Main menu

রাজনিতির দাগ খতিয়ান: বাকশাল-দুছরা বিপ্লব এবং তার পর

This entry is part [part not set] of 12 in the series রকম শাহ'র বয়ান

১.
মস্ত একটা আলাপ, শুরু করতেছি নেত্রনিউজ দিয়া। দেশের কোন মিডিয়া দেশ এবং নাগরিকদের দরকারি বেশিরভাগ রিপোর্ট ছাপায় না, বা তারা বাকশালের পেয়ারা খাদেম। হজরত খলিল বিদেশে থাইকা দুই চারটা রিপোর্ট করছেন, এমন আরো কয়েকটা মিডিয়া থাকলে ভালো হইতো, কিন্তু নাই, আফছোছ! তাসনিম খলিল। নেত্র নিউজের এডিটর। দেশে শাচ্চা কোন মিডিয়া না থাকায় এই ছোট্ট জিনিশটাই মস্ত হইয়া উঠছে। দুই দিকেই! বাকশাল এবং বাকশালের দুশমন–দুই পক্ষই নেত্রনিউজের ব্যাপারে, হজরত খলিলের ব্যাপারে কতক আপত্তি করার কারন পাইছেন। কথাটা ওনারে দিয়া পাড়লেও অমন অনেকেই আছেন, দেশে একটা ১৯/২০ থিয়োরি আছে, এই অনেকে ঐ থিয়োরির গাহেক খুব। i

উনি একজন বেক্তি, কিন্তু ওনারে একটা ক্যাটেগরির নিশান হিশাবে দেখতে হবে আপনার, নাইলে বুঝতে পারবেন না। এই ক্যাটেগরিটারে বোঝার দরকার আছে, আপনের রাগ জদি ছেরেফ ওনার উপর হয়, ওনারে ঘায়েল করলেই আপনের রাগ মোচন হইতে পারে, কিন্তু ক্যাটেগরিটারে না বুঝলে ইতিহাশে আপনের এজেন্ডা খুবই অধরা থাইকা জাবে!

দেখেন, হজরত খলিলের উপর লিগ-বাকশাল খ্যাপা বটে এবং এইটা মিছা না। ওনার কায়কারবারে ওনার ফেমিলিও দেশে জুলুমের ভিতর আছে, হুমকি-ধামকি খাইতে হয় রেগুলার। আবার মাঝে মাঝে উনি এমন কিছু করেন, এমন কতগুলা জিনিশের নিশান উড়াইতে থাকেন জে লিগের দুশমনেরাও ওনার উপর খ্যাপেন, তখন অনেকেই মনে করেন জে, উনি বুঝিবা লিগ-বাকশালের হইয়া গোপনে কিছু করতেছেন!

ওদিকে, বাকশাল এবং তার দুশমন–দুই পক্ষই হজরত খলিলের উপর খেপলে উনি একটা অটোমেটিক বেনিফিট অব ডাউট পাইয়া জাইতেছেন অনেকের কাছেই! জেন বা বাকশাল আর বিএনপি–দুইটাই জেহেতু খারাপ, আর এই দুইটাই হজরত খলিলের উপর খ্যাপা, তাই হজরত খলিলই শাচ্চা ভালো, ওনার পজিশনই ঠিকাছে! উনি জেহেতু শাচ্চা ইনছাফের রাস্তায় আছেন, তাই ওনার কায়কারবার কখনো এদিকের, কখনো ওদিকের বিপক্ষে জায়, তাই কখনো এই পক্ষ খুশি তো কখনো ঐ পক্ষ নাখোশ!

কিন্তু এই ভাবনাগুলার গোড়ায় কিছু গলদ আছে এবং শেই গলদ ঘটতেছে হজরত খলিলকে একটা ক্যাটেগরির নিশান হিশাবে বুঝতে না পারায়, ফলে শেই ক্যাটেগরিটাও বোঝাবুঝির বাইরে থাকায়!

ছো, ঐ ক্যাটেগরিটারে বুঝতে হবে এবং ঐ ক্যাটেগরি কেন বাংলাদেশের ইতিহাশ বুঝতে পারে না ঠিকঠাক, শেইটা বুঝতে হবে। এবং এইটা বুঝাইতে পারলে ঐ ক্যাটেগরিটার অনেকেই নিজেদের রিভাইছ করতে রাজিও হইতে পারে! আমাদের মনে রাখা দরকার জে, কতগুলা ভালো মানুশও জালেমের পক্ষে কাম করতে পারে, কেননা, তাদের খোদ ভালোর ডেফিনিশন বা তারিফেই গলদ আছে, কিন্তু তাদের বিবেচনার শেই ভালোর পক্ষেই আছে তারা; কিন্তু তারিফের গলদের কারনে তাদের পজিশন জালেমের শক্তি বাড়াইতেছে উল্টা!

তো, হজরত খলিলের ক্যাটেগরিটার নাম ‘ওয়েস্টার্ন লিবারাল’ এবং এইটা বাংলাদেশে বেশুমার আছে! বাংলাদেশের ইতিহাশ বোঝাবুঝিতে এদের মস্ত গলদ আছে বইলা তারা দেশের উপকার করতে চাইলেও আখেরে উল্টা জিনিশ ফলায় পেরায়ই!

এখন ওনাদের গোড়া জেই ওয়েস্টার্ন লিবারালিজম, হালের শেই পলিটিকেল পজিশনটা খেয়াল করেন। এইটার ১ নাম্বার নিশানা হইলো, এইটার ভিতর একটা বাম টান আছে। আবার পুরা জে বাম, তা না আশলে। তাদের এখনকার পলিটিকেল মডেল অনেকটা এস্কান্ডিনেভিয়ান রাশ্টোগুলার মতো।

এখনকার বাম টানঅলা লিবারাল পজিশন কইলে আপনের কয়েকটা জিনিশ অটোমেটিক বুঝতে হবে। ফেমিনিজম, এলজিবিটিকিউ রাইটস, মাইনোরিটি রাইটস, এনভায়রনমেন্টালিজম, এন্টি-ওয়ার, এন্টি-নিউক্লিয়ার, এন্টি-ফছিল ফুয়েল–এগুলা খুব ফান্ডামেল্টাল; এই অর্থে এনাদের একটা আইডি পলিটিক্স আছে। ঐ বাম টান জতো বেশি ততো বেশি আবার কেপিটালিস্ট ইকোনমিতে ঘেন্না ওনাদের, একটা বড়ো দল আবার এনার্কিস্ট। এদের একজন হিরো ধরেন গেরেটা থুনবার্গ, হজরত থুনবার্গের কায়কারবার খেয়াল করলে এই লিবারালদের মন কতকটা বুঝতে পারবেন। এইখানে একটা বাড়তি কথা কইয়া রাখি: বাচ্চাদের একটা কুরুছেড হইছিলো; ঐটার পিছে আন্দাজটা ছিলো এমন–ইনোছেন্ট ছোলজার লাগবে, আগের কুরুছেডাররা পাপি, তাই তারা ফেল করছিলো। তাই ইউরোপের ইনোছেন্ট বাচ্চারা কুরুছেডে গেছিলো, ঐভাবে ইউরোপের একটা ফুল জেনারেশন মরছে ছেরেফ! তো, আমার আন্দাজ হইলো, ওয়েস্টার্ন লিবারালদের ভিতর শাদা খিরিস্টান ছাইকি আশলে একটিভ আছে ভালোই এবং গেরেটা থুনবার্গের ভিতর তারা শেই ইনোছেন্ট কুরুছেডার পাইছে এবং তারা দুনিয়ারে ডেভিল পুজির হাত থিকা বাচাইতে চাইতেছে। হজরত থুনবার্গ হইলেন এই নয়া কুরুছেডের ছেইন্ট/আর্চ বিশপ জেন!

তো, এই নজর দিয়া জখন বাংলাদেশের ইতিহাশ দেখেন ওনারা, কেমনে বিচার করেন?

এই পোশ্নের জবাবের তালাশ করতে আরেকটা ব্যাপার টানা দরকার আছে এইখানে। ১৯৭৫ শালে বাংলাদেশে বাকশাল কায়েম করে তখনকার উজিরে আজম, নিজে পেছিডেন হন, পলিটিক্স ব্যান করেন, পেরাইভেট ঔনারশিপের উপর হামলা করেন, একটা কেপিটালিস্ট ইকোনমি কমুনিজমের দিকে হাটা শুরু করে, একটা লোকাল কমুনিস্ট পাট্টি গজায়, আগের কমুনিস্ট পাট্টি ঐ নয়া কমুনিস্ট পাট্টিতে ঢুইকা পড়ে, রাশ্টো-শরকারের ব্যাপারে নাগরিকের কথা বলারে ব্যান করে।

খেয়াল করলে দেখবেন, আজকে অনেকেই ফেছিজমের কথা কয়, এখনকার হুকুমত বা রেজিমকে ধরেন ফরহাদ মজহাররা ফেছিজম কইতেছে, ওয়েস্টার্ন লিবারাল ডিছকোর্ছেও এইটারে ফেছিজম কইতেছেন অনেকে। ওনারা এই হুকুমতকে ফেছিজম কইবেন, কিন্তু বাকশাল কইবেন না। কেন?

কারন, শেই বাকশাল এখনকার ওয়েস্টার্ন লিবারালদের কাছে তাদের বাম টানের কারনে অনেকটাই একছেপ্টেবল আশলে! আর কমুনিস্ট মজহারের কাছেও পুজির/পেরাইভেট ঔনারশিপের উপর হামলার কারনে ঐটা কমুনিজমের দিকেই হাটা শুরু করাই হয়তো। এই পয়েন্টে দেখেন দেশি কমুনিস্ট আর ওয়েস্টার্ন লিবারালরা এক কাতারে খাড়াইতেছেন! মজহার থিকা সাকি বা ইনু বা মেনন বা ছিপিবি বা হজরত খলিলরা বাকশালরে একটা পজিটিভ ঘটনা হিশাবেই দেখেন ভিতরে ভিতরে!

কিন্তু আওয়ামি লিগের কাছে ব্যাপারটা কেমন? লিগের আতেল-বয়াতিরা বাকশালরে ডাকেন ‘দুছরা বিপ্লব’ নামে, জেইটা ইনকমপ্লিট, ১৯৭৫ শালের খুন জেইটারে আটকাইয়া দিছে। পরের লিগ তাইলে কি করলো ঐ ব্যাপারে?

১৯৯৬ শালের ইলেকশনের আগে মনে পড়ে শেখ হাসিনা ১৯৭২-৭৫ শাশনের ব্যাপারে দেশের মানুশের কাছে মাফ চাইছিলেন, মওকা চাইছিলেন একবার। কিন্তু ২০০১ শালের ইলেকশনে হারার পরে ঐটা ঘুরতে থাকে, ২০০৮ শালের পরে শেই ইনকমপ্লিট বিপ্লব কমপ্লিট করার এজেন্ডা হাতে লয় লিগ এবং তারপর থিকা আমরা এখনো শেই বিপ্লবের হালনাগাদ ভার্শনটাই দেখতেছি! এইটা চরিত্রের দিক দিয়া শেই বাকশালের অবিকল, ছেরেফ পুজির উপর ডাইরেক হামলা (ইতিহাশে চায়না মডেল তো হাজির হইছে!) বাদে। তাই এইটারে ওনারা ফেছিজম ডাকে কখনো কখনো; পেরাইভেট ঔনারশিপের উপর হামলা কইরা এইটা শেই তারিফের আদি বাকশাল হইয়া উঠতে পারে এবং তখন ওনারা এইটারে পুরা এজাজত দেবেন, জয়েনও করতে পারেন! আদি বাকশাল হইয়া উঠতেছে না দলিলে, তাই বুঝি ফেছিজম কইয়া একটু আদুরে কানমলা দিলেন, আদি বাকশালে জাইতে কইতেছেন হয়তো!

কিন্তু কাগজ-দলিলে শেই বাকশাল না হইলেও এই হুকুমতরে আমি ডাকি নয়া বাকশাল, এইটা শেই দুছরা বিপ্লবই কমপ্লিট করতে থাকা ছেরেফ। এইটারে জারা বাকশালের কন্টিনুশন হিশাবে ভাবতে নারাজ, তারা এইটারে ফেছিজম কইতেছেন অনেকে। কিন্তু আদি বাকশালে এজাজত দিয়া এই রেজিমকে নিন্দা করার উপায় খুবই কম, ছেরেফ কেপিটালের উপরে হামলাটাই বাস্তব তফাত, তার বাইরে তফাত হইলো–কইয়া বাকশাল কায়েম করা আর না কইয়াই বাকশাল হইয়া ওঠা!

খেয়াল করেন, আদি বাকশালে এজাজত দেওয়া মানে ১৯৭৩ শালের ইলেকশনকে একছেপ্ট করা, শেই ইলেকশনের ভিতর দিয়া গদি দখল করার ভিতর লেজিটিমেছি বা শাশনের হকের কোন ঘাটতি না পাওয়া। আর ১৯৭৩ শালের ইলেকশনের ভিতর দিয়া গদি দখলকারি শরকারের লেজিটিমেছি না থাকা জে দেখতে পায় না, শে কিভাবে ২০১৮ শালের ইলেকশনের ভিতর দিয়া গদি দখল করা শরকারের লেজিটিমেছির ঘাটতি দেখতে পাবে? জেইখানে কিনা ২০১৮ শালের ইলেকশনটা ১৯৭৩ শালের ইলেকশনেরই অবিকল কপি। বাকশাল কায়েমের পরে মিডিয়া জেমন বানাইছিলো, আজকের মিডিয়াও তাই, পলিটিক্স জেমন ব্যান করছিলো, আজকেও তেমনই ব্যান করা আছে; বাস্তবে ব্যান আছে কিন্তু কাগজে নাই, তাই বেশুমার খুন করতে হইতেছে, কাগজের বদলে বন্দুক দিয়া লেইখা দিতেছে হরদম!

বাস্তবে বাকশালের ব্যাপারে পজিটিভ হইয়া আপনে এখনকার রেজিমকে ডিনাই করতে পারেন না এবং এই রেজিমকে ডিনাই করলে আপনের বাকশালও ডিনাই করতে হবে। কিন্তু আপনে বাংলাদেশের বাম-লিবারাল আতেল-বয়াতিদের বেশিরভাগ দেখবেন মুখে ডেমোক্রেছির কথা কয়, কইবে, কইতেছে, কিন্তু তারা বাকশালের ব্যাপারে পজিটিভ! অতি আজব একটা পলিটিকেল পজিশন! পরথম আলো বা ডেইলি এস্টারে কোন এডিটোরিয়াল পাইছেন জিন্দেগিতে জেইখানে বাকশালরে পলিটিকেলি ডিনাই করা হইছে? দেখি নাই আমি; কিন্তু এই দুইটা মিডিয়া ডেমোক্রেছির কথায় ফেনা উঠায় হরদম! গুগোলে ১টা ছার্চ দিয়া দ্যাখেন, গত কয় বছরে দুছরা বিপ্লব লইয়া বহু লেখা পাইবেন, বাংলা একাডেমি থিকা বই ছাপাইছে; ১৮ মার্চ ২০২২’র বাংলা টিরিবিউনের নিউজের হেডলাইন এমন, ‘দ্বিতীয় বিপ্লব বাস্তবায়ন হলে অনেক আগেই বাংলাদেশ উন্নত হতো’, এইটা শেখ হাসিনার ঐদিনের কথা। নিউজের শুরুর দুইটা পারা এমন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দ্বিতীয় বিপ্লবের যে ডাক দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়ন হলে স্বাধীনতার ১০ বছরে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতো বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (১৮ মার্চ) বিকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।’

জুগান্তর থিকা বাংলানিউজ, মানবকন্ঠ, চ্যানেল আই, ডিবিছি নিউজ, শকল মিডিয়ায় বাকশালের পক্ষে রিপোর্ট/কলাম/এডিটোরিয়াল পাইবেন।

অথচ ভাবেন, বাকশাল আর ডেমোক্রেছি জে দুইটা উল্টা জিনিশ, এইটা বোঝা কিভাবে এতো শক্ত হয়! কিন্তু দেশের বাম-টানের লিবারালরা এই ব্যাপারে কেমনে দুই দিকেই থাকতে পারেন!?

কিন্তু এনারা বাস্তবে দুই দিকে খুবই থাকতে পারেন! তারা নাকি ডেমোক্রেছি চান এবং তারা বাকশালের উকিল, পরথম আলোতে এমনকি হজরত গাফফার চৌধুরির ইন্টারভিউ ছাপা হইছে জেইখানে উনি কইতেছেন জে, ১৯৭২ শালেই বাকশাল বানানো উচিত আছিলো!

এখন আমাদের দেখবার ব্যাপার হইলো, হালের ওয়েস্টার্ন লিবারাল নজরে বাকশাল বেশ একছেপ্টেবল পলিটিকেল পোজেক্ট! এনারা এমনকি একটা চিপাগলিও বানাইছেন, বাকশালের তারিফ করতেছেন কেউ কেউ ‘শোশিতের গনতন্ত্র’ নামে!

তাইলে, শেখ হাসিনার নয়া বাকশালকেও ওনারা ‘শোশিতের গনতন্ত্র’ হিশাবে দেখতে পাইতেছেন আশলে, কেপিটালের উপর ডাইরেক হামলাটা না হওয়াতেই জা একটু মুশকিলে আছেন ওনারা! ওয়েস্টার্ন লিবারাল নজরে আর জা কিছু চাওয়া আছে, তাও নয়া বাকশাল পুরাইতেছে কিন্তু পেরায়ই! জেমন ধরেন, হাওয়া ছিনামায় বন্দি পাখির ব্যাপারে মামলা করলো নয়া বাকশালের একটা দপ্তর, এইটা তাইলে এনভায়রনমেন্টালিজমের একটা নিশানা হইলো। আমেরিকার ইম্পেরিয়ালিজমকে টক্কর দিতেছে নয়া বাকশাল ওয়ার্ল্ড ব্যাংকরে ধামকি দিয়া, বা আমেরিকার কথারে মাঝে মাঝে পাত্তা না দিয়া। এই পাত্তা না দেবার ভিতর এমনকি পেরাইভেট ঔনারশিপের উপর হামলার একটা ঘেরানও আছে! জেমন ধরেন, ইউনুসের গেরামিন ব্যাংকরে ছাইজ করা বা ইছলামি ব্যাংকরে ছাইজ করার ভিতর ওনারা খুব শম্ভব ঐ ঘেরান পান কতক!

নয়া বাকশালের লিডারের মাইয়া অটিজম লইয়া কাম করে, দেশের বিরাট একদল ফেমিনিস্টও আছে নয়া বাকশালের লগে, হিজড়াদের পুলিশে ঢুকাবার কথা কইছেন শেখ হাসিনা। এগুলা ওয়েস্টার্ন লিবারাল নজরের লগে খুবই কম্প্যাটিবল বটে! এমনকি হেফাজতে ইছলাম বা চরমোনাই’র লগে খাতিরটাকে ওনারা দেখতে পারেন ইছলামোফোবিয়া উতরাইয়া ওঠার কোশেশ হিশাবে। ওদিকে, হিন্দু বা মাইনোরিটি পিপলের লগে নয়া বাকশালের বাড়তি খাতিরের কথা তো হরদম শোনা জায়! ওয়েস্টার্ন লিবারাল নজরে আরেকটা বড়ো দিকের নাম পপুলেশন; মানুশ জে বাংলাদেশের বোঝা, এইটা বেশ পুরানা আলাপই বটে। এই দিক দিয়া ভাবলে দেশের মানুশগুলারে দুনিয়ার জন্ন ভাইরাছ হিশাবে দেখা শম্ভব, ঐ লিবারালদের এনভায়রনমেন্টালিজম অমন ভাবনারে ফুশলায়। এনথ্রোপছিনের আইডিয়া ভাবলে মানুশকে ভাইরাছ হিশাবে দেখার শম্ভাবনা বুঝবেন ভালো।

হালের ওয়েস্টার্ন লিবারালরা মানুশের ভিতর আবার বেশি ঘেন্না করে অশিক্ষিত বা আনএডুকেটেড বা জাহেল মানুশদের, তারা পেরায়ই রিলিজিয়াছ, আনছায়েন্টিফিক বেকুব, প্যাট্রিয়াকাল/মিছোজিনিস্ট, এন্টি-এনভায়রনমেন্ট (আনলেছ দে আর ইন্ডিজেনাছ পিপল)। এই ক্যাটেগরিতে বাংলাদেশের মানুশ আরামে পইড়া জাইতেছে! বাংলাদেশের লিবারালরা জে গড়পরতা ইলেকশন লাইক করে না, তার পিছে এইটা মস্ত কারন।

এই শব কারনেই কইতেছিলাম, ওয়েস্টার্ন লিবারাল নজর কেমনে ওনাদের পেরায়ই আইডি পলিটিক্সে লইয়া জাইতে পারে! হিজড়া, মাইনোরিটি, এনভায়রনমেন্ট, আমেরিকার ইম্পেরিয়ালিজমরে টক্কর দেওয়া, অটিজম–নয়া বাকশালের এই শব বাহানায় ওনারা ভালোই ভোলে! এবং আখেরে ওনাদের বটম লাইনটারেই নাই কইরা দেয়! এইগুলারে অতি গুরু হিশাবে দেখতে দেখতে ওনারা জে আর ডেমোক্রেটিকই আদৌ থাকতেছেন না, শেইটা আর খেয়ালই করতে পারেন না!ii

এখন তাইলে আমরা একটা বটম লাইন তালাশ করি বরং! শুরুতেই আমাদের মানা দরকার জে, বাকশাল আর ডেমোক্রেছি উল্টা জিনিশ, আপনে বাকশালে এজাজত দিয়া নিজেরে আর ডেমোক্রেটিক দাবি করতে পারেন না! এই কথাটার আরেকটু পিছে গেলে মোদ্দা কথায় দুইটা জিনিশ মানতে হবে আমাদের এবং আপনে লিবারাল হইলে ঐ দুইটা জিনিশ আশলে আপনের ফাউন্ডেশান হবার কথা! নিজের বামটানের লিমিট বোঝা উচিত আপনার, কতটা বাম আপনে, কতটা বাম হইলে আপনে আর লিবারাল থাকতে পারতেছেন না, শেইটা খেয়াল করা দরকার!

ঐ দুইটা জিনিশ হইলো, পেরাইভেট ঔনারশিপ আর ইলেকশন। পেরাইভেট ঔনারশিপের ব্যাপারে দেশি বামটানের লোকদের কিলিয়ার-কাট পজিশন নেবার টাইম হইছে; চায়না মডেলের কমুনিজমের পরে এই ব্যাপারে পজিশন লওয়া শোজাও এখন! তবে শারা দুনিয়ার বামেরা কি ভাবে, তারে আমলে না নিয়াই কইতে পারি জে, বাংলাদেশে পেরাইভেট ঔনারশিপ থাকবে। এই বটমলাইনে খাড়াইতে হবে আমাদের। পুরা দুনিয়া নাস্তিক না হইলে পেরাইভেট ঔনারশিপ খেদানো জাবে না, ইছলাম তো বটেই, আর শব ধর্মও পেরাইভেট ঔনারশিপে এজাজত দেয়। আর ইছলামে বহু আচার, এবাদত ডাইরেক পেরাইভেট ঔনারশিপের উপর খাড়াইয়া আছে। ইছলামের লগে কেপিটালের কোন ফ্যাছাদ নাই, অমন কোন দাবি করতে চান কোন কোন বাম, এইটা মিছা কথা। বরং কেপিটাল খেদাইতে চাইলে পয়লা ভেটো আশবে ইছলামের দিক দিয়াই! ওদিকে, পেরাইভেট ঔনারশিপ খেদাইতে পুরা দুনিয়া নাস্তিক হইতে হবে ঠিকই, কিন্তু পুরা দুনিয়া নাস্তিক হইলে শেই নাস্তিকরা মোটেই পেরাইভেট ঔনারশিপ তুইলা দেবে না, বরং উল্টা ঘটনা ঘটবে! নেচারাল ছিলেকশনের দুনিয়া কায়েম হবে, বড়োরা ছোটদের পুরা খাইয়া ফেলবে, রোবট এবং অটোমেশনের কারনে দুনিয়ায় গরিব মানুশের দরকার কইমা জাইতেছে, নাস্তিকরা এই ব্যাপারে কোন গিল্ট বাদেই বিলিয়ন মানুশকে কোরবানি দিতে পারবে, তাদের নাস্তিকতার কারনে কোন মরাল কম্পাছ না থাকায় বা নেচারাল ছিলেকশনের মরাল কম্পাছে ব্যাপারটা খুবই জাস্টিফাইড।

পেরাইভেট ঔনারশিপের বাইরে ইলেকশন হইলো আরেকটা বটমলাইন। ইলেকশনের ভিতর দিয়া পাওয়া জনতার কবুলিয়ত বাদে শাশনের হক গজাইতে পারে না, লেজিটিমেছির আর কোন রাস্তা নাই। আপনে জদি পুরা বামও হন, জনতারে কনভিন্স কইরা, জনতা আপনারে কবুল করলেই কেবল ঐদিকে হাটতে পারবেন, নাইলে না। এতো তাড়াহুড়া কেন করেন, এই তাড়াহুড়ার কারনেই দুনিয়ায় কমুনিস্টরা কোটি কোটি মানুশ খুন করছে, এস্টালিন বা মাও বা এখনকার চায়না উইঘুর মোছলমানদের লগে জা করতেছে, ঐগুলারে জাস্টিফাই করা ছাড়েন, পারলে জনতারে ফুশলান, কেন আপনের শাশন বেটার, শেইটা বুঝাইয়া জনতার কবুলিয়ত আদায় করতে হবে, ইলেকশনই একমাত্র তরিকা, আর কোন তরিকা নাই। শকল পলিটিকেল ডকট্রিনের এই দুই বটমলাইনে একমত হইতে হবে। ইলেকশন মোটেই কোন লিবারাল ওয়েস্টের ঘটনা না, এইটা দুনিয়ার আদিকাল থিকাই আছিলো; তফাত ঘটছে কে কে ভোট দিতে পারবে, এইখানে, ডাকাতের দলেও ইলেকশন হয়, রাজা-বাদশারাও দরবারের বেশিরভাগের মতেই চলে, রাজা-বাদশা মানেই টাইরান্ট না, টাইরান্ট খুবই জুদা, এবং দুনিয়ায় কোন টাইরান্টই কয়েকদিনের বেশি থাকতে পারে নাই মছনদে।

এখন কেপিটাল আর ইলেকশনরে বটমলাইন ধরতে রাজি হইলেই মামলা খতম হয় না। কেননা, এই দুইটা না মানার উপায় না থাকলেও এই দুইটার ভিতরেই কতগুলা শয়তানি কারবার আছে, এবং শেই শয়তানরে কনটোলে রাখতেই ছিস্টেম বানাইতে হয়। কেমন শয়তান?

কেপিটালের ভিতরের পছিবল শয়তান বুঝতে মার্ক্স তো আছেনই, পেরাইভেট ঔনারশিপ মানলেই ইকোনোমিস্ট হিশাবে মার্ক্স খারিজ হয় না; আর শব বাদ দিলেও মিনস্ অব পোডাকশন জার দখলে তার জে বার্গেইনিং পাওয়ার বেশি থাকবে, এইটা আমরা কমন আক্কেল দিয়াই বুঝতে পারি। ছেলেভ টেরেড বা বাংলাদেশের চা বাগানের লেবাররা একেকটা শয়তানি ছিস্টেমেই আছে, আছিলো; দেশের বাশাবাড়ির বান্দির বাচ্চারাও একটা মাঝারি শয়তানি ছিস্টেমে গোলামি করতেছে। বড়ো বড়ো কর্পোরেটগুলারে লিমিটের ভিতর রাখার দরকার আছে, পাবলিক শেয়ার, খাজনা/ট্যাক্স, পাবলিক হেলথ, এনভায়রনমেন্ট ইত্তাদি বহু ইশুতে কর্পোরেটগুলারে লিমিটের ভিতর রাখার একটা ছিস্টেম বানানো হইছে দুনিয়ায়, এইগুলারে কেমনে আরো বেশি মজবুত করা জায়, শেইটা ভাবতে থাকতে হবে আমাদের।

আর ইলেকশনের ভিতরের শয়তান হইলো, কবুলিয়তের শাশনের বদলে মেজরিটির শাশনের মায়া/ইলুশন কায়েম হওয়া, জেইটারে এখন লোকে পপুলিজম নামে চেনে, ইনডিয়ায় জেইটার শবচে ভায়োলেন্ট ছুরত দেখা জাইতেছে! বাংলাদেশ রাশ্টের জেই মুছাবিদা বা কন্সটিটুশন বানানো হইছে, ঐটাও হয় টাইরান্ট অথবা পপুলিজম কায়েম করার ফর্মুলা মাত্র! এগুলা আমাদের বানাইতে হবে আবার। আমেরিকা রাশ্টের মুছাবিদা মন দিয়া পড়তে হবে আমাদের, খমতার ছিস্টেমটারে কেমনে ভাগ কইরা রাখলে টাইরান্ট বা পপুলিজম ঠেকানো জায়, ঐটা দেখতে হবে। ছিম্পল এই জিনিশটা এইখানে খেয়াল করতে কই: আমেরিকায় কংগেরেছ-ছিনেট-মেয়র/ছিটি-কাউন্টি-এস্টেট-শেরিফ-পুলিশ-এফবিআই-পেছিডেন, এমন অনেকগুলা ভাগ আছে খমতার, এরা এমনকি ইকোনোমিকেলিই অনেক শাধিন; শেই কারনেই টেরাম্প বা আরো রেডিকেল কেউ আশলেও তারে জনতার মুভমেন্টের মুখে হোয়াইট হাউজের বাংকারেই লুকাইতে হবে! ঐটা মোটেই আমেরিকার জনতা খুব জোশ, শেই কারনে হয় নাই, খমতা ভাগাভাগি হইয়া থাকার ফল ঐটা।

২.
ছো, ওয়েস্টার্ন লিবারালদের আমি ঐ দুইটা বটমলাইন থিকা হাটা শুরু করার দাওয়াত দিতেছি। এই বটমলাইন থিকা দেশের ইতিহাশ বোঝা শুরু করলে আপনারা বহু ঘেন্না উতরাইয়া কোন পলিটিক্সটা করবেন, শেইটা ভালো ফয়ছালা করতে পারবেন। দেশের পলিটিকেল ডকট্রিনগুলাও বিচার করতে পারবেন ভালো।

আমি ঐ বটমলাইনে খাড়াইতে রাজি হইছি একটা শময়, আমার ভিতরেও ওয়েস্টার্ন লিবারাল চিন্তা আছিলো, দেশি ছেকুলারও তো আছিলাম। পরে ঐ বটমলাইন আমারে পোস্ট-কলোনিয়াল বানাইছে, আমি ঘেন্না আর নাক ছিটকানি উতরাইয়া দেশের ইতিহাশ বুঝতে শুরু করছি। আপনারা জা কিছুই ভাবেন না কেন এখন, ঐগুলা আমি পার হইয়া আশছি, বিলিভ মি!

ঐ বটমলাইনে খাড়াইয়া দেশের ইতিহাশ জেমনে বুঝছি আমি, তার একটা এস্কেচ দিতেছি। আমার এই এস্কেচে ভুল দেখলে শেইটা আমার জানার ঘাটতি, কিন্তু ঐ বটমলাইনের লগে গাদ্দারি করি না আমি, ঐ বটমলাইনে আমার লয়্যালটি খুবই শাচ্চা, শতি লোক আমি ঐ ব্যাপারে!

আমার বিচারে ১৯৭০ ইলেকশনটা পাকিস্তানের হইলেও ইতিহাশের এস্পেশাল মোমেন্টের কারনে ১৯৭২-৭৩ শালে লিগের/শেখ শাহেবের শাশনের লেজিটিমেছি আছিলো, বাংলাদেশের জনতা তারে কবুল করছিলো; ১৯৭০ ইলেকশনটা না করা ভাশানির ভুল হইছিলো, শেখ শাহেবের লগে উনি জদি কোয়ালিশনে ইলেকশন করতেন, তাইলে হয়তো শেখ শাহেব পরে টাইরান্ট হবার মওকা পাইতেন না, আমরা হয়তো ডেমোক্রেটিক এক শেখ শাহেব পাইতাম! ওনার টাইরান্ট হবার পিরিকন্ডিশন জোগাইছেন মাওলানা শাহেব! মানুশের বেলায় এইটা ঘটে; ইতিহাশের কোন একটা মোমেন্টে মানুশ হয়তো জিরো পয়েন্টে খাড়ায়, তখনকার ইতিহাশ তারে কি কি হবার মওকা দিছিলো, কোন দিকে হাটার পিরিকন্ডিশন হাজির আছে ইতিহাশে, শেই হিশাবে জিরো পয়েন্ট থিকা কোন একদিকে হাটা শুরু করে। শেখ শাহেবও অমন একটা জিরো পয়েন্টে খাড়াইছিলেন, তখন ভাশানি ইতিহাশে তার রোলটা প্লে করলেই জিরো পয়েন্ট থিকা শেখ শাহেব হয়তো গনতন্ত্রের দিকে হাটা শুরু করতেন! কিন্তু ময়দানে ভাশানি না থাকায় উনি একজন ফিউডাল লর্ড হবার মওকা পাইলেন। একটা চেকিং ছিস্টেম/ডায়ালেক্টিকস ছাড়া খুব কম মানুশই ভালো থাকতে পারেন, শেই কম মানুশের ভিতর উনি আছিলেন না, আফছোছ! ১৯৭২ থিকাই ওনার ভিতর টাইরান্ট হবার শকল নিশানা পাওয়া জাইতেছিলো, বাংলাদেশের একমাত্র লিডার উনি ভাবতেছেন নিজেরে, নিজেরে দেশ এবং মানুশের চাইতে বড়ো ভাবা শুরু করছেন তখনই। ১৯৭৩ শালের ইলেকশনের ভিতর দিয়া উনি শাচ্চা টাইরান্ট হইয়া উঠলেন, শেইটার দলিল করলেন ১৯৭৫ শালে বাকশাল বানাইয়া।

বাকশাল হইলো ঐ দুইটা বটম লাইন থিকা শইরা জাওয়া। দুইটার ভিতর কেপিটালের উপর হামলারে আমরা একটু নরোম নজরে দেখতে পারি তখনকার দুনিয়ায় মার্ক্সের চিন্তার দাপটের কারনে। কিন্তু ১৯৭৩ শালের ইলেকশনে জনতার কবুলিয়তের তোয়াক্কা না করায় উনি শাশনের হক হারাইছিলেন; তার মানে বাকশাল বানাবার মিনিমাম এখতিয়ারও আছিলো না শেখ শাহেবের!

ওনার পরে কর্নেল তাহের একটা টেরাই করছিলেন। আমাদের ঐ বটমলাইনের নিরিখে তাহের বাতিল মাল ছেরেফ, আনএকছেপ্টেবল। তবে তাহের একটা বিপ্লব ঠিকই করতে পারলেন বটে! তাহেরই পয়লা আর্মির লোক জিনি আর্মির দেশ শাশনের কথা ভাবতে পারছেন, তার আগে ৭৫ শালের খুনিরা ঐটা ভাবতে পারে নাই, তারা ছেরেফ বাতিল (বে-হক) পেছিডেনরে খুন করছেন, দেশ শাশন করতেছিলো ছিভিলিয়ানরাই। পরে খালেদ মোশাররফও দেশ শাশনের কথা ভাবতে পারে নাই। এইটা পয়লা ভাবলেন তাহের। বাংলাদেশের ফিরিডম ওয়ারের ভিতর দিয়া বাংলাদেশ আর্মির ঐ বদল ঘটছিলো, পাকিস্তান আর্মির তুলনায়, পাক আর্মির লগে শেই তফাত ঘুচাইছিলেন তাহের, আর কেউ না!

হজরত শেখ শাহেব বা হজরত তাহের, দুইজনের কেউই শাশনের হক আর এখতিয়ার, জনতার কবুলিয়ত লইয়া ভাবেন নাই আদৌ। তাদের পরে ময়দানে আমরা পাইলাম জিয়ারে। এর আগে হজরত মোশতাক আর হজরত সায়েমকে পাইতেছি, ওনারাও জনতার কবুলিয়ত, এখতিয়ার/লেজিটিমেছি লইয়া ভাবেন নাই।

৩.
লেজিটিমেছি লইয়া পয়লা ভাবতে দেখা গেল হজরত জিয়ারে। বাংলাদেশ পয়দা হবার পরের ইতিহাশে হজরত জিয়া ৪/৫ বছরের কায়কারবার দিয়া শবচে বড়ো চাপ্টার লেইখা গেছেন, ভালো বা খারাপ জেইটাই কইতে চান কইতে পারেন, কিন্তু তারে এড়াবার উপায় নাই। তাই হজরত জিয়ারে বিচার করতে হবে আমাদের, ডিছিশন লইতে হবে। এবং এই বিচারে খুবই হুশিয়ার থাকার দরকার আছে, নাইলে আমরা এস্টেরিওটাইপিং, জেনারালাইজেন আর পেরেজুডিছের খপ্পরে পইড়া জাইতে পারি! বাস্তবে ঐ খপ্পরে পইড়া আছি আমরা গত ৩০/৪০ বছর!

জিয়া কে? পাকিস্তান আর্মি, ১৯৬৬ শালের পরের পাকিস্তানের পুবে আস্তে আস্তে বাংগালি নেশনালিজম পয়দা হইতে থাকা, ১৯৬৫ আর ১৯৭১ শালের জুদ্ধ–এগুলা হজরত জিয়ার মন বানাইছে ধিরে, কিন্তু ইতিহাশের আদালতে উনি আশামি হইবেন ১৯৭৫ শালে আর্মির হেড হবার পর থিকা ১৯৮১ শালে মরন অব্দি ওনার কায়কারবারের কারনে।

জিয়ার ব্যাপরে ১ নাম্বার নালিশ হইলো, উনি একজন শামরিক শাশক। কথা ঠিক। শামরিক শাশন কইলেই একটা মিলিটারি ব্যাপার ভাশে আমাদের মগজে, অথচ এই জিনিশের লগে মিলিটারির কোন রিশতা নাই, অন্তত বাংলাদেশের ইতিহাশে! এই জিনিশটা বাংলাদেশের ইতিহাশ লইয়া ভাবাভাবি করা লোকেরা পেরায় কেউই খেয়াল করে নাই! ওনারা একদমই খেয়াল করে না জে, বাংলাদেশের পয়লা দুইজন শামরিক শাশক হইলেন ছিভিলিয়ান–খন্দকার মোশতাক এবং কাজি সায়েম! জিয়া ৩ নাম্বার শামরিক শাশক।

খেয়াল করার ব্যাপার হইলো, হজরত মোশতাকের ব্যাপারে নালিশ তার শামরিক শাশক হওয়ায় না, বরং ১৯৭৫ শালের ১৫ আগস্টে দেশের পেছিডেন খুনের লগে তার পছিবল রিশতায়; আর কাজি সায়েমের ব্যাপারে তেমন কোন নালিশ/আপত্তি দেখাই জায় না! তার মানে, নালিশের এই বাদিরা শামরিক শাশনে আপত্তি করে না আশলে, তাদের আপত্তি শামরিক শাশনে জখন আর্মি/মিলিটারির রিশতা দেখা জাইতেছে!

লেজিটিমেছি বা জনতার কবুলিয়তের দিক দিয়া চিন্তা করলে হজরত শেখ শাহেব, হজরত মোশতাক এবং কাজি সায়েম–৩ জনেই একই কিছিমের পেছিডেন, ৩ জনের কেউই নিজেদের খমতার লেজিটিমেছির লগে জনতার কবুলিয়তের কোন রিশতা লইয়া চিন্তা করছেন বইলা দেখা জাইতেছে না! এদের ভিতর হজরত শেখ শাহেবকে লেজিটিমেছির দিক দিয়া একটু আগাইয়া রাখতে পারতাম আমরা, জদি ১৯৭৩ শালের ইলেকশনটা হজরত এরশাদের ১৯৮৬ বা হজরত শেখ হাসিনার ২০১৮ শালের ইলেকশনের মতো একটা ইলেকশন না হইতো! রাশ্টের মুছবিদার জেই দফাটা দিয়া শেখ শাহেব পেছিডেন হইছেন, ঐটা এমন:

“৩৪। রাষ্ট্রপতি-সংক্রান্ত বিশেষ বিধান-সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও এই আইন প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে,
(ক) এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে যিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি-পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তিনি রাষ্ট্রপতির পদে থাকিবেন না এবং রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইবে;
(খ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হইবেন এবং রাষ্ট্রপতির কার্যভার গ্রহণ করিবেন এবং উক্ত প্রবর্তন হইতে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি-পদে বহাল থাকিবেন যেন তিনি এই আইনের দ্বারা সংশোধিত সংবিধানের অধীন রাষ্ট্রপতি-পদের নির্বাচিত হইয়াছেন।”

বরং লেজিটিমেছির দিক দিয়া কাজি সায়েম আগাইয়া আছেন বাকি দুই জনের তুলনায়, কাজি সায়েম অন্তত গায়ের জোরে শামরিক শাশক হন নাই। এবং পুরানা বাদশাহি জামানার দরবারি এলিটরা জেমন একজন রাজা বানাইতো মাঝে মাঝে, কাজি সায়েম তেমনি কইরা পেছিডেন হইছিলেন; নজরে পেরেজুডিছের পর্দা তুইলা চাইতে রাজি হইলে আমরা দেখবো, হজরত জিয়াও পেছিডেন হইছেন কাজি সায়েমের মতোই দরবারি এলিটদের ফয়ছালার ভিতর দিয়া! পরের বাংলাদেশের কাজি শাহাবুদ্দিনের আদি মডেল হইলেন কাজি সায়েম বা জিয়া।

তো দেখা জাইতেছে, জিয়া নিজে জে আর্মির লোক, তার শামরিক শাশক হবার ঘটনায় ঐটাই তার দোশ, ছেরেফ শামরিক শাশক হওয়ায় ততো দোশ নাই! এমনকি উনি জে আর্মির লোক, এইটাও ততো পোবলেম না হয়তো! এইটা কইতেছি সায়েমের অটোবায়োগেরাফিতে উনি জেমনে ঘটনাগুলারে লিখছেন, শেইটা আমলে লইয়া। iii

এখনকার আওয়ামি-বাকশালিরা জেমনে হজরত জিয়ার পেছিডেন হবার ঘটনাটারে বয়ান করেন, কাজি সায়েম পুরাই উল্টা লিখছেন! হজরত জিয়া বংগভবনে জাইয়া দখল করেন নাই, বরং হজরত কাজি সায়েমই তারে খবর দিয়া বংগভবনে নিছেন; ওদিকে, কাজি সায়েম জেই ছিভিল এডভাইজার নিছিলেন কয়জন, তারাই কাজি সায়েমকে কইছেন জে, তারা জিয়ারে চান! খেয়াল করেন, এমনকি হজরত জিয়াও জদি ওনাদের ভাও কইরা থাকেন, তবু এইটা অন্তত কইতে পারতেছি জে, আর্মি জিয়া গায়ের জোরে দখল করে নাই, বরং ছিভিল লোকেরাই জিয়ারে চাইতেছে! কাজি সায়েমের ছিভিল উজিরেরা তার কাছে জিয়ার নাম দেবার পরে কাজি সায়েম জিয়ারে ডাকার আগে এয়ার আর নেভির হেড দুইজনারে জিগাইছেন, তারাও জিয়ার ব্যাপারে পজিটিভ বইলা জানাইছেন।

কাজি সায়েমের বয়ান মোতাবেক বংগভবনে হজরত জিয়ার লগে তার মজার কিছু কথা হইছে; কাজি সায়েম তারে জিগাইছেন, আপনে পারবেন শামলাইতে? জিয়া কইতেছেন, পারবো, আর্মিতে কিছু ঝামেলা হইতে পারে, কিন্তু ঐটা শামলাইতে পারবো। এইখানে আমরা পরে আর্মিতে অনেকগুলা রিভল্টের ঘটনা মিলাইয়া দেখতে পারি। তারপর হজরত জিয়া কাজি সায়েমের কাছে শাশনের ব্যাপারে পরামিশও চাইতেছেন এবং কাজি সায়েম দিছেনও পরামিশ। কাজি সায়েম তারে ইলেকশন করতে কইছেন, জিয়া রাজি হইছেন। নিজের বইতে সায়েম কমেন্ট করতেছেন ঐ ব্যাপারে– উনি একদমই বুঝতে পারেন নাই জে, জিয়া নিজেই কেন্ডিডেট হইবেন ইলেকশনে!

মানে হইলো, হজরত জিয়া নিজে কেন্ডিডেট হবার আগে অব্দি কাজি সায়েমের বিচারে হজরত জিয়া তেমন আপত্তিকর কিছু করেন নাই!

কাজি সায়েম তার কেতাবে জানাইতেছেন জে, উনি ইলেকশন কইরা ইলেকটেড রিপ্রেজেন্টেটিভদের কাছে খমতা দিয়া বিদায় নিতে চাইছিলেন। উনি নিজে পেরায় দেড় বছর পেছিডেন আছিলেন, তার এই পেছিডেন থাকাটা কেমনে লেজিটিমেট আছিলো, শেই চিন্তা করতে দেখা জায় নাই তারে। কিন্তু উনি লেজিটিমেট লোকদের হাতেই খমতা ছাড়তে চাইছেন, ইলেকশনকেই শেই লেজিটিমেছির একমাত্র রাস্তা ভাবতেছেন। পোশ্ন হইলো, কোন কিছিমের ইলেকশন করতে চাইছিলেন উনি?

খেয়াল করেন, ১৯৭৫ শালের ২৫ জানুয়ারির চৌধা এমেনমেন্ডে নিজে পেছিডেন হবার জেই দফা জোগ করেন হজরত শেখ শাহেব, শেই মুছাবিদা বা কন্সটিটুশনই কিন্তু বলবত আছে, হজরত মোশতাক শামরিক ফরমান জারি কইরা কয়েকটা ব্যাপার ছেরেফ বাতিল করছিলো (হজরত মোশতাক/সায়েম/জিয়া–৩ জনেই ১৯৭৫ শালের ২৫ জানুয়ারির মুছাবিদাতেই পেছিডেন হইছেন)। তার মানে ইলেকশন করবেন কাজি সায়েম, এই কথার অর্থ হইলো, পেছিডেন ইলেকশন হইতে হবে, পার্লামেন্টারি ছিস্টেমই তো নাই দেশে; পেছিডেন ইলেকশন না কইরা পার্লামেন্ট ইলেকশন করার তেমন কোন অর্থ নাই, পেরায় শকল খমতা পেছিডেনের হাতেই এবং নয়া পেছিডেন না পাইলে কাজি সায়েম খমতা দিতে পারতেছেন না!

কিন্তু দেড় বছরে উনি পেছিডেন ইলেকশন করতে পারলেন না কেন, তার ভালো কোন কারন দেখাইতে পারেন নাই উনি! দোশ দিছেন হজরত কাজি সাত্তারের কান্ধে! উনি কইতেছেন, কাজি সাত্তারকে দায়িত্ত দিছিলেন পলিটিকেল পাট্টিগুলার লগে আলাপ করতে, কিন্তু কাজি সাত্তার ঐটা না কইরা ক্যান্টনমেন্টে জাইতেন! বাকি উজিরেরাও, এমনকি পলিটিকেল পাট্টির লোকেরাও! উনি আরো জানাইতেছেন জে, উজিরেরা কেউ বা পলিটিকেল পাট্টিগুলাও ইলেকশন করার ব্যাপারে আগ্রহি আছিলো না আদৌ! এইখানে আবারো তাইলে দেখা জাইতেছে জে, ঐ দেড় বছরে আর্মি হেড জেনারেল জিয়া ঠেকাইয়া রাখে নাই ইলেকশন, বরং ছিভিল লোকেরাই ঠেকাইয়া রাখছিলো, বাকিটা কাজি সায়েমের দুর্বলতা, ডিছিশন নিতে না পারা!

বাংলাদেশের ইতিহাশ লইয়া জারা আলাপ করেন, তারা এই দেড় বছর হিশাবে রাখেন না তেমন, দেড় বছরকে দুয়েকদিন হিশাবে দেখতে থাকেন মনে হয়!

কিন্তু এই দেড় বছর লইয়া ভাবতে হবে আমাদের। কেন ঐ দেড় বছরে ছিভিল লোকেরাই ইলেকশন চাইতেছে না? এই পোশ্নের শোজা জবাব তো নাই, উল্টাইয়া ভাবতে পারি আমরা, তাতে জদি মেলে জবাব! মানে উল্টা পোশ্ন করি, তখন পেছিডেন ইলেকশন হইলে কে হইতো পেছিডেন?

তখন পেছিডেন হবার মতো পলিটিশিয়ান আছিলো মাত্র ২ জন–মাওলানা ভাশানি আর খন্দকার মোশতাক, শারা দেশের মানুশের কাছে পরিচিত আর কেউ নাই! এই দুইজনের ভিতর আবার মাওলানা শাবের বয়শ পেরায় ১০০, উনি মোটামুটি রিটায়ার্ড, পলিটিকেল মুরুব্বি হিশাবে দোয়া করেন, এস্টেটমেন্ট দেন; খন্দকার মোশতাক পেছিডেন হবার পরেও এস্টেটমেন্ট দিছেন–কয়েকবার হাতে পায়ে ধরার পরে, ৭ নভেম্বরের পরেও দিছেন।

তাই হজরত মোশতাকই আছিলেন পছিবল পেছিডেন! হজরত মোশতাকের শুবিধা হইলো, শেখ শাহেবের উজির থাকলেও শেই টাইরানির কালি তার গায়ে নাই, কিন্তু শারা দেশে ছড়ানো, মাত্র কিছুদিন আগে ছুইছাইড করা আওয়ামি লিগের পাট্টি নেটওয়ার্কের পুরা ফজিলত পাইবেন আলগোছে! শেখ শাহেব খুনের কালিও আছিলো না তখন, এখন জেই কালি দেখতে পাই আমরা, তা অনেক পরের মামলা, হজরত শেখ হাসিনারে হজরত জিয়া দেশে আইনা আওমি লিগেরে খাড়া হবার মওকা বানাইয়া দেবার পরে আওমি লিগ আস্তে আস্তে হজরত মোশতাকরে আকছে আমজনতার মনে।

কিন্তু দেশের পলিটিকেল এলিটরা হজরত মোশতাককে পেছিডেন হিশাবে চায় নাই একদমই, বা হজরত মোশতাকের বদলে সায়েম-জিয়া কাপলরেই বেশি লাইক করতেছিলো, ভাশানির দোয়াও আছিলো সায়েম-জিয়ার লগেই! এমনকি সায়েমও হজরত মোশতাকরে পেছিডেন দেখতে নারাজ আছিলো, উনি আদৌ পেছিডেন ইলেকশন ঘটাইতেই চায় নাই, ওনার আগ্রহ আছিলো পার্লামেন্ট ইলেকশনে! ওদিকে, পলিটিকেল এলিটরা বুঝতেছিলো জে, পার্লামেন্টারি ছিস্টেমটাই জেহেতু নাই, তাই পার্লামেন্ট ইলেকশনের খুব ফায়দাও নাই, কেননা, শকল খমতা পেছিডেনের হাতে আশলে! তার অর্থ খাড়ায় এমন, সায়েম পেছিডেন থাইকা তার নিচে একটা পার্লামেন্ট চাইতেছেন মাত্র!

৪.
পেছিডেন কাজি সায়েম তার কেতাবে গনতন্ত্রে ফেরার কথা কইছেন বারবার; দেশের লিবারালরাও এখন গনতন্ত্র চাইয়া থাকেন পেরায়ই। কিন্তু এই কথার অর্থ কি?

এই কথার শোজা অর্থ হইলো, তারা ভাবেন জে, শাশনের হক বা লেজিটিমেছি পাইতে জনতার কবুলিয়ত লাগবে, শেইটা পাওয়া জাবে কেবল ইলেকশনের ভিতর দিয়াই; ঐ কবুলিয়ত রিনিউ করতে হবে, মানে ৪/৫ বছর পরে পরে ইলেকশন হবে, ঐটার ভিতর দিয়া খারাপির শাজা/পানিশমেন্ট দিতে পারবে জনতা। আবার এইটা ঘটাবার পিরিকন্ডিশন হইলো, আইনের নজরে নাগরিকরা শমান হবে, নাগরিকের হক আছে কতগুলা, ঐগুলা তদারক করতে/মিটাইতে হবে রাশ্টের, জাত-রেছ-লিংগ-ধর্ম ভেদে বিচারের জুলুম ঘটবে না, রাশ্টের ব্যাপারে কথা কইতে দিতে হবে জনতারে, পলিটিকেল পাট্টি করতে পারবে নাগরিকরা, মজলিশ-মাফিলের ভিতর দিয়া জনমত গড়তে ক্যাম্পিং করতে পারবে। উল্টা দিকে, এইগুলা থিকা জতো দুরে জাইতে থাকবে শাশক, ততো বেশি টাইরানি চলতেছে শেই দেশে, শেই শাশক ততো বড়ো টাইরান্ট।

তাইলে আমরা একটা মিটারিং ছিস্টেম পাইতে পারতেছি এবং ঐটা দিয়া বিচারও করতে পারি। শামরিক শাশক হজরত জিয়ারে আমরা ঐ মিটারিং ছিস্টেম দিয়াই বিচার করার টেরাই করতেছি। এবং অলরেডি ১ নাম্বারে পাইলাম জে, উনি গায়ের জোরে দখল করেন নাই গদি। ভুগোলের এই দিকে ওনার টাইমে বা আগে পরে আরো কয়েকটা শামরিক শাশন আশছে, তারা শবাই গায়ের জোরেই দখল করছিলো। আমাদের ঐ মিটারিং ছিস্টেম দিয়া বিচারের লগে লগে এই এলাকার আর শব শামরিক শাশকের লগেও একটা তুলনা করা জাইতে পারে, তাতে শামরিক শাশকদের ভিতরও কোন ফারাক পাওয়া জায় কিনা, ঐটাও কিলিয়ার হবে। একটা তো আগেই পাইলাম জে, শামরিক শাশক ছিভিলও হইতে পারে, মিলিটারিও হইতে পারে। বাংলাদেশ বাদে এই এলাকার বাকি শামরিক শাশকেরা শবাই আর্মির লোকই, হজরত জিয়ার লগে ঐ ব্যাপারে মিল আছে বটে।

ঐ বাকিরা হইলেন, মায়ানমারের হজরত নে উইন, পাকিস্তানের হজরত আইউব খান আর হজরত জিয়াউল হক। হজরত ইয়াহিয়া খানরে টানতে চাই না, কারন, উনি ঠিক শাশনের টাইম পান নাই, আগাগোড়াই পুরা অশান্তি আর জুদ্ধে কাটছে ওনার, উনি অনেকটা কেয়ারটেকার গভমেন্ট টাইপের, জদিও ১০০% ফেল করছেন, কাজি শাহাবুদ্দিনের তুলনায়!

তো, গায়ের জোরের মামলা বাদে হজরত জিয়ার লগে ওনাদের আরেকটা তফাত লেজিটিমেছির আইডিয়ায়। ঐ ৩ জন লেজিটিমেছি লইয়া চিন্তা করার দরকার দেখেন নাই আদৌ, বা মিলিটারির হেড হিশাবে নিজেদের অটোমেটিকেলি লেজিটিমেট ভাবছেন, ছেরেফ কর্নেল হবার কারনেই তাহের জেমন ভাবতে পারছিলেন।

এদিকে হজরত জিয়া লেজিটিমেছি লইয়া ভাবতেছেন শুরু থিকাই, আর্মির হেড হওয়াতেই লেজিটিমেছির আলাপ খতম হইলো না ওনার বিবেচনায়, উনি দেশের জনতার কবুলিয়ত লইয়া মাথা ঘামাইলেন।

কি করলেন উনি? গনভোট। কিন্তু এই গনভোটটা খুবই খারাপ একটা ইলেকশন আছিলো আলবত; ময়দানে ঐ গনভোটের বিরোধিতা আছিলো না মোটামুটি, আদতে জিয়ারে এজাজত দেন নাই তখন, অমন পলিটিশিয়ান তেমন আছিলোই না! কেবল খন্দকার মোশতাক জিয়ারে খেদাইতে চাইতেছিলেন; হজরত জিয়া নিজে পেছিডেন ইলেকশনে কেন্ডিডেট হইতে চাইবার আগে অব্দি হজরত জিয়াতেই শকল পক্ষের ভরশা আছিলো, পচাত্তরের খুনিরা আর পয়লা শামরিক শাশক ছিভিলিয়ান মোশতাক বাদে! তবু ঐ গনভোটটা খারাপ হইছিলো, জতো % (৮৭) ভোট পড়ছে এবং হজরত জিয়ায় এজাজত দিছে জতো % (৯৭) ভোটার, ঐটারে শবাই অ্যাবনর্মাল ভাবছিলো, এমনকি হজরত জিয়া নিজেও শম্ভবত, অন্তত পরে ওনার কায়কারবারে আনইজি ফিল করাটা কিলিয়ার বোঝা জায়!

কিন্তু ঐটা কেমনে শম্ভব হইছিলো, শেইটা বোঝার দরকার আছে; ২০১৮ শালে জেমন পুলিশ-আমলাদের পাহারায় লিগের লোকেরা এবং পুলিশ আমলা মিলে লাইলাতুল ইলেকশন করছেন, তেমন কিছু কি হইছিলো? নাকি ১৯৮৮ শালের এরশাদ, নাকি ১৯৭৩ শালের শেখ শাহেবের মতো? আইউব খানের বেছিক ডেমোক্রেছির মতো?

এগুলার কোনটাই না। এরশাদ বা শেখ শাহেব বা ২০১৮ শালের মতো হবার উপায় আছিলো না, হজরত জিয়ার কোন পাট্টি আছিলো না তখন, পুলিশ-আমলাও রাইতে বাক্স ভরে নাই। আইউবের মতোও না কারন, ভোটার আছিলো শাবালক শবাই, আইউবের মতো ৮০ হাজার মেম্বার-চেয়ারম্যান না।

কিন্তু হজরত জিয়া আরেকটা কাম করছিলেন গনভোটের আগে। শামরিক শাশনের ভিতরেই লোকাল গভমেন্ট ইলেকশন করছিলেন; কিন্তু খেয়াল করার ব্যাপার হইলো, ঐটা ঠিক হজরত জিয়া করছিলো, এইটা কওয়া মুশকিল, ঐটা কাজি সায়েমের ইলেকশন এজেন্ডারে আগাইয়া নেওয়া আশলে–গনতন্ত্রে ফিরতে থাকা, পেছিডেন তখন কাজি সায়েমই, চিফ মার্শাল ‘ল এডমিনিস্ট্রেটরও। তারই ডেপুটি হজরত জিয়া। এই মেম্বার-চেয়ারম্যানেরাই ঐ গনভোটে বাড়াবাড়ি করছিলেন এবং ইমার্জেন্সি/মার্শাল ‘ল’র ভিতরে হবার কারনে তাদের বাধা দেবারো কেউ আছিলো না ময়দানে; বিরাট শার্থও আছিলো তাদের, তারা আগের পলিটিকেল ছিলছিলার বাইরের লোক বেশিরভাগ, একদল নয়া পলিটিকেল লোক, জারা ইমার্জেন্সির ভিতর গজাইছে, শকল পলিটিকেল পাট্টি ময়দানে গরহাজির থাকার মওকায়।

কিন্তু এইটা শাচ্চা জে, ওনারা ইলেকটেড, জনতার কবুলিয়ত পাইয়াই ওনারা মেম্বার-চেয়ারম্যান হইছেন, ঐ লোকাল গভমেন্ট ইলেকশনে নাগরিকেরা ভোট দিতে পারছিলো; পলিটিকেল পাট্টিগুলা নামে গরহাজির থাকলেও পার্ছোনালি জে কেউ ইলেকশন করতে পারছিলেন, করছিলেনও; হজরত জিয়া গনভোটে জনতার এজাজত না দেখাইতে পারলে তারা পুরানা পলিটিকেল পাট্টিগুলার হাতে নিজেদের খমতা আবার হারাইবেন, এই ডরে তারা গনভোটে ১০০% ঝাপাইয়া পড়ছেন, মানুশকে ঠেইলা ভোটের ছেন্টারে পাঠাইছেন, নিজেরা জেমনে পারছেন, ‘হা’ ভোটের বাক্স ভরছেন খুব শম্ভব।

আর জে শব শামরিক শাশকের নাম কইলাম উপরে, তারা অমন ইলেকশনও ঠিক না করলেও ঐ টাইপের জিনিশ করছেন, এরশাদ করছেন ১৯৮৫ শালে, আইউব খানের বেছিক ডেমোক্রেছির মেম্বার-চেয়ারম্যান ইলেকশনটাও ঐ টাইপেরই আছিলো; ছো, ঐটা শামরিক শাশকদের চেনা ফন্দিই, হজরত জিয়া ঐখানেই জদি থামতেন, তাইলে আইউব ক্যাটেগরির শামরিক শাশকই হইয়া থাকতেন আলবত! কিন্তু উনি ঐখানে থামেন নাই।

হজরত জিয়ারে পেছিডেন বানাইলেন কাজি সায়েম ১৯৭৭ শালের এপরিলের ২১ তারিখ, ৩০ তারিখে জিয়া দেশের শাশন বেশামরিক করতে ২১ দফা হাজির করলো জনতার দরবারে, ১ মাশ পরেই ৩০ মে আয়োজন করলো গনভোট। ওদিকে, এরশাদ গনভোট করছেন গদি দখলের ৩ বছর পর; খেয়াল করার ব্যাপার হইলো, আনলাইক জিয়া, হজরত এরশাদ একটা ইলেকটেড গভমেন্টকে গায়ের জোরে শরাইছেন, এবং দখলের পরে পরেই ১৯৮৩ শালে গনতন্ত্রের দাবিতে মিছিলে গুলি কইরা খুন শুরু কইরা দিছেন; ৩ বছর পরে দেশি-বিদেশি চাপে উনি গনভোট আয়োজন করছেন, কিন্তু জিয়ার উপর কোনই চাপ আছিলো না, না দেশে, না বিদেশি। জিয়া আছিলেন মোস্ট একছেপ্টেবল লোক! তাইলে উনি কেন গনভোট করলেন? কারন লেজিটিমেছি লইয়া ওনার ভাবনার কিছু শাচ্চা বেছিছ আছিলো, ব্যাপারটা পুরা দেশে-বিদেশে লোক দেখানি ফন্দি না, ঐটা আমরা বুঝবো তার পরের কায়কারবারে। হজরত জিয়ার গনভোটের আরেকটা মোটিভ আছিলো; উনি আর্মির ভিতর চাপে আছিলেন, কিন্তু জনতার কাছে ওয়াদা দিয়া রাখছেন শাশনকে বেশামরিক করার! তাই আর্মির চাপ শামাল দিতে জনতার ছাপোর্ট দরকার আছিলো তার, গনভোটে উনি শেইটাই কামাই করার ধান্দা করলেন! এইখানে আমাদের খেয়াল করা দরকার জে, ওনার মোটিভ এমনকি জদি ছেরেফ গদি আকড়াইয়া থাকাও হয়, তাতে কামিয়াব হইতেও ওনার ডেমোক্রেটিক না হইয়া উপায় নাই, ডেমোক্রেটিক না হইলে, জনতারে লগে না পাইলে আর্মিরে শামাল দিতে পারতেছেন না! তাই জিয়ার অতো তাড়াহুড়া, আর আইউব বা এরশাদের বেলায় তো আর্মিই খমতায়, তাদের এজেন্ডা আছিলো, জনতারে ঠেকাইয়া রাখা! এই পয়েন্টেই হয়তো পার্ছোনাল শততার শাচ্চা দামটা বোঝা জায়; ডেমোক্রেটিক না হইয়া জনতার বিপরিতে আর্মিরে পাওয়ারফুল কইরা জিয়ার লাভ নাই, পয়শাপাতি অন্ন শবাই মারবে, জৌন লিপ্সায় ভাশবে, তাতে জিয়ার কি লাভ, শে তো পয়শাও মারে না, বেশুমার বিলাশে মাতে না, আর জৌন ব্যাপারেও খালেদাতেই খুশি! এই দুই ব্যাপারে জিয়া শৎ না হইলে এরশাদ বা আইউব বা জিয়াউল হক বা নে উইনের মতোই শামরিক শাশক হইয়া থাকতেন খুব শম্ভব!

কিন্তু ঐ দুইটার বাইরে আরেকটা ব্যাপার আছে, খমতার বাশনা; হজরত জিয়ার ভিতর হয়তো শেখ শাহেবের মতোই খমতার বাশনা আছিলো, এবং এইটাও খুব কম খারাপ হবার শম্ভাবনা তৈয়ার করে না! জেমন শেখ শাহেবের পার্ছোনাল শততা বা ভোগ-বিলাশের ব্যাপারে খুব খারাপ কোন রেকর্ড পাওয়া জায় না, কিন্তু তাতে ওনার টাইরান্ট হওয়া আটকায় নাই! তাইলে জিয়া কেন টাইরান্ট হইতে পারবেন না? আলবত পারবেন, ১৯৮১ শালে খুন না হইলে ওনারে হয়তো শাচ্চা টাইরান্ট হিশাবেই পাইতাম আমরা! কিন্তু কেউ একজন জতোখন টাইরান্ট না, ততোখন টাইরান্ট বলা ঠিক হয় না! জেমন ধরেন, আমরা এখন একটা টাইরানিতে আছি, কিন্তু এই শেখ হাসিনাই ১৯৯৬-২০০০ টাইরান্ট আছিলেন না, তখনো শেখ শাহেবের বাকশালরে একটা পলিটিকেল ভুলই ভাবতেছেন, উনি টাইরান্ট হইয়া উঠলেন ২০১৪ থিকা, ২০১৩ শাল থিকাই শম্ভবত টাইরান্ট হবার ডিছিশন লইছেন উনি, বাকশালই ওনার পলিটিকেল দর্শন হইয়া উঠছে। ইতিহাশের কোন একটা জামানায় জা কিছু হবার কন্ডিশন হাজির থাকে তারে আরেকটু ভালো করতে পারে পার্ছোনাল শততা, এবং আরেকটু খারাপ কইরা তোলে শততার অভাব, ইতিহাশে শততা আর বেক্তির আছর এইটাই।

তো, হজরত জিয়া পেছিডেন হবার ১ মাশ পরে মে ৩০, ১৯৭৭, গনভোট আয়োজন করলেন; দেশের নাগরিকদের কাছে উনি জিগাইলেন জে, তার এবং তার কায়কারবারে নাগরিকদের ভরশা আছে কিনা। আমলা-পুলিশের উপর কি ভোট বাড়াইয়া দেখানো বা ‘হা’ ভোট বাড়াইয়া দেখাবার হুকুম দিছিলো জিয়া? আমি জানি না, ডাটা পাই নাই, এই ব্যাপারে রিছার্চ হওয়া উচিত, করতেও চাই আমি, দেশের শকল ইলেকশন লইয়াই রিছার্চ হওয়া দরকার, ইতিহাশের কুয়াশা শরাইয়া শত্ত হাজির করতে হবে আমাদের, একমাত্র শত্তই আমাদের মানবিক মায়া-পিরিতি-ঘেন্নার পাপ থিকা বাচাইতে পারে! তো গনভোটের ফলে একিন করে নাই কেউ, দেশে বিদেশে কথা হইতে থাকে এবং ব্যাপারটায় হজরত জিয়ার আনইজি লাগার কারন আছে। টালমাটাল আর্মির উল্টাদিকে তার লগে জে জনতা আছে, ওনার এই দাবি দুর্বল হইয়া পড়লো!

এর ভিতর আরেকটা পোবলেম লইয়া বেশ চিন্তাভাবনা বড়ো হইতে থাকে; ঐটা কাজি সায়েমের আমলেই শুরু হইছে, কিন্তু বেশামরিক শাশনে ফেরায় জিয়ার জেই ওয়াদা, ঐটার টাইমলাইন ঘনাইয়া আশতে আশতে শেই কেরাইছিছটা নাকের ডগায় আইশা পড়লো।

ঐ কেরাইছিছটা একদম শাশনের গোড়ার, কন্সটিটুশনাল–বেশামরিক করার বেলায় কার হাতে খমতা দেবে পেছিডেন? কন্সটিটুশন মোতাবেক পেরায় পুরা খমতাই পেছিডেনের হাতে (শেখ শাহেব চৌথা এমেন্ডমেন্ডের ভিতর দিয়া দেশকে পেছিডেন্সিয়াল বানাইছিলেন), তাইলে পার্লামেন্টের হাতে কেমনে খমতা দেবে? অথচ পলিটিকেল পাট্টিগুলা পার্লামেন্ট ইলেকশনই চাইতেছিল! কাজি সায়েমের লগে তার উজিরদের ঝামেলাটাও এই ব্যাপারেই হইছিলো! কাজি সায়েম পার্লামেন্ট ইলেকশনই করতে চাইতেছিলেন, কিন্তু তার উজিরেরা শেইটাতে গড়মশি করতেছিলো।

তারা কি জিয়ারেও একই কথা কইতেছিলো? এগুলা ইতিহাশের মিছিং লিংক, আমাদের ইতিহাশ বা পলিটিকেল একাডেমি এগুলা রিছার্চ করার টাইম পায় না! কিন্তু ভিতরের কাহিনি জেইটাই হৌক, আমরা জিয়ারে ইতিহাশের কাঠগড়ায় খাড়া করাইয়া বিচার করবো।

৫.

[পেছিডেন ইলেকশনে জিয়ারে কারা ছাপোর্ট দিছে দেখেন। জিয়া বনাম ওসমানি, দুই জনের ছাপোর্ট বেইজ হিশাবে লইয়া ভাবেন তো, কার জেতার কথা? লগে মাথায় রাখেন, রক্ষিবাহিনি, ৭৪’র আকাল, বেশুমার গুম-খুন, লুঠ, রিলিফ মাইরা খাবার অগুনতি জুলুম তো ভোলে নাই জনতা, শেই দলটাই এমনকি আছিল না, মাত্র পয়দা হইছে বাকশাল অশিকার কইরা, তারা কিন্তু ওসমানির লগে!
জনতা কারে ভোট দেবে?–মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকি’র বই থিকা ]

দেখা গেলো, জিয়া ১৯৭৮ শালের জুনে পেছিডেন ইলেকশন করতেছেন! এইটা কি জিয়া করতে পারেন? তাতে আইন, এখতিয়ার এবং জনতার কবুলিয়তের খেলাপ কতখানি ঘটে?

বুক কাভার

জনতার কবুলিয়ত পাবার তরেই পেছিডেন ইলেকশন করতেছেন জিয়া। আইন এবং এখতিয়ার? ইলেকশন দেবার এখতিয়ার পেছিডেন হিশাবে তার আছে, কিন্তু ওনার পেছিডেন হইয়া বশাটা জেহেতু ইলেকশনের ভিতর দিয়া হয় নাই, তাই ঐ এখতিয়ারে ভেজাল আছে! আমাদের তখন দেখতে হবে তখনকার ছিভিল ছোছাইটি, পলিটিকেল পাট্টি ইত্তাদি জিয়ার এখতিয়ারকে কেমনে বিচার করতেছে। ১৯৯১ শালে পেছিডেন শাহাবুদ্দিনের জদি এখতিয়ার থাকে, তাইলে হজরত জিয়ারও এখতিয়ার থাকার শম্ভাবনা আছে!

পেছিডেন শাহাবুদ্দিনের এখতিয়ার তখন হইছিলো পলিটিকেল পাট্টিগুলার কনছেন্সাছ, ছিভিল ছোছাইটির এজাজতের ভিতর দিয়া; শেই এজাজত হজরত জিয়াও শমানই পাইছিলেন! আবারো মনে করাইয়া দেই, ইলেকশনে নিজে কেন্ডিডেট হবার আগে হজরত জিয়ার এখতিয়ার/লেজিটিমেছির কোন ঝামেলা আছিলো না, এবং ছিভিলিয়ানদের ভিতর তার লেজিটিমেছির অভাবের কারনে না, আর্মির উল্টাদিকে তার লগে দেশের জনতা আছে, শেইটা দেখাইতেই ওনারে গনভোট করতে হইছিলো। ওনার ব্যাপারে আপত্তিটার শুরু পেছিডেন ইলেকশনে কেন্ডিডেট হওয়ায়, তার লগে পার্লামেন্ট ইলেকশনের আগে পেছিডেন ইলেকশন দেওয়ায়। ওদিকে, ওনার কাছেই জেহেতু পার্লামেন্ট ইলেকশন চাইতেছে পলিটিকেল পাট্টিগুলা, তার মানে ইলেকশন দিতে ওনার এখতিয়ার মাইনাই আছিলো পলিটিকেল পাট্টিগুলা।

এখন, হজরত জিয়ার পেছিডেন কেন্ডিডেট হবার ঘটনায় ঝামেলা বা আপত্তিগুলা কি কি? উনি আর্মির হেড, এইটাই বড়ো আপত্তি, এখনো জিয়ার ব্যাপারে এই আপত্তিটা আছে। এইটাতে আপত্তি করার কারন আছে, জদি কেউ আর্মির হেড থাকতে থাকতেই পেছিডেন ইলেকশন করে; তার বাইরে আপত্তিটা জাতপাতের মতো আপত্তি আশলে, তাই খারাপ, মানুশকে গোলামিতে আটকাইয়া রাখার পায়তারা! জদি মুচির পোলারে ভার্ছিটির মাশ্টার হইতে না আটকান, আটকানোটা খারাপ মানেন, তাইলে আর্মি বা আমলা বা কিশান বা জাইল্লা বা মেথরের পলিটিশিয়ান হবার হকও মানতে হবে, আটকানোটা খারাপ! এই জিনিশটা আজকের বাকশালিরা না বুঝলেও তখনকার পলিটিকেল পাট্টি বা ছিভিল ছোছাইটির লোকেরা বুঝছিলো, তাই হজরত জিয়ারে তারা কতগুলা শর্ত দিছিলো।

১৯৭৮ শালে জুনের ৩ তারিখ পেছিডেন ইলেকশন করেন জিয়া। পলিটিকেল পাট্টিগুলা এই ঘটনারে ভালো নজরে দ্যাখে নাই। তারা আশলে পার্লামেন্ট ইলেকশন চাইতেছিলো; সায়েমেরও পার্লামেন্ট ইলেকশন করার কথা আছিলো, জিয়ারও ইলেকশন দেবার কথা।

এইখানে খেয়াল করার ব্যাপার হইলো, বাংলাদেশে তখন পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেছি নাই কন্সটিটুশনে, শেখ শাহেব ঐটা বাতিল কইরা পেছিডেন্সিয়াল ছিস্টেম বানাইছিলেন। মোশতাক, সায়েম এবং জিয়া শেই কন্সটিটুশন মোতাবেকই পেছিডেন হইছেন। এবং শেই কন্সটিটুশন মোতাবেক পেরায় শকল খমতা পেছিডেনের হাতেই; তাইলে পার্লামেন্ট ইলেকশনের ফায়দা বোঝা মুশকিল! পেছিডেনের এতোই খমতা জে, শে চাইলে পার্লামেন্টই বাতিল করতে পারে এবং ১৯৭৫ শালের নভেম্বরে ঠিক তাই হইছে, ৬ নভেম্বর হজরত মোশতাক পার্লামেন্ট ভাইংগা দিছেন। পেছিডেন ইলেকশনের এলানও জারি করছিলেন মোশতাক, কিন্তু তার আগেই আর্মিতে খালেদ মোশাররফের হুলের ওক্তে কাজি সায়েমের হাতে খমতা দিয়া মোশতাক বিদায় হন।

তো, দেশের পেরায় শকল খমতা জার হাতে শে কেন ইলেকটেড হবে না, শেইটা বোঝা মুশকিল বটে! আন্দাজ করি, পলিটিকেল লিডাররা ভাবতেছিলেন, পার্লামেন্ট ইলেকশন কইরা চৌঠা এমেন্ডমেন্ট তারা বাতিল কইরা পার্লামেন্টারি ছিস্টেমে ফিরবেন! তাতে ৩ ভাগের ২ ভাগ এমপির ছাপোর্ট লাগবে, তা কেমনে হবে, শেইটা খুবই ঝাপশা আছিলো! ৯১ সালে হজরত খালেদা জিয়া জেমন করছেন, আওমি লিগের ছাপোর্টে, তেমন কোন উপায়ের কথাই হয়তো ভাবছিলেন তখনকার পলিটিকেল লিডাররা। এই ব্যাপারগুলা খুবই গোলমেলে, কন্সটিটুশনাল ঐ গিট্টুর ব্যাপারে তেমন আলাপই নাই! পার্লামেন্ট ইলেকশনের আগে হজরত জিয়া জে পেছিডেন ইলেকশন করলেন, এইটারে তাইলে কেমনে বিচার করবো আমরা? শুরুতেই আমাদের দেখা দরকার জে, কাজি সায়েম পার্লামেন্ট ইলেকশন দিতে চাইতেছেন, কিন্তু তার এডভাইজার/উজিরেরা (জিয়াও একজন উজির তার, উনি বাদে আরো ২৩ জন, তার ভিতর এয়ার এবং নেভির হেডও আছিলেন) ঐটা চাইতেছে না! তার মানে ময়দানে জিয়া হাজির হবার আগে থিকাই পার্লামেন্টারি ইলেকশন বা ছিস্টেম ঠেকাইতে চাইতেছে ছিভিল ছোছাইটির একটা অংশ! পোশ্ন হইলো, কেন?

আবারো, এগুলার ভালো কোন জবাব কোথাও নাই! তবে, আমরা বানাইতে পারি একটা জবাব! আপনারা ভাবেন, আমার হিশাবে জবাবটা মোটামুটি এমন:

পাকিস্তানে এবং বাংলাদেশ হবার পরে পার্লামেন্টারি ছিস্টেমের হালত ভালো আছিলো না। পাকিস্তানের পার্লামেন্টে এমপি খুনের ঘটনাও আছে। এবং দুইটাই পরে অটোক্রেসির দিকে গেছে; পাকিস্তান আমলে আইউব, বাংলাদেশে পাইলাম বাকশাল। এই ব্যাপারে নিচের টিপ্পনিতে আমার একটা পুরানা লেখা পাইবেন। iv

কিন্তু ইতিহাশের ব্যাপারে অতোটা ভাবনা-চিন্তা বাদেই কাজি সায়েমের ঐ এডভাইজার/উজিরদের আন্দাজ করি, একটা নগদ ভাবনা আছিলো। বাকশাল হবার পরে পলিটিকেল পাট্টি আছিলো না আর, লিগ খতম, লিগের নেতারা খুন হইছেন, দুইটা ভাগ হইয়া গেছে লিগ। তার বাইরে জাসদ এবং আর কিছু কমুনিস্ট দল আছে, মুছলিম লিগ আছে, ১৯৭৬ শালে হজরত মোশতাকও একটা দল বানাইছিলেন। দুয়েকটা ইছলামি দলও ময়দানে হাজির থাকার শম্ভাবনা। দেশের ছিভিল ছোছাইটি এদের হাতে দেশকে ছাড়তে চায় নাই আগের ছিস্টেমে। ৭২-৭৫ আওমি লিগের চুরি-ডাকাতি, ৭৩ ইলেকশনে ডাকাতি, ৭৪ শালের আকাল পলিটিশিয়ানদের উপর ছিভিল ছোছাইটির ভরশা মেছমার কইরা দিছে।

কিন্তু এখনকার ছিভিল ছোছাইটি জেমন পাবলিকরে ঘেন্না করে, বাকশালের অটো-খাদেম পরথম আলো-ডেইলি এস্টার গং, এদের মতো এন্টি-ডেমোক্রেটিক আছিলো না শেই ছিভিল ছোছাইটি! এইটা কইতেছি কারন, তখনো ইলেকশনে ভরশা আছিলো, দেশের মুছিবত হিশাবে তাদের ভাবনা আছিলো এমন জে, ঠিকঠাক ইলেকশন (৭৩) না হবার কারনেই, ইলেকশনে ডাকাতির কারনেই আগাইতে পারতেছে না দেশ! তার লগে আছে আগের পার্লামেন্টারি ছিস্টেমে রাশ্টের বাহিনিগুলা (পুলিশ-আমলা) থিকা আদালতের শরকারি দলের খাদেম হইয়া ওঠা এবং তার ফলে কোন একাউন্টেবিলিটি না থাকা, জনতার দরবার বইলাই কিছু না থাকা।

তারা তাই আমেরিকার ডেমোক্রেছির শম্ভাবনা বেশি দেখছে খুব শম্বব। ৭২ শালে ইনডিয়ার আধাখেচড়া নকল একটা গভমেন্ট জে বানানো হইছিলো, ঐখান থিকাও বাইরাইতে চাইছে। বাকশালের মতো একটা কমুনিস্ট ভাবের ভিতর দিয়া পেছিডেন্সিয়াল ছিস্টেম পয়দা হইলেও ঐটার ভিতরেই পার্লামেন্টারি ছিস্টেম থিকা বাইরাবার তাগিদ এবং শম্ভাবনা দুইটাই অটোমেটিক হাজির আছিলো। তারা তাই লোকাল গভমেন্ট ইলেকশন, পেছিডেন ইলেকশন, পার্লামেন্টারি ইলেকশনের ভিতর দিয়া খমতার একটা ভাগাভাগির টেরাই করছেন।

তো, পেছিডেন ইলেকশনের ডেট হইলো ৩ জুন ১৯৭৮। পার্লামেন্ট ইলেকশন পরের বছর, ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯। অপোজিশন তখন কতগুলা দাবি পেশ করে। রাশিদা খানম vনামের একজন তার কেতাবে জানাইতেছেন জে, অপোজিশনের দাবিগুলা আছিলো এমন:

১. মার্শাল ল তুলতে হবে, মানুশের বুনিয়াদি হক আদায় করতে হবে।
২. চৌঠা এমেন্ডমেন্ট বাতিল কইরা পার্লামেন্টারি ছিস্টেমে ফিরতে হবে।
৩. রাজবন্দিদের মুক্তি।
৪. পলিটিক্স করতে হইলে আর্মি ছাড়তে হবে জিয়ার।
৫. মিডিয়া/খবরের মুক্তি/আজাদি।

বুক কাভার

রাশিদা খানম জানাইতেছেন, এইগুলা পার্লামেন্টারি ইলেকশনের আগে পেশ করছিলো অপোজিশন; কিন্তু ওনার এই দাবির ঝামেলা হইলো, হজরত জিয়া আর্মি হেডের পোস্ট ছাড়ছেন অনেক আগেই, ১৯৭৮ শালের ২৮ এপ্রিল! এইখানে দুইটা মস্ত নালিশের ব্যাপারে দুই কথা কইতে হয়। নালিশ দুইটা এমন: আর্মি হেড থাইকা পেছিডেন ইলেকশন আর ক্যান্টনমেন্টে বিএনপির পয়দা হওয়া। দুইটাই মিছা কথা। ২৮/২৯ এপ্রিল ১৯৭৮ আর্মি হেডের পোস্ট এরশাদের হাতে ছাড়ার পরে ৩ জুন পেছিডেন ইলেকশন করছেন। আর বিএনপির পয়দাও আরো পরে ঘটনা, ১৯৭৮ শালের পয়লা ছেপ্টেম্বর।

তো, পেছিডেন ইলেকশন ঠিকঠাকই হইছিলো। এই ব্যাপারে জিয়ার পোরতি নালিশ করতে পারে আশলে খন্দকার মোশতাক, আর কেউ না! আজকে আওমি লিগ হজরত মোশতাকের কবরে জতোই থুথু মারুক, ১৯৭৫ শালে উনি আমজনতার কাছে হিরোই আছিলেন! এবং ঐ পেছিডেন ইলেকশনে হজরত মোশতাকই কেবল জিয়ার জয়কে রিস্কে ফেলতে পারতো, আর কেউ তেমন আছিলো না! শেই মোশতাককে সায়েম শরকার জেলে ঢুকায়, এবং তাতে সায়েমের ডেপুটি হিশাবে হজরত জিয়ার হাত থাকা খুবই শম্ভব! শরকার উৎখাতের মামলায় হজরত মোশতাকের ৫ বছর জেল হয়। ঐ মামলার পিছে শাচ্চা কোন ঘটনা আছিলো, নাকি বানোয়াট, বোঝা বা ডিছিশন লওয়া মুশকিল বটে। তবে শেখ শাহেবের জেই খুনিদের বিদেশে পাঠাইছিলো খালেদ মোশাররফ, তাদের লইয়া হজরত মোশতাক কিছু একটা করতে টেরাই করা শম্ভব; আর্মিতে পরে জে অনেকগুলা রিভল্ট হইছিলো, শেইটাও ঐ ইশারাই দেয় হয়তো!

হজরত মোশতাক জেলে থাকার ফলে শারা দেশে মানুশ চেনে এমন কেন্ডিডেট আছিলো ছেরেফ ২ জন–হজরত জিয়া আর হজরত ওসমানি। জিয়া জিতলেন ইলেকশনে। জেনারেল ইলেকশনে জিয়ার পেছিডেন হবার ঘটনটারে এখন জে আওমি লিগ নিন্দা করে, ঐটার পিছে ভালো কোন কারন তো নাই-ই, এমনকি ব্যাপারটার ভিতর একটা তামাশা আছে! মানে হজরত মোশতাকরে জদি তারা বেইমান ডাকে, তারে দেশের গদি থিকা দুরে রাখলো কে? হজরত জিয়া! আবার হজরত ওসমানি কে? হজরত মোশতাকের একজন উজির/ মন্ত্রি!

ওদিকে, ঐ পেছিডেন ইলেকশনটাই দেশের পয়লা মোটামুটি ভালো ইলেকশন! ভোট ডাকাতি দরকারও আছিলো না জিয়ার; দেশের লোকাল গভমেন্টগুলা হজরত জিয়ার লগে তো আছিলোই, আমজনতার ভিতরও জিয়া এমনই পপুলার আছিলেন জে, তার নাম লইয়া ১৯৮১ শালে সাত্তার ইলেকশনে হারাইছেন আওমি লিগের কেন্ডিডেট ড. কামাল হোসেনরে! এমনকি ১০ বছর পরেও বিএনপিরেই ভোট দিছে দেশের মানুশ!

হজরত জিয়া তখন কে আছিলেন, ঐটা বুঝতে পেছিডেন ইলেকশনে উনি কাদের কেন্ডিডেট, শেইটা দেখতে পারি আমরা; ছিভিল ছোছাইটির মস্ত মস্ত শরিক বাদেও জিয়ার ছাপোর্টে আছিলো ‘বাংলাদেশ শিডিউল কাস্ট ছোছাইটি’। এইটা মজার ব্যাপার; তখন শিডিউল কাস্ট বইলা একটা ব্যাপার আছিলো, আপার কাস্ট-বামুন হিন্দু আর আম হিন্দুর শার্থ জে জুদা, এইটা তখনো বোঝাবুঝির ভিতর আছিলো, পরে জেইটা হিন্দু-বৌদ্ধ-খিরিস্টানদের একটা এলিট ছোছাইটি হিশাবে ছেরেফ মাইনোরিটি পলিটিক্স কইরা আরবান হিন্দুর দেখভাল করে বাস্তবে! এইখানে আরেকটা কথাও কইয়া রাখতে চাই: ফজলুল হক, ছোরাবর্দি বা শেখ শাহেব আছিলেন আশরাফ মোছলমান, দেশের গড়পরতা মানুশের তুলনায় উচা, ৬ ফুট বইলা আওমি লিগ থিকা দেশের বেকুব আতেল বয়াতিরা শেখ শাহেবের বন্দেগি করে, এই এলিটিজমের তুলনায় হজরত জিয়া একজন গড়পরতা মোছলমান বাংগালি, গড়পরতা উচা, কালা, গায়েগতরে একদমই টিপিকেল বাংগালি, ঐ শিডিউল কাস্টেরই কেউ একজন জেনো বা মোছলমান হইছিলো, তারই পরের কোন ওয়ারিশ, একজন আতরাফ মোছলমান!

 

৬.
কিন্তু জিয়ার ব্যাপারে অন্তত ২ টা শাচ্চা নালিশ আছে, অন্তত ২ টা গলদ তার আছে। তার ভিতর একটা গলদ উতরাইতে পারলে হয়তো আরেকটা গলদ ঘটতেই পারতো না!

হজরত জিয়া দেশে একটা গুড গভর্নেন্স কায়েম করতে পারছিলেন কতকটা, কিন্তু শেইটা তার বানানো ছিস্টেমের ইফিসিয়েন্সি/মুন্সিয়ানা আছিলো না, বরং উনি জে মোটামুটি একজন ভালো লোক আছিলেন, শেইটা ফল! ওনার বানানো ছিস্টেমেও পেছিডেনের গদিতে একজন খারাপ লোক বশলেই গুড গভর্নেন্স আর থাকবে না এবং এরশাদের আমলে আমরা ঐটাই দেখছি আশলে!

বাকশালের পেছিডেনের খমতাই মোটামুটি বহাল রাখছিলেন হজরত জিয়া! কিন্তু ছিস্টেমের মুন্সিয়ানা পয়দা করতে দরকার আছিলো পার্লামেন্টের খমতা বাড়ানো, পেছিডেনের খমতা কমানো। তা উনি করেন নাই। আরো কয় বছর বাচলে করতেন কিনা, জানি না আমরা; কিন্তু আবারো, জা করেন নাই, তা করছেন ধইরা বেনিফিট অব ডাউট দেবার উপায় নাই।

পার্লামেন্টের হাতে খমতা দেবার উপায় হিশাবে ছেরেফ ৭০ নাম্বার দফা তুইলা দিলেই মস্ত ফল পাইতে পারতাম আমরা! তবে আরো অনেক কিছুই করবার আছিলো, আমেরিকার ছিস্টেমে আরেকটু নজর দিলেই ঐটা পাইতেন উনি!

বাস্তবে ঐটা করেন নাই উনি। এইটা হয় তখনকার জামানার লিমিট, ওনার লগে থাকা ছিভিল ছোছাইটির/আতেল-বয়াতিদের ভাবনা অথবা গনতন্ত্রে খোদ ওনারই ভরশার কমতি! বাকশালি ভাবনায় জেমন একটা কুইক ডিছিশনের ছিস্টেম বানাবার খায়েশ আছে, হজরত জিয়াও অমন কিছুই হয়তো ভাবতেন!

দুছরা গলদ হইলো পাহাড়ে; ঐখানে উনি আগের আওমি-বাকশালি পলিছিই বহাল রাখছিলেন খুব শম্ভব! পাহাড়ে জনশংহতি শেই ১৯৭৪ শালে পয়দা হইলেও জিয়ার টাইমে পাহাড়ে ভায়োলেন্স বাড়তে থাকে।

পাকিস্তান থিকা বাংলাদেশ হবার পোছেছের ভিতর দিয়া এমন একটা ভাবনা পয়দা হইলো জে, ১৯৭১ হইলো বাংগালির ঘটনা, বাংলাদেশটা ছেরেফ বাংগালির। রিলিজিয়াছ মেজরিটির ভিতর দিয়া মোছলমান বাংগালির নিশানা বেশি বেশি ভাইশা উঠলো, কিন্তু পাহাড়ের তুলনায় বিচার করলে তখনো বাংগালিই আশলে! এমনো ঘটনা আছে জে, ১৯৭১ শালের ফিরিডম ওয়ারে চাকমারা বাংলাদেশের পক্ষে জুদ্ধ করতে গেলেও আওমি লিগ তাদের লয় নাই, ফিরাইয়া দিছে!

বাস্তবের বাংলাদেশে অনেকগুলা জাতি আছিলো, আছে, অন্তত দেশের নাগরিকদের ভিতর কতগুলা ফারাক মানা দরকার আমাদের। পরিচয়ের ভিতর পরিচয় আছে; হিন্দু বাংগালির ভিতর জাতের মামলা আছে, বাংগালি মোছলমান আছে, বিহারি/উর্দুবুলির মোছলমান আছে, চাকমা-মারমা আছে পাহাড়ে, নিচে আছে মান্দি-শাওতাল, ওদিকে ইনডিয়ান বাংলা/বাংগালি আছে। এই ফারাকগুলারে একটা ঝামেলা ভাবছেন জিয়া, বা তখনকার জামানার ভাবনাই অমন আছিলো, মেজরিটির মেম্বার হিশাবে তখন হয়তো আমিও অমনই ভাবতাম–ঐটারেই কইলাম জামানার লিমিট।

ঐ ‘ঝামেলা’র ফয়ছালা করতে চাইছেন জিয়া, আওমি লিগের ফেছিস্ট দখলদার বাংগালি নেশনালিজম থিকা বাইরায়া সবাইরে শমান ইজ্জত দিতে ‘বাংলাদেশি’ নামে একটা জাতি বানাইতে চাইলেন উনি–জার্মান, ইংরাজ, আইরিশ, আরব, চাইনিজ জেমন আমেরিকান হইয়া উঠলো আটলান্টিকের ওপাড়ে। আরো পরে একাডেমিয়ায় জেই ‘ইমাজিনড কমুনিটি’ আইডিয়া গজাইলো, হজরত জিয়া শেইটারে কনশাছলি পেরাকটিছ করলেন!

ঝামেলা হইলো, অমন তদবির হুশিয়ার হইয়া না করলে ফারাকগুলা ছেরেফ লুকানো হয়, ফয়ছালা ঘটে না, মেজরিটির খমতা পর্দার নিচে ঢাকা পড়ে মাত্র, কমে না আদৌ, বরং আরো মোক্ষম হইয়া ওঠে! চুক্তি ছাড়া শান্তি নাই দুনিয়ায়, আর ঐটা চুক্তির শেই দরকারটাই লুকায়, ফলে শান্তি ঘটে না। আর জেইটা ঘটতে পারে, তা হইলো, বহু জুলুমের পরে ১০০% দখল হইয়া মেজরিটির দরিয়ার ভিতর অন্নের পরিচয় নুনের মতো গইলা জাওয়ার ভিতর দিয়া এক হবার শান্তি!

দরকারি ছিস্টেম বানাবার বদলে ভালো লোক হইলেই জে মামলা খতম হয় না, ঐটা বোঝার একটা মওকা হইছিলো জিয়ার! অন্নের লগে ফারাক মাইনা লইয়া চুক্তির ভিতর দিয়া শান্তিতে পৌছাবার দরকার মালুম হবার মতো ঘটনা পাহাড়ে ঘটছিলো তখন!

আমার এক তিরিপুরা ওস্তাদের কোন একটা লেখায় ঐটার ইশারা পাইছিলাম। ১৯৭৯ শালে পাহাড়ে বাংলাদেশ আর্মি নাকি পাহাড়ের লোকালদের ভাই-ভাই ডাকতো, দেখা হইলেই মোলায়েম হাশতো, হাত বাড়াইয়া হ্যান্ডশেক করতে চাইতো! পরে দেখা গেলো, আমার ঐ ওস্তাদের লগে হ্যান্ডশেক করতে চাইলো আর্মির এক জোয়ান, আমার ওস্তাদ রাজি হইলো না, আর তখন আর্মির জোয়ান খেইপা গেলো!

খমতার দেমাগ ছাড়া খ্যাপা জায় না, আপনে হাত বাড়াইলেও আমি হ্যান্ডশেক করতে নারাজ হইতে পারি, এবং এইটা না মানলে তো আপনে আমার পাওনা ইজ্জত দিলেন না আমারে! আপনের হাত বাড়ানো তাইলে বাহানা মাত্র, ছিডিউছ করার তদবির, বড়োর অহংকার শমান বহাল তখনো, মিলনের বাশনা নাই তাতে!

বড়োর ঐ দেমাগ/খমতা/অহংকারই হইলো জুলুমের মা, দরকারি ছিস্টেম বাদে তাই বড়োর জুলুম না ঘটতে বড়োকে এতোই ভালো হইতে হবে জে, শেইটা মানুশের নেচারাল খাছলত থিকা বহু উপরে! ঐটা মানুশের কাছে আশা করা জায় না, ঐটা এক আছমানি দরবেশের কাম! তাই ছিস্টেম দরকার। কিন্তু হজরত জিয়া শেইটা করেন নাই, বা ভাবেন নাই, বা করার জরুরত বোঝেন নাই, বা চান নাই! আমার হিশাবে ঐটা তার ভিতর বাংগালি নেশনালিজম গোপনে থাইকা জাবার আলামত!

 

৭.
কিন্তু হজরত জিয়ার ঐ গলদের পরেও এইটা কইতে হয় জে, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ছিস্টেমের ভিতরই আছিলাম তখন! ইলেকশন হইতো, মানুশের ভোট বা কবুলিয়তের দাম আছিলো, ইলেকটেড লোকেরা দেশ শাশন করতো, আমজনতার রাজিখুশির তোয়াক্কা করতে হইতো শাশকের। ঐটা কোনভাবেই আর্মির শাশন না, ছিভিলিয়ান হইয়া ওঠা হজরত জিয়ার সামরিক শাশনও না। আর্মির শাশন না বইলাই বারবার রিভল্ট ঘটতেছে আর্মিতে, এবং আর্মির হাতেই খুন হইতে হইছে জিয়ারে। এইটা বুঝতে পরের পেছিডেন সাত্তারের লগে আর্মি হেড এরশাদের টেনশনে নজর দিতে হবে আমাদের, এরশাদরে দিয়া আমরা আর্মির শামরিক শাশন জিনিশটা কতক বুঝতে পারবো!

এখন আমরা আর্মি হেডের কলাম বা ইন্টারভিউ দেখি না তেমন, কিন্তু শেই জামানায় ঐটা বেশ কমন আছিলো মনে হয়। রাশিদা খানমের কেতাবে এরশাদের অনেকগুলা ইন্টারভিউ’র খবর দেখতেছি। হজরত জিয়ার মরনের পরের ইন্টারভিউ-ই বেশি, কিন্তু অন্তত ১ টা কলাম/লেখা দেখলাম হজরত এরশাদের, জিন্দা জিয়ার পেছিডেন থাকার ওক্তের মাঝেই।

এইখানে খেয়াল করার ব্যাপার হইলো, ১৯৭৮ শালের এপ্রিল থিকাই, ইলেকটেড পেছিডেন হবার পরে তো বটেই, হজরত জিয়া আর আর্মিতে নাই, হজরত এরশাদ তখন আর্মির হেড। তাইলে জিয়া ইলেকটেড পেছিডেন থাকার দশায় আর্মির রিভল্ট মোকাবেলা এবং ফাশিগুলা আশলে হজরত এরশাদের এখতিয়ারের মামলাই বেশি! রিভল্ট কইরা ধরা খাইলে আর্মিতে ফাশি হবারই কথা, তখন তো বটেই, এখনো তেমন কোর্ট মার্শাল ঘটতে পারে; তবু হজরত জিয়া ঐ ঘটনাগুলায় কতটা জড়াইয়া আছিলেন, ঐটা বুঝতে হজরত এরশাদের লগে জিয়ার কতোটা খাতির আছিলো, ঐটা বোঝা দরকার। এরশাদের ঐ ইন্টারভিউ থিকা কিলিয়ার হয় জে, অতো খাতির আছিলো না!

ঐখানে এরশাদ দেশের পলিছি এবং ডিছিশন মেকিং পোছেছে আর্মিরে রাখার জরুরত দাবি করতেছেন! ওনার আলটিমেট দাবি আছিলো এমন–আর্মির রিভল্ট ঠেকাইতে ঐটা দরকার; দেশের ছিভিল এফেয়ারে আর্মিরে না রাখাটা তার মতে বাজে খরচ, আর্মির মতো টেরেইন্ড একটা ফোর্ছকে ইউজ না করাটা তার মতে ভুল এবং এলেমের ঘাটতির নিশানা, আনওয়াইজ! ওনার কয়েকটা কথা এমন:
“In to the national development effort for the optimum use of scarce resources…They [military] cannot be expected to remain aloof from the task of nation building in peace time when they are not otherwise committed… It would be a sheer waste to exclude this skilled and organized force which has the requisite potential.”

কিন্তু ওনার ঐ দাবি মোতাবেক কিছুই করে নাই হজরত জিয়া। ১৯৮১ শালে জিয়া খুনের পরে কাজি সাত্তার পেছিডেন হইলেন, তখন এরশাদ তারে পাইয়া বশলো! হজরত জিয়া জিন্দা থাকতে ঐটা পারে নাই; সাত্তারের আমলে জে পারলো, তার আরেকটা কারন জিয়ার মরনের পরে বিএনপির ঘরের ভিতর ঝামেলা হওয়া। বিএনপির ভিতর কয়েকটা ভাগ থাকায় সাত্তারের গভমেন্ট আছিলো দুর্বল এবং ঐটাই এরশাদের দরকারি মওকা বানাইয়া দিছে।

কেবিনেট মিটিং-এ হাজির থাইকা ঝাড়ি মারার ঘটনাও আছে দেখলাম! কইতেছেন, ‘বেশি ছাড় দিছি আমলে, অনেক ছবর করছি, আর না!’ এরশাদের চাপে কেবিনেট ভাইংগা নয়া কেবিনেট বানাইছেন কাজি সাত্তার। নেশনাল ছিকিউরিটি কাউন্সিল বানাইছেন; শেইখানে ছিভিলিয়ানদের রাখায় আপত্তি তুলছেন এরশাদ। তবু ১৯৮১ শালের পেছিডেন ইলেকশনে কাজি সাত্তারকে মদদ দিছেন হজরত এরশাদ, আওমি লিগ তখন বাকশাল লইয়া কথা কইতেছে। এরশাদ তখন বাকশাল ঠেকাইতে কাজি সাত্তারকে মদদ দিতেছেন আর তার দাবি হইলো, কন্সটিটুশন এমেন্ড করতে হবে। দেশের শাশন, পলিছি, ডিছিশন মেকিং পোছেছে আর্মিকে রাখার কন্সটিটুশনাল মওকা বানাইতে চাইতেছেন উনি [constitutionaly mandated more active role for Bangladesh military in national decision-making]। তার ভাবনায় খুব শম্ভব কাজি সাত্তারকে দিয়াই ঐটা শবচে শোজা হবে ভাবছিলেন! অমনটা চাইবার কারন এমন, ‘[to manage] grave and deep seated politico-military problem’।

এরশাদ কাজি সাত্তারের কাছে জা চাইতেছেন, আর্মিরে জেইখানে দেখতে চাইতেছেন, ঐটা তাইলে হজরত জিয়ার ওক্তে আছিলো না! মানে আর্মিরে লইয়া উনি গভমেন্টে ঢোকেন না, নিজে আর্মি থিকা বাইরায়া গেছেন এবং এরশাদের আর্মিরে ঠেকাইতে ঠেকাইতে খুন হইছেন।

জিয়া এবং এরশাদ, দুই জনেই আর্মির লোক আছিলেন, তাগো আগের আইউব খানের ছবক লইবার অপশন আছিলো ওনাদের শামনে; কিন্তু নগদ নজিরই আছিলো আশলে: পাকিস্তানের জিয়াউল হক আর মায়ানমার/বার্মার নে উইন। এনাদের থিকা ছবক লন নাই জিয়া, কিন্তু এরশাদ নিছেন। বার্মায় এখনো কন্সটিটুশনের ভিতর দিয়াই পলিটিক্স আর্মির হুকুমের গোলাম, পাকিস্তানে জিয়াউল হকও আর্মি দিয়াই শাশন করছেন। এরশাদ এমনকি জিয়াউল হকের মতো কয়েকটা জোনে ভাগ করছেন দেশকে, মার্শাল ল জাহির করতে; ধর্মের খেদমতে নামার ব্যাপারেও দুইজনের মিল আছে।

জিয়ার থিকা হজরত এরশাদ ঠিক কোথায় জুদা, তার আরেকটা নিশানা পাইবেন সায়েম-জিয়ার লগে সাত্তার-এরশাদের তুলনা করলে।

আমরা জদি ধইরাও লই জে, জিয়া এরশাদের মতোই গায়ের জোরে সায়েমরে খেদাইছেন, তারপরও দুইটা ঘটনা একই ওজনের হয় না। জনতার কবুলিয়তের হিশাবে সায়েম আর জিয়ায় তফাত নাই, দুইজনেই আমলা–একজন মিলিটারি, আরেকজন ছিভিল, পলিটিশিয়ান না কেউ, ইলেকটেডও না। আমরা আগে থিকাই শামরিক শাশনে আছিলাম, ছেরেফ শাশকের নাম পাল্টাইছে ঐ ঘটনায়, তার বাইরে দেশের পলিটিকেল হালতে কোন রদবদল নাই। কিন্তু কাজি সাত্তার তখন পলিটিশিয়ান, জনতার কবুলিয়ত তার লগে, ইলেকটেড পেছিডেন, তাই ১০০% লেজিটিমেট। এবং আমরা কোন শামরিক শাশনে আছিলাম না; জিয়ার ইলেকশনের আগে অপোজিশনের দাবি মোতাবেক মানুশের বুনিয়াদি হক আদায় করতেছে রাশ্টো, পলিটিক্স-মিডিয়া ওপেন, মার্শাল ল নাই, শকল দাবি অনেক আগেই মাইনা নিছেন হজরত জিয়া। হজরত এরশাদ তখন লেজিটিমেট-ইলেকটেড পেছিডেনরে খেদাইয়া দখল করলেন গদি (মার্চ ২৪, ১৯৮২), পলিটিক্স ব্যান করলেন, কন্সটিটুশন মুলতবি করলেন। আবার, জিয়া আছিলেন অলরেডি সায়েমের ডেপুটি, ফলে ঐটা আইনের ভিতর দিয়াই হইতে পারতেছে; কিন্তু এরশাদের বেলায় আইনের কোন মওকাই আছিলো না।

আলাপটা লেজিটিমেছির, এখতেয়ারের; এখনকার নয়া বাকশালের মতো উন্নয়নের গানে লেজিটিমেছি পয়দা হয় না, এরশাদও অমন গান গাইছেন; উন্নয়নের গান হইলো লেজিটিমেছি বা এখতিয়ারের আলাপ মুলতবি রাখার বাহানা মাত্র। এবং হজরত জিয়ার ব্যাপারে আরামেই লেজিটিমেছির আলাপ করা জায়, উন্নয়নের গানের বাহানা করতে হয় না। তবে উন্নয়নের ফিরিস্তি দিলেও হজরত জিয়া বহুত আগাইয়াই থাকেন!

লেজিটিমেছি বা এখতেয়ার দরকারি জিনিশ, নাইলে গুড গভর্নেন্স হাওয়া থিকা গজায় না। আবার শাশকের এখতিয়ার না থাকলে রাশ্টের হালত কেমন হয়, জনতার উপর জুলুম কেমন হয়, ঐটাও জিয়ার লগে এরশাদের তুলনায় কিলিয়ার হইতে পারে কতকটা! vi

১৯৮৩ শালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জনতার উপর এরশাদের পয়লা গুলি চলে। পলিটিক্স বন্ধ, শামরিক আইন বলবৎ, কথা বলতে মানা, নো মিছিল-মিটিং। তার ভিতরেই ছাত্ররা গনতন্ত্র চাইয়া মিছিল নামায় এবং এরশাদের পুলিশের গুলিতে ৫ জন ছাত্র মরে। পরের ৭ বছরের পুরাটাই এরশাদের জুলুম চলে, খুন-মামলা-মিছিলে গুলি চলতেই থাকে। কিন্তু পুরা জিয়ার আমলে দেশে তেমন কোন মুভমেন্টই হয় নাই! জনতার কবুলিয়ত চাওয়ায় আর মানুশকে রাজি-খুশি কইরা এজেন্ডা হাছিল করায় জিয়ার ইচ্ছা এবং মুন্সিয়ানা ঢাবির এক ঘটনায় ছাফ ছাফ বুঝবেন।

শামরিক শাশনের ভিতর জিয়া একবার ঢাবির টিএছছিতে ঢাবির মাশ্টারদের লগে মিটিং করতে গেছিলেন। শেই মিটিং-এ বক্তিমা দেওয়া এক মাশ্টার জানাইতেছেন, উনি কি কইবেন, কেমনে কইবেন, কতটা কইবেন–এগুলা লইয়া খুব ডরাইতেছিলেন। এর ভিতর টিএছছির সামনে ছাত্ররা লাইন দিয়া খাড়াইয়া কালা পতাকা, শামরিক শাশন বিরোধি ব্যানার দেখানো শুরু করছে। মাশ্টাররা ছাত্রদের থামাইতে চাইছে, কিন্তু ছাত্ররা নাছোড়বান্দা। মাশ্টাররা তাই আরো ডরাইতেছেন।

পরে অমন হালতেই চইলা আশলো জিয়া। তারপর মাশ্টারদের কাছে জিগাইলো বাইরের ছাত্রদের কথা। মাশ্টাররা তেমন কিছু কইতে পারতেছে না বা কইলো না; জিয়া তখন ছাত্রদের ভিতরে ডাকতে কইলেন, তাদের কথা মজলিশে পেশ করতে কইলেন।

তারপর মাশ্টাররা কইলো, ছাত্ররাও কইলো। ছাত্ররা মার্শাল ল তুইরা দেবার দাবি করলো, ডাকশু ইলেকশন চাইলো। শব শুইনা জিয়া ৬ মাশের ভিতর ডাকশু ইলেকশন দেবার ওয়াদা করলেন, মার্শাল ল তুইলা দেবার ওয়াদা করলেন। এবং উনি ওয়াদা রাখলেন, ৬ মাশের ভিতর ডাকশু ইলেকশন হইলো, তাদের জিয়ার কাছের কেউ জেতে নাই, ১৯৭৯ শালের শেই ইলেকশনেই জাসদ ছাত্রলিগের মান্না ডাকশুর ভিপি হইছিলেন। এবং শামরিক আইনও তুইলা দিছিলেন জিয়া।

গুড গভর্নেন্স আর গনতন্ত্রের এমন টেশ দেশের মানুশকে দিছিলেন জিয়া জে তার বউয়ের লিডারশিপে ১৯৯১ শালেও মানুশ বিএনপিরেই ভোট দিলো! আগের ১০ বছরে এরশাদের শকল তদবির আর আওমি পোপাগান্ডায় মানুশের মন আউলা হইলো না, জিয়ার মরনের ১০ বছর পরেও মানুশের ভরশার মালা পরতে পাইলো বিএনপি।

তো, দেশের ওয়েস্টার্ন লিবারাল লোকেরা (এনজিওতে মস্ত একটা দল আছে অমন), বামাচারিরা দেশের ইতিহাশ খেয়াল করে না ঠিকঠাক; তারা শামরিক শাশক কইলে বোঝে আর্মি, আর্মির লোক আছিলেন বইলা জিয়ারে তারা আইউব-এরশাদ-জিয়াউল হক-নে উইনের কাতারে ধইরা ভাবতে থাকে। ফারাক না বোঝার/না মানার কোন একটা ডিছিশন আছে মনে হয় এদের! দেশের পলিটিক্সের ব্যাপারে তাই বুঝদার কোন ফয়ছালা করতে পারেন না ওনারা, তাই নিজেদের বেখেয়ালে লিগ-বাকশালের কোলে বইশা থাকতেছেন, অথচ গনতন্ত্রই নাকি তাহাদের মনজিলে মাকছুদ! আফছোছ…

#রকমশাহেরবয়ান, ২৪ নভেম্বর ২০২২

**ফুটনোট**

১.
মুশতাক খানের সেমিনার/ওয়াজ শুরুর ঘন্টাখানেক পরে গেছিলাম আমি। বাংলা মোটরের গলির ভিতর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র নামের ইমারতের ৬ তলায় ১৫ জুলাই হইলো এইটা। দুই চার জন ভেন্যুটা চিনতেও পারেন। মুশতাক খানের এই ওয়াজটা আয়োজন করছিল সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিস বা সিবিএস। ভালো লাগলো, পুরাটা শুনতে না পারলেও আলাপটা ধরতে পারছিলাম মোটামুটি। মুশতাক খান তার ওয়াজের ৮০% কোলকাতাই বাংলায় করছিলেন, ১৯% দেশি কমন বাংলায়, বাকিটা ইংরাজিতে। তবু বুঝতে মুশকিল হয় নাই আমার, কোলকাতাই বাংলাটা আমি কইতে না পারলেও সংস্কৃত সন্ধি-সমাস-প্রত্যয় মোটামুটি জানা আছে আমার, ভোকাবুলারিও আছে–১৯ আর ২০ শতের শুরুর দিকের কোলকাতাই লিটারেচার ঘাটাঘাটি করছিলাম আগে, সেই কারণেই বুঝতে পারলাম আর কি! সেই কারণেই ‘প্রক্রিয়া’ বা ‘অধ্যয়ন’–একবার কইলেই বুঝি আমি, দেশের আমজনতার মাঝে এইসব শব্দ তেমন না থাকলেও! সব মানুষেরই দুয়েকটা ব্যাপারে মুন্সিয়ানা থাকে !
ইকোনমি, পলিটিক্স আর করাপশন লইয়া দামী সব কথা কইছেন প্রফেসর খান, পিসি-প্রজেক্টর ইউজ করায় বোঝার সুবিধা হইছে আরো। ওনার আলাপের দুইটা পয়েন্ট লইয়া কয়টা কথা কইতে চাই। এই পয়েন্ট দুইটায় আমার আপত্তি নাই আসলে, আমি স্রেফ আরেকটু কনটেক্সুয়ালাইজ করতে চাইতেছি।

ক. উনি কইতেছিলেন, মানে আমি যেমন অর্থ করলাম–বাংলাদেশের মতো দেশে কর্মীদের প্রোভাইড করার দায়িত্ব নিতে হয় পার্টির; কারণ, এসব দেশে মানুষ পলিটিক্স করে ক্লাসের সিড়ি বাইয়া উপ্রে ওঠার জন্য। তাই আমাদের বামপন্থিরা যেই ‘সততা’র পলিটিক্সে নিজেদের দেখাইতে চান সেইটা সাকসেসফুল হবে না। সাকসেসফুল হইতে কতগুলা করাপশনের দরকার আছে।

কথা ঠিকই। তাইলে অবশ্য ভারতের আম আদমী পার্টির সাকসেস বুঝতে একটু মুশকিল হইতে পারে! এইখানে কালচারাল স্টাডিজের কিছু ব্যাপার আইনা বোঝা যাইতে পারে। যেমন ধরেন আন্না হাজারের অনশন বা বলিউডের নায়ক বা রানঝানা বা রঙ দে বাসন্তি টাইপের কিছু সিনেমার লগে পলিটিক্যাল ভাইব্রেশনের রিলেশন লইয়া ভাবতে পারি আমরা…!

তা বাদে বাংলাদেশের কিছু নজির যদি উনি দেখাইতেন তাইলে মনে হয় আরো কনভিন্সিং হইতো ওনার কথা। আগেও এই ব্যাপারে লিখছিলাম আমি: ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারে থাকা আওয়ামী লীগ কিছু করাপশন করছিল, ভাসানি এইটাতে নিজেরে জড়ান নাই। তার ফল হইলো, পুরা আইউব রেজিমে সুবিধা পাওয়া সেই সব লোকের কারণেই আওয়ামী লীগ সার্ভাইভ করতে পারছিল। ভাসানি যে ন্যাপ বানাইছিলেন তারে হয়তো চীন প্রোভাইড করছিল, কিন্তু ইতিহাস কইতেছে, ভাসানি সাকসেসফুল হইতে পারেন নাই তার পলিটিক্সে!

ভাসানি লইয়া অবশ্য আরো কিছু ঝামেলা আছে! যুক্তফ্রন্ট সরকারের প্রাইম মিনিস্টার কেন সোহরাওয়ার্দী হইলেন? ভাসানি কি হইতে চাইছিলেন আদৌ? যদ্দূর জানি, সোহরাওয়ার্দীর নামটা ভাসানিই প্রস্তাব দিছিলেন। কেন?! আমার আন্দাজ, ভাসানি নিজেরে স্মার্ট ভাবতে পারেন নাই; এই স্মার্টনেস মানে আবার ইংরাজি জানা! ভাসানি কোলকাতাই বাংলাতেও কথা কইতেন না, এইটাও হয়তো তার কনফিডেন্স কমাইয়া দিছিল! আসামের বদলে কোলকাতায় পলিটিক্স করলে হয়তো আরেকটু কনফিডেন্ট হইতেন!

কিন্তু দেখেন, বামদের ভিতর জননেতা কেবল ভাসানিই হইতে পারছেন! এইটার লগে আমজনতার বাংলায় কথা কইবার একটা রিলেশন থাকতে পারে! আর কোন বাম নেতা আমজনতার বাংলায় কথা কন না! দেশের আমজনতার বাংলায় খেয়াল করলে দেখবেন, ‘বাম’ কথাটাই নেগেটিভ! ভাসানিও নিজেরে মনে হয় ‘বাম’ হিসাবে পরিচয় দিতেন না ঠিক! মুশতাক খান যেইটা কন নাই, দেশের বামেরা কেউই দেশের আমজনতার বাংলায় কথা কন না, এদের বাংলার তুলনায় লীগ-বিএনপির নেতারা বা ওয়াজ-মাহফিলের বাংলা লোকে বেশি বোঝে! আমার তাই ধারনা, দেশের বামেরা কর্মীদের প্রোভাইড করার দায়িত্ব নিতে রাজি হইলেও স্রেফ ওনাদের এই বাংলার কারণেই ওনারা আমজনতারে মার্ক্সবাদী পলিটিক্সে রিক্রুটই করতে পারবে না তেমন!

এনিওয়ে, উনি জিয়ার টাইমের কথাও টানতে পারতেন। জিয়ার পার্সোনাল করাপশনের কোন সাক্ষ্য-সাবুদ পাওয়া না গেলেও তার বিএনপি যেই পয়সা কামাই করছিল সেই কামাই দিয়াই তারা পরের এরশাদের লগে যায় নাই, বিএনপিরে টিকাইয়া রাখছিল এরাই!

খ. পলিসি আর করাপশনে লীগ আর বিএনপিরে ১৯/২০ তফাতের দল হিসাবে দাবি করলেন উনি। কে ১৯ আর কে ২০ সেই তর্কে না গেলেও দেখা গেল অডিয়েন্স প্রফেসর খানের এই দাবিকে মাইনা নিছে পুরা। আমিও মানি। কিন্তু আমাদের কিছু বাস্তব সওয়াল তুলতে হবে! বাম ঘরানার লোকেরা বা কোলকাতাই এলিটিস্ট কালচারাল মনের লোকেরা আওয়ামী লীগের লগে থাকতে/যাইতে পারলেও বিএনপির লগে কেন যাইতেই পারে না? কেন আওয়ামী লীগের লগে বড় জোর গোস্বা করে, আর বিএনপিতে নেসেসারি ঘেন্না?

মাঝে মাঝেই গোস্বা করা এই লোকগুলার রোগের একটা নাম দিছি আমি–তাজউদ্দিন সিনড্রোম! এইটার মানে হইলো, গোস্বা কইরা বইসা পড়া, চুপ মাইরা যাওয়া। লীগকে ছাড়তে রাজি না তারা, লীগের লোকসান হয় তেমন কিছুও করতে নারাজ! এদের সবচে বড়ো বিপ্লবী পজিশন হইলো, ভোটকেন্দ্রে না যাওয়া! বদলে বিএনপিরে যদি ভোট দেয় তাইলেই কিন্তু আওয়ামী লীগ আর গদিতে থাকতে পারে না! তা কিন্তু করবেন না তারা! এমনকি ওয়েস্ট বেঙ্গলের মমতার মতো কংগ্রেস ছাইড়া তৃণমূলের মতো একটা দলও বানাইবেন না! তাইলে লীগ-বিএনপি যে ১৯/২০, সেইটা আদৌ কি মানেন তারা! তবু কেন কন মাঝেমাঝেই? আর কেউ কইলে কেন তর্কে নামেন না!

//১৬ জুলাই, ২০১৭ #রকমশাহেরবয়ান

২.
বাংলাদেশি এমন অনেকরেই আপনারা চেনেন জারা ইউএছ-কানাডা-বৃটেন-জার্মানি-অশ্ট্রেলিয়া থাকে, ঐখানে তারা লিবারাল দলগুলারে ছাপোর্ট করে, ডেমোক্রেট বা লেবার ইত্যাদি, কিন্তু বাংলাদেশের পলিটিক্সে বাকশালি!…

বাংলাদেশের গদিতে ওঠা বড় দুইটা মোর্চা/দলের একটা তুলনা কইরা দেখেন তো, কোনটা কম লিবারাল? তুলনার শুবিধার জন্য শরকারি দলের লোকের কেরাইম (রেপ-খুন-পয়শা পাচার ইত্যাদি) রেট বিচার করতে পারেন, ফরেন পলিছির বেপারে কোন মোর্চা কতটা ছেজদা দিয়া থাকে বিদেশে, এইটাও ধরতে পারেন হিশাবে; তবে লগে আরো ৩টা পোশ্নের জবাব তালাশ করেন:

মানুশের হক
ইনছাফ
গোলামির মাত্রা

মোটামুটি ঠিকের কাছাকাছি কোন হিশাবর করতে পারলেও দেখবেন, শবগুলা পয়েন্টেই খারাপের দিক দিয়া বাকশালের ধারেকাছেও জাইতে পারে নাই অন্য মোর্চাটা! এই ৩টা পোশ্নের জবাবে পজিটিভ-নেগেটিভ তুলনা করতে পারলেই আলগোছে পাইয়া জাইবেন, কোনটা ঠিক কতোখানি লিবারাল! এই হিশাবে লিবারাল মানে পচ্চিমা শোনা কথা ‘ফ্রিডম অব এক্সপেরেশন’ বা জিডিপি ইত্যাদি কম কম রাইখা শমাজের শুখ, দুর্বলের ইনছাফ পাওয়া, রাশ্টের কাছে তাবত মাকলুকাতের হক আদায়, রাশ্টের চাকরদের শেবার মেজাজ-মান ইত্যাদির জোগফল হিশাবে ‘গুড গভর্নেন্স’ বিবেচনা করেন; কেননা, পচ্চিমা ঐ হিশাবগুলা ভুয়া, ফ্রিডম অব এক্সপেরেশন কোথাও নাই দুনিয়ার, বদলে আমাদের দেখতে হবে দুনিয়াবি খমতার দখলদারদের বেপারে জনতা কথা কইতে পারে কিনা, রাশ্টের দপ্তরগুলা জনতার খোলা নজরের নিচে শত্য কয় কিনা, জনতা শেইটা জাচাই করতে পারে কিনা।

এখন তাইলে হিশাব করেন, ঐ বাংলাদেশিরা বিদেশে অমন হবার পরে দেশে কেমনে বাকশালি হইয়া থাকতে পারেন? এইটা কি কেবল ছেলফিশ কোন হিশাব, নাকি তারা আশলে কোন লজিক দিয়া নিজেদের বিবেকের কাছে ছাফ থাইকাই এই ডিছিশন লইতে পারেন? বাংলাদেশের জন্য বাকশালই ছহি, এমন কোন নিতির ফয়ছালা কি নাই তাগো মনে?

এমন লোকজন দেইখা-শুইনা আমার আন্দাজ হইলো, এইটা তাগো হুশিয়ার ডিছিশন, ছেলফিশ হিশাবেও এমন না, বেহুশের না! তারা আশলে ‘পলিটিক্যাল ইভলুশন’ টাইপের একটা আইডিয়ার গোলাম! এই জিনিশটা বুঝতে আপনার কলোনিয়াল ইংরাজের শাশন একটু বুঝতে হবে!

কলোনিয়াল ইংরাজ ২০০ বছরে আমাদের চুইশা ছোবড়া বানাইছে শত্য, কিন্তু একই লগে ঐ শাশন একটা ‘ছিভিলাইজিং পোজেক্ট’। একজন বামুন মরলে তার ১৭ জন বুড়া-বাচ্চা-জুবতি বউরে ভাতারের চিতায় উঠাইয়া দেয় জেই শমাজ তারে ইংরাজের চাইতে ভালো কওয়া মহা মুশকিল! বাস্তবে এইটা আগে খুব না থাকলেও ইংরাজ বিবেকের কাছে তখনকার ইনডিয়ার মাইয়াদের দশা এমনই। একই টাইপের ভুল আছে জমিজমার বেপারেও; ইংরাজরা মোগল জামানায় জমির লগে কিশানের রিশতা ঠিক বোঝে নাই, তারা ঐটারে ধইরা লইছে ইউরোপের ফিউডাল লর্ড এবং জমি-গোলামের রিশতার আদলেই। মোটের উপর, শমাজের ইভলুশনের ধাপের হিশাবে হিমালয়ের এই দখিনা ভুবন ইংরাজের কাছে বড়জোর ইউরোপের ‘মিডল এইজ’–শহমরন ইংরাজের কাছে উইচ হান্টিং, শমাজ আলবত ধর্মের বিশথাবার নিচে, শাশকরা জালেম; এই ভুবনের মানুশ অশভ্য, এদের শভ্য করার খোদায়ি দায়িত্ব জেন বর্তাইছে ইংরাজের দয়াল কান্ধে! হিমালয়ের দখিনের এই ভুবন তাই শভ্য করায় মন দিছে ইংরাজ, বিটিশ আতেল জন স্টুয়ার্ট মিল আছিলেন শেই ছিভিলাইজিং পোজেক্টের একজন ছিপাহশালার।

ঐ ছিভিলাইজিং পোজেক্টটা হইলো এই ভুবনের জনতার দরকারেই জেন, তাইলে জারা ইংরাজ খেদাইতে চায়, তারা কারা? তারা কেবল ইংরাজের দুশমন না তো, ঐ আমজনতারও দুশমন, শয়তান, জনতারে শভ্য হইতে দিতে চায় না তারা, আলো আটকাইয়া দিতে চাওয়া ইবলিশ! ঐ ছিভিলাইজিং পোজেক্টের দরকারে এই ইবলিশদের খতম করা তখন জায়েজ হইয়া ওঠে, এমন শব খুনে বিবেক ময়লা হয় না। এই কারনেই ইংরাজি শেখা কলিকাতার বাবুরা, ইংরাজের ঐ হিস্টরিগেরাফের খাদেমেরা ১৮৫৭ শালের ছিপাইহুলকে রিঅ্যাকশনারি ভাবছে; ইংরাজের ইকোনমি ছিস্টেমেরই ফেনা কলিকাতা, কিন্তু তা বাদেও ঐ ছিভিলাইজিং পোজেক্টের গাহেক মন তেনাদের, তাই বিবেকের কোন দায় মালুম হয় নাই তাদের।

এদিকে, ঐ ছিভিলাইজিং পোজেক্ট চালাবার গোড়ার কথা তাইলে টর্চার, গায়ের জোরে বাধ্য করা। জনতার কবুলের তোয়াক্কা করে নাই ইংরাজ, করার দরকার নাই, শভ্য না হইলে, হুশ ঠিক না হইলে, তারে তো বাধ্য করা জায়, বাচ্চাদের জেমনে পালি আমরা! ইংরাজ তাই হেলথ ছিস্টেম থিকা খাজনা, শাশন, বিচার–শবই চালাইছে জনতার কবুলিয়ত না লইয়া, গায়ের জোরে; তাতে মদদ দিছে ছিভিলাইজিং পোজেক্টের নেটিভ খাদেমরা।

এখন, এই জে গাহেকরা, ঐ ছিভিলাইজিং পোজেক্টের এডুকেশন ছিস্টেম, তাতে পয়দা হওয়া এলেমই তো আজকের বাংলাদেশের শাশক, ঐ এলেমের বাছুরেরাই তো বিদেশে জাওয়া ঐ বাংলাদেশিরা! এই এলেমের গাহেকেরাই তো বিছিএছ দিয়া রাশ্টের চাকর হইছে, এই আমলারা তো ঐ ২৫০ বছরের আমলাতন্ত্রেরই খাদেম! এই খাদেমরা তাই বাকশালিই হবার কথা; বাকশালিরাও তেমনই এই দেশের জনতারে ভাবে বেকুব গাধা, তাদের পিটাইয়া মানুশ করার দায়িত্ব লইছে তারা, কয়জন বুড়ারে কান ধইরা ওঠবশ করানো ছেরেফ ঐ ছিভিলাইজিং পোজেক্টেরই জারি থাকা, গায়ের জোরে শভ্য করা, শভ্য হইতে বাধ্য করা! এই জনতার এখনো কবুলিয়ত দেবার এলেম হয় নাই জেন, বাকশাল তাগো শভ্য বানাইয়া উঠুক আগে, পরে তাদের কবুলিয়তের শাশন দেওয়া জাবে।
এই বাকশালি চিন্তায় আমরা জারা জনতার কবুলিয়তের শাশন চাই, জনতার ভোটের ইলেকশন চাই, তারা এদের কাছে কেবল বাকশালের দুশমন না, এই জনতারও দুশমন!

এই জে এডুকেটেড লোকগুলা, শারা জাহানেই, এনারা এই ভুলগুলা করতে থাকেন, ওদিকের লিবারাল লোকটাই এদিকে বাকশালি। এর পিছে শমাজের ইভলুশনের ঐ ভুল আইডিয়া বাদেও খোদ ভোট-ইলেকশন-গনতন্ত্র লইয়াও খুব ভুল ভুল ভাবনা লইয়া থাকেন! আমেরিকার ইলেকশনকে উচা দাম দেওয়া লিবারালরাই আফগানিস্তানে হামলারে জায়েজ ভাবেন, বাংলাদেশের বাকশালরে ছাপোর্ট দিতে চিন্তার কোন মুশকিলে পড়েন না! ইদানিং অবশ্য অনেকেই ইলেকশনও ডিনাই করা শুরু করছেন, পপুলিজমের শাশনের ডরে!

এনাদের ভুলটা হইলো, এনারা ভাবতেছেন, গনতন্ত্র মানে মেজরিটির শাশন! আশলে তা তো না, শাশক শব শময়ই কিছু লোক, জনতা কেবল একটা টার্মের জন্য শাশকরে কবুল করে। এই কারনেই এরে আমি কই কবুলিয়তের শাশন। এনারা জদি জনতার এই কবুল করা বা না করার বেপারটা ঠিকঠাক দেখতে পাইতেন ইলেকশনের ভিতর, তাইলে দুনিয়ার কোথাও বাকশালে ছাপোর্ট দিতে পারতেন না! কেননা, তারা কবুলের বাইরে গায়ের জোরের ছেক্সকে ঠিকই রেপ হিশাবে বুঝতে-মানতে পারতেছেন! বাচ্চাদের পালনের বেপারেও তারা পিটানিরে ডিনাই করতে পারতেছেন, পশুদের বেপারে নিঠুরিয়া টিরিটমেন্ট বা কুরুয়েল্টি ডিনাই করতেছেন, অন্য শবখানে কবুলের দাম দিতে পারতেছেন, কেবল শাশনের বেপারেই পারতেছেন না, বাকশালি থাকতেছেন! ইলেকশনের ভিতর জনতার কবুলিয়ত–কবুল করা বা না করা দেখতে পাইলে এমনকি অশভ্য মানুশের কবুলেরো দাম দিতেন আলবত! পশু হিশাবে দেখলেও তো বাকশালি জুলুমের পক্ষে খাড়াইতে পারতেন না…

//৩০ মার্চ ২০২০ #রকমশাহেরবয়ান

৩. At Bangabhaban: Last Phase, কাজি সায়েম, ১৯৮৮

৪.
বিটিশ মনার্কি লইয়া খুবই আলাদা একটা কারনে ভাবা দরকার আমাদের। শেইটা হইলো, পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেছি। এই ব্যাপারে বেশুমার পড়া দরকার, তবু পেরাইমারি কিছু ভাবনা জানাই, এফোর্ড করতে পারেন, জদি ভাবনা আর লেখার কোন ফুশলানি পান, শেই আশায় খুবই ভাশা ভাশা কয়টা কথা কইতেছি!

ফর্মার বিটিশ কলোনিগুলায় পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেছি চলতেছে মোটামুটি, কিন্তু
আমেরিকা বিটিশ কলোনি থাকলেও ঐখানে পেছিডেন্সিয়াল ডেমোক্রেছি কেন?

কারন, বিটিশদের জুদ্ধ কইরা খেদাইছে আমেরিকা। ইনডিয়া বা পাকিস্তান জুদ্ধ কইরা খেদায় নাই, এগুলায় আমরা পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেছি পাইতেছি। অথচ আমেরিকার ভাশাও ইংরাজি, তবু তারা পার্লামেন্টারি ছিস্টেম লয় নাই!

ইনডিয়া-পাকিস্তানে মনার্ক নাই, কিন্তু আশলে মনার্ক থাকবে, শেইটা ধইরাই পার্লামেন্টারি ছিস্টেম পয়দা হইছে এবং মনার্ক না থাকায় এইগুলা ইনহেরেন্টলি খোড়া পার্লামেন্টারি ছিস্টেম!
ইনডিয়া বা বাংলাদেশ মনার্কের জাগাটা ফিলাপ করতে একজন বেহুদা পেছিডেন বানাইছে! ফর্মালি বিরিটেনের রানি/রাজার তেমন কোন খমতা নাই, কিন্তু খমতা জে আশলে কতটা, ঐটা ইনডিয়া বা বাংলাদেশের এখনকার পেছিডেনের খমতার লগে একটা তুলনা কইরা বুঝতে পারবেন।

কমনওয়েলথের শবগুলা রাশ্ট্রো লইয়াই একটা কম্পারেটিভ আলাপ দরকার, ঐ টাইম দিতে পারতেছি না আমি, শেই কারনেই আপনাদের দাওয়াত দিতেছি।

বিটিশ মনার্কের লগে বিটিশ নাগরিকদের একটা রিশতা আছে, বহু অকেশনে তাগো লেনাদেনা হয়; তাগো হাতে কোন ফর্মাল পাওয়ার না থাকায় বিটিশ মনার্কের লগে নাগরিকদের তেমন কোন টেনশন হবারো কারন থাকে না। কিন্তু নাগরিকদের লগে ঐ রিশতার কারনে গভমেন্টের লগে মনার্কের একটা পাওয়ার ডিনামিক্স পয়দা হয়, জেইটা কখনো মেনিফেস্টেড হয় না, কিন্তু আছে, কখনো তেমন দরকার হইলে বিটিশ মনার্ক জদি জনতারে ডাকে, জনতা শাড়া দেবে; আবার বিটিশ মনার্কের লগে বেয়াদবি করলে ইলেকশনে হারবে চলতি গভমেন্ট; উল্টাদিকে, মনার্ক কোথাও বেহুদা নাক গলাইলে জনতার লগে তার আদবের রিশতাটা থাকবে না।

এই মনার্কের লগে বাংলাদেশের পেছিডেনের তুলনা করেন। বাংলাদেশের পেছিডেনের কিছুই নাই, বাংলাদেশের পেছিডেন আশলে উজিরে আজমের নিচে পুচকে একটা চাকরি করতেছেন জেন! এই পেছিডেনের লগে জনতার কোন রিশতা না থাকায় এনার কাছে বিটিশ মনার্কের পাটে অভিনয় আশা করার উপায় নাই।

তাইলে কি খাড়াইলো? বাংলাদেশের পার্রামেন্টারি ছিস্টেম একজন মনার্ক উপরে আছেন, থাকবেন, এইটা আশা কইরা বানানো, বিটিশ ছিস্টেমের নকল কইরা, কিন্তু বাস্তবে মনার্ক নাই। এইটাই উজিরে আজমের হাতে একটা মওকা তুইলা দেয়, বাংলাদেশের উজিরে আজম জে টাইরান্ট হইয়া ওঠেন, তার পিছে ঐ মওকা একটা বিরাট ফুশলানি!

আর শব দেশে কি হয়? পাকিস্তানে দেখেন, উজিরে আজমের উপরে মনার্ক নাই, কিন্তু উজিরে আজম শেই মওকার ফায়দা লুটতে পারে নাই; কিন্তু একটা শুন্ন জে পয়দা হইছে, শেইখানে আর্মি ঢুইকা পড়ছে। একই টাইপের মওকা পাইয়া মায়ানমারে আর্মি পার্মানেন্ট হইছে। বাংলাদেশেও ঐটা টেরাই করছেন হজরত এরশাদ, পেছিডেন সাত্তারের লগে এরশাদের টেনশনের গোড়ায় আছিলো, আর্মিরে কন্সটিটুশনাল পাওয়া দেওয়া। ইনডিয়ারে দেইখা মনে হইতে পারে জে, পার্লামেন্টারি ছিস্টেম তো কাম করতেছে ঐখানে! না; ইন্দিরার ইমার্জেন্সি ঐ শুন্নের মওকায় ঘটছে। আবার ইনডিয়ায় এস্টেট এবং ছেন্টারের একটা ডায়ালেকটিক্স আছে, ঐ ডায়ালেকটিক্স বিরিটেনের উজিরে আজম এবং মনার্কের ডায়ালেক্টিক্সের পাটে অভিনয় করতেছে। এবং ঐটা জে কাফি না, শেইটা এখন কিলিয়ার হইতেছে জখন এস্টেটগুলা এবং ছেন্টার, ঐ ডায়ালেক্টিক্সের দুই পাশই বিজেপি দখলে নিতে পারতেছে। দরকারি ঐ ডায়ালেক্টিক্স না থাকলে ছো কল্ড ইনডিপেন্ডেন্ট জুডিশিয়ারি বা ইলেকশন কমিশন জে আশলে কতো বেহুদা, শেইটা এখন কিলিয়ার হইতেছে ইনডিয়ায়।

ছো, কইতেছি জে, পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেছির মডেলটাই আশলে একজন মনার্কের জায়গা রাইখাই পয়দা হইছে, উজিরে আজম বা ‘পেরাইম মিনিস্টার’ পদের নামের ভিতরেই ঐটা দেখা জাইতেছে। বিটিশ রানির মরনে বাংলাদেশের ৩ দিনের মর্নিং-এর গোড়া হয়তো খোদ ঐ মডেলটাই!

কানাডা-অশ্টেলিয়ায় বিটিশ মনার্ক এখনো আছেন; তার বাইরেও এই দুই রাশ্টো খুব শম্ভব তাদের মুছাবিদা বা কন্সটিটুশনে পার্লামেন্টারি ছিস্টেমের ঐ গলদটা এড্রেছ করছে, পড়তে হবে তাগো মুছাবিদা। পইড়েন আপনারাও।

আমেরিকা ১৭৭৬ শালে বিটিশদের খেদাইয়া দিছে এবং তারা পার্লামেন্টারি ছিস্টেম বানায় নাই। মনার্ক খেদাইয়া দেওয়ায় তারা শুন্ন জায়গাটা হয়তো তখন তখনই বুঝতে পারছিলো, আবার তাগো হেড অব এস্টেট জেন মনার্ক হইতে না পারে, শেই টেনশনও আছিলো। তাই আমরা পেছিডেন পাইতেছি পয়লা! তার লগে আবার ছিনেট, কংগেরেছ, কাউন্টি, ছিটি কর্পোরেশন, নাগরিকদের হতে বন্দুক রাখা ইত্তাদি বানাইছে জাতে পেছিডেন পাওয়ারের একটা নেছেছারি ডায়ালেক্টিক্সের ভিতর থাকতে বাদ্ধ হয়! খেয়াল করলে দেখবেন, ফেরান্সে ১৭৮৯ শালে মনার্কি খেদাবার পরে নেপোলিয়নরে পাইলো, আরেকটা মনার্কিই, আখেরে তাই ওরাও আমেরিকার পলিটিকেল ছিস্টেম নকল কইরা পেছিডেনই বানাইলো।

এই পার্লামেন্টারি ছিস্টেম তাই খারাপ, ছেরেফ বিরিটেনেই ঐটা চলতে পারে, দুনিয়ার আর কোন দেশে ঐটা আখেরে খারাপ কিছুই ঘটাবে। এখনো জেইখানে ঘটাইতেছে না, তা আশলে কতগুলা মেরামতের ফল; কিন্তু ঐ মডেলের গোড়ার মর্ম জতোদিন থাকবে, ততদিন ঝুকিটা থাকবেই। বাংলাদেশে এখন রাশ্টের মুছাবিদা মেরামতের তোড়জোর করতেছে কেউ কেউ, আলাপ করতেছে, কিন্তু ওনারা গোড়ার এই ঝামেলাটা মালুম করতে পারতেছে না! ওনারা এই মডেলটার ভিতরেই একটা ডিছেন্ট্রালাইজেশনের রাস্তা তালাশ করতেছে হয়তো (কংক্রিট কোন পোস্তাবই এমনিতে বাইরায় নাই ওনাদের থিকা, ছেরেফ বাকোয়াজি!)। এই জায়গাটা কিলিয়ার হওয়া খুবই দরকারি, আমাদের বোঝাবুঝির ভিতরে এইটা থাকলে ১৯৯১ শালে হয়তো পার্লামেন্টারি ছিস্টেমের গাড্ডায় আবার পড়তাম না আমরা! আমাদের তখন দরকার আছিলো, পার্লামেন্টের হাতে আধা খমতা রাইখা পপুলার ভোটে একজন পেছিডেন ইলেক্ট করা, বিটিশ মনার্কের গায়েবি খালি চেয়ারটা ঠিকঠাক বোঝা এবং তারে লাত্থি মাইরা ফালাইয়া দিয়া পরের টাইরানি ঠেকানো…

১০-১১ ছেপ্টেম্বর ২০২২ #রকমশাহেরবয়ান

৫.

এনার বইটা মজার। ডাটা ওনারে নিতে চাইতেছে একদিকে, আর আগেই ডিছিশন লইয়া থাকায় উনি ডাটার উল্টাদিকে হাইটা আগের ডিছিশনটাই বহাল রাখতেছেন! কিন্তু ডাটার বড়ো অভাব, ওনার কেতাবে কতগুলা ডাটা পাইছি, তাই শুকরিয়া জানাইতে হয়। “The Nature of Legitimacy & The Crisis of Bangladesh Politics 1972-1990, A H Development Publishing House, 2008”

৬.
বাংলাদেশের পেসিডেন হইতে চাইছেন এরশাদ। ভালো ব্যাপার; বাসনা থাকা উচিত মানুষের, আপনের যদি কোন এম্বিশন বা খায়েশ না থাকে, তাইলে আপনে তো পেরায় জিন্দা লোক, পুরা জিন্দা কই কেমনে! আমাদের সবারই খায়েশ থাকা উচিত।

পোশ্ন হইলো, আপনের তো হালাল পেসিডেন হইতে হবে বা লেজিটিমেসি থাকতে হবে; তো, হালাল পেসিডেন হবার উপায় কি? এরশাদ কেমন পেসিডেন হইছিলেন?

পেসিডেন হিসাবে লেজিটিমেসি আছে কিনা বা হালাল পেসিডেন কিনা, সেইটা জানার উপায় হইলো–জনতা তারে কবুল করলো কিনা!

না, জনতা তারে কবুল করে নাই, উনি গায়ের জোরে গদিতে বইছেন, দেশের মানুষ ওনারে কবুল করলো কি না, তাতে তোয়াক্কা করেন নাই, ১৯৭৩ বা ২০১৮ সালের মতো ইলেকশন দিছেন দুইটা, ভোট দেবার ভিতর দিয়া কবুল করা বা না করার মওকা পায় নাই জনতা। ডাকাইতেরা মালিকের কবুলের তোয়াক্কা করে না।

ধরেন, এক লোক দিনের বেলা রাস্তার কাঁটা সাফ করছে–তুলে নিয়ে রাস্তার পাশে রাখছে বা এক জায়গায় করে আগুন দিল; আপনে ভাবলেন ঈমানদার লোক, মানুষের কেমন উপকার করছে–সমাজসেবক। সেই লোকের লিডারশিপে একটা দল রাতের বেলায় দেখলেন আপনের বাসায় ডাকাতি করতে আসছে; আপনে তখন বুঝলেন–পালাইতে হইলে যেন রাস্তার কাঁটার কারণে ধরা না পড়ে সেইটা এনশিওর করতেই দিনের বেলায় পালাবার রাস্তার কাঁটা সরাইছিল ওই লোক। তখনো কি আপনে রাস্তার কাঁটা সরানোটারে ঈমানের অঙ্গ ভাবছেন?

তাইলে শাসকের কামের বিচারের আগের বিচার হইলো লেজিটিমেসির বিচার, জনতার কবুল করা না করার হিসাব। লেজিটিমেসি, ভাইঙ্গা কইলে কইতে পারি, জনতার কবুল বা কনসেন্ট কেন চিন্তার ১ নম্বরে রাখা দরকার? আফসোসের ব্যাপার হইলো, দেশের আতেলদেরো কনসেন্টের দাম বুঝাইতে হয়, তর্ক করা লাগে! অথচ দেখেন, স্রেফ কবুল বা কনসেন্টের অভাবে একটা প্রোবাবল ইন্টারকোর্স কেমনে রেপ হইয়া ওঠে!

কিন্তু রেপ তো হাজার কয় ভিকটিমের জিন্দেগির মামলা, শাসনে জনতার কবুলের অভাব কোটি কোটি মানুষের জিন্দেগি এবং তাবত দেশের কালচারের গোড়ায় রদবদলের মামলা! আখেরে এইটা কালচারে এমন রদবদল ঘটায় যেইটা অন্যের কবুল চাওয়া, অন্যরে রাজি করাবার দরকারটাই আস্তে আস্তে নাই কইরা দেয়; গায়ের জোরের ইজ্জত বাড়ে এবং তাতে রেপসহ জুলুম বাড়তে থাকে সমাজে! যেই সমাজ কবুলের বদলে গায়ের জোরের ডাকাতির সিস্টেমে চলে, সেই সমাজে জুলুম বাড়বেই; একের তুলনায় দশের গায়ের জোর বেশি বইলা সেই সমাজে মানুষ গ্যাঙ বানাইতে থাকে, মব-লিঞ্চিং এবং গ্যাঙ-রেপ সমাজের এমন দশারই ফেনা মাত্র! ভিতর তুমুল সাবান রাইখা কেমনে আপনে ফেনা থামাইবেন!?

কিন্তু শাসনে কবুলের তোয়াক্কা না করার, ভোট না থাকার আরো অনেক ডাইমেনশন আছে, এরশাদের শাসন বিচার করলে সেইটা সাফ সাফ বোঝা সোজা। এই রেজিমের বিচারেও বুঝবেন, বিচার করেন, কিন্তু এরশাদে শুরু করা ভালো; কারণ, এই রেজিমের খাসলত অথবা ফর্মুলা এরশাদের রেজিমেই পয়দা হইছে! তার আগে ৭২-৭৫ আমলে এরশাদ বা এই রেজিমের অনেকগুলা লক্ষণ থাকলেও সেইগুলা টাইমের অভাবে পোক্ত হইতে পারে নাই; তার উপর সেই আমলের পাট্টি অনেক বড়ো আছিল, সমাজ পুরা পাট্টির কবজায় থাকলেও সরকারের বাইরেও রাষ্ট্র এবং তার অনেকগুলা হাত-পা আছিল, সেইসব হাত-পা অনেক কিছু করে নাই জনতার পক্ষে, কিন্তু পাট্টি নিজেই রাষ্ট্রের হাত-পা’কে সরকারের/পাট্টির হাত-পা বানানোতে দেখছে খতি–হুদাই ভাগ দিতে হবে, অথচ ঐগুলা তো পাট্টি নিজেই পারে! পাট্টি বরং আইনের ইমিউনিটি এনজয় করতে রক্ষীবাহিনি বানাইয়া লইছে! রাষ্ট্রের পয়সা মারাটা তাতে যেমন ফর্মাল হইতে পারলো, দরকারি খুন-খারাপিও লিগ্যাল হইয়া উঠলো!

মাঝে জিয়ার আমলে সরকার এবং রাষ্ট্র আরেকটু যুদা হিসাবে নজরে পড়বে এবং তখন গায়ের জোরের বদলে জনতার কবুলের ভিতর দিয়া লেজিটিমেসি পাবার গরজ দেখা যাইতেছে জিয়ার মাঝে। ভোটের ভিতর দিয়া জনতার কবুল পাবার আগেই জিয়া দেশের পাট্টিগুলার কাছে কবুল পাইছেন মোটামুটি; ৭৫ সালের খুনাখুনির ভিতর দিয়া দেশের পলিটিক্স পুরা ছারখার হবার আগেই বাকশালের ভিতর দিয়া দেশের পলিটিক্সকে কোমায় পাঠানো হয়। জিয়ায় আরাম পাইছে সব পক্ষ, লীগের হিসাবে আরামের ১ নম্বর কারণ আছিল–খুনীরা থাকতে পারে নাই গদিতে! ভাসানি খুশি আছিলেন জিয়ার সততা এবং আগের সরকারের নেপোটিজমের বদলে যোগ্য মানুষদের বড় বড় পদে পাইয়া। আর্মি-পুলিশ-আমলাদের জিয়া জনতার ‘সার্ভেন্ট’ হবার দিকে নিতে পারছিলেন ধীরে। এইসব কারণেই জিয়ার আমলে আমরা সরকার নামাবার মুভমেন্ট পাইতেছি না কোন এবং ১৯৮৩ সালে আগের গণতন্ত্রের স্বাদ ফেরত পাবার আন্দোলন করতেছে ছাত্র-জনতা, এরশাদ ১৪ ফেব্রুয়ারি সেই আন্দোলনে গুলি কইরা খুন করলো কয়েকজন।

জনতার কবুল করা বা লেজিটিমেসির এই গোড়ার কথাটা মাথায় না রাখার কারণেই দেশের বহু পলিটিক্যাল আতেল ইতিহাস বিচার করতে যাইয়া গাড্ডায় পড়েন–জিয়া এবং এরশাদ, দুই জনেই জেনারেল হবার পরেও কোন পয়েন্টে দুইজন যুদা হইতেছেন, বুঝতেই পারেন না! জিয়া কোন লেজিটিমেট সরকার হটাইয়া গদি দখল করেন নাই, এরশাদ করছেন, জিয়া জনতার কবুলের তোয়াক্কা করতেন বইলা জনতারে ভোটের ভিতর দিয়া তারে সরাবার মওকা দিছেন, এরশাদ দেন নাই। বাংলাদেশের এক্সিসটেন্সিয়াল ক্রাইসিসে জিয়া দেশটারে বাঁচাইছেন: ১৯৭৬ সালে পাকিস্তানের লগে কনফেডারেশন বানাইতে ৭১ সালের সেই রেসকোর্স ময়দানে মাহফিল হইছে, দুনিয়ার মোড়লেরাও–ইউএসএ, চীন, সৌদী–তাই চাইতেছে, দেশের সবগুলা পয়েন্টে ফের পাকিস্তান চাওয়া লোকেরা দখলে নিছে, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ ছাইড়া পালাইছে, সিপিবিরে হারিকেন দিয়া খুঁইজাও পাওয়া যাইতেছে না, জিয়া দেশের এই দশারে সামাল দিয়া বাংলাদেশ বাঁচাইছেন। তাই আজকের আওয়ামী লীগ জিয়ারে যতোই গালি দিক না কেন, তখনকার লীগ জিয়ার হাতেই আবার জিন্দা হইয়া উঠছে, আজকের প্রাইম মিনিস্টারকে দেশে আইসা লীগের হাল ধরার মওকা বানাইয়া দিছেন জিয়া। জিয়ারে খুনী কইয়া গালি দেওয়া তাহেরের ভাই বা তার বউরে সরকারি চাকরি দিছেন এবং বহাল করছেন, ইনুরে বাঁচাইছেন, মুক্তি দিছেন। এমন জিয়া ইতিহাসে আরেকজনই আসছিলেন, ফ্রান্সে নেপোলিয়ন হইয়া, রেভল্যুশনের ক্যাওস সামলাইয়া নেপোলিয়নও ফ্রান্সকে আগাইয়া নিছিলেন ইতিহাসে!

জিয়া এবং এরশাদ, দুই জনেই জেনারেল হবার পরেও তাই ইতিহাসে আমরা দেখতেছি, জিয়ারে সরাইতে বহুবার চেষ্টা করতেছে আর্মি, জনতার মনে শান্তি, রাস্তায় মিছিল নাই, গুম নাই, মিথ্যা মামলা নাই, আখেরে খুন করলো সেই আর্মি, আর এরশাদ আমলে ক্যান্টনমেন্টে খুব শান্তি, গণতন্ত্র চাইয়া রাস্তায় মরতেছে জনতা! অথচ জিয়ার আমলে ক্যান্টনমেন্টের ঐসব গণ্ডগোলরে বেকুব বাওয়ামীরা দেখতে কন জিয়ার গলদ হিসাবে, হাউ বেকুব এন্ড ফানি! বাংলাদেশের জনতার কনসেন্টের দাম দিয়া সেই ৭১ সালেই জিয়া-এরশাদ যুদা হইছিলেন, জিয়া আর্মির রুল ভাইঙ্গা, ফ্রিডম ওয়ারে যোগ দিছেন, এরশাদ পাকিস্তান আর্মির চাকরি করছেন!

কিন্তু দুই জেনারেলের এই বাছবিচারের বাইরে যাইয়া আমাদের দেখতে হবে, জনতার কবুলে তোয়াক্কা না করার ভিতর দিয়া এরশাদ কেমনে জিয়ার চাইতে খুবই ভিন্ন এক শাসন কায়েম করলেন দেশে! এই পয়েন্টেই ব্যক্তি উতরাইয়া শাসনের সিস্টেমের আলোচনা আর বিচারে যাইতে হবে আমাদের। দেখতে হবে, শাসক ব্যক্তির গুণাগুণের তফাতের কারণে আখেরে কেমনে দেশের চরিত্র পাল্টাইয়া যাইতে পারে!

৭২-৭৫ আমল লইয়া কইতেছিলাম, তখন দেশে জনতার কবুলের বদলে গায়ের জোরের শাসন কায়েম হইলেও মস্ত পাট্টি থাকার কারণে রাষ্ট্রের হাত-পা সরকার বা পাট্টির হাত-পা হইয়া পড়ে নাই পুরা, কিন্তু এরশাদের তেমন পাট্টি-সুবিধা আছিল না। এরশাদ তাই নিজের গায়ের জোর বানাইতে রাষ্ট্র এবং সরকার একাকার কইরা ফালানো শুরু করছিলেন, এই রেজিমে আইসা যার খাসা রূপটা দেখতেছি আমরা! গায়ের জোরের আরেক শরিক পাইছেন দেশের সেইসব ফুলটাইম বাটপারদের ভিতর যারা আগের ৭২-৭৫ রেজিমের পলিটিক্যাল বাটপারদের চাইতেও খারাপ! কেননা, পলিটিক্যাল বাটপারদের পয়সার একটা ভাগ দিতে হইতো নিজের এলাকার শরিকদের–যতোই খারাপ হৌক, তারা তো জনতারই একটা পাট, কিন্তু ফুলটাইম বাটপাররা কেবল গুন্ডা পালার ভিতর দিয়াই কাম সারতে পারছিল! ফুলটাইম এই বাটপারদের আরেকটা ভাগের হাতে এরশাদ দেশে কলকারখানা দিয়া দেন, সেই নকশা বানাইয়া দেয় আবার ওয়ার্ল্ড-ব্যাংক, আইএমএফ (এই ব্যাপারে বণিকবার্তায় একটা রিপোর্ট ছাপা হইতেছে: https://bit.ly/2JAqciV)।

দেশের পোরতিটা সেক্টরেই একই প্যাটার্ন পাইবেন; ভার্সিটিতে ভালো স্টুডেন্ট বা তালেবরা ফার্স্ট-সেকেন্ড হইতে পারতেছিল না আর, সরকারি রিক্রুটমেন্টে নিয়ম-কানুনের বদলে এমপি-জেলা চেয়ারম্যানদের পছন্দে ঘটতে থাকে, দেদার পয়সায় সরকারি চাকরি বেচা কেনা শুরু হয়; পোস্টের দায়িত্ব পালনের বদলে দালালি হইয়া ওঠে প্রোমোশনের রাস্তা; জিয়ার আমলে এইগুলা সরকারি পলিসির ভিতর আছিল না, এরশাদ এইগুলারেই গায়ের বাড়াবার দরকারে সরকারি পলিসি বানাইয়া তোলে! দেশের এনভায়রনমেন্টেরও বারোটা বাজতে থাকে তখন; জিয়ার আমলেই ‘গ্রিন রেভল্যুশন’ শুরু হইলেও সেইটা খাবারের দরকারে এবং কন্ট্রোলড; এরশাদের আমলেই দেশের গরু পুরা খেদাইয়া ট্রাক্টরের উপর চড়াইয়া দেওয়া হয় দেশের হালচাষ। এরশাদ আমলে নদী দখল থিকা পলিথিনে সয়লাব হইতে থাকে দেশ, বাটপারেরা দখল করতে থাকে জঙ্গল। চেক এন্ড ব্যালেন্স বইলা কোন সিস্টেম থাকতে দেয় নাই এরশাদ!

এইসব ব্যাপারে ডিটেল রিসার্চ কেউ না কেউ করবেন আলবত, আমার কথাগুলি দরকারি ডাটার বদলে খোড়া লাগতে পারে! কিন্তু এইগুলা লজিক্যাল কন্সিকোয়েন্স হিসাবে থিয়োরি দিয়া বোঝা, সত্যিকার দরদী রিসার্চাররা এইসব ব্যাপারে অনেক অনেক কাম করবেন আশা করি!

আমি বরং আরেকটা সেক্টর লইয়া দুই কথা কইয়া খতম করি এইটা। বহু কবি লেখকদের সরকারি বাড়ি-ফ্ল্যাট দিছিলেন এরশাদ; লাভ কি হইছিল দেশের? খেয়াল করেন, দেশের এই আতেল সমাজ এরশাদের পক্ষে কাম করছেন, যারা বাড়ি পান নাই, তারাই হয়তো কেবল রাস্তায় নামছেন! কিন্তু এইটা ছোট্ট খতি আমার মতে! আসল খতিটা আরেকভাবে হইছে।

বাড়ি এবং বহু খাতের সরকারি উপরি পাবার আগে এই আতেলরা জনতার কাছে সওদা বেইচা কামাই করতো, যেমন ধরেন, ঢালিউড/এফডিসিতে আছিল এদের অনেকেই। কিন্তু এরশাদ এনাদের এমন ধনী বানাইয়া দিছেন যে, জনতার কাছে আর্ট-কালচারের সওদা না বেইচাই এরা চলতে পারতেছে! আমাদের মনে রাখা দরকার, এরা কারা, এদের লিটারারি খায়েশ কেমন?

খেয়াল করেন, সৈয়দ সামসুল হকের মনের খায়েশ হইলো, রঠার মতো একটা ‘নৃত্যনাট্য’ লিখবেন, কিন্তু তার টাইম যায় ঢালিউডের ফরমায়েশি গান-স্ক্রিপ্ট লেইখা! ‘হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস…’ যতোই পপুলার হৌক না কেন, তার মন পইড়া থাকে কলিকাতায়! এখনো দেখেন, দেশে মোশারফ করিম এতো পপুলার, কিন্তু নিজে মনে করেন, আর্টের কিছুই করা হইলো না জিন্দেগিতে, ফালতু সব নাটকে কাইটা যাইতেছে বেলা! ১৯৬০-৭০ যুগের কালচারাল মুভমেন্ট আমাদের এমনই কলিকাতাই বানাইয়া তুলছিল! তবু পেটের দায়ে দেশের জনতার লগে ব্যবসা না করার উপায় আছিল না এইসব হক বা বেহকের। এই যে পেটের দায়ে বাংলার আতেল সমাজ প্রো-পিপল হইয়া উঠতেছিল, এরশাদ এইটারে আটকাইয়া দেন! উনি আর্টিস্টদের ধনী কইরা দেন, হকেরা তখন আরামে ‘নৃত্যনাট্য’ লিখতে পারে, দেশের জনতারে আর পাত্তাই দিতে হয় না!

এতে দেশের আমীর-গরিবের আরো বিচ্ছেদ হইতে থাকে, আজকে আমরা আর রিশকাঅলার দুঃখ বুঝি না, ঢালিউড নামের সেই ব্রিজ আর নাই! এরশাদ আমলে দেশের আতেলরা ঢালিউড থিকা বাইরাইতে থাকে, জনতা আর পায় না তাদের! লগে ঢুকতে থাকে কালা টাকা, ঢালিউড হইয়া উঠতে থাকে কালা টাকার সেক্সট্যুরের রিসোর্ট! ঐ এরশাদ আমলেই পাওয়ারফুল হইয়া ওঠে ‘বিকল্প ধারা’ নামে ঢাকাই সিনেমার আজব এক কারখানা যারা জনতারে আর সিনেমাই দেখাইতে চায় না! কয়েকজনের একটা সার্কেল সিনেমা লইয়া নিজেরা নিজেরা আলাপ করবে যেন! তারা ঢাকাই সিনেমারে গালি দিয়া দিয়া দেশের মিডলক্লাসকে দেশি সিনেমার বাইরে লইয়া আসেন, ঢালিউড মরলো এইভাবে! ঢালিউডের বদলে স্টার হইয়া ওঠে বিটিভির পুচকেরা!

এগুলি সবই আসলে নেসেসারি কন্সিকোয়েন্স, ঘটবেই। জনতার কবুলের লেজিটিমেসি বাদে গদিতে থাকতে চাইলে দেশি এবং বিদেশি এন্টি-পিপল শক্তির লগে দোস্তি পাতাইতে হবে, জনতার বিপরীতে তাদের আরো খমতাবান কইরা তুলতে হবে। কেননা, যারে কবুল করে নাই, জনতা তারে নামাইতে চায়, রাস্তায় নামে, সরকারি জুলুমে রাস্তায় নামতে ডরাইলে আর কোন উপায় তালাশ করতে থাকে। জালেম তো এইটা জানে, সেও তার বাহিনিগুলা রেডি রাখতে চায়, বড়ো করতে চায়। গদিতে থাকতে হবে তো তার!

এরশাদ হইলেন তেমনই একজন পেসিডেন–ইলেজিটিমেট, নাথিং মোর, নাথিং লেস।

//১৫ জুলাই ২০১৯ #রকমশাহেরবয়ান

 

ইতিহাশে ঘইটা জাওয়া একটা ঘটনা আনডু করার পক্ষে কিছু লেখাজোখা-আলাপ শুরু হইছে দেশে। স্টেট রিলিজিয়ন উঠাইয়া দেবার পক্ষে এই আলাপ। এনাদের একটা খুব কমন জুক্তি এমন: রাশ্টের আবার ধর্ম কি! রাশ্টো বেহেস্ত-দোজখে জাইতে পারে, ধর্ম হইলো মানুশের… ইত্যাদি।

এই জুক্তি অবশ্য ছোট্ট একটা এমেন্ডমেন্ট দিয়াই মোকাবেলা করা জাইতেছে! জাতি, ধর্ম বা ইতিহাশ লইয়া ভাবতেন বঙ্কিম। ওনার একটা পোশ্ন আর জবাব এমন: বাংগালির জাতিয় ধর্ম কি? জবাব দিছেন নিজেই মনে পড়ে, হিন্দুধর্ম; বাংলাদেশে এখন জদি দেখেন, রাশ্টো ফুল শাপলা কইলে ভালো কোন অর্থ পাইতে মুশকিল, তাই শাপলারে কইতেছে, ‘জাতিয় ফুল’; তেমনি স্টেট রিলিজিয়নের বদলে ‘জাতিয় ধর্ম’ বানাইয়া দিলেই কিন্তু ঐ জুক্তিগুলা শব ফালতু হইয়া পড়তেছে! চাপাচাপি করলে তেমন কিছু কইরা দিলে কি কইবেন তখন!? ওদিকে, জে জে কারনে স্টেট রিলিজিয়নে আপত্তি তা তো আরো মজবুত হয় জাতিয় ধর্মে, নাকি না!

এদিকে, রাশ্টের মুছাবিদায় ঐ শব্দ দুইটা ছেরেফ কথার কথাই, রাশ্টের একটা কোন আইন নাই জাতে মোছলমানরা বাড়তি কোন শুবিধা পায়! বরং এলকোহল ইত্যাদি ইশুতে মোছলমানরা আরো বেশি মুছিবতে পড়ে! এখন আপনে জদি স্টেট রিলিজিয়ন লইয়া চাপাচাপি শুরু করেন, তাইলে ফল কিন্তু পুরা উল্টা হইতে পারে! আপনাদের তুলনায় স্টেট রিলিজিয়নের পক্ষের লবি কিন্তু অন্তত ৫ হাজার গুন বড়, বাকশালের লগে তাগো পিরিতিও আমে দুধে; শুরুতে তারা ‘জাতিয় ধর্ম’ বানাবার আবদার কইরা আপনের পয়লা জুক্তিরে ফালতু বানাইয়া তুলবে! পরে দেখবেন, আইন কানুনেও জাতিয় ধর্মের ছাপ্পড় দেবার আবদার করবে! এবং আরো দেখবেন, বাকশাল জে ভোটে খুব একিন করে শেইটার খুবই মজবুত একটা পোরমান বানাইয়া ফেলবে! বাকশাল করবে কি, স্টেট রিলিজিয়ন ইশুতে একটা রেফারেন্ডাম দিয়া দেবে ! আপনারে কইবে, ক্যাম্পেইন করো, ভেটে জিতা আশো, ভোটে জিতলেই বাতিল। জিতবেন? আর শব ইলেকশন তো বাকশালি কায়দাতেই হবে, কেবল এইটা হবে ১০০% ফেয়ার ! এবং আপনে হারবেন ৮৭/১৩ রেশিওতে! তখন কি আপনেই ভোট বিরোধি হইয়া উঠবেন? আপনারে লইয়া তখন হেব্বি মজা করবে বাকশাল, কইবে রামবলদ !

কিন্তু আমি আরো দুয়েকটা কথা জিগাই। আপনে তো ইতিহাশ আনডু করতে চান। তাইলে স্টেট রিলিজিয়নে কেন থামেন! মর্ডান বাংলাদেশের আশল বদনছিবের শুরুর নাম ১৭৯৩, চিরস্থায়ি বন্দোবস্ত। পরে জে জমিদারি বাতিল হইছে, তাতে কিন্তু ১৭৯৩’র জখমের উপশম হয় নাই! ঐটা কেন আনডু করার দাবি করেন না! জেই জিনিশের কোন পেরাকটিকেল আছর নাই, তারে লইয়া আপনের এতো মাথাবেথা, এই জে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা খেলাপি, পাচার হইছে কতো, হরদম চান্দাবাজি, এগুলা আনডু করাও দরকার না তাইলে? কোনটা আগে চাইবেন? আপনের পেরায়োরিটি লিস্টিটা কেমনে বানাইতেছেন? ফারাক্কা আনডু করবেন আগে, নাকি স্টেট রিলিজিয়ন? পাট, কেমিকেল এগ্রি-ফার্মিং নাকি স্টেট রিলিজিয়ন? নদি-খাল নাকি স্টেট রিলিজিয়ন? ঢাকার হাতিরঝিলের লগে কল্যানপুর খালের শেই পুরানা রিশতা নাকি স্টেট রিলিজিয়ন?

এরশাদ তো কেবল এই একটাই আকাম করে নাই! বরং কেবল এই একটা আকামেরই পেরাকটিকেল আছর নাই, বাকি শব আকামই দেশের একেকটা ছেক্টরের বারোটা বাজাইছে! ছেরেফ পাট বা মাটির কলশ-পাতিল বনাম পেলাস্টিক-পলিথিন ভাইবা দেখতে পারেন…
//১৮ আগস্ট ২০১৮ #রকমশাহেরবয়ান

**বাড়তি নোট**

ক.

থিয়োরির খমতার বেপারে কমবেশি মালুম আছে আমাদের, কিন্তু এই খমতা কেমনে কাম করে, পোছেছটা কি?

এই পোশ্নের জবাব হিশাবে জিয়া হাসানের একটা লেখা ভালো কামে দিতে পারে। লেখার শুরুটা এমন:
“আওয়ামী লীগের নেতারা যে শাহেদ, পাপিয়া, পাপলু, বা জিকে শামিমদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করেন, সেই বক্তব্যটিকে আমি সমর্থন করি।

এর একটি তাত্ত্বিক ভিত্তি আছে। ফরাসি সোশিয়লোজিস্ট অলিভার রয় আইসিসের সদস্যদের পরিচয় ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, রেডিক্যাল ইসলামিস্টরা আইসিস তৈরি করেনি, বরং সারা দুনিয়ার চোর ছ্যাঁচড় বদমাশ গুলো রেডিক্যালিজমের ইসলামাইজেশন করেছে। (লিংক কমেন্টে)”

উপরের দুইটা পারার ভিতর ১ নম্বরটায় হয়তো জিয়া নিজেই গলদ দেখতে পাইতেন, কিন্তু ২ নম্বর পারার থিয়োরিটা ওনারে কনভিন্স করতে পারছে, ঐ থিয়োরির ফুশলানিতে উনি উপরের বাকশালি দাবিটা মাইনা লইছেন। এইখানেই তাইলে চকচক করতেছে থিয়োরির খমতা, থিয়োরি আমাদের কনভিন্স করে, মাইনা লই আমরা, কখনো এমনকি থিয়োরিটারে আরো আগাইয়া দেই; বাকশালের ঘটনারে জিয়া অলিভার রয়ের থিয়োরির গিনিপিগ হিশাবে লইয়া থিয়োরিটারেই আরেকবার ভ্যালিডেট করলেন, আবার ঐ থিয়োরির বদৌলতে বাকশালি দাবিটাও মজবুত হইতে পারলো! তাই থিয়োরি বানাইতে আরো মন দেওয়া দরকার আমাদের, অন্যদের কনভিন্স করতে কামে লাগে, জিয়ার পোস্টে দেখা গেল, উনি হাজারের বেশি লোক কনভিন্স করতে পারছেন, লেখাটা কামিয়াব হইছে ধরা জায়। গুড।

কিন্তু আপনে জদি কোন থিয়োরি দিয়া কনভিন্সড হন, আপনে জেমন হিশাব মিলাইতে পারবেন, তেমনি হিশাবের গরমিলও আপনের নজর এড়াইয়া জাইতে পারে!

জিয়া হাসান হিশাবটা মিলাইতে জাইয়া জেইটা করলেন, খোদ ভোট ডাকাতি আর লেজিটিমেছি ছাড়া গদি জবরদখল করাটারে করাপশনের চাইতে ছোট কেরাইম হিশাবে দেখছেন! আমাদের ভাবাইতে চাইতেছেন জে, লেজিটিমেছি ছাড়া, গদি জবরদখলকারিও করাপশন খতম করতে চাইতে পারে, কিন্তু গদি জবরদখলে রাখার দরকারেই ঐ করাপশন দরকারি হইয়া ওঠে এবং করাপশন খতম করতে পারে না জবরদখলকারি, ফানি না! লেজিটিমেছি না থাকা কেউ করাপশন কমাইতে চাইলে শুরুতেই তো শে গদি ছাইড়া দেবার কথা, গদি জবরদখলে রাইখা করাপশন কমাইতে চাইবারই তো উপায় নাই!

জিয়ার পোস্টে দেখবেন, কিছু বাকশালি গালাগালি করতেছেন ওনারে, জে, শরকার জখন করাপশন খতমে নামছে, আপনারা তখন শব কিছুতেই দোশ ধরতেছেন! গোড়ায় জিয়া কিন্তু এনাদের লগে একমতই; উনি একমত জে, এমনে করাপশন খতমে নামা জায়, শম্ভব; ফারাক কেবল এই জে, ওনাদের দাবি শরকার কামিয়াব হইতেছে, জিয়া শেইটা মানেন না; আমি কইতেছি, করাপশন খতমে নামার শুরুতেই গদি ছাড়ার কথা, তাইলে খতমের ছফরে আর কোন কদমই দেওয়া শম্ভব হইতেছে না, কামিয়াবির হিশাবে নামারই তো উপায় থাকতেছে না তাইলে! ওদিকে, এই বাকশাল জে করাপশন খতমে আদৌ নামতে পারে, গদি জবরদখলে রাইখাই, এইটা মানলে তো লেজিটিমেছি দিয়াই দিলেন আপনে, তাইলে তো বেপারটা আর জবরদখলই থাকলো না আপনের বিচারে! তাইলে ভোট ডাকাতি ছেরেফ পুচকে এক অনিয়ম হইয়া থাকলো!

ওকে, আরেকটু আগাই আমরা। বাইরের লোক নাকি দলে ভিড়ছে, তারাই আকাম-কুকাম করতেছে! খেয়াল করেন, ওনাদের দাবি হইলো, এই লোকগুলা আগে থিকাই এমন! অতি আজব দাবি; এখন দেশে জেই শব করাপশন ঘটতেছে, তার বেশিরভাগ জদি আপনে বেনজির মানেন, তাইলে বেনজির আকাম জে করলো, শে কি আদৌ আগের মতো থাকলো? তাইলে আকামটা বেনজির কেমনে হইলো? গত ইলেকশনটা দেশের ইতিহাশে বেনজির কিনা? জদি বেনজির হয় তাইলে খোদ এই লিগই তো আর আগের লিগ নাই! আমি জদিও পুরা বেনজির ভাবি না, এইটার লগে ৭৩ এবং ৮৬’র ইলেকশন কতকটা মেলে; বিএনপি’র ১৫ ফেব্রুয়ারির কথা কইবেন অনেকে, কিন্তু ঐটা বরং ৮৮ টাইপের। ভোট ডাকাতি আর একতরফার ফারাক আছে।

কিন্তু এই বেনজিরের বেপারটা বাদ দিয়া আরেকটু কিলিয়ার ছবি দেখাই, বেনজিরের বেপারটা অনেকে নাও মানতে পারেন, দুর্বল জুক্তি মনে হইতে পারে। ক্যালকুলেটরের কাহিনি মনে করেন, ঢাবির ঐ ক্যাডাররা বা বুয়েটে জেই মার্ডার হইলো কয়েক মাশ আগে, এই ক্যাডার বা খুনিরা ছাত্রলিগে ঢোকার আগে কেমন আছিল, ধরেন কলেজে? কার কয়টা কেরাইম রেকর্ড আছিল? জাবিতে জেই মানিক রেপের শেঞ্চুরি করলো, শে কি কলেজেও রেপ কইরা বেড়াইতো? এমনকি মানিকের বেপারেও তেমন কিছু শোনা জায় নাই, এখন জে কানাডা না কই জেন থাকে, ঐখানে কি রেপ কেছে পড়ছে একটাও? না তো! আর ঐ ক্যাডার বা খুনিরাও কেউ আগে এমন আছিল না, ভালো ছাত্র আছিল, ঢাবি-বুয়েটে চান্স পাইছে, আগে এমন থাকলে চান্সই পাইতো না বেশিরভাগ, ভর্তির করাপশন হিশাবে লইয়াই কইতেছি।

তাইলে কি কইবো আমরা, খারাপেরা ছাত্রলিগে ঢুইকা আকাম করছে, নাকি ঢোকার পরে এরা খারাপ হইছে? একজন রেপিস্টের ছাত্রলিগ জিন্দেগির আগে-পরে জদি আপনে রেপ না পান আদৌ, কেবল ছাত্রলিগ জিন্দেগিতেই রেপ কইরা রেড়াইতেছে শে, এইটা দেইখাও কইবেন জে, লোকটা খারাপ, ঢুইকা ছাত্রলিগের ইমেজে কালি মাখাইছে? নাকি ছাত্রলিগই রেপিস্ট জেনারেট করলো? জিয়া হাসানের হিশাব কইতেছে, লোকটা আগে থিকাই এমন, ছাত্রলিগে ঢুকছে শে খারাপি লইয়াই এবং ঢুইকা ছাত্রলিগের ইজ্জত মারছে!

তো, এই ক্যাডার, চান্দাবাজ বা খুনি বা টর্চার ছেল চালানো কর্মি বা বাচ্চাদের হাতুড়িপেটা করা হেলমেট বাহিনি জদি লিগ জেনারেট করে, তাইলে করাপশনের খারাপদের কেন বাইরে থিকা আশতে হবে, তাদের কেন জেনারেট করতে পারবে না লিগ! খোদ ওগুলাই কি করাপশন না!
আরো আগাই। লিগের পলিছি কেমন? লিগ/বাকশালের জে কোন কমিটিতে ঢোকার জোগ্যতা কি? শরকারি বাহিনিগুলায় কারা পোরমোশন পায়? লিগের কোন কমিটিটা আছে জেইখানে টর্চার-চান্দাবাজি-ভোট ডাকাতি-দমন করতে পারা জোগ্যতা না? শবচে ভালো জে হাতুড়ি পেটা করতে পারলো, জে লিড দিলো, তারেই কি শবচে বড়ো পেরাইজটা দেয় না?

কিন্তু এইটা বরং ছোট বেপার, এরচে বড়ো একটা বেপার আছে! আমি ঢাবির এশা’র কথা মনে করতে কইবো; এশা টর্চার করলো কোটা মুভমেন্টে, হলের আমজনতা তারে হটাইতে পারলো, পরে কি হইলো? এশা হইলো ত্যাগি কর্মি, তারে ফুলের মালা দিয়া ফেরত লইয়া হইলো।

কয়দিন আগেও লিডার কইলেন, জারা রাইতের আন্ধারে গদি দখল করছিল, তারাই করাপশন শুরু করছে। নিজেরে উজির দাবি করা একজন কইলেন, করাপশনে ১ নম্বর আছিল দেশ। হরদম দাবি করতে থাকেন, জনতার পছন্দে গদিতে বইছেন ওনারা, অমন একটা ইলেকশন কইরা এই দাবি করতেছে! এমন হাজারো ঘটনা আছে।

এগুলা কিশের আলামত? এগুলার ভিতর দিয়া আমরা বুঝি জে, আগে কেউ আকাম করলেও নিজেই জানতো জে, এইটা খারাপ কাম, শরম পাইতো, লুকাইতে চাইতো, লিগ শেই এথিক্স পুরা উল্টাইয়া ফেলছে, আকাম কইরা শেই আকাম করতে পারার গর্ব করে, শরমের বালাই তো নাই-ই, উল্টা দাবি করতে থাকে, এইটাই উচিত, আকামগুলারেই শবচে এথিকেল কাম হিশাবে দাবি করতে থাকে, মিছা কথা কইতে একটু শরমও পায় না! এগুলা পুরা শমাজকে কোন দিকে লইয়া জাইতে থাকে? শারা শমাজে জুলুমই এথিকেল হিশাবে মজবুত হইতে থাকে, খারাপই হইয়া ওঠে আইডিয়াল, শমাজের মরাল গেরাউন্ড পুরা মেছমার কইরা ফেলছে এরা! র্যাবও এখন ক্রছফায়ারকেই দাবি করে হিউম্যান রাইটস্ পোটেক্ট করা হিশাবে!

আরো আগান। লিগ বাংগালি ছুপ্রিমেছিস্ট দল কিনা? দেশের আর শব জাতি, ভাশার তখন ইজ্জত কোথায়? এমন এথনিক/রেশিয়াল ছুপ্রিমেছি জেই দলের ১ নম্বর পলিছি, তার হাতে অন্যদের ছিকিউরিটি আশা করা জায় কোনভাবে? এইটা তো বাই ডিফল্ট মেজরিটারিয়ান, শে কেমনে জুলুমের হিস্ট্রিকেল কন্ডিশন না হইয়া পারবে?

এইখানেই অলিভার রয় লইয়াও দুইটা কথা কইতে হয়। ওনার থিয়োরিটা ইছলামকে না চেনার উপর খাড়াইয়া আছে। কেবল ইছলাম না, শকল ন্যারেটিভের ভায়োলেন্ট উইং আছে, কালেকটিভের মহা বিপদে জে কোন ন্যারেটিভ তার ভায়োলেন্ট উইং এক্টিভেট করে। এই বেপারে দুয়েকটা লিংক দিতেছি কমেন্টে, আমারই পুরানা লেখা। ইউরোপ-আমেরিকার খারাপেরা আইএছ খেলাফতে জাইয়া ঢুকছিল শত্য, কিন্তু তার মানে এই না জে, আইএছ ইছলামের কিছু না! অলিভারের আগে এগুলা লইয়া আমি লিখছি, কমেন্টে পাইবেন।

এখন, কালেকটিভের মহাবিপদে ন্যারেটিভের জেই ভায়োলেন্ট উইং এক্টিভেট করা হইলো, তারে জদি শান্তির টাইমেও বা জেতার পরেও জিন্দা রাখা হয় তাইলে শে জালেম হইয়া ওঠে! লিগ বা বাংগালি নেশনালিজম হইলো বাংলার মহাবিপদে এক্টিভেট করা ঐ ভায়োলেন্ট উইং, এখনো ঐটা তাজা বইলাই জালেম! পাকিস্তান আমলে এইটা দরকার আছিল (জহির রায়হানের ‘জিবন থেকে নেয়া’ বা জয় বাংলারে জেমন কইছি ‘ কালচারাল উইপন’), কিন্তু বাংলাদেশ হবার পরে, জাতি/কালেকটিভের মহাবিপদ কাটার পরে এইটা আর জিন্দা রাখা ঠিক হয় না, তার পারপাছ পুরন হইয়া গেছে; কিন্তু এখনো তারে জিন্দা রাখা হইছে বইলাই শে জালেম হইয়া উঠছে। এবং এমন জালেমের কামই হইলো জালেম জেনারেট করতে থাকা, তাই করতেছে শে। বাংলাদেশ হবার পরে লিগের উচিত আছিল, তার ভায়োলেন্ট হবার পারপাছ পুরন হবার পরে এথনিক/রেশিয়াল এলিমেন্ট বাদ দিয়া ডেমোক্রেটিক হইয়া ওঠা। তা শে করে নাই বইলাই বাকশাল হইছে, বাকশাল হওয়া জাতির ঐ ভায়োলেন্ট উইং-এর ডেছটিনি, খুবই লজিকেল কন্সিকোয়েন্স!

আখেরে মানুশের খাছলতের বেপারে দুইটা কথা কই। কেরাইম করা বা না করা, দুইটাই হিউম্যানিটি, ফারাক ছেরেফ কিছু পুশের। একটা বেরেকিং পয়েন্ট পার হইলে মানুশ ছুইছাইড এটেম্পট লয়, পরে শেই লোকই ভাইবা নিজেই টাশকি খায় জে, আমি ছুইছাইড করতেছিলাম! তেমনি একজন মানুশের কেরাইম করতে ঐ বেরেকিং পয়েন্টটা পার হইতে হয়, পার হইতে এক্সটার্নাল দুইটা পুশ লাগে হয়তো, লিগ/বাকশাল হইলো শেই পুশ। কেবল খমতা বাড়াইয়াই পুশ দেয় না, এথিকেল এপ্রুভালও দেয় এবং এইভাবেই শে খারাপ জেনারেট করতে থাকে। মানে হইলো, খারাপেরা ঢুইকা খারাপ বানায় না, বরং এখনো ভালোরা ঢুইকা দরকারি পুশ পাইয়া খারাপ হইয়া ওঠে…

//১৬ জুলাই ২০২০

 

খ.

বাংলাদেশে মেলা লবিস্ট গ্রুপ আছে, কিন্তু যারে প্রেশার গ্রুপ কইতে পারি, তেমন কিছু নাই। প্রেশার গ্রুপ হইয়া উঠতে থাকলে সেই কালেকটিভ কয়েকদিনেই লবিস্ট গ্রুপ হইয়া ওঠে! দুইটা কারণ মনে হয় আমার। তাই আরেকটু থিয়োরি দিয়া ভাবতে কই সবাইরে।

লবিস্ট আর প্রেশার গ্রুপ–এই দুইটারে যুদা করা একটু মুশকিল অবশ্য! আমার হিসাবে সোজা কিছু নিশানা আছে, এইসব নিশানা দিয়া আপনে দুইটারে যুদা করতে পারবেন।

ক. প্রেশার গ্রুপ হবে পাবলিক, লবিস্টরা তুলনায় গোপন!

খ. দুইটাই ধান্দা করবে, কিন্তু লবিগুলা জাস্টিসের ধার ধারে না প্রায়ই, স্বার্থ হাসিল করতে এরা সমাজে অবিচার বাড়ায়, নিজেদের গোপন রাখার বড়ো কারণ এইটাই। নীতির জোর থাকে না! গোপন থাকার কাভার মজবুত করতে এদের মিডিয়াগুলা আবার নিউট্রালিটির ভান করে খুব!
উল্টাদিকে, প্রেশার গ্রুপের একটা নীতির জোর থাকে, তাই রাজহাঁসের মতো গলা উঁচা, তাই পাবলিক। এরা সমাজের টোটাল সিস্টেমে নিজেদের হিস্যা চায়, জাস্টিসের মামলা, তাই গোপন থাকার দরকার হয় না।

গ. একটা দেশের পলিটিক্যাল সিস্টেম যত স্বৈরাচারী হয়, তত প্রেশার গ্রুপের বদলে তত বেশি লবিস্ট গ্রুপ গজায়। দুইটার নিশানার তফাত হিসাবে ভোট বড়ো একটা ব্যাপার। প্রেশার গ্রুপের পিছে বিরাট একটা ভোটব্যাংক থাকে, লবিগুলার পিছে ভোট ততো থাকে না। স্বৈরাচারী সিস্টেমে তাই প্রেশার গ্রুপ ফায়দা হাসিল করতে লবিস্ট হইয়া ওঠার রিস্ক থাকে, গণতন্ত্র ছাড়া প্রেশার গ্রুপ কাম করতে পারে না!

ঘ. সমাজ পুরা ডিমরালাইজড হইয়া পড়লে এই দুইটারে যুদা করা আরো মুশকিল হইয়া ওঠে! এমন সমাজে ফ্যাসিজম এবং পপুলিজম পয়দা হয়, বড়ো হইতে থাকে! অবিচার কইরাও পাওয়ারফুলেরা শরম পায় না আর, লবিস্টদের তখন গোপন থাকতে হয় না, তারা পাবলিক হইয়া সমাজে অবিচার কায়েম করে পুরা, এবং এইটাই জায়েজ (উচিত এমনকি!) বইলা প্রোপাগান্ডা চালাইতে থাকে! কোন একটা কজ এমনভাবে গ্লোরিফাই করতে থাকে যে, সেইটা দেখাইয়া সমাজে জাস্টিসকে সাসপেন্ড করে! এমন কজ হইতে পারে জাতীয়তাবাদ বা উন্নয়ন ইত্যাদি।

বাংলাদেশে প্রেশার গ্রুপের বদলে লবিস্ট ডেভলাপ করার সব কন্ডিশন আমরা দেখতেছি এখন! গণতন্ত্র না থাকায় প্রেশার গ্রুপ ডেভলাপ করতে পারে না; পিছে হিউজ ভোটব্যাংক থাকলেও বড়জোর পাওয়ারফুল লবি হয়, প্রেশার গ্রুপ হয় না! হইয়া উঠতে চাইলে সরকারি হামলা-গুম-ধামকি-খুন শুরু হয়।

বাংলাদেশে সরকারের একটা বড়ো সুবিধা হইলো, এই দেশের শিক্ষিত লোকেরা গড়পরতা এন্টিপিপল এলিটিস্ট! তাই এরা গণতন্ত্র চায় না, ইটভাঙা লেবারদের সর্দার যদি কমিশনার ইলেকশনে জেতে তাইলে এই শিক্ষিতদের দেমাগ জখম হয়! এইদেশে জাত, গায়ের রঙ, বংশ, রেস, লিঙ্গ ইত্যাদির হিসাবে শিক্ষিতের রেসপেক্ট পাইতে হয়, জনতার ভোট রেসপেক্ট আইনা দিতে পারে না! মোগল, ইংরাজ এবং পাকিস্তানের কলোনিয়াল শাসনের লম্বা ইতিহাস এই দেশের শিক্ষিতের মনে হামবড়া (আদতে ছোট মনের, কলোনিয়াল মোড়লদের সামনে ইনফিরিয়র–দিল্লি বা ধলা ইউরো-আমেরিকান ভক্তির কথা ভাবেন) এলিটিজম পয়দা করছে!

হামবড়া এলিটিজম যেমন হয় প্রায়ই, চিন্তা ঘোলা, তাই বুদ্ধি ভোঁতা এদের! এরা বিচার করতে পারে না ঠিকঠাক। তাই বাংলাদেশের ইতিহাসে খুন-রেপ-জনতার পয়সা হাতানো-বিদেশী স্বার্থ-সোশ্যাল ইনজাস্টিস, এমনসব ক্রাইমের প্রায় সব সেক্টরে আওয়ামী লীগ হিউজ ফারাকে বিএনপিরে হারাইয়া দেবার পরেও আমাদের সিভিল সোসাইটির রেটিং-এ লীগ যদি পায় ৬/১০, বিএনপি পায় বড়জোর ১/১০! আমাদের ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’-এ ঘাপলার গোড়ার কথা এইটা! আমাদের দেশে ন্যায়নীতির একচেটিয়া লইয়া থাকা, সোশ্যাল ইনজাস্টিস ফাইটার হিসাবে প্রিটেন্ড করা পলিটিক্স যারা করেন, মার্ক্সের তরিকার পার্টিগুলাও এই গলদে পইড়া থাকে! সরকারের কোলে ওঠা সব মিডিয়ার কথা না কই আর!

১১ জুলাই, ২০১৮

 

গ.
রেভলুশন/revolution শব্দটা কিন্তু মজার আছে, পেরায় আদমি বা মানুশ শব্দের মতোই মজার!
হিন্দিতে জেমন আদমি মানে আদমের বাছুরদের বুঝায় না, বাংলায় জেমন মানুশ মানে মনুর বাছুরদের বুঝাইতেছে না ঠিক, রেভলুশন শব্দটাও আদিতে দেখলাম বুঝাইতো, ‘turn, roll back’! এখনো এই অর্থেই ইউজ করার নজির আছে: রেভলুশন অব আর্থ মানে শুরুজ মিয়ার চারপাশ ঘুইরা ৩৬৫ দিনে একটা ছার্কেল কমপ্লিট করা, পয়লা জানুয়ারিতে মোটামুটি ছেম এক ওয়েদার হাজির করা।

এখন মার্ক্সের তরিকার পলিটিক্স করা লোকদের পেয়ারা অর্থে রেভলুশনের লগে হালের বাংলাদেশের ‘চেতনা’র মতো একটা ব্যাপার আছে! মানে কোপার্নিকাছ পিথিবির রেভলুশন লইয়া একটা কেতাব লিখলেন, দুনিয়ার ব্যাপারে ওনার পোস্তাব হাজির করলো, শেইটা চার্চের অফিশিয়াল ভাবনারে চ্যালেন্জ করলো; তখনকার চেতনাঅলারা তখন চার্চের পজিশনরে খেদাইয়া দেওয়া কোপার্নিকাছের ঐ থিয়োরি/অবজার্ভেশনরে তখন এখনকার অর্থে রেভলুশন ডাকা শুরু করলো।

পরের ইতিহাশে রেভলুশনের ঐ অর্থটাই ১ নাম্বার হইয়া উঠলো মনে হইতেছে, আরো আরো ছড়াইলো মার্ক্স এবং পরের ভাবুক-বয়াতি-একাডেমিয়ার ভিতর দিয়া।

তো, এতে হইলো এই জে, ওনারা খুব ইতিহাশ ইতিহাশ করলেও ওনাদের রেভলুশন জিনিসটা একটা হিস্ট্রিকেল পোছেছের বদলে কোন একটা তারিখের একটা ছার্টেইন ঘটনা হইয়া উঠলো!

আর এমন জদি হয়, তাইলে তো আমাদের জিন্দেগিতে ঘটার মতো একটা ব্যাপারই হইলো, একটা কইরা ফেলার মতো ঘটনা, কোন এক তারিখে ঝোপ বুইঝা কোপটা মারতে হবে ছেরেফ! তাই একটা তাড়া পয়দা হইলো আমাদের মনে, রেভলুশন দেইখা মরতে চাই আমরা, কিন্তু রেভলুশন তো ঘটে না, পারতেছি না! খুব মনমরা হইয়া পড়ি, উদাশ লাগে, ডিপ্রেশন উতলাইয়া ওঠে মনে!

তো, শেই আদি অর্থে দেখার দরকার নাই, এখনকার অর্থেও জদি দেখেন, অতো তাড়া জদি না থাকে, রেভলুশনের একটা দিন তারিখ পাবার, নিজে তাতে শরিক হবার লোভ জদি না থাকে আপনার, তাইলে দেখবেন, আপনের নজরের তল দিয়া কত কত রেভলুশন ঘইটা গেছে, হিস্ট্রিকেল পোছেছটা চলতেছে হরদম, আপনের মনের তালে ইতিহাশ হাটতেছে না বইলা খুব ছোলো লাগতেছে, জেন বা হাটতেছেই না ইতিহাশ! অথচ দেখেন, এই জে দেশের গেরামে, ঢাকার বাইরে পায়ে টানা রিশকা জে আর নাই, এইটা কেন রেভলুশন না? দিন তারিখ দিতে পারতেছেন না বইলা?

বা ধরেন, নজরুল ইসলাম কাফের, কালিশাধক ইত্তাদি আছিলো, ৫০ বছর পরে দেখা গেলো শে পাক্কা মোছলমান, ইমানদার, তার লেখা হামদ-নাতে আমাদের ইছলাম পালন চলতেছে। জেই হিস্ট্রিকেল পোছেছের ভিতর দিয়া এইগুলা ঘটে, ঐটাই রেভলুশন! রেভলুশনের কোন দিন তারিখ নাই!

ছো, তাহের একাধারে ভিকটিম এবং জালেম! না, জিয়ার ভিকটিম না! ভিকটিম হইলেন, রেভলুশনের বেহুদা ফালতু তারিফ বা ডেফিনিশনের গাহেক হইয়া ভিকটিম! আর ঐ ডেফিনিশন, একটা দিন তারিখে রেভলুশন ঘটাইয়া ফেলার লোভ, জিন্দেগিতে রেভলুশন দেইখা কইরা মরার লোভ আখেরে খুন করায় মরাল এজাজত দেয়! আপনে এমনকি একজন ছ্যাডিস্টিক কাতিল হইয়া উঠতে পারেন! আমি আন্দাজ করি, কয়েকটা ধর্মের লোকজনের ভিতরও এখন খুনে জেই মরাল এজাজত দেখা জাইতেছে, ঐটার পিছে মার্ক্সের তরিকার আতেল-বয়াতিদের আছর আছে! খুনে মরাল এজাজত এর আগে ইতিহাশে কখনোই আছিলো না!

আর খুনই জদি করতে পারেন, তাইলে কবুরিয়তের তোয়াক্কা করার কি আছে! এবং ওনারা করেনও না। ওনারা গায়ের জোরে রেভলুশন করবেন, পরে ছোশাল ল্যাবটেরিতে দরকারি মানুশ বানাইয়া নেবেন! রেভলুশনে জারা শরিক হয় নাই, তারা আর না থাকাই ভালো, তারা হইলো পলুশন, পুরানারে রিপ্রোডিউছ করবে, এন্টি-রেভলুশন, তাদের শমাজে রাখাই ঠিক হবে না, লেবার ক্যাম্পে রাখা জাইতে পারে বটে!

তবে, তাহের একজন মাশ্টারও, তার থিকা আমাদের ছবক লওয়া দরকার জে, কি কি করা উচিত না আমাদের, খুন আর জুলুম জে নাজায়েজ, দাওয়াতের ভিতর দিয়া রাজি-খুশি কইরা কবুলিয়ত পাবার তদবির করার ভিতর দিয়াই জে রেভলুশন হয়, হয়তো আমাদের মরনের পরে এবং এইটাই জে তরিকা, শেইটা ভাবতে তাহেরকে দরকার আমাদের, তার মতো জেন হইয়া না উঠি আমরা, কলবে শেই ফয়ছালা খোদাই কইরা লইতে হবে…

#রকমশাহেরবয়ান ৭ নভেম্বর ২০২২

 

ঘ.

“Every nation gets the government it deserves.”–কার কথা এইটা?

জোশেফ ডি মায়েস্ত্রে। ফেরান্সের। ১৭৮৯-৯৫ ফেরান্স হুল বা ফেরেঞ্চ রেভলুশনরে উনি কইছেন ক্যাওছ, ফেরান্সের আউলা হালত; পোপের এজাজত লইয়া রাজার শাশন চাইছেন উনি। এই কথাটা কইছেন মনে হয় আশলে হুলের পরের ফেরান্সে জেই খুন, প্যারিশের রাস্তায় রাস্তায় পাবলিক গিলোটিন, খান্দানি বাচ্চা-বুড়াদের গিলোটিনে কতল করার ঘটনা ঘটতেছিল, শেই শাশক কেন পাইছে ফেরান্স, শেইটা বুঝাইতে; ফেরান্সের জনতারে গালি দিছেন এই কথার ভিতর দিয়া। কইছেন, রেশনাল চিন্তা দিয়া খৃস্টান ধর্মরে ডিনাই করার ফল অমন শাশন। তাই আগের রাজাদের বহাল করতে কইছেন, রাজার শাশনই টেকশই শাশন ওনার মতে।

তাইলে দেখা জাইতেছে, উনি এবং ওনার আর কোন ভাবনা ইতিহাশে মজবুত আছর ফেলতে না পারলেও এই কথাটা ঠিকই বহাল তবিয়ত! এই জামানায় দেশে-বিদেশে আলেম একটিভিস্ট, আতেলরা পেরায়ই আউরাইতেছেন কথাটা, এনাদের অনেকে আবার গণতন্ত্রের পানে জাইতে চান, ময়দানে লড়াই করতেছেন। এই কথার মাঝে কি জোশেফ আউলিয়ার ভাবনা এতোটাই গরহাজির হইতে পারলো এত দিনে জে, ওনার দুশমনদেরো পেয়ারা আয়াত হইতে পারলো? কাহিনি কি, কেমনে!

আমার হিশাবে ওনার চিন্তাটা শমানেই হাজির ঐ কথায়, এখনকার এই লোকগুলার ভিতরেই বরং জোশেফের ভুতের বাশা আছে একটু!

দেখেন, কথাটা অন্তত খুবই গায়ের জোরের মামলা; জেই লোক বন্দি, শে তার জোরের অভাবের কারণে বন্দি, আরেকজনের হাতে তার বন্দি হবারই কথা। কেরাইম নাই কোন, কিরমিনাল পাইতেছেন না। তাইলে ঐ কথাটা উল্টাইলে পুরানা শেই মরাল পজিশন পাইতেছেন–জোর জার, মুল্লুক তার; এবং এইটার নামই নেচারাল ছিলেকশন।

কিন্তু জোশেফ মশাই তো নেচারাল ছিলেকশনের বদলে ডিভাইন ছিলেকশনের কথা কইছেন! আখেরে ততো জুদা না এই দুই ছিলেকশন, ডিভাইন ছিলেকশনে তো বাড়তি গায়ের জোরই হবার কথা! ওনার মারেফতি বা স্পিরিচুয়াল চিন্তার লগে নেচারাল ছিলেকশনের ফ্যাছাদ তাই কেবল টার্মের, অর্থের ততো না!

এখন এই জামানায় জদি আশেন, দেখবেন দুনিয়ার রাশ্টোগুলার ভিতর মিলিটারি কম্পিটিশন চলতেছে, কার চে কার গায়ের জোর বেশি শেইটাই পোরমান করতে হইতেছে হরদম; মিলিটারি টেকনোলজি এমন একটা ধাপে উঠছে জে, কোন একটা দেশের নাগরিকরা শরকারের হাতে বন্দি হইয়া আছে কিন্তু হয়তো নিজেদের অজান্তেই! রাশ্টো দরকার মতো নাগরিকের মন বানাইয়া লইতেছে, ফুটা-ফাটা মারতে নজরদারির ওপেন ছিক্রেট তো আছেই! জেলখানারেই রাশ্টো দেখাইতেছে ‘পোটেকটিভ কাস্টোডি’ হিশাবে, বানাইয়া দেওয়া নাগরিক মন শেইটা বিশ্বাশও করতেছে!

রাশ্টোগুলা জদি এমন মিলিটারি রাশ্টো হয় বাইরে, নিজের ভিতরের নাগরিকরা এমন শাশক খেদাইবে কেমনে? জোশেফ মশাই কইবেন, তাবত জনতারে মিলিটারি হইতে হবে, গায়ের জোরে খেদাইতে হবে।

এই জামানার ঐশব একটিভিস্ট-আতেলরা মিলিটারি দুনিয়ারে আরো মিলিটারি বানাইতে চাইতেছেন কি তাইলে?

আন্দাজ করি, ওনারা পুরাটা খেয়াল করেন না পেরায়ই! তাই কথার ঠিক থাকে না। এই কথাটা জেই আতেল আউরাইলেন, শেই তিনিই আবার ধরেন উত্তর কোরিয়া বা ইজরাইল বা ভারতের শাশকদের জুলুম দেইখা গায়ের জোরে দেশের জনতার না পারার কথা কইতেছেন না কিন্তু! শশাংকের হাতে খুন হওয়া বৌদ্ধদের দোশ দেন না তো এনারা! উত্তর কোরিয়ায় জাইয়া জনতারে জদি কন জে, আপনেরা অযোগ্য গাধা, তাই এমন আছেন, কইতে মজা লাগবে আপনার? তাদের জেমন লাগবে শেইটা একবার ভাবলেন না, আপনে কি তবু গণতান্ত্রিক আতেল? ওদিকে, দোশ জদি তাদেরই হয়, শাশক কি আর কিরমিনাল হইতেছে আদৌ?

খারাপের লগে ভালোর না পারার পরেও ভালোই ভালো, খারাপই খারাপ, খারাপ ছিলেক্টেড হয় নাই, শে খারাপ হবার ডিছিশন নিছে কেবল; ভালোরা খারাপের লগে জয়েন করতে পারতো, করে নাই, কেননা শে ভালো, খারাপের পাপ করতে চায় নাই শে। পারতে হইলে ভালোর হয়তো একটা গায়ের জোরের উইং বানাইতে হবে, কিন্তু শেই উইং না বানাইলেও ভালোরা ভালো। শমাজে জদি ইট বানানি আর জাইংগা বানানি–দুইটাই লাগে এবং জাইংগা বানাবার উইং না থাকলে খোদ ইট বানানি খারাপ হয় না, শেই শমাজ গাধা হয় না, জাইংগার অভাব হয় কেবল এবং মানুশের জিন্দেগিতে অভাবই শবচে নরমাল বেপার! বরং অভাবের লিস্টি খারাপের মতোই লম্বা, কেননা শবচে খারাপ মানুশেরাও আখেরে মানুশ, মানুশের বেশুমার তাবত লিমিট শুদ্ধা মানুশ!

তাইলে এইটা একটা গোড়ার মারেফতি ফয়ছালা–দোশেরা, পাপেরা খারাপের! বাংলাদেশ লইয়া ভাবতে বইশাও এই ফয়ছালা লইতে হবে আমাদের। আমাদের না পারার পরেও খারাপের পাপ কমে না; এবং খারাপেরা খারাপ বইলাই, নিঠুর খুনি বইলাই, বেরহম জালেম বইলাই, তাদের খারাপির লিমিট নাই বইলাই পারি না আমরা! আমরা পারি বা না পারি, খারাপেরা একদিন থাকবে না, কেননা ভালোরাও থাকবে না, কেননা কিছুই থাকে না! তাই আমরা ডিজার্ভ করি বইলা এমন শাশনে নাই, দেশে-দুনিয়ায় বেরহম খারাপ জালেম আছে এবং তারা দখল কইরা রাখছে বইলা এমন আছি আমরা। দুনিয়ায় দখলদারের কোন তারিফ পাওনা নাই, ঐ কথায় জোশেফেরা দখলে থাকা মানুশকে গালি দেবার ভিতর দিয়া দখলদারের তারিফ করতে থাকে। কোন আতেলের গায়ে গণতান্ত্রিক লেবাছ দেইখা ঐ কথার ফান্দে পইড়া মন খারাপ কইরেন না; ওনারা জালেম পক্ষই, কেননা ঐ কথার ভিতর দিয়া জালেমেরে ওনারা যোগ্যতার মরাল ছাপোর্ট দেয় মাত্র!

//জানুয়ারি ২০২০

 

ঙ.

কয়দিন আগে দিদার গেরেপতার হইলো। উনি একটা গুরুপের লিডার, গুরুপটার নাম মনে হয় ‘রাশ্টোচিন্তা’। রাশ্টো মেরামতের কছম খাওয়া এমন আরো কিছু গুরুপ আছে এখন দেশে। জদ্দুর বুঝি, ‘মুক্তির জুদ্ধে’র চেতনার রোশনাইতে রাশ্টের মুছাবিদা বা কন্সটিটুশন বানাইতে চাইতেছেন এই গুরুপগুলা। ৩টা শব্দে ঐ চেতনার কথা জানতে পাই–শমানতা, ইনছাফ আর মানবিক মর্জাদা।
কোন একদিন দেশের মুছাবিদা হয়তো পাল্টাইতে পারবো আমরা, কিন্তু বর্তমান মুছাবিদায়ও অনেক ভালো ভালো কথা আছে, নাগরিকের বহু হকের আলাপ থিকা আইনের শমান নজর তক; তাছাড়াও অনেকগুলা ইউএন কনভেনশনে দস্তখত করছে বাংলাদেশ, ঐগুলাও রাশ্টো হিশাবে বাংলাদেশের মানার কথা। তবু এই দেশে আমরা জারা থাকি, আমরা আইন মোতাবেক চলতে দেখি না রাশ্টোরে, অন্তত ১% ঘটনাতেও আমরা মনে হয় ভালো আইনগুলারে এস্তেমাল করতে দেখি না, খারাপ আইনের আওতায় অবশ্য হরদম পড়তে থাকি আমরা, নাগরিকদের জারেই নাপছন্দ মাফিয়া শরকারের তারে ধরার আইন খাড়াইয়া থাকতে দেখি আমরা। তাইলে দেখা জাইতেছে, আইন থাকা আর শেইশব আইনে ভালো ভালো ফল পাওয়া পুরাপুরি দুই জিনিশ।

এই ঝামেলার ফয়ছালার আলাপ বাদ দিয়া বা গুরুত্ত না দিয়া রাশ্টের খোদ মুছাবিদা পাল্টাবার আলাপ চালাইতে থাকার মুছিবত হইলো, আইনের এস্তেমাল করার পুরাটাই জেন মুছাবিদার উপর খাড়াইয়া আছে। ওদিকে, ঐ আলাপেও শাশনের ছিস্টেম বা মেথড লইয়া খুব আলাপ নজরে পড়ে নাই আমার। ছিস্টেম বা মেথড হিশাবে এখনকার পার্লামেন্টারি রাস্তাটাই ঠিকাছে ধইরা আলাপ করেন ওনারা, মনে হয়! এই ফয়ছালা জেন হইয়া গেছে। কখনো বা পেছিডেনের পাওয়ার বাড়াবার আলাপ শোনা জায়; পেছিডেনের পাওয়া জতোটা আছে, তারই কোন নজির অবশ্য দেখি নাই আমরা! জেমন ধরেন, কোন একটা পার্লামেন্টারি বিল ফের আলাপের জন্য পার্লামেন্টে ফেরত পাঠাবার কোন নজির নাই; শরকারি দলের খুনি গুন্ডাদের মাফ করার কাগজে দস্তখত না করার কোন নজিরও পাওয়া গেল না! বরং শরকারি খুনিদের চাহিবা মাত্র মাফ করেন উনি, তারা বাইরাইয়া আবার খুন করে! তাইলে এই পেছিডেনের পাওয়ার আরো বাড়াবার ফল কি, খোদা মালুম!
এই আলাপটা আজকে শুরু করার উছিলা হইলো, আমেরিকায় পুলিশের পায়ে একজন কালা আদমি খুন এবং তার পরের কিছু ঘটনা। হিউস্টন পুলিশের চিফ আর্ট এইছভেডো আমেরিকার পেছিডেনরে কইছেন জে, ফয়ছালার দিকে আগাইয়া দেবার মতো কিছু কইতে না পারলে একদম চুপ থাকেন! এতে বাংলাদেশের লগে আমেরিকার তুলনা করতেছেন কিছু দেশি লোক, বাংলাদেশ পুলিশের আইজি পিএম’কে এমন কিছু কইলে কি হইতো?! বা টেরাম্প হোয়াইট হাউজের বাংকারে লুকাইছে মুভমেন্টে, আমাদের এইখানে কয় হাজার মরতো তেমন কোন ঘটনায়!?

এই জে হিউস্টনের পুলিশ চিফের বরাবর হিশাবে বাংলাদেশের আইজিরে ধরলো এই দেশি লোকেরা, এইখানে বিরাট এক গলদের ইশারা আছে। হিউস্টন হইলো আমেরিকার একটা রাজ্য টেক্সাছের একটা শহর; দেশে মনে হয় হিউস্টন বা টেক্সাছ দেখেই নাই লোকে, কেবল পুলিশ চিফ পইড়াই আলাপে নামছেন। কিন্তু এই ভুলটা আশলে খুবই পুচকে, এই আলাপে জেইটা আশার কোন শম্ভাবনাই নাই শেইটা হইলো আমেরিকার শাশনের তরিকা বা ছিস্টেম বা মেথড!

টেরাম্পকে আমেরিকার একজন খারাপ পেছিডেন হিশাবেই দেখি আমরা, বেশিরভাগ আমেরিকানও হয়তো; হোয়াইট ছুপরিমেছি আর পপুলিজমের বহু নালিশও আছে টেরাম্পের বেপারে। কিন্তু আমেরিকার শাশনের ছিস্টেম বা ডেমোক্রেটিক ছিস্টেম এমনই মজবুত জে, তাতে কোন একটা পোস্টে এমন পপুলিস্ট কেউ ইলেকটেড হইলেও ছিস্টেমের পাটাতনের তেমন কিছু হবে না, ৪-৮ বছর বেশ কিছু ঝামেলা হবে মাত্র! কিন্তু এই ‘মজবুত’ কইয়া কি বুঝাইতে চাইলাম?

খেয়াল করেন, বাংলাদেশের আইজি’র মতো কোন পোস্টই নাই আমেরিকার পুলিশে! আমাদের মতো এছপি, বিছিএছ দিয়া পুলিশে জাইয়া এক উপজেলায় আকাম কইরা আরেক উপজেলায় বদলির ছিস্টেমও নাই। হিউস্টন পুলিশ ফেডারেল বা আমেরিকার ছেন্ট্রাল কোন অথরিটির ডাইরেক আন্ডারে না, এমনকি টেক্সাছ রাজ্য শরকারের আন্ডারেও না। এনারে এপয়েন্ট করছেন হিউস্টনের মেয়র; কেবল তাই না, এনার বেতন দেয় হিউস্টন ছিটি কর্পোরেশন। আমেরিকার একটা ছিটি কর্পোরেশনে পুলিশ মেয়রের আন্ডারে, মেয়র আবার ডাইরেক ইলেকশনের ভিতর দিয়া আশেন। কেবল তাই না, ‘ল এনফোর্ছমেন্ট অথরিটিতেও ডাইরেক ইলেকশনের ভিতর দিয়া পাইতে হয় এমন একটা পোস্ট আছে, শেরিফ। একজন শেরিফের আন্ডারে থাকে একটা কাউন্টি, একটা কাউন্টিতে বড় একটা এলাকা থাকতে পারে, আবার কেবল একটা ছিটিই কাউন্টি হইতে পারে বা ছিটিতে শেরিফ থাকতে পারে। ছিটির বাইরের এলাকায় আইন দেখার জন্যও কাউকে তো দরকার, শেই দায়িত্ব মনে হয় শেরিফের। ছ্যাডলি, পুরাটা কিলিয়ার করার এলেম নাই আমার, আরো জোগ্য এলেমদার কেউ লিখবেন বইলা আশা মনে!

এনিওয়ে, পুলিশ বা শেরিফের পরে আবার আছে এফবিআই, এইটা ফেডারেল; এফবিআই ঠিক পুলিশ না, তবে তাগো একটা উইং আছে পুলিশ নামে। এফবিআই মানে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। খুন করার জন্য পুলিশের ভিতরই RAB বানাবার মতো বেপার না এইটা! পুলিশ আকাম করলে তারে এফবিআই গেরেপতার করতে পারে, তবে শব বেপারেই শবার উপরে আদালত তো আছেই। আবার ফেডারেল শাশনের গোড়ায় কতগুলা ভাগ তো আছেই; রাজ্য বনাম ফেডারেল টেনশন আছে, ছিনেট-কংগেরেছ-পেছিডেন টেনশন আছে। এদের পোরতিটা পোরতিটার কাছে ধরা, অথরিটি থিকা বাজেট–শবখানেই।

তাইলে, হিউস্টনের চিফ দেশের পেছিডেনরে জে অমন একটা কথা কইতে পারলেন শেইটা ঐ জটিল মাল্টি-লেটারাল, প্যারালাল পাওয়ারের বহু টেনশনের ভিতর দিয়া পয়দা হইছে, তা কেবল ঐ লোকের হেডমের মামলা না! বা হেডম জিনিশটাই পাওয়ারের ঐ টেনশনের ভিতর দিয়া পয়দা হয়, শেইটা পুলিশ চিফ বা মেয়র বা পাদ্রি বা পেছিডেন বা জেনারেল নাগরিক, শবারই…দেখেন, হোয়াইট হাউজের বাইরে জারা মুভমেন্ট করলো, তাদের কনটোল করার দায়িত্ব ওয়াশিংটন ডিছি পুলিশের, জেই পুলিশ ছিটি কর্পোরেশনের আন্ডারে, তাগো অর্ডার দিতে পারে না পেছিডেন, তাগো বেতনও পেছিডেনের দপ্তর থিকা হয় না। টেরাম্পের বাংকারে ঢোকায় আমরা জখন টাশকি খাই আমেরিকার জনতার পাওয়ারে নাকি হেডমে, শেইটা মালুম করতে এইগুলা মাথায় রাখতে হবে হরদম!

আমি বাংলাদেশের শাশনের বর্তমান ছিস্টেম পুরা ফালাইয়া দিতে চাই, রাশ্টের মুছাবিদায় চেতনা ঢুকাবার ভেইগ বা আবছা কোন বেপার না এইটা! আমেরিকার রাজ্য আর ফেডারেলের ছিম্পল টেনশনই তো আমাদের নাই! তার উপর পার্লামেন্টারি ছিস্টেম, পেছিডেন ইলেকটেড না, জেলা-ছিটি কর্পোরেশনের কাছে পুলিশ ধরা না, মেয়র ইলেকশনের লগে জনতার ভোটের কোন রিশতা নাই, খোদ শেই পার্লামেন্ট বশাইতেই তো ভোট/ইলেকশন/কবুলিয়ত লাগতেছে না…

এনিওয়ে, কমেন্টে পুরানা একটা লেখায় বাংলাদেশের শাশনের ছিস্টেম লইয়া আরো দুইটা কথা পইড়েন, লিংক দিতেছি।

//২ জুন ২০২০

 

চ. রাশ্টো মেরামতের একটা শমিতি আছে দেশে, মাঝে মাঝেই ফেছবুকে তাগো পোস্টে দেখি। তারা হুলাহুলি (মুভমেন্টকে বাংলায় হুলাহুলি কইতে চাই আমি) করতেছেন। এনারা বাদেও বহু লোক চিনি আমি বা পোস্ট দেখি অনেকের জারা ইংরাজের কলোনিয়াল (তালুকদারি কইতে চাই এইটারে) আইনকানুন বদলাবার তোড়জোর করেন পেরায়ই, মানে একটা আলাপ মাঝে মাঝেই ভাইশা ওঠে, এবং ওনারা মন থিকাই এইটা চান বইলা ভাবি আমি।

কিন্তু এনাদের আলাপে জেইটা পাই না আমি শেইটা হইলো, তালুকদারি আইন কইতে কি বুঝাইতেছেন ওনারা এবং বদলাইয়া কোনখানে জাইতে চান! মনে আশা আমার, ওনারা একদিন বদলি আইনের মুছাবিদা বানাইয়া হাজির করবেন জনতার দরবারে, কেমন ছিস্টেম বানাইতে চাইতেছেন তার নকশা পেশ করবেন! এইখানে কিছু ইশারা দিতে চাইতেছি আমি, এমনকি ভুলভাল হইতেও, বেশ পাতলা হইলেও ওনারা এই ব্যাপারে আরো জমাট আলাপ করবেন, শেই উশকানি ধরা জাইতে পারে আর কি!

শুরুতেই একটা তালুকদারি ছিস্টেমের মর্মটা বোঝা দরকার আমাদের; বাংলাদেশ জে একটা তালুকদারি ছিস্টেমে চলে, কোন কোন আলামত দিয়া শেইটা বুঝি আমরা? কেমনে বুঝাবো আমরা?
তালুকদারি ছিস্টেমের মর্ম হইলো, এইটা দেশের জনতারে নিজের দুশমন হিশাবে দেখে এবং তাই হরদম জনতারে কনটোলের ফিকির করতে থাকে। ব্যাপারটা কিলিয়ার করতে আরেকটা ছিস্টেমের লগে একটা তুলনা করতে চাই, শেই ছিস্টেমটা আমেরিকার।

কয়দিন আগে বাংলাদেশের র‍্যাব/আর্মির কয়েকজনের উপর আমেরিকার একটা ব্যানের খবরে পক্ষ-বিপক্ষের মনে তুফান উঠছিলো, এবং এখনো তার রেশ চলতেছে; বাকশালি রেজিমের গার্জেন আতেল-বয়াতিরা এখনো লেইখা জাইতেছেন জে, আমেরিকায় পুলিশের হাতে আরো বেশি খুন হয় এবং তার মানে হইলো, আমেরিকায় মানুশের হক আরো বেশি খারাপ দশায় আছে!

তো, এনারা তর্কটা করতেছেন নাম্বারের, এবং নাম্বার দেখাইয়া হিশাব মিলাইয়া ফেলতেছেন এবং এইভাবে দুইটা ছিস্টেমের তফাত গায়েব কইরা ফেলার মতলবে আছেন।

আমরা জদি ছিস্টেমে নজর দেই তাইলে দেখবো, বাংলাদেশে পুলিশ মানে একটা মাত্র বডি, তার শর্দার একজন, শেই শর্দার আবার পিএমের বহু কিছিমের লাঠিয়ালের একজন মাত্র। কিন্তু আমেরিকায় পুলিশ কইলে একটা বডি বুঝায় না, আমেরিকায় পুলিশ মানে কয়েক হাজার বডি এবং তার বসও হাজার হাজার এবং এই বসেরা আমেরিকার কন্সটিটুশন ছাড়া কারোই তাবেদার না! বাস্তবে কন্সটিটুশনের তাবেদারি মানে আদালতের তাবেদারি, শেই আদালত আবার অনেকগুলা এবং তা পেছিডেনের হুকুমে চলে না, পেছিডেনের তেমন কোন এখতিয়ারই নাই পুলিশ বা আদালতে। বাংলাদেশে কাগজে আদালত একটা কন্সটিটুশনাল বডি হইলেও বাস্তবে বাজেট নামে আদালতের নাকে একটা লাগাম আছে জেইটা পিএমের হাতে, জজ বানায় শরকার, বাস্তবে আইন মিনিস্ট্রির পাওয়ার আদালতের উপরে; এতো উপরেও জাইতে হয় না, ছেরেফ ওয়াশা-ডেসা-টেলিকমুনিকেশন-শুয়ারেজ ম্যানেজমেন্ট দিয়াই আদালত ছাইজ করার ঘটনা দেখছি তো আমরা!

উল্টাদিকে, আমেরিকায় বাজেট পেছিডেনের হাতে না, ছিটি কর্পোরেশনের হাতে বাজেট করার এখতিয়ার আছে, ছিনেট আছে, কংগেরেস আছে; মেয়রের হাতে পুলিশ আছে, পোরতিটা এস্টেটের হাতে পুলিশ আছে, ফেডারাল পুলিশ আছে; কাউন্টি আছে, শেরিফ আছে। মেয়র আর শেরিফ আবার ডাইরেক ভোটে ইলেকটেড। এর কোনটাই কোনটার হাতে বান্ধা না! আমেরিকার কন্সটিটুশন আছে, পোরতিটা এস্টেটেরও কন্সটিটুশন আছে, ফেডারাল কন্সটিটুশন আবার এস্টেটের কন্সটিটুশনের এখতিয়ার মানতে বাদ্ধ। তেমনি আদালতও অনেকগুলা; এই হাজার হাজার বডি নিজেদের ভিতর হরদম টেনশনের ভিতর দিয়া আমেরিকার ছিস্টেমটা চালায়।

মোদ্দা কথা হইলো, বাংলাদেশে পাওয়ারে কোন টেনশন নাই, একটা ছেন্টার আছে, শকল রাস্তা জাইয়া শেই ছেন্টারে মেলে, শেই ছেন্টারে বইশা থাকেন আশল খেলোয়াড়, উনি খেলান আর শকল দপ্তর তার ইশারায় ময়দানে খেলতে থাকে।

তালুকদারি ছিস্টেমে জনতা জেহেতু দুশমন, জনতারে জেহেতু কনটোল কইরা ডাকাতি করাই তালুকদারের মনজিল, তাই পাওয়ারে টেনশন রাখার উপায় নাই, তাতে তালুকদার খোদা হইয়া উঠতে পারে না।

তাই বাংলাদেশে র‍্যাব/পুলিশ জখন খুন করে, শেইটা ঐ আশল খেলোয়াড়ের খুন এবং তা ঐ ছেন্টারের ছিকিউরিটির জন্নই করা হইতেছে। ওদিকে, জেই পুলিশ খুন করলো, তার কাছেই আপনের মামলা দিতে জাইতে হবে; পুলিশ-হোম মিনিস্ট্রি-আইন মিনিস্ট্রি-আদালত-পিএম এগুলা আলাদা করার উপায় নাই, আপনে জদি পুলিশের বিপক্ষে মামলা করেন, তা আখেরে পিএমের বিপক্ষে মামলা এবং তাই আপনে একটা হুমকি, আপনারে গুম করা দরকার ছেন্টারের এবং ছেন্টারের নিজের দরকারেই খুনি পুলিশকে ছেভ করা দরকার!

কিন্তু আমেরিকায় এইটা ঘটবে না; জে কারো বিপক্ষে আপনে কইতে পারবেন, রাস্তায় নামতে পারবেন, মামলা করতে পারবেন; জে কোন দপ্তর আরেকটা কোন দপ্তরের দুশমন, দুশমন দপ্তর আপনারে শেলটার দেবে।

ছিস্টেমে পাওয়ারের অনেকগুলা ছেন্টার না থাকলে জনতা ঐ শেলটার পাবে না। ছিস্টেমে জনতার (আশলে দুর্বলের) এই শেলটারের মওকা না রাখার ভিতর দিয়াই কোন একটা ছিস্টেম তালুকদারি ছিস্টেম হইয়া ওঠে।

পাওয়ারের ভিতর এই টেনশন থাকা না থাকা আখেরে ভাশায়/কালচারে/মানুশের বোঝাবুঝিতে বিরাট ফারাক তৈয়ার করে! জেমন দেখেন, বাংলাদেশে শরকারি পয়শা/জমি, শরকারি চাকর ইত্তাদি, আমেরিকায় পাবলিকের পয়শা, পাবলিক পার্ক/জমি, পাবলিকের চাকর; ঐ টেনশনটা না থাকলে বেক্তি আর চেয়ার আলাদা করা জায় না, ফারাক মুইছা জায় আলগোছে, দপ্তরের শর্দার/হেডের শার্থই দপ্তরের শার্থ হইয়া ওঠে, কেননা, জনতা এই দুইয়েরই দুশমন!

দুই দেশে মানুশের হক মারার ব্যাপারে এইখানে আরেকটু কই; মানে ব্যাপারটা কোনভাবেই নাম্বারের মামলা না, ব্যাপারটা হইলো, আপনের মাইয়া পুলিশের ধোনে/হাতে রেপ/খুন হইলে, আপনের পোলা/বাপ পুলিশের ধোনে/হাতে রেপ/খুন হইলে কোন ছিস্টেমে কি করতে পারেন আপনে। বাংলাদেশে রেপ কেস করতে জাইয়া থানায় আরো দুইবার রেপ ঘটতে পারে আরামেই, এই দেশে আদালত লামে র‍্যাবেরই একটা বেরাঞ্চ থাকতে পারে! কিন্তু আমেরিকায় আপনে ছিটি পুলিশের নামে আদালতে মামলা করতে পারেন, শেরিফের কাছে নালিশ করতে পারেন; ঐ পুলিশের আওতার পুরা বাইরে জাইয়া হুলাহুলি করতে পারেন, মিডিয়ায় জাইতে পারেন, ফেছবুকে লিখতে পারেন; এর কোনটাই ঐ পুলিশের শার্থ দেখার কারন নাই খুব, বরং নিজেদের ঝালও আপনার উছিলায় মিটতে পারে তাগো! পুলিশ আপনারে ধরলে হিউম্যান রাইটস কমিশন হাজির হবে, রিমান্ডে পুলিশ কি করে, তাতে নজরদারি করতে পুলিশের উপর ঝাল থাকা আরেকটা দপ্তর হাজির থাকবে। বাংলাদেশে এর কোনটাই পারেন না আপনে, বাংলাদেশে একটা নয়া আইন মানে ঘুশের একটা নয়া মওকা মাত্র, জুলুমের আরেকটা উছিলা।

আমেরিকায় পুলিশের হাতে খুন বা তাবত খুনাখুনি বুঝতেই আরেকটা জিনিশ মাথায় রাখতেই হবে আপনের! আমেরিকায় পাবলিকের হাতে বন্দুক আছে, আর্মস রাখায় পাবলিকের লিগাল এখতিয়ার আছে। ঐখানে পুলিশের ভিতর রেছিজম বিরাট এক ইশু এবং পাবলিকের হাতে আর্মস রাখার লিগাল মওকা থাকায় পুলিশ কতক বাড়তি শুবিধা পাইতে পারে। এইটা কনটোলেই হিমশিম খাইতেছে আমেরিকা, কিন্তু পাওয়ার/ছিস্টেমে ঐ টেনশনটা থাকার কারনে হরদম একটা নজরদারি বহাল আছে। কিন্তু বাংলাদেশে পুলিশের দিকে গুলি ছোড়া পুরাটাই বানানো, পাবলিকের হাতে বন্দুক নাই এইখানে, পাবলিক তো দুর, এইখানে কত কত পুলিশও হয়তো ঠিকঠাক গুলি করতে পারে না! মানে হইলো, আমেরিকায় ডিফেন্ড করতে জাইয়া গুলির ব্যাপারটা ২০% হইলেও ঘটা শম্ভব, বাংলাদেশে এই টাইপের পেরেশনোটের পুরাটাই ভুয়া!

পাবলিকের হাতে বন্দুক থাকার এই ব্যাপারটা আরেকটু বোঝা দরকার আমাদের; পাবলিকের এই এখতিয়ার কেন আছে আমেরিকায়? কারন, আমেরিকার জনতা কেবল ছিস্টেমে অত শব টেনশন থাকাতেই পুরা ভরশা করতে পারে নাই। বাস্তবে আদিতে ঐ ঘটনায় আমেরিকার এবরোজিনালদের খুন করার একটা জরুরতের ভাবনা গোপনে থাকলেও কেবল ঐ জরুরতের বাইরেও মামলা আছে।
ছিস্টেমে এতো এতো টেনশন থাকলেও কখনো জদি পাওয়ারের ছেন্টারগুলা একই দলের দখলে চইলা জায়, তখন একটা তালুকদারি ছিস্টেম হইয়া উঠতে পারে! শেই জালেম ছিস্টেমের জুলুম থিকা নিজেদের ডিফেন্ড করার এখতিয়া আছে পাবলিকে, এবং তা করতে পাবলিকের হাতে আর্মস দরকার আছে; এখনো জারা আমেরিকায় পাবলিকের হাতে আর্মস রাখার পক্ষে, তাগো ভাবনায় এইটা আছে।

রাশ্টের খমতায় টেনশন থাকার পরেও তালুকদারি ছিস্টেম জে হইয়া উঠতে পারে তার নজির পাইতেছেন ইনডিয়ায়; এস্টেট আর ফেডারাল (রাজ্জ আর লোকশভা), দুই গদিতেই বিজেপি বশছে পেরায় শবখানে, তাতে ঐ টেনশন নাই হইয়া জাইতেছে, ইনডিয়ার মিডিয়া আর আদালত অলরেডি দখলে নিছে বিজেপি, ইলেকশন কমিশনও নেবে নেবে দশায় আছে শম্ভবত; ছেন্টারে টেনশন কমার কারনেই কাশ্মিরের এখতিয়ার কমাইতে পারছে বিজেপি।

ইনডিয়া আর বাংলাদেশ, দুইটাই একই ইংরাজের কলোনিয়াল/তালুকদারি আইনের ওয়ারিশ, দুইটাই বিরিটেনের পার্লামেন্টারি ছিস্টেমে চলে, এখনো; তবু ইনডিয়ায় জেইটা হইতেছে এখন, পুরাপুরি হইতে পারে নাই আগে, বাংলাদেশে কেন শুরু থিকাই শেই তালুকদারি শাশন চলে? এই পোশ্নের জবাব ঐখানে, ঐ টেনশনে; বাংলাদেশে ১ টাই এস্টেট, ইনডিয়ায় অনেকগুলা; ইনডিয়ায়ও পুলিশের কয়েকটা বডি আছে, বাংলাদেশে একটাই; ইনডিয়ার রাজ্জ আর লোকশভার টেনশন আছে, বাংলাদেশে পার্লামেন্ট একটাই। ইনডিয়ার এস্টেটগুলা জেই পাটে অভিনয় করে ছিস্টেমে, বাংলাদেশে উপজেলা/জেলা/বিভাগগুলা শেইটা পারবে না; না পারার কারন হইলো, বাংলাদেশে ছেন্টারের বাইরে কারো হাতেই কোন পাওয়ার নাই, বাজেট করার খমতা নাই, শকল পয়শা বিরাট ১টা বয়ামে জমা হয়, কেবল ছিটি কর্পোরেশন আর ইউনিয়নগুলা কয়েকটা পয়শা হাতে লইতে পারে, কিন্তু পুলিশ থিকা এডুকেশন কোনটাতেই মেয়রের কোনই এখতিয়ার নাই, ফলে জনতারও নাই, তার উপর মেয়রকে জেকোন শময়ে বরখাস্ত করতে পারে শরকার।

একটা তালুকদারি ছিস্টেম এমনই হবার কথা এবং এইটা আরো বেশি ছেন্টাল হইয়া উঠতে থাকার কথা। শেইটারই আলামত হইলো, রাশ্টের শকল দপ্তর পাবলিকের নজরের বাইরে চইলা জাওয়া, পাবলিকের শকল এখতিয়ার নাই হইয়া জাওয়া; এইটাই আইনে পাইতেছেন আপনে: রাশ্টের কোন দপ্তরে আপনে ছবি তুলতে পারবেন না, অডিও-ভিডিও করতে পারবেন না, রাশ্ট আপনারে কোন দলিল দেখাইতে বাদ্ধ না; কেননা আপনে গোলাম, তালুকদারের উল্টাদিকে আপনে এক বেশুমার গোলাম। তাই খেয়াল করেন, বাংলাদেশে আর্মস লাইছেন্স আছে; কার আছে? জে জনতার দুশমন হইতে পারছে, তালুকদারি ছিস্টেমের শরিক হইতে পারছে, জনতার গোশ্শা থিকা বাচতে তার আর্মস দরকার, শে আর্মস লাইছেন্স পাবে।

তাইলে ভাবেন, একই ইংরাজের তালুকদারি আইনের ওয়ারিশ হবার পরেও ইনডিয়ায় এখনো পুরা তালুকদারি ছিস্টেম হইয়া উঠতে না পারার উল্টাদিকে বাংলাদেশ জে গোড়া থিকাই তালুকদারি ছিস্টেমে চলতেছে, এতে আন্দাজ করা জায় জে, কেবল দুয়েকটা আইন পাল্টাইয়া কাম হবে না, মনজিল হাছিল করা জাবে না! বিজেপির দখলের ঘটনা খেয়াল করলে বুঝবেন জে, ইনডিয়ার মতো একটা ছিস্টেম বানাইতে পারলেও মনজিল হাছিল হবে না।

১ নাম্বার চিন্তা হইলো, পাওয়ারে একটা টেকশই টেনশন কেমনে বানাবো আমরা? এই পার্লামেন্টারি ছিস্টেম বহাল রাইখা কন্সটিটুশন বা আইন বদলাইয়া জা কিছুই করেন না কেন, কাম হবে না। একদম গোড়া থিকা ভাবতে হবে; রাশ্টের মালিক জদি পাবলিক, শরকার-পুলিশ-আমলা-আর্মি জদি জনতার গোলাম, তাইলে রাশ্টের লগে, দপ্তরের লগে জনতার কোন ফ্যাছাদ নাই, কিন্তু মালিকের লগে গোলামের শার্থের ফ্যাছাদ আছে; পাবলিকের গোলামের লগে মালিকের, মানে পাবলিকের/জনতার ফ্যাছাদই রাশ্টের লগে জনতার ফ্যাছাদ হিশাবে হাজির হয়। এই কারনেই রাশ্টো এবং শরকার জুদা করতে পারা দরকার আমাদের চিন্তায়; এবং দুইটা জেন জুদা করতে পারি আমরা, শেই দরকারেই পাওয়ারে/ছিস্টেমে ঐ টেনশনটা বানানো দরকার; গদিনশিন বেক্তিরা আতাত করলেও দপ্তরে দপ্তরে জেই গোড়ার টেনশন শেইটার ভিতর দিয়া পাবলিক জেন তার গোলামদের কনটোল করতে পারে! এইটাই হইলো তালুকদার হইয়া ওঠা, তালুকদারি ছিস্টেম হইয়া ওঠা ঠেকাবার পলিটিকেল রেছিপি।

শুরুতেই আপনের দরকার ইলেকশন কনফাম করা। ইলেকশন মানে কাউকে গদিতে বশানো না, ঐটা কর্মিদের কাম, জনতার জন্ন ইলেকশন মানে দরকারে কাউকে নামাইতে পারা। শকল তালুকদারি ছিস্টেম তাই ইলেকশন ডরায়, ঠেকাইতে চায়।

কিন্তু ইলেকশন পয়লা কদম মাত্র; তালুকদারি ছিস্টেম থিকা বাইরাইতে আরো অনেক দুর হাটতে হবে!

ইলেকশনের ভিতর দিয়া কাউকে নামাইতে মোটামুটি ফেয়ার একটা ইলেকশন হইলেই হয়, বাংলাদেশে ধরেন ৮৫% ফেয়ার ইলেকশন দরকার। কিন্তু বাংলাদেশে মোটামুটি ফেয়ার ইলেকশন কেবল দেশের মানুশ আদায় করতে পারে না, গত ৫০ বছরে পারে নাই; বাংলাদেশে মোটামুটি ফেয়ার শকল ইলেকশন বহু বিদেশি শক্তির চাওয়ার কারনে হইছে, জনতার আদায় করতে পারা না ঐগুলা! জেইটা হইছে, জনতার হুলাহুলি একটা মাত্রায় চড়লে বিদেশি শক্তিগুলা তখনকার শরকারের লগে লেনদেনে নারাজ হইছে, হবার হুমকি দিছে। পাবলিকের হুলাহুলি গুরুত্ত এইখানে; ঠিক এই কারনেই বাকশাল বিএনপিরে দেশের কোথাও খাড়াইতে দেয় না, লাখ লাখ মামলা দিয়া হাজারে-লাখে জেলে ঢুকাইয়া রাখছে। দেশে জনতার হুলাহুলি না ঘটলে বিদেশি শক্তিগুলার গরজ হয় না!

কিন্তু গুম-খুন-মামলা-জেলেরও একটা মাত্রা আছে, ঐটা ছাড়াইলে আরেকটা ক্যাটেগরিতে চইলা জায় ব্যাপারটা। ধরেন, হিটলারের জার্মানিতে অপোজিশন বা ইহুদিরা জে হিটলারকে ঠেকাইতে পারলো না, শেইটা ইতিহাশের লোকেরা তাগো ফেইলুর হিশাবে দেখে না, বরং হিটলারের চরম নিঠুরিয়া খুনে জুলুম হিসাবে দেখে। বাংলাদেশ এখন জুলুমের দিক দিয়া হিটলারের জার্মানির ক্যাটেগরিতে চইলা গেছে। বিদেশি শক্তিরা তেমনটাই ভাবা শুরু করারই আলামত আমেরিকার ঐ ব্যান, শেই কারনেই বাকশাল ডরাইতেছে! ময়দানে এখন বিএনপি জদি অল্প অল্পও নামতে পারে, জুলুমটা জদি হালকা নজরে ধরা পড়ার মতো দশায় নিতে পারে বিএনপি তাইলেই ইলেকশন হবে! বিদেশি শক্তিরা বাকশালের লগে লেনদেন আরো কমাবে; কেবল চায়নার পয়শায় টিকতে পারবে না বাকশাল!

একটা ইলেকশন কনফাম হইলে, বাকশাল খেদাইতে পারলে আমাদের নজর দিতে হবে পরের ধাপে, ঐ টেনশন বানানির উপায় তালাশ করতে হবে।

এখনকার পার্লামেন্টারি ছিস্টেমের বদলে একদম উপরে আমাদের দুইটা ইলেকটেড পোস্ট দরকার। পেছিডেন আর পিএম, দুইটাই ডাইরেক ভোটে হবে; পেছিডেন হবে পপুলার/ডাইরেক ভোটে, পিএম হবে ডাইরেক ভোটে জেতা দলের এমপিদের ভিতর দিয়া।

তারপর রাশ্টের দপ্তরগুলা ভাগ কইরা ২ দুই জনের এখতিয়ারে রাখতে হবে। ভাগগুলা এমন: হিউম্যান রাইটস-অর্থ/পুলিশ, আর্মি/ডিপ্লয়মেন্ট, আদালতে জজ বানানি/ইমপিচমেন্ট, এন্টি-করাপশন/পোজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন; দুই ইলেকশন এক লগে হইতে পারবে না; ইলেকশন কমিশন অটোনোমাস, তার বাইরে মিনিমাম জেই ছুপারভিশন শেইটা ইলেকশন মোতাবেক অল্টারনেট কইরা দুই জনের এখতিয়ারে থাকবে। মেয়র-চেয়ারম্যান (পার্ছন)-পেছিডেন একদিকে, আর দিকে পার্লামেন্ট; পার্লামেন্টারি দলগুলা মেয়র কেন্ডিডেট দিতে পারবে, কিন্তু মেয়রেরা থাকবেন পেছিডেনের এখতিয়ারে। মেয়রের এখতিয়ারে লোকাল পুলিশ থাকবে, তার বাইরে এস্টেট/ছেন্টারের পুলিশ, ছেন্টারের পুলিশ মেয়র/চেয়ারপার্ছনের এলাকায় অপারেশনে জাইতে আদালত-হিউম্যান রাইটস কমিশন-এন্টিকরাপশন দপ্তরের এজাজত লইয়া জাবে। পয়শা লোকাল দপ্তরে থাকবে, বেক্তিদের ইনকাম ট্যাক্সও, ছেন্টার চলবে কর্পোরেট ট্যাক্স আর রেমিটেন্স দিয়া। জমি-জমা বেচাকেনার ব্যাপার লোকাল গভমেন্টের হাতে থাকবে। ডেভলাপমেন্ট পোজেক্ট বানাবে মেয়র-চেয়ারপার্ছনেরা, লোকাল পয়শায় না হইলে তারা পেছিডেনকে জানাবে, পেছিডেন আলোচনার জন্ন পার্লামেন্টে পাঠাবে, তারপর ডিছিশন নেবে পেছিডেন, কিন্তু পার্লামেন্টের হাতে থাকবে ভেটো পাওয়ার। শকল মামলা হবে আদালতে, আদালত পুলিশকে দরকারি হুকুম দেবে।

শকল শরকারি দপ্তর পাবলিকের নজরদারিতে থাকবে; শকল টেন্ডার, কেনাকাটা, নিলাম হবে ওপেন। পাবলিকের নজরের বাইরে পুলিশ কাউকে নিতে পারবে না; পুলিশ রিমান্ড হবে টেরান্সপারেন্ট কাচের পিছে, মিডিয়া/পাবলিক চাইলেই দেখতে পারবে। শকল দপ্তর থিকা জেলখানা, লাইভ-ইস্ট্রিমিং হবে, জে কেউ ছবি-অডিও-ভিডিও করতে পারবে। পার্লামেন্ট আইন বানাবে, কিন্তু শকল আইন গনভোটের ভিতর দিয়া পাশ করতে হবে, অন্তত ৬০% ভোট লাগবে। শকল জাতি-ধর্মের লোকেরা নিজেদের জন্ন আলাদা আইন চাইতে পারবে, পাবে, অছিয়ত করতে পারবে; কিন্তু জে কোন বেক্তি/নাগরিক জাতি-ধর্মের আইন, নাকি কমন আইনে ফয়ছালা চান, শেইটা বাছাই করার এখতিয়ার রাখবে। কোন অছিয়ত/উইল না রাইখা কেউ মরলে তার ধনদৌলত ইত্তাদির ফয়ছালা হবে কমন আইনে। মানুশের ছেক্সলাইফে ভ্যাট বশানো জাবে না, বিয়া এবং তালাক রেজিস্টেশন হবে ৫ টাকার ফর্মে, অনলাইনে থাকবে দলিল, নাগরিকেরা নিজে বাদে কেবল আদালত এবং হিউম্যান রাইটস দপ্তর দেখতে পারবে মানুশের পার্ছোনাল ইনফো।

ছো, তালুকদারি ছিস্টেম থিকা বাইরাবার একটা নকশা দিতে টেরাই করলাম আমি; গোড়ার থিয়োরিটা আশা করি বুঝতে পারতেছেন, এইটার ফাইনটিউনিং হইতে পারে, জুক্তিতে না মিললে রদবদল হইতে পারে। কিন্তু ছিস্টেমের ভিতর ঐ টেনশন বানাইতে না পারলে তালুকদারি ছিস্টেম থিকা মুক্তি নাই। এই ব্যাপারে জারা হুলাহুলি করতেছেন, জলশা-মিটিং-টকশো করেন, তারা নিজেদের পজিশন, ঠিক কি করতে চান, কেন করতে চান, শেইটা কিলিয়ার কাট হাজির করবেন জনতার দরবারে, শেই আশা থাকলো।

এলাহি ভরশা।

//৫ জানুয়ারি ২০২২ #রকমশাহেরবয়ান

 

Series Navigationবেক্তি বনাম শমাজ বনাম রাশ্টো >>
The following two tabs change content below.
Avatar photo

রক মনু

কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →