Main menu

বাপের জুলুম এবং জাতির আব্বারা

This entry is part 10 of 11 in the series রকম শাহ'র বয়ান

শেখ মুজিবকে ‘জাতির আব্বা’ জারা কইতেছেন, তাদের এই জাতি আশলে কোনটা–বাংগালি নাকি বাংলাদেশি? বাংগালি জদি হয়, তাইলে এইটার জনম হয় ১৯৭১ শাল, তাইলে ‘হাজার’ বছরের ইতিহাশ কই গেলো!?

বাস্তবে এইটা বেশ রেছিস্ট আইডিয়া! এইখানে আশলে কইতেছে, রাশ্টো না থাকলে শেইটা খোড়া জাতি, এখনো ‘জাতি’ হইয়া ওঠে নাই। এইখান থিকাই বাংলাদেশের বাংগালি বাদে শবাইকে ওনারা ‘উপজাতি’ ডাকেন এবং বাংলাদেশটা ছেরেফ বাংগালির বইলা দাবি করতে থাকেন। এর শবচে খারাপ দিকটা হইলো, বাকি শবাইরে রাশ্টো বানাবার দিকে ঠেলতে থাকেন ওনারা, এবং এই কারনেই পাহাড়ে নিজেদের রাশ্টো বানাবার দরকার হইয়া পড়ে তাদের।

আর ঐ ‘জাতি’ জদি হয় ‘বাংলাদেশি’ তাইলে বাংগালি কে বা কারা, শেইটা এই রাশ্টে মোটামুটি ইরেলেভেন্ট, আরো আরো জাতি এই দেশে আছে, বাংগালিও আছে, তারা শকলে মিলা বাংলাদেশ নামে একটা কনফেডারেশন বানাইছে, জেমন বানাইছিলো ইশা খা। রেছিজমের বাইরে থিকা ‘জাতির আব্বা’ দাবি করতে হইলে এ ‘জাতি’ হইতে হবে বাংলাদেশি। এইখানে হুশিয়ার থাকা দরকার জে, জাতির আব্বা মানে জাতিরই আব্বা, এবং জাতি মানে তো কোন মানুশ না, মানুশের বাইরের কোন ইমাজিনড এনটিটি, মানে ব্যাপারটা বায়োলজিকেল না, এবং আমরা জে বেক্তি মানুশ, এই জাতির মেম্বার, আমাদের আব্বা না।

এখন বায়োলজিকেল না হইলে আব্বা মানে ছিংগুলার হবার তো দরকার নাই, অনেক আব্বা থাকতে পারে, শম্ভবও। ১৯৭২ থিকাই মরন তক শেখ মুজিব একজন ডাকু-শরদার হইলেও তার আব্বা হইতে বাধা নাই, ডাকুরা আব্বা হইতে পারে, বায়োলজিকেলি তো আরো বেশি পারে [এখনকার দুনিয়ার ১০% মানুশের ভিতর নাকি চেঙ্গিশ খানের জিন আছে! একজন ডাকু-শরদারও তো খমতার ঐ লেভেল এনজয় করে পেরায়ই।]

ফলে আমি দুই জন আব্বার কথা ভাবি, বাংলাদেশি জাতির অন্তত দুইজন আব্বা দেখতে পাই–ভাশানি এবং মুজিব; এবং বাংলাদেশের এই দুর্দশার জন্ন এই দুইজনকেই আমি দায়ি করি!

আমার হিশাবে শেখ মুজিব জে ডাকু-শরদার হইতে পারলো, বাকশাল কায়েম করলো, খুন হইলো, পরে শেখ হাসিনা জে নয়া বাকশাল কইরা হিটলার-এস্টালিনের মতো একজন হইয়া উঠতে পারলো, তার হিস্ট্রিকেল শর্ত জোগানিতে ভাশানিরে মস্ত দোশ দেই।

বাংলাদেশ নামের একটা রাশ্টের খোয়াব পয়লা দেখছেন ভাশানি; মোগল হিন্দুস্তান ভাগ হইয়া ইনডিয়া-পাকিস্তান এবং আরো কয়েকটা রাশ্টো হবার আগে ‘বাংলা’রে একটা রাশ্টো হিশাবে কেউ কেউ খোয়াব দেখছেন বইলা শুনতে পাই, বাট তাদের ছবিটা কতোটা কিলিয়ার আছিলো, কনফাম না আমি। তো, ছেরেফ খোয়াব দেখাই না, খোয়াবকে রিয়াল বানাইয়া তোলাতেও কাম করছেন ভাশানি। আওমি লিগ বানানি থিকা আইউব উৎখাতে লড়াই করছেন উনি; কিন্তু একদম আখেরি এস্টেজে জেই কামটা করছেন, শেইটাই পরের বাংলাদেশ পয়দা হওয়া শম্ভব করছিলো, তার লগেই বাংলাদেশ হবার পরের দুর্দশারও শর্ত জোগাইছে!

১৯৬৯ শালে পুবের পাকিস্তানে ভাশানি মস্ত নেতা, ১৯৭০ শালের ইলেকশনের আগে শেখ মুজিব ভাশানির থিকা বড়ো নেতা হইয়া ওঠে নাই। পুবের পাকিস্তানে মুছলিম লিগ বা ভুট্টোর দল জেন কোন ছিট না পায়, শেই জরুরত ভাশানি-মুজিব দুইজনেই ফিল করছে, বাংগালিদের বানানো/চালানো আরো কয়েকটা দলও শেইটা ফিল করছিলো। ভাশানি চাইলেই মুজিবের লগে মোর্চা বানাইতে পারতেন বা বাকিরাও; কিন্তু তা না কইরা ওনারা শবাই মুজিবরে বিনা শর্তে ময়দান ছাইড়া দিছেন, ছাইড়া দিয়া মুজিবরে নিজেদের চাইতে বড়ো নেতা হিশাবে মাইনা নিছেন! ভাশানির ভিতর এই ইনফিরিয়রিটি ১৯৫৪ শালেও দেখা গেছে, জখন উনি পাকিস্তানের পিএম হবার জন্ন ছোরাবর্দির লগে ফাইট দেন নাই! ১৯৭০ ইলেকশনে অমন মোর্চা বানাইলে বাংগালিরা শমান ছিটেই জিততো, কিন্তু ভাশানি-মুজিবের এমপি থাকতো পেরায় শমান শমান! ভাশানি মুজিবেরে ময়দান ছাইড়া দেওয়ায় মুজিব দেখলো, পুবের পাকিস্তান পুরাটাই তো তার, আর তো কেউ নাই! ভাশানি পলিটিক্সে পুরা ইরেলেভেন্ট হইয়া পড়লেন!

এইভাবেই বাংলাদেশের ফিরিডম-ওয়ার পুরাটাই আওমি লিগের দখলে গেলো, ১৭ এপ্রিলের শরকারটা পুরাই আওমি লিগের হইলো। পরের বাংলাদেশেও একই কথা, শেখ মুজিব তো একলাই, এই দেশটা জেন উনি বানাইছেন, আওমি লিগ বানাইছে, এইটা তাই ওনাদের তালুকদারি, জেমনে খুশি ভোগ করবেন!

এই তালুকদারি মনের ব্যাপারে দেশের জনতা জখন ভেটো দেওয়া শুরু করলো, তখন দেশের মানুশের বিরুদ্ধে জুদ্ধ শুরু করলেন মুজিব, বাকশাল বানাইয়া দেশটারে একটা জেলখানা বানাইয়া ফেললেন। কোথাও কোন আইন-কানুন থাকলো না, কয়জন তালুকদার আর বেশুমার গোলামে ভাগ হইয়া গেলো দেশ।

এই মওকাতেই কয়েকজন ঐ তালুকদারদের ঝাড়েবংশে খতম করতে খুন করলো কতোগুলা, তাতে গোলামদের ভিতর মুক্তির ফিলিং হইলো। পরে শেখ হাসিনা আইলেন বদলা নিতে, বদলা নিলেন, আবারো গোলাম বানাইলেন আমাদের, এইবার আমরা খেদাইয়া দিতে পারলাম তারে। ডাকু শর্দারের মাইয়া ভালো হইলে কি করবে শুরুতে? তার বাপে জে ডাকাত, শেইটা মাইনা নিয়া ডাকাতি ঠেকাইতে কাম করবে। শেখ হাসিনা তার পলিটিক্সের শুরুতে ঐটা মাইনা নিয়া ইনছাফ চাইতে পারতেন; ডাকাত খুনও খুন, ডাকাতের ছোট্ট বাচ্চাও শমান মাছুম; ডাকাতি শুরুর আগে শেই ডাকাতের ভালো কামও থাকতে পারে ইতিহাশে। এবং শে ডাকাত হইলেও বাপ আলবত! শাহাহান আওরঙ্গজেবের বাপই আছিলো, এবং বাপেরে বন্দিও করছিলো, দুইটাই শাচ্চা ইতিহাশ।

এখন ঝামেলায় পড়লাম আমরা কয়েকজন; জারা গোলামের মুক্তির চিৎকারকে দুনিয়ার শবচে বিউটিফুল জিনিশের একটা মানি, তার লগেই মানি বন্দির হক, ইনছাফের জরুরত বুঝি। আমরা জানি, তালুকদারি কেমনে গোলামের মনে পারভার্শন পয়দা করে, এবং শেই দায়ও তালুকদারের; গোলামির চিংকার জেন তালুকদারের পয়দা করা শেই পারভার্শন ময়লা কইরা ফেলতে না পারে–শেইটাই আমাদের মনজিলে মকছুদ বানাইতে হবে।

আমরা গোলামি চাই না, ঐ পারভার্শনও চাই না, তাই ঐ তালুকদারি কায়েম হইতে দিতে পারি না আমরা, শেই তালুকদার আগের গোলাম হইলেও।

#রকমশাহেরবয়ান, ১৫ আগস্ট ২০২৪

Series Navigationখলিফা হইয়া ওঠা >>
The following two tabs change content below.
Avatar photo

রক মনু

কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →