Main menu

আসল কনজারভেটিভ হইতে গেলে এখন লিবারেল হওয়া ছাড়া কোনো গতি নাই – স্লাভোজ জিজেক ও নোয়াহ হারারি’র আলাপ

এই বইতে যা আছে তারে ঠিক ইন্টার্ভিউ বললে ভুল হইতে পারে। এইটারে বরং আলোচনাই বলি।

আজকের দুনিয়ার দুই জন ইনফ্লুয়েন্সিয়াল পাবলিক ইন্টেলেকচুয়াল স্লাভোজ জিজেক আর নোয়াহ হারারি। উনারা আলাপ করছেন এই যামানার আইডিওলজি নিয়া। আমি সেই আলাপের তরজমা করছি একটা ইউটিউব ভিডিও থিকা। প্রশ্ন হইতেছে, একটা ইউটিউবে থাকা ভিডিওর আলোচনা কেন বাংলায় তরজমা করলাম?

কারণ, এই যুগে যা চলতেছে – গ্লোবাল পলিটিক্সের খেলা, বামপন্থীদের নাজুক অবস্থা, ফার-রাইটরা কেম্নে আগাইতেছে আর এতসব গ্যাঞ্জামের সল্যুশন কী হইতে পারে – এই টপিকগুলা নিয়া দুইজন ডিবেট করছেন। কোথাও একমত হইতে পারছেন, কোথাও আবার পারেন নাই।

উনারা বিভিন্ন ভাইরাল ইস্যু, মোটাদাগে মিলেনিয়াল আর জেন-জি যামানায় চর্চিত আইডিওলজি যেমন– পলিটিকাল কারেক্টনেস, এমনকি ‘মি টু’ মুভমেন্ট নিয়াও মতামত দিছেন। জিজেকের মতামত প্রচলিত কনসেপ্ট থিকা আলাদা– যা নিয়া আপনাদেরও ভাবার সুযোগ আছে।

ভিডিও থিকা ট্রান্সক্রিপশন কইরা, এরপরে সেইটারে তরজমা করা অতো সোজা ছিল না। অনেক কথাই খাপ-ছাড়া লাগতেছিল। কারণ জিজেক প্রায়ই এক টপিকে বলতে বলতে অন্যদিকে হারায়া যাইতেছিলেন। এই ‘অন্যদিকে হারায়া যাওয়া’ কথাগুলাও ইম্পর্টেন্ট বইলা ফেলায়া দিতে পারতেছিলাম না। আবার কিছু ক্ষেত্রে এই ‘হারায়া যাওয়ার’ কাজটা উনারা জাইনা-বুইঝাই একটা ভূমিকা হিসাবে আনছেন। মানে তেনা-প্যাঁচানো মনে হইলেও কথাগুলা জরুরি ছিল।

পুরা আলোচনা দুই বন্ধুর একটা আড্ডার মতো কইরা হইছে। আমিও চাইছি উনাদের আড্ডার টোনটাই লেখায় চইলা আসুক। তাই, খাপছাড়া কথাগুলারেও যতটা সাইজে আইনা সার্ভ করা যায়, চেষ্টা করছি। বারবার জিজেকরে টপিকে ফিরায়া আইনা আমার কাজটা একটু সহজ করছেন হারারি। আর এম্নে বুঝছি, এই আলাপ যদি একটা ইন্টার্ভিউ হইয়া থাকে, সেইটা হারারিই নিছেন।

যাই হোক, আমি ভাবতেছি উনাদের আলাপ আপনারে একটা নাড়া দেওয়ার ক্যাপাবিলিটি রাখে। তাই, একটু নইড়া-চইড়া বসতে চাইলে একটানে পইড়া ফেলেন, নাকি?

কে. এম. ইতমাম ইসলাম
মার্চ, ২০২৪

আজকের দুনিয়ায় আইডিওলজির মূল যুদ্ধক্ষেত্র কোনটা?

নোয়াহ হারারি: এই দুনিয়ায় আইডিওলজির মূল যুদ্ধটা কই হইতেছে বইলা আপনি মনে করেন? যদি এখনও আইডিওলজি বইলা কিছু থাইকা থাকে…

স্লাভোজ জিজেক: এইখানেই তো গ্যাঞ্জাম। আজকের দুনিয়ার ক্ষমতার রাজনীতির যেই লেভেল চলতাছে– এইখানে নয়া জিও-পলিটিকাল শক্তির আমদানি হইতেছে। কিন্তু কেউ কারো লগে লাগতে গেলে আগে একটা অফিশিয়াল লাইন মাইনা চলতো। একটা সিস্টেমে আগাইতো। সেই অফিশিয়াল লাইনটা এখন তারা কত সহজে ভাইঙ্গা ফেলতেছে! আমি এই দেইখা তব্দা খাই।

আমাদের সো-কল্ড উন্নত দেশও বাদ নাই। এখন দুনিয়ার কোথাও কারো গ্যাঞ্জাম হইলে সেইটারে খালি দুই পক্ষের বিচ্ছিন্ন ঘটনা বইলা পার পাওয়া যায় না। আগেকার দিনে কেম্নে কি হইতো সবই আমার মুখস্ত। তখন ছিল মডারেট বাম, মডারেট ডান, আর কয়টা মধ্যমপন্থী আর চরমপন্থী। মূল ফর্মূলা কিন্তু এক জায়গায় যায়া ঠেকতো – হয় খ্রিষ্টান, যারা কনজার্ভেটিভ ডেমোক্রেট, নাইলে সোশাল ডেমোক্রেট, যারা সোশালিস্ট। আর এর মধ্যেই যা অদল-বদল। যেমন তুমিও, ইউভাল, তোমার একটা বইতে লিখছো। আমার মনে হয় এই শিক্ষাটা খুবই জরুরী। তাই আমিও তোমারে এই জায়গায় প্রায়ই কোট করি।

“ডেমোক্রেসির মানে ডাইভার্সিটি – আমি এমন লোকমুখে চলা বলদামির পক্ষে না।” ডেমোক্রেসির মানে ডাইভার্সিটি হইতেই পারে কিন্তু সেইটা একটা শেয়ার্ড বিলিফে আটকায়া যায়। আবার এই শেয়ার্ড বিলিফ অনেক শক্তিশালী বা পজিটিভ কিছু – এমনও না কিন্তু।

হ্যাঁ, আইডিওলজির অলিখিত সিস্টেম বা যেকোন রাজনৈতিক ঘটনা ফেইস করার নিয়ম নিয়া আলাপ করা অদরকারি মনে হইতে পারে। কিন্তু আজকের দুনিয়ায় এই আলাপটাই চরম গুরুত্বপূর্ণ হয়া দাঁড়াইছে। এক্সাম্পল হিসাবে বলি, তোমার বুশ আর আল গোরের কথা মনে আছে তো?

হারারি: হুম…

জিজেক: পুরা ঘটনাটা ঘটছে ফ্লোরিডার মাত্র এক-দুইশো ভোটের জন্য। এইটা আবার কোর্ট পর্যন্তও গড়াইছিল। কিন্তু যখন সুপ্রীম কোর্ট…বা হয়তো অন্য কেউ, আমি ভুইলা গেছি কে থামাইতে চাইছে – কিন্তু কি সুন্দর সব পক্ষ মাইনা নিছিলো! ঠিক এইটাই দিন দিন হাওয়া হয়া যাইতেছে।

হারারি: আর আমি কারণটা বুঝতেছি না। মানে আমার কখনো কখনো মনে হইতেছে যুক্তরাষ্ট্র সিভিল ওয়ারের দিকে চইলা যাইতে পারে। আমেরিকানরা এখন একজন আরেকজনরে দেখতে পারে না। তারা এই গ্রহের অন্য কোনো প্রাণী থিকা নিজেগো দেশী লোকরেই সবচেয়ে বেশি ডরাইতেছে। আর আমি তার কারণটা বুইঝা পাইতেছি না।

মেইন গ্যাঞ্জাম আর কন্ট্রোভার্সির পুরাটাই কিন্তু জানি – হইতে পারে অ্যাবরশন, হইতে পারে গান কন্ট্রোল। কিন্তু ইতিহাসের দিক থিকা যদি বিষয়টারে বার্ডস আই ভিউ মাইরা দেখি, এই কারণগুলারে পশ্চিমা সভ্যতা ধ্বংস কইরা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট বইলা মনে হইতেছে না। আমি দেখতেছি, তারা যা নিয়াই একমত হইতে পারতেছে তার সবই দরকারি। কিন্তু এইটা বুঝতেছিনা ঠিক কোন বিষয়টা আমেরিকার, পশ্চিমা বিশ্বের, বা পুরা দুনিয়ার মানুষের মধ্যে এত ঘৃণা, ভয়, আর শত্রুতা উসকায়া দিতেছে।

জিজেক: আমি তোমার সাথে একমত। এইখানে আমার একটা পয়েন্ট আছে। তোমার মানতে প্যারা হইতে পারে। আমার তো মনে হয় ঝামেলাটা আমেরিকার এই সো-কল্ড সিভিল ওয়ারেই। একটা পুরান আমলের বাম হয়াও বলতেছি, আমার কাছে গ্যাঞ্জামটাই ভুয়া!

ভুয়া কারণ আমরা একদিকে দেখতেছি, অল্টার্নেটিভ রাইট পার্টি সিভিল ওয়ার নিয়া তোমার বলা কথাটারেই প্রমাণ করতেছে। চাইলে এদের অন্য নামেও ডাকতে পারো– যেমন নয়া পপুলিস্ট, ওপেন রেসিস্ট, মুক্তিকামী, আরও কত কি।

তারপর দেখো, আইডিওলজির রোল কেমন অদ্ভূতভাবে উল্টায়ে গেছে। আমার মনে আছে, আমি যখন বন্ধুদের সাথে বইসা ৬ জানুয়ারি, ২০২১ দেখতেছিলাম, তখন আমার অনেক বাম বন্ধু কানছে। তারা বলতেছিলো, “জনগণ যায়া ক্ষমতার গদি ছিড়তেছে – এ তো আমাদের মতো বামদের কাজ। আমরা কই?”

হারারি: ঠিক তাই হইতেছে। এখন কনজার্ভেটিভ পার্টি বাস্তিল-পতন সাপোর্ট করতেছে আর প্রোগ্রেসিভ পার্টি ইন্সটিটিউশন আর ট্রেডিশন গুনতেছে না।

জিজেক: আর কয়েকটা দেশে তো দেখতেছি প্রোগ্রেসিভ পার্টি জায়গায় জায়গায় পুলিশ বাড়ায়ে দিতে বলতেছে। এই আলাপ এত সোজা না। তো আবার ফিরা চাই। বলতেছিলাম, গ্যাঞ্জামটা হইলো এই বিরোধী দলই মিথ্যা। কেন বলতেছি?

কারণ, আমাদের একটা পপুলিস্ট রাইট পার্টি আছে যেইটা এখন অনেক বেশি ‘ফার’ রাইট।

হারারি: হ্যাঁ, এরা এখন আর কনজার্ভেটিভ পার্টি নাই। এদের কনজার্ভেটিভ বলাই যাইবো না।

জিজেক: হ্যাঁ, অনেকগুলা ছোট ছোট মোজেজা মিলাইলে যা বলতেছি তা বুঝতে অনেক সোজা। আর আমি যখন থিকা বিষয়টা বুঝতেছি, রাতে ঘুমাইতে তো পারতেছিই না। কঠিন সব দুঃস্বপ্ন দেখতেছি।

প্রথম কথা হইলো, এখন আরও অনেকগুলা রিপাবলিক স্টেট খোলামেলা জানায়ে দিছে তারা রিপাবলিকান। কিন্তু এরা এই কথা তুলতেছে না যে ‘বাইডেন লিগাল প্রেসিডেন্ট না’। মিটিং সাইরা বারে বইসা কেউ এই নিয়া আলাপ করতেছে না। উল্টা এরা পরের ইলেকশনের প্রস্তুতি নিতেছে। বিষয়টা ডেঞ্জারাস – কারণ এরা একটা নতুন নিয়ম চাপাইতে চাইতেছে। তারা চাইতেছে কোনো ইলেক্টোরাল রেজাল্ট নিয়া ভেজাল হইলে স্টেট কনগ্রেস কোনো একটা পক্ষরে ডাইরেক্ট নমিনেট কইরা দিবো। এখন এই নিয়মটা প্রায় বাস্তব হয়া যাইতেছে।

তুমি কি বুঝতেছো এইখানে ঠিক কী নাই? বাম আর ডানের নরমাল ডিফারেন্স যেইটা আমরা পুরান আমলে দেখতাম। আমি জানি না তুমি আমার সাথে একমত কিনা।

বার্নি স্যান্ডার্স তাঁর দলবল নিয়া একটা ট্রাই মারছে। কিন্তু পুরা বিষয়টা ধরা খাইছে ‘পলিটিকালি কারেক্ট’, ‘লেফট-লিবারেল’, ‘মেইনস্ট্রিম’ ‘মি টু’ মুভমেন্টের কাছে। আর আমি এই মুভমেন্টের পক্ষে না। মুভমেন্টটা বেশি এক্সট্রিমিস্ট এই কারণে না। উল্টা আমার কাছে এইটা পরিষ্কার সিউডো এক্সট্রিমিজম। ‘মি টু’-তে এই এক্সট্রিমিজম ছিল।

নরমাল লিগাল অ্যাকিউজেশন থিকাও এইটা বেশি গ্যাঞ্জাম। লিগাল অ্যাকিউজেশনে আমি তোমার নামে বিচার দিলেও তুমি নিজের পক্ষে কথা বলার চান্স পাইবা। আমরা কোর্টে যাবো, একটা রায় হবে। কিন্তু ‘মি টু’ তো পুরাই ক্যান্সেল কালচার। তোমারে জাস্ট বাইর কইরা দিবে। আমি এইটারে নাম দিছি সিউডো-লেফটিস্ট র‍্যাডিকালিজম।

তুমি শুনলে অবাক হইতে পারো, একজন পুরানা মার্ক্সিস্ট হইয়া আমি ‘কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো’ থিকা কোট করতেছি। মার্ক্স এই বিখ্যাত লাইনগুলা লিখছিলেন, “ক্যাপিটালিজমের সাথে সাথে পুরানা প্যাট্রিয়ার্কাল হায়ারার্কির সব রিলেশন বাতাসে ভাইসা যায়, সবকিছু গতি পায়।”

এই সিস্টেম এখন এমন জায়গায় আসছে যে মার্ক্স নিজেও ভাবতে পারতো কিনা সন্দেহ। সেএক্সুয়াল আইডেন্টিটি থিকা শুরু কইরা যা কিছুরে তুমি আগে ন্যাচারাল ধইরা নিতা, সবই এখন হয়া গেছে পার্সোনাল চয়েস, নাইলে টেকনোলজি দিয়া ম্যানিপুলেট করার বিষয়।

তো, এই স্ট্রাগলটারে আমরা পলিটিকালি কারেক্ট, এখনো কোল্ড একটা আইডিওলজিকাল সিভিল ওয়ার বলতেছি। কিন্তু আসলে এর পুরাটাই সিস্টেমের ভিতরের ভূত।

পিসি কালচার: গতকালকের উস্কানি আজকের নষ্টামি

হারারি: আপনার ট্রেডমার্কই উস্কানি দিয়া কিছু বলি…

জিজেক: হ্যাঁ।

হারারি: মানে আপনি যেম্নে একটা বিষয় নিয়া কথা বলেন সেইটা নিয়া বলতেছি। আমার মনে হয়, ২০-৩০ বছর আগে হইলে আপনার কথা বলার স্টাইল খুবই কাজের ছিল। কিন্তু আজকের যুগে, যেখানে ট্রাম্প আইসা পড়ছে, পপুলিজম আইসা পড়ছে – এইগুলা তো আপনার থিকা সব আলো নিজের দিকে কাইড়া নিতাছে। বিষয়টা কেম্নে দেখেন?

জিজেক: খুবই দারুণ প্রশ্ন। আমি এটারে সিরিয়াস ধইরা নিয়া উত্তর দিবো।

হারারি: হ্যাঁ, এইটা তো সিরিয়াস প্রশ্নই।

জিজেক: তুমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস খেয়াল করছো। আমি যখন ছোট ছিলাম, আমি দেখছি বামেরা কিছু গুনতেছে না। পাবলিকলি উল্টা-পাল্টা করতেছে, নষ্ট কথা বলতেছে আর মনে করতেছে কি না কি উলটায়ে ফেলতেছে। ক্ষমতার ভুয়া সম্মানের অ্যাগেইন্সটে মানুষরে উস্কায়া দিতেছে। কিন্তু এখন দেখো ক্ষমতা পপুলিস্ট ডানের হাতে। আর তাই আমার এই দুইটা চিন্তা বলি।

এক দিক থিকা ভাবলে, বহু বছর আগে যখন আমি এই কনফ্লিক্ট দেখছি, এই বিষয় নিয়া তখন লিখছি। আমার ধারণা তুমিও একমত হবা। যখন কনজারভেটিভরা ফ্যামিলি ভ্যালুস নিয়া পইড়া ছিল, আমি তখন ওদের বাস্তবতা আর রিগানের দিকে তাকাইতে বলতাম।

চাইলেই সামাজিকভাবে প্রমাণ করা যাইবো, রিগানোমিক্স আজকের দুনিয়ার বাম-গে-প্রোপাগান্ডা থিকাও নারীদের চাকরির সুযোগ বাড়ায়া দিয়া ফ্যামিলি ভ্যালুস বেশি নষ্ট কইরা ফেলছে। কথাটা হোমোফোবিক হয়া বলতেছি না। এখন যদি বামরা বইলা বসে, “পপুলিস্ট ডানগুলাই সমাজ ধ্বংস করতেছে। আমরাই ফ্যামিলি ভ্যালুসের আসল রক্ষক।” – তাইলে কেমন হবে ব্যাপারটা?

বার্নি স্যান্ডার্স কোনো গরু-গাধা না। আমার মনে হয় সে এই জিনিসটাই জাইনা-বুইঝা করার চেষ্টা করতেছে।

আর অন্য দিক থিকা ভাবলে, আমি কেন এখনো কথা বলার এই স্টাইল ফলো করতেছি, তাই তো জিগাইলা?

এইটার কারণ খালি ডানপন্থী অশ্লীলতাই না, বরং পলিটিকাল কারেক্টনেসও। আমার কাছে ‘পলিটিকালি কারেক্ট’ আলাপ প্রচণ্ড ফেইক লাগে। রাজনীতির ময়দান বা আদালত থিকা নিন্দা জানানোর থিকাও এইটা বেশি কঠিন। হুট কইরা দেখবা, তোমারে ‘ক্যান্সেল’ কইরা দিতেছে। তুমি জানতেও পারবা না ঠিক কী কারণে এমন হইলো। তাই আমি আজও অবুঝের মত কথা বলার এই স্টাইল ফলো করতেছি। যার সাথে আবার তুমি একমত হইতে পারতেছো না।

বর্বর সিস্টেমে বর্বর হওয়া সোজা, নষ্টরা পারে। বলতে পারো, ভালো দেখায়া ভালো সাজাও সোজা। এইটা জাপানিজ আর ইংরেজরা পারে। ফর্মালি এদের বিনয় উপচায়ে পরবো কিন্তু ভিতরে ভিতরে তারাই প্রচণ্ড বর্বর। মানে এরা নিজেদের ভদ্রতাটারে দেখায়া বেড়ায়।

তুমি চাইলে আমার সাক্সেস নিয়া হালকা ক্রিটিসিজম করতেই পারো, তাও আমি আমার কথা বলার স্টাইল কখনো বদলাবো না। কারণ, আমার মনে হয় এইটাই আজকের দুনিয়ার সমাধান – সরাসরি কড়া কথা শুনানো। তবে এইটা একটা সিস্টেমের মধ্যে থাইকা করতে হবে। এমনভাবে শুনান লাগবে যেন বন্ধুত্ব নষ্ট না হইয়া যায়, উলটা আরও গাঢ় হয়, কষ্ট দিয়া না ফেলে। আমি আশা করতেছি, নিজেরে এমনভাবে সামলায়া নিবো যেন জাপানি-ব্রিটিশদের মত মন আর মুখের কথায় এত বড় পার্থক্য তৈরি না হইয়া যায়।

এছাড়াও এম্নে পলিটিকালি কারেক্ট হইয়া, লোক-দেখানো ভদ্রতা করাটারে রেসিজমের সাথের কোনো ফাইট বলা যায় না। আমার মনে হয় না এম্নে কোনো কাজ হয়। কেন বলতেছি আমার ধারণা তুমি নিজেও জানো। আমরা একটু আগে যা নিয়া বলতেছিলাম, আবার অইদিকেই কিন্তু যাইতেছি।

আমার কাছে ল্যাঙ্গুয়েজ আর এক্সপেরিয়েন্স অনেক বড় বিষয়। পলিটিকাল কারেক্টনেসের নামে যতই ভদ্রতা চাপায়া দেওয়া হোক, মেটাফোর দিয়া সব এড়ায়া যাওয়া যায়। এইটাই ভাষার জাদু। আর অইটা ভিতরে ভিতরে আরও বেশি অপমানের।

মনে আছে, শুরুর দিকে রাশিয়ায় ইউক্রেন যুদ্ধের বিপক্ষে কিছু মানুষ দাঁড়াইছিল। আমার এইটা কেন ভাল্লাগছে সেটা বলি তোমারে। রাশিয়ান স্লোগান ‘নিয়েত ভাই নি’ মানে ‘নো টু ওয়ার’। তো লোকজন কাগজে লিখা রাখছিলো ‘টু ওয়ার’। তাও ওদের গ্রেফতার করা হইছে। প্রশাসন বলছে, “আমরা বুঝছি তুমি কি বলতে চাও।” এরপরের ধাপে আবার চালু হইলো খালি কাগজ রাখা। আবার তাদের গ্রেফতার করা হইলো। বলা হইলো, “আমরা সবাই জানি।”

এইটাই কথার জাদু। আমার জন্য কথার জাদু হইতে পারে, ফ্রেন্ডলি হয়াও পঁচানো…

হারারি: কিন্তু আমি একটু পলিটিকাল কারেক্টনেসের পক্ষে বলতে চাই।

জিজেক: বলো।

হারারি: পলিটিকাল কারেক্টনেস বিশেষ কইরা যারা দার্শনিক, যারা ভাবে, আর বলে তাদের জন্য। এইটা আপনারে অনেকটা জোর কইরা ভাবায়। কারণ, অনেক অপ্রেসড পার্টিই এইটা এক্সপেরিয়েন্স করে। আর ক্যান্সেল কালচারও তো নতুন কিছু না, সবসময়ই ছিল। খালি অন্য লোক, অন্য দলগুলারে মানুষ ক্যান্সেল করতো। বাকস্বাধীনতা তো কোনোদিনই পুরাপুরি ছিল না।

ধরেন আপনি একজন আরব, ইসরায়েলে থাকেন। মনে করেন ইহুদী কোম্পানিতেই কাজ করতেছেন। আপনার কিন্তু সারা বেলা সেন্সিটিভ ইস্যু বুইঝা শুইনা কথা বলতে হইবো। এই অবস্থা গত ১০-২০ বছরে নতুন কইরা নাড়া দিয়া উঠে নাই। সবসময় ছিল। আর এই সিচুয়েশনটা বেশিরভাগ লোকের কাছে নরমাল। লোকগুলা সারা জীবন কিছু বলার আগে ভালো কইরা ভাইবা নিছে। কারণ, তারা জাস্ট ভুল কিছু বইলা চাকরি হারাইতে চায় নাই।

নতুন কইরা বরং এইটা ঘটছে – আগে যা খুশি বলতে পারতো এমন অনেক লোক হুট কইরা কথা বলার জায়গা হারায়া ফেলছে।

জিজেক: এইখানে আমি তোমার সাথে পুরাপুরি একমত। আমি কিন্তু একবারও বলি নাই, “আমি যা খুশি তাই বলতে পারি।” আমার প্রথম নিয়ম– আমার প্রবলেম্যাটিক কথা বার্তা কখনো পার্সোনালি নেওয়া যাইবো না। আমি কথার মাঝখানে কোনো নারীর সাথে অশ্লীল কিছুও বইলা ফেলতে পারি। কিন্তু এমন কিছু কখনোই বলবো না যা শুইনা সে সরাসরি নিজেরে রিলেট কইরা ফেলবে। আমারে এই জায়গায় সবথিকা বেশি ফ্যাসিনেট করে কোনটা জানো? ভাষার সাথে ‘রিসোর্সের’ রিলেশন। ভাষা দিয়াই সবকিছু হইতেছে। আর আমার স্টাইলরে আমি নাম দিছি, “সহজাত সীমালঙ্ঘন”।

একটা সোসাইটিরে খালি নিয়ম চাপায়াই নিয়ন্ত্রণ করা হয় না। একদিকে, তোমারে সবসময় নিয়ম-কানুনে বাঁইধা ফেলতে চাইতেছে। অন্যদিকে এইটাও চাইতেছে, তুমি চুপচাপ লুকায়ে কোনো একটা উপায় বাইর কইরা নিয়মগুলারে ভাইঙ্গা দিবা। তুমি যদি এইটা না কইরা থাকো, তোমারে দলের অংশ করা হইবো না। আসল পরীক্ষা হইতেছে, এই নিয়মগুলারে ভাঙ্গতে জানা।

আরেকটা এঙ্গেলে বলতেছি। আরও ফ্যাসিনেটিং। দেখো, অনেক কিছুই নিষিদ্ধ। কিন্তু আগেও যেমন বলছি তোমারে, আমার কাছে লাগে নিষিদ্ধ বিষয়টা নিয়া পাবলিক অ্যানাউন্সমেন্ট দেওয়াও নিষিদ্ধ। আমার প্রিয় একটা উদাহরণ দিতেছি। ভয় পাইও না, ছোট্ট একটা এক্সাম্পল। ধইরা নেই আমরা মস্কোর কেন্দ্রীয় কমিটির একটা সেশনে আছি। আমি স্ট্যালিন – কঠিন রোলটাই নিলাম যাও। এখন আমি একটা বক্তব্য দিলাম। বক্তৃতা শেষ হইলে এক নারী দাঁড়ায়া আমারে বলতেছে, “কমরেড স্তালিন, আমি আপনার সাথে একমত হইতে পারতেছি না।”

বুঝতেছোই তো এরপর কী ঘটতে যাইতেছে। পরের দিন সবাই যা জিগাইবো – “লাস্ট কে তারে বাইরে দেখছে?”

আবার ধরো, তুমিই দাঁড়ায়া গিয়া ঐ নারীরে বলতেছো, “তুমি কি পাগল হয়ে গেলা? জানো না আমরা এইখানে স্তালিনের সমালোচনা করতে পারি না?”

তুমি আরও দ্রুত হাওয়া হয়া যাইবা। এইটাই আসল অশ্লীলতা। কিছু নিষিদ্ধ করা নিজেই কেম্নে সবথিকা নিষিদ্ধ বস্তু – কাফকা এই বিষয়ে দারুণ লিখছে।

আমি আবার বড় আলাপে ফিরা যাই। হয়তো ‘সম্পদ’ হয়া উঠা ভাষার এই দারুণ দ্বিচারিতা কাটায়া আমরা পোটেনশিয়াল স্বাধীনতা পাইতে পারি– কিন্তু আমি শিউর না।

আইডেন্টিটি পলিটিক্স রে ফিকশন ধইরা নিলে আর বাকি কী থাকে?

হারারি: আগের আলোচনার উপরে ভিত্তি কইরা আমার একটা ফিলোসফিকাল প্রশ্ন মাথায় আসলো। এইটা আপনারে জিগাইতে চাইতেছি।

জিজেক: জিগাও।

হারারি: পরিচয়ের পরে কী আসে? পলিটিকালি কারেক্ট হওয়ার কালচার থাকার পরও তো এই দুনিয়ার সবাই রাজনৈতিক পরিচয় নিয়া পাগলামি করতেছে। আসলে আমরা কিন্তু উত্তরটা জানি অলরেডি।

যারা ঠিক মতন চিন্তা-ভাবনা করে তারা জানে – সব পরিচয়ই ফিকশন। সব পরিচয় বানাইছেন অ্যারিস্টটল। আমরা একটা পরিচয়ের মধ্য দিয়া এত বার ঘুরি-ফিরি, সব জানি-বুঝি, তাও এইটারে বারবার একটা রিচুয়ালের মতো কইরা এক্সপোজ করতেছি।

কিন্তু পরিচয়ের যামানাই তো শেষ হয়া গেছে। ফিলোসফি আর হিস্ট্রির দিক থিকা দেইখা আমি যখন এই দুনিয়ার ঘটনাগুলা নিয়া ভাবি– ফ্যাসিনেটিং লাগে!

সব মানুষ যদি মাইনা নেয় – সব পরিচয়ই ফিকশন, তখন দুনিয়াটা দেখতে কেমন হইবো? মানে পরের ধাপটা কী?

“পরিচয়ের হিসাব মিটা গেছে, সবাই জানতেছে সব পরিচয়ই ফিকশন।”– যদি আপনিও আমার সাথে একমত হন, উত্তরটা দিবেন।

জিজেক: আমি তোমারে খুবই উইয়ার্ড একটা উত্তর দিবো। তোমার মাইনা নিতে হবে যে সব পরিচয় ফিকশন আর তোমার এইটারেই ১০০% সিরিয়াসলি নিতে হবে। দাঁড়াও দাঁড়াও, তোমারে একটা চমৎকার উদাহরণ দিয়া বলতেছি।

যদিও হানাহ আরেন্দ খুবই ইন্টারেস্টিং জিনিসপত্র লিখছে, আমার তাঁর সাথে বিশাল গ্যাঞ্জাম। কিন্তু একটা জায়গায় সে চমৎকার একটা আলাপ দিছে। আমি ভুইলা গেছি এইটা “এডুকেশন” ছিল কিনা – যা-ই হোক।

সে বলছে, ধইরা নাও তুমি একজন সিঙ্গেল প্যারেন্ট হয়া গেলা আর তোমার একটা বাচ্চা আছে। বাচ্চাটা পুরাই কনফিউজড আর বলতেছে, “আব্বা, আমি দুনিয়াটারে ভয় পাইতেছি। কী হবে এখন? আমাদের কেম্নে চলা উচিত?”

হানাহ বলতেছেন, বাপটা সত্য বললে বলতে হইতো, “শুনো, আমি নিজেই বিশাল প্যারার মধ্যে আছি। আমি জানি না। এখন কিছু বুঝতেছি না।” কিন্তু এই উত্তর দেওয়া এথিকালি কারেক্ট হইতো না। বাচ্চাটারে প্যারা না দিয়া ফেলতে হইলে এইখানে একটা মাঝামাঝি জায়গায় আসা লাগে। বরং এমন কিছু বলা দরকার, “হ্যাঁ, এখন তো একটু ঝামেলা হয়াই গেছে। কিন্তু প্যারা নাই, তুমি আমার উপর ভরসা রাখো।”

কথাটায় কিন্তু মিথ্যা নাই। এখানে বাপটা বলতেছে না, “আমি তোমারে বাঁচাইতেছি।”

এই কাহিনী আমারে একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিয়া আসছে। প্রামাণ্য সত্য, ভিন্ন দলের কাছে মিথ্যাও হইতে পারে। আমি এইখানে সবসময় জ্যাক লাঁকা থিকা কোট করি। একটু ঘুরায়ে বলা হইতে পারে কিন্তু বুঝার জন্য এইটা দারুণ একটা উদাহরণ।

ধইরা নাও আমি ম্যারিড। আমার একটা বৌ আছে। আর আমি জেলাস কারণ সে সারাক্ষণ অন্য ব্যাটাদের সাথে শুইতেছে। লাঁকা সুন্দর কইরা বিষয়টা বুঝায়া বলছে, – “আমার সব সন্দেহ সত্য। আমার বৌ আসলেই এমন করতেছে। তারপরও আমার জেলাসি একটা অসুখ। কারণ, আমার জেলাসি জানতে চায় না – আমার বৌ আসলেই এইটা করতেছে কিনা। আমার জেলাস হওয়ার ম্যাডনেস চায় নিজের পরিচয়টারে জাহির কইরা দেখাইতে।”

আসো এখন আরও প্রবলেম্যাটিক দিকে আগাই। তোমার ইহুদী পরিচয় নিয়া আলাপ করি।

নাজিরা তো ঠিক ছিল না, কিন্তু অ্যান্টি-সেমেটিকরাও তো একই রকম ছিল। ধরো আমরা জার্মানিতে আছি। তুমি ইহুদীদের পছন্দ করো আর আমি করি না। বুইঝো বিষয়টা, যা বলতেছি সবই কিন্তু ফিকশনে।

আমাদের এই তর্কটা হইতেছে ১৯৩৭ সালে। আমি বলতেছি, “নাজিরা ইহুদীদের নিয়া যা বলে তার মধ্যে কিছু সত্য আছে।” তুমি একমত হইলা না। চলো তাইলে কিছু লোকমুখে চলা বিশ্বাস নিয়া কথা বলি।

নাজিরা যা বলতো, তার কিছু তো সত্য। এইগুলা তো সত্য – বার্লিনের ৬০% শিল্প-সমালোচক ইহুদী ছিল, ইহুদীরা জার্মান মেয়েদের সিডিউস করতেছিল। ওয়েল, আশা করি দুই পক্ষ মিলাই সিডিউস করছে। তারপর, ইহুদীরা ধনী ছিল। হ্যাঁ, কেউ কেউ হয়তো ছিল না।

তুমি যদি আমাদের কাল্পনিক ডিবেটের এতটুকুও মাইনা নাও, তোমার আত্মাটারে জাস্ট শয়তানের কাছে বেইচা দিলা। কারণ এইটা মাইনা নিলে মানুষ বলবে, “যত যা-ই হোক, কিছু তো সত্য আছে। হ্যাঁ, হয়তো নাজিরা একটু বাড়াবাড়ি কইরা ফেলছে।”

কিন্তু না, এইখানে কোনো সত্য নাই। কারণ ফ্যাক্ট যাই হোক, নাজিদের অ্যান্টি-সেমেটিজম ভুয়া ছিল। এইটা বানানো হইছে ইহুদীদের বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী হিসাবে দেখানোর জন্য। মার্ক্সের গল্পও তো আমরা জানি। অই সমাজ যে নিজেই ইহুদীদের শত্রু ভাবতো; সেই কালো দাগ ঢাকতে, আর দুনিয়ারে একটা ছুতা দেখায়া ভূগোল বুঝাইতে এইসব ‘ফ্যাক্ট’ বানানো হইছে। এমন অনেক উদাহরণ দেখানো যাইবো।

তো, পরিচয়ের বিষয়টা নিয়া আমি এম্নে ভাবি। আর আমাদের যে আলাপটার উপর তুমি এত জোর দিতেছো, শুধু তা না, সবকিছু নিয়াই আমার অ্যাপ্রোচ ঠিক এমনই থাকে। বিষয়টা আমি মার্ক্সিজম, সাইকোঅ্যানালিসিস, আর আরও অন্যান্য জায়গা থিকা শিখছি। জাস্ট মোরাল আলাপেই না, সোসাইটির যেকোনো একটা নরমাল দেখার চোখ কখনোই নিউট্রাল হইতে পারে না। “সবকিছুই আপেক্ষিক” – না! আমি এখানে কোনো আপেক্ষিকতা কচলাইতেছি না।

মার্ক্সবাদের প্যারাডক্স আজকে একটু অন্যভাবে উপস্থাপন করবো। মার্ক্স বলতেছেন, প্রোলেতারিয়েত পজিশনে থাকলে তোমার অভিজ্ঞতা পুরা না, আংশিক হইবো। কিন্তু এই অভিজ্ঞতায় চিরন্তন সত্য আছে। উদাহরণ দিতেছি – ধরো জার্মানিতে ত্রিশের দশকের শেষের দিকে রেসিজম নিয়া কথা বলতে চাইতেছো।

কইতে পারো কথায় কথায় খালি ইহুদীদের টানতেছি কেন। জানি তারাই একমাত্র উদাহরণ না। তারপরও রেসিজমের আলাপে অ্যান্টি-সেমেটিজম নিয়া কথা না বলা দোষের হইবো। ইহুদীদের নিয়া বইলা হালকা সহানুভূতি আর সলিডারিটি দেখাইতেছি। ফ্যাক্ট দিয়া প্রমাণিত সত্যে পৌঁছাইতে গেলে আর কোনো উপায় নাই। কিন্তু এমন সত্যও অত সোজা ঘটনা না। মানে এরেও কোনো নিরপেক্ষ ক্যাটাগরিতে ফেলা যাইবো না।

ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুলের মার্ক্সিস্টরা যেমন সুন্দর কইরা তুইলা ধরছে, “আমরা যারে বস্তুনিষ্ঠ আর নিরপেক্ষ তাকানোর দৃষ্টি বলতেছি, সেইটাই সারাক্ষণ আয়োজন কইরা ক্ষমতার পক্ষে কাজ করে।” – এইটা ঘুইরা-ফিরা ক্ষমতার উদ্দেশ্যরেই হাসিল করে।

তো এইখানে, তোমার টার্মগুলারে বুঝাইতে গেলে বলতে হয়, শুধু ফ্যাক্ট দেখলে হইবো না, স্টোরিও দরকার আছে। সাথে এটাও যোগ করতে চাই – সবথিকা বিপদজনক রেসিস্ট প্রোপাগান্ডা সেইখানে ঘটে যেইখানে তোমার হাতে একটা ভুয়া আন্দাজ আর কাহিনী আছে, আর তুমি তারে কিছু ফ্যাক্ট দিয়া বাঁচায়া রাখতেছো।

আমি এইটা কখনোই করবো না। এর থিকা নিজেরে মাইরা ফেলবো।

কিন্তু আপাতত ধইরা নাও। তুমি যদি আমারে টাকা দিয়া বলো ত্রিশের দশকের শুরুর দিকে জার্মানিতে ইহুদীদের অতিরিক্ত প্রভাব নিয়া একটা বই লিখতে হইবো। আমার জন্য সেইটা লেখা ওয়ান-টুর ব্যাপার। ঐ বইয়ে আমি যেসব ‘ফ্যাক্ট’ লিখতাম, তার সবই সত্য হইতো। তাও সেইটা একটা নোংরা অ্যান্টি-সেমেটিক বই হইতো।

[পুরা আলাপের কয়েকটা অংশ…]

The following two tabs change content below.
Avatar photo

কে এম ইতমাম ইসলাম

ছোট থিকা টুকটাক লেখালেখি, আর পড়ার অভ্যাস। হাজারটা স্বপ্ন দেইখাও এই ছোট জীবনে বড় কিছু করার সুযোগ হয় নাই। যদি হইয়াও থাকে, হেলায় হারাইছে – হয়তো আলসেমি বা অন্য কোনো কারণে। আজীবন সংগঠন কইরা বেড়ানো, আড্ডাবাজ অথচ চুপচাপ এই লোকটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থিকা অনার্স করছে, মাস্টার্সে ফাঁকি দিছে। জীবিকার তাগিদে কপিরাইটিং করে, পেটের নেশায় মানিক থিকা শিফট করছে এটমিক হ্যাবিটস-এ।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →