Main menu

যে শিক্ষার ব্যবস্থা বর্তমানে রয়েছে তার দ্বারা জাতীয় জীবনে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আনবার ক্ষমতা লাভ করা যাবে না – মুহাম্মদ কুদরাত-এ-খুদা (১৯৭০)

মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা ১৯৭০ সালে ঢাকা ভার্সিটির কনভোকেশনে প্রধান অতিথি হিসাবে এই ভাষণটা দিতেছিলেন। ১৯৪৮ থিকা ১৯৭০ সাল পর্যন্ত কনভোকেশন লেকচারে উনিই একমাত্র লোক, যিনি বাংলায় ভাষণ দিছিলেন। ভাষণটা ১৯৮৯ সালে ঢাকা ভার্সিটি থিকা ছাপানো “The Convocation Speeches volume 2” বই থিকা নেয়া হইছে।

 

জনাব উপ-চ্যান্সেলার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষয়িত্রীবর্গ, স্নেহাস্পদ ছাত্র ও ছাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ভদ্রমহিলা ও সুধীমন্ডলী,

আজ আপনাদের সমাবর্তন উৎসবে আমাকে আহবান করে অত্যন্ত আনন্দ দিয়েছেন ও তার জন্য আমি নিরতিশয় কৃতজ্ঞ। দেশের এই বৃহত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অল্প কিছুদিন পূর্বে যে উন্মত্ততার আস্ফালন দেখে ছিলাম তাতে সারা দেশের বুদ্ধিজীবীসমাজ প্রমাদ গুণেছিলেন। ভীতির রাজত্ব এমন প্রবলভাবে শিক্ষায়তনগুলিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল যে আজ এই সমাবর্তন উৎসবে সম্মিলিত সম্প্রদায়ের সামনে দাঁড়িয়ে এখনও ভয় হয়, অতীতের সেই যুগের সত্যই অবসান ঘটল কিনা, আবার আশার নুতন আলোকশিখার যে কিরণমালা নৈরাশ্যের কুহেলিকা ভেদ করে আসছে, তা সত্যি স্থিতিশীল হয়ে দেশকে প্লাবিত করবে কিনা। তবে ভরসা এইটুকু যে বর্তমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ণধার, আমার ছাত্রোপম, উপ-চ্যান্সলার সাহেব যে আদর্শে উদ্বুদ্ধ, সে আদর্শের অনুসরণ করা হলে দেশে আবার জ্ঞানের নুতন আলোক প্রবাহ চতুর্দিকে বিকিরিত হবে। আজ তারই ইঙ্গিত পাচ্ছি। শক্তিশালী শাদ্দাদের অশুভ শক্তিও এককালে ধ্বংস হয়েছে। তবে নুতন পরিস্থিতির মধ্যে পুরাতনের ছোঁয়াচ থেকে যায়, এই নিদারুণ সত্যকে মনে রেখে বর্তমানে অগ্রসর হতে হবে। আমারা আশা আছে বর্তমানের চিন্তাধারা অবাধ প্রবাহ নুতন আশার সূর্যের পথে অবহেলার কুহেলা স্থায়ী হবে না, সে কথার আশ্বাস জনাব চ্যান্সেলার সাহেবের সেদিনের বাণী বহন করছে, তার জন্যও তাঁকে জানাই অভিনন্দন। তার আশ্বাস সফল হোক, দেশে আবার হাসি ও আনন্দের উৎস প্রখর দীপ্তি দিয়ে ভবিষৎকে উজ্জ্বল ও আনন্দময় করে তুলুক, আজ আমি এই প্রার্থনাই করি।

মানুষের চিন্তাধারাকে এখানে শৃঙ্খলিত করবার চেষ্টা চলেছিল দীর্ঘকাল ধরে। একনায়কভিত্তিক শাসনের এইটাই সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক; পরমতসহিঞ্চুতা এতে একেবারেই আসে না, তার ফলে যারা স্বাধীন চিন্তা করতে সমর্থ তারা শাসকদের অত্যাচারে নিপীড়িত হয়ে তাদের কবল থেকে সরে পড়েছে, যারা তা পারে নি তারা সেই নায়কের সন্তুষ্টির জন্য তাঁর চিন্তাকে রূপ দিবার চেষ্টায় অনর্থ সৃষ্টি করেছে। এমতাবস্থায় আমরা চিন্তাশীল ব্যক্তিদের অনেককেই হারিয়েছি। পরিস্থিতির প্রকৃত পরিবর্তন এবং তাতে স্থিতিশীলতা না এলে তাঁদের মত স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের ফিরে পাবার আশা অল্পই কাজেই এখানে যে নুতন চিন্তাধারা বিকাশ ঘটেছে তার স্থিতিশীলতা নিশ্চয়তা পাওয়া দরকার। এ বিষয়ে উপ-চ্যান্সেলার সাহেবকে কিছু বলবার প্রয়োজন নেই, তিনি এ বিষয়টি নিজেই ভালভাবে উপলব্ধি করেছেন। আমি কেবলমাত্র এর প্রয়োজনের কথাটিই প্রাথমিক প্রয়োজনের ইঙ্গিতরূপে উল্লেখ করলাম।

আমরা আজ এক রাজনৈতিক জীবনের সন্ধিক্ষণে উপস্থিত। সারা দেশে সকলের মধ্যেই বিপুল চাঞ্চল্য প্রকটিত হয়ে উঠেছে। সামরিক প্রভাবজনিত দেশের পরিস্থিতি এখনও বদলায়নি। কোনো দেশেই সামরিক শাসনের অধীনে সাফল্য অর্জন করতে পারে না, কারণ সামরিক শক্তি দেশের শাসন পরিচালনার জন্য নহে। তাদের প্রয়োজন দেশরক্ষার জন্য এবং তাদের শিক্ষা ও প্রস্তুতি ঐ উদ্দেশ্যেই হয়ে থাকে। তাই সামরিক শাসন কিংবা ঐ গোত্রীয় একনায়কত্ব দেশে দীর্ঘকাল স্থায়ী হলে বহুবিধ দুর্নীতি দেশরক্ষাসহ বিভিন্ন বিভাগে অনুপ্রবেশ করে, দেশের দুরবস্থার অবধি থাকে না। তাই দল ও মত নির্বিশেষে সকলের ঐকান্তিক চেষ্টা চালান দরকার, যাতে সন্তোষজনক ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক সমাধান দ্রুত হতে পারে।

আমাদের দেশে শিক্ষার সংস্কার যে প্রয়োজন সে কথার স্বীকৃতি প্রত্যেকেই দিয়েছে। দেশের লোক যে সুষ্ঠু পরিকল্পনা শিক্ষা ক্ষেত্রে চেয়েছিল তারা তা আজও পায় নি। যে শিক্ষার ব্যবস্থা বর্তমানে রয়েছে তার দ্বারা জাতীয় জীবনে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আনবার ক্ষমতা লাভ করা যাবে না। নুতন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সারা দেশ উন্মুখ হয়ে আছে, কিন্তু সে পরিবর্তনের পরিকল্পনা এখনও প্রস্তুত হ’ল না। বিশ্বের ইতিহাস আলোচনায় এ সম্বন্ধে কতকগুলি মৌলিক ব্যবহার কথা মনে উদয় হয়। যেসকল দেশ আজ শিল্প ও বিজ্ঞানে উন্নত তাদের সকলের প্রাথমিক পর্যায় শুরু করে পরিশেষের স্তর পর্যন্ত শিক্ষার বাহন মাতৃভাষায় রেখেছে। আমরা আশা করেছিলাম বিভাগোত্তর দেশে এ বিষয় আমরা সর্বাগ্রাগামী হয়ে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান ও যাবতীয় অন্য বিষয়ে শিক্ষা ত্বরান্বিত করতে পারব। অবিভক্ত বাংলায় এর প্রাথমিক পরীক্ষা সম্পাদিত হয়েছে ১৯৩৯ সালে, এবং আমি নিজে আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করেছি বাংলার মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষা শেষ করে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে তারা উত্তমতর ভাবে বিজ্ঞানের শিক্ষা উন্নততর মানে গ্রহণ করতে সমর্থ হয়। ১৯৩৯শের পর প্রায় এক দশক অতীত হলে পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়। আজ এই ২২ বৎসর ধরে বাংলা ভাষার মাধ্যমে শিক্ষিত ছাত্রদল নূতন শক্তি ও সামথ্য নিয়ে যদি এগিয়ে আসত তবে তারা নিশ্চিতভাবে দেশের নেতৃত্বের ভার সুযোগ্য হস্তে গ্রহণ করতে পারত।

আমাদের শিক্ষার দায়িত্ব দেশের এই অঞ্চলের, কিন্তু শিক্ষা সংস্কারের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার হাতে নেওয়ায় শিক্ষার অবনতি ঘটেছে। অবশ্য পরীক্ষার মানদন্ড অবনমিত হওয়ায় তথাকথিত শিক্ষিতের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। এখন বাংলার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার অপরিহার্য। বিশ্ববিদ্যালয়কে এই গুরু দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এদিকে নেতৃত্ব দিয়ে সারা দেশের উন্নতি বিধান করতে হবে। বাঙ্গালী ছাত্ররা বর্তমানের অসন্তোষজনক পরিস্থিতির মধ্যেও উন্নততর স্তর পর্যন্ত পৌঁছবার ক্ষমতা রাখে। তারা নিজের ভাষায় শিক্ষালাভের সুযোগ পেলে নিশ্চিতভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রণী হবে এবং পাকিস্তানের নেতৃত্বের দায়িত্ব তাদের হাতে আসবে। আজকার এই সমাবর্তন উৎসবে বাংলা ভাষায় আপনাদের সকলকে মনের কথা বলবার সুযোগ পেয়ে আমাদের শিক্ষা সমস্যার সমাধানকল্পে বাংলা ভাষাকে সর্বাবিধ ভাব প্রকাশের মাধ্যম করণের প্রস্তাব করি। এর দাবীর কথা আর নুতন করে তুলব না। এর দাবী রক্তের লেখায় বীর যুবকেরা লিখে গেছেন। আর ২১শে ফেব্রুয়ারীকে চিরকালের জন্য অবিস্মরণীয় করেছেন তাঁরা। বাংলার সুধীবৃন্দের আজ শুধু প্রয়োজন তাদের শিক্ষার জন্য বিজ্ঞান, কলা, কৌশল, এনঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসাবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান ইত্যাদি যাবতীয় শিক্ষার জন্য নুতন পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করে দিন। আমার বিশ্বাস এ কাজে যথেষ্ট সহজ হয়ে উঠবে। বিভাগোত্তর যুগে যে ভীতি এরূপ পুস্তক প্রণয়নের পথে দেখতাম আজ তা দেখি না। আমাদের ছেলেমেয়েদের হাতে আমরা পাঠ্যপুস্তক না দিলে, তারা চিরকাল বাইরের দিকে চেয়ে থাকবে তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনের জন্য। পরমুখাপেক্ষিতা জাতীয় জীবনের জন্য আভিশাপ, এর থেকে মুক্তি লাভ করা আশু প্রয়োজন।

এরপর একটু বিষয়বস্তুর কথা উল্লেখ করব। অন্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে নীতি গ্রহণ করা হয়, তা দেশের প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখে করা হয়, আমাদেরও তদ্রূপ করা দরকার। ফিলিপিনের শিক্ষা প্ৰধানত: কৃষিমুখী। প্রাথমিক স্তরেও সেখানে কৃষি শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়। ছেলেমেয়েদের উচ্চতর শিক্ষার এমন কি শিক্ষণ শিক্ষায়ও কৃষি বিদ্যা অর্জনের জন্য যথেষ্ট উদ্যম থাকে। সেখানে সেই জন্য নূতনতর গবেষণাতেও কৃষির সম্পদ বাড়ছে। আমাদের দেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও শিক্ষার নিম্ন স্তরে, প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে, কৃষি শিক্ষার বিধান নাই, অথচ গ্রামদেশে কৃষির প্রয়োগ করে জীবিকা অর্জন করতে হয় শতকরা প্রায় ৮৫ জনকে। এদের তথা সারাদেশের জীবনযাত্রার উত্তম উপায়ের কথা চিন্তা করে তাদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা হওয়া দরকার। তেমনি কলকারখানায়, আপিস আদালতে, শিল্পালয়ে এবং বাণিজ্য অফিসের প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরে এবং শিক্ষা বোর্ডগুলিতে যে শিক্ষা ব্যবস্থা আছে, তার ব্যবহাররিক প্রয়োগের কথা কোনদিন আমরা চিন্তা করি নাই, ফলে সকল পরীক্ষাত্তীর্ণ ছাত্র সমাজের বিভিন্ন কার্যে নিযুক্ত হয় সেখানে তাদের যোগ্যতার বিচার হয়, কতদ্রুত এবং নির্দোষ ভাবে সে কাজ সুসম্পন্ন করতে পারে তা দেখে, ফলে তাদের মান দাঁড়ায় অনেক নীচে। অথচ তাদের আসল যোগ্যতা কম নয়। কিন্তু বর্তমানে অবস্হার জন্য ঐ রূপ দেখি। যদি শিক্ষাবোর্ডগুলির ও বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষণ বিধানে শিক্ষা বিষয়ের প্রয়োগের কথা চিন্তা করে রোজগারক্ষম ছেলেমেয়েদের তৈরী করা সম্ভব হয়, তাহলে একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশের ঝোঁক কমে তেমনি জাতিও কর্মঠ, সুশিক্ষিত ছেলেমেয়েদের সাহায্য পেয়ে নূতনতর পরিবেশ গঠনে সুখ ও সমৃদ্ধির অধিকারী হয়।

অন্য দেশে এনজিনিয়ারিং এর ছাত্রদের জন্য এমনিভাবে ছুটির সময় বিভিন্ন কারিগরিক্ষেত্রে শিক্ষানবিশের কাজ করে শিক্ষার এই ব্যবহারিক দিকটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচয় লাভ করে। এবং তা ডিগ্রী লাভের জন্য নিরতিশয় প্রয়োজন। এমত ব্যবস্থা অন্য স্তরেও করা সম্ভব। প্রাথমিক অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে নির্দেশ দিলে বিভিন্ন বিষয়ের ছাত্রেরা সমাজজীবনে সেবার জন্য অধিকতর উপযোগী হবে এবং দেশের জন্যও সব দিক দিয়ে নব জাগরণের উন্মোষ ঘটবে। বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে, বিশেষ জ্ঞানের এরূপ প্রয়োগ নিঃসন্দহে সুফলের সুচনা করবে। এমনকি বাণিজ্য ও কলা বিভাগগুলিতেও এরূপ শিক্ষানবিশের ব্যবস্থায় নিঃসন্দেহে যোগ্যতার মান উন্নীত হবে। এই দিকে দৃষ্টি দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থায় সব দিক দিয়ে উন্নীত হবে আশা করা যায়। কিন্তু এবিষয়ে যে কোনো পরিল্পনা কতটা মৌলিক হবে বলে তার কার্যকারিতা এবং উপযোগিতা সম্বন্ধে কিছুটা প্রাথমিক পরীক্ষা প্রয়োজন, আমাদের দেশের অবস্থার কথা বিবেচনা করে তার কার্যকারিত সম্বন্ধে আমরা কোনো সন্দেহ নাই। বিশেষতঃ যেখানে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনয়নের কথা বিশেষ ভাবে প্রয়োজন মনে করি।

দেশকে বহিরাক্রমণের বিপদ হতে রক্ষা করার জন্য দেশে সামরিক শক্তি গঠন করা এবং তাকে নির্ভুলভাবে পরিচালনা করে সুযোগ্য দেশরক্ষী বাহিনী সৃষ্টি করা হ’ল একটি জাতীয় প্রয়োজন। এ সম্বন্ধে কেউ দ্বিমত পোষণ করে না। এর জন্য দ্বিবিধ প্রচেষ্টার প্রয়োজন। একটি হ’ল সামরিক শিক্ষাকে ব্যাপকভিত্তিক করা, যার ফলে শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা সমর বিভাগে যথেষ্ট সাহায্য করতে পারে। এই কথা মনে রেখেই ইউ, ও,টি, সি, র প্রবর্তন হয়েছে। এই শিক্ষার আর একটি দিক হ’ল সারা দেশের বাধ্যতামুলক ভাবে সামরিক জীবনের তৎপরতা ও বিভিন্ন কর্মধারার সঙ্গে পরিচিত করা। সামরিক শিক্ষায় মানুষকে নিজ হাতে সর্ববিধ কাজ সম্পাদন করার প্রবণতাও সৃষ্টি করে, যা যে কোনো জাতির পক্ষে জাতীয় সংগঠণের শ্রেষ্ঠ উপায়। আমার মনে হয় পাশ্চাত্য দেশের মধ্যে জার্মাণীতে সমাজজীবনের উপর এইরূপ সামরিক শিক্ষার প্রভাব স্পষ্ট রয়ে গিয়েছে। প্রতিটি গ্রামে সেখানে নিজেদের সামাজিক জীবনকে তারা সুন্দর ও কর্মময় করে রেখেছে। বর্তমান যুগে আমাদের ছাত্র শ্রেণীর মধ্যে কর্মবিমুখতার ঔষধরূপে তাদের সকলকে কিছু দিনের জন্য সামরিক জীবনে অভ্যস্ত করা দরকার। এমনি শিক্ষা আমোরিকায় মিলিটারী সায়ান্স নামে প্রদত্ত হচ্ছে। এই শিক্ষা প্রবর্তনের জন্য কলেজের প্রথম দুইটি বছর সামরিক বিজ্ঞান শিক্ষাকে আমাদের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবশ্যিক শিক্ষারূপে প্রতিষ্ঠিত করা দরকার। বর্তমানের কর্মবিমুখ ছাত্রবর্গ কর্মমুখী হয়ে উঠলে তাতে সারা দেশ লাভবান হবে।

তার উপর বলতে চাই যে বাংলা দেশ চিরকাল এদিক দিয়ে অবহেলিত। অথচ ১৯৫০ সালে পাকিস্তানের কমান্ডার-ইন-চীফ প্রসঙ্গতঃ আমার সঙ্গে বাঙ্গালী ছেলেদের কথা আলোচনা করবার সময় বলেন যে সে বছর কাকুলে, পাকিস্তান মিলিটারী একাডেমীর ক্যাডেটদের মধ্যে মাত্র তিনটি বাঙ্গালী ছেলে ছিল, তাদের কর্মপটুতার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন সে বছর একাডেমীর ছাত্রদের মধ্যে তারাই ছিল সর্বোত্তম তিনটি। সুতরাং বলতে পারা যা যে, সামরিক শিক্ষা লাভ করলে বাঙ্গালী ছেলেরা সর্বোত্তম সামরিক অফিসার হতে পারবে। সেদিন থেকে যেখানে সুযোগ পেয়েছি বাঙ্গালীর সামরিক যোগ্যতার কথা বলেছি । ১৯৬৫ সালে যুদ্ধে বাঙ্গালী ছেলেরা বিক্রম ও সাহসের প্রকৃষ্ট প্রমাণ দিয়েছে। তাই আমার বিশ্বাস গুর্খা সৈন্যরা যদি তাদের জন্য আলাদা রেজিমেন্ট রচনা করতে পেরে থাকে, তা হলে বাঙ্গালী ছেলেরাও যা কিছু বাধা ও অসুবিধা থাকে, সে সব অতিক্রম করে বীর সৈনাদের সহযাত্রী হবার যোগ্যতা রাখে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এমত সুযোগ দিলে আমাদের দেশ রক্ষার জন্য অন্য কারও উপর নির্ভর করার প্রয়োজন হবে না, পরন্তু তাদের সহযোগিতায় সারা পাকিস্তানের জন্য অজেয় বীর সেনাদলের গঠন করবার সুযোগ পাব। ভৌগলিক দিক দিয়ে আমরা যেমন ভাবে অবস্থিত, তাতে মনে হয় বাঙ্গালীর হাতেই বাংলা দেশ রক্ষা করার দায়িত্ব অর্পণ করা প্রয়োজন। সাগর পেরিয়ে দেশরক্ষা বাহিনী এসে তাদের কাজ তেমন তৎপরতার সঙ্গে সাধন করতে পারবে না, যেমন বাঙ্গালী ছেলেরা পারবে। সুতরাং এক দিন দেশরক্ষা বাহিনী সৃষ্টি করবার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সে দিক দিয়ে অবহিত হওয়া বিশেষ প্রয়োজন। আমার মনে হয় ছাত্রদের বর্তমান কর্মবিমুখতার এই প্রচেষ্টায় ইতি ঘটবে এবং তারা নুতন কর্মঠ জীবন গড়ে তুলবার সুযোগ পাবে।

সামরিক শিক্ষা অন্ততঃ দুটি বৎসরের জন্য পরিচালিত হলে, ছাত্র ও ছাত্রীদের মধ্যে নিয়মানুবর্তিতার যে বীজ তাদের জীবন ক্ষেত্রে বপন করা যাবে তার ফলে তারা সারা জীবন একটি নূতনত্বের স্বাদ পাবে যার প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনযাত্রাকে সহজ ও নিয়মতান্ত্রিক করে তুলবে। শারীরিক উন্নতির ফলে তাদের মানস ক্ষেত্রেও অভিনবত্ব আসতে বাধ্য। তাতে তাদের চিন্তাক্ষেত্রের বিকাশ ঘটবে ও সাধারণ পঠনীয় বিষয়ে গভীরতর ভাবে তারা মনোনিবেশ করতে পারবে, এবং এমন ব্যবস্হায় যাদের মধ্যে সামরিক জীবনের স্পৃহা জাগবে, তাদের দেশপ্রীতি ও দেশের প্রতি কর্তব্যবোধ নিশ্চিতভাবে দেশ রক্ষার জন্য অধিকতর উপযুক্ততা দান করবে। এর ফলে তারা যে কেবল দেশ রক্ষার কার্য করবে তাই নয়, অবহেলিত এই বঙ্গভূমি তখন নুতন মর্যাদা লাভ করবে এবং দেশে আর্থিক দিক দিয়েও যথেষ্ট সমৃদ্ধি আনা সম্ভব হবে।

শিক্ষার ধারা মধ্যে বিজ্ঞানের শিক্ষার জন্য বর্তমানে যে ব্যবস্হা রয়েছে তাতে বিষয়টি তাত্ত্বিক ভাবে শেখানর ফলে, তার ব্যবহারিক দিকের সঙ্গে ছাত্রদের ঘনিষ্ঠ পরিচয় হয় না, অথচ বিজ্ঞানের প্রয়োগই অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানের শিক্ষা প্রধানতঃ পরোখগত (Experimental) ও ব্যবহারিক হওয়া প্রয়োজন। ছেলেরা যা কিছু ক্লাসরুমে শেখে তার প্রয়োগের জন্য যথেষ্ট সুযোগ তাদের সামনে থাকা দরকার। এরূপ সুযোগ ছাত্রেরা কেবল প্রচুর পরিমাণে পরোখের মাধ্যমে পেয়ে থাকে। বিভিন্ন কারখানা, পরোখঘরে (Laboratory) ও গবেষনালয়ে, যেখানে পরবর্তী কালে তাদের যোগ দিতে হবে, সেখানে তাদের যোগ্যতার বিচার হবে পরোখী কর্মকুশলতার দ্বারা। জীবনে যা কিছু তাকে নুতন ভাবে সম্পাদন করতে হবে, তাও তাদের এই যোগ্যতার উপর নির্ভর করবে; সুতরাং তাদের পরোখের সুযোগ যত অধিক থাকবে, তাদের যোগ্যতার মানদন্ড ততই উচ্চ হবে এবং পরিশেষে প্রকৃতপক্ষে দেশের সেবার সুযোগ এই দিক দিয়েই আসবে। সুতরাং বিজ্ঞানের এই প্রয়োগের দিক কোনোমতেই অবহেলা করা উচিত নয়, পরন্তু ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষককেও এই দিক দিয়া সহযোগী করা বিশেষভাবে প্রয়োজন । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে এই বিষয়টির গুরুত্ব অজানা নয়ে, কিন্তু এদিক দিয়ে তাঁদের অবহেলার ফলে, ছাত্ররা অন্য পথ অবলম্বন করবার সুযোগ খোঁজে এবং সে দিকে প্রবণতা বাড়ে, তখন নিশ্চিতরূপেই সে শিক্ষার পথে মোটেই লাভবান হতে পারে না; পরন্তু তার জন্য পরিবেশটিই অপ্রীতিকর হয়ে পড়ে। এমতক্ষেত্রে শিক্ষার অভাব উচ্ছৃঙ্খলতার সৃষ্টি করে। সুতরাং শিক্ষা ক্ষেত্রের নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখতে হলে কখনো শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কম করলে চলবে না। শিক্ষকদেরও এমনি ছাত্রদের সঙ্গে একত্র কাজ করে, তাদের মনে নূতন প্রেরণা এবং নবীন উদ্দেশ্যের সঞ্চার করা প্রয়োজন। যে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে পরম সহযোগিতা থাকে সেখানে উচ্ছৃঙ্খলতা স্হান পায় না। এইখানেই এই সহযোগিতার মাধ্যেমে ছেলেরা পরমতসহিষ্ণুতার শিক্ষা লাভ করে, সুতরাং শিক্ষকদেরও সে বিষয়ে গভীর মনোনিবেশ দরকার, যাতে শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য চরিত্র গঠনে তাঁরা যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থ হন, অন্যথায় তাঁরা এমন সুবিধা কোথাও পাবেন না। শিক্ষকের সহযোগিতা ছাত্রদের চরিত্র গঠনে একটি বিরাট অংশ গ্রহণ করতে পারে; সে বথা সুস্পষ্ট ভাবে মনে রাখা প্রয়োজন। অন্যত্র আলোচনা সভায় এবম্বিধ চেষ্টা পরিচালিত হতে পারে, যদি যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকেরা এসম্বন্ধে অবহিত থাকেন ৷

অধিকন্তু এই সঙ্গে আরও একটি কথার উল্লেখ করা দরকার। সম্প্রতি যত রকম ছাত্র অশান্তি দেশের মধ্যে দেখা দিয়েছে, তার জন্য দায়ী সত্যি বলতে গেলে ছাত্ররা নয়, পরন্তু এ সবই দেশ শাসনের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার এবং অবিমৃষ্যকারিতারই প্রত্যক্ষ ফল।

আমার স্নেহভাজন শিক্ষক মহোদয়দের কাছে আমার একটি ক্ষুদ্র নিবেদন। আমরা যখন শিক্ষা গ্রহণ করেছি, তখন শিক্ষকদের গভীর জ্ঞান, বিরাট আদর্শ, শিক্ষণকার্যে তাঁদের গভীর মনোনিবেশ, তাঁদের সরল জীবনযাত্রা এবং সর্বোপরি ছাত্রদের জন্য তাঁদের গভীর স্নেহ ও তাদের জীবনকে আদর্শ জীবনরূপে গড়ে তুলবার একান্ত প্রচেষ্টা আমাদের মনকে গভীর ভাবে দোলা দিত। তাঁদের জীবনের ত্যাগ তিতিক্ষ শুধু আমাদের প্রেরণা দিত তাই নয়, দেশের যাবতীয় লোক তাঁদেরকে অতিউচ্চ সম্মানিত আসন দান করত । আজিকার দিনে এমত অবস্থার কথা কি আমরা চিন্ত করতে পারি? পরিতাপের সঙ্গে আমি লক্ষ্য করেছি বর্তমান কালের লিক্ষক সম্প্রদায়ের অনেকই ছাত্রদের ক্রিয়াকলাপে নিজেদের সহযোগিতা দেন না। ছাত্র সমাজের অভিজ্ঞতার অভাববশতঃ এই সকল অনুষ্ঠানে তাঁদের সহযোগিতা একান্ত দরকার। যদি এখানে এই ন্যায্য সহযোগিতার অভাব ঘটে তাহলে চলার পথের নির্দেশ আসবে অন্যত্র থেকে? সেটা মোটেই বাঞ্ছিত নহে। তখন শিক্ষকের সঙ্গে অসহযোগিতা বন্ধ করা কঠিন হবে।

শিক্ষকদের দৃষ্টি আর একটি বিষয়ের প্রতি আকর্ষণ করা প্রয়োজন মনে করি। দেশ বিভাগোত্তর কালে যতই সময় কাটছে ততই দেখতে পাচ্ছি আমাদের ছাত্রেরা ইংলন্ডে উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য গেলে তাদের এখন উচ্চতর ডিগ্রীর পরিবতে নিমতর ডিগ্রীর জন্য ভর্তি করা হয়। অথচ বিভাগ পূর্বকালে এরূপ অসুবিধা হ’ত না। বর্তমানে পাকিস্তানী ছাত্রদের Ph.D. ডিগ্রীর জন্য যেখানে চার বৎসর সময় লাগে সেখানে পূর্বে মাত্র বছরের গবেষণা দরকার হ’ত, কখনও বা তার অপেক্ষা কম সময়েও তারা সেখানকার কাজ শেষ করেছে। কাজেই বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্য ঐ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষ হতে পারছে না এর কারণ সম্বন্ধে তাঁদের অবহিত হওয়া দরকার। ও দেশের গ্র্যাজুএট যা দু’বছরে সম্পাদন করে আমাদের এম, এ, বা এম, এস-সি, দের জন্য সেই কাজ চার বৎসর লাগে কেন? আমি দেখে বিস্মিত হয়েছি সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পূর্বে ছেলেমেয়েরা পাবলিক স্কুলে যেসকল পরোখের কাজ সম্পাদন করে, তার শিক্ষা আমরা M.Sc. ক্লাসের পূর্বে দিই না। এই বিষয়ে কারণ অনুসন্ধান করলেই তাঁরা বুঝতে পারবেন, ছাত্রদের সঙ্গে কেবল পাঠচক্রেই নয় পরন্ত সর্ববিষয়ে গভীরভাবে সহযোগিতার প্রয়োজন। আমার ছাত্রজীবনে যেভাবে শিক্ষকদের সান্নিধ্য পেয়েছি বর্তমানের ছাত্রেরা অন্ততঃ সেটুকু পেলেও তারা শিক্ষার মান সহজে উন্নীত করতে পারবে ।

আজ এই মহান দিনে ছয় বছর পর এই সমাবর্তন উৎসবের আয়জন করতে পারায় আমার স্নেহভাজন উপ-চ্যান্সেলার সাহেবকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই, তাঁর যাবতীয় চেষ্টা ফলবতী হোক কামনা করি। তাঁর প্রচেষ্টার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নূতন আলোকের স্নিগ্ধ রশ্মিমালা নিঃসৃত হতে শুরু করেছে, তাতে বিদ্যার্থীদের কল্যাণ হোক, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের ভবিষ্যতের আশা ছাত্রমন্ডলীকে যে নূতন সুখ-সুবিধা দিবার সম্ভাবনা জানাচ্ছে তাঁর সেই শুভ-কর্মের জন্য জানাই মোবারকবাদ; তিনি বিশ্ববিদ্যালয়জীবনকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলুন। বিগত দিনের শিক্ষাবিরোধী চেষ্টার ইতি ঘটিয়ে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনের নূতন ও মধুর আনন্দের বিকাশ ঘটান এটাই আমাদের একান্ত কামনা।

পরিশেষে বলতে চাই. আজিকার এই দিনটি প্রতিটি ছাত্র ও ছাত্রীর জন্য বিশেষভাবে স্মরণীয় দিন। আজ কেবল যে তারা শিক্ষার শেষে পুরস্কার নিয়ে সন্তুষ্ট হবে তাই নয়, আজিকার এই মহাসম্মিলনের পর তাদের সমাজজীবনে গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে । জীবনের পথের সম্বল তার চিন্তার ক্ষেত্রে যা সঞ্চিত হয়েছে, তার দ্বারা তার প্রতিটি কাজ, কথা প্রভাবিত হবে । প্রত্যেকটি এই জন্যই তার দায়িত্ব আজ কেবল নিজ আত্মীয়স্বজনের কাছে নয়, পরন্তু সারা দেশের লোকের সঙ্গে যে সম্বন্ধ বিদ্যমান, তাতে নুতন আলোক পতিত হবে। যা কিছু সৎ ও সত্য তার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়বে, এবং মানসিক স্তরে যেখানে আজ তারা উপনীত হয়েছে, সেখান থেকে সকলের প্রতি জীবনের কর্তব্যবোধের অনুযায়ী তার ব্যবহার তাকে পরিচিত করবে । এই দায়িত্ব নিয়ে আজ তোমরা কেবল নিজ নিজ নামেই পরিচিত হবে না আজ তোমার পরিচয় হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সঙ্গে জড়িত । সুতারং বহির্বিশ্বে তোমার দেশ ও জ্ঞানপিযুষাদাত্রী তেমার মাতার (আলমা মাতের) পরিচয় তে।মার মাধ্যমে লোকে লাভ করবে। সুতারং তোমার নিজের অর্জিত সিদ্ধি ও সুকুতি যত মহান হবে, তোমার আলমা মাতেরও তপ সম্মান অন্য দেশের কাছে পাবে । এই মহান কর্তব্যের কথা অবহিত হয়ে তোমার কাজে তোমার চিন্তাধারায়, তোমার ব্যবহারে তেমনি আনন্দে দেবার চেষ্টা করবে যেমন তুমি শোভন ও সুন্দর বলে মনে কর। আজ তোমাদের ভবিষ্যতের চলার পথের সবল যা হাতে নিয়েছ, পরম করুণাময় আল্লাহ তোমাদের সেই সবল সম্পূর্ণ রুপে ভোগ করবার সুবিধা দিন, তোমরা দেশের যে কোনো ক্ষেত্রে কাজ কর সেখানে নূতন আশার আলোকে জ্বাল এবং সে আলোক চির-উজ্জ্বল হোক, চির আয়ুষ্মান হোক- এই আমি মনেপ্রাণে প্রার্থনা করি।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →