Main menu

দুর্বল কোনো লোকের স্থান বাংলাদেশে বোধহয় এখন থেকে আর নাই – মুহাম্মদ আসাফ-উদ-দৌলা (২০১১)

[সম্ভবত ২০১১/২০১৩ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা প্রেসক্লাবে ‘সাংস্কৃতিক ঐক্য ফ্রন্ট’-এর কোন পোগরামে মুহাম্মদ আসাফ-উদ-দৌলা এই কথাগুলা বলছিলেন। সাল’টা কোন সোর্স থিকা কনফার্ম করতে পারি নাই আমরা। ইউটিউবে উনার ভাষণের ভিডিও’টা এখনো এভেইলেবল। বাছবিচারের জন্য এই ট্রান্সক্রিপ্টটা করে দিছেন হুসাইন হানিফ।]

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম

শ্রদ্ধেয় সভাপতি, আমি খুব কম জায়গায় আজকাল যাই। এবং কে সভাপতিত্ব করবেন এইসব না জেনে আমি কোথাও যাই না আজকাল। আমার ছোট ভাইয়ের মতো মাহমুদুর রহমান সভাপতিত্ব করবে জেনে আমি এসেছি। কেননা সম্প্রতি বিগত এক বছর আমি তাকে একজন সাহসী সৈনিকের ভূমিকায় দেখেছি। দুর্বল কোনো লোকের স্থান বাংলাদেশে বোধহয় এখন থেকে আর নাই।

আমি ১৯৪৭ সালে ফিরতে চাই। ’৪৭ সালের, আমার তারিখ মনে নাই, সেপ্টেম্বর মাস, সেন্ট্রাল ওয়ার্কিং কমিটি মিটিং অফ ইনডিয়ান নেশনাল কংগ্রেস, প্রিসাইডেড ওভার বাই জওহরলাল নেহেরু, বোম্বে। তার মধ্যে একটি লাইন এই লাইনটি আপনারা অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন, তার মধ্যে একজন প্রশ্ন করেছিলেন, এই যে পাকিস্তান হয়ে গেলো ইস্ট পাকিস্তান ওয়েস্ট পাকিস্তান, আমাদের এই ভারতমাতাকে ভেঙে ভাগ করা হলো কিভাবে এই জিনিস আমরা আমাদের ন্যাশনাল সাইকিতে এডজাস্ট করব?

তখন একটা রেজুলেশন এডাপ্ট করা হলো, এই রেজুলেশনটার ওয়ার্ডিং রান লাইক দিস – “উই হিয়ার বাই ডিসাইড টু একসেপট দা প্রেজেন্ট পার্টিশন ফর দা টাইম বিইং”; এই “ফর দা টাইম বিইং” শব্দটি আমি কোনো রাজনীতিবিদ কিংবা সাংসদের মুখে ৪৭ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এই সেনটেন্সটি দ্বিতীয়বার উক্তি করে মানুষকে জানিয়ে দেওয়া, এটা শুনি নি। এবং সেই লক্ষ্যে বিজেপিই থাকুক ক্ষমতায় কিংবা কংগ্রেসই থাকুক ক্ষমতায় আর ইন্ডিয়ার কম্যুনিস্ট পার্টির ক্ষমতায় থাকাও সেটা কোনো মুসলমানের জন্য কোনো সুসংবাদ না। কেননা আমি মনে করি কেননা আমি তাদের সময় বেড়ে উঠেছি, এখানে আমরা যারা উপস্থিত আছি, ডেফিনেটলি সাদেক ভাই, আমার চাইতেও বেশি একটু দেখেছেন; আমরা জানি আমরা কাদের সাথে লেখাপড়া করেছি, কাদের সাথে থেকেছি, কারা আমাদের প্রতিবেশি ছিল, সুতরাং ফর দা টাইম বিইং এর উপরে ভর করে একটা পরিকল্পনা, তাদের অনেক বুদ্ধি তাদের অনেক ধৈর্য, এবং তারা আমাদের মত এই পিয়াজ খাওয়া এই অস্থির জাতি দুদিন পাঁচ দিনের প্ল্যান করে তিন মাসের প্ল্যান করে তারপর আর মুসলমানের কিছু মনে থাকে না। গরম জাতি নাকি খুব। আমাকে আমার অংকের মাস্টার প্রফুল্ল বাবু বলতেন, অংক কী করবি তুই তো ১০০ পাবি না, ওই ৯৮ ৯৯ ই পাবি, তার কারণ তোরা গরুর গোশত খাস আর পিয়াজ আর রসুন খাস, তোরা হল গরম। তো গরম হলে নাকি গণিত হয় না। এইটা প্রমাণ করার জন্যই ২০০ তে ২০০ পেয়েছিলাম আমার প্রবেশিকা পরীক্ষায়। তো যাই হোক, এইভাবে মানুষ হয়েছি, এবং ক্লাসে প্রথম হয়ে কোনোদিন আমার রোল নাম্বার ১ হয় নাই। আমার রোল নাম্বার টু। আমি জীবনে প্রথম রোল নাম্বার ১ হযেছি ১৯৪৮ সালে। এবং আমার সাথে যে দ্বিতীয় হতো সে ইন্ডিয়ার ১৯৫৮ ব্যাচের অল ইন্ডিয়া আইএসে প্রথম। তার নাম তুষার কান্তি ঘোষ। ওয়েস্ট বেঙ্গলে চীফ সেক্রেটারি ছিল। তো, হি ইউজড টু হেভ রোল নাম্বার ১ এন্ড আই হেড রোল নাম্বার টু। এইভাবে আমার ১৯৪৩ ১৯৪৮ পর্যন্ত কেটেছে জিলা স্কুলে।

আমাদের সকলে যদি একটি জিনিস মনে রাখি সেই লক্ষ্যে একটি কাজ হচ্ছে, অবিরত ভাবে অবিরামভাবে ১৯৭১ ছিল তার একটি স্টেপ। এটা যদি বাংলাদেশের মানুষের প্রতিকৃতি হয়… আজকে আমি কয়েকটা কথা বলব যা আপনারা রেকর্ড করবেন, আমার বয়স যা হয়েছে, আর সময় টময় নেই, লিখে যেতে পারব না। যেগুলি আপনারা লিখবেন, কারণ আমি মিথ্যাচারণ করি না, আমি মিথ্যা কথা বলি না, আল্লাহ আমার সাক্ষী। সেই হিসাবেই আমি কয়েকটা কথা বলতে চাই।

যে ফারাক্কা করতে পারে, যে তিস্তা বাধ করতে পারে, যে টিপাই মুখ করতে পারে, সে আমার বন্ধু হতে পারে না। সহজ কথা। যে আমার পানির পথ বন্ধ করে দিতে পারে সে আমার বন্ধু হবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। যার দেশে যেতে হলে সকাল ৪টা থেকে ফকিরের মতো লাইন তিন কিলোমিটার দিতে হয় গুলশানে আমি তাদের বন্ধু বলে মনে করি না। তো আমি এই বাংলাদেশের অনেক অভিজ্ঞতা, আমি দুয়েকটি অভিজ্ঞতার কথা বলেই শেষ করে চলে যাব।

একটি হচ্ছে বন্ধুর তো কতগুলি পরিচয় থাকে। বন্ধুর কতগুলি লক্ষণ থাকে। আমি বাণিজ্য সচিব ছিলাম, রিটায়ারমেন্টের ঠিক আগে। শেষ পর্যন্ত অনেক কথা বলে আমার ভারতীয় প্রতিপক্ষকে সার্কের মিটিংয়ের ঠিক আগে, আমি তাকে ১৩৬ টি পণ্যের একটি তালিকা করি। অরজিনাল তালিকা ছিল প্রায় ৩০০। এটা থেকে কমিয়ে কমিয়ে একেবারেই যেটাতে আপত্তি করবার কথা নয়, একেবারেই ‘নাকচ’ এইরকম দেখে একটা তালিকা দেই ১৩৬ টি পণ্যের। সেই ১৩৬ টি পণ্য, উনি বললেন, সাত দিনের মধ্যে আমি অন্ততপক্ষে ৫০ টি পণ্যের এন্ট্রির কথা দিয়ে যাচ্ছি আপনাকে। ওনার কথা কোথায় আমি জানি না। উনি এখনো বেঁচে আছেন দিল্লির গর্ভনর রিটায়ার্মেন্ট। এরপর দিল্লির গর্ভনর হয়েছিলেন কিছুদিন। একটি পণ্যের প্রবেশ-অধিকার বাংলাদেশ পায় নি। আমি রিটায়ার করেছি ১৯৯৫ সালে।

এই পানির বিষয়ে সাদেক ভাই খুব, বাইরে থেকে যারা সরাসরি ভাবে যুক্ত ছিলেন উনি তাদের মধ্যে থেকে একজন। হি উইল বিয়ার মি আউট।কিন্তু আজকে উনার জন্য কিছু ইনফরমেশন আমি দিয়ে যাই। এই চুক্তির আগের প্রশ্নে আসি। এই পানি যখন ব্যারাজ অপারেট করবার অনুমতি চাইলেন, তখন মিসেস গান্ধির ব্যক্তিগতভাবে লিখা একটি চিঠি বঙ্গবন্ধুর কাছে, আমি তখন ভারপ্রাপ্ত সচিব পানিসম্পদ মন্ত্রাণালয়ের; এই চিঠিটি নিয়ে আমি এবং তদানিন্তন মন্ত্রী যিনি ছিলেন আমরা গেলাম। উনি ওই চিঠিটি মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। দিস ইজ হিস্ট্ররি, ইউ মাস্ট রিমেম্বার।

তাকে বলা হল যে, বঙ্গবন্ধু জিজ্ঞেস করলেন যে, কি, তো চালু করবে তো, বলছে এক্সপেরিমেন্টালি চালু করবে। পারমিশন দিয়ে দিই। আমি বললাম স্যার পারমিশন না দেওয়া ভালো। কিন্তু হঠাৎ করে একটা পারমিশন খারাপ, পারমিশন দেওয়ার চেয়ে চুক্তির মতো, চুক্তি না থাকা ভালো। উনি বললেন যে না না না এটা শুধু তো ওয়ান ট্রায়াল বেসিস বলেছে, ৭ দিনের জন্য। আমি বললাম স্যার আমি জানি না, আমার এই ধারণা। আমার তো বেশি কথা বলা সাজে না, আমি তো আবার মুক্তিযোদ্ধাটোদ্ধা না, আমার নানা অসুবিধা। তো সুতরাং আমার ইয়ে হলো তো যাই হোক ওটা তার উনি চিঠির উত্তর দিয়ে দিলেন সামান্যভাবে। হ্যাঁ আপনি, ওই কথাটি আমি জোর করে আমি এবং বিএম আব্বাস জোর করে ঢোকালাম ওই সাত দিনের জন্য এক্সপেরিমেন্টালি আপনি চালু করতে পারেন, কিন্তু এটা পারমানেন্ট চালু নয়। এটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে। এই সংবাদটি অনেকে জানেন না। কিন্তু সেই যে চালু হয়েছে হল, সেই চালু কিন্তু আর কোনোদিন, আর দ্বিতীয় কোনো পত্র আসে নি কোনো অনুমতি চাইবার।

এবং ১৯৯৬ সনে যখন নতুন একটা চুক্তি হল, আওয়ামিলীগ সরকার করলেন; এই চুক্তিটি আমার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল আমার কমেন্টের জন্য। একজন এমপি সাহেবকে দিয়ে। আমি এর মধ্যে পড়ে অল্প সময় ১ ঘণ্টার মধ্যে তাও অতো দেখতে পারি নি। আমি পড়ে দেখেছিলাম যে এর মধ্যে কোনো গ্যারান্টি ক্লজ নাই, কোনো জয়েন্ট অপারেশন নাই, কোনো আরবিট্রেশন নাই। সুতরাং এটা একটা অসম্পূর্ণ চুক্তি। খারাপ চুক্তি। খারাপ চুক্তির চেয়ে না চুক্তি থাকা ভালো। এটলিস্ট চিৎকার করা যায়। তো এই চুক্তিটিকে চুক্তি বলার পরে আর পৃথিবীর কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না। এই জন্য যে তারা বলে যে, ইউ আর অলরেডি আন্ডার আ এগ্রিমেন্ট উইথ ইনডিয়া।

আচ্ছা এই চুক্তির বিষয়ে আপনার সাথে আমি একমত, আমি একটি কমেন্ট করেছিলাম, দিল্লি এয়ারপোর্টে, খুব ডিজেক্টেড হয়ে, কারণ যে ব্যবহার, আপনি যে পদেই থাকেন, আমি যত ছোট কেরানি হই না কেন, ভারতের যিনি সচিব আমিও তো একই মর্যাদা পাওয়ার কথা বোধহয় আমার। তিনি যেভাবে কথা বলতেন আর ওনার পিএসের রুমে বসিয়ে রাখতেন, সেটা আমি তার নাম বলতে চাই না, মনে হতো যে উনি কি কোনো পিএস টিএস না পিএ কি আমার নতুন এপয়নমেন্ট হয়েছে আমি জানি না। যাই হোক এগুলো সব মুখ বুজে সহ্য করেছি। কেননা তখনকার সরকার এত বেশি কৃতজ্ঞতায় একেবারে অবনমিত, যে কোনো কথাই বলা যাচ্ছিল না।

যাই হোক আমরা সেই সভায় থেকে আমি একটা কমেন্ট একটু করে ফেলেছিলাম, পরের দিন স্টেটম্যান খুব জঘন্য একটা এডিটোরিয়াল লিখেছিলেন আমার নাম ধরে, যে অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং পাকিস্তানি মেন্টালিটিসম্পন্ন, পাকিস্তান ফেরত এক অফিসার অসভ্যের মতো এইরকম আচরণ করে বেড়াচ্ছে, ইত্যাদি। আমি ঢাকায় আসার পর বঙ্গবন্ধু আমাকে ডেকে পাঠান। ইউ মাস্ট শেয়ার দিস।

উনি আমাকে ডেকে পাঠান এবং আমাকে মন্ত্রী বললেন যে আপনার কাজ হয়ে গেছে। কী? ভীষণ রাগ উনি, ফিউরিয়াস। তো আমি গেলাম রাত তখন প্রায় পৌনে এগারটা। উনার বাসায়। উনি অফিস থেকে বঙ্গভবন থেকে উনার বাসায়। আমি গিছি, টু মাই একস্ট্রিম সারপ্রাইজ এন্ড শক, হি পুট হিজ হ্যান্ড ইন মাই শোলডার। উনি আমায় ছোটবেলা থেকে চেনেন, উনি আমার আত্মীয় হন। আমি ফরিদপুর গোপালগঞ্জের ছেলে, আমার কাঁধে হাত দিয়ে আমাকে ওই ছোট্ট সিঙ্গেল সোফার মধ্যে টেনে বসিয়ে বললেন যে, আমি তো ভারতের নুন খাই নাই। ইউ লিসেন দিস, আমি তো ভারতের নুন খাই নাই। (একটা শব্দও আমি যদি বাড়িয়ে বলিল বা বানায়ে বলিল আল্লাহ যেন এর শাস্তি আমাকে কবরে দেন) আমি তো ভারতের নুন খাই নাই, সুতরাং তুই যা বলেছিস ঠিক বলেছিস। উনার বাংলা ভাষার উচ্চারণ একটু দক্ষিণ অঞ্চলের ছিল বলছিলাম। তুই চালায়া যা। এই ছিল উনার ভাষা। দিস ইজ হাউ ইট এন্ডেড, এন্ড আই কন্টিনিউড, আই থট আই হেভ গট আ গ্রিন সিগনাল।

সুতরাং এইটাকে আমি দীর্ঘ করে যেই চুক্তির কথা আপনি বললেন ১৯৭৪ সালের ২৪ থেকে ২৮ই মে, রাষ্ট্রপতি ভবন দিল্লি ভি ভি গিরি তখন রাষ্ট্রপতি। এটাই ইউ মাস্ট শেয়ার, ভেরি কেয়ারফুলি।

আমি লাঞ্চ খাওয়ার সময় ভি ভি গিরির ওখানে, বঙ্গবন্ধু তার একটু দূরে মিসেস গান্ধি দাঁড়ানো; যে কারণেই হোক উনি আমাকে খুব স্নেহ করতেন। আমার ধারণা কারণ বহুবার মিটিং করেছি, এবং আমারও মনে হয়েছে খুব বুদ্ধিমতি, খুব বিচক্ষণ মহিলা। আমি উনার পাশে দাঁড়িয়ে একটা ছবি তুলতে গেলাম। আমি বললাম যে, আই ওয়ান্ট টু বি ফটোগ্রাফড উইথ ইউ। আই অ্যাম ভেরি নট গুড লুকিং। উনি হাসলেন। ক্যামেরাম্যানকে ইঙ্গিত করলেন, ছবিও একটি তোলা হল।

ছবি তোলার সুযোগ নিয়ে আমি বললাম যে, ম্যাডাম প্রাইম মিনিস্টার আমি আপনাকে দুটো প্রশ্ন করতে চাই, করা যাচ্ছে না মিটিংয়ে; মিটিংটা একটু পর আবার শুরু হবে, এখন রিসেস। আমার প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, সাদেক ভাই আপনি একটু শুনবেন কাইন্ডলি। আমি বললাম, কুড ইউ হ্যাভ অপারেটেড দিস ব্যারাজ দি ম্যানার ইউ আর অপারেট ইট নাও, ইফ বাংলাদেশ উড হ্যাভ রিমেন ইস্ট পাকিস্তান? শুধু এই মহিলার বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করতে হয়। উত্তর দিলেন কী সুন্দর। বললেন, পাস অন টু দি নেক্সট কোয়েশ্চান। এটাকে বলে বুদ্ধিমত্তা।

আমি বললাম, মাই সেকেন্ড কোয়েশ্চান ইজ কুড ইউ হ্যাভ অপারেটেড দিস ব্যারাজ দি ম্যানার ইউ আর ডুয়িং ইট নাও, ইফ ইট ওয়ার আ পার্ট অফ ইন্ডিয়া? শি ওয়াকড এওয়ে এন্ড মিট শেখ মুজিব ইন লাঞ্চ। দিস ইজ আর দা স্টোরিজ। দিস স্টোরিজ মাস্ট বি টোল্ড।

সেই ছবি যেটা আছে ইন্দিরা মুজিব চুক্তির। সেটায় বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে কলম ধরে আমি দাঁড়ানো। আমি সমস্ত কিছু জানি। এবং ওই চুক্তিও সই করার সময় একটি ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনাও আপনার জানা উচিৎ কারণ এই আবার কবে মরে যাব বলতে পারব না। এটা বলা হয় নি। এটার সাক্ষি সবাই মরে গেছে। বেঁচে আছি শুধু একজন। কামাল হোসেন। কামাল হোসেন আর আমি। হি ওয়াজ ফরেন মিনিস্টার। আই ওয়াজ ওয়াটার সেক্রেটারি। বিএম আব্বাস ওয়াজ ওয়াটার এডভাইজার। খন্দকার মোশতাক ওয়াজ ওয়াটার মিনিস্টার। বঙ্গবন্ধু ওয়াজ প্রাইম মিনিস্টার। মিস্টার নুরুল ইসলাম ওয়াজ ফরেনট্রেড সেক্রেটারি এন্ড ফখরুদ্দিন আহমেদ ওয়াস এক্টিং ফরেন সেক্রেটারি। তসলিমার বড় ভাই। হি ডাইড। সো আমি আর কামাল হোসেন ছাড়া আর কেউ জীবিত নাই। আমি আজও জানি না ড কামাল হোসেন কেন এই কথা জাতিকে বলেনি, আমি বলছি আপনাকে।

একটি প্রশ্ন করছেন সরদার সওরান সিং ফরেন মিনিস্টার অফ ইন্ডিয়া। তার পাশে বসা মিস্টার কেওরাল সিং দি ফরেন সেক্রেটারি অফ ইন্ডিয়া। বলছেন, বঙ্গবন্ধু দি পিপল অফ ইন্ডিয়া মাইট মিস আন্ডারস্ট্যান্ড ইউ, দি গভর্নমেন্ট নোজ দে উইল নট মিস আন্ডারস্ট্যান্ড ইউ, বাট পিপল অফ ইন্ডিয়া মাইট মিস আন্ডারস্ট্যান্ড ইউ, বিকজ ইট ওয়াজ আওর আন্ডাস্ট্যান্ডিং দ্যাট আওয়ার ফরেন পলিসি শ্যাল বি কোঅর্ডিনেটেড ইউর জয়েনিং এট ওয়াইসি মিটিং এট লাহোর, উই হ্যাভ নো কন্সেপটেশন অ্যান্ড দেয়ারফোর দেয়ার নো কোঅর্ডিনেশন, দ্য পিপল অফ ইন্ডিয়া থিংক দ্যাট উই আর নট ফলোয়িং দ্য সেইম ফরেন পলিসি উইথ পাকিস্তান।

আপনাকে উত্তরটা আমি শোনাই। আমি ওনাকে নকল করতে পারব না। করা উচিতও হবে না। শুধু শব্দগুলি শুনবেন। তার পিকুলিয়ার ভাষায় তার পিকুলিয়ার ইংরেজিতে তার ইংরেজি বাংলা দুটোই ক্ষমা করে দিয়ে আমরা কনটেনডেড। দি ফার্স্ট টাইম ইন মাই লাইফ দ্যাট হ্যাভ প্রাউড, দ্যাট উই হ্যাড এ ফাউন্ডিং ফাদার অফ এ নেশন হু হ্যাড সো মাচ কারেজ। এই আর সাক্ষীর কোনো প্রয়োজন নাই। আমি যথেষ্ঠ।

উনি একটা টেবিলে একটা হি থামড দি টেবল সো হার্ড, যে টেবিলে আমরা যারা বসা ছিলাম সাতজন, দি কফি স্পিলড। এবং ওনার গলার আওয়াজের মধ্যে খুব পৌরুষ ছিল। উনি বললেন, মিস্টার আমি ওনাকে নকল করতে পারব না। আমি শব্দগুলি বলছি। মিস্টার স্যারেন সিং ডোন্ট টিচ মি সাবকন্টিনেন্টাল পলিটিকস! বাট রিমেম্বার আই আন্ডারস্ট্যান্ড দি ডিফারেন্স বিটুইন কোঅর্ডিনেশন এন্ড সাবঅর্ডিনেশন। আই ডু নট নিড এনি বডিস পারমিশন টু গো এন্ড ভিজিট ও.আই.সি., আই প্রেজেন্ট এ কান্ট্রি হোয়ার ৯৯ পার্সেন্ট মুসলিম। আই হ্যাভ গোন টু জয়েন, উই আর দি সেকেন্ড লার্জেস্ট মুসলিমস নেশন ইন দি ওয়ার্ল্ড। আই হ্যাভ গোন টু জয়েন দেম হোয়েদার ইট ইজ এট লাহোর হোয়েদার ইজ এট সামহোয়ার ডিফারেন্ট থিং। বাট আই ডু নট নিড এনি বডিস পারমিশন। দিস এনাদার থিং দ্যাট সাপোর্ট হোয়াট ইউ হ্যাভ সেইড।

আজকে এইসব কথা মনে পড়ার কথা না, কিন্তু মনে পড়ছে এইজন্য যে আমি একটা অনিবার্য গতিতে মাচ টু দি গ্রেট এন্ড স্যাডনেস অফ মাই প্রিজাইডিং প্রেসিডেন্স টুডে এবং হান্নান এন্ড সাদেক ভাই ওদের চিন্তার উৎসের শক্তি আমি বুঝি। আমরা একটা অনিবার্যভাবে সেই ৪৭-এর সেপ্টেম্বরের সিডব্লিউসি’র রিজুলেশনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। এবং ভারতের যে সুচতুর অগ্রযাত্রা এটাকে ইমপ্লিমেন্ট করবার তার প্রথম ধাপ ছিল ১৯৭১। এটা কে কি ভাবেন আমার কিচ্ছু এসে যায় না। আমাকে রাজাকার, আমাকে পাকিস্তানি (যা খুশি বলেন…), আমি পৃথিবীতে কোনো মানুষ নাই আমি যাকে ভয় পেয়েছি। পৃথিবীর কোনো জাতির কাছ থেকে আমি না সিগারেট খেয়েছি, আমি না পয়সা খেয়েছি। আমার প্রয়োজন হয় নি। আমি একটা সচ্ছল পরিবারের সচ্ছল সন্তান। প্রয়োজন হলে কী করতাম জানি না।

এখন আমি আমার এক স্কুলফ্রেন্ড, জানি না আপনারা চিনবেন কি চিনবেন না। মোস্তফা মোয়াজ্জেম হোসেন। ডায়াবেট্রিক সিনিয়র মোস্ট ডক্টর ছিলেন। উনি জাস্ট মাস দুই আগে মারা গেছিলেন। আমি উনাকে মারতে উঠেছিলাম বছর দুই আগে উনি এই কথা বলেছিলেন, একবছর আগে; যে আমরা পাসপোর্ট তো বহুবার বদলালাম, কী হবে ইন্ডিয়ার পাসপোর্টের পৃথিবীতে তবু সম্মান-টম্মান আছে এখন এটমবোমা টোমা বানিয়েছে, আমাদের এই পাসপোর্ট দেখলেই সবাই ভ্রু কোঁচকায়। সব ইমিগ্রেশন পৃথিবীর। আমরা ইন্ডিয়ান হয়ে গেলে কী? সেই অনুযায়ী তা-ই থাকব। আমি বললাম তুই হিন্দু হয়ে যা! এটাও হয়ে যা! অধিকাংশ ছিলাম তো। নমশূদ্র ফূদ্র ছিলাম। হয়ে যাব। এন্ড আই আননেসেসারলি আই ডোন্ট গোটু বিট এনিওয়ান নাও। বিকজ আই নো বাংলাদেশের টু মাইট, কী বলল আমার এই কথা বলতে, আমার যদি বুকের কোনো পাজর না থাকে তার জন্য আমি কোনো দুঃখ পাই না। আমার বুকের পাজর ভেঙ্গে যায়। বাংলাদেশে আজকে ২৫% কমপক্ষে, বিশেষ করে যারা শিক্ষিত, এই শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীর ২৫% বিশ্বাস করে এবং কাজ করে যাচ্ছে নিরন্তর যাতে আমরা এক হয়ে যাই। এক তো ছিলাম।

আই হ্যাড গোন টু এট এ মিটিং। এই বাংলাদেশ থেকে আমাকে ডেকেছিল। এন্ড টু মাই… যা-ই হোক, আমি দেখলাম সুলতানা কামালকেও ডেকেছিল। একটা কী প্রবাহর সংঘ। এটার মেম্বার আদভানি, ওইটার মেম্বার মুসলিম একজন অভিনেত্রী আছেন… শাবানা আজমি, এটার মেম্বার এই গান্ধির পৌত্র, ওয়েস্ট বেঙ্গলের গভর্নর, এরা সমস্ত। সেখানে আমাকে ডাকার কী কারণ! সেটা মাস্ট হ্যাভ বিন অনেস্ট মিসটেক দে মেইড। সেইখানে এত সুন্দর হসপিটালিটি, এত সুন্দরভাবে রিসিভ এর আগে কোনোদিন আমি জীবনে এত যে ইন্ডিয়ায় মিটিং করতে গেছি… কিন্তু সেখানের সামারি বলে দেই আপনাকে, এর সাবজেক্ট হচ্ছে – লিভিং উইথআউট ফ্রন্টিয়ার্স।

১৯৪৭ সেপ্টেম্বর! কেউ কথা বললেন না। আমার বাঁ পাশে বসা আধওয়ানি সাহেব, আমার মনে হচ্ছিল, আমার যে কী মনে হচ্ছিল তা আপনাকে বুঝাতে পারবো না; আমার বয়স তো তখন যখন গেছি আই ওয়াজ ৭৩, আমার বয়স যদি চল্লিশ-টল্লিশ হতো আদভানি সাহেব আর দিল্লি ফিরতে পারতেন না। এক্কেরে ফর শিওর। দিস দি ন্যাচার আই হ্যাভ। আমি ব্ল্যাক এন্ড হোয়াটে জীবনকে ডিভাইড করে নিয়েছি। আই এম ইন দি হোয়াইট, বলে আমি মনে করি। কারণ আমি বিশ্বাসী। ব্ল্যাকের সাথে আমার সংগ্রাম ইজ ইটারনাল। এইখানে কথা হয়েছিল ফ্রন্টিয়ার উঠিয়ে দেয়ার, এখানে কত গজল গাওয়া হল, কত সঙ্গীত করা হল, কত কাব্য যে আমরা এক প্রেম ভালোবাসা মমতা একেবারে মধুমালতী! একটা রাগ আছে মধুমালতি সারেঙের। মধুমালতি রাগের সব বক্তৃতা।

আচ্ছা, আমি বললাম যে দেখেন, আপনারা গান-টান করলেন, আমি কিন্তু আসলে গায়ক, প্রফেশনাল। এইরকম চলো ফিরসে মুসকুরায়ে, আমি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের এইরকম বহু গজল গেয়ে একদম বিমোহিত করে দিতে পারি আপনাদের। কিন্তু আমার একটা কথা, আজকে যে এই লিভিং উইথআউট ফ্রন্টিয়ার্স, উই হ্যাড বিন লিভিং উইথআউট ফ্রন্টিয়ার্স, ইন্ডিয়া ওয়াজ নট পার্টিশনড, আপ টু ৪৭, ফর হান্ড্রেড এন্ড হান্ড্রেড অফ ইয়ারস উই হ্যাড বিন লিভিং টুগেদার। হোয়াই উই হ্যাড লিভ সেপারেটলি? হোয়াই ইট ডিসাইডেড উই লিভ সেপারেটলি? না না, একসাথে তো ছিলাম, এটা আবার হতে হবে কেন? একসাথে ছিলাম, ভাঙলাম কেন? সেই কারণগুলি যদি আজকে আর না থাকে, এক হতে আমার আপত্তি নাই। সেই কারণের মধ্যে কি ছিল? আমাদের রাজনৈতিক বিষাক্ততা। একে অন্যের প্রতি ঘৃণা। সেই ঘৃণার কাহিনী ওই ইংরেজ আমলে আমরা যারা লেখাপড়া করেছি, তাদের কাছ থেকে একটু শুনে নিয়েন। আজকে এইসব বলে… ওনার পাঁচ মিনিট অনেক আগেই অতিক্রম করে গেছি, সেজন্য আর ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে চাই না।

যে অপমান! “মোসলা” ছাড়া কোনো নামে আমাকে স্কুলে কোনো হিন্দু শিক্ষক এড্রেস করেন নি! দোনারা পায়জামা পড়তাম বলে। অথচ আমার বাপ সেই স্কুলের কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট। ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট প্রেসিডেন্ট ফরিদপুরের। এটা একটা জিলা স্কুল, সরকারি। ওয়ান অফ দ্য ওলডেস্ট জিলা স্কুল অফ ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট। কোনো দিন আমার নাম, আপনারাও সে নামে আমাকে ডাকতে পারেন, আমার তো একটা নাম আছে, আসাফ উদ দৌলা তো একটা নাম, আমারে ফসাফস দৌড়া বলে ডাকত। ফসাফস ডাকত আমাকে। আমি তা-ই, আমি রয়েও গেছি তাই।

আমাকে আমার হিস্ট্রির টিচার সুনীল বাবু, আমি চাই নি আজকে এইসব বলতে। শিক্ষকদের পায়ে ধরে সালাম করতাম আমরা। আমাদের সময় এই ছিল ট্রেডিশন। সেখানে হিন্দু মুসলিম কোনোদিন দেখে নি। সেই সুনীল বাবু প্রশ্ন হাফ ইয়ারলি পরীক্ষায়, হু ইন ইউর অপিনিওন, হু কমা ইন ইউর অপিনিওন, ইজ এ গ্রেট ইম্পেরিয়ার অফ ইন্ডিয়া। এটা সুনীল বাবুর অপিনিওন না। এটা আমার অপিনিওন। নাকি আমি যদি বুঝে থাকি, ইংরেজি। আমি বাবরকে বলেছিলাম। দি গ্রেটেস্ট। উনাকে আমাকে বললেন, স্ট্যান্ড আপ। বেঞ্চে। আমি বললাম আমি জীবনে দাঁড়াই নি কোনোদিন। উনি, আই অ্যাম অর্ডার টু ইউ স্ট্যান্ড অন দি বেঞ্চ। আমি বললাম, স্যার আই উইল নট। আই ওয়ান্ট টু নো হোয়াই ইউ ওয়ান্ট টু মেইক মি স্ট্যান্ড অন দি বেঞ্চ। উনি বললেন, চান্দু… চোখে দেখ না? অশোককে চোখে দেখ না? সমুদ্র গুপ্তকে চোখে দেখ না? ক্লাসের মধ্যে চিৎকার করছেন আমার দিকে তাকিয়ে। লাইক এ ইনসেন্ট। আমি এতটুকু ছেলে ক্লাস ফাইভে! এতটুকু! নিদেনপক্ষে আকবরকে দেখ না?

আমি বললাম যে স্যার, এখানে সকলের কথা উল্লেখ আছে আমার এই ষোলো পাতার এসে’তে। কেন বাবর অন্য কারো চাইতে বড়? আমার এসামশন হচ্ছে একটা মানুষ মহান না হলে সে মহান রাষ্ট্রপতি হতে পারে না। একটা বেসিক কোয়ালিটি থাকতে হবে। এবং বাবরের সেটা ছিল। হি ইজ এ সেইন্ট, হি ইজ এ পোয়েট, হি ওয়াজ এন এস্ট্রোনোমার, হি ওয়াজ এ ম্যাথমেটেশিয়ান, এন্ড হি ওয়াজ গ্রেট মুসলিম। জীবনে বিছানায় শোয় নাই, জীবনে সিংহাসনে বসে নাই। আই থিংক হি ইজ এ গ্রেট ম্যান। ছেলের রোগ নিজে নিয়ে মরে গেছে। লাইক এ সেইন্ট। এবং হুমায়ূন যে লাইব্রেরি থেকে পড়ে মারা গেছেন, লাইব্রেরি… এবং আমার এই সমস্ত কাহিনী পাবেন বাবরনামায়। ওই ভিনসেন্ট সেইনের বই আমার মুখস্ত, ঈশ্বরীপ্রসাদের বইও মুখস্ত, বাবরনামাও মুখস্ত। সুনীল বাবুর সেই প্রশ্নের উত্তর হয়েছিল, হেডমাস্টার গিরীশ বাবু ডাকলেন, হি হুইপ মি, এতটুকুন হাত আমার, রামদোয়াল, ও ঘন্টি বাজাতো, তিনটা মার, রামদোয়াল দিয়ে মারালো। আমি তো ওনার মারার যোগ্য না, উনি তো ভট্টাচার্য, আমি তো কুকুর, কুকুরের সন্তানকে তো রামদোয়লই মারবে, রামদোয়ালের হাতে চাবুক খাওয়া যে লোক; আই অ্যাম ভেরি স্যরি আমি আজকের লোক না। আমি আজকের লেখাপড়া করা লোক না।

আমার বহু হিন্দু বন্ধু আছে। তাদের আমি দেখেছি, তাদের বাড়িতে তারা দাওয়াত করেছে, আমি যখন চলে এসেছি, বই ফেলে এসছিলাম ভুল করে, মোহন সিরিজের একটি বই, দস্যু মোহন, এই জিনিস আবার আনতে গিয়ে দেখি, তার মা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছে, যে ঘরে বসেছিলাম সেই ঘর ধুচ্ছে, ওই চেয়ার ধুচ্ছে, পরিষ্কার কর, সাফ কর অপবিত্র হয়ে গেছে সব। ১৯৪৪, আই অ্যাম নট টেলিং ইউ ওয়ান সিঙ্গল লাই।

আজকে আমাকে ডেকেছে, এর উপরে কী বলব! করিডোর মানে জানে না, একবার বলে ট্রানজিট, আবার বলে করিডোর, এদেশে কি মানুষ ইংরেজি শিখেছে, নাকি ইংরেজি শেখে নি, নাকি ভাবে যে আর কেউ কিছু ইংরেজি শেখে নি? এখন করিডোর হ্যাজ এ পার্মানেন্স, আমি যেটুকু ইংরেজি বুঝি, ইংরেজির মাস্টারি করেছি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে, আমি যেটা বুঝি সেটা হচ্ছে যে, ইফ ইট ইজ এ ট্রানজিট, ইট ইজ ফর আ স্মলার পিরিয়ড। একটা ট্রানজিট মানে ইউ ক্যান নট রিচ টু ইউর ডেস্টিনেশন, ইউ স্টে হেয়ার, এন্ড দ্যান ইউ ক্যান গো ব্যাক। আরেকটা হচ্ছে করিডোর, করিডোর হ্যাজ এ পার্মানেন্স, দেয়ার ইজ এ পার্মানেন্ট রুট, পার্মানেন্ট লেন্থ, টু হুইচ ইউ গো, এন্ড ইউ আর পারমিটেড টু ইউস ইট হোয়েন ইউ লাইক। একটা অধিকার সৃষ্টি হয়, কেমন…

আমার মাল যখন নেপাল যায়, আমি কমার্সের সেক্রেটারি থাকতে, যখন ওই পিয়াজ আর ডাল ইমপোর্ট করি নেপাল থেকে, টু মাই শক, আমি ইন্ডিয়ান কমার্স সেক্রেটারিকে ফোন করলাম, ঢাকা থেকে, যে কী ব্যাপার! যেতে দেয় না। বলে না, এটার তো ট্রানশিফটমেন্ট নাই, ইউর ট্রাকস্ কান্ট গো বি অন দি বর্ডার অফ দিনাজপুর, দেন মাই ট্রাকস উইল টেক ইট টু নেপাল। তোা আমি বুঝলাম না, আরেকটা শিখলাম ট্রানশিপমেন্ট। কোনটা করিডোর বলতে কী বুঝায় আমি বুঝি না, আমি যেটা বুঝি এইরকম করিডোর কোনো স্বাধীন দেশ কোনো স্বাধীন দেশকে দেয় না। আপনি ইউরোপিয়া ইউনিয়নের দৃষ্টান্ত এইখানে আনবেন না, অই সিভিলাইজেশনের ডিফারেন্ট, ব্যাকগ্রাউন্ড ইজ ডিফারেন্ট। এই সমস্ত ফুজুল কথা বলে। সুতরাং আমি ঘোর বিরোধী এটার, এটা ট্রানশিপমেন্ট হতে পারে এটা করিডোর হতে পারে না। টাক্সফোর্স, ইউ আর ইনভাইটিং এ কুমির! ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পরও শিক্ষা হয় নি? এইভাবেই আসে, যে শুধু আপনার গুপ্তচরবৃত্তিতে একটু সাহায্য করি। কই আমার একটা ব্রিজ বানানোর সময় তো সাহায্য করতে আসে না কেউ। আমার ইউনিভার্সিটিকে বলে না ভারত, যে আমি দশটা ভালো প্রফেসর পাঠাই। সেগুলো কেউ বলে না। পাঁচটা ভালো ডাক্তার পাঠাই। তো, যা-ই হোক, এই টাক্সফোর্স, খাল কেটে কুমির আনবেন না। টিফা চুক্তির ব্যাপারে আমি বলেছি, আমার বাণিজ্য সচিব হিসেবে আমার যা অভিজ্ঞতা, তাতে কোনো কিছু দেবার জন্য এত ব্যাগ্র হওয়া ঠিক না। রাজনৈতিকভাবেও না, এবং স্বাধীন কোনো রাষ্ট্রের স্বাধীনচেতা রাজনীতি থাকলে, সেখানে দেবার ব্যাগ্রতার চাইতে নেবার ব্যাগ্রতা বেশি হওয়া উচিত।

আর জাতীয় ঐক্যের কথা আমি উনার সাথে একমত, আমি ডিটেইলে যাব না, আজকের সাবজেক্টটা যেহেতু ওইভাবে হাইলাইটেড হয় নি। শুধু একটি কথা যে আমরা এমন নেতৃত্ব নাই আমাদের, সোজা হিসাব এমন নেতৃত্ব আমাদের বর্তমানে নাই, যেখানে ঐক্য সমৃদ্ধ হয়, যেখানে ঐক্য সংহত হয়, যেখানে আমাদের পরস্পরের মধ্যে সংঘাত এবং বিভেদের রেখাগুলো কেউ তুলে দিতে পারে। সেরকম নেতৃত্বই নাই। আমরা আল্লার কাছে প্রার্থনা করি, এমন নেতৃত্বের, যে আমাদের, এক ভাইকে আরেক ভাইয়ের সাথে মিলিয়ে দিক। এখন এমন অবস্থা হয়েছে একদল বলে খোদা হাফেজ, আরেক দল বলে আল্লাহ হাফেজ, একদল বলে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, আরেক দল বলে জয় বাংলা। কার সাথে! একজন বলে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম, একজন বলে পরম করুণাময়, বুঝতে পারি না। আমি নিজেই এই বয়সে, আই গেইট কম্পিটলি কনফিউজড, এদের তো আলাদা সমাধিক্ষেত্র হওয়া উচিত, আলাদা কবরস্থান, ওখানেও মারামারি হবে। যারা আওয়ামী মাইন্ডের আপনারা আলাদা কবরস্থ হবেন, অবশ্য আপনারা কবরে যাবেন না পুড়বেন সে আপনাদের ইচ্ছা, আর যারা কবরে যেতে চান বিএনপির আলাদা কবরস্থান হওয়া উচিত।…

…আর তো নিরবে থাকা যায় নাা যাচ্ছে না থাকা আর নিরবে। এবং আমাদের রুখে দাড়াতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা কোথায়? আমাদের ছেলেমেয়েরা কেন কথা বলে না? এই তরুণ কেন আমাদের সন্তান হতে পারে না কেন? কি রকম বাপ মা সন্তান শেখাচ্ছে? যারা তোমাকে মানুষের সমান গ্রাহ্য করে না, তুমি তাদের সাথে এক হয়ে যেতে চাও! তুমি কি দেখেছ, কখনো ভেবেছো, আমার বাপ তো একসাথে ছিল, জিজ্ঞেস করুন যে ওর বাপ যেন বলে, সে একসাথে হতে চায় কিনা। যদি কেউ রাজনৈতিক ভাবে পাকিস্তান ভাঙার বিরুদ্ধে মতবাদ রেখে থাকে, এজ এ পলিটিক্যাল অপিনিওন, দেয়ার ইজ নাথিং রং ইন ইট। রং হয়েছে কখন, যখন বলেছে ওই বাড়িতে একটা ছেলে আছে গিয়ে ওকে ধরো ওকে মার। ওইখানে একটা ইন্টেলেকচুয়াল আছে, ওকে ধরে আমি দিচ্ছি আপনি ওকে মেরে ফেলেন, দ্যাট ইজ হোয়ার ক্রাইম ওয়াজ কমিটেড, এন্ড দোজ শুড বি ট্রাই টু লুক ইন টু; সাক্ষী নিয়ে আপনি ইয়ে করে ফেলেন। কিন্তু আপনি এমন একটা ভাব! টেররিজমের ডেফিনিশন, ব্রডেন করতে এমন এক অবস্থা আপনি করেছেন, যে আজকে আমার আব্বার ছবি যখন দেখি আমি মাথায় সাদা টুপি এবং সাদা সেই দাড়ি, তখন আমার মনে হয়, আব্বা কি সেজেছে নাকি রাজাকার! কারণ ডেফিনেশন এবং নাটকে, সবকিছুতে এমন ভাবে করছেন, নাটকের মধ্যে সবচে খারাপ যে বদমাইশ, যে রেপিস্ট, চেয়ারম্যান তার মাথায় সাদা টুপি এইখানে কালো দাগ তার সাদা দাড়ি, কোন খেলা, এই খেলা সেই ৪৬-৪৭ এ দেখেছি। তারজন্যই তো আলাদা হয়েছিলাম। আবার সেই খেলা শুরু হয়েছে।

আর এই খেলার প্রতি আপনাদের প্রতি করজোড়ে একটি কথা, আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতে, আমাদের সন্তান আছে, আমাদেরও ছেলেমেয়ে আছে, আপনি তাদের উদ্বুদ্ধ করেন। এইভাবে পারবেন না, এইখানে যে দূতাবাস যে করে ওদের, কিছু লোক আছে যাদের কোনো ইনকাম নাই, আপনাদের জিজ্ঞেস করা উচিত আপনারা মাস চলে কি করে? সবাই এ দেশের প্রধান সারির লোক, বুদ্ধিজীবি, এর মধ্যে চারপাঁটা আমার ক্লাসমেট সবকটা ফেইল করা ছাত্র, বুদ্ধিজীবী হয়েছে। লেখাপড়া কবে করলি তুই। আমার নোট নিয়ে তাও ফেইল করলি। এখন হয়ে গেছে বুদ্ধিজীবির সারিতে একদম প্রথম, তাদের নাম। আই অ্যাম অ্যাবসুলেটলি শকড।

তো, এইসব জিনিস মনে রেখে, হয় আমরা আমদের বিশ্বাসকে আমাদের উপলব্ধিকে জীবনে স্থান দিব। কেননা, আমার জীবনে যা কিছু শিক্ষা, মাহমুদুর রহমানের জীবনে যা কিছু শিক্ষা, কি হান্নানের জীবনে যা কিছু শিক্ষা, কি সাদেক ভাইয়ের জীবনে যা কিছু শিক্ষা, তা ৯৫ ভাগ উৎসারিত হয়েছে আমার ধর্মবোধ থেকে। ওই একটি বই থেকে, আর ওই এক মানুষ! যাকে নিয়ে মুসলমান যত ইয়ার্কি করে, মুসলমান যত অপমান করে, এত অপমান আমি হিন্দুকেও করতে দেখি নাই। যেভাবে তার নাম নেয়, যে অশ্রদ্ধার সাথে তার নাম নেওয়া হয়, এই বাংলাদেশে ধর্মান্তরিত হতে কোনো অসুবিধা নাই, আমার বাসায় তো একটা পোস্টার লাগিয়ে দিব এখানে ধর্মান্তরিত হয়, মুসলমান-হিন্দু যারা তাহারা পূর্ণ-হিন্দু হইবার জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা রহিয়াছে এই বাড়িটা। কাম টাচ দি গীতা এন্ড কাম হিন্দু তারপর আপনি বলেন যে আপনি আল্লার রসুল খারাপ ইসলাম খারাপ। সব আমি মেনে নিব। কিন্তু আপনি মুসলমান নাম ধারণ করে এটা যদি বলেন আমি প্রতিবাদ করতে উঠে দাঁড়াব। তারপরও আপনি যদি বলেন, আমি আপনার গলার টুপি চেপে ধরব। তাতে হয় আপনি আমাকে মারবেন, নয় আমি আপনাকে মারব।

জীবনে এই একটা পজিশনে এসেছি জীবনে। আজকে টেররিজমের ডেফিনেশন দিয়ে আমাকে যেন কবরের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলা হচ্ছে। আজকে নামাজ পড়তে, আমার এক বন্ধুকে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়ে, এই সাত নম্বর রোডে ধানমন্ডিতে, সারাজীবন মাথায় টুপি দিয়ে ওর সাথে দেখা হয় রাস্তায় আমার। সে দেখি টুপি পকেটে নিয়ে যায়! টুপি পকেটে নিয়ে যায়! লজ্জা লাগে!

আমাকে ক্ষমা করবেন, ফর দি লিটল আউটর্বাস্ট আই হাড। আই থ্যাংক ইউ ফর অল দা টলারেন্স। প্লিজ ফরগিভ মি ইফ আই হার্ট এনিওয়ান’স সেন্টিমেন্ট।

বাট আই অ্যাম এক্সাইটেড প্রভাবলি বিকজ আই অ্যাম ইন ভেরি পুওর হেলথ। মাই ডায়াবেটিক লেভেল ইজ টুয়েন্টি, এন্ড মাই লোয়ার ব্লাড প্রেশার ১২৫ অল দি টাইম। সবাইকে থ্যাংক দেইই আই হ্যাভ ফিলিং আই উইল নট লিভ ভেরি লং। বাট আই উড নট লাইক টু বি বেরিড ইন আ কান্ট্রি, যেখানে আজানের আওয়া পাওয়া যায় না। ডোন্ট বেরি মি, বা‍র্ন মি, যা আছে গঙ্গার ধারে আমাকে চিতায় জ্বালাবেন আমাকে আপনারা, যদি সেইদিন এই দেশে মসজিদে আজান ধ্বনিত না হয়।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →