এডিটোরিয়াল: বাংলাদেশের পেছিডেন বনাম বিটিশ মনার্ক
বিটিশ মনার্কি লইয়া খুবই আলাদা একটা কারনে ভাবা দরকার আমাদের। শেইটা হইলো, পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেছি। এই ব্যাপারে বেশুমার পড়া দরকার, তবু পেরাইমারি কিছু ভাবনা জানাই, এফোর্ড করতে পারেন, জদি ভাবনা আর লেখার কোন ফুশলানি পান, শেই আশায় খুবই ভাশা ভাশা কয়টা কথা কইতেছি!
ফর্মার বিটিশ কলোনিগুলায় পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেছি চলতেছে মোটামুটি, কিন্তু আমেরিকা বিটিশ কলোনি থাকলেও ঐখানে পেছিডেন্সিয়াল ডেমোক্রেছি কেন?
কারন, বিটিশদের জুদ্ধ কইরা খেদাইছে আমেরিকা। ইনডিয়া বা পাকিস্তান জুদ্ধ কইরা খেদায় নাই, এগুলায় আমরা পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেছি পাইতেছি। অথচ আমেরিকার ভাশাও ইংরাজি, তবু তারা পার্লামেন্টারি ছিস্টেম লয় নাই!
ইনডিয়া-পাকিস্তানে মনার্ক নাই, কিন্তু আশলে মনার্ক থাকবে, শেইটা ধইরাই পার্লামেন্টারি ছিস্টেম পয়দা হইছে এবং মনার্ক না থাকায় এইগুলা ইনহেরেন্টলি খোড়া পার্লামেন্টারি ছিস্টেম!
ইনডিয়া বা বাংলাদেশ মনার্কের জাগাটা ফিলাপ করতে একজন বেহুদা পেছিডেন বানাইছে! ফর্মালি বিরিটেনের রানি/রাজার তেমন কোন খমতা নাই, কিন্তু খমতা জে আশলে কতটা, ঐটা ইনডিয়া বা বাংলাদেশের এখনকার পেছিডেনের খমতার লগে একটা তুলনা কইরা বুঝতে পারবেন।
কমনওয়েলথের শবগুলা রাশ্ট্রো লইয়াই একটা কম্পারেটিভ আলাপ দরকার, ঐ টাইম দিতে পারতেছি না আমি, শেই কারনেই আপনাদের দাওয়াত দিতেছি।
বিটিশ মনার্কের লগে বিটিস নাগরিকদের একটা রিশতা আছে, বহু অকেশনে তাগো লেনাদেনা হয়; তাগো হাতে কোন ফর্মাল পাওয়ার না থাকায় বিটিশ মনার্কের লগে নাগরিকদের তেমন কোন টেনশন হবারো কারন থাকে না। কিন্তু নাগরিকদের লগে ঐ রিশতার কারনে গভমেন্টের লগে মনার্কের একটা পাওয়ার ডিনামিক্স পয়দা হয়, জেইটা কখনো মেনিফেস্টেড হয় না, কিন্তু আছে, কখনো তেমন দরকার হইলে বিটিশ মনার্ক জদি জনতারে ডাকে, জনতা শাড়া দেবে; আবার বিটিশ মনার্কের লগে বেয়াদবি করলে ইলেকশনে হারবে চলতি গভমেন্ট; উল্টাদিকে, মনার্ক কোথাও বেহুদা নাক গলাইলে জনতার লগে তার আদবের রিশতাটা থাকবে না।
এই মনার্কের লগে বাংলাদেশের পেছিডেনের তুলনা করেন। বাংলাদেশের পেছিডেনের কিছুই নাই, বাংলাদেশের পেছিডেন আশলে উজিরে আজমের নিচে পুচকে একটা চাকরি করতেছেন জেন! এই পেছিডেনের লগে জনতার কোন রিশতা না থাকায় এনার কাছে বিটিশ মনার্কের পাটে অভিনয় আশা করার উপায় নাই।
তাইলে কি খাড়াইলো? বাংলাদেশের পার্রামেন্টারি ছিস্টেম একজন মনার্ক উপরে আছেন, থাকবেন, এইটা আশা কইরা বানানো, বিটিশ ছিস্টেমের নকল কইরা, কিন্তু বাস্তবে মনার্ক নাই। এইটাই উজিরে আজমের হাতে একটা মওকা তুইলা দেয়, বাংলাদেশের উজিরে আজম জে টাইরান্ট হইয়া ওঠেন, তার পিছে ঐ মওকা একটা বিরাট ফুশলানি!
আর শব দেশে কি হয়? পাকিস্তানে দেখেন, উজিরে আজমের উপরে মনার্ক নাই, কিন্তু উজিরে আজম শেই মওকার ফায়দা লুটতে পারে নাই; কিন্তু একটা শুন্ন জে পয়দা হইছে, শেইখানে আর্মি ঢুইকা পড়ছে। একই টাইপের মওকা পাইয়া মায়ানমারে আর্মি পার্মানেন্ট হইছে। বাংলাদেশেও ঐটা টেরাই করছেন হজরত এরশাদ, পেছিডেন সাত্তারের লগে এরশাদের টেনশনের গোড়ায় আছিলো, আর্মিরে কন্সটিটুশনাল পাওয়া দেওয়া। ইনডিয়ারে দেইখা মনে হইতে পারে জে, পার্লামেন্টারি ছিস্টেম তো কাম করতেছে ঐখানে! না; ইন্দিরার ইমার্জেন্সি ঐ শুন্নের মওকায় ঘটছে। আবার ইনডিয়ায় এস্টেট এবং ছেন্টারের একটা ডায়ালেকটিক্স আছে, ঐ ডায়ালেকটিক্স বিরিটেনের উজিরে আজম এবং মনার্কের ডায়ালেক্টিক্সের পাটে অভিনয় করতেছে। এবং ঐটা জে কাফি না, শেইটা এখন কিলিয়ার হইতেছে জখন এস্টেটগুলা এবং ছেন্টার, ঐ ডায়ালেক্টিক্সের দুই পাশই বিজেপি দখলে নিতে পারতেছে। দরকারি ঐ ডায়ালেক্টিক্স না থাকলে ছো কল্ড ইনডিপেন্ডেন্ট জুডিশিয়ারি বা ইলেকশন কমিশন জে আশলে কতো বেহুদা, শেইটা এখন কিলিয়ার হইতেছে ইনডিয়ায়।
ছো, কইতেছি জে, পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেছির মডেলটাই আশলে একজন মনার্কের জায়গা রাইখাই পয়দা হইছে, উজিরে আজম বা ‘পেরাইম মিনিস্টার’ পদের নামের ভিতরেই ঐটা দেখা জাইতেছে। বিটিশ রানির মরনে বাংলাদেশের ৩ দিনের মর্নিং-এর গোড়া হয়তো খোদ ঐ মডেলটাই!
কানাডা-অশ্টেলিয়ায় বিটিশ মনার্ক এখনো আছেন; তার বাইরেও এই দুই রাশ্টো খুব শম্ভব তাদের মুছাবিদা বা কন্সটিটুশনে পার্লামেন্টারি ছিস্টেমের ঐ গলদটা এড্রেছ করছে, পড়তে হবে তাগো মুছাবিদা। পইড়েন আপনারাও।
আমেরিকা ১৭৭৬ শালে বিটিশদের খেদাইয়া দিছে এবং তারা পার্লামেন্টারি ছিস্টেম বানায় নাই। মনার্ক খেদাইয়া দেওয়ায় তারা শুন্ন জায়গাটা হয়তো তখন তখনই বুঝতে পারছিলো, আবার তাগো হেড অব এস্টেট জেন মনার্ক হইতে না পারে, শেই টেনশনও আছিলো। তাই আমরা পেছিডেন পাইতেছি পয়লা! তার লগে আবার ছিনেট, কংগেরেছ, কাউন্টি, ছিটি কর্পোরেশন, নাগরিকদের হতে বন্দুক রাখা ইত্তাদি বানাইছে জাতে পেছিডেন পাওয়ারের একটা নেছেছারি ডায়ালেক্টিক্সের ভিতর থাকতে বাদ্ধ হয়! খেয়াল করলে দেখবেন, ফেরান্সে ১৭৮৯ শালে মনার্কি খেদাবার পরে নেপোলিয়নরে পাইলো, আরেকটা মনার্কিই, আখেরে তাই ওরাও আমেরিকার পলিটিকেল ছিস্টেম নকল কইরা পেছিডেনই বানাইলো।
এই পার্লামেন্টারি ছিস্টেম তাই খারাপ, ছেরেফ বিরিটেনেই ঐটা চলতে পারে, দুনিয়ার আর কোন দেশে ঐটা আখেরে খারাপ কিছুই ঘটাবে। এখনো জেইখানে ঘটাইতেছে না, তা আশলে কতগুলা মেরামতের ফল; কিন্তু ঐ মডেলের গোড়ার মর্ম জতোদিন থাকবে, ততদিন ঝুকিটা থাকবেই। বাংলাদেশে এখন রাশ্টের মুছাবিদা মেরামতের তোড়জোর করতেছে কেউ কেউ, আলাপ করতেছে, কিন্তু ওনারা গোড়ার এই ঝামেলাটা মালুম করতে পারতেছে না! ওনারা এই মডেলটার ভিতরেই একটা ডিছেন্ট্রালাইজেশনের রাস্তা তালাশ করতেছে হয়তো (কংক্রিট কোন পোস্তাবই এমনিতে বাইরায় নাই ওনাদের থিকা, ছেরেফ বাকোয়াজি!)। এই জায়গাটা কিলিয়ার হওয়া খুবই দরকারি, আমাদের বোঝাবুঝির ভিতরে এইটা থাকলে ১৯৯১ শালে হয়তো পার্লামেন্টারি ছিস্টেমের গাড্ডায় আবার পড়তাম না আমরা! আমাদের তখন দরকার আছিলো, পার্লামেন্টের হাতে আধা খমতা রাইখা পপুলার ভোটে একজন পেছিডেন ইলেক্ট করা, বিটিশ মনার্কের গায়েবি খালি চেয়ারটা ঠিকঠাক বোঝা এবং তারে লাত্থি মাইরা ফালাইয়া দিয়া পরের টাইরানি ঠেকানো…
১০-১১ ছেপ্টেম্বর ২০২২
রক মনু
Latest posts by রক মনু (see all)
- এডিটোরিয়াল: ‘উইন্টার ইজ কামিং’ - মার্চ 10, 2024
- ফিকশন: দোস্তি - এপ্রিল 4, 2023
- রাজনিতির দাগ খতিয়ান: বাকশাল-দুছরা বিপ্লব এবং তার পর - ডিসেম্বর 5, 2022