Main menu

বাংলাদেশে এপলিটিকালিটির নয়া সুরত

আমি বলতে চাই, যে এপলিটিকাল বর্গটিকে আমরা বিভিন্ন বলায় লেখায় খোচায় নির্দেশ করতে চাই, তার অন্তত তিনটা ভেরাইটি আছে। এদের চেহারা আলাদা, কিন্তু ফলাফল একই। মানে অরাজনৈতিক কেটাগরিটারে আপনারা যেভাবে বোঝেন, সেইভাবে বুঝতে থাকলে দেশের পলিটিকাল অচলায়তনটারে ঠিকভাবে থিওরাইজ করতে পারবেন না। অর্থাৎ যারা ‘আই হেইট পলিটিক্স’ বলে কেবল তারাই এপলিটিকাল হইলে একটা হোল জেনারেশনের পলিটিকাল নিউট্রালাইজেশন এত এফেক্টিভলি ঘটতে পারে না। আমি এপলিটিকাল হিসাবে তাদেরকেও ইন্ডিকেট করতে চাই যারা নানান পলিটিকাল তৎপরতার ভিতর দিয়া আল্টিমেটলি একটা শূন্য ফলাফলেই নিয়ে যায়। এখন একটা অবজেক্টিভ পলিটিকাল প্লেইনে যদি আমি এই এপলিটিকালদের প্লট করি, তাইলে পাওয়ারের নিরিখে এরা, প্রেডিক্টেবলি, পাওয়াররে সার্ভ করে। অর্থাৎ বর্তমান বাকশালেরে।

এই তিনটা ভেরাইটির একটা তো ট্রেডিশনাল ‘আই হেইট পলিটিক্স’ গ্রুপ। যাদেরকে সহজেই চেনা যায়। এই গ্রুপটা বর্তমানে ডেমোক্রেটিক টাইমটার চেয়ে লেস ভিজিবল। মানে এখন এমন ক অক্ষর গোমাংস ধরনের এপলিটিকাল থাকাটা লেস ফ্যাশনেবল হইতে পারছে। ফলেই এই গ্রুপটারই দুইটা ফ্যাকশন এক ধরনের পলিটিকাল এসথেটিক্সের ভেতর নিজেদের রিলোকেট করছে। এস্থেটিক্স নিয়ে পলিটিক্সের কথা আমি বলতেছি না, আমি বলতেছি এস্থেটিক্সের একটা সার্টেইন রূপের কথা, যেইখানে পলিটিক্স ইটসেলফ একটা এস্থেটিক অব্জেক্ট হিসাবে ট্রিটেড হয়। যেইটা আসলে এস্থেটিক্সের ঘটনা, এবং এস্থেটিক্সের এই ব্রাঞ্চ এর প্রকল্প হচ্ছে পলিটিক্সের এস্থেটিসাইজেশন। অর্থাৎ যেইটা ডিভয়েড অব রিয়েল পলিটিক। রিয়েল পলিটিক বলতে যেই পলিটিক্সএর ডাইনামিকস দিয়ে পাবলিক লাইফ ডমিনেটেড হইতেছে সেইটা ইটসেল্ফ এবং সেইটারে কার্যকরভাবে বুঝতে পারা এবং সেই অনুযায়ী ইন্টারভিন করতে পারা এই তিনটার কম্বাইনিং ও একই সাথে আলাদা আলাদা কিন্তু ওভারল্যাপিং ইন্টেলেকচুয়াল এফোর্টরে বুঝাইতেছি। আমার আর্গুমেন্ট হইতেছে আপনি যদি রিয়েল পলিটিকের ভেতর না থাকেন আপনি এপলিটিকালই।

তো এই পলিটিকাল এস্থেটিক্সের দুইটা ধারা আমি দেখতে পাই, যেই দুইটা ধারায় পুরাতন এপলিটিকাল গ্রুপটা ভাগ হইয়া নিজেদের পলিটিকাল হিসাবে তুইলা ধরতেছে। তেরোর শাহবাগ এবং আঠারোর ভোটচুরির পর এদের এপলিটিকাল আদি আর্কিটাইপটা কমপ্লিটলি আউট অব ফ্যাশন হইয়া যাওয়ায় এক ধরনের পলিটিকালি কনশাস এমন ইমেজ তৈরির মেকানিজমে ঢুকতে হইছে। এদের বেশিরভাগই জেন জি, অনেকগুলো মিলেনিয়াল আছে। অর্থাৎ এপলিটিকাল আদি গ্রুপটা ইডিওলজিকালি ছত্রভঙ্গ হইয়া যাওয়ায় এরা খুব নেচারালি এই দুইটা ধারার একটায় নিজেদের আবিষ্কার করছে; মানে এদের কাছে এইটাই পলিটিক্স। কিন্তু এদের এই পলিটিক্স যেহেতু রিয়েল পলিটিকরে ডিসরিগার্ড করে, ফলে রিয়েল পলিটিক একটা স্থিতাবস্থার ভেতর ঢুইকা যায়, যা কিনা পর্যায়ক্রমে পাওয়াররে সার্ভ করে। ফলে এদেরকে, ইন ইফেক্ট, যদি পাওয়ারভুক্ত গোষ্ঠী হিসাবে চিহ্নিত না করি, অন্তত, এপলিটিকাল গ্রুপ হিসাবে ইন্ডিকেট করা লাগে।

এইখানে আরও বইলা রাখা দরকার, তেরো এবং আঠারো না ঘটলে নব্য এপলিটিকাল ধারাগুলির পোলাপানরা যে নেসেসারিলি নিজেদের আদি এপলিটিকাল গ্রুপটাতেই বিলং করতো, তা না। মানে আমি বলতে চাইতেছি আদি, ডিরেক্ট এপলিটিকাল গ্রুপটা তার ডোন্ট কেয়ার পলিটিক্সের আবেদন হারায় ফেলায়, যে পলিটিকাল এস্থেটিক্সের দুইটা ধারা ইমার্জ করছে সেইটা এজ এন এস্থেটিক নানান পটেনশিয়ালের পোলাপাইনরেই অ্যাপিল কইরা থাকতে পারে। কিন্তু এর ইমার্জেন্স যে একটা এপলিটিকাল গ্রুপের সাপ্লিমেন্ট হিসাবে হইছে(নট টু সে দ্যাট আদি গ্রুপটা এখন আর নাই, ওইটাও আছে), এবং এখনো একটা এপলিটিকাল সাইকেলরে পার্পেচুয়েট করতেছে, ওইটা হইলো আমার কনসার্নের জায়গা।

এখন আলাপ আসে, পাওয়ারে যারা আছে তারাও কি এপলিটিকাল, আমার বানায় দেয়া ঘেড় অনুসারে? পাওয়ার, বিশেষ কইরা মেন্ডেটহীন বা পাবলিকের বায়াত ছাড়া যে পাওয়ার সেইটা পলিটিক্সের রেল্মের ভেতর যদিবা পড়েও(যেইটা এপলিটিকালরাও পড়বে, পলিটিকো-ইডিওলজিকাল কোঅর্ডিনেটের ভেতর সবই আসবে), রিয়েল পলিটিকের জায়গাটারে ডিল করে ‘কন্ট্রোল’ করার জায়গা থেকে। অর্থাৎ পাবলিক ডিস্কোর্সের বাইরে এক ধরনের নেপথ্যের কারিগর হিসাবে জন মতামতকে স্তিমিত রাখে, নিয়ন্ত্রণ করে। নব্য এপলিটিকাল এবং বাকশালদের অমিল হইলো, এপলিটিকালদের তৎপরতা ডিভয়েড অব রিয়েল পলিটিক, আর বাকশাল একটা এক্সটার্নাল জায়গা হইতে রিয়েল পলিটিকরে কন্ট্রোল করে যে কন্ট্রোলের বেসিস হইলো, এক্সক্লুসিভ ইনসাইডার নিউজ(প্রাসাদ গসিপ বলা যাইতে পারে?), গবমেন্ট স্পন্সরড প্রোপাগান্ডা, পাবলিক স্পেকুলেশনের ওপর সেন্সরশিপ(গুজব দমনের নামে)ইত্যাদি।

তাইলে নব্য এপলিটিকালদের এই দুইটা ধারায় কারা থাকতেছে? একটা ধারা, রাইসুর কালচারাল পলিটিক্সের ধারা। এইটাতে যারা ঢুকছে বা নিতেছে তাদের কাছে বাকশালেরা হইলো ফেসিস্ট। কিন্তু বাকশালের বিরোধিতা যারা করে তারাও ফেসিস্ট। যে কোন গণ তৎপরতা এদের কাছে ফেসিজমের সূচনাবিন্দু। ভোটাভুটির ডেমোক্রেসি খুবই চিপ আইডিয়া। কারণ তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন হয়, ফেসিজম? সাম্যবাদ বাজে আইডিয়া, কারণ সাম্যবাদের অর্থ হইলো সবাই সমান, কিন্তু সব মানুশ তো সমান না! মানে সাম্যবাদের অর্থ এদের কাছে এই জিনিস। এই কেটাগরিটার আরেকটা লক্ষণাত্মক বৈশিষ্ট্য হইলো, বিএনপির প্রতি এদের যতটা না সমর্থন তার থেকে সিম্পেথি অনেক বেশি। যার ফলে বিএনপি যে কেবলই নিজেদের ভুল পলিটিকাল সিদ্ধান্তের কাছে ধরা খাইয়া যাইতেছে, সেই নেরেটিভ উৎপাদন করে। এদের একটা নিজস্ব ডেমোক্রেটিক অবস্থান অবশ্য আছে, সেইটা হইলো প্রচুর ভিন্ন ভিন্ন মত একটা আরেকটার বিপক্ষে দাড়া করায়ে রাখা। এক মতে ধাক্কা খাইয়া আপনি আরেক দিকে ধাইবেন তখন উলটা মতে ধাক্কা খাইবেন। ফলে ইডিওলজিকালি নো নড়ন চড়ন দশায় চইলা যাইবেন। ইডিওলগ না হইয়াও ইফেক্টিভলি আপনি মোটামুটি একটা জীবন্ত জড় বিন্দুতে রূপ নিবেন। কোন বেটার প্রোপোজাল আপনার দুনিয়ায় নাই। আপনার ভেতরে এই সবের ফলে যে ডিটাচমেন্ট তৈরি হবে, এইটাই এদের এপলিটিকালিটির গোড়া। কিন্তু ভাবটা এমন হবে যেন, পলিটিক্স আপনার পোলার হাতের মোয়া।

এখন এই সকল অবস্থানের সমস্যাটা কইয়া রাখা দরকার। আপনারে ভেদ বুঝতে হবে, পিপলের নড়াচড়া বাদে পাওয়ারের বিপক্ষে কোন কার্যকর মুভমেন্ট দানা বাধবে না। ফলে পিপলরে লাগবে যে কোন পলিটিক্স ইফেক্টিভ করতে হইলে। পিপল যেন মব হিসাবে দানা বাধতে না পারে পিপলরে রিপ্রেজেন্টেশনের আমব্রেলার নিচে আনতে হবে। ভোট হইল তার একটা উপায়। ভোটের ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন হয় ঠিকই, তবে সেইটা পলিটিকাল সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন; কোন ইডিওলজিকাল-কালচারাল সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন না। ডেমোক্রেসিতে পলিটিকাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা হইলো মেয়াদ-নির্ভর তরল সংখ্যাগরিষ্ঠতা। পলিটিকাল তৎপরতাসাপেক্ষে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেশে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা ইডিওলজিকালি শেইপ চেইঞ্জ করতে পারে। পলিটিকাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা ইজ আ নেসেসারি থিং, যদি আপনি পিপলের ভেতর এই বোধ না দিতে চান যে দেশ সংখ্যালঘিষ্ঠদের শাশনে চলতেছে। সংখ্যালঘিষ্ঠের শাশন কি রকম? এখন এই জিনিস রাইসু ধারার লোকজন আরেকটা কারণে অপছন্দ কইরা থাকে, সেইটা হইল প্রত্যেকের একটা কইরা ভোট। মুর্খেরও একটা, রাইসুরও একটা। বলদেরও একটা, সেয়ানারও একটা। শয়তানের একটা, আউলিয়ারও একটা। মানুশ তো সমান না। সাম্যবাদ তো ভুয়া! দেখেন একজন মোটা লোকের জন্য একটা সিট দিলে কি আমরা শুকনা লোকটারে অর্ধেক সিট দিবো? সিট আমরা এমন বানাবো যেন মোটা শুকনা উভয়েই আরামে বইতে পারে। অর্থাৎ সকলের আরামের অধিকারটারে মানতে হবে। সাম্যতারে এই জায়গা হইতে বুঝলে বেটার। অবশ্যই তার আগে আপনারে মানতে হবে, কোন কোন জিনিস আপনি সকলের জন্য সমান বা বেসিক হিসাবে মানতে চান। মানে আপনি কি বলদেরে পলিটিকাল রাইট এক্সারসাইজ করতে দিতে চান? আমি কইতে চাই, এইটা রাইটেরও বিশয় না। এইটা হয়ত কারো অনলি পলিটিকাল এক্সপ্রেশন। সবাইরে দিয়া আপনি সর্বক্ষণ আন্দোলন করাইতে পারবেন না। হোল পপুলেশনের জাস্ট ৩% যোগ দিলেই কোন আন্দোলন ঐতিহাসিক হইয়া যাইতে পারে। মানে সবচেয়ে ঐতিহাসিক আন্দোলনটাতেও আপনি পিপলের ৯০% পাইবেন না। তাতে কি আপনি পিপলরে বামদের মত অশিক্ষিত বাঙ্গু গাড়ল কইয়া গাইলাইবেন? বরং আপ্নারে এনশিওর করতে হইবে, সকলেই যেন তার পলিটিকাল মতটা কোন না কোনভাবে জানাইতে পারে এবং তার মাধ্যমে একটা চেইঞ্জ ঘটাইতে পারে। রিগার্ডলেস অব দেয়ার আইডেন্টিটিস। এইটারে নেচারাল রাইট হিসাবে প্রিজার্ভ করতে হবে। আন্দোলন সংগ্রাম এইটা কোন সময়ই কোন দেশেই সকলেই করে না। এইটা সবখানেই পলিটিকাল ক্লাসের কাম। পলিটিকাল ক্লাসেরই কাম হইল, পলিটিক্সরে পিপল নির্বিশেষে ইনক্লুসিভ রাখা। সেইটার একটা পন্থা হইলো ভোট। পিপল এইটুকুই চায়। পিপল ইটারনাল আন্দোলন সংগ্রামের বাস্তবতা চায় না। তাই হরতাল হইলে গাইলায়। তার মানে সে পলিটিক্স হেইট করে না। তার উপর হরতাল চাপায় দেয়া হইতেছে এইটা সে হেইট করে। সে পলিটিকাল এক্সপ্রেশন ঠিকই চায়। সেইটা না থাকলে তার ভেতর রিজেন্টমেন্টও তৈরি হয়। সাম্যতা মানে সবাই একরকম ঘোষণা করা না, এইটার মানে যে যেরকমই হউক এভরিওয়ান উইল বি সার্ভড ফেয়ারলি বাই দা সিস্টেম।

বাংলাদেশের পলিটিক্সের আরেকটা সংকট হইলো, বিএনপি যে পলিটিক্স বোঝে না, আওয়ামী লীগ যে মিসির আলির মতন সব কিছু বুইঝা ফেলে এই রকম একটা নেরেটিভ তৈয়ার করা। রাইসু ধারা এই কামটাও করে। এই নেরেটিভগুলি অনেক সময়ই ঘটনা প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন আঠারোর নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়াটারে রাইসু বিএনপির কামাল হোসেনের ফাদে ধরা খাওয়া হিসাবে দেখে। এইটা বিএনপিরে কামাল হোসেনের চেয়ে ছোট বানায় ফেলে। বাট বিএনপির হিস্ট্রি কয় বিএনপি ডেমোক্রেটিক সিস্টেমের উপর ভরসা রাখা দল, চৌদ্দর পর আবার ইলেক্টোরাল প্রসেসে এন্ট্রি নিতে তাদের একটা কামাল হোসেন লাগত। কেন ইলেক্টোরাল প্রসেসে এন্ট্রি নিতে হইতো? আওয়ামী লীগের আন্ডারে ইলেকশন কেমন হয়, সেইটা ডেমনস্ট্রেট করতে। অর্থাৎ এইটা বিএনপিরই পলিটিকাল স্টেপ কামাল হোসেনরে নেয়া, নট কামাল হোসেনের ফাদ। এখন কথা হইলো এই কাজ বিএনপি চৌদ্দর ইলেকশনে না কইরা ভুল করছে, এমন নেরেটিভও পাইবেন। চৌদ্দর ইলেকশন আওয়ামী লীগ নিজেদের আন্ডারে ঘটাইতে সংবিধান চেইঞ্জ করছে। ইলেকশনে দুই নম্বুরি করতে যারা সংবিধান পর্যন্ত বদলাইতে পারে, তাদের আন্ডারে ইলেকশনে বিএনপি যায় কেমনে? ছিয়ানব্বইতে খেয়াল করেন, বিএনপি বহাল সংবিধানে ইলেকশন করছে, জিতছে। তারপর বিরোধী জোটের চাপে সংবিধানের চেইঞ্জ করছে নিজেদের ইন্টারেস্টের এগেইনস্টে গিয়া। সেই অনুযায়ী চৌদ্দতে বিএনপির ইলেকশনে না গিয়া আন্দোলনে চালায় যাওয়াটাই ঠিক ছিল। ছিয়ানব্বইতে বিএনপি আনচেঞ্জড সংবিধানে ইলেকশন দিছে, আর চৌদ্দতে আওয়ামী লীগ চেইঞ্জড সংবিধানে ইলেকশন দিছে। বিএনপির লগে আওয়ামী লীগের ফারাক হইলো বিএনপি বিরোধি চাপে পাওয়ার ছাড়ছে, সংবিধানে সংশোধনী আনছে। আওয়ামী লীগ ওই রকম একটা ইলেকশনের পরেও গদি ছাড়েনাই। দুই ক্ষেত্রেই বিএনপির এক্টিভিটিরে মোর ডেমোক্রেটিক একশন হিসাবে দেখা যাইত, তা না হইয়া প্রথম ক্ষেত্রে বিএনপির একশনরে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার হিসাবে দেখা হইছে, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ইলেকশনে অংশ না নেয়াটা বিএনপির ভুল হিসাবে দেখা হইছে। মানে বিএনপির পলিটিকাল স্টেপরে ট্রিভিয়ালাইজ করার প্রবণতা এখনো আছে দেখবেন রাইসু ধারার, যে এমেরিকার স্যাংশন চালে বিএনপির কেয়ারটেকার ইশু মাইর খাইয়া যাইতেছে। এই নেরেটিভগুলি বিএনপির আন্দোলনেরে পাবলিকের দরবারে ইনসিগনিফিকেন্ট কইরা রাখে। রাইসুর এই সকল বয়ানমালাই একটা এপলিটিকাল গ্রুপ তৈরি করছে যারা এগজিস্টিং পাওয়ার ডাইনামিকস সম্পর্কে কনভেনিয়েন্টলি অবলিভিয়াস। ফলে এদের অনর্গল পলিটিকাল ক্যাচালের নেট রেজাল্ট হইলো এপলিটিকালিটি।

এই এপলিটিকাল গ্রুপটারে আমি তেরোর শাহবাগ-শাপলা পরবর্তী ফেনোমেনা হিসাবে দেখি। মানে রাইসু তো শাহবাগের ক্রিটিক ছিলেন। শাহবাগে ব্যাপক জমায়েত, বিচার চাওয়া, তৎপরবর্তী হিস্টেরিয়া এবং আলীগের গদি দখল হইতে উনার টেকএওয়ে হইলো গিয়া, কোন শক্ত পলিটিকাল অবস্থান থাকা যাবে না, যে কোন মুভমেন্টে পাবলিকের দোহাই দেয়া হইলো তা পপুলিস্ট, ফেসিস্ট কাম। এইটারে উনি ভোটের রাজনীতি অব্দি স্ট্রেচ করছেন যে, ডেমোক্রেসিতে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাশন কায়েম হয়, তাই ডেমোক্রেসিই খারাপ। আমি বরং কইতে চাই, শাহবাগ, শাপলা সকল নেগেটিভ ইম্প্যাক্ট সত্ত্বেও দীর্ঘাবসারে এইদেশের ঐতিহাসিক কিছু পলিটিকাল জট খোলায় গুরুত্বপূর্ণ হইয়া থাকবে। নেগেটিভ ইমপ্যাক্টএর রিস্কের কারণে মুভমেন্ট, গণ তৎপরতা নিয়া প্যারানয়া তৈরি হইলে, এপলিটিকালিটির সব থেকে শক্ত বেইজটা সোসাইটিতে তৈরি হইতে থাকে।

আরেকটা ধারা, যেইটারে আমি আঠারো পরবর্তী ফেনোমেনা হিসাবে দেখি। আগেরটার পলিটিকাল এস্থেটিক্স হইলো বিভিন্ন পলিটিকাল-কালচারাল মতামত উৎপাদন কইরা পলিটিকালি রিলেভেন্ট থাকা, যেই মতামতগুলির ভেক্টর যোগফল হইলো শূন্য, মানে এদের সামগ্রিক বিবেচনা হইলো এপলিটিকাল। কিন্তু এই দ্বিতীয় ধারাটার পলিটিকাল এস্থেটিক্স হইলো আওয়ামী বিরোধিতা। মানে আঠারোর ইলেকশনের পরে তো আর ‘আই হেইট পলিটিক্স’ বা ‘উনার বিকল্প কই’ তা তো আর আরামে বলা যাইতেছে না। খচখচ করে মন। তাই এরা বিভিন্ন রকম আওয়ামী বিরোধি নান্দনিকতায় নিজেদের ব্যস্ত রাখতে পছন্দ করে। নন্দন কখনোই কোন ননসিরিয়াস বিশয় নয়। বরঞ্চ যে কোন নান্দনিকতা আপনাকে সিরিয়াসলিই চর্চা করতে হয়। আর একটা ঘোর বাকশালে সেইটা করাই যায়, কারণ বাকশাল সবাইরে মারতে পারে। ফলে এরা যখন মাইর খায়, এবং খেয়াল করে যে মাইরে ব্যথাও সে পাইয়া গেছে, তখন সে নিশ্চিত যে তারাই সঠিক আওয়ামী বিরোধি। এবং সেই ‘স্বৈরাচারবিরোধিতার’ ইজারা তারা বিএনপির মত ‘দক্ষিণপন্থী'(বিএনপি এদের কাছে বাংলাদেশী ইকুইভ্যালেন্ট অব বিজেপি) কারু কাছে ছাড়তে রাজি না।

এইখানে যে সমস্যাটা আমি মনে করি, এদের যে পলিটিক্স বোঝার জায়গাটা ওই জায়গায় নাই কিছু। ফাকা। পার্টি অফিসেই মূলত এদের কান্ডজ্ঞান ভুলায় দেয়ার কান্ডটা ঘটে। এই টুকু বুঝতে পারি, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে এরা বিএনপিরে আওয়ামী লীগের চেয়ে খারাপ মনে করবে, তবে বিএনপি যেহেতু ক্ষমতায় নাই তাই ওইটা আওয়ামী লীগের সমানই খারাপ। এরা মনে করে বিএনপি, জিয়া এরা কম্যুনিস্ট নিধন করছে, সর্বহারাদের খুন করাইছে বাংলা ভাইদের দিয়া, পরে পাবলিকের চোখে ধুলা দিতে বাংলা ভাইরেও খুন করাইছে(এমনিতে এরা সর্বাহারাদের পলিটিকাল পন্থারে ওউন করেনা, ডিটেস্টও করে। কিন্তু বিএনপিরে এটাক করতে সর্বহারা ওউন করা যাইতে পারে বৈ কি)! কিন্তু ছাত্রলীগও অনেক খারাপ(ক্ষ্যাত)! হু! ইনারা মনে করে চৌদ্দ ছিয়ানব্বই এক, ইভেন আওয়ামী লীগের লোকেরাও এই তুলনা করে না- তারা আঠারোর লগে মাগুরারে মিলায় বড়জোর। ইনারা আরও মনে করে এরা আওয়ামী স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে এই পনেরো বছর ধইরা মাইর খাইয়া আসছে, আর বিএনপি পুরাটা সময় গর্তে লুকায় ছিলো। এরা, এই নতুন শিশুরা মনে করে, সাধারণ ঘরের মেয়েরা যে রাস্তায় বাইরইলেই হয়রানির শিকার হয়, এইটা তেতুল হুজুরদের কারণে। আর বিএনপি হইলো তেতুল হুজুরদের আখরা। কিন্তু আওয়ামী লীগেও যেহেতু নারী হয়রানির নজির আছে তাই আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করতে হবে। কিন্তু একজন নারী হয়ে বিএনপির আন্দোলন মানা সম্ভব না।

ঘটনাটা এইখানে কি আসলে? এনারা তাদের আন্দোলনরে দক্ষিণপন্থীদের কাছে ইজারা দিতে চায় না। তো এরা যে সিরিয়াসলি মনে করে তাদের যেটুকু সরকার বিরোধী আন্দোলন সেইটুকু ইজারার ভেতর দিয়া এই সরকার ফল করার রিস্ক আছে এবং সেই রিস্ক তারা নিতে চায় না, বোঝাবুঝির এহেন পরিস্থিতির ভেতর দিয়া তাদের এপলিটিকালিটির স্বরুপ বোঝা যায়। নইলে তারা এইটুকু বুঝতো এই গবমেন্ট যদি ফল করে(যদিও আমি মনে করি এখনই তাদের অত ভয় পাওয়ার মত কিছু হয় নাই), সেইটা বিএনপি ও ‘দক্ষিণপন্থী’দের তৎপরতার ভেতর দিয়াই হবে এবং বিএনপি তখন ক্ষমতাসীন হইলে সেইখানে ইডিওলজিকালি কোনভাবে ওনাদের স্টেইক না থাকলে যে উনাদেরই ক্ষতি(এবং পিপলেরও ক্ষতি। কারণ ক্ষমতাসীন বিএনপি এখনকার বিএনপির চেয়ে আলাদাই হবে)। মানে এদের এপলিটিকালিটি এক ধরনের লেফট এস্থেটিক্সের ঘটনা। যেইখানে আওয়ামী লীগ কখনোই ফল করবে না লেফটদের শুধু এই গ্যারান্টিটুকু দিতে পারলে আমরা এদেশী লেফট লাইনারদের কাছ থেকে আরও তীব্র কিছু আওয়ামী বিরোধিতা পাইতাম। এক ধরনের টোকেন আওয়ামী বিরোধিতা হইলো এই ভেরাইটির এপলিটিকালিটির কি ফিচার। এবং সরকার কখনো বদলাইলে মানে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে এদের অনেকেই এস্থেটিক ইনারশিয়া এবং পার্টি প্রচারিত ডগমার কারণে আইডিওলগ হিসাবে আবির্ভূত হবে। সেইটা আরেক আপদ হবে বটে, যেইটা আমরা ইসলামিস্ট আইডিওলগদের দেইখা বুঝি। এখনই অবশ্য অনেককে দেইখা আইডিওলগ মনে হইতে পারে আপনার, কিন্তু এই রেজিমে পলিটিকাল কোঅর্ডিনেটসে এদের অবস্থান হইলো এপলিটিকাল। মানে রাইসু গ্রুপটার মত বোনাফাইড এপলিটিকাল না।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →