Main menu

আলো ও ছায়া – কামিনী রায়

কামিনী রায়ের (১৮৬৪ – ১৯৩৩) ফার্স্ট কবিতার বই “আলো ও ছায়া” ছাপা হয় ১৮৮৯ সালে। এরপরে আরো ৮/১০টা কবিতার বই ছাপা হয় উনার। এই বইয়ের কবিতাগুলা উনার “আলো ও ছায়া”র চাইর নাম্বার এডিশন (বাংলা ১৩১১) এবং “কামিনী রায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা” (ইংরেজি ২০০১) বই থিকা বাছাই করা হইছে।

কামিনী রায়ের জন্ম বাকেরগঞ্জের (এখনকার ঝালকাঠি জেলার) বাসন্ডা গ্রামে। উনি পড়াশোনা করছেন কলকাতার বেথুন কলেজে। অই কলেজের (শুরুতে স্কুলের, পরে কলেজের) টিচার ছিলেন। “ছন্দ-সুর-নিখুঁতমিল”র বাইরেও “সুখ-দুঃখ, ক্ষুধা-তৃষ্ণা, আশা-আকাঙ্খা, গভীর আনন্দ ও তীব্র বেদনার” “সহজ-সবল” কবিতার যেই জায়গা আছে, সেইখানে কন্ট্রিবিউশন আছে কামিনী রায়ের কবিতার। উনার এক্সপ্লোরেশনের জায়গাগুলারে একটা সময়ের ঘটনা হিসাবে না দেখার কারণে অন্য কবিদের “প্রভাবে” লেখা বইলা মিস-রিড করার ট্রাডিশন বাংলা-সাহিত্যে চালু আছে। কিন্তু সময়ের হিসাবে দেখতে পারলে বাংলা-কবিতাতে উনার কন্ট্রিবিউশনের জায়গাগুলারে আরো স্পষ্টভাবে দেখতে পাবো আমরা। কামিনী রায়ের কিছু কবিতার অংশ মোরাল-সেস্টমেন্ট হিসাবে স্কুল-পাঠ্য বইগুলাতে অনেকদিন ধইরা চালু আছে।

বাংলা-কবিতার হিস্ট্রিতে একজন ‘মহিলা-কবি’ হিসাবে না, বরং ‘কবি’ হিসাবে উনার এক্সপ্লোরেশনের জায়গাগুলারে খেয়াল করতে পারবেন রিডার’রা এই কবিতাগুলাতে। এই এক্সপেক্টশন থিকা আমরা লেখাগুলা ছাপাইতেছি।

আঁধারে

আঁধারের কীটাণু আমরা,
দুদণ্ড আঁধারে করি খেলা,
অন্ধকারে ভেঙ্গে যায় হাট,
জীবন ও মরণের মেলা ।

কোথা হ’তে আসে, কোথা যায়,
ভাবিয়া না কেহ কিছু পায়,
অজ্ঞানেতে জনম মরণ,
বিশ্বয়েতে জীবন কাটায়।

নিবিড় বিপিনে হেথা হোথা
দেখা যায় আলোকের রেখা,
কে জানে সে কোথা হ’তে আসে?
কারণের কে পেয়েছে দেখা?

বিশ্বয়ে ঘুরিতে হবে যদি,
এ জীবন যতক্ষণ আছে
এস সখে, ঘুরি এই দিকে,
আলোকের রেখাটির কাছে।

কিরণের রেখাটি ধরিয়া
ঊর্দ্ধে যদি হই অগ্রসর,—
না হই, কিই বা ক্ষতি তাহে?
মরিব এ জ্যোতির ভিতর ।

অন্ধকার কাননের মাঝে
যতটুকু আলো দেখা যায়,
এস সথে, লভি সেই টুকু,
এস, খেলা খেলিব হেথায়।

 

সুখ

গিয়াছে ভাঙ্গিয়া সাধের বীণাটি,
ছিঁড়িয়া গিয়াছে মধুর তার,
গিয়াছে শুকায়ে-সরস মুকুল;
সকলি গিয়াছে – কি আছে আর?

নিবিল অকালে আশার প্রদীপ,
ভেঙ্গে চুরে গেল বাসনা যত,
ছুটিল অকালে সুখের স্বপন,
জীবন মরণ একই মত!

জীবন মরণ একই মতন,
ধরি এ জীবন কিসের তরে?
ভগন হৃদয়ে ভগন পরাণ
কতকাল আর রাখিব ধরে?

বুঝিতাম যদি কেমন সংসার,
জানিতাম যদি জীবন জ্বালা,
সাধের বীণাটি লয়ে থাকিতাম
সংসার আহ্বানে হইয়ে কালা

সাধের বীণাটি করিয়া দোসর
যাইতাম চলি বিজন বনে,
নীরব নিস্তব্ধ কানন হৃদয়ে
থাকিতাম পড়ি আপন মনে।

আপনার মনে থাকিতাম পড়ে’,
কল্পনা আরামে ঢালিয়া প্ৰাণ,
কে ধারিত পাপ সংসারের ধার?
সংসারের ডাকে কে দিত কান?

না বুঝিয়া হায় পশিনু সংসারে,
ভীষণদর্শন হেরিনু সব,
কল্পনার মম সৌন্দর্য্য, সঙ্গীত
হইল শ্মশান, পিশাচ রব।

হেরিনু সংসার মরীচিকাময়ী
মরুভূমি মত রয়েছে পড়ে’,
বাসনা পিয়াসে উন্মত্ত মানব
আশার ছলনে মরিছে পুড়ে’।

লক্ষ্যতারা ভূমে খসিয়া পড়িল,
আঁধারে আলোক ডুবিয়া গেল,
তামস হেরিতে ফুটিল নয়ন,
ভাঙ্গিয়ে হৃদয় শতধা হ’ল।

সেই হৃদয়ের এই পরিণাম,
সে আশার ফল ফলিল এই!
সেই জীবনের—কি কাজ জীবনে ?—
তিল মাত্র সুখ জীবনে নেই ।

যাক যাক্ প্রাণ, নিবুক এ জ্বালা,
আয় ভাঙ্গা বীণে আবার গাই –
যাতনা – যাতনা – যাতনাই সার,
নরভাগ্যে সুখ কখনো নাই।

বিষাদ, বিষাদ, সর্ব্বত্র বিষাদ,
নরভাগ্যে সুখ লিখিত নাই,
কাঁদিবার তরে মানব জীবন,
যতদিন বাঁচি কাঁদিয়া যাই ।

নাই কিরে সুখ? নাই কিরে সুখ? –
এ ধরা কি শুধু বিষাদময়?
যাতনে জ্বলিয়া, কাঁদিয়া মরিতে
কেবলি কি নর জনম লয়?

কাঁদাতেই শুধু বিশ্বরচয়িতা
সৃজেন কি নরে এমন করে?
মায়ার ছলনে উঠিতে পড়িতে
মানব জীবন অবনী’ পরে?

বল্ ছিন্ন বীণে, বল্ উচ্চৈঃস্বরে, –
না,—না,—না, মানবের তরে
আছে উচ্চ লক্ষ্য, সুখ উচ্চতর,
না সৃজিলা বিধি কাঁদাতে নরে।

কার্য্যক্ষেত্র ওই প্রশস্ত পড়িয়া,
সমর অঙ্গণ সংসার এই,
যাও বীরবেশে কর গিয়ে রণ ;
যে জিনিবে সুখ লভিবে সেই ।

পরের কারণে স্বার্থে দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে?
আপনার কথা ভুলিয়া যাও ।

পরের কারণে মরণেও সুখ;
‘সুখ’ ‘সুখ’ করি কেঁদনা আর,
যতই কাঁদিবে, যতই ভাবিবে,
ততই বাড়িবে হৃদয়-ভার ।

গেছে যাক্ ভেঙ্গে সুখের স্বপন
স্বপন অমন ভেঙ্গেই থাকে,
গেছে যাক্ নিবে আলেয়ার আলো,
গৃহে এস, আর ঘুর’না পাঁকে ।

যাতনা যাতনা কিসেরি যাতনা?
বিষাদ এতই কিসেরি তরে?
যদিই বা থাকে, যখন তখন
কি কাজ জানায়ে জগৎ ভরে’?

লুকান বিষাদ আঁধার অমায়
মৃদুভাতি স্নিগ্ধ তারার মত,
সারাটি রজনী নীরবে নীরবে
ঢালে সুমধুর আলোক কত ।

লুকান বিষাদ মানব হৃদয়ে
গম্ভীর নৈশীথ শান্তির প্রায়,
দুরাশার ভেরী, নৈরাশ চীৎকার,
আকাঙ্ক্ষার রব ভাঙ্গে না তায়।

বিষাদ-বিষাদ-বিষাদ বলিয়ে
কেনই কাঁদিবে জীবন ভরে’?
মানুষের মন এত কি অসার?
এতই সহজে নুইয়া পড়ে?

সকলের মুখ হাসিভরা দেখে
পার না মুছিতে নয়ন ধার?
পরহিতব্রতে পার না রাখিতে
চাপিয়া আপন বিষাদ তার?

আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসে নাই কেহ অবনী’ পরে,
সকলের তরে সকলে আমরা,
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।।

জুন, ১৮৮০।

 

পাছে লোকে কিছু বলে

পাছে লোকে কিছু বলে।
করিতে পারিনা কাজ,
সদা ভয়, সদা লাজ,
সংশয়ে সংকল্প সদা টলে,—
পাছে লোকে কিছু বলে।

আড়ালে আড়ালে থাকি,
নীরবে আপনা ঢাকি,
সম্মুখে চরণ নাহি চলে,
পাছে লোকে কিছু বলে ৷

হৃদয়ে বুদ বুদ মত,
উঠে শুভ্র চিন্তা কত,
মিশে যায় হৃদয়ের তলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।

কাঁদে প্রাণ যবে, আঁখি
সযতনে শুষ্ক রাখি,
নিরমল নয়নের জলে
পাছে লোকে কিছু বলে ।

একটি স্নেহের কথা
প্রশমিতে পারে ব্যথা,—
চলে যাই উপেক্ষার ছলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।

মহৎ উদ্দেশ্যে যবে,
এক সাথে মিলে সবে,
পারি না মিলিতে সেই দলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।

বিধাতা দেছেন প্রাণ,
থাকি সদা ম্রিয়মাণ,
শক্তি মরে ভীতির কবলে,
পাছে লোকে কিছু বলে ৷

 

হাত

দু-খানি সুগোল বাহু, দু-খানি কোমল কর,
স্নেহ যেন দেহ ধরি সেথায় বেঁধেছে ঘর,
রূপ নাকি কাছে টানে, গুণ বেঁধে রাখে হিয়া,
আমারে সে ডাকিতেছে ছোট হাতখানি দিয়া
এ দু-খানি শুভ্র বাহু মালা করি পরি গলে,
এ হাত উঠাবে স্বর্গে, ডুবাবে বা রসাতলে !

 

অনুকারীর প্রতি

পরের মুখে শেখা বুলি
পাখির মতো
কেন বলিস্?

পরের ভঙ্গি
নকল করে
নটের মতো
কেন চলিস্?

তোর নিজত্ব
সর্বাঙ্গে তোর
দিলেন দাতা
আপন হাতে,
মুছে সেটুকু
‘বাজে’ হলি,
গৌরব কিছু
বাড়ল তাতে?

আপনারে যে
ভেঙে চুরে
গড়তে চায়
পরের ছাঁচে

অলীক, ফাঁকি,
মেকি সে-জন,
নামটা তার
ক-দিন বাঁচে?

পরের চুরি
ছেড়ে দিয়ে
আপন মাঝে
ডুবে যা রে
খাঁটি ধন যা
সেথাই পাবি
আর কোথাও
পাবি না রে।

 

বর-বরণের নূতন ছড়া

ওগো আমার তিনটে পাশ, ওগো আমার বি.এ.,
ওগো আমার রক্তচঞ্চু, হরিৎ বরন টিয়ে,
বিয়ের দাঁড়ে দাঁড়াও, মাথায় শোলার মুকুট দিয়ে।
তোমার তরে স্বর্ণ-শস্য, দেখ না এগিয়ে,
ওগো সাধের টিয়ে!

তোমায় ওরা সাধছে হাজার দশেক টাকা দিয়ে,
ওদের কন্যা উদ্ধার করবে খালি হাতে গিয়ে,
ওদের দেওয়া গোরা-বাজনা আলোর মিছিল নিয়ে,
ওগো বিশ্ব-বিদ্যাজয়ী, বীর-সিংহ বি.এ.
থাক বেঁচে জীয়ে।

ধরায় জন্ম পুরুষ হয়ে, লিখতে পড়তে শিখে
বিনা পয়সায় পুষবে কেন নিজের নারীটিকে?
নারী বোঝা–সোজা কথা—তারে ঘাড়ে নিয়ে
কেন যাবে বেগার বইতে ?—ছিলো, ছিয়ে ছিয়ে!!
আদায় কর সোনা রুপা বস্ত্র অলংকার,
বাড়লে পাওনা হালকা হবে নূতন বধূর ভার।
বাপটি তোমার তীক্ষ্ণ চঞ্চু আনুন শানিয়ে
খুঁটে নিতে তাল, তিল, ওগো সোনার টিয়ে,
তাঁর যে ছেলের বিয়ে।

সে কালেতে কিনত লোকে দাসী ও গোলাম,
তোমরা চতুর বসে হাঁকবে পুরুষত্বের দাম।
এ নয় কেনা, এ নয় বেচা, এ যে, আহা, বিয়ে,
তাজা মাছ ভাজা এ যে মাছের তেল দিয়ে!
এস আমার ননীগোপাল, থাল খানি নিয়ে,
এস বিশ্ব-বিদ্যালয়ের তিলকধারী বি.এ. –
হবে তোমার বিয়ে।

এম.এ. যদি পড়তে চাও, কিম্বা পি.আর.এস.,
সে কয় বছর যত খরচ শ্বশুর দেবে বেশ!
তার মেয়েটির সুখের তরে বাধ্য সে তা দিতে,
এতটুকু লজ্জা যেন কোরো না তা নিতে।
তুমি যেটা পাবে খেটে রেখো তা জমিয়ে,
তোমারও তো ভবিষ্যতে আছে মেয়ের বিয়ে।
কন্যাদায় হতে তুমি মুক্তি দেবে যারে
ঋণের বোঝা একটু না হয় পড়ুক তারি ঘাড়ে;
মরুক না হয় সর্বস্বান্ত ; তুমি বউ নিয়ে
সুখে থাক ধনে পুত্রে পুরুষ-রতন বি.এ. –
থাক, থাক, জীয়ে।

[শ্রাবণ ১৩৩১]

 

নিশানা

ধীরে-ধীরে বাও মাঝি, ধীরে-ধীরে বাও,
বলে দেব কোন্ ঘাটে লাগাবে এ নাও।
দিকে-দিকে গেছে খাল, দেখি নাই কতকাল
নিশানা যা ছিল জলে ভেসে গেছে তাও।
ধীরে-ধীরে বাও, মাঝি, ধীরে-ধীরে বাও।

গাছে ভরা দুই কুল, দিনেতে না হত ভুল,
দেখা যেত ফাঁকে-ফাঁকে আমাদের গাঁও
চতুর্থী চাদের আলো, ঠাহর হয় না ভালো,
সুধার এমন জন দেখি না কোথাও।
ছিল লোক যত চেনা, কেহ পথ চলিছে না,
ধীরে যাও, দুই পারে চেয়ে-চেযে যাও।

দেখ তো কেয়ার ঝাড়, আর পূর্বদিকে তার
বড় শিমুলের দেখা পাও কিনা পাও।
সর্বাঙ্গ সাজায়ে ফুলে হিজল দাঁড়ায়ে কুলে
ঝুঁকে মুখ দেখে জলে? ভাল করে চাও,
বাঁকা হিজলের মূলে বাঁধিবে এ নাও,
এ আঁধারে ধীরে, মাঝি কিছু ধীরে বাও ।

গাঙ্গ যে মোরে বোলায়

(১)

গাঙ্গ যে মোরে বোলায়, মাগো, গাঙ্গ মোরে বোলায়
“আয়রে মানিক, দোল খাবিরে, ধলা ঢেউ-দোলায়।”
ঐ যে ঢেউর পাছে ঢেউ, তোরা দেখছ না কি কেউ?
মাথা তুল্যা, হাত বাড়ায়্যা, গাঙ্গ মোরে বোলায় –
মাগো, গাঙ্গ যে মোরে বোলায়।

(২)

ঘুম ভাঙ্গল দুফর রাইতে, বুকটা ধড়ফড়ায়,
দুই চক্ষু আদ্ধার ঠেল্যা, গাঙ্গের দিকে চায়,
বাঁশের খুঁটি লড়্যা ওঠে, বেড়ার বেতের বাধন ছোটে,
তোমার কাদন কাঁটার মতো, ফোটে আমার গায়,
এমন কালে বোলায় গাঙ্গ—”আয়রে মানিক, আয়।”
মাগো, গাছ যে মোরে বোলায়।

(৩)

কালাই নদীর জলে আসছে সমুদ্দুরের বান
হাজার মশাল মাথায় লৈয়া, করে কার সন্ধান?
মাগো, – তোর এই ভাঙ্গা ঘরে, আর কারে তালাস করে?
এলা মুই বাপের পুত, মোরেই বুঝি চায়।
মাগো, গাঙ্গ যে মোরে বোলায়।

(8)

আমি যখন পুছি তোরে, কথায় বাপজান
তুই কও যে পোড়া গাঙ্গে, গেছে তান পরান।
তাইথে তুই ডরে মোরে, ধরা রাখ ঘরে,
তাইতে মোরে যাইতে দেও না, রাঙা মেঞার নায়।
তুইসেন মোরে যাইতে দেও না, কত পোলা যায়।
মাগো, গাঙ্গ যে মোরে বোলায়!

(৫)

সেই সর্বনাশ্যা ঝড়ে যখন, সমুদ্দুরের ঢেউ
ধাইয়া আইল দেশে, ঘরে রৈলনা তো কেউ,
মরণ যখন ডাকে, যে যেখানে থাকে
ছুট্যা আসে, ভাস্যা আসে, উড়ায়্যা আসে পাখা,
হাজির হৈয়া সেলাম বাজায়, বেউথা ধরা রাখা;
বেউথা যাইতে দেওনা মোরে, রাঙ্গা মেঞার নায়।
মাগো, গাঙ্গ যে মোরে বোলায়!

(৬)

আমি যখন নায়ে নায়ে, কর্ম আসা-যাওয়া,
বাপ্‌জান যদি দোওয়া করে, থামবে তুফান-হাওয়া,
মাগো, ধরছি তোর পায়ে, কাইল যাইতে দিও নায়ে,
শোন্ তো মা, ও কার গলা— “আয়রে মানিক আয়।”
মাগো, গাঙ্গ কি মোরে বোলায়?

(৭)

আমি যখন সারেঙ্গ হমু, চালামু জাহাজ,
তোমার দিল্‌টা ঠাণ্ডা হৈবে দেখ্যা মোর কাজ।
আমার মনে লয়, বাপজান মোরে কয়—
“মায়ের দুঃখ ঘোচাবি তো ঘর ছাড়া আয়।”
মাগো, আবার শোনা যায়—
“আয়রে মানিক, দোল খাবিরে, ধলা ঢেউ-দোলায়।”
গাঙ্গ্ই মোরে বোলায়, না কি বাপজানই বোলায় ?
মাগো, বাপজানই বোলায়!

[১৩৩০]

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →