্ডপে হয়তো দুর্গাপুজা হইতেছে।

তাইলে ধরেন, একটা হিন্দু ফেমিলি তার ভিটা-বাড়ি বেইচা চইলা গেল, তখন ঐ বাড়ির মন্দিরের কি হবে? নতুন মালিক তার জমি তার দরকার মতোই তো ইউজ করবে, ঐ মন্দির তো তার জমিতে এখন, ঐ মন্দিরে আগেও হিন্দু কওমের হক আছিলো না, এখনো থাকার কারন নাই। খান্দানের মন্দিরের মতো এমন মশজিদও আছে আশলে, ঐটারে কয় ‘পান্জেখানা’ মশজিদ, দিনে ৫ ওক্ত নামাজ পড়ার একটা জায়গা বানাইলো ধরেন কোন মোছলমান খান্দান, জুমা হয় না ঐ মশজিদে, ঐটা মোছলমান কমুনিটির মশজিদ না, খান্দানি মশজিদ ছেরেফ, নামাজের জায়গা, কর্পোরেট অফিশে জেমন নামাজের জায়গা থাকে, তেমন।

জামে মশজিদের ব্যাপারটা তাই ঐ মন্দির বা পান্জেখানা মশজিদের মতো কইরা দেখার উপায় নাই। মশজিদের নিজের নাম আছে, নিজের জমি আছে, শেই জমি বেচার উপায় নাই, কেনার উপায় নাই। আর অমুক বাড়ি এখন আর অমুক বাড়ি নাই, তাই শেই বাড়ির মন্দিরও নাই, নতুন মালিক, জমিনের নতুন ফয়ছালা।

কিন্তু এর মানে কি এই জে, হিন্দুদের উপর হাজারো জুলুম আমি ইতিহাশ থিকা গায়েব কইরা দিতে চাই? না। জুলুমের নিজের এক ছিলছিলা আছে, জে কোন একটা জুলুম ভবিশ্যতের আরো আরো জুলুমের জমিন বানাইয়া রাখে এবং পাল্টাপাল্টি জুলুম চলতে থাকে; ইতিহাশের এই ছাইকেলটাই ভাংগা দরকার আমাদের এবং আমার মনজিল ঐটাই!

কওম হিশাবে জুলুমের জানা ইতিহাশ তালাশ করলে, হিমালয়ের দখিনে শেইটা শুরু করতে হয় বাদশা অশোক থিকা! অশোকের বাপ বিন্দুশার আছিলেন অভিজিক, অভিজিকেরা পুন্ড্রের দিকের থাকতো দেখলাম; বাদশা অশোক পরে বৌদ্ধ হইছেন এবং অভিজিক কওমের ১৬ হাজার মানুশ পাইকারি খুন করছেন। পরের বৌদ্ধ শাশকরা শৈব ইত্তাদি কওমের মানুশ খুন করছেন। আমাদের মনে রাখা দরকার জে, তখন হিন্দু ধর্ম নামে কিছু পাওয়া জায় না, ‘হিন্দু’ শব্দটা অনেক পরের এবং ঠিক নেটিভ না, এইটা বাইরের লোকের দেওয়া নাম। কিন্তু আজকের হিশাবে ভাবলে এখন শৈব ইত্তাদি হিন্দু, কিন্তু জৈন বা বৌদ্ধ ইতিহাশের শকল জামানাতেই আলাদা ধর্ম। তো, বৌদ্ধরা শৈবদের খুন করলো, পরে আজকের অর্থে জারা হিন্দু তারা খুন করলো বৌদ্ধ আর জৈনদের। এমনকি পোস্ট-কলোনিয়াল ইনডিয়ায় মোছলমান খুনের ইতিহাশ বাদেও শিখদের খুন করছে হিন্দু মব।

কিন্তু খেয়াল করা দরকার জে, এইগুলা পেরায় শবই করছেন রাজা-বাদশারা! আমি কইবো জে, অশোকের জেনোছাইডকে বৌদ্ধদের খুন হিশাবে দেখা ঠিক হবে না। বা পরে বহু জৈন বা বৌদ্ধ মন্দির জে হিন্দু মন্দির বানানো হইলো, শেইটাও কোন না কোন রাজার কাম, শে/তারা হিন্দু আছিলো বইলা শেই দায় কওম হিশাবে হিন্দুদের কান্ধে দেওয়া ঠিক হয় না।

বিজেপি বয়ানের দায় তাই আমি হিন্দু কওমের কান্ধে দেই না। বিজেপিরে আমি এমনকি ‘হিন্দুত্তবাদি’ নামে ডাকতে/ভাবতেও মানা করি। তেমনি জায়নিজমকেও ইহুদিবাদ হিশাবে পড়তে মানা করবো। কলোনিয়াল ইতিহাশের ধামা ধরা বিজেপি বয়ান এইটা করে; খেয়াল করেন, মহাভারতে বা মনুশংহিতায় এমনকি জেই ‘জবন’ পাইতেছেন, তারে বিজেপি বানাইয়া তুলছে ৬/৭শ শেন্চুরির মোছলমান! কয়দিন আগে এক বয়াতি দোস্ত মনে করাইয়া দিলো শুলতান মামুদের কথা; গজনির মামুদ শোমনাথ মন্দির ভালো, তা কেন মোছলমানের কাম হবে, ছেরেফ মামুদ নামের তুর্কি রাজার কাম না? ইতিহাশে দেখবেন, শুলতান মামুদ হিন্দু মন্দির ভাংছে কেবল, হিন্দুদের পাইকারি খুন করে নাই বা জেনোছাইড চালায় নাই; কিন্তু মুলতানের হাজার হাজার ইছমাইলি মোছলমানকে পাইকারি খুন করছে, বাচ্চা বা বাচ্চাদের মায়েরাও রেহাই পায় নাই! এমন নিঠুরিয়া কামগুলারে ইছলাম বা তুর্কি বা আরব বা হিন্দু ইত্তাদি টার্মের কান্ধে তুইলা দিয়া আমরা জেন ঐশব মস্ত পাপিদের নাজাত দিয়া না দেই, বেক্তির নামে জেন মামলা দিতে পারি আমরা অথবা আইছিছ বা বিজেপি বা জায়োনিজম বা নাৎশিজমের মতো এস্পেশাল বয়ানগুলারে জেন চিনতে পারি, ওগুলারে ঠেকাবার দরকারেই শেইটা জরুর খুব! বা আওরংগজেবের কোন কাম কেন ছেরেফ তার না হইয়া মোছলমানের কাম? এমনকি বখতিয়ার খিলজি জে একজন তুর্কি জেনারেল, শেইটা পুরা ভুইলা আমরা কেন তারে মোছলমান ভাববো? একজন তুর্কি ভাবলে হিন্দু-মোছলমান দুইয়ের কাছেই ওনার হামলারে বিদেশি হামলা ভাবার মওকা থাকে! ১৯৭১ শালে পাকিস্তান আর্মির হামলা জেমন পাকিস্তান আর্মি/ইয়াহিয়া-টিক্কা খানের হামলা, মোছলমানের হামলা ভাবতে হয় না আমাদের!

(এইখানে পুরানা কয়টা কথা পেশ করি, আমার এক ফেছবুক পোস্ট থিকা: “মুখতার আব্বাস নাকভি হইলেন ইন্ডিয়ার বিজেপি নেতা, এমপি, মন্ত্রী; এবং উনি মোছলমান। ওনার কাম তাইলে মোছলমানের কাম না, হিন্দুর কাম না, স্রেফ বিজেপির কাম।

তাই বিজেপি বা আরএসএস বা ইসকন–এমন সব ফর্মাল অর্গানাইজেশনের নাম লন, নট হিন্দু। ‘হিন্দুত্তবাদ’ টার্মটাও নাপছন্দ আমার, বরং বড়জোর বামুনবাদ কইতে পারেন; কিন্তু বিজেপিবাদই তো কইতে পারেন! ‘হিন্দু’ বা ‘হিন্দুত্ত’ কইলে হিন্দুধর্মের বিজেপি ভার্সনটাই ভাইশা ওঠে, অথচ এই বিজেপি শত কোটি দলিত-শুদ্র হিন্দুরও শমান দুশমন! এই শুদ্র-দলিতরা আমাদেরই কমরেড, তাদের পরিচয় এবং মনের ব্যাপারে খেয়াল রাখা দরকার না! আপনে টার্মের ফান্দে পড়লে দুশমনের শুবিধা, আপনার হক এবং জাস্টিসের ফাইটকে শে তার রঙে দেখাইতে পারে–দুনিয়ার মিডিয়া তাগো দখলেই তো…, আলাপটা তখন খুনি আর শয়তানের বদলে আপনারে লইয়া ঘনাইতে থাকে… লোকশান…

কোন অর্গানাইজেশন যদি ধর্মের এসেন্সের খুব কাছেরও হয়, তবু রাষ্ট্র আর সরকার যেমন জুদা, অন্তত তৎটুক জুদা তারা; ধর্ম হইলো চিন্তা, আর অর্গানাইজেশন হইলো পদার্থ।”)

তো, আপনাদের কাছে আমার আবদার হইলো, জদি মামুদ বা আওরংগজেবের কাম ভাবেন, জদি এমনকি তখনকার মোছলমানের কামও ভাবেন, তার বদলা লইতে আপনে কারে শাজা দেবেন আজকে? আমরা কি জুলুমের ছিলছিলা টানতে থাকবো কেয়ামত তক? জুলুমের ছিলছিলা আর ইনছাফ কায়েম দুই জিনিশ, জুলুম দিয়া ইনছাফ কায়েম হয় না। জুলুমের জবাবে জেই জুলুম, তাতে পেরায়ই দেখবেন, আশল কিরমিনালরা কখনোই শাজা পায় না, কতগুলা নিরিহ লোক খুন হয়, ইতিহাশে আরেক দল মজলুম জোগ করি আমরা! আর জুলুমের বদলা লইতে জাইয়া মাঝখানে কতগুলা মানুশ ভ্যাম্পায়ার হইয়া ওঠে!

 

টিপ্পনি

ঢাকার মোহাম্মদপুরের টাউনহলের দিকে গত কয়েক বছর আমার বেশ ঘোরাঘুরি হয়। ঠিক কত দিন আগে, মনে নাই, টাউনহলের আশেপাশে, এক লোকের দেখা পাই আমি পেরায় দিনই, ৫৫/৬০ হবে হয়তো বয়শ, আন্দাজ করি বিহারি (জেনেভা) ক্যাম্পে থাকেন, ইনডিয়ার বিহার থিকা খেদাইয়া দেওয়া উর্দুভাশি লোক মনে হইছে। ওনারে জতো না দেখি, তারচে বেশি শুনি, ঐ কারনেই আন্দাজটা গজাইছে মনে; পোলা লোক একজন, এইটাও আন্দাজ করলাম, খুবই উচা গলা, গাড়ির হর্ন বা ইন্জিন বা আরো জতো ঢাকাইয়া শব্দ, শব কিছু ছাপাইয়া ঐ লোকের গলা শুনতে পাই, হাটতেছেন আর উর্দু কবিতা টাইপের কিছু একটা কইতেছেন হরদম, জোরেই হাটেন মোটামুটি, তারচে জোরে কদম ফেলেন রাস্তায়, রাস্তায় নিজের পা জেন কয়েক ইন্চি ঢুকাইয়া দেন কদমে কদমে!

এই লোকটা নজরে পড়েন নাই, তেমন লোক ঐ এলাকায় নাই মনে হয়! কি জে ভাবে লোকে, পাগল? কেউ কিছু কয় না ওনারে, লুংগি আর জামা পইরা হাটেন, অমনে উর্দু কবিতা কইতে থাকার বাইরে মোহাম্মদপুরের ৮/১০ জন ঐ বয়শি পোলা লোকের লগে ওনারে জুদা করার উপায় নাই তেমন, গড়পরতা বাংগালি চেহারাই, তেমনি লম্বা, কিছুই নাই নজর দেবার!

ওনারে লইয়া ভাবি মাঝে মাঝে, কবিতাও লিখতে চাইছি কয়েকবার, লিখি নাই পরে আর, বা পারি নাই! আজকেও দেখা হইলো, আবারো মনে হইলো, কিছু একটা লিখি!

আমাদের বাড়িতে একজন নাপিত আশতো চুল আমাদের কাটতে, এখনো আশে কল দিলে, কয় বছর আগে মা আমারে ৫০০ টাকা দিয়া চুল-দাড়ি কাটতে রাজি করাইছিলো, তখন ঐ শুনিল নাপিতকে কল দিয়া আনা হইছিলো, বাড়ির উঠানে আমারে ছাটলো। এই শুনিল একজন হিন্দু, পদবি জানি না (শিল হইতে পারে কি!), আমাদের বাড়ির পিছের খালের ওপারে হিন্দু পাড়ায় থাকেন। দেশের নাপিতদের হিন্দুই ভাবতাম আমি, মোছলমান জে নাপিত হইতে পারে, এইটা আমার মালুম হয় ঢাকায়, মিরপুরে, বহু বছর আগে। তখন এবং পরে এই মোহাম্মদপুরের দিকেও বহু নাপিত পাইছি মোছলমান; লগে এইটাও টের পাইছি জে, এরা পেরায় শবাই বিহারি।

বিহারিরা বাংলাদেশের নাগরিক আছিলো না আগে, এই তো কয় বছর আগে কোন এক মামলায় ১৯৭১ শালের পরে বাংলাদেশে জনম লওয়া বিহার-খেদানো মানুশজনের বাচ্চারা নাগরিক হইতে পারছে, আরো আগের লোকেরা মনে হয় এখনো নাগরিক হইতে পারে না। নাগরিক না হবার মানে হইলো ফর্মাল ইকোনমির ছেক্টরে এরা ঢুকতে পারতো/পারে না, কাগজপত্র নাই তো কোন! নাপিত হওয়া মানে একটা ইনফর্মাল ছেক্টরে কাম করা, পার্কে বাদাম বেচার মতোই কাগজপত্র লাগে না কোন; কামাইও মোটামুটি ভালো। তাই মনে হয় বিহারি উর্দুভাশি এতো নাপিত ঢাকায়!

এই নাপিতদের শবারই পেরাইমারি ভাশা উর্দু, কিন্তু কাস্টোমার থাকলে ওনারা নিজেরা মনে হইছে উর্দুতে খুব কথা কয় না! আমাদের ১৯৫২ তো ওনারা জানেন, ১৯৭১ শালেও পপুলেশন হিশাবে বিহারিদের পজিশন আছিলো পাকিস্তানের পক্ষে, ১৬ ডিশেম্বরেরও পরে মিরপুর মুক্ত করতে পারছে বাংলাদেশ, বিহারিরা ঠেকাইয়া রাখছিলো ততদিন! কিছুদিন আগেও মিরপুরে বাংগালিরা হামলা করছিলো বিহারিদের উপর।

ওনারা শবাই বাংলা জানেন এবং রাস্তাঘাটে বাংলা ইউজ করেন, মোহাম্মদপুরে, ক্যাম্পের দিকে এমনিতে উর্দু ওনারা একটু আরামে কইতে শাহশ করেন মনে হইছে আমার। কিন্তু নিজেদের ভিতরই।

তাই টাউনহলের ঐ লোকটারে আমার বেশ চতুর লাগে! মানে এমন একটা ঢঙে উর্দু কইতে থাকে চিল্লাইয়া, উর্দু শুনতে হয় আপনের, হয়তো ২১ ফেবরুয়ারিতে উনি ইকবাল কইতে কইতে হাটতেছে, বাংগালিরা পাগল ভাইবা আর পাত্তা দেয় না! পাগল না ভাবলে হয়তো ঐভাবে উর্দু কইতে থাকার উপর কোন হামলা ঘটতো!

কয়দিন আগে ১ পুলিশ এক মহিলার কপালের টিপ লইয়া আপত্তিকর কিছু ঝামেলা করছে; কপালে টিপ হিন্দু হবার নিশানা কিনা, শেই ব্যাপারে অনেক বাহাসও দেখলাম ফেছবুকে। একদল মোছলমান টিপের ব্যাপারে অমন আপত্তি করেন; আবার আরেকদল টিপ পইরাও মোছলমান থাকতে থাকেন, তারা টিপের লগে হিন্দুধর্মের কোন জোগ মানতে নারাজ। মজার ব্যাপার হইলো, বিয়াতো মাইয়া হিন্দুদের শিথিতে শিদুরের ব্যাপারে কেউই কোন শন্দেহ দেখায় নাই, ঐটা জে হিন্দু হবার নিশানা, শেই ব্যাপারে শবাই মনে হয় একমত; জেই মোছলমান মাইয়ারা টিপের ব্যাপারে অমন কইলেন, তারা কেউ কি শিদুরও পরেন? দেখি নাই। তাইলে টিপের ব্যাপারে তর্ক করতে থাকা লোকেরাই জদি শিদুরের ব্যাপারে কোন তর্ক না করেন, তাইলে অটোমেটিক বোঝা জাইতেছে জে, টিপের ব্যাপারে দুই পক্ষই কিছু কিছু ভুলে আছেন! কিন্তু এইটা তো ঠিক জে, কতক মোছলমান টিপে আপত্তি করছেন, মানে এমন কতগুলা লোক আছে দেশে; তারা জখন দেখলো, দেশের পুলিশই টিপের ব্যাপারে অমন কইতে পারে, পরে ফেছবুকে পুলিশের ভেরিফায়েড পেইজে তার ছাফাইও গাইতে পারে, তাইলে তাদের মনে তো বাড়তি জোশ পয়দা হইতেই পারে! টিপের উপর হামলারে তারা লিগাল দায়িত্তও তো ভাবতে পারে! গেরেপ্তারের দায়িত্ত জেমন জনতাও পালন করতে পারে, তেমনটা টিপের ব্যাপারেও হইতে পারে! রাশ্টের উপরে জা ঘটে, তা নিচের দিকে নামতে থাকে, ভালোটাও, খারাপটাও। বাংলাদেশে শবচে কম করাপশন দেখা গেছে জিয়ার আমলে, জিয়া খুন হবার পরেই ইলেকটেড শেই বিএনপি শরকারের ব্যাপারেই আবার করাপশনের বেশুমার নালিশ! ভালো ভালো লোকেরা কি হঠাৎ খারাপ হইয়া গেল? জিয়ার আগেও তো লিগ-বাকশাল আমলেও আছমান ছাপাইয়া ওঠা করাপশন! এই কারনেই কইছি জে, ভালো বা খারাপ–দুইটাই রাশ্টের উপর থিকা নামে নিচে, নিচ থিকা করাপশন খেদানো জায় না, তাতে কেবল এখনকার বাকশালি হুকুমতের মতো আরেক কারনে জারে ধরতে চায় বাকশাল, তার করাপশনের হরেক নিউজ হাজির হয় মিডিয়ায়, কিন্তু জাহাংগিরনগর ভার্ছিটির ভিসি আরামেই বহাল তবিয়ত।

তো, টিপের ব্যাপারে অমন একটা বাহাস থাকাতেই হয়তো মাইয়া হিন্দুরা আরামে টিপ করতে পারতো বা পারে, টিপ দেইখাই তারে হিন্দু বইলা চিনে ফেলবে না কেউ, তেমন ভরশা করতে পারতো বা পারে টিপের বেলায়। কিন্তু তেমন উপায় শিদুরের বেলায় নাই। কাছাকাছি ঘটনা আছে জলের ব্যাপারে। মোছলমানদের লেখাজোখায় জল শব্দটা দেদার থাকলেও কথায় পেরায় নাই! কিন্তু হিন্দুদের ভিতর জলই শবচে পপুলার। আমি চর্জাপদে পানি পাইছি, জল পাই নাই বরং, পানি শব্দে মোছলমানি বইলা কিছুই নাই, আরবি-ফার্ছি থিকাও আশে নাই। কিন্তু পানি আর জলের ব্যাপারে এই জামানার বাংলাদেশে ধর্মের ঐ জোগ মিছা না। কিন্তু আমি আন্দাজ করি, দেশের বহু হিন্দু পথেঘাটে জলের চাইতে পানিই বেশি কয়! তারা শবখানে হিন্দু হিশাবে নিজেদের চিনাইতে চায় না, তাদের ভাবনার পিছে জদি শাচ্চা কোন কারন নাও থাকে তারা জে একটু ডরায়, এইটা তো মিছা কথা না!

হিন্দুদের উপর কোন হামলা হইলে তাতে মোছলমান বাংগালি আর বিহারি মোর্চাও বানাইতে পারে। কিন্তু এই জে হিন্দু আর মোছলমান বাংগালিরা ঝগড়া করতেছে, এরাই আবার মোর্চা বানাইয়া বিহারি বা চাকমাদের উপর হামলা করতে পারে, পাহাড়ে তাদের হামলারে আবার আগাইয়া দিতে পারে আর্মি। মান্দিরা নিজেদের পুরানা রেওয়াজ মোতাবেক মায়ের বংশ লয়, বিয়ার পরে পোলারা বউয়ের বাড়ি চইলা জায়, কিন্তু পাশের বাংগালির কালচার মোতাবেক তারা এখন অনেকেই ওগুলা আর করে না, অনেকে শরমও পায়।

তাইলে দেখেন, মেজরিটি আর মাইনোরিটি কেমনে বদলায়, লোকেশন বা টাইমে, শমাজ আর ইতিহাশ এমনই দুলতেছে হরদম, এই দোলা আমলে না লওয়া কি আদৌ কোন এলেমদারের কাম হবে?!

ধর্ম জার জার, মচ্ছব শবার–এমন একটা কথা দেশের ছেকুলাররা কন পেরায়ই। এইটা আমার ঠিক পছন্দ না। আমার পছন্দের কথাটা আমিই বানাইছি: শুখ জার জার, শান্তি শবার 🙂 ।

ধর্ম জার জার, মচ্ছব শবার–এই কথাটা ধার্মিক মানুশের ভালো লাগার কারন নাই। কোরবানিতে গরু জবাই করতে করতে ঐ কথাটা হিন্দু ধার্মিকদের বলা ঠিক হবে না বা পুজায় মোছলমান ধার্মিকদের দুর্গার গান শোনানোও ঠিক হবে না। কমুনিটির হক আছে, তা আদায় করা উচিত। কয় বছর আগে আমার এক লেখায় কইতেছিলাম জে, শহিদ মিনার আশলে বাংগালি কমুনিটির এস্পেস, ঐটারে মারমা বা উর্দুভাশির উপর চাপাইয়া দেওয়া ঠিক হবে না, তাই ‘জাতিয় তেল-গ্যাস কমিটি’র শহিদ মিনারে বইশা ধর্না দেওয়া ঠিক না, অমন বশার জন্ন শবচে ফিট লোকেশনের নাম পার্লামেন্ট, মানিক মিয়া এভিনিউ।

তো, শকলের মচ্ছব কি আদৌ আছে দেশে? আছে এবং তার লগে ধর্মের তেমন জোগ নাই আদৌ এবং শেই মচ্ছবের নাম ইলেকশন। মজার ব্যাপার হইলো, এই বাকশালি হুকুমতে ইদ বা পুজারে শবার মচ্ছব বানাইতে চায় জোর কইরা, কিন্তু শবার মচ্ছব ইলেকশন একদমই পছন্দ করে না বাকশাল! কখনো বা তাহাজ্জুদের ওক্তে দুয়ার আটকাইয়া নিজেরা নিজেরা ইলেকশন নামের মচ্ছব করে!

কিন্তু তেমন আর কোন মচ্ছব কি আছে? আমার মত হইলো, পয়লা বৈশাখে নওরোজের দিনটা তেমন মচ্ছব হইতে পারতো! বাংগালির ভিতর পয়লা বৈশাখের মচ্ছব বহু আগে থিকাই আছে; শেই আকবরের খাজনা থিকা হালখাতা, বৈশাখে মেলাও হইতে দেখছি ছোট্টকালে, জাত্রাপালা হইতো। পাহাড়ে চাকমা-তিরিপুরাদের ভিতরও বিজু মচ্ছব আছে। শেই আকবরের কারনে বিহারিদের ভিতরও পয়লা বৈশাখ থাকার শম্ভাবনা আছে।

কিন্তু দেশের শকলের একটা মচ্ছব হইয়া উঠতে পয়লা বৈশাখ কোন একটা ধর্মের একক দখলে জাওয়া ঠিক হবে না একদমই! আমাদের জেমনই লাগুক পয়লা বৈশাখের মংগল শোভাজাত্রা ইউনেস্কো হেরিটেজ হিশাবে নাম উঠাইছে, বছর বছর ঢাকা ভার্ছিটির চারুকলার তদারকিতে এইটা হইতেছে। কিন্তু আফছোসের ব্যাপার হইলো, এইটার ব্যাপারে ঐ টিপের মতোই তুমুল একটা তর্ক হাজির হইছে ময়দানে! আমাদের তাই খুবই হুশিয়ার হইয়া ছুরাহা করতে হবে এইটার!

খেয়াল করেন, বাংলাদেশের গদি এখন বাকশালের দখলে, আমরা আশা করতেছি, কোন একদিন আজাদ হবে দেশ, ওনাদের তালুকদারি থিকা আমাদের দেশ হইয়া উঠতে পারবে, কামিয়াব হবো আমরা একদিন। তেমনি আজকে মংগল শোভাজাত্রা জদি বা বেদখলে আছে, একদিন হয়তো মুক্ত করতে পারবো আমরা, তখন জেমন হওয়া উচিত এই র‍্যালির, তেমনে করতে পারবো! তাই এইটারে বন্ধ করার বদলে আমাদের দরকার মুক্ত করা, ৫/৮ জনের দখলে থাকা জিনিশটারে জনতার হাতে তুইলা দেওয়া; আজকে জেমন ২৩ জন পুলিশের পাহারায় ১১ জনের র‍্যালি হয়, তার বদলে এইটা হবে শবচে ফুর্তির উছিলা, ইলেকশনের মতো একটা মচ্ছব!

কিন্তু তখন কেমন হইতে পারে এই র‍্যালি? চলেন একটা নকশা বানাবার চেশ্টা চালাই।

শুরুতেই আমাদের মানা দরকার জে, এইখানে বাংগালি বা বিহারি বা চাকমা বা মারমা বা মান্দি–শবাই জয়েন করবে বইলা আশা করলে তাদের নিজ নিজ পরিচয়ে হাজির হবার এজাজত দিতে হবে আমাদের। তেমনি হিন্দু থাকবে, মোছলমান থাকবে, এমনকি ছেকুলারিজম নামের ধর্মের লোকেরাও থাকবে। পয়লা বৈশাখ হবে বহুর বহু হবার জায়গা, শকলের ফুর্তির উছিলা।

বাংলাদেশে অন্নের বা নিজের জন্ন উইশ করার ব্যাপার আছে একটা, শবাই একই জনের কাছে চাই না, কিন্তু অন্নের মংগলই চাইবার রেওয়াজ; আমরা দোয়া করি, মোছলমান করে, হিন্দু করে, বৌদ্ধ বা এমনকি নাস্তিকেরাও উইশ করে। তাইলে পয়লা বৈশাখের র‍্যালিতে শকলের নিজের নিজের মংগল চাইবার নিশানা লইয়া হাজির হইতে হবে। কেউ হয়তো শ্যামার গান গাইতেছে, কেউ আয়তুল কুরছি পড়তেছে, কেউ কলেমা শাহাদাত লেখা ব্যানারে মংগল চাইতে থাকবে, কেউ বা উর্দুতে ইকবালের গজল, কেউ বা চাকমা হরফে লেখা ব্যানার লইয়া হাটতেছে; টিপ পরবে, কেউ শিদুর, কেউ বা হেজাব; কেউ পান্তা ইলিশ খাবে, কেউ গোশত-পান্তা, কেউ অতুলের বা লালনের বা রাধারমনের গানে জিকির করতেছে, কেউ বা নাতে রাছুল, কেউ বা ‘আল্লা মেঘ দে, পানি দে… ফারাক্কা ভাইংগা দে…’; কেউ বা পুজির পিন্ডি চটকাইতেছে, কেউ পিছা দিয়া শৈরাচার খেদাইতেছে; একজন ফলাহারি (ফুরুটারিয়ান) কেবল ফলের ছবি লইয়া ঘুরতেছে, আরেকজন এনভায়রনমেন্টালিস্ট ফছিল ফুয়েলের মুছিবত লইয়া বয়ান দিতেছে।

একদিন আমরা পারবো, জালেম খেদাইয়া ইনছাফের লগে দিদার হবে আমাদের।

এলাহি ভরশা।

#রকমশাহেরবয়ান, ১৪-১৫ এপরিল ২০২২

বাড়তি নোট

উপরের আলাপগুলা আশলে আলাপের একটা ছিলছিলা থিকাই পয়দা হইছে! কিছু রিপিটেশন পাইবেন, কিন্তু ছিলছিলাটা বুঝতে তারিখ ধইরা নিচের ছোট ছোট লেখগুলা পড়তে কইবো, পিলিজ…

#৩ মার্চ ২০২০

ডিশেম্বর ২০১৯, এক পোস্টের কয়টা কথা আছিলো এমন,

“তারা (মোছলমান) বদলা লইতে পারে না কারণ তাদের কওমের আইডিয়ায় কেবল মোছলমান না, অন্যরাও আছে; কওম ধর্মের পরিচয় না, বরং একটা ‘ইকোনমিক কালেকটিভ’ অনেকটা! নিজেদের যদি দেশের মালিকও ভাবে, ছুপিরিয়র ভাবে তবু মোছলমান বাদে অন্যরা তখন মেহমান, মেহমানের হেফাজত করতে হয়, এইটা তাদের হক! এই মোছলমান জনতার যারা এমনকি শরিয়া আইন চায় তারাও জানে যে, তারা কামিয়াব হয় নাই, বাংলাদেশ তেমন দেশ না, তাই এইখানে তেমন কিছু করার নাই! তারা তো শরিয়া আইন করার তদবির আর ফিকির করবেই, কিন্তু শেইটা হইলেও, শবচে কট্টর হইলেও ‘জিজিয়া’র বেশি জাবার উপায় নাই তাগো পলিটিক্যাল ডকট্রিনে!”

আজকে ফিরোজ আহমেদ ড. ইকবাল লইয়া তার পোস্টে লিখছেন এমন,

“ভারতের দিল্লীতে ভয়াবহ এক মুসলমান বিরোধী রক্ষক্ষয়ী দঙ্গলকে দেখা গেলেও তার চরম প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে কেন দেখা যায়নি? কারণ দিল্লী সহ পুরো ভারতের বিপুল হিন্দু ধর্মাবলম্বীকেও দেখা গেছে মুসলমানদের পাশে দাাঁড়াতে, হিন্দুত্ববাদী একটা প্রবল রাষ্ট্রযন্ত্র যদিও মুসলমানদের হত্যায় উৎসাহই দিয়েছে। ভারতের দলিত সহ শুভবোধ সম্পন্ন মানুষদের এই পাশে দাঁড়ানোর অনুভূতি এমনকি বাবরি মসজিদ ভাঙবার সময়েও নগন্য ছিল। জনগণের মাঝে এই অনুভূতিটিই অন্তত বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির মাঠ দখলের অন্তরায় ছিল, সম্ভবত পাকিস্তানেও। যদিও ঘৃনাবাদীরা ভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃনা ছড়িয়ে মাঠ দখলে নেয়ার চেষ্টা কম করছে না।”

আরো আগের এক পোস্টে টার্মের বেপারে লিখছিলাম, ‘হিন্দুত্ববাদি’ কইতে/লিখতে মানা করতেছিলাম আমি, ‘ইছলামিস্ট’ও কই/লিখি না আমি; শেই পোস্টের কয়টা কথা নিচে পড়েন; পোস্টগুলার লিংকও পাইবেন নিচে।

“হিন্দু মাত্রই তো হিন্দুত্ববাদী না। এই টার্মগুলা দিয়া ওনারা যা বুঝাইতে চান, আমি তো তা বুঝিই, কিন্তু আমি যে বুঝি তা আসলে ওনাদের পোরতি আমার দোস্তিভাবের কারণেই বুঝি! এই ভাব যার নাই, সে ইসলামিস্টের ভিতরে ইসলাম না দেইখা পারে না, আর কেউ যখন ইসলাম লইয়া হাজির হয় তার ভিতরে তাই ইসলামিজমই দেখতে হয় তার! এই দেখা তো ভুল, কিন্তু দেখেন, ৯/১১’র পরে মোসলমান মাত্রই ইসলামিস্ট হিসাবে সন্দেহ করতেছে দুনিয়ার পাওয়ারের সেন্টারের লোকেরা! তাই টীকা দিতে হইতেছে অনেকেরই (আমেরিকার বহু লিবারাল দিতেছেন টীকা, স্টেরিওটাইপিং আর জেনারালাইজেশনের ঘাপলা লইয়া লম্বা ওয়াজ করতে হইতেছে), যে, মোসলমান মানেই কিন্তু ইসলামিস্ট না; তবু ভিকটিম হইতেছে মোসলমানেরা–আজকের ইন্ডিয়ায় আর চীনে ঘটতেছে হরদম! এমন হইতে পারার একটা কারণ খোদ ঐ টার্মটাই! কেননা, আইএস’কে ইসলামিস্ট হিসাবে লেখার ভিতর দিয়া রিডারের মনে খোদ ইসলামের নয়া তারিফ বা ডেফিনিশন পয়দা হইতে থাকে, ইসলামের সিংগুলারিফিকেশন ঘটতে থাকে, ওয়াহাবি/সালাফিদের খোয়াব পূরণ কইরা দিতে থাকে ঐ টার্ম!”

আমার ছাজেশনটা কেমন তাইলে? বা দিল্লি বা মায়ানমার বা ফিলিস্তিনের মতো শব ঘটনায় জারা পোরতিবাদ করতে চান, কেমনে করলে আমার হিশাবে ঝামেলা বা ঘাপলা কমতে পারে?

দেখেন, ফিরোজ আহমেদ মোছলমানদের ভিতর ইছলামের ডেফিনিশন বা তারিফের ভিতর আমার পয়েন্টগুলারে মানেন নাই; উনি কইতেছেন, দিল্লির জেনারেল হিন্দুরা মোছলমানদের পক্ষে খাড়াইছেন বইলাই নাকি বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের মোছলমানরা নিজ নিজ দেশের হিন্দুদের উপর বদলা লইতে নামেন নাই! এমন ভাবনায় আপত্তি করতে হয় আমার। এতে তাইলে ধইরা লইতে হয় জে, জখন এমন বদলা লইবার ঘটনা ঘটে তখন জেনারেল হিন্দু বা মোছলমান মজলুমদের বাচাইতে নামেন না! ইতিহাশে এমনটা কখনোই দেখা জায় নাই! নাজি জার্মানে বা ১৯৪৭ বা ইছরাইলে বা মায়ানমারে বা ইনডিয়ায়–শকলের মন দখল করার কোন ঘটনা ঘটে নাই, কখনোই! তবু বদলা লইতে দেখছি আমরা, ১৯৪৬-৪৭ শালের ঘটনাতেই বদলা লওয়া দেখা জাইতেছে। তবে ফিরোজের কথায় আমার একটা শন্দেহরে শত্য হিশাবে জানলাম! আমার শন্দেহ আছিলো জে, দিল্লির মোছলমানদের বাচাইতে দিল্লির জেনারেল হিন্দুদের চেশ্টা ফেছবুকে শেয়ারে শেয়ারে জেমনে ফাপাইয়া-ফুলাইয়া তোলা হইলো, তার কারণ, দেশের মোছলমানদের পোরতি ঐ শেয়ারারদের শন্দেহ (বদলার)! তাগো হিশাব হইলো, এইগুলা বেশি বেশি চাউর করা গেলে দেশের মোছলমানরা বদলা লইতে নামতে একটু দোনোমোনো করবে!

আইডি পলিটিক্স খুবই ফেটাল, শমাজের গুরুপগুলার ভিতর দুশমনি বাড়ায়–এমন কতগুলা ভাবনা আছে দুনিয়ায়। তাই আইডি পলিটিক্স ডিনাই করতে জাইয়া অনেকেই মোছলমানের মরনকে ছেরেফ মানুশের মরন হিশাবে দেখতে কয়; আর আইডি পলিটিক্সের গোড়া ছাপোর্টাররা জালেমের ধর্ম বা রেছ শামনে আইনা ঐ ধর্ম বা রেছের পরিচয় হিশাবে হামলাকে হাজির করে।

খেয়াল করলে দেখবেন, দিল্লিতে মোছলমান মানেই মজলুম, কিন্তু হিন্দু মাত্রই জালেম না। তাইলে দেখা জাইতেছে, যারা মজলুম তাগো ভিতর বহু ভাগ থাকলেও, কেউ এমনকি নাস্তিক হইলেও ছেরেফ খৎনা বা নাম দেইখাই হামলা করা হইলো; কিন্তু হামলা করলো বিজেপি-শিবশেনা–কিছু হিন্দু যারা আরো বেশি বিজেপি-শিবশেনা এবং পোলা! মানে হইলো, মজলুমের আইডি না দেখলে গলদে পড়তে হয় আমাদের এবং জালেমের আইডি দেখলে গলদে পড়তে হয়! আরেকভাবে কইলে, মজলুমের আইডি হইলো ধর্ম আর জালেমের আইডি বিজেপি-শিবশেনা। বিজেপি-শিবশেনা নাম দুইটা আছে, তাগো হামলার ইশতেহার আছে, মজলিশে রেগুলার বয়ান করতেছে নেতারা, তারাই হামলা করলো তবু এই আইডি না দেইখা ফিরোজ বা অন্যরা কেন ‘হিন্দুত্ববাদি’ লেখেন? আইডি পলিটিক্স জারা লাইক করেন না তাদের এই জিনিশটা মজার! তারা মজলুমের আইডি ১০০% মিললেও তারা ঐ আইডি কইবেন না, কিন্তু জালেমের আইডি ১% মিললেই শেই আইডি দিয়া পরিচয় করাইয়া দিতে থাকবেন! আমেরিকায় এমনই ঘটে জারা ধলা না, তাদের বেলায়! শকল (কিছু হাউজ নিগার বাদ রাখা জায় বটে; তবে দিল্লিতে তেমনি বিজেপির এক হাউজ মোছলমানের ঘরও পোড়াইয়া দিছে!) কালা মজলুম, কিন্তু আইডি পলিটিক্স ডিনাই করা লোকেরা তারে কালা মানুশদের উপর জুলুম কইবেন না; কিন্তু ১% কালা কেরাইম করে, তখন কইবেন জে, কালারা কিরমিনাল!

তো, ফিরোজ আহমেদ কিন্তু মজলুমের আইডি কইছেন/লিখছেন, লগে জেনারেল হিন্দুদের ভালোতা দেইখাও ‘হিন্দুত্ববাদি’ লিখছেন! আন্দাজ করি, এইটা বেখেয়াল, চিন্তা না করা! ওদিকে মজলুমের আইডি কইলেও ইছলামের ভিতর অন্যরে হামলার বেপারে মানা থাকার কথা কইবেন না আবার!

আমার অবজারভেশন এমন: ইছলামে জেমন অন্যরে হামলা করতে মানা আছে, তেমি হিন্দুধর্মে শকল পরানের ভিতর খোদারে দেখার নছিহতও আছে। ইছলামে জেহাদ আছে, হিন্দুধর্মেও গিতা আছে। মোছলমানদের ভিতর কতক মানুশ জেহাদের আইডিয়ারে অন্যরে খুনের তরিকা হিশাবে দেখাইতে চায়, হিন্দুদের ভিতর কতক মানুশ রাম-গিতারে অন্যরে খুনের মাছালা হিশাবে হাজির করে। দুইটাই ইছলাম বা হিন্দুধর্মরে কেবল নিজেদের ডেফিনিশনের ভিতর আটকাইয়া ফেলতে চায়। আমরা জদি এদের ইছলামিস্ট বা হিন্দুত্ববাদি কইতে থাকি তাইলে ঐ দুই কতকেরই ফায়দা হাছিল কইরা দিতেছি! খেয়াল কইরা দেখেন, জালেমেরা কেউই কেবল হিন্দু বা মোছলমান আইডি দিয়া অর্গানাইজড হয় নাই; বরং বিজেপি-আরএছএছ-আইএছ হিশাবে ময়দানে নামে। জে কোন ধর্মরেই এমন শব লোকের দখলে জাইতে মদদ দেওয়া ঠিক হবে না আমাদের! লগে ধর্ম-আইডি দেখতেই হবে আমাদের, কিন্তু এইটা মজলুমের বেলায়, জালেমের ধর্ম আইডির নিশানকে শামনে আনলে ধর্ম দখলে জালেমের এজেন্ডারেই মদদ দেওয়া হবে।

ইউরোপ-আমেরিকার মিডিয়াগুলা এই আকামটা পেরায়ই করে এবং আমাদের কলোনাইজড মগজ শেইটারে ফলো করতে থাকে। তারা ইছলামিস্ট লিখছে, এখন হিন্দুইজম লিখতেছে; এই ফান্দে জেন না পড়ি আমরা, আবারো, এখনো! এই তারাই কিন্তু জুইজম না লেইখা জায়নিজম লেখে, হোয়াইটিস্ট না লেইখা হোয়াইট ছুপরিমেছিস্ট লিখতেছে! এইটা আগের শেই পোজেক্টেরই কন্টিনুশন, বৌদ্ধ-হিন্দু-মোছলমান আমল লেখার পরে খৃস্টান আমল না লেইখা মরডান আমল/জুগ লেখে! অথচ দেখেন, জারে মোছলমান আমল লিখতেছে শেই আমলে তুর্কি-মোগল-শিয়া-ছুন্নি-পারশি-আরব-হাবশি-লোকাল, এমন বহু ভাগ আছিলো, তারা মারামারি করছে, মরছে, ভাইরে মারছে, বাপরে মারছে, কখনো বা বামুন-খতরিও হিন্দুদের লগে ঘোট পাকাইয়া অন্য মোছলমানরে কতল করছে! কেননা, ধর্ম-আইডি দিয়া চলার বদলে অন্য কোন আইডি বড়ো আছিলো, ১ নম্বরে আছিলো, নিজের হুকুমত টিকাইয়া রাখা, পিরিতের পোলারে মছনদে বশাইয়া জাওয়া; কখনো হয়তো কেবল হামলা করতে জাইয়া শিয়া-আইডি ধইরা হামলা করছে! আগেই কইছি, জুলুমের বেলায় ধর্ম-আইডি ধইরা জুলুম করাটাই হরদম দেখা জায় ইতিহাশে, কিন্তু জালেমের বেলায় ধর্ম-আইডির চাইতে অন্য আইডি শব শময়ই বড়ো থাকতে দেখা জায়!

https://www.facebook.com/firoz.ahmed.9655/posts/10158139617091565

https://www.facebook.com/rk.manu/posts/10156287129282027

https://www.facebook.com/rk.manu/posts/10156601967187027

//ফেছবুক পোস্ট, ৩ মার্চ ২০২০

#৮ অক্টোবর ২০১৯

 

টার্মের বেলায় হুশিয়ার থাকার ডাক দিছিলাম; এক ফ্রেন্ড তার স্ট্যাটাসে অপোজ করছেন। আমার ডাকটা আছিল এমন:

“মুখতার আব্বাস নাকভি হইলেন ইন্ডিয়ার বিজেপি নেতা, এমপি, মন্ত্রী; এবং উনি মোসলমান। ওনার কাম তাইলে মোসলমানের কাম না, হিন্দুর কাম না, স্রেফ বিজেপির কাম।

তাই বিজেপি বা আরএসএস বা ইসকন–এমন সব ফর্মাল অর্গানাইজেশনের নাম লন, নট হিন্দু। ‘হিন্দুত্ববাদ’ টার্মটাও নাপছন্দ আমার, বরং বড়জোর বামুনবাদ কইতে পারেন; কিন্তু বিজেপিবাদই তো কইতে পারেন! ‘হিন্দু’ বা ‘হিন্দুত্ব’ কইলে হিন্দুধর্মের বিজেপি ভার্সনটাই ভাইসা ওঠে, অথচ এই বিজেপি শত কোটি দলিত-শূদ্র হিন্দুরও সমান দুশমন! এই শূদ্র-দলিতরা আমাদেরই কমরেড, তাদের পরিচয় এবং মনের ব্যাপারে খেয়াল রাখা দরকার না! আপনে টার্মের ফান্দে পড়লে দুশমনের সুবিধা, আপনার হক এবং জাস্টিসের ফাইটকে সে তার রঙে দেখাইতে পারে–দুনিয়ার মিডিয়া তাগো দখলেই তো…, আলাপটা তখন খুনি আর শয়তানের বদলে আপনারে লইয়া ঘনাইতে থাকে… লোকসান…

কোন অর্গানাইজেশন যদি ধর্মের এসেন্সের খুব কাছেরও হয়, তবু তারা রাষ্ট্র আর সরকার যেমন যুদা, অন্তত তৎটুক যুদা; ধর্ম হইলো চিন্তা, আর অর্গানাইজেশন হইলো পদার্থ।”

ফ্রেন্ড কইলেন এমন:

“মুসলমান মানেই ইসলামিস্ট না, ইহুদী মানেই জায়োনিস্ট না, হিন্দু মানেই হিন্দুত্ববাদী না। হিন্দুত্ববাদ একটা রাজনৈতিক মতাদর্শ। জায়োনিস্টরা যেমন ইহুদীবাদী মতাদর্শে দীক্ষিত হয়ে ইজরায়েল বানিয়েছে, ইহুদী সুপ্রিমেসী প্রতিষ্ঠা করেছে, ইহুদী বাদে বাকীদের তাড়িয়েছে, খুন করেছে হিন্দুত্ববাদ তেমনই একটি রাজনৈতিক মতাদর্শ। ইন্ডিয়া এবং এর প্রভাব বলয়ে থাকা প্রত্যেকটা রাষ্ট্রে হিন্দু সুপ্রিমেসী প্রতিষ্ঠা করা তাদের লক্ষ্য। আরএসএস, ইসকন, বজরং এই জাতীয় দলগুলো হিন্দুত্ববাদী শ্রেষ্ঠত্বের মতাদর্শে দীক্ষিত। সুতরাং হিন্দুত্ববাদীদের হিন্দুত্ববাদী বলুন। জোর গলায় বলুন। জায়োনিস্টদের অপরাধ নিয়া কথা বললে যেমন একদল তেড়ে আসে এন্টিসেমিটিক বলে, হিন্দুত্ববাদীদের অপরাধ নিয়া কথা বললেও একদল সাম্প্রদায়িক গালিসহযোগে তেড়ে আসে/ আসবে। এরা হয় হিন্দুত্ববাদের বন্ধু না হয় বেকুব নাদান। এদের উপেক্ষা করুন। প্রয়োজনে প্রতিরোধ করুন।”

ওনার কথা ঠিকই–মুসলমান মানেই তো ইসলামিস্ট না; হিন্দু মাত্রই তো হিন্দুত্ববাদী না। এই টার্মগুলা দিয়া ওনারা যা বুঝাইতে চান, আমি তো তা বুঝিই, কিন্তু আমি যে বুঝি তা আসলে ওনাদের পোরতি আমার দোস্তিভাবের কারণেই বুঝি! এই ভাব যার নাই, সে ইসলামিস্টের ভিতরে ইসলাম না দেইখা পারে না, আর কেউ যখন ইসলাম লইয়া হাজির হয় তার ভিতরে তাই ইসলামিজমই দেখতে হয় তার! এই দেখা তো ভুল, কিন্তু দেখেন, ৯/১১’র পরে মোসলমান মাত্রই ইসলামিস্ট হিসাবে সন্দেহ করতেছে দুনিয়ার পাওয়ারের সেন্টারের লোকেরা! তাই টীকা দিতে হইতেছে অনেকেরই (আমেরিকার বহু লিবারাল দিতেছেন টীকা, স্টেরিওটাইপিং আর জেনারালাইজেশনের ঘাপলা লইয়া লম্বা ওয়াজ করতে হইতেছে), যে, মোসলমান মানেই কিন্তু ইসলামিস্ট না; তবু ভিকটিম হইতেছে মোসলমানেরা–আজকের ইন্ডিয়ায় আর চীনে ঘটতেছে হরদম! এমন হইতে পারার একটা কারণ খোদ ঐ টার্মটাই! কেননা, আইএস’কে ইসলামিস্ট হিসাবে লেখার ভিতর দিয়া রিডারের মনে খোদ ইসলামের নয়া তারিফ বা ডেফিনিশন পয়দা হইতে থাকে, ইসলামের সিংগুলারিফিকেশন ঘটতে থাকে, ওয়াহাবি/সালাফিদের খোয়াব পূরণ কইরা দিতে থাকে ঐ টার্ম!

যুদ্ধের ময়দানে এমন জেনারালাইজেশনের কিছু ফায়দা আছে, কিন্তু পরে ভুগতে হয়! যেমন আজকে দেখেন, পেরায় ৬০ বছর পরেও আমাদের বার বার কইতে হয় যে, পাকিস্তানের জনতা আর পাক আর্মি এক না! কেননা, আমরা তখন জেনারেল টার্ম হিসাবে পাক/পাকিস্তান এস্তেমাল করছিলাম, দুশমনিটা অর্গানাইজেশনের লগে না বানাইয়া খোদ জনতার লগেই বানাইছিলাম!

হিন্দুত্ববাদ বা ইহুদিবাদ কইয়া তেমন একটা রাস্তায়ই কদমে কদমে আগাইতে থাকি আমরা; যারা বিপদটার ব্যাপারে হুশিয়ার, তারা টীকা দিতেছে এই ফ্রেন্ডের মতোই; কিন্তু রিডারদের ১%ও মনে হয় টীকায় নজর দেয় না আদৌ, টার্মটারেই লইতেছে এবং নিজের মতো কইরা অর্থ করতে যাইয়া ভিত্রে হিন্দু বা ইহুদিই পাইয়া যাইতেছে!

টার্মের এই গুরুত্ব আরেকটা ইস্যুতেও দেখবেন হরদম; বাওয়ামী আতেলরা দেখবেন পেরায়ই এই রাষ্ট্র-সমাজ কতটা পইচা গেছে, সেইসব হাহুতাশ করেন; আবরার খুনের পরে ফারুকীর তেমনই এক স্ট্যাটাস ইনবক্সে দিলেন এক ফ্রেন্ড! তাতে সুবিধা কি, কার? দেখেন, অমনে দেখলে আসামী পাইতেছেন না একদম, এই সরকার এবং তার বহু লীগের নামই উঠতে পারলো না ফারুকীর এজাহারে! তাতে দেখা যাইতেছে, দুশমনেরা ঠিকই অর্গানাইজেশনের নাম না লইবার ফায়দা জানে-বোঝে; আমরা কি সেই ফায়দা হাসিল কইরা দিবো?

ওদিকে, একজন হিন্দু বা ইহুদি তার ধর্মরে বেটার মনে করেন বইলাই তো সে হিন্দু বা ইহুদি! সেই হিসাবে একজন ইহুদির বা হিন্দুর তো ইহুদিবাদী বা হিন্দুত্ববাদী হবারই কথা, কিন্তু তার মানেই সে জায়নিস্ট বা আরএসএস বা বিজেপির ইহুদি বা হিন্দু ধর্মের ডেফিনিশন বা তারিফ কেন লইবেন, সে নিজেই তো হিন্দু বা ইহুদি হবার অর্থ কইরা লইতে পারে! নিজের ধর্মরে বেটার মনে করার নামই তো অন্যের উপর জুলুম করা না!

এইখানে আরো যেইটা কইতে হয়, জায়নিজমের বাংলা হিসাবে ইহুদিবাদ ভুল, জায়নিজমই বাংলায় লইতে হবে! এই টার্ম দিয়া যারা ইসরায়েলের জুলুমকে দেখাইতে শুরু করছিলেন, তারা এলেমদার আছিলেন!

জায়ন একটা অর্গানাইজেশন, খোদ ইহুদি ধর্ম না, বড় জোর ইহুদি ধর্মের একটা ভার্সন, যেইটা জালিমের প্রজেক্টকে আগাইয়া লয়। জায়ন আসলে জেরুজালেমের একটা পাহাড়, দাউদ (ডেভিড) যেইখানে নগরের পত্তন করছিলেন; জায়নিজম তাই খুবই জিওগ্রাফিক্যাল ব্যাপার, একটা অর্গানাইজেশনের ইশতেহার, ইহুদিদের কেমন হওয়া উচিত সেইটা ওয়াজ করতে থাকে এবং দুনিয়ার বহু ইহুদি সেইটারে লয় নাই। টার্ম হিসাবে জায়নিজমের সুবিধা হইলো, আপনের টীকা দেবার দরকারই হয় না, যে, সব ইহুদি কিন্তু জায়নিস্ট না, খোদ টার্মটাই তো যুদা! অর্থে যতোই ঘন রিশতা থাক না কেন, টার্ম যুদা হইলেই পপুলার পারসেপশনে দুইটা যুদা জিনিস হইয়া ওঠে! ইহুদি মানে ইহুদি, জায়নিস্ট মানে জায়নিস্ট, খৃস্টান আমেরিকান ট্রাম্প জায়নিস্ট হইতেই পারতেছেন, বাট নট ইহুদি।

কেউ কইতে পারেন, এখন এইসব আলাপের টাইম না, এখন খুনিদের শায়েস্তা কইরা জাস্টিস কায়েমের টাইম; তা এখন জাস্টিস কায়েমের হাই টাইম বইলাই জাস্টিসের খুত সামলাইতে চাইতেছি, সেই দরকারেই এইসব আলাপ 🙂 !

//ফেছবুক পোস্ট

#১৮ জুলাই ২০২০

মর্ডান আর্টের কতগুলা ইশকুলের বেপারে আমার একটা আন্দাজ আছে। ধরেন ছুরিয়ালিজমের লগে খোয়াবের একটা রিশতা আছে; কারন হইলো, মানুশের খোয়াবে তার আনকনশাছ রিভিলড হয় (খোয়াব বুঝতে ড. সলিমুল্লাহ খানের থিকা ফ্রয়েড পড়তে পারেন), এই আনকনশাছ হইলো মানুশের ‘শাচ্চা ছেলফ’, ‘ট্রুয়ার’ আপনে। মর্ডানিটির ভেজালের নিচে জাইতে ছুরিয়ালিজম খোয়াব এস্তেমাল করতে চায়, এইভাবে আপনের শাচ্চা ইগোর হদিছ পাইতে পারেন।

তো, এই ভাবনার ডিপিকশন কেমন হবে, আগের কোন নজির আছে, নাকি পুরাই বেনজির? এইখানেই কলোনিয়ালিজমের একটা বেপার আছে। ইউরোপ আফরিকায় জাইতে পারলো কলোনি বানাইয়া, ইউরোপে ‘আদি মানুশ’ নামে ‘বন্য’ মানুশ পাওয়া গেল আফরিকায়, মর্ডানিটির ভেজাল ঢোকে নাই তাগো মাঝে; এনারাই হইলো জেন মর্ডান ইউরোপের আনকনশাছ, জেই আনকনশাছ ডাইরেক আকা পাইতেছেন কেভ পেইন্টিং-এর ভিতর! ছুরিয়ালিজম তখন কেভ পেইন্টিং থিকা ট্রুয়ার ছেল্ফ/আনকনশাছের ডিপিকশনের ছবক পাইতে পারলো মনে হয়!

এখন এই প্যাটার্নটা আপনে জোগের বেপারে খাটাইতে পারেন। শুরুতেই আপনের টার্মের খমতা বোঝা দরকার; টার্ম হইলো বোতল, আমরা বোতলের গুরুত্ত মিছ করি পেরায়ই; একই মাল নয়া বোতলে ঢুকাইলে নয়া মাল হিশাবেই আপনে দাবি করতে পারেন বাজারে। ইনডিয়া জদি মেডিটেশন নামেই জোগের (হিন্দিতে ইয়োগা জারে কইতেছে আর কি) বাজার বানাইতে চাইতো, কাম হইতো না, নয়া বোতল হিশাবে ‘ইয়োগা’ খুবই দরকার, এমনকি ঐ কারনেই কামিয়াব হইতে পারলো!

এইটারে নয়া বোতল কইবার কারন এইটার ভিতরে জা আছে তা ইনডিয়ার নিজের মাল না, দাবিদার আরো অনেকেই আছে। আজকে আমেরিকান এক আর্টিকেল নজরে আইলো, জোগ/ইয়োগা, রামদেব আর বিজেপির রিশতা খোলাশা করার টেরাই করতেছে ঐ আর্টিকেল। ঐখানে নিলস্ বুখ নামের এক ছুইডিশের কথা কইতেছে, জেই লোক মর্ডান এই জোগের আশনগুলা বানাইছে কইতে হয়। পুরাটা পড়ি নাই আমি, ‘করন’ নামের একটা ফেছবুক পেইজে দেওয়া লম্বা কোটেশনটা পড়লাম, তাতে বুখের কথা কইতেছে। কিন্তু ঐ ছুরিয়ালিজমের মতোই বুখের লগে আফরিকার রিশতা আছে বইলা আন্দাজ আমার, বুখ’রে অতো কেরেডিট দেওয়া ঠিক হয় না, ইউরোপের জেই খাছলত, ছোর্স/রেফারেন্স ছুপানোর ভিতর দিয়া বড়াই করার ইগোর কারনেই বুখের আফরিকান কানেকশন হারাইয়া গেছে মনে হয়!

জোগের আশনগুলার আদি ডিপিকশন পাওয়া জায় মিশরে, পিরামিডের গায়; আফরিকায় এর একটা নাম আছে, স্মাই তাউই। মেডিটেশনের বদলে জোগের আইডিয়া জদি ‘ইউনিয়ন’ হিশাবে দেখেন, তাইলেও আইডিয়াটার আদি রেফারেন্স তাওরাত, ইহুদি ধর্মে। কমেন্টে আমার পুরানা পোস্ট আর ছবি দেখেন। আমেরিকার ঐ আর্টিকেল পাইবেন, আমার দেওয়া মিশরের ছবি, আমার আন্দাজ আর আর্টিকেলটা মিলাইয়া পড়ায় ফায়দা হবে মনে হয় 🙂 !

//ফেছবুক পোস্ট

#২৪ ডিশেম্বর ২০১৯

শীর্ষেন্দুর একটা কোটেশন দেখলাম ফেছবুকে। উনি কইতেছেন এমন–একবার শব হারাইয়া আশছি, আবারো হারাইতে হইতে পারে, ভাশা মানুশ আমরা… এমন কিছু কথা।

ব্যাপারটা বোঝার চেশটা করলাম আমি, কঠিন হইলো, কতগুলা পোশ্ন আর জবাব খুবই ঘোলা আমার কাছে!

১৯৪৭ শালে বা পরে পাকিস্তান থিকা ওনারা ইনডিয়া গেছেন, হাসান আজিজুল হকরা পাকিস্তানে আইছেন। এনাদের জেইশব মেমোয়ার দেখছি, কোথাও শৎ মনে হয় নাই, তখনকার ভাবনার অনেকটাই জেন গোপন কইরা যাইতেছেন এনারা!

জীবনানন্দের কোন মেমোয়ার আছে কি এই ব্যাপারে? বুদ্ধদেব বসুর? জানি না।

তো, শীর্ষেন্দুর বাড়ি আছিল মোমেনশাহী বা ময়মনশিংহে। ওনার বাপ চাকরি করতেন নাকি রেলে, আশাম এবং আরো কই কই যেন পোস্টিং আছিল বাপের। ওনারা মোমেনশাহী ছাড়লেন, কলিকাতা গেলেন।

ওনাদের মোমেনশাহীর জমিজমা কি বেদখল কইরা কেউ খেদাইয়া দিছে ওনাদের, নাকি বেইচা গেছেন? ছাফ ছাফ জবাব নাই, কেবল শব হারাবার গপ্পো পাওয়া যাইতেছে। জীবনানন্দের, নচিকেতার, বুদ্ধদেবের, সুনীলের?

এনারা পার্টিশান বা দেশভাগ কইতে থাকেন হরদম, ঐটা যে ইংরাজ কলোনি থিকা শাধীন হওয়া, শেইটা কন না মনে হয় কখনোই! কেন?

কিন্তু পোবলেমটা কই? পোবলেম হইলো, ১৯৪৭ শালের আগের রায়টে যারা রেহাই পাইছেন, পরে দেশ ছাড়ছেন বা অন্য দেশরে ভাবছেন নিজের দেশ, তার বাইরে কোটি কোটি হিন্দু মোছলমান ইনডিযা বা পাকিস্তানে থাইকা গেছেন, নিজের দেশ হিশাবেই, এখনো আছেন। এদের মাঝে ইনডিয়ায় পরেও অনেক রায়টে মোছলমানরা জুলুমের শিকার হইছেন, শেই মাত্রায় পাকিস্তানে বা বাংলাদেশে হয় নাই; পাকিস্তান বা বাংলাদেশের কোন পলিটিক্যাল দল বা শরকারই কোন রায়টে ডাইরেক মদদ দেয় নাই। কিন্তু তারপরও অনেক হিন্দুই খুন-রেপ-বেদখলের শিকার হইছেন। বাংলাদেশের হিন্দুরা শবচে বেশি জুলুমের শিকার হইছেন ১৯৭১ শালে, পাকিস্তান আর্মির হাতে; শেইটা বাংলাদেশ আমল, মার্চ থিকাই বাংলাদেশ। তবে পাকিস্তান যেহেতু বাংলাদেশরে পাকিস্তানই ভাবতো, তাই ঐটা পাক আর্মির জুলুম–নিজের দেশের নাগরিকদের উপরই!

৭১ শালের এই শব কথা কইলাম কারণ, এই শময়ে বাংলাদেশের হিন্দুদের (লাখ-কোটি মোছলমান বাঙালিও ভিকটিম) উপর জেই টর্চার-জুলুম হইছে তার লগে ৪৭ শালে যারা মনের চাওয়ায় দেশ ছাড়ছেন তাদের তুলনাই করা যায় না! বা ইনডিয়ায় গুজরাটের রায়টে জুলুমের শিকার কোন মোছলমানের লগে হাসান আজিজুল হকদের বেদনার তুলনা করলে ঐ রায়ট বা পাক আর্মির জুলুমরে হালকা করা হয় না!?

হক বা শীর্ষেন্দুরা এইটা করেন হরদম! লিখতে পারেন বইলা নিজেদের মনের খায়েশে দেশ ছাড়ার আফছোছরে ওনারা জুলুমে কোটি মানুশের কানা-খোড়া হওয়া, মরা, রেপ হওয়া, এতিম হওয়া, বাছুর হারাবার বেদনার চাইতে বড়ো কইরা দেখাইতে থাকেন! এইটা ছেরেফ মিছা কথা, পাপ!

আমার দুয়েকটা আন্দাজ আছে এনাদের ব্যাপারে। এনারা অনেকেই জমি-বাড়ি বেইচা, পয়শা লইয়াই দেশ ছাড়ছেন, অন্য দেশরে মনে করছেন নিজের দেশ; অনেকে চাকরির শুবিধার জন্য থাইকা যাওয়াই লাভের মনে করছেন। এবং অনেকেই ভুল হিশাব করছেন। হক-জীবনানন্দরা ভাবছেন যে, পাকিস্তানে হিন্দু থাকতে পারবে না, ইনডিয়ায় মোছলমান; কলোনি থিকা শাধীন দুইটা দেশের ব্যাপারে এনারা ভুল আন্দাজ করছেন, শেই ভুল আন্দাজে ভর কইরা তাড়াহুড়ায় ডিছিশন লইয়া দৌড় দিছেন, নিজেদের হকের আদায়ে দরকারি ফাইট করেন নাই পেরায়ই। ওনাদের আফছোছের গোড়ায় আছে এমন শব ভুল আন্দাজ। কখনো বা হিন্দু বা মোছলমান হিশাবে নিজেদের দেশে যাবার/থাকার খায়েশ।

কিন্তু এই এনারাই জেন খুব ছেকুলার, পাকিস্তানে থাইকা যাওয়া নাপিত-ধোপার চাইতে বা পাকিস্তানে না আশা ইনডিয়ান মোছলমান রিকশাঅলা-দাড়োয়ানদের তুলনায়! ছেকুলারিজমের ছবক দেন এই আশরাফ-বামুন-কায়স্থরা! আর নিজেদের ভুল, না বোঝারে গোপন করেন শব হারাবার গপ্পের তলে, নিজেদের আফছোছের বেদনারে কোটি মানুশের জুলুমের চাইতে বড়ো কইরা তোলেন! কোটি কোটি মানুশ শাধীন হওয়ার ঘটনারে ইতিহাশে বেদনার পার্টিশান হিশাবে খোদাই করেন!

মিছা কথা। পাপ।

//ফেছবুক পোস্ট, ২৩/২৪ ডিছেম্বর ২০১৯

#২৯ নভেম্বর ২০২০

 

বিশ্বেন্দু নন্দ নামের এক ইনডিয়ান আতেলের একটা পোস্ট ঢাকাই আতেলদের নজর টানছে মোটামুটি; ঢাকাই মানে বাংলাদেশি আর কি, দেশের বাইরে কেপিটালের নামেই দেশ বুঝায়।

তো নন্দ মশাই নবাব-মোগলদের লগে ইংরাজের তুলনা কইরা শিবশেনা-বিজেপির মোছলমান ঘেন্নার ডিছকোর্সটা মোকাবেলা করতে টেরাই করছেন। ওনার কথা তো ঠিকই আছে, কিন্তু এতে কাফি মোকাবেলা হইতেছে না বিজেপির, এতে কাম হবে না!

এইটারে আমি পড়ি এইভাবে–কংগ্রেস তাইলে এদ্দুর আইতে রাজি হইছে; মানে এখনকার কংগ্রেস শিবশেনা-বিজেপি ডিছকোর্স মোকাবেলায় এই ইশুতে এর বাইরে কিছু পয়দা করতে পারে নাই!

খেয়াল করলে দেখবেন, এই বিজেপি জখন আছিল না, তখন কংগ্রেসই আছিল বিজেপি! ‘vote for cow’ স্লোগানে ক্যাম্পিং কইরা ইন্দিরা ইলেকশন করছেন, ১৯৭০-৮০ ইনডিয়ার ডেমোক্রেটিক শম্ভাবনা খুন করছেন ইন্দিরা, তখন পয়দা হইয়া ওঠা দলগুলারে খতম করছেন উনি, আজকের বাংলাদেশে বাকশাল জা করতেছে, ইন্দিরা এইটাই করছিলেন! তাতেই আজকের বিজেপি হবার মওকা পাইলো ইতিহাশে!

নন্দ মশাই কংগ্রেসের লোকই হয়তো না, ওনার কথাগুলাও কংগ্রেসের অফিশিয়াল কথা না, এগুলা কংগ্রেস আদতে ইনডিয়ার পাবলিকের দরবারে কয়ও না, ভিতরে হয়তো ভাবেও না। তবু শুরুতেই কংগ্রেসের নামে চালাইলাম, তারচে আরো ছহি হয়, ইনডিয়ান লিবারাল হিন্দু কইলে। কংগ্রেস কইবার কারন, বিজেপি-শিবশেনার এই রমরমায় কংগ্রেসে ভরশা রাখতে হইতেছে লিবারালদের, কংগ্রেসকে অন্তত পলিটিকেল দোস্তের লিস্টি থিকা বাদ দেবার উপায় নাই।

আজকে এই লিবারালরা ইতিহাশকে এমনে দেখতে রাজি হইলেন, ৫০ বছর আগে এনারাই নারাজ আছিলেন; ঠিক জে, ৫০ বছর পরের ভাবনা আগে কেমনে ভাববে, কিন্তু তখনো জেইটা করা দরকার আছিলো, শেইটা জাইনাও শেইদিকে হাটে নাই তারা, আজকেও দরকারি জিনিশগুলায় মন না দিয়া এমনশব ফাও আলাপই করতেছেন তারা! কংগ্রেসি দুইটা ছবি দেখেন, তাইলে বুঝবেন, তখনকার জামানায় দরকারি পলিটিক্সের বদলে তারা কি করছিলেন:

এই দুইটা ছবিতেই কিলিয়ার জে, ওনারা তখন আজকের বিজেপি-শিবশেনার পাটেই অভিনয় করতেছিলেন, আর এখন কি করতেছেন? নন্দ মশাইয়ের এই আলাপটা ইনডিয়ায় ছেরেফ মাইনোরিটি পলিটিক্স, তার বেশি না; এইটার পলিটিকেল গুরুত্ব আদতে বাংলাদেশে বামেনজিও-বাকশালিরা জেই হিন্দু/মাইনোরিটি পলিটিক্স করে, তার শমানই ইনডিয়ায়! আকাম ছেরেফ, দুইটাই। এতে বরং ইশুটা তাজাই থাকতে থাকে, বিজেপি-শিবশেনাও এই ইশুরে এমন তাজাই রাখতে চায়।

কিন্তু তখনো জেমন, এখনো, ইনডিয়ার ১ নাম্বার মুছিবত কি? মোছলমানের উপর জুলুম তো আছেই, কিন্তু মানুশের শুমারি দেখেন, মোছলমান কত আর দলিত-শুদ্র-অচ্ছুত কত। ইনডিয়ায় দেখলাম, আপার কাস্ট মাত্র ২২.৩% ( https://indianexpress.com/…/upper-caste-hindus-richest…/ ); বাকিরা শবাই দলিত/অচ্ছুত না, কিন্তু কেবল হিন্দু অচ্ছুতই (শিডিউল কাস্ট) আছে ২০ কোটি; মোছলমান আর খিরিস্টান অচ্ছুতও আছে কোটি দশেক। ২২.৩%’র বাইরে অচ্ছুত বাদে জারা আছে, তারাও কাস্টের চিপায় জুলুমের শিকার হরদম।

না, কংগ্রেসের কাছে আমি মার্ক্সের তরিকায় হাটার আবদার করি না; কিন্তু ইন্দিরা জখন গরুর পলিটিক্স করতেছেন, তখন মার্ক্সের তরিকার পলিটিক্স ঠেকাবার একটা জরুরত আছিল ওনার এবং শেই দরকারেই উনি গরুর বাছুরের মা হইলেন। আর কোন রাস্তা কি আছিল? আলবত। কেলাশ বনাম গরুর পলিটিক্সের বদলে উনি কেলাশের পলিটিক্স ঠেকাইতে উনি কাস্টের পলিটিক্স করতে পারতেন; এইটাই আছিল তখনকার কেপিটালিস্ট লিবারালদের দায়িত্ত; বেপারটা এমন জে, মার্ক্সের তরিকার লোকেরা কইতেছে, কেলাশের ফয়ছালাতেই জনতার মুক্তি, কংগ্রেস কইবে, না, কাস্টের ফয়ছালাতেই জনতার মুক্তি। কিন্তু না, ইন্দিরা শওয়ার হইলেন গরুতে! গরুতে ইন্দিরার শওয়ার হওয়ার মানে ছেরেফ মোছলমানের পিঠে চাবুক মারা না, তখনকার আন্দাজ ১৫ কোটি দলিতের পিঠেও চাবুক মারলেন ইন্দিরা! কিন্তু ইন্দিরা বা ইনডিয়ান লিবারালরা কেন ঐদিকে গেলেন? কারন, কংগ্রেস দলটা এরিয়ান-দেমাগি আপার কাস্টের দখলে, তাগো শার্থ লুকাইতেই গরুতে শওয়ার হওয়া!

শেই একই ছিলছিলা চলতেছে কিন্তু আজকেও! এখন ওনারা মাইনোরিটি পলিটিক্স করতেছেন, মোছলমানের কথাই কইতেছেন, কাস্টের ফয়ছালা এখনো পলিটিকেল এজেন্ডা বানাইতেছেন না! কিন্তু ওনারা জদি এরিয়ান-দেমাগি/রেছিস্ট আর আপারকাস্টের শার্থের দাড়োয়ান না হইতেন, তাইলে কাস্টের পলিটিক্স দিয়া মার্ক্সের তরিকা এবং বিজেপি, দুইটারই মোকাবেলা করতে পারতেন! বিজেপিরে ঠেকাবার উপায় মোছলমানদের ভোট পাওয়ার ভিতরে না, মোছলমানের তো শেই পরিমান ভোটই নাই! বরং আপার কাস্টের বাইরের জেই ৭৭.৭% ইনডিয়ান আছে, তাগো শার্থের আলাপেই ঐ ভোটের হিশাবে ফায়দা হইতে পারে। ইনডিয়ায় করতে হবে হিন্দু বনাম হিন্দু পলিটিক্স, হিন্দু বনাম মোছলমান পলিটিক্সে ইনডিয়ায় জখম বাড়বে। কাস্টের পলিটিক্স শুরু করলে হিন্দু-মোছলমান ইশুটাই গুরুত্ত হারাইতে থাকবে। জে কোন দেশের বেলাতেই মাইনোরিটি পলিটিক্স করায় আদতে মাইনোরিটির তেমন কোন লাভ হয় না; একদম উপরে কিছু মাইনোরিটি পরিচয়ের লোক গজায় মাত্র, তারা মাইনোরিটির পুরাটা বেইচা নিজের আখের গুছায়, বাংলাদেশে হিন্দু পরিশদ জেমন…

আর লিখতে ইচ্ছা করতেছে না 🙁 ! কিন্তু মন চাইলে দলিত বনাম গান্ধি লইয়া আরেকটু তালাশ করতে পারেন, গান্ধির শেই ধান্দায় আপনাদের পেয়ারা রঠা কেমনে মদদ দিছিল, তালাশ কইরেন একটু…পিলিজ…

নন্দ মশাইর ফেছবুক পোস্ট:

“নবাব মোগলরা বিন্দুমাত্র ভাল লোক ছিল না, কারন তারা দেশের সম্পদ বিদেশে নিয়ে যায় নি, তারা দেশের শিল্প কাঠামোকে ধ্বংস করে নি, তারা বরঙ নিয়ম করেছিল চাষী এবং কারিগরদের ওপর কোনও আক্রমন হলে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে। আওরঙ্গজেবের সব থেকে বড় বিরোধী, ব্রিটিশদের বড় বন্ধু যদুনাথ সরকার দ্য মুঘল এডমিনিস্ট্রেশনে লিখেছেন, আওরঙ্গজেব জানতেন দেশের চাষীদের রাজস্বের বিনিময়ে তার খাওয়া জোটে। এইটুকু সুবুদ্ধি তার ছিল, চাষী উচ্ছেদ[যদিও কম হত কারন তখন জমি বেশি ছিল চাষী কম ছিল] নিয়ম করে বন্ধ করেছন। একটা গ্রামে চর জাগলে সেখান থেকে একটু বেশি কর ওঠায় শাহজাহান রেগে বলেছিলেন এটা গ্রামের সম্পত্তি, তাদের ফিরিয়ে দাও না পারলে প্রশাসককে বরখাস্ত কর। ব্রিটিশ পক্ষীয় ইতিহাসকার তাবাতাবাই বলে গেছেন মুর্শিদাবাদে মুর্শিদকুলিখাঁর দরবারে ঢোকার জমিদারেরা ঢোকার আগে দেখে নিতেন তার এলাকার চাষী কারিগর অভিযোগ করতে এসেছে কীনা, অভিযোগ প্রমান হল জমিদারদের বৈকুণ্ঠ দেখানো হত। এক অমুসলমান জমিদারের তুচ্ছ কারনে কাজি মৃত্যুদন্ড দিলে তিনি কাজির বিরুদ্ধে লড়ে যান, দণ্ড আটকাতে পারেন না, কিন্তু কাজিকে বাংলা ছাড়া করেন। সুশীলবাবু দেখিয়েছেন কোম্পানির বিরুদ্ধে কীভাবে ছোট কারিগর আর ব্যবসায়ীকে দরবার বাঁচাত।কারিগর দাদন চুক্তি থেক বেরিয়ে আসত পারত – রাষ্টের অধিকার ছিল না তাকে জোর করার – এই সব অধিকার পলাশীর পর চলে গেল। উপনিবশপূর্ব শাসকদের আরও বড় দুষ্কর্ম ছিল তারা দেশিয় শিল্পকে ধ্বংস করেন নি, বরং আন্তর্জাতিকস্তরে যাতে বিশাল ব্যবসা যাতে হয় তার কাঠামো তৈরি করে দিয়েছেন।

সমস্যা হল ভারতের প্রগতশীলদের ইতিহাস আদতে উপনিবেশের ইতিহাসের অনুগামী – উভয়ের উদ্দেশ্য লুঠেরা খুনি গণহত্যাকারী ব্রিটিশ শাসনের বৈধতা প্রমান।

শেষে অনুরোধ করব অমিয় বাগচির কলোনিয়ালিজম এন্ড ইন্ডিয়ান ইকনমি পড়তে, যেখানে তিনি উপনিবেশের সময়কে বলছেন বিশ্বের প্রথম ১৯০ বছর ধরে চলা স্ট্রাকচারাল এডজাস্টমেন্ট পলিসি – এইটুকু কথায় তিনি উপনিবেশের সঠিক চিত্র এঁকেছেন। মৃদুলা মুখার্জীও লুঠের ব্যাপক অঙ্ক এঁকেছেন।– https://web.facebook.com/biswendu.nanda/posts/10223516361248040 ”

//ফেছবুক পোস্ট, ২৯ নভেম্বর ২০২০

#২৩ আগস্ট ২০১৭

কলিকাতার ব্যাপারে ঢাকার কিছু মুভিগোয়ারের ফেসিনেশন আছে, কোলকাতাই সিনেমা বানাইতেছেনও কিছু লোক। ডুবসাতার বা মেঘমল্লার ঐ কিসিমের সিনেমা। এমনকি মেহেরজানও এসথেটিক্যালি কোলকাতাই মাল, পলিটিক্যালি যেমনি হৌক।

আমি কই, কোলকাতাই সিনেমা না বানাইয়া কলিকাতা লইয়া সিনেমা বানান। ফেসিনেশনটা থাকলো, দুইচার দিনে এড়াইতে পারবেন না তো, বুঝি আমি; কিন্তু পোক্ত সিগনেচার রাখেন নিজের।

কেউ চাইলে আমারে পাইতে পারেন। আমি একটা থিম ভাবতেছি এখন। মাইকেল মধুসূদন লইয়া জটিল একটা সিনেমা বানাইতে পারেন। একটা স্কেচ দিতেছি।

মাইকেল কলিকাতার মাল না, উনি যশোরের। কলিকাতায় ওনার ফাইটটা আসলে রেশিয়াল, কতকটা কাস্টের। ধর্মরে উনি ইউজ করছেন একটা হাতিয়ার হিসাবে, আখেরে জিতছেন।

ওনার গায়ের রঙ কালা, বর্ণে কায়স্থ। মনুর রেফারেন্সে বিদ্যাসাগর কায়স্থদের কইছেন শূদ্র। কালা মাইকেল কলিকাতার ফর্সা বামুনদের মাঝে খুবই ইনফিরিয়র, তার উপর বাঙাল। কলিকাতার সুন্দর মানে যেহেতু ফর্সা তাই মাইকেলও ফর্সা মাইয়া চাইতেন। কিন্তু নিজে কালা কায়স্থ/শূদ্র বইলা ফর্সা মাইয়া পাবার আশা কম। বড়জোর ফর্সা গৌরের লগে দোস্তি বানাইতে পারছেন। ওদিকে ফর্সা বামুনরা রঙ আর আর্যামীর দেমাগ দেখান। মাইকেল এইটা শুরুতে ওভারকাম করতে চাইছেন পয়সা আর বিদ্যা দিয়া। পারেন নাই।

তখন খৃস্টান হইছেন, তাতে নয়া উইন্ডো খুলছে। তারপর ফর্সা বামুনদের উপর প্রতিশোধ লইছেন। মেঘনাদবধেও সেই প্রতিশোধেই কালা লংকানরা নায়ক ফর্সা আর্য ভিলেন।

মাইকেল খৃস্টান হইয়া এক ইউরোপিয়ান হোয়াইটের লগে পরকিয়া করছেন। পরে আরো দুই হোয়াইট মাইয়ারে বিয়া করছেন।

তাইলে দেখেন, কলিকাতার ফর্সা বামুনরা হোয়াইটের পা ধুইয়া পানি খান, সেই হোয়াইট ৩ জন মাইয়ার লগে শুইছেন মাইকেল। ফর্সা বামুনের মেইল ইগোর উপর কেমন প্রতিশোধ লইছেন মাইকেল! ফর্সা দেশী মাইয়া যে বিয়া করতে পারতেছে না, কেবল খৃস্টান হইয়া পাইলেন ৩ হোয়াইট। ধর্ম এমনে ইউজ করছেন মাইকেল।

সিনেমা হয়?

//ফেছবুক পোস্ট, ২০১৭

Series Navigationবেক্তি বনাম শমাজ বনাম রাশ্টো >>
The following two tabs change content below.
Avatar photo

রক মনু

কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →